#ড্রাগন কিং#
পার্টঃ৬
লেখকঃজাহিদ আহমেদ
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
আমি অনেক অনেক অনেক অবাক হয়েছি এবং সেই সাথে অনেক ভয়ও পেলাম। তার কারন হলো আমি আমার চোখ খোলে দেখলাম যে,আমি হাওয়ার মধ্যে ভাসছি,আর আমার আসল শরীর মাটিতে পুরো নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। আর আমার পুরো শরীরে শুধু গুলি লাগার চিহ্ন দেখা দিল। এই কারনে আমার অনেক ভয় হলো,আমি আর বেঁচে নেই এটা আমি ভাবতেও পারছিনা।
,
,
কিরে আমাদেরকে মারবিনা,কই ওঠ আয় আমাদেরকে মারতে আয়,সালা খুব বলেছিলি না আমাদেরকে মারবি,কই গেলো তুর সব বাহাদুরি,এই বলে তারা সবাই একসাথে আমার শরীরে একের পর এক আঘাত করতে লাগল। এতেও যেনো তাঁদের শান্তি হলো না,তাঁরা সবাই তাদের নিজেদের হাতে লোহার রড নিয়ে আমার পুরো মুখের চেহারাটাই পাল্টে ফেলল(৩য় লোকটি)!
,
,
আমি সব কিছু দেখতে পারছি,সব কিছু শুনতে পারছি,কিন্তু কিচ্ছু করতে পারছিনা। যার কারনে আমার অনেক কষ্ট লাগল,আর আমার অনেক অনেক রাগ হলো এটা দেখে,যার কারনে আমি তাঁদের দিকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে গিয়ে তাদের সামনে এসে দাঁড়ালাম। তারপর আমার দু-হাত একসাথ করে তাদের মধ্যে একজন কে অনেক জোড়ে আঘাত করলাম। কিন্তু এরপরে যেটা হলো,সেটা দেখার পরে আমি পুরো অবাক হয়ে গেলাম।
,
,
আমি তাদের মধ্যে একজনকে আঘাত করার পরপরই খেয়াল করলাম যে,শুধু আমার হাতই না আমার পুরো শরীরই তার শরীরের ভেতর দিয়ে চলে গেল। মনের ভুল ভেবে আবারও আরেকজনকে আঘাত করলাম,আবারও দেখলাম যে,তার শরীরের ভেতর দিয়েও চলাফেরা করা যায়। এবার আমি সম্পূর্ণভাবে বিশ্বাস করে নিলাম যে,আমি সত্যি সত্যিই মারা গেছি। আমি আর কিছু ভাবতে পারলাম না। আমার মাথা প্রচুর পরিমানে মাথা ব্যথা করছিল,তখনই আমি আমার কানে কারো একটা কথাই শুনছিলামঃ,,,,,,
,
,
তুমার চাইতে শক্তিশালী এই পুরো মহাবিশ্বের মধ্যে আর দ্বিতীয়টা নেয়। তুমি চাইলে সব করতে পারবে,সব,যেটা কেও কল্পনাও করতে পারবেনা। তুমি শুধু তুমার নিজের পাওয়ারকে অনুভব কর। মনে রেখো,তুমার ওপরে অনেক বড় দ্বায়িত্ব রয়েছে, তুমি যদি হেরে যাও তাহলে শুধু তুমিই না,এই পুরো মহাবিশ্ব ধংস হয়ে যাবে। আর তুমি এই পুরো মহাবিশ্বের বাদশাহ্। তুমার ক্ষমতার কোনো শেষ নেই,তুমার ক্ষমতার কথা কেও কল্পনা করেও শেষ করতে পারবে না। সবকিছু এখন তোমার নিজের হাতে,তুমিই পারবে এই পুরো মহাবিশ্বকে বাঁচাতে,এই বলে সেই অদৃশ্য কন্ঠটি মনে হলো চলে গেল,তার আওয়াজ আর শুনতে পেলাম না(অদৃশ্য কন্ঠ)!
তখন আমার মাথায় কোনো একটা কিছু গভীর ভাবে চলতে থাকে। আমি চিন্তা করছিলাম যে,আমি যদি সব করতে পারি তাহলে তো,হ্যা পেয়ে গেছি,আমি আমার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছি।
,
,
আমি হাওয়ায় মধ্যে ভাসমান অবস্থায় আমার ক্ষতবীক্ষত শরীরের কাছে সামনে এসে দাঁড়ালাম। তারপরে সেখানেই ধপ করে হাওয়ায় মধ্যে ভাসমান অবস্থায় বসে পড়লাম,আমার চোখ দুটো বন্ধ করে নিলাম। অনেকক্ষন যাবত চোখ দুটো বন্ধ থাকার পর আমি আমার চারপাশের সব কিছু অনুভব করতে পারছিলাম,কে কি করছে সেটা আমি চোখ বন্ধ করা অবস্থায় ও ভালোভাবে বুঝতে পারলাম। হঠাৎ করে যেন আমার কি হলো,আমি আমার মাঝে প্রচন্ড রকমের শক্তি অনুভব করলাম। আমি আমার চোখ খুললাম,খোলেই আমি আরো অবাক আমি আমার নিজস্ব শরীরের ভেতরেই অবস্থান করছি এখন। আমি পেরেছি,আমি আমার শক্তি ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছি। আমি আর আর কিছু না ভেবে লাফ দিয়ে দাড়িয়ে গেলাম। এতে সবাই আমার দিকে তাকিয়ে অবাকের পর আরো অবাক হলো,তাদের সব খুঁশিতে যেন আমি মাটি ঢেলে দিলাম,ইতোমধ্যে তারা সবাই আমাকে দেখে ভয়ে কাঁপাকাপি করছে। আমি আমার চেহেরার ওপরে আমার ডান হাত দিলাম,আর সাথে সাথে আমার মুখটা ঠিক আগের মতো হয়ে গেল। আমি আর কিছু না ভেবে আমার সুপার স্পিড মোডে চলে গেলাম,আর সবাইকে মারতে লাগলাম,একজনকে একটা করে পান্স দিলাম,তার বেশি না। কারন তাতেই ওদের অবস্থা শেষ,এতো শক্তি ব্যবহার করাতে আমার খুব ভালো লাগছে। চোখের পলকে সবাই শেষ শুধুমাএ একজন লোক বাদে,তাকে মারিনি তার কারন একটু পরেই বুঝতে পারবেন। লোকটা তার চারপাশে তাকিয়ে দেখতে পেল যে,সবার শরীর থেকে তাদের মুন্ডুটা আলাদা,এতে সে এমন ভয় পেল যে সেটা বলার মতো না। আমি তাকে বললাম যে,তোদের বস মন্ত্রীকে এখন কোথায় পাওয়া যাবে বল,নয়তো(আমি)!
দয়া করে আ আমাকে মারবেন না,বলছি আমি সব বলছি,সে এখন তার বাড়িতে আছে,তার ছেলের লাশের কাছে,আর রাএে তার ৮ তলা অফিসে একটা বিরাট বড় ডিল হবে(৪লোকটি)!
ওহ্ আচ্ছা,তাহলে এই ব্যপার,তোর সময় শেষ রে এই বলে আমার ডান পা দিয়ে তার মাথায় মধ্যে একটা কিক করলাম,আর তার শরীর থেকে তার কেল্লা টা ছিটকে অন্য জায়গায় গিয়ে পড়ল। আর আমি সেই ঘর থেকে বের হয়ে আরেক দফা অবাক হলাম।
,
,
কেননা আমি এতোক্ষণ যেই ঘরে অবস্থান করেছি,সেটা একটা জঙ্গলের ভেতরে ছিল,আর এখান থেকে যতোদূর পযন্ত আমার চোখ দুটো যাচ্ছে ততোটুকু শুধু জঙ্গল দেখা যাচ্ছে,হয়তোবা তার থেকেও আরো অনেক বেশি জঙ্গল থাকতে পারে। যাই হোক এখানে আমি কিভাবে আসলাম সেটাতো আর জানার কোনো উপায় নেই। যে করেই হোক এখান থেকে আমাকে বের হতেই হবে। আরে আমার পাওয়ারের কথা তো মনেই ছিল না। এটা ভাবার পর,আমি আমার মানুষ ফর্ম থেকে ড্রাগন ফর্মে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করলাম। আরে একি,কি হলো আমার আমি আমার মানুষ ফর্মেই আছি,আমি আমার ড্রাগন ফর্মে যেতে পারলাম না,অনেক চেষ্টা করলাম আমার মানুষ ফর্ম থেকে ড্রাগন ফর্মে যাওয়ার জন্য,কিন্তু প্রত্যেকবারই আমি ব্যথ হলাম। আমার কি হলো আমি কিছুই বুঝলাম না। আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখলাম যে,সূর্যটা একদম মাথার ওপরে অবস্থান করছে। তাই বুঝতে বেগ পেতে হলোনা যে,এখন দুপুরের সময়,তারমানে আমি পুরো একদিন যাবত এইখানে আছি। না জানি আব্বু আম্মু আমাকে না দেখতে পেরে এখন কি অবস্থা তাদের। এমনিতেই পুরো একদিন না খাওয়া,যার জন্য মনে হচ্ছে আমার পেটের ভিতরে ক্ষুদার চোটে ইদুর ছানা দৌড়াদৌড়ি করছে। কিছু একটা ভেবে পেছনে ঘুরে সেই ঘরটার দিকে এগিয়ে গেলাম,ঘরের ভেতরে যদি কোনো খাবার থাকে সেই আশায়,কিন্তু পুরো বাড়ি তন্নতন্ন করে খোঁজার পরও কোনো খাবারের সন্ধান পেলাম না। যার জন্য মনটা পুরো খারাপ হয়ে গেল,আর সেই ঘর থেকে বের হয়ে একটুখানি দাঁড়ালাম। আমার মাথায় আর কিছুই ধরছে না,এখানে আমি আমার পাওয়ার ইউস করতে পারছিনা,তারওপর আবার অনেক ক্ষুধা লেগেছে,যার জন্য আমি আর কোনো কিছু না ভেবে জঙ্গলের ভেতরে ঢুকে গেলাম,খাবারের সন্ধানে। অনেকক্ষন ঘুরাঘুরি করার পরেও জঙ্গলের ভেতরে ফলের কোনো গাছের দেখা পেলাম না। সবশেষে ক্লান্ত হয়ে একটা নাম না জানা বিরাট বড় গাছের নিচে বসে পড়লাম। ক্লান্ত থাকার কারনে বেশি সময় নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না। কোনো এক সময় নিজের অজান্তেই ঘুমিয়ে গেলাম।
,
,
জঙ্গলের চারিদিকে পুরো নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে,যেমনটা ঠিক ঝড় আসার আগে সবকিছু একদম নিস্তব্ধতা থাকে,আর তারপরেই ঝড় আসে,সবকিছু লন্ডবন্ড করে দিতে। এখানেও ঠিক তেমনি অবস্থা,এখানকার পুরো নিস্তব্ধতা জঙ্গলের গাছপালা সহ এখানকার সব পশু-পাখিকে ঝড়ের পূবাবাস দিচ্ছে। আর ঠিক তখন-ই দূরে কোথাও একটা জন্তুর আত্নচিৎকার ভেসে আসল। সেই সাথে কোন এক শক্তিশালি জন্তুর হুংকার,যেটা শুনে যে কেও ভয়ে অজ্ঞান হ'য়ে যাবে,আর যাদের হাটের রোগী তারা সেখানেই মারা যাবে।
,
,
হঠাৎ করে আমার ঘুম ভেঙে গেল,চারপাশে গাছপালা লাপ দিয়ে ওঠে দাঁড়িয়ে মনে মনে বললাম যে,আরে এটাতো জঙ্গল,আমি এইখানে কি করছি। কিছুক্ষন সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেই আমার সব কিছু মনে পড়ে গেল। কি কি হয়েছিল আমার সাথে,আর খাবারের কথাটা মনে পড়তেই ক্ষুধাটা মনে হলো দ্বিগুণ হয়ে গেল। খুব ক্ষুধা পেয়েছে আমার,আর ঠিক তখনই আমার কানদুটো খাড়া হয়ে গেল,দূরে কোথাও কোনো একটা জন্তুর খুব জোরালো হুংকারের শব্দ ভেসে আসছে,আর সেটা ধীরে ধীরে আমার দিকেই আসছে মনে হলো। যেটা আমি স্পষ্টভাবে শুনতে এবং বুঝতে পারছি। আমি আমার খুবই ভয় পেলাম,আর আমার পাওয়ার ইউস করতে চাইলাম,আবারো সেই একই সমস্যা,আমি আমার কোনো সুপার পাওয়ার ব্যবহার করতে পারছিনা।
,
,
ঠিক তখনই আমার একটা প্রবাদ বাক্যের কথা মনে পড়ে গেল,চাচা আপন প্রান বাঁচা।
এই বলে আমি আমার শরীরের সব শক্তি দিয়ে জঙ্গলের আরো ভেতরের দিকে দৌড় দিলাম। আর তখনই আমার মনে হলো,আমার পেছনে কিছু একটা আসছে,আর সেটা খুবই বড় ছিল মনে হলো,সে যেখান দিয়ে আসছিল,সেখান কার একটা গাছও জীবিত আঁছে বলে মনে হলোনা। আমি আমার সবোচ্চ গতিতে সামনের দিকে দৌড়াচ্ছি,কিছু একটা মনে করে আমি দৌড়ের সময়ই আমার পেছনে তাকালম,পেছনে তাকিয়ে আমি পুরো থ হয়ে গেলাম। আমি সেখানেই দাঁড়িয়ে গেলাম,এ আমি কি দেখছি। ভুল ভাল নাকি,আমার শরীরে দৌড়ানোর মতো শক্তি আর নেই,দৌড়ানোর কথা নই বাদই দিলাম,এখান থেকে এক পা সরার মতো শক্তিও আমার শরীরে অবশিষ্ট নেই বলে আমার মনে হলো। আমি থামার কারণে জন্তুটাও ততক্ষনাৎ সেখানেই থেমে গেল।
,
,
জন্তুটাকে দেখার পরও আমি বেঁচে আছি,সেটা ভেবে অনেক ভালো লাগছে। তার কারন হলো জন্তুটাকে দেখে যে কেও সাথে সাথে মারা যাবে,সে যতই সাহসী মানুষ হোক না কেন। জন্তুটার চেহারা ছিল বিবৎস,প্রচন্ড রকমের ভয়ংকর। জন্তুটার নেকড়ের মতো দেখতে,আমার থেকে আরো অনেক বড়,৮-১০ ফুট লম্বা। তার গাঁয়ের রং গারো কালো,তার দাঁত গুলো ছিল একটু বড়,সামনের দুটো দাত ছিল প্রচন্ড রকমের বড়,আর সেখান থেকে চুইয়ে চুইয়ে কালো রক্ত বের হয়ে মাটির পড়ছে। আর জন্তুটার চোখ দুটো ছিল জলন্ত আগুনের লাভার মতো,মনে হচ্ছে তার চোখ থেকে আগুনের ফুলকি বের হচ্ছে,আর সেই সাথে জন্তুটা তার মুখ দিয়ে গড়গড় আওয়াজ করছে। যার জন্যে জন্তুটাকে দেখতে আরো ভয়ংকর লাগছে যার কারনে একে দেখে অবাকের সাথে অনেক ভয়ও পেলাম। কারন এইরকম জন্তু আমি আমার জীবনেও দেখিনি। আমি কেন,আর আমার বাব-দাদারাও দেখেছে কিনা এতে আমার সন্দেহ হচ্ছে। আমার মনে হচ্ছে যে,আমি এখন অ্যামাজন জঙ্গলে আছি,কারন এখানে বাদে আর কোথাও এতো ঘনো জঙ্গল দেখা যায় না। আর এই জঙ্গলে বিশাল বিশাল সব জীব জন্তু থাকে। আমার মনে হচ্চে যে,আমি মনে হয় আর বাচব না,এখান থেকে বেঁচে ফিরার কথা নয় বাদই দিলাম।
,
,
জন্তুটা আমার থেকে দুই-তিন হাত দূরে অবস্থান করছে,আর আমার দিকে তাকিয়ে আছে অনেকক্ষন যাবত,হয়তোবা আমাকে পযবেক্ষন করছে ভালোভাবে,কিভাবে আমাকে তার দাঁড়ালো দাত দিয়ে ছিড়েখুঁড়ে খেয়ে ফেলবে। আর আমি পুরো আহমকের মতো দাঁড়িয়ে আছি। বুকে অনেক সাহস জোগিয়ে এবং মনকে যথাসম্ভব শান্ত রাখলাম,কিন্তু তখনই আমি অনুভব করলাম যে ঘামে চোটে আমার পুরো শরীর ভিজে একাকার,তারপরেও আমি আমার মনকে শান্ত করার চেষ্টা করলাম,কিন্তু সেটা ভয়ের জন্য আর পারলাম না। আবারও আমি আমার পাওয়ার ইউস করার চেষ্টা করলাম,কিন্তু সেটা আর হলো না,কারন তখন-ই নেকড়েটা হুংকার দিয়ে ওঠল,হুংকার টা এতোই জোড়ালো ছিল যে,হুংকারের বাতাসের কারনে আমি উলটে পড়ে গেলাম। ডিগবাজী যে কটা খেলাম,ভয়ের চোটে সেটা ভুলে গেছি।
নেকড়েটা আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগল,আমি মাটির মধ্যে শোয়া অবস্থায় সামনে দিকে তাকালাম,দেখলাম যে নেকড়েটা আমার দিকে এগিয়ে আসছে। এতে যেন আমার জানটা যায় যায় অবস্থা। নেকড়েটা যখন আমাকে উদ্দেশ্য করে তার নিজ অবস্থান থেকে লাফ দিল,যখন সে আমার একদম সামনে,ঠিক তখনি ভয়ের চোটে আমি আমার চোখ দুটো বন্ধ করে নিলাম আর তখনই নিজের শেষ মুহূর্তে কেনো যেন আব্বু আম্মুর মুখটা মনে পড়ে গেল আপনা-আপনি। আমি অনুভব করলাম যে,আমার শরীর নেই,মানে আমার যে শরীর আছে সেটা আমি অনুভব করতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছে আমার কোনো শরীরই নেই। আমার মনে হলো যে,আমি নেকড়েটার বিশাল বড় শরীরের নিচে পড়ে পিষে গেছি,এবং সেখানেই মারা গেছি,অথবা তার হাতের থাবার কারনে মরে গেছি। আর মরে আমি ভূত হয়ে গেছি। তারপরও ভয়ে ভয়ে চোখ দুটো খুললাম,চোখটা খুলেই আমি অনেক অনেক ভয় পেলাম,কেননা আমি দেখলাম যে,নেকড়েটা আমার সামনে একটু ঝুকে দাঁড়িয়ে আছে,তার চোখ দুটো আমার চোখের একদম সামনে। আমাদের দুজনের চোখের মধ্যে সবোচ্চ ১ আঙুল দুরত্ব বজায় আছে। নেকড়েটার চোখ দুটোর মধ্যে যেনো লাভার স্রুোত ভয়ছে। যার কারনে আমি মারাত্মক রকমের ভয় পেয়েছি। তারপরেও নিজেকে অনেক কষ্টে সামলে নিলাম। তার প্রতিটা গরম নিশ্বাস আমার মুখের ওপরে,আর সেটা আমি চোখ বুঁজে সহ্য করছি।
,
,
কিন্তু সেটা আর কতক্ষন,নিজেকে আর ধরে রাখতে পারছি না,খুব খারাপ লাগছে সাথে ভয় তো আছেই। এবং সেই সাথে মাথার মধ্যে দুটো প্রশ্ন
তো ঘুর পাক খাচ্ছেই। প্রশ্ন দুটো হলো,১ঃ এখানে আমি আমার পাওয়ার ইউস করতে পারছিনা কেন,২ঃ তখন আমি ভয়ের চোটে চোখ দুটো বন্ধ করার পর কেনো মনে হলো,যে আমার শরীর নেই,আমি আমার নিজের শরীর কেন অনুভব করতে পারছিলাম না। সব নিয়ে আমার মাথা একদম খারাপ হয়ে গেল,আমি আর কিছু ভাবতে পারলাম না।
নিজের অজান্তেই আমার ডান হাতটা আপনা-আপনি উঁচু হয়ে,নেকড়েটার মুখের চোয়াল বরাবর একটা ঘুসি দিলো। আমি তখনও কিছুই বুঝতে পারিনি,কিন্তু কেন যেন মনে হলো আমার ডান হাতটার মধ্যে অনেক চাপ পড়েছে,সেটার কারনে ডান হাতটা প্রচুর পরিমানে ব্যথা করছে,যার কারনে কি হয়েছে সেটা দেখার জন্য আমি আমার চোখটা বাঁকা করে ডান হাতের দিকে তাকালাম। আর তাকিয়েই আমি পুরো অবাকের পর অবাক হলাম।
,
,
কারন আমি দেখলাম যে,আমার ডান হাতটা নেকড়ে টার চোয়ালের সাথে একদম লেগে আছে,আর আমার ডান হাতটা ব্যথার কারণে প্রচন্ড ভাবে কাঁপা-কাঁপি করছে,আমি চিন্তা করতে লাগলাম যে,আমার ডান হাতটা ওখানে কিভাবে গেল। আমি আমার ডান হাতটা সেখান থেকে ছাড়ানোর জন্য সজোরে টান দিলাম,আর তখনই আমার ব্যথাটা নাড়া দিয়ে ওঠল,ব্যথার কথাটা মনে পড়তেই মুখ দিয়ে আপনা-আপনি বলে ফেললাম,,,
,
,
ওরি মাাাাাাাাাাাাাাাাাাাাাাাাাাাাাাাাাাাা
গেলরে গেল,আমার হাতটা মনে হয় ভেঙেই গেছেরে(আমি)
ব্যথার কারনে আমার খুবই খারাপ লাগছে,মনে হচ্ছে আমার ডানহাতের জায়গায় হাত নেই,সেখানে শুকনো মরিচের গুঁড়ো দিয়া হয়েছে।
আগুনের মতো জ্বালা পুড়া করছে,সেই সাথে ওখানে প্রচন্ড পরিমানে ব্যথাও করছে।
জ্বালা আর ব্যথার চোটে নিজেকে আর কোনো ভাবেই শান্ত রাখতে পারছিলাম না,যার কারনে আমি নেকড়েটাকে উদ্দেশ্য করে বললে লাগলাম,,,
,
,
তুই এখনও জানিস না যে আমি কে,যদি একবার জানতে পারিস তাহলে তুই নিজে আমার পায়ে এসে পড়বি। আর আমার শক্তি সম্পর্কে তুর কোনো ধারনাই নেই(আমি)
আমার কথা শুনে,মনে হয় নেকড়েটা একটু বেশিই রেগে গেল। এবং নেকড়েটা আমাকে পুরো অবাকের পর অবাক করে দিয়ে সে নিজে বলতে শুরু করল যে,,,,,
কি বললি তুই,তুই একজন ক্ষুধে মানব হয়ে আমাকে ভয় দেখাস,আমাকে। আর তুই যেই হুস না কেন,আজকে তুই এখান থেকে বেঁচে ফিরতে পারবিনা। আর তুই একটু আগে কি বললি,তুর শক্তি সম্পর্কে আমার কোনো ধারনাই নেই। তোর পাওয়ার তো আমি একটু আগে নিজ চোখে দেখলাম,আমাকে একটা ঘুসি দিলি,আর তুর নিজের হাত টাই ভেঙে গেল। তাহলে অবশ্যই বুঝতেই পারছিস যে,আমার শক্তি কতোটুকু,আর তুর নিজের শক্তি কতোটুকু। আমি যদি আমার পুরো শক্তি ব্যবহার করি,তাহলে তোদের মনুষ্য জাতির কেউই বেঁচে থাকতে পারবে না(নেকড়েটা)
,
,
নেকড়েটার কথা শুনে আমি আরেক দফা অবাক হলাম। কোনো নেকড়ে যে,কথা বলতে পারে এটা আমার জানা আছিল না। তার কথার জবাবে আমি কি বলল,সেটা আমি ভেবে পেলাম না।
কিন্তু যখনই সে আমাকে মেরে ফেলার কথা বলল এবং আমার শক্তি নিয়ে উপহাস করল,আবার আমাদের মনুষ্য জাতিকেও নিমিষেই শেষ করে দিতে পারে,এই কথাটাও বলল এটা শুনেই রাগে আমার পুরো শরীর থরথর করে কাঁপতে লাগল। খুব খুব রাগ হলো নেকড়েটার ওপরে। নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না,মুখ থেকে আপনা-আপনি কথা বের হতে লাগল,তাকে উদ্দেশ্য করে বলতে লাগলাম,
ব্যস অনেক হয়েছে,একটু বেশিই বলে ফেললি,একে-তো তুর জন্য আমার হাতের অবস্থা খারাপ হয়েছে,আবার আমাকে মারার কথা বলছিস,আবার আমার শক্তি সম্পর্কে কিছু না জেনেই আমাকে এবং আমার শক্তি কে অপমান করছিস। তারপরেও তোকে কিছু বললাম না।
তারপর আবার পুরো মনুষ্য জাতিকেও অপমান করেছিস। আজকে এর ফায়সালা হয়েই যাবে,হয়তো তুই মরবি,নয়তো আমি মরব(আমি খুবই রাগী গলায় বললাম)!
আমার কথা শুনে নেকড়েটা একটা বিৎগুটে হাসি দিয়ে আগের বারের থেকে আরো অনেক বেশি বড় একটা হুংকার ছাড়লো,আর বলতে লাগল,,,
,
,
হু অনেক হয়েছে,তুইও নিজেও জানিস না যে,তুই কার সামনে দাঁড়িয়ে আছিস,আর তুই কি বললি আমাকে মারবি আমাকে,আয় দেখি কে কাকে মারে। অনেক বলে ফেলেছিস,কিন্তু আর নয়(নেকড়েটা)!
এই বলে নেকড়েটা আমাকে উদ্দেশ্য করে তার নিজ অবস্থান থেকে লাফ মেরে একদম আমার সামনে আসল। আমাকে কোনো কিছু বলার,করার সুযোগ না দিয়েই তার ধারালো নখ খুলো সব আমার বুকের ওপর বসিয়ে দিল। জিনিসটা এতো তারাতাড়ি হলো যে,আমি এর কোনো কিছুই বুঝতে পারলাম না। আমার মনে হচ্ছে যে,তার ধারালো নখ গুলো সব আমার পেটের ভিতর দিয়ে গিয়ে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে গেছে। এমনিতেই ডান হাতটা পুরো ভেঙে গেছে,যেটার ব্যথাই আমি কুলাতে পারছিলাম না,আর সেখানে নেকড়েটা কি করল। রাগের কারনে আগে থেকেই আমার শরীর হাল্কা কাঁপা কাপি করছে। আর তার মধ্যে নেকড়েটা যা করল,এতে আমার রাগ চরম পযার্য়ে ওঠে গেল।
,
,
আমার মনে হচ্ছে যে,রাগের কারনে আমার কিছু কিছু শক্তি ফিরে পাচ্ছি,সেটা আমি ভালো করেই অনুভব করতে পারছি। এবার আমি পুরো ভাবে সিওর হয়ে নিলাম যে,রাগের কারনে আমার শক্তি পুরো দ্বিগুণ হয়ে যাবে। আমার মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে গেল,আমি আমার রাগ আরো বাড়ানোর জন্য চোখ দুটো বন্ধ করে সেই মেয়েটার কথা ভাবতে লাগলাম। সে আত্মহত্যা করছে,আরো যা যা খারাপ কিছু হয়েছে আমার সাথে সেইসব অনেক কিছু মনে করতে লাগলাম। আর ব্যস আমার কাজ হয়ে গেল। আমি আমার পুরো শরীরে প্রচুর পরিমানে শক্তি অনুভব করলাম। আমার চোখ দুটো বন্ধ করা অবস্থায়ই আমি একটা বাঁকা হাসি দিলাম। যেটা নেকড়েটার চোখে পড়ল। আর সে বলতে শুরু করল যে,,,,,
,
,
হেঁসে নে,যতো খুশি পারিস হেঁসে নে। এরপর আর হাসতে পারবিনা,এখানেই তোকে মেরে খেয়ে নিব(নেকড়েটা)!
নেকড়েটা তার কথাটা শেষ করতে পারল না,তার কারন হলো তার আগেই তার চোয়ালের মধ্যে একটা ঘুসি লাগে। যার কারনে নেকড়েটা কয়েকটা ডিগবাজি খায় মাটির ওপরে,আবার সাথে সাথে সে উঠে দাঁড়ায়। কিন্তু পরক্ষনেই সে আবার মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ার কারণ হলোঃতার চোয়াল বরাবর যে ঘুসি টা লাগে,সেটা প্রচন্ড পরিমানে শক্তিশালী ছিল। যার কারনে নেকড়েটা যেখানে ঘুসিটা লেগেছে সেখানে ভেঙে ঢেবে গেছে। কিন্তু সেটা আস্তে আস্তে ঠিক হতে গেল,মানে হিল হতে লাগল। আরে ওরতো দেখি এই পাওয়ার ও আছে। সে আমার দিকে তাকাল,তাকিয়ে মনে হয় একটু অবাকই হলো,তার কারণ হলো আমার ডান হাতটা আপনা-আপনি ঠিক হয়ে গেল,সেই সাথে আমার পুরো শরীর থেকে লাল আলো বেরুচ্ছে,আর পিঠ চিড়ে দুটো লাল রঙের ডানা বের হয়েছে। সে এতোক্ষনে ঠিক হয়ে গেলে। সে আর সময় নষ্ট না করে মাটি থেকে ওঠেই জুড়ে একটা হুংকার দিয়ে আমার দিকে তেড়ে আসতে লাগল। আর আমি আমার সুপার স্পিড মোডে চলে গেলাম। আমি আস্তে আস্তে তার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম,এবং তার দুটো হাত,দুটো পা সবগুলোই ভেঙে দিলাম। আবারও আমি আগের অবস্থায় ফিরে এলাম। নেকড়েটা বুঝতে পারছেনা যে,তার সাথে কি হচ্ছে। আর ওর কাছে এতো শক্তি কি করে এলো।
আমি আর দেরি না করে আমার ডানার সাহায্যে নেকড়েটার একদম সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। নেকড়েটার ওপরে এমনিতেই অনেক রাগ ছিল,যার জন্য ওঁকে আর বাচিয়ে রাখতে ইচ্ছে করল না। তাই আমি আমার ডান হাতটা আকাশের দিকে উচু করে ধরলাম,আর সাথে সাথে আমার হাতে বিশাল বড় লাল রঙের একটা তলোয়ার চলে এলো। আমি আর কিছু না ভেবে নেকড়েটার মাথা লক্ষ্য করে স্লাইড দিব,ঠিক তখন-ই নেকড়েটা বলে ওঠল,,,,, ,,,,,
,,,,,,,,,,,,,,,ড্রাগন কিং,,,,,,,,,,,,,,,
(শব্দ সংখ্যাঃ৩০৭১)
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।
পার্টটা অনেক বড় করে দিলাম। ৬ষ্ঠ পার্টটা কেমন হলো জানাবেন। আশা করি ভাল লাগবে। ভালো না লাগলে বলবেন। গল্পের মধ্যে কোনো জিনিস না বুঝলে কমেন্টে জিজ্ঞেস করতে পারেন। আর ভালো লেগে থাকলে শেয়ার করে বা পাঠক পাঠিকাদের মেনশন করে পড়ার সুযোগ করে দিতে পারেন।
★হ্যাপি রিডিং★