ওয়েবসাইট কাস্টমাইজেশন এর জন্য। Contact Us Welcome!

জলপরীর প্রেমে ২ পর্বঃ ২১

Bangla Dub Novels


 #জলপরীর_প্রেমে#

#সিজন_2#

পার্টঃ২১

লেখকঃহৃদয় বাপ্পী 

।।।।।।

।।।।।।

।।।।।।

আমি শুয়ে ঘুমাচ্ছিলাম। সকালে উঠলাম ঘুম থেকে হৃদিতার ডাকে। ও আলতো করে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলো আর আমাকে আস্তে আস্তে ডাকছিলো। এই কয়েকদিনেই আমি হৃদিতার উপরে অনেকটা দুর্বল হয়ে পরেছি। ধরতে গেলে আমার পুরোটার বেশীর ভাগ জুরেই এখন শুধু হৃদিতা। হয়তো ওকে আগে পেলে আর কাউকেই লাগতো না। আমি বুঝতে পেরেছি মানুষের মতো মনে মানুষ পরীরা কখনো হয় না। পরীদের দেখতেই শুধু সুন্দরী মনে হয়। কিন্তু মনের দিক দিয়ে ওরা কখনো মানুষের থেকে জয়ী হতে পারে না। আমি কখনো কারো প্রতি এতোটা টান অনুভব করি নি যতটা না হৃদিতার উপরে করি। আসলেই ওর মাঝে অন্য রকম কিছু আছে। হ্যা এমনিতেও ও সবার থেকে আলাদা সেটা তো সবাই জানে। আমাকে ডাকতে ছিলো আমি ওর ডাকে সারা দিলাম।

.

--কি হলো ডাকছেন কেনো?(আমি)

.

--আর কতো ঘুমাবেন। মন্ত্রী একটু আগে এসেছিলো আপনাকে ডাকতে বলে চলে গেলো।(হৃদিতা)

.

--কেনো জরুরী কোনো কাজ আছে নাকি?(আমি)

.

--সেটা আমি কিভাবে বলবো। সেটা মন্ত্রীই বলতে পারবে।(হৃদি)

.

--ও আচ্ছা আমি শুনে আসি।(আমি)

।।।।

।।।।

আমি গোসল করে চলে আসলাম রাজ দরবারে। এসে সিংহাসনে বসলাম। 

.

--মহারাজ বড় একটা ঝামেলা হয়ে গেছে। কি করবো কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।(মন্ত্রী)

.

--কি হয়েছে মন্ত্রী।(আমি)

.

--আজকে সকালেই ৫০ জনের মতো মানুষ এসেছে আমাদের রাজ্যে। তাদের আগে কখনো দেখি নি। হয়তো ভিন্ন রাজ্যের কেউ হবে। তাই আমরা তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলাম তারা কে?কোন রাজ্য থেকে এসেছে? তখন তারা জলপুরীর কথা বললো। আর এটাও বললো আমরা নাকি চিনবো না সে রাজ্য।(মন্ত্রী)

.

--আরো কিছু কি বলেছে?(আমি)

.

--হ্যা বলেছে আমাদের রাজ্যের একজনই নাকি তাদের এখানে আসতে বলেছে।(মন্ত্রী)

.

--সমস্যা নাই আপনি তাদেরকে এখানে ডাকুন।(আমি)

.

--জ্বী মহারাজ।(মন্ত্রী)

.

--আর হ্যা সিগমাকেও আমার কাছে পাঠিয়ে দিন।(আমি)

.

--জ্বী মহারাজ।(মন্ত্রী)

।।।।

।।।।

মন্ত্রী দুইজন রক্ষীকে আদেশ দিলো। তাদের একজন জলপুরীর নিবাসীদের নিয়ে আসলেন আরেক জন সিগমাকে নিয়ে আসলেন। আমাকে দেখে তারা বিস্মিত হলেন। তারা হয়তো আমাকে রাজার সিংহাসনে আশা করে নি। হয়তো তারা ভাবছে একজন মানুষ হয়ে আমি এতো শক্তির অধিকারী কিভাবে হলাম। তাদের কাছে ট্রিশুল আর এই তলোয়ারের ঘটনা হয়তো অজানা। কিন্তু তারা এর ভয়াবহতা খেয়াল করেছে। আর বুঝেছে আমি কি করতে পারি।

.

--তো আপনিই জলপুরীর রাজা।(আমি রাজার উদ্দেশ্যে বল্লাম)

.

--হ্যা। আমি রাজা হ্যারিকাস টিটান।(হ্যারি)

.

--আমি হারকিউমাস যে রাজ্যে এখন আপনি দাড়িয়ে আছেন আমি সেটার রাজা।(আমি)

.

--আপনিই কি গতরাতে জলপুরীতে আক্রমন করেছিলেন?(হ্যারি)

.

--হ্যা।(আমি)

.

--আপনার জন্য কত জল প্রানীর জীবন গিয়েছে সেটা কি ভেবেছেন?(হ্যারি)

.

--সেটা আপনাদের ভুলের জন্যই হয়েছে। জলপুরী রাজ্যের সবাই এতো নিষ্ঠুর হবে আমি ভাবি নি। আমি কি প্রথমে আপনাদের হত্যা করতে গিয়েছি ঔখানে। আমি তো আপনাদের রাজ্য ঘুরতে গিয়েছিলাম। আর আপনারা কি করলেন আমাকে আটকে বল্লম ছুরতে লাগলেন। ভাগ্য ভালো যে আপনারা বেচে আছেন নাহলে আপনারাও এখন কুপোকাত হয়ে যেতেন।(আমি)

.

--আমরা যেটা করেছি সেটার জন্য আমরা অত্যন্ত দুঃখিত। আসলে রাজ্যের নিরপত্তার জন্য আমাদের সেটা করতে হয়।(হ্যারি)

.

--সেটা কি রকম নিরাপত্তা। আমার মিত্র যদি সেখানে না আসতো তাহলে কি যে হতো সেটাই আমি ভাবছি। এতোক্ষনে আমাকে মেরে আপনি আপনার কন্যার বিয়ে দিতেন যে আমাকে পুরো পুরি মারতো।(হ্যারি)

.

--এমন ভুল আর হবে না।(হ্যারি)

.

--আপনাদের আমি এখানে আসতে বলেছিলাম যাতে আপনারা বাচতে পারেন।(আমি)

.

--আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সেটার জন্য। আমরা সেখান থেকে খুব কষ্টেই বেচে এসেছি। আকাশপুরীর সৈন্যরা আমাদের যাকেই পাচ্ছিলো তাকেই হত্যা করছিলো। শেষ পর্যন্ত আমরা ৫০ জনই বেচে আসতে পেরেছি সেখান থেকে।(হ্যারি কথাটা বললো। আর তখনি সিগমা আমার পাশে এসে দাড়ালো)

.

--ও। আপনাদের উপরে তাহলে আকাশপুরীর রাজা আক্রমন করেছে। কিন্তু আমার জানা মতে আপনাদের সৈন্যরা তাদের থেকে অনেক শক্তিশালী। আর তারা তো জানে না যে আমি আপনাদের উপরে আক্রমন করবো। তাহলে তারা কোন সাহসে আপনাদের উপরে আক্রমন করতে আসলো তাউ আবার পানির ভিতরে তারা যাচ্ছে কিভাবে?(আমি)

.

--আমরাও অনেক আশ্চর্য হয়েছি সেটা দেখে। তারা তো পানির নিচে আসলো মানুষের মতোই দম আটকে মারা যায়। তাদের ডানাও পানিতে ভিজলে কাজ করে না। কিন্তু তারা একা আসে নি। তাদের সাথে আরো একজন ছিলো।(হ্যারি)

.

--কে ছিলো?(আমি)

.

--উনার মতোই একজন ছিলো। আপনি যখন আমাদের উপরে আক্রমন করলেন তখন উনি যে শক্তি দিয়ে আমাদের রক্ষা করলেন ঔ লোকটাও একই রকম জিনিস ব্যবহার করে।(হ্যারি সিগমাকে উদ্দেশ্য করে বললো ও)

.

--ওর শরীর চোখ কি লাল হয়ে যায়?(সিগমা)

.

--হ্যা।(হ্যারি)

.

--মহারাজ এটা হিগমা ছাড়া অন্যকেউ হতে পারে না।(সিগমা)

.

--হিগমা। হিগমা ঔখানে যাবে কেনো। আর হিগমার যদি কিছুই না হয়ে থাকে তাহলে মহারানীর উপরে ওর জাদু শেষ হয়ে গেলো কেনো?(আমি)

.

--সেটা আমি জানি না। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে হিগমা অনেক শক্তিশালী হয়ে গিয়েছে আগের থেকে।(সিগমা)

.

--হ্যা হবে হয়তো।(আমি) 

.

--ওরা আমাদের রাজ্যে এসেছিলো কিছু খুজতে।(হ্যারি)

.

--খুজতে? কি খুজতে।(আমি অবাক হয়ে বল্লাম)

.

--এটা বলা যাবে না। অনেক গোপনীয় একটা বিষয়।(হ্যারি)

.

--আমার কাছে গোপন না রেখে বলে দিন। বিশ্বাস করতে পারেন আমায়।(আমি)

.

--কিন্তু।(হ্যারি)

.

--বলেন বললেই আমি সাহায্য করতে পারবো।(আমি)

.

--ওরা ব্লাক হার্ট খুজতে আসছিলো।(হ্যারি)

.

--ব্লাক হার্ট সেটা আবার কি?(আমি)

.

--সংরক্ষিত একটা অত্যন্ত ক্ষমতাধারী গুহা। যেখানে রয়েছে পাপী শক্তি। এই শক্তি আজ পর্যন্ত মাত্র দুই ব্যক্তিই নিজের করতে পেরেছিলো। কিন্তু দুজনকেই এই শক্তি শেষ করে দিয়েছিলো। তারা যেমন এই দুনিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তি হয়েছিলো তেমনই সবচেয়ে খারাপ মৃত্যু হয়েছিলো তাদের।(হ্যারি)

.

--কিভাবে মরেছিলো তারা?(আমি)

.

--এই শক্তি তাদের দেহকে পছন্দ করে নাই তাই তাদের দেহকে টুকরো টুকরো করে বের হয়ে যায়। দুইবারই এক অলৌকিক ব্যক্তি এসে এই শক্তিকে ঔ গুহায় আটকে দিয়ে চলে আসে।(হ্যারি)

.

--মহারাজ এখন হিগমা ঔ শক্তিই নিজের করতে চাই। একবার যদি হিগমা সফল হয় তাহলে এই পুরো বিশ্ব ধ্বংস করে দিতে পারবে ও।(সিগমা)

.

--সেটা হবে না। আপনি চিন্তা কইরেন না সিগমা। তো রাজা হ্যারিকাস টিটান আপনি কি জানেন সেই গুহা কোথায়?(আমি)

.

--না মহারাজ। এর নক্সা আমাদের গুপ্ত ঘরে বন্ধ ছিলো৷ কিন্তু আপনি তো পুরো জলপুরী তছনছ করে দিয়েছেন। তাই আর সেই নক্সাটাও নাই এখন। তবে শুনেছিলাম এটা নাকি সেই বিশাল গর্তের ভিতরে।(হ্যারি)

.

--সেই গর্তের ভিতরে।(আমি সিগমার দিকে তাকালাম)

.

--মহারাজ হতে পারে। সেখানে তো অনেক সুরঙ্গ রয়েছে। কোনো একটার ভিতর দিয়ে যেতে হবে হয়তো। কিন্তু অন্ধকারে তো খোজা অসম্ভব।(হিগমা)

.

--হুমমম ঠিক বলেছেন।(আমি)

.

--তাহলে মহারাজ এখন কি করবেন?(সিগমা)

.

--কি করবো আর বের হবো আমি আর আপনি।(আমি)

.

--চলুন মহারাজ।(সিগমা)

.

--আপনারা যেখানে যাবেন আমাকেও নিয়ে চলুন আপনাদের সাথে।(দেখে মনে হলো রাজার ছেলে বলে উঠলো)

.

--তুমি চুপ থাকো এসব বিপদ্দজনক জায়গায় তোমাকে যেতে হবে না।(হ্যারি তার ছেলেকে বলে উঠলো)

।।।।।।। 

।।।।।।।

আমি এবার খেয়াল করলাম। এতোক্ষনে তাদের সবার ভয় কমে গেছে। তার আগে আমাকে দেখেই ওরা ভয়ে কাপছিলো। দেখলাম এখনো রাজার মেয়েটা ভয় পাচ্ছে। কিন্তু রাজার ছেলেটা ভয় কাটিয়ে আমাদের সাথে যেতে চাচ্ছে। নিয়েই যাওয়া যাক। আমার তো আগ্রহ কমছে না। কারন আমি ব্লাক ম্যাজিকের ঠিকানা পেয়েছি। ব্লাক হার্ট গুহার  মাঝেই তো ব্লাক ম্যাজিককে আটকে রাখা হয়েছে। যেটাকে আমার করে নিতে হবে। নাহলে ঔ এলিয়েনটার সাথে কি আমি পেরে উঠতে পারবো। অবশ্যই পারবো না। 

.

--মহারাজ হারকিউমাস আমাকে ও আপনি নিয়ে চলুন আপনার সাথে।(ছেলেটা)

.

--ঠিক আছে চলেন।(আমি)

.

--মহারাজ কোথায় চললেন আপনি?(মন্ত্রী)

.

--মন্ত্রী আমি যাচ্ছি বিশাল একটা গুপ্তধন খুজতে। যেটার অপেক্ষায় আমি আছি অনেক দিন যাবৎ। রাজ্যের সকল দায়ভার চালাবে মহারানী আমি যতদিন পর্যন্ত না আসছি ততদিন।(আমি)

.

--কিন্তু মহারাজ(মন্ত্রী)

.

--আর কোনো কথা নই মন্ত্রী আমি যেটা বলেছি সেটাই করেন। আমি রানীর সাথে কথা বলে বের হচ্ছি।(আমি)

।।।।।

।।।।।

আমি আমার কক্ষে চলে আসলাম। 

.

--আপনি আবার যাবেন পানিতে?(হৃদিতা)

.

--আপনি কিভাবে জানলেন?(আমি)

.

--দেখেছি সব এখানে বসেই।(হৃদিতা)

.

--ওওওও।(আমি হাসলাম কারন দেখতে পেলাম বিছানায় বসে সে এখানেই টিভি বানিয়ে দেখতে ছিলো আমাদের এতোক্ষন)

.

--আপনি কোনো চিন্তা করবেন না আমি ঠিকই সব সামলে নিবো।(হৃদিতা)

.

--এই রকেট আপনার গলায় কিভাবে?(আমি)

.

--যেদিন আপনি বললেন আমাকে উড়াতে পারবেন নাকি সেদিন পেয়েছিলাম নিচে এটা। প্রথমে আপনার গলায় দেখেছিলাম এই রকেটটা। তাই ভাবলাম আপনার হবে। কিন্তু জানি না কেনো রকেটটা ধরার পর আমি অন্যরকম অনুভব করলাম। পরে দেখতে চাইলাম কেমন লাগে। তাই গলায় দিয়েছিলাম। খুলে দিবো কি?(হৃদিতা)

.

--না ভুলেও খুলবেন না। এটা আমাদের স্বামী স্ত্রীর প্রতীক। সব সময় আপনি গলায় রাখবেন এটা।(আমি)

.

--ওকে ঠিক আছে।(হৃদিতা)

.

--তাহলে থাকুন আপনি আমি যাচ্ছি।(আমি)

।।।।

।।।।

আমি হৃদিতার কপালে একটা চুমু দিলাম। তারপরে বের হয়ে গেলাম ঘর থেকে। বাইরে এসে দেখলাম সিগমা বসে আছে সেদিনের সেই গাছের গুড়ির উপরে। আল্লাহ আমাকে বাচাও। আমি উঠবো না।

.

--মহারাজ চলে আসুন আরেকটু মজা নেওয়া যাক।(সিগমা)

.

--আমি রোলার কোস্টারে কখনো উঠি নি। কিন্তু এটাই উঠে সেটার মজা বুঝে গেছি। আমি উঠছি না এটার উপরে। (আমি ট্রিশুল দিয়ে এটাকে আঘাত করলাম। কেটে দুই ভাগ হয়ে গেলো)

.

--কি করলেন মহারাজ।(সিগমা)

.

--ভালোই করেছি আমি উঠছি না।(আমি)

.

--আচ্ছা আরেকটা জিনিস ট্রাই করি তাহলে।(সিগমা)

.

--কি?(আমি)

।।।।

।।।।

আমাকে নিয়ে সিগমা প্রাসাদের সবচেয়ে উপরে চলে আসলো। নিচে তাকালাম বাবা দেখে মনে হচ্ছে ১০ তালা তো হবে। তখনকার দিনে এতো বড় রাজ প্রাসাদ বানানো বরাবরই স্বপ্নের মতো। আমার তো উচুতে আগে হাটু কাপতো। তবে এখন কাপে না। ভাবলাম সিগমা হতো নতুন কিছু করবে। কিন্তু বান্জি জাম্পিং করবে সেটা কে জানে। আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে ও লাফ দিলো। আমি তো মনে হয় এবার শেষ। আমি চোখ বন্ধ করে নিলাম। যা আমাকে আল্লাহর কাছে মনে হয় পৌছে দিবে। আমি ট্রিশুলটা বের করলাম। শক্ত করে ধরে কিছু একটা করতে যাবো তখনি মনে হলো কেউ আমাকে শক্ত করে ধরেছে। আমি দেখতে পেলাম বিশাল একটা সাদা ঈগল পাখি। জীবনে এমন কিছু দেখবো সেটা ভাবি নি কখনো। সিগমা আমার পেট শক্ত করে ধরেছে ওর দুই পায়ের নখ দিয়ে। আমাকে শক্ত করে ধরে ও উপরে উঠতে ছিলো। উপরে উঠেই আমাকে ছেড়ে দিলো।

--আল্লাহ আমাকে বাচাউ এই জল্লাদ পাখিটা থেকে। এটা দেখি আমাকে উপর থেকে ফেলে মেরে ফেলবে। একবার পানিতে যেতে দে সিগমার বাচ্চা তোকে বোঝাবো কত ধানে কত চাল।(আমি আবুল টাবুল বক বক করতে ছিলাম)

।।।।

।।।।

।।।।

সিগমা উপর থেকে উড়ে এসে আমাকে ওর পিঠে বসালো। এখন যদি একটা মোবাইল ফোন থাকতো তাহলে একটা সেলফি তুলতাম আমি। কেউ তো জীবনে কখনো ঈগলের উপরে এভাবে উড়ে নাই। এটা অন্য রকম একটা ফিলিংস। এভাবে যে ঈগলের উড়ে নাই কেউ কখনো। বিশাল সাদা ঈগলটা আমাকে নিয়ে চলে গেলো সাগরের দিকে। একদম বার্মুডা ট্রাঙ্গেলের উপরে এসে থামলো পাখিটা। জানি না এই আমলে এই জায়গাটাকে কি বলে। তবে আমার এখন ফ্লোরিডায় যেতে মন চাচ্ছে অনেক। জানি ফ্লোরিডা এখন পানির নিচে তাই এখন আর গলদা চিংড়ির রোস্ট খাওয়ার ইচ্ছা পূরন হলো না। সেই থাই স্যুপটার টেস্ট ও এখনো মুখে লেগে আছে। ইস কি দিন ছিলো। আর হঠাৎ করেই সেই এলিয়েনটা এসে এসব সুখের দিনের বারোটা বাজিয়ে দিলো। কোনো ভিশা পাসপোর্ট ছাড়াই আমি দেশ বিদেশ ঘুরতাম কত সুখে। কিন্তু আজ সেই সুখের দিনের বারোটা বেজেছে। এখনো তো চাইলে আমি ঘুরতে পারি এই রাজ্য থেকে আরেক রাজ্য কিন্তু এখন কি আর মজা পাবো। এখনো তো আর সৌন্দর্যই ভোগ করতে পারবো না। সিগমা আমাকে ফেলে দিলো পানি তে। এবং নিজেও মানুষের রূপ নিয়ে নিলো। আমরা দুজনেই পানিতে পরতে লাগলাম। সিগমা পানিতে পরার আগেই একটা সমুদ্র ঘোড়া হয়ে গেলো। যেটার আকার আমার থেকে দ্বিগুন। আমি ও পানিতে পরে গেলাম। এবারের লাফ দেওয়াতে আমি কিছুটা শান্তি পেলাম। কারন এতো উপর থেকে ডলফিনের মতো করে লাফ কয়জনেই বা দিতে পারে। আমি পানিতে নামার পরে মনে পরলো জলপুরীর রাজকুমার তো আসতে চেয়েছিলো তাকে না এনেই তো চলে আসলাম আমরা। 

থাক এসে যখন গিয়েছি তখন ভালোই হয়েছে। অনেক ইচ্ছা ছিলো তলোয়ার নিয়ে কিছুক্ষন প্রশিক্ষন নেওয়ার। তলোয়ারের ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রন করতে শিখতে হবে। সময় তো বের হয় না। তাই এখন সময় বের করেছি যখন তাহলে প্রথমে সেখানেই যাওয়া যাক।

.

--সিগমা চলুন সেই আপেল গাছের কাছে।(আমি)

।।।।

।।।।

আমি উঠলাম সিগমার পিঠে। সামুদ্রিক ঘোড়ায় এখনো উঠা হয় নাই। যেসব আগে দেখেছিলাম সেসব অনেক ছোট আকারে। বুঝি না এসব অদ্ভুদ অদ্ভুদ প্রানী কেনো হয় সিগমা। একবার এক প্রানী হলেই তো পারে সে। আমি ঘোড়ার পিঠে বসলাম। মনে হচ্ছিলো পানির মধ্যে তেজি ঘোড়া নিয়ে ছুটছিলাম। আমি তো পানির মধ্যে কথা বলতে পারি। কিন্তু সিগমা কোনো প্রানী হলেও কথা বলতে পারে না। কিন্তু দেখছি ইদানিং ও আর ওর কন্ট্রোল হারাচ্ছে না। মানে বুঝতে পারলাম ওর উপরে হিগমার জাদু পুরোপুরি শেষ হয়ে গেছে। তবে মানতে হবে হিগমা অনেক শক্তিশালী। ওকে হারাতে গেলে অনেক দমের প্রয়োজন হবে। তবে সেটার জন্য আমাকে এই ট্রিশুল আর তলোয়ার ব্যবহারে পারদর্শী হতে হবে।

আমি যদি এই দুই অস্ত্রে একটাতে পারদর্শী হতে পারি তাহলে কেউই আমাকে হারাতে পারবে না। আমি কোনো রকম ট্রিশুল চালাতে শিখেছি। কারন এর আগে কখনো ট্রিশুল নিয়ে সেভাবে প্রশিক্ষন হয় নি। তবে ছোট থেকেই আমি তলোয়ারে পারদর্শী ছিলাম। আমার দাদা একজন ক্যারাটের শিক্ষক ছিলেন। তিনি বিভিন্ন ধরনের ক্যারাটে শিখাতেন। তার কাছ থেকে আমার বাবা শিখেছে। আর আমার বাবার কাছ থেকে শুধু আমি তলোয়ার চালানো টাই শিখেছি।

আমাদের সাথে প্রথম ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর থেকে আমার বাবা আমাকে এসব জিনিস থেকে সম্পূর্ন দূরে রেখেছে। তো তলোয়ার চালাতে বেশী সমস্যা হবে না। সেটা আকারেও ছোট তারাতারি মুভমেন্ট করা যাবে। কিন্তু এই ট্রিশুল আকারে বড় আর নারাতেও অনেকটা কষ্ট হয়।। 

আমি আর সিগমা চল্লাম আবার বার্মুডা ট্রাঙ্গেলের মধ্যের সেই বিশাল সুগভীর গর্তটার মধ্যে। কত রহস্যজনক যে এই জায়গাটা। আজ পর্যন্ত কত জাহাজ যে এই জায়গায় এসে ঢুবে গেছে তার অন্ত নাই। আমরা ঢুকলাম সেই বিশাল গর্তে। এবার আর অন্ধকার নই। আমি আমার ট্রিশুল এ হাত দিলাম সঙ্গে সঙ্গে এটা LED লাইটের মতো জ্বলতে লাগলো। এটার যে এই ক্ষমতাও আছে সেটা আমি জানতাম না।

আমরা আবার সেই জায়গায় পৌছে গেলাম। আসলেই এখন যখন আলো জ্বেলে এসেছি তখন দেখলাম যে ফুটো দিয়ে আমরা এসেছি সেটা সবার প্রথমেই ছিলো যার জন্য ভুল হয় না এখানে আসতে। কিন্তু তার পর থেকেই এখানে অসংখ্য ফুটো রয়েছে। প্রথমবার তো চলে গিয়েছিলাম একটাই। আমাদের কি এই সব গুলো ফুটো দেখতে হবে। হ্যা দেখবো সমস্যা কি। আমার কাছে তো আছে তাজি ঘোড়া এখন। ওর খিদে লাগলে হাঙর হয়ে কিছু খেয়ে নিবে এখান থেকে। আর আমার হাতে তো ট্রিশুল আছেই। আমি এটা দিয়ে ছোট খাটো একটা এনার্জি বল বানিয়ে সেটা মেরে কোনো এক জায়গায় আগুন ধরাবো তারপর মাছ মেরে সেটাকে পুড়িয়ে খাবো। তবুও এই কালো জাদু আমি খুজেই এখান থেকে যাবো।

।।।

।।।

আচ্ছা যদি জলপুরীর রাজা যদি আমাকে মিথ্যে বলে। বলতেও তো পারে। দেখা গেলো মিথ্যা বলে আমাকে এখানে এনে অন্য কোনো কিছুর ধান্দা করতেছে। আচ্ছা সেটা করে দেখা যাবে। ঔখানে হৃদিতা আছে। কিছু হলে নিশ্চয় কোনো না কোনো উপায়ে আমাকে জানাবে। আমি সেই জায়গার পাড়ে চলে আসলাম। সিগমা আবারো মানুষ হয়ে গেলো। এই জায়গাটাই মনে হয় সবচেয়ে উচু এখানের। আমি ট্রিশুলটাকে রাখলাম আর তলোয়ারটা নিলাম। কতক্ষন ঘুরাতে লাগলাম সেটাকে। আমার কার্যকলাপ দেখে সিগমা সরে দাড়ালো। কারন ওর কাছে জিনিসটা সুবিধার মনে হলো না।

আমি শক্ত করে তলোয়ারটা ধরলাম। তলোয়ারটা লাল হয়ে যাচ্ছিলো। মনে হচ্ছিলো আগুন বের হচ্ছে তলোয়ার দিয়ে। আমি ব্লেডে হাত দিলাম। একটু গরম লাগলো আমার হাতে। আমার হাত পরতেই এমন একটা আওয়াজ হলো যে আগুনে পানি পরেছে। আমার হাতে তেমন কিছু হলো না। কিন্তু মনে হচ্ছিলো যদি কোনো মানুষ বা অন্যকেউ এটাকে ধরতো তাহলে সাথে সাথেই পুরে যেতো সে। আমি চোখ বন্ধ করলাম। যেমনটা করেছিলাম প্রথম ট্রিশুল পাওয়ার পরে। অনুভব করতে লাগলাম। 

এমন মনে হচ্ছিলো আমার সামনে আমার থেকেও শক্তিশালী একটা শক্তি দাড়িয়ে আছে। সে আমাকে বলতেছে আমাকে ধরো। আমি তাকে ধরতে হাত বারালাম। কিন্তু সেটা দৌড় দিলো। আমি তাকে ধরার জন্য দৌড় দিলাম কিন্তু সেও দৌড়াচ্ছে। কোনো মতেই তাকে ধরতে পারলাম না আমি। ব্যর্থ হয়ে আমি চোখ খুলে নিলাম। বুঝলাম এটা আমার কাছে এতো সহজেই ধরা দিবে না। আমাকে অনেক কষ্ট করতে হবে। 

তারচেয়ে আমি এটার শক্তি পরীক্ষা করে দেখি। কতটা শক্তিশালী হতে পারে এটা। আমি আরো শক্ত করে ধরলাম সেটাকে। এবার আরো লাল হয়ে গেলো। 

।।।।।

।।।।

।।।

।।

(((চলবে)))

।।

।।।

।।।।

।।।।।

অপেক্ষা করুন ২২ তম পার্টের জন্য😊

Post a Comment

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.