#জলপরীর_প্রেমে#
#সিজন_২#
পার্টঃ০৮
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
।।।।।
।।।।।
আমি পুরো অবাক হলাম। কারন আমার সামনে আমিই কথা বলছিলাম। বইটা তো রাজা হারকিউমাসের। তাহলে আমিই কিভাবে আসলাম। হয়তো সেই রাজা আমার মতোই দেখতে হবে। দেখি রাজা কি বলে।
.
--অবাক হচ্ছো তাই না। কারন নিজেকেই দেখছো। অবাক হওয়ার কথায়। হয়তো ভাবছো রাজা হারকিউমাস দেখতে তোমার মতোই। হ্যা এটাও অবাক করার বিষয় তুমি যেটা ভাবছো সেটা আমি কিভাবে ভাবছি তাই না? থাক এতো তোমার মাথা ঘুরিয়ে লাভ নেই। তোমার মাথায় যথেষ্ট জ্ঞান আছে এটা বোঝার। হ্যা প্রথমেই বলে দি এখানে টাইম মেশিনের একটা প্রয়োগ হয়েছে। অবাক হচ্ছো টাইম মেশিন নামটা শুনে? টেলিপোর্টেশন যন্ত্র যদি থাকতে পারে এটা থাকবে না কেনো। অবশ্য বাকি ডিটেইলস তোমার এই বইতেই লেখা আছে। আমি তো শুধু তোমাকে চমক দিতে চেয়েছিলাম। বইটা হারিয়ো না। জানি হারাবে না। কারন আমার থেকে হারাই নি। বইতে যা লেখেছি আমি সেটা ফলো করো। তাহলেই তুমি কাঙ্খিত লক্ষে পোছাতে পারবে।(আমিই বল্লাম ভিডিওতে)
।।।।
।।।।
বুঝলাম না কাঙ্খিত লক্ষটা কি। আর অবাক করার বিষয় হচ্ছে টাইম মেশিন। কিভাবে সম্ভব এটা। হয়তো বিজ্ঞানের অনেক কিছু আছে যেটা আমার অজানা। আমার মাথায় এবার হালকা কিছু ঢুকেছে। সেটা হলো আমিই মহাজাগতিক রাজা হারকিউমাস। কিন্তু আমি তো হৃদয়। এভাবে যদি ও কোনোদিন আমি পাস্টে চলে যায় তাহলে আমি কেনো আমার নাম চেন্জ করবো। যাক সব কিছুর উত্তর আমি পাবো বইতে। তাই পরতে লাগলাম প্রথম পেইজ থেকে। বইয়ের লেখা গুলো এভাবে ছিলো,
.
--তুমি তো ট্রিশুল ব্যবহার করেছোই। আর সেটা ভাঙার পরই এখানে এসে বইটা পড়তেছো। একটা কথা কি জানো আমি ও এসেছিলাম তোমার মতোই এভাবে। তুমি তো ভাববে আমি তো তুমিই তাহলে তোমার আগে আমি কিভাবে আসলাম। কথা হচ্ছে সময় চক্র নিয়ে যেটা সম্পর্কে ভালো ধারনাই তোমার আছে। আমিই তোমার ভবিষ্যৎ যেটা একবার হয়েছে। আর সেই ভবিষ্যৎ শুধু আমার পুরাতন জীবনের কিছু সাহায্য করতে চাই। তুমি একটু পর যেখানে যাবে এক সময় আমি ও গিয়েছিলাম। সব আমার লেখা বইয়ের মতো চলো দেখবে সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে। এখন সিন্দুকটা সরাও দেখবে মেঝেতে একটা দরজা পাবে। সেটাই তোমার হাত দিয়ে স্পর্শ করো দেখবে খুলে একটা সিড়ি পাবে। তখন সিড়ি বেয়ে নিচে নামতে থাকো। দেখবে একটা বড় রুমে পৌছে যাবে।
।।।
।।।
আমি বইটা বন্ধ করে হাতে নিলাম। তারপর সিন্দুকটা সরালাম। তারপর নিচে নামতে থাকলাম। নিচে নেমে পৌছে গেলাম বিশাল একটা রুমে। আবারো বইটা পড়তে লাগলাম।
.
--এরপর পাশেই দেখতে পাবে একটা আলনা রয়েছে যেটা দরজা দিয়ে আটকানো। সেটাই হাত দিলেই খুলে যাবে। তারপর ভিতরে থাকা অস্ত্র আর সুরক্ষার পোশাক পরে নাও। পাশে দেখতে পাবে একটা মূল্যমান ধাতুর রকেট রয়েছে। এটা গলায় ঝুলিয়ে রাখো যেনো দুর থেকে সবাই দেখতে পাই সেটা। এখন রুমের মাঝখানে দেখো বিশাল গাড়ির মতো কিছু একটা আছে কাপড় দিয়ে ঢাকা। সেটাই টাইমমেশিন। টাইম সেট করা আছে। ভিতরে বসে শুধু লাল সুইচটা চাপ দিবা।(বইয়ে)
।
।
আমি কথা মতো সবই করলাম। দেখলাম ভালোই কিছু অস্ত্র রয়েছে। অনেকটা এলিয়েন গান এর মতো জিনিস আমার হাতে। তারপর যে পোশাকটা পরেছি মনে হয় না কোনো গুলি ভেদ করে এর ভিতর দিয়ে যেতে পারবে। অনেকটা দুর্ভেদ্য বানিয়ে দিয়েছে আমাকে। এরপর বিশাল ময়লা কাপড়টা টাইম মেশিন থেকে সরিয়ে নিলাম। টাইম মেশিনটা দেখতে বড়ই অদ্ভুদ। দেখে মনে হয় না এটা আমাদের পৃথিবীর মডেল। আমি কিছুই করলাম না। বইয়ে লেখা ছিলো শুধু লাল সুইচটা চাপ দিতে। তাই আমি লাল সুইচটা চাপ দিলাম। সাথে সাথেই টাইম মেশিনটা চালু হয়ে গেলো। টাইম মেশিনটা দেখতে অনেকটা গোল বলের মতো। আমি ভিতরে থেকে একটু তো ভয় পেলামই। কারন আশে পাশে শুধু বড় ঘড়ির কাটা দেখতে লাগলাম। এগুলো শুধু নাম করা ছবির সিনেই দেখেছি। আজ যে সামনে থেকে দেখবো সেটা ভাবি নি। আমি শক্ত করে বসে রইলাম। সিট বেল লাগিয়ে বসেছি। সুরক্ষার ব্যাপাট সেপার তো আছে তাই না।।
।
প্রথম টাইম ট্রাভেল বলে কথা। অনেক ইচ্ছা ছিলো নিজেই কোনোদিন এই টাইম মেশিন তৈরী করবো। কিন্তু সেই আশা আশাই থেকে গেলো। কথা কিন্তু নিজের না হলেও অন্যের টাইম মেশিন দিয়ে তো প্রথমবারের মতো আমি ট্রাভেল করবো। আমি টাইম রেডারে তাকালাম। এখন তো ২০১৯ কিন্তু সেখানে আজকের ডেটই ঠিক করা। কিন্তু সনটা -১০৯৮। মানে শূন্য সনের আরো ১০৯৮ সাল আগে যাচ্ছি আমি। মানুষ কি ছিলো। আরে থাকবেই তো। কিন্তু কেমন হবে তারা কথা গুহায় থাকবে নাকি ঘরবাড়ি বানানো শিখেছে। কি জানি। সব তো ঔখানে যাওয়ার পরই দেখা যাবে। একটু পরই আমার মাথা ঘোরা শুরু করে দিলো। কল্পনা করি নি টাইম ট্রাভেল এতো বেদনা দায়ক হবে। বেশীক্ষন লাগলো না যেতে। পৌছে গেলাম ঘন একটা জঙ্গল। বুঝলাম না কোথায় আছি। যেদিকে চোখ যাচ্ছে শুধু গাছ আর গাছ। চোখ ঝুরিয়ে যাচ্ছে এতো গাছ দেখে। ভাবতেই অবাক লাগছে আমরা এতো সুন্দর পৃথিবীটাকে আরো সুন্দর করার লোভে কি করে ফেলছি। যেদিকে চোখ যাচ্ছে বনের শেষ নেই। হয়তো প্রানীরাও এমনই হবে। না আবার ডাইনাসোর এর সময়ে চলে আসলাম। জানি না বইয়ে কি লেখা আছে দেখতে হবে।
.
--অনেক আশ্চর্যের মধ্যে আছো। কারন আমি ও ছিলাম। এখন তোমাকে কিছুই করতে হবে না। তোমার বর্মের পকেটে দেখতে পাবে একটা কম্পাস দেখতে পাবে। সেটা ফলো করে যেতে থাকো উত্তর দিকে। উত্তর দিকে গেলেই দেখতে পাবে একটা পাথর দিয়ে বানানো দেওয়াল। সেটার ভিতরে একটা রাজ্য রয়েছে। যেটার রাজাদের হারকিউমাস বলা হয়ে থাকে। তুমি ঔ রাজ্যে ঢোকার দরজায় গিয়ে দাড়িয়ে থাকবে। প্রশ্ন থাকতে পারে যদি তোমার উপর হামলা করে ওরা তাইনা? হ্যা তারা প্রথমে গুনে গুনে ৫ টা তীর ছুরবে তোমার দিকে। সেটা তোমার বর্মে ঠেকে যাবে। ঠেকে যাওয়ার পরে তারা অনেকটা অবাক হবে। তোমার কাছে আসবে তোমার গলায় রকেট টা দেখবে। তারা যা বলে শুধু হ্যা হ্যা করে যাবে। বাকি জিনিস নিজেই বুঝে যাবে।(বইয়ে)
।।।
।।।
বলে কি আমার শরীরে তীর ছুরবে। অবশ্য এমনিতেও কিছুই হতো না সেই তীরে। তা ও আমাকে এটাই করতে হবে। বাকি কোনো রাস্তা নাই। বইয়ে লেখা জিনিস ফলো না করলে যে আমি লু চিন কে হারাতে পারবো না। কিন্তু শেষ মেষে আমাকে কোথায় নিয়ে যাবে জিনিসটা সেটাই দেখার বিষয়। আমি চলে আসলাম উত্তরে। সত্ত্বিই বিশাল একটা রাজ্য দেখলাম। ভিতরে কি জানি না। কিন্তু অনেক উচু করে দেওয়াল বানানো। যতদূর দেখি শুধু দেখতেই হয়। বিশাল এলাকা নিয়ে রাজ্যটা বানানো। দরজা আছে কোথায় সেটা কিভাবে জানবো। দেখা যাক হেটে দেখি একপাশে। হাটতে লাগলাম ঠিকই কিন্তু কোথাও দরজা পেলাম না। এখন পিছনে যাবো কেনো সামনেই যাই। হ্যা সামনেই পেয়ে গেলাম। কিন্তু দেখলাম বড় গেইট। সেটার পাহাড়া দেওয়া জন্য সেটার উপরে ১০ থেকে ১২ জন তীর হাতে নিয়ে দাড়িয়ে আছে। যা হবে কপালে আমি সাহস দেখিয়ে সামনে আগাতে থাকলাম। ঠিকই তারা গুনে গুনে পাঁচটা তীর মারলো। তবে দেখলাম আমার পরা বর্মে দেখে সেগুলো নিচে পরে যাচ্ছে। ভালোই লাগলো আমি তো সুপারম্যান হয়ে গেছি। শুধু এখন যদি নিজেই উড়তে পারতাম তাহলে কতোই না ভালো হতো। কিন্তু সেটা সম্ভব হবে কিনা জানি না। দেখলাম দূর থেকে তারা থেমে গেছে। বুঝলাম না কি হবে। কিন্তু বইয়ে তো আছে এখন তারাই আমার কাছে আসবে। এসে কি করবে জানি না। যদি বন্ধি করে রাখে আমাকে। অবশ্য এরা সবাই মানুষ এদের থেকে তো আর আমার ভয় নাই। কারন আমার শরীরে তো জ্বীনদের শক্তি রয়েছে।
।
একটু পরই দেখতে পেলাম বিশাল কাঠের দরজা উপর থেকে খুলে যাচ্ছে। ভিতরে অসংখ্যা সৈন্য। আমি যা ভেবেছিলাম তার থেকে ভয়ানক। ভেবেছিলাম যদি আক্রমন করে তাহলে সব গুলোকে মেরে গুড়ো করে দিবো। কিন্তু এতো দেখি পুরো হাজারের উপরে সৈন্য। এতো সৈন্য আমি কি করে হারাবো। তাও সাহস করে আমি সামনে আগাতে লাগলাম। আমার সামনে যাওয়াতে দেখলাম একটা লোক আমার কাছে আসছিলো। দেখে মনে হচ্ছে লোকটাই সেনাপতি। আমার কাছে এসে আমার গলার রকেটটা দেখলো। তারপর সে নিজেই আমাকে কুর্নিশ করলো। সেই সাথে তার পিছনে সকল সেনারাই আমাকে নিচু হয়ে কুর্নিশ করলো। আমি তো পুরোই চমকে গেলাম।
.
--মহারাজ হারকিউমাস। আপনাকে না চিনে আপনার উপরে তীর চালানোর জন্য আমাকে মাফ করবেন।(আমার পাশে দাড়ানো লোকটা বললো)
.
--হুমমম।(বইয়ে লেখা ছিলো কোনো কথা না বলতে। প্রশ্ন জাগতেছে আমাকে রাজা হারকিউমাস বলছে কেনো এরা)
.
--মহারাজ আমরা আপনার অপেক্ষাতেই ছিলাম। কবে যে আপনি আসবেন। আর আমাদের রাজা ছাড়া এই রাজ্যের ভার আপনি নিবেন।(লোকটা)
.
--...(আমি চুপ রয়েছি। একটু বোঝার চেষ্টা করতেছি)
।।।।
।।।।
একটু পর আরেকটা লোক এলো। দেখে মনে হচ্ছে মন্ত্রী টাইপের কিছু একটা হবে সে। আমার কাছে এসে পাশের সেনাপতি টাইপের লোকটার সাথে কথা বললো। তারপর সে আমার গলার রকেটতা দেখে সে ও আমার সামনে কুর্নিশ করলো।
.
--আমরা অত্যন্ত দুঃখিত মহারাজ হারকিউমাস। আপনি এখন আমাদের সাথে চলুন আপনার শাহী রাজ মহলে। আমি আপনার মন্ত্রী হিরাস। আর এই হলো আপনার সেনাপতি রুখিল।(হিরাস)
.
--চলুন।(অনেকটা জিনিস বুঝে গেছি। আর বাকিটুকুও আস্তে আস্তে বুঝতে পারবো। সেটার জন্য আমাকে অপেক্ষা করতে হবে)
।।।।
।।।।
একটা রথ গাড়ি আসলো। সেটাতে আমি উঠলাম। পাশে মন্ত্রী এসে বসলো। বুঝতে পারলাম না কি হবে। কিন্তু তাও যাওয়া যাক যা হবে হোক। আপাতোতো যা হচ্ছে সেটা হতে দিতেই হবে। চারপাশ দেখতে দেখতে যাচ্ছিলাম আমি। বাড়িগুলো মনে হচ্ছিলো সব পাথরের তৈরী। ভালোই লাগছে দেখতে। চোখ ঝুরিয়ে যাচ্ছে সব দেখতে দেখতে।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।
অপেক্ষা করুন ৯ম পার্টের জন্য।