#জলপরীর_প্রেমে#
#সিজন_২#
পার্টঃ০৫
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
।।।।।
।।।।।
আমি সাইনাকে নিয়ে বের হলাম। আমার দুটো কাজই হয়ে যাবে। একদিকে পুরো মেক্সিকো সিটি ঘুরে দেখতে পারবো। সেই যখন থেকেই এসেছি শহরটার সৌন্দর্য আমাকে টানছে। কারন শুনছি মেক্সিকোতে নাকি অনেক আশ্চর্যজনক জায়গা রয়েছে। পুরো শহরটাই ঘন ঘরবাড়ি দিয়ে তৈরী। শুনলে অনেকের কাছে মনে হবে বস্তির মতো দেখতে হবে তাহলে। কিন্তু না এতো ঘরবাড়ি থাকার সত্ত্বেও কোনো দিক দিয়ে এই শহরের সৌন্দর্য কমে নি। ঘোরার মতো অনেক জায়গা আছে সিটিতে। কিন্তু আমাকে তো সব রোমান্টিক জায়গা গুলোতে যেতে হবে। কারন একজনের মনে রোমান্স ভরে দিতে হবে। তো আমি মেক্সিকো সিটির সবচেয়ে বড় নদীটাই চললাম। নামটা আমার অজানা। এখানের মানুষ কি বলে জানি না। তবে আমি শুনেছি অনেক রোমান্টিক একটা জায়গা। আমি হাটতে ছিলাম। ভাবলাম পাশে সাইনার হাতটা ধরলে খারাপ হয় না। তো যেই ভাবা শেই কাজ। আমি হাত ধরে ফেললাম। সাইনা আমার হাত এক ঝটকায় ফেলে দিলো।
.
--এসব কি হচ্ছে।(চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে)
.
--কি হচ্ছে মানে। তুমিই তো বল্লা ভালোবাসবে আমায়। তো তোমার প্রেমিক হিসাবে তোমার হাত ধরার অধিকার আমার আছে।(আমি)
.
--ভালোবাসলে যে হাত ধরতে হবে সেটা কোনো কথা আছে।(সাইনা)
.
--আমি তো তোমার হাত ধরেছি শুধু। আর ঔদিকে ঔ দুজন ছেলে মেয়েকে দেখো ওরা দুজন দুজনকে জরিয়ে ধরে চুমু দিচ্ছে। ওরাও তো একে অপরকে ভালেবাসে।(আমি)
.
--হুমম কিন্তু।(সাইনা)
.
--কোনো কিন্তু নয়। হাতটা দাও আমি ধরে হাটবো।(আমি)
।।।
।।।
সাইনা আর কিছু বললো না। ভাবছে ভালো বিপদেই তো পরেছে সে। কিন্তু এখন সে এই ভালোবাসা জিনিসটা বুঝে গেছে। এতোক্ষন তো সে ভেবে নিয়েছিলো এটা মানে হয়তো বন্ধুত্ব। কিন্তু এমন হবে সেটা ভাবে নি। কিন্তু কি করার যা হওয়ার হয়ে গেছে। এখন যদি আমার কথা না শুনে তাহলে তো অনেক কিছু জানতে তার আবার বই পড়তে হবে। আবার আরেকদিকে আমার দিকে একটা টান ও অনুভব করতে ছিলো। এটা ছিলো অজানা এক টান যেটা আগে কখনো ফিল করে নি লু সাইনা।
।
আমি সাইনার হাত ধরে হাতছিলাম। চলে আসলাম পুকুরটাতে। এইটার নাইট ভিউ অনেক সুন্দর হয়। নামটা শুনেছিলাম অনেকটা অদ্ভুদ নাম পুকুরটার। তবে একটা জিনিস লক্ষ করলাম কেনো এখানে সব লাভারসরা আছে। পুকুরটার উপর দিয়ে একটা ব্রিজ রয়েছে। অবাক হলাম কারন এখানে সবাই একটা করে তালা মেরে চাবিটা নদীর পানিতে ফেলে দিচ্ছে। ভালোবাসাটাকে নাকি বন্ধি করে দিচ্ছে এভাবে। আমি সাইনাকে বল্লাম।
.
--আমরাও আমাদের ভালোবাসাকে বন্ধি করে ফেলি চলো।(আমি)
.
--এটা আমার বিশ্বাস হয় না।(সাইনা)
.
--তাহলে কি বিশ্বাস হয়?(আমি)
.
--আমার মনে হয় এই ফিলিংস গুলোকে এভাবে বন্ধ রাখতে নেই। এটাকে প্রমান করতে হয়।(সাইনা)
.
--তাহলে কি তালা না মেরে তুমি ভালোবাসা প্রমান করতে চাও।(আমি)
.
--হ্যা।(সাইনা)
.
--কি প্রমান চাও তুমি?(আমি)
.
--সবাই তো তালা মেরে সেটা পানিতে ফেলে দিচ্ছে। তালা আমি মারবো সেটাকে পানিতে ও আমি ফেলে তুমি। তুমি গিয়ে সেটা উঠিয়ে এনে যদি আমার ভালোবাসা খুলে দিতে পারো তাহলে প্রমান পেয়ে যাবো।(সাইনা)
.
--ওকে কোনো ব্যাপার না। প্রমান তোমাকে আমি দিবো। দারাও আমি তালা নিয়ে আসছি।(আমি)
।।।।
।।।।
আমি ব্রীজের পাশে থাকা দোকান থেকে তালা নিয়ে আসলাম। এখানে শুধু তালাই পাওয়া যায়। দোকানদারের তো সেই বেচাকেনা হয়। মনে হয় এতোদিনে তালা বিক্রী করে কোটিপতি হয়ে গেছে লোকটা। আমি একটা তালা নিলাম। পকেট থেকে ট্রিশুলটা বের করলাম। চাবিটাতে হালকা মার্ক করলাম। কিছুটা এনার্জি আমি ভিতরে রাখলাম। যেটা আমি পানির মধ্যে অনুভব করতে পারবো। তারপর তালাটা দিলাম সাইনার হাতে। সে তালা বেরে দিলো ব্রীজের সাইডের তার দিয়ে বানানো দেয়ালে। তারপর সেটা ফেলে দিলো পানিতে। পুরো জনগন আমার দিকে তাকিয়ে আছে। এটা তো একটা মরন খেলা। কোনোদিন ও কি সম্ভব কাঙ্খিত চাবিটা পাওয়া। কারন হাজার হাজার চাবি রয়েছে পানির নিচে। তার মাঝে নিজের চাবি পাওয়া তো সম্ভব না। হ্যা সেটা অন্য কারো কাছে সম্ভব না। কিন্তু আমার কাছে কোনো ব্যাপারই না। আমি আমার কাছে থাকা মানিব্যাগ আর মোবাইলটা দিয়ে দিলাম সাইনার হাতে। তারপর দিলাম জাম্প। আমার চাবিটা পেতে সময় লাগলো না। কারন নিজের ট্রিশুলের এনার্জি আমি ফিল করতে পারছিলাম। তাই চাবিটা হাতে নিলাম। কিন্তু এখনি উঠে গেলে তো হবে না। দুই মিনিট লেইট করি। আমি তো এভাবে সারাজীবন ও থাকতে পারবো। কিন্তু আবার ওতোক্ষন থাকলে ওর সন্দেহ হয়ে যাবে। তাই ঠিক দুই মিনিটের কিছু আগে আমি উঠে গেলাম উপরে। উঠেই আবার ব্রীজের কাছে চলে আসলাম। এসে লকটা খুলে দিলাম। সাইনা সহ সবাই অবাক হয়ে গেলো। এটা আমি কিভাবে করলাম। কারন এটা তো সম্ভব না। আসলেই তো নিচে যত চাবি আমি দেখেছি সেগুলো গলিয়ে লোহা বানালেও একজন মনে হয় বড়লোক হয়ে যাবে।
.
--কি ভালোবাসা কি পুরো খুলে দিয়েছি নাকি আরো কিছু খুলতে হবে।(আমি)
.
--হুমমম খুলে গেছে।(সাইনা)
.
--তাহলে তো ভালোই।(আমি)
.
--হুমমম। ঠান্ডা লাগছে না।(সাইনা আমার গায়ে হাত দিয়ে)
.
--আরে না।(আমি)
.
--ব্যাপার কি তোমার শরীর এতো তারাতারি শুকিয়ে গেলো?(সাইনা)
.
--আরে বইলো না যে রোদ। আর এমনিতেও আমার জামা ওয়াটার প্রুভ। ভিতরে পানি যায় না।(আমি)
.
--ও।(সাইনা)
.
--হুমমম। চলো ব্রীজের ঔপাশটাই যায়।(আমি)
।।।।।
।।।।।
সাইনাকে নিয়ে অপরপাশে চলে আসলাম। এই পাশেই একটা হোটেল আছে যেটা নদীটার পাশেই। সেটাই আমাদের জন্য একটা রুম ঠিক করলাম। কারন রাতেই নাকি জায়গাটার সৌন্দর্য্য দেখতে পাবো। আসলেই রাত হওয়ার পরই আমরা দেখতে পেলাম। পুকুরের পাশে সব কাপলরা জরো হয়েছে। মাঝখানে আগুন ধরিয়েছে। আর চারপাশ দিয়ে গ্রুপ হয়ে বসে একে অপরের সাথে গল্প করছে। আমি আর সাইনা ও ডিনার করে এখানে এসেই বসলাম। পুকুরের উপরে চাঁদের আলো পরেছে। সেটাতে মনে হচ্ছে জ্বলছে নিজের শক্তিতে। আবহাওয়া ও অনেক রোমান্টিক। এক ভাইয়া গিটার দিয়ে গান গাচ্ছিলো। আর আশে পাশের সবাই গল্প করছে জরিয়ে ধরছে আরো অনেক কিছু।
.
--ভালো লাগছে জায়গাটা?(আমি)
.
--হ্যা অনেক।(সাইনা)
.
--যাক তোমার ভালো লেগেছে তাতেই আমি খুশি।(আমি)
.
--তুমি তো ডিফেন্সের ব্যাপারে বলতে চেয়েছিলে?(সাইনা)
.
--আরে বাবা এতো রোমান্টিক জায়গায় তুমি এসব কথা তুলছো কেনো?(আমি)
.
--তাহলে?(সাইনা)
.
--আমার চোখের দিকে তাকাও।(আমি সাইনার হাত ধরে আমার দিকে ফিরালাম। আমার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে এক নজরে)
.
--হুমম।(সাইনা)
.
--এখন একটু আশে পাশে তাকাও।(আমি)
.
--হুমমম।(সাইনা আশেপাশে তাকালো। দেখলো সবাই তাদের প্রেমিকাকে চুমু দিচ্ছে নাহলে জরিয়ে ধরে আছে।)
.
--কিছু করতে মন চাচ্ছে না?(আমি)
.
--হুমমম।(সাইনা)
।।।।
।।।।
হুদায় কথা বলে সময় নষ্ট করে লাভ আছে। এলিয়েন চান্জ দিচ্ছে এটাকে তো আর মিস করা যায় না। তবে এটা বুঝেছি আমি একদিনেই ওর মনে জায়গা করে নিয়েছি। তবে এক ডোশে হবে না। আরো কয়েকটা ডোশ দিতে হবে। আমি ও আর সবার মতো আগাচ্ছিলাম ওর দিকে। লক্ষ ওর ঠোট। এক সময় লক্ষে পৌছাতে সক্ষম হলাম। মিষ্টি ঠোটের ছোয়া পেয়ে গেলাম। আমি তো আকাশ পরী,জলপরী, আর অর্ধেক মানুষ অর্ধেক আকাশপরীর ঠোটের ছোয়াও পেয়েছি। কিন্তু এটা ছিলো একদম সব থেকে আলাদা। সব থেকে কোমল। সব থেকে মিষ্টি। জানি না তবে ওর ঠোটের ছোয়া পেয়েই শরীরের রক্ত গরম হয়ে গেলো। তো রাতের সৌন্দর্য্য না দেখে আমি ওর সৌন্দর্য্য দেখাতেই সম্মতি দিলাম। ভেবেছিলাম এলিয়েন হিসাবে পুরো আলাদা হবে আমাদের থেকে। কিন্তু না একদম আমাদের মতোই। তবে কিছু একটা তো আলাদাই। কারন অনেক ভালোবাসা পেলাম ওর থেকে। মেয়ে হিসাবে খারাপ না। যাক চার নাম্বার রানী তো পূরন হয়েই যাবে।
।
সকালে উঠলাম। সাইনা শুয়ে ছিলো আমার বুকের উপরে। হয়তো এমন কিছু একটা হবে সেটা কল্পনা করে নি। তাও যা হয়ে গেছে সেটা তো মেনে নিতেই হবে। এখন তো আর কিছুই করার নাই। ও হালকা নরে উঠলো। আমি ওর কপালে একটা চুমু দিলাম।
.
--প্রিনসেস তাহলে উঠে ছে।(আমি)
.
--প্রিনসেস(অবাক হয়ে বললো)
.
--হ্যা তুমি তো আমার কাছে প্রিনসেসই।(আমি একটু শক্ত করে জরিয়ে ধরলাম)
.
--ওওও। আচ্ছা এখন ছারো তো।(সাইনা)
.
--উহু। কোনো ছাড়াছাড়ি নাই।(আমি)
.
--আরে ছাড়ো তো। কালকে যা করেছো গোসল করতে হবে তো।(সাইনা)
.
--চলো আমিও যাবো।(আমি)
.
--মোটেও না।(সাইনা নিজের জামা ঠিক করে বাথরুমের দিকে যাচ্ছিলো)
.
--আমি তো যাবোই।(আমি)
.
--একদম না।(সাইনা দৌড় দিয়ে চলে গেলো আর দরজা আটকে দিলো)
।।।
।।।
দুর মজাই নষ্ট হয়ে গেলো। আমি আলমারি খুললাম। দেখলাম জামা রয়েছে এখানেই। আমরা তো কিছুই আনি নি সাথে। এখান থেকেই পরে নিতে হবে। আর একটু পর শপিং এ যেতে হবে। দেখা যাক আরো কতটা ডোস দিতে পারি ওকে। আশা করি খুব তারাতারিই পাগল করতে পারবো সাইনাকে। ভাবলাম আরো কিছু দুষ্টুমি করি ওর সাথে। এখন তো মনে হয় শাওয়ার ছেড়ে গোসল করছে। দেয়ালে হাত দিলাম। পাইপের ভেতরের পানিকে অনুভব করতে লাগলাম। এবার গোসল করে দেখাও। আমাকে নিলা না গোসল করতে এবার পানি ছাড়া গোসল করো দেখি কেমন গোসল করতে পারো।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।
অপেক্ষা করুন ৬ষ্ঠ পার্টের জন্য।