ওয়েবসাইট কাস্টমাইজেশন এর জন্য। Contact Us Welcome!

জলপরীর প্রেমে ২ পর্বঃ ১৩

Bangla Dub Novels

 


#জলপরীর_প্রেমে#

#সিজন_2#

পার্টঃ১৩

লেখকঃহৃদয় বাপ্পী

।।।।।।

।।।।।।

।।।।।।

আমি বড় সড় একটা চিন্তাই পরে গেলাম। সব জায়গায় কি আমাকে যুদ্ধ করতে হবে। এই যুদ্ধ ছাড়া কি রাজাদের শান্তির জীবন হয় না। কোথায় ভাবলাম রাজা হয়ে রানীদের নিয়ে সুখে থাকবো। বরং আমাকেই এখন পালিয়ে বেরাতে হচ্ছে। সিংহাসনে বসে ছিলাম আমি। আমার পাশের অতিথি সিংহাসনে বসে আছোে রাজা হিরোনাস। হঠাৎ সেনাপতি চলে আসলো।

.

--মহারাজ পাশের রাজ্যের সমুদ্রে একটা বিশাল ভয়ানক প্রানী দেখা দিয়েছে। যেটা সব নৌকা ধ্বংস করে দিচ্ছে। মাঝে মাঝে তীরের কাছে এসে মানুষদের উপরে হামলা চালাচ্ছে।(সেনাপতি)

.

--সমুদ্রে?(আমি)

.

--জ্বী মহারাজ।(সেনাপতি)

.

--দেখতে কেমন প্রানীটা?(আমি)

.

--এখনো কেউ ভালো করে দেখে নাই প্রানীটাকে। তবে হাতির চেয়েও বিরাট দেহী হবে প্রানীটা।(সেনাপতি)

.

--ওওও।(আমি)

.

--শুনেছি ওর আটটার মতো হাত রয়েছে।(সেনাপতি)

.

--ওওও এতো বিশাল ভয়ঙ্কর প্রানী।(আমি)

।।।।

।।।।

সেনাপতি কিসের কথা বলতেছে সেটা আমি বুঝে গেছি। অক্টোপাসের কথা বলতে ছিলো।  কিন্তু অক্টোপাস তো সাধারনত এতো বড় হয় না। তাহলে নিশ্চয় এটা জলপুরীর রক্ষিত সেই বিশাল অক্টোপাসের মধ্যে একটা। তাহলে এখানেও জলপুরী রয়েছে। আমার তো ভাবতেই অবাক লাগছে যে জলপুরী এখানেও রয়েছে। পাতালপুরীর তো এখনো সৃষ্টি হয় নাই কারন রাজা হারকিউমাস মানে আমার এখান থেকে হারিয়ে যাওয়ার পরেই আন্ডারগ্রাউন্ড সৃষ্টি হবে। 

তবে কি আকাশপুরী রয়েছে এখনো? হ্যা যদি পাতালপুরী থাকে তাহলে আকাশপুরী ও থাকবে। আমার একটু পানিতে নামতে খুব মন চাচ্ছে। জলপরীদের শক্তি আর ক্ষমতা শরীরে আসার পর থেকেই শুধু পানির পিপাসা জাগে। এই পিপাসা পানি পান করলে মিটে না। পানিতে শরীর ডুবালে মিটে।।

.

--মহারাজ পাশের রাজ্যের রাজা কিলোরা এই প্রানীটার বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারতেছে না। তার শত শত বানিজ্য বাহী নৌকা ডুবিয়ে দিয়েছে এই প্রানীটি। এখন তিনি আমাদের সাহায্য চাচ্ছে।(সেনাপতি)

.

--এটা জেনেও যে চার বার তারা আমাদের উপরে হামলা চালিয়েছে তারপরও আমরা তাদের সাহায্য করবো।(মন্ত্রী)

.

--মহা মন্ত্রী রাজা কিলোরা এই সাহায্যের বিনিময়ে আমাদের রাজ্যের সাথে মিত্র হয়ে যাবেন।(সেনাপতি)

.

--মন্ত্রী।(আমি)

.

--জ্বী মহারাজ।(মন্ত্রী)

.

--রাজা কিলোরা আমাদের রাজ্যে হামলা করেছেন তাহলে আমরা কেনো তাদের রাজ্যে হামলা করি নি?(আমি)

.

--আপনার পিতা এই যুদ্ধ একদমই পছন্দ করতেন না। উনি কোনো সময়ে স ইচ্ছায় যুদ্ধের জন্য সৈনিক বানায় নি। এই যে যত সৈনিক দেখতে পাচ্ছেন সবই রাজ্যের আত্মরক্ষার জন্য।(মন্ত্রী)

.

--সব নিয়ম তো বেশী দিন চলে না। এভাবে সৈনিকরা তো ভুলেই যাবে তারা যোদ্ধা।(আমি)

.

--তাহলে কি করতে চাচ্ছেন?(রাজা হিরোনাস)

.

--সেনা পতী আর সেনা কমান্ডার গন আপনারা আপনাদের সৈনিকদের প্রস্তুত করেন অনেক হয়েছে। এবার আমরা যুদ্ধ ঘোষনা করবো তাদের বিরুদ্ধে।(আমি)

.

--মহারাজ এটা কি ঠিক হবে?(মন্ত্রী)

.

--যা বলেছি সেটাই করুন।(আমি)

.

--জ্বী মহারাজ।(সবাই)

।।।।

।।।।

যাক কিছু একশন তো করতে পারবো। আমি মন্ত্রীকে বল্লাম।

.

--একটা সংবাদ রাজা কিলোরার কাছে পাঠিয়ে দিন মহামন্ত্রী।(আমি)

.

--কি সংবাদ?(মন্ত্রী)

.

--বলুন রাজা হারকিউমাস তাদের সাহায্য করতে প্রস্তুত।(আমি)

.

--জ্বী মহারাজ।(মন্ত্রী)

।।।।

।।।।

আমি চুপ করে বসে ছিলাম। তখন রাজা হিরোনাস বলে উঠলো

.

--তোমার চালটা আমি ঠিকই বুঝতে পেরেছি। তোমার বাবার জন্য আমিও কোনো রাজ্যে যুদ্ধ করতে পারতাম না। কিন্তু তুমি একদম তার থেকে আলদা। যদি আমার সৈন্যদেরও তোমার প্রয়োজন হয় তাহলে নিতে পারো।(রাজা)

.

--মানুষদের সাথে যুদ্ধে জন্য এতো কিছু করতে হয় না। শুধু তাদের একটু ভয় দেখাতে পারলেই হয়।(আমি)

.

--কি করে ভয় দেখাবা?(রাজা)

.

--সেটা দেখতে থাকুন।(আমি)

।।।।।

।।।।।

সিংহাসন থেকে আমি চলে আসলাম আমার কক্ষে। দেখলাম দুইবোন বসে আছে। হৃনিতা ওর বোনের সাথে কথা বলার চেষ্টা করছে। কিন্তু কোনো লাভই হচ্ছে না। বড়টা কথায় বলে না। মাঝে মাঝে ধমক দেই কিন্তু হৃনিতা তাতে কোনো ভয় পাই না। আমি রুমে ঢোকার পরই ছোটটা রুম থেকে চলে গেলো বাইরে।

.

--আপনাকে বলেছিলাম এক রুমে থাকা আপনার জন্য ভালো হবে না। আপনি চলে যান এখান থেকে।(হৃদিতা)

.

--আপনার মনে হয় আমার জন্য চিন্তা হচ্ছে?(আমি)

.

--চিন্তা হবে কেনো?(হৃদিতা)

.

--এইযে আপনার আশে পাশে থাকলে। কিংবা আপনাকে স্পর্শ করলে হিগমা এসে আমাকে পাথর করে দিবে। আর আপনি সেটা চান না।(আমি)

.

--আমি চাই না আমার জন্য কেউ পাথর হয়ে যাক।(হৃদিতা)

.

--কেনো আপনিও তো জাদু জানেন। জাদু দিয়ে আমাকে পাথর থেকে আবার মানুষ বানাবেন।(আমি)

.

--আমি কিছুই জানি না।(হৃদিতা)

.

--বুঝতে পেরেছি আমার জন্য পুরতেছে আপনার। ভালোবেসে ফেলেছেন?(আমি)

.

--আজব।(হৃদিতা)

.

--তাহলে কি হিগমার প্রেমে পরছেন?(আমি)

.

--আমি কোনো কথা বলতে চাই না।(হৃদিতা)

।।।।।।।

।।।।।।।

আমি ও আর জালালাম না ওকে। এদিকে রাত ঘনিয়ে আসলো। আজকে খুব ইচ্ছা করছে একটু সমুদ্রে নিজের আধিপত্য দেখাতে। কিন্তু আমার কাছে তো উরার মতো কোনো শক্তি নেই। আর সবার চোখের আড়ালে তো যাওয়া অসম্ভব। কিন্তু যাবো কিভাবে। 

.

--আচ্ছা আপনার জাদুর ক্ষমতা কেমন?(আমি)

.

--মানে?(হৃদিতা)

.

--মানে আমাকে উড়িয়ে পাশের সাগরে ফেলতে পারবেন?(আমি)

.

--সাগরে গিয়ে কি করবেন?(হৃদিতা)

.

--তার মানে আপনার সেই ক্ষমতা নেই। শুধু হালকা পাতলা জিনিসই উড়াতে পারেন।(আমি)

.

--কি?(হৃদিতা)

।।।।

।।।।

যাক রেগে গেছে। ভাগ্য ভালো পাথরের দেয়াল ভেঙে পাঠাই নি। জানালা দিয়েই উড়িয়ে দিয়েছে। মনে হলো আমি একটা বল আর কেউ আমাকে ছুড়ে মারলো। আমি কুচিমুচি হয়ে পরলাম গিয়ে সমুদ্রের পানিতে। বুঝতে পারলাম অনেক শক্তিই আছে তার। আমি ইচ্ছা মতো সাতার কাটছিলাম। এমন সময় নারী কন্ঠ শুনতে পেলাম। প্রথমে ভয় পেয়ে গেলাম যে কোনো জলপরীতো আসলো না। পরে দেখলাম কিছু একটা উড়তে ছিলো। মনে হলো একটা আকাশপরী। কিন্তু ডানা ছাড়া কিভাবে উড়ছে মেয়েটা সেটা আমার মাথায় ঢুকছে না কোনো ভাবেই। পরক্ষনেই দেখলাম মেয়েটা হৃদিতা।

ও উড়তে পারে এটা আগে জানলে ভালোই হতো। চালাকি করে ওকে ধরেই আসতে পারতাম এখানে। হুদাই বলের মতো উড়ে এসেছি। মনে হয় এতো রাতে আমাকে এভাবে উড়তে দেখে কেউ উড়োজাহাজের মডেল করেছিলো আর সেটাই আমাদের বর্তমান সময়ের প্লেনের মূল নক্সা। তাহলে প্লেনের জনক তো আমাকে দেওয়া উচিত ছিলো। সেটা কেনো দিলো না বুঝলাম না।

.

--এতো দূরে উড়ে আসলেন তাউ কিছুই হলো না আপনার?(হৃদিতা)

.

--দেখতে হবে না জাদুকারিনীর স্বামী আমি।(আমি)

.

--সত্যি করে বলেন তো আপনি কে? আমি আপনার ভিতরে অন্যরকম কিছু একটা বোধ করি। অনেক শক্তিশালী কিছু একটা বোধ করি আমি আপনার মধ্যে।(হৃদিতা)

.

--আমি তো সাধারন একজন মানুষ। তবে সাধারন মানুষের থেকে একটু বেশী কিছু করতে পারি।(আমি)

.

--মানে?(হৃদিতা)

.

--চলুন দেখাচ্ছি।(আমি)

।।।।।

।।।।।

আমি সমুদ্রের তীরে বসলাম। আর হৃদিতা হাওয়ায় বসে আছে। হয়তো ময়লা লাগাবে না গায়ে। আমার কি আমি তো শরীরে পানি লাগিয়ে বসে আছি। আজ সেই লাগতেছে আমার। যদি জলমানবদের মতো আমার ও লেজ হতো তাহলে আরো ভালো লাগতো মনে হয়। আমি পানিতে একটা হাত দিলাম। চোখ টা বন্ধ করলাম। আশে পাশে যত প্রানী আছে সব গুলোকে আমি অনুভব করতে লাগলাম। সব গুলোকে আমার দিলে ডাকতে লাগলাম। সব প্রানীগুলো আমার ডাকে সাড়া দিলো। কিছুক্ষনের মধ্যেই পানির হাজার হাজার প্রানী আমার সামনে চলে আসলো। যেখানে ছিলো অনেক অজানা প্রানীও যারা আমাদের সময়ের অনেক আগেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আমি সব গুলোকে দেখে অবাকই হলাম। কিন্তু সবচেয়ে বেশী অবাক হলাম আমি হৃদিতার কান্ড দেখে। আমি যা দেখেছি তার কিছুই দেখে নাই এটা বুঝতে পারলাম ওর মুখ দেখে। আগে কার মানুষ দেখবেই কি করে। পানির নিচে কি আর এরা কখনো গিয়েছে।

.

--এসব কি পানির নিচের প্রানী?(হৃদিতা)

.

--হ্যা।(আমি)

.

--এদের আপনি ডাকলেন কি করে?(হৃদিতা)

.

--এটাই আমার ক্ষমতা।(আমি)

.

--আমি বুঝতে পারছি আপনি আপেলটা খাওয়ার পরও কিছু হলো না কেনো। কারন আপনিও একজন জাদুকর।(হৃদিতা)

.

--আমি আর জাদুকর?(আমি)

.

--হ্যা। পানির জাদুকর। এটা আমি একটা জাদুর বইয়ে পরেছিলাম। একজন আসবে যে পানির জাদু জানবে।(হৃদিতা)

.

--তার মানে আমাকে নিয়ে ভবিষ্যৎ বানী করা হয়েছিলো?(আমি)

.

--হ্যা।(হৃদিতা)

.

--আচ্ছা বাদ দিন। এক এক করে পরিচয় করিয়ে দি এদের সাথে।(আমি এক এক করে পরিচয় করিয়ে দিতে লাগলাম)

.

--এইটা কি?(ডলফিনকে দেখিয়ে হৃদিতা বললো)

.

--এইটা ডলফিন। অনেক বন্ধুসুলভ একটা প্রানী। জানেন আমরা কি করি এটাকে দিয়ে?(আমি)

.

--কি করেন?(হৃদিতা)

.

--আমরা এর উপরে বসে ভ্রমণ করি।(আমি বসলাম একটা ডলফিনের উপরে)

.

--বসলে কিছু বলে না এরা?(হৃদিতা)

.

--কি বলবে। আমি তো এদের রাজা। আপনি বসেন। অনেক মজা পাবেন।(আমি)

.

--না আমার ভয় লাগে।(হৃদিতা)

.

--জাদুকারিনীর আবার ভয়।(আমি)

।।।।

।।।।

হৃদিতা একটা ডলফিনের উপরে বসলো। কিন্তু সেখান থেকে পরে গেলো কিছুটা ভয়ে। হয়তো মেয়েটা সাতার কাটতে জানে না। দেখলাম ডুবে যাচ্ছিলো। আমি ধরতে চাইছিলাম না তাউ ধরতে হলো। ধরে আমার পিছনে বসিয়ে দিলাম ওকে। 

.

--কি হলো ডুবে যাচ্ছিলেন যে?(আমি)

.

--আমাদের জাদু পানিতে নষ্ট হয়ে যায়।(হৃদিতা)

.

--কি?(আমি)

.

--হ্যা তাই তো আমাকে ধরতে পারলেন।(হৃদিতা)

.

--আগে বলবেন তো। তাহলে তো পানির সম্রাজ্যই বানিয়ে দিতাম।(আমি)

.

--মানে?(হৃদিতা)

.

--থাক এতো মানে মানে করতে হবে না আপনার। আপনি তো পরে গেলেন এখন শক্ত করে আমাকে জরিয়ে ধরেন। আমি দেখাচ্ছি কিভাবে ঘুরতে হয় ডলফিনে।(আমি)

--হুমমম।(হৃদিতা)

।।।।।

।।।।।

এইতো মজা। বউ লাইনে চলে আসছে। আর হিগমাকে কিভাবে সাইজ করতে হবে বুঝতে পারছি আমি। পানি তো প্রথম থেকেই আমার অস্ত্র। এখানেও সেটা ব্যবহার করতে হবে। নাহলে হচ্ছে না।

।।।।।

।।।।

।।।

।।

(((চলবে)))

।।

।।।

।।।।

।।।।।

অপেক্ষা করুন ১৪ তম পার্টের জন্য

Post a Comment

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.