#সিজন_3#
পার্টঃ১০
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
।।।।
।।।।
।।।।
আমি চলে আসলাম আমার দ্বীপ রাজ্যে। বলতে গেলে আমার কিছুই করতে হয় নি। এমন একটা অশরীরি বউ থাকলে তো সব এমনিতেই হয়ে যাবে। এ পর্যন্ত আমার যা কিছু পাওয়া সব হৃদিতার জন্যই। কেউ খেয়াল করেছে কিনা জানি না। তবে ছোট বেলা থেকেই হৃদিতা আমার সাথে ছিলো। শুধু আমিই দেখতে পাই নি। ও অশরীরি হওয়ায় ওর ইচ্ছা না হলে আমি কখনো ওকে দেখতে বা অনুভব করতে পারবো না। হিরোমাস মারা যায় আকাশপুরীর সেনাপতির সাথে লড়াই করে। আর ও হিরোমাসের শরীরের মধ্যে ঢুকে জলপুরীতে এসে ওর নিজের শেষ ইচ্ছার কথা বলে। সেখানে হিরোমাসের শেষ ইচ্ছাটা ছিলো তার দেওয়া ক্ষমতার একজন মানুষই এই রাজ্যের রাজা হবে। ট্রিশুলের অধিকারী হবে। এখানে এই জিনিসটা পুরো বানানো হৃদিতার। খুব সুন্দর করেই সাজিয়েছে সে এসব। আমার কাছে মনে হচ্ছে এখন এসবই দাবা খেলার মতো। টাইম ট্রাভেল আসলেই অনেক দুঃকজনক হয়ে যায়। কারন এতে অনেক সময় পুরো ভবিষ্যৎ পাল্টে যেতে পারে। তাই এই জিনিসটা চেষ্টা না করাই ভালো। আর হৃদিতা আমার অতীত দেখেছিলো আমার হাতে হাত রেখে। আমার অতীত দেখা মানে ওর ভবিষ্যৎ দেখা। এমন কেউ কখনো কি ভবিষ্যৎ দেখতে পারে? কিন্তু আমার বউটা দেখে ভবিষ্যৎ কে আরো উন্নত করেছে। সেটা এই দ্বীপ রাজ্য দেখলেই বোঝা যায়। আমি রাজ্যের মধ্যে চলে আসলাম। পুরো প্রাসাদ খালি আবারো সেই গোপন জায়গায় যেতে হলো। আশার সময় দেখেছি আমার সেনারা রাজ্যের চারিদিক দিয়ে নিজেদের অস্ত্র নিয়ে পাহাড়া দিচ্ছে। আসলেই সিগমার আমার উপরে বিশ্বাস আর ভালোবাসা দেখে ভালো লাগলো। ওকে যেটা বলেছিলাম ও সেটাই করেছে। আপাতোতো এই লু চিনকে নিয়ে আমার কোনো চিন্তা নাই। এটাকে যেকোনো সময় শায়েস্তা করা যাবে। আমার আকর্ষন জাগতেছে বাতাসের ক্ষমতার দিকে। পৃথিবীতে কোনো সুপারহিরোর দরকার নাই। সবাই তো আর ছবির সুপার ম্যানের মতো না। এখন যারাই এই সুপার পাওয়ার পাবে তার প্রথমে নিজেরা সো অফ করবে। এবং পরের ধান্ধা থাকবে কিভাবে মেয়ে পটাবে। এই দুটোই তো পারে রিয়েল সুপার হিরো। অবশ্য আমারটা উল্টো। আমি তো রানী বানাতে পছন্দ করতাম। কিন্তু এখন তো আর ইচ্ছে নাই সেসবের। একটা সময় সবাই সিরিয়াস হয়ে যায়। আমিও সিরিয়াস হয়ে গেছি। আমি হৃদিতার সামনে গিয়ে দাড়ালাম। আর জিনিয়া বলে উঠলো,
.
--মহারাজ আমরা কি এভাবেই বসে থাকবো?(জিনিয়া)
.
--উহু বসে থাকবো না। এই বাচ্চাদের ওদের কাজ করতে দিবো। আর আমরা আমাদের কাজ করবো।(আমি)
.
--এরা তো মানুষ গুলোকে কিভাবে মারছে?(জিনিয়া)
.
--যারা আত্মসমর্পণ করছে তাদের কিন্তু কিছুই করছে না এরা। এর মানে ওর মনে দয়া মায়া বলতে জিনিস আছে। আর মারা যাচ্ছে যাদের জেদটা একটু বেশী তারাই। এই সুবাদে বিশ্বের শক্তিশালী দাপটে দেশের কিছু আবাল মার্কা প্রেসিডেন্টরা নিজেদের জান নিয়ে পালাবে। আর তাতে পরের পৃথিবী খুব সুন্দর ভাবে থাকতে পারবে।(আমি)
.
--কিন্তু মহারাজ আমাদের তো কিছু করার দরকার। এভাবে মানুষদের তো মরতে দিতে পারি না।(জিনিয়া)
.
--ঠিক আছে আপনারা সবাই জান ওদের সাথে যুদ্ধ করেন গিয়ে। আপনাদের এই সেনা তাদের কিছুই করতে পারবে না। জাদুর ক্ষমতা আর লড়াই এর স্কিল নিয়ে কতক্ষন টিকে থাকবেন? উপরে ভালো করে দেখেন কত হাজার স্পেশশীপ নিয়ে আসছে সেটাও হিসাব করতে পারছি না। আর সেসব শীপে কতগুলো এলিয়েন আছে সেটা বলারও মুশকিল। তাহলে কোন হিসাবে বলতেছেন এখন কিছু করবেন?(আমি)
.
--কিছু না করলে তো এরা অনেক মানুষের জীবন নিয়ে নিবে।(জিনিয়া)
.
--এখন যদি কিছু করি তাহলে পুরো মানুষের জীবন যাওয়ার সম্ভবনা আছে।(আমি)
.
--কিভাবে?(হৃদিতা)
.
--ওরা এখানে কোনো জিনিস নষ্ট করছে না বরং ওরা এখানে মনে হয় থাকবে। কিংবা নিজেদের জন্য সুন্দর একটা জায়গা বানাবে। কিন্তু এখন গিয়ে যদি মনে করো আমি তাদের সাথে লড়তে গেলাম। লু চিনকে হারাতে বেশীক্ষন সময় লাগবে না আমার। কিন্তু এলিয়েনটা রেগে যদি তার স্পেশশীপ গুলোকে হামলা করার হুকুম দেয়?(আমি)
.
--তখন তো পুরো পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। ওদের কয়েকটা স্পেশশীপে বিশাল প্লাজমা গান আছে। যেগুলো একটা গ্রহ ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।(একটা লোক বললো পোশাক দেখে মনে হলো এখানে বিজ্ঞানী)
.
--হুমমম।(আমি)
.
--বুঝতে পেরেছি মহারাজ।(জিনিয়া)
.
--তাহলে এখন আমরা কি করবো?(হৃদিতা)
.
--এখানে তো সব জায়গার ক্যামারার ফুটেজ পাওয়া যাবে?(আমি)
.
--হ্যা মহারাজ।(হৃদিতা)
.
--কিভাবে?(আমি)
.
--পৃথিবীর সব কম্পিউটারের মধ্যেই আমরা এক্সেস করতে পারি। আর তাতে যেকোনো ক্যামেরার ফুটেজ বের করতে পারবো।(বিজ্ঞানী)
.
--গত রাতে নাকি কেউ একজন বাতাসের ক্ষমতা নিজের করে নিয়েছে। কিভাবে নিয়েছে সেটা জানি না। তবে সে যদি সেটা খারাপ কাজে ব্যবহার করে তাহলে অনেক খারাপ কিছু হতে পারে। তাই আমাদের সেই বিষয়ে সতর্ক হতে হবে।(আমি)
.
--আমরা কি করবো।(হৃদিতা)
.
--আমি পুরো পৃথিবীতে আমার নজর রাখতে চাই। কোথাও কোনো সন্দেহজনক জিনিস থাকলেই সেটা আমাকে বলবেন আপনারা।(আমি)
।।।
।।।
আমার কথা শুনে এখানে থাকা লোক গুলো নিজেদের কাজে লেগে পরলো। তারা বিশাল কম্পিউটারে পৃথিবীর বিভিন্ন ফুটেজ চেক করতে শুরু করলো। এতে অনেক সময় লাগবে জানি। কারন পৃথিবীটা তো আর ছোট নয়। এভাবে যদি খোজ নেওয়া হয় তাহলে কিছুটা সময় তো লাগবেই। সে সময় টুকু নাহয় অপেক্ষা করলাম আমি।
।
আমি এই জায়গা থেকে বের হয়ে প্রাসাদের একদম উপরের ছাদে উড়ে গিয়ে বসলাম। বসে বসে রাজ্যের সৌন্দর্য দেখতে ছিলাম। নিজের আপনজনদের তো অনেক দিন হলো দেখা হয় না। এই অপেক্ষা আসলেই আমার ভালো লাগছে না। খুব বোরিং হয়ে যায় আমি অপেক্ষায়। সেই পুরানো সময়েও তো পুরো এক বছর অপেক্ষা করতে হয়েছিলো। তখন সময় কাটানোর কোনো মাধ্যম ছিলো না। কিন্তু এখন তো সেটা আছে। হৃদিতা এসে আমার পাশেই বসলো। ও ওর খেলনা দেহের মধ্যে নাই এখন। অশরীরি ফর্মে আছে এখন। এসেই আমার হাত ধরার চেষ্টা করলো কিন্তু পারলো না। এখনো রাত হয়নি আর ও এভাবে আমাকে স্পর্শ করতে পারবে না দিনে।
.
--আমাকে আরো এক মাসের মতো অপেক্ষা করতে হবে।(আমি)
.
--এতোদিনে তো পুরো পৃথিবী ওদের দখলে চলে যাবে।(হৃদিতা)
.
--সেটা কোনো বিষয় না। আমি পৃথিবীকে ধ্বংস করতে চাই না। কিছু মানুষের জন্য যদি পুরো পৃথিবীটার মানুষ বেচে যায় তাহলো সেটার জন্য যা করার দরকার আমি সেটাই করবো।(আমি)
.
--কিন্তু?(হৃদিতা)
.
--তোমার কাছে কি আমার থেকে ভালো বুদ্ধি আছে?(আমি)
.
--উহু।(হৃদিতা)
.
--আমি অপেক্ষা করতে করতে অতিষ্ট হয়ে গেছি। এই জিনিসটা এখন আর ভালো লাগে না।(আমি)
.
--তাহলে ভাবেন আমার অবস্থা কি হয়েছে? আমি ২ হাজার বছর আপনার জন্য অপেক্ষা করেছি।(হৃদিতা)
.
--হুমমম বুঝতে পারছি অনেক কষ্ট হয়েছে তোমার।(আমি)
.
--হুমমম।(হৃদিতা)
.
--আমি এক মাসের জন্য আবার ঘুমাতে চাই।(আমি)
.
--আপনার ইচ্ছা। আপনি যখন স্পেল জেনেছেন তখন তো ব্যবহার সব সময়ই করতে পারবেন।(হৃদিতা)
.
--ঠিক আছে।(আমি)
।।।।
।।।।
আমি আবারো আমার আমাদের রুমে আসলাম। ঘুমিয়ে ঘুমিয়েই তো আমার দিন গুলো কাটছে। এতো ঘুমালে তো আমার পেট বড় হয়ে যাবে একদিন মনে হচ্ছে। আচ্ছা আবারো টাইম টেবিল ব্যবহার করা যাক। আমি এক মাস সময় কাটিয়ে দিতে চাই। কারন অপেক্ষা আমার কাছে ভালো লাগছে না। আর এখন করার মতো তেমন কিছুও নাই। যেটা ছিলো সেটার হুকুম আমি দিয়ে দিয়েছি। এক মাস পরেই আমি আমার কাজে বের হবে। তার আগে সুন্দর ঘুম দিয়ে নি একটা।
.
--চুচুক ফু হু টা লো সু জু পাইয়েট।(বলার সাথে সাথেই আবারো গভীর ঘুমে তলিয়ে পরলাম)
।।।।
।।।।
টাইম টেবিল ব্যবহার করার কিছু কারন আছে। সেগুলোর মধ্যে একটা হলো এখন কিছুদিন যাবৎ মনে হয় লু চিনের স্পেশশীপ গুলো আকাশেই থাকবে। কারন সেগুলোর জন্য একটা সুন্দর জায়গা বানাবে লু চিন আর সেখানেই তো থাকবে সব স্পেশশীপ। আমি একবারে সেই জায়গাটা ধ্বংস করবো যাতে লু চিনের সবটা শীপ একসাথে ধ্বংস হয়ে যায়। এতে করে লু চিনের সেনা অনেক দুর্বল হয়ে যাবে। সেটার জন্য আমাকে কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। আর এই অপেক্ষার সময় কাটানোর সবচেয়ে সহজ রাস্তা হলো টাইম স্পেল গুলো ব্যবহার করা। এই সময়ের সব গুলো স্পেল যদি আমি ব্যবহার করতে পারতাম তাহলে তো ভালোই হতো। আচ্ছা সেটা না হলেও এখন যা আছে সেটাও কম নয়। শুধু আমাকে এর পূর্ন ব্যবহারে পারদর্শী থাকতে হবে।
।
একটা মাস কেটে গেলো। আমি ঘুম থেকে উঠলাম। পুরো পৃথিবী পাল্টে গেছে এমন মনে হচ্ছিলো আমার কাছে। কারন আলাদা কিছু অনুভব করতে ছিলাম আমি। বিষয়টা অন্য রকম। আগে কখনো এমন অনুভব করি নি আমি। আমার মনে হচ্ছিলো আমি এখনো ঘুমের মধ্যেই আছি। আমি যেখানে ঘুমিয়েছিলাম ঠিক সেই জায়গাতেই ঘুম থেকে উঠলাম। কিন্তু পরিবেশ পাল্টে গেছে মনে হচ্ছে। আমার পাশে আমি অন্য কারো অস্তিত্ব অনুভব করলাম। কিন্তু আমি তাকে দেখতে পাচ্ছি না। এতে ঘুম অবাক হলাম। আমার সামনেই একজন হঠাৎ উদয় হতে লাগলো। চেহারাটা আমি দেখতে পারলাম না। কারন মুখে কালো একটা স্কার্ফ পড়া ছিলো। আর সারা শরীর কালো একটা ছায়ায় ঢাকা ছিলো। দেখতে অনেক সুন্দরী সেটা চোখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে। আর এটা একজন মেয়ে সেটা কোনো সন্দেহ ছাড়াই বলা যাচ্ছে। মেয়েটা আমাকে দেখে প্রথমে মিষ্টি ভাষায় হেসে উঠলো। তারপর আস্তে আস্তে হাসিটা ভয়ানক হয়ে গেলো।
.
--কে আপনি।(আমি)
.
--মিয়ারা।(সংক্ষেপে জবাব দিলো)
.
--আপনি এখানে কি করছেন। আর আমি উঠতে পারতেছি না কেনো?(আমি যেভাবে ছিলাম সেভাবেই পরে রইলাম। কিছুই বুঝতে পারছিলাম না কি হচ্ছে আমার সাথে। চোখ দুটো আর মুখ দুটোই চলছে তাছাড়া হাত পা নারাতে পারতেছি না।)
।।।
।।।
মেয়েটা আর কিছু বললো না। একদম উদাও হয়ে গেলো। মুহুর্তের মধ্যেই সে আমার পাশে চলে আসলো। আমার নাক কানে ঘ্রান শুনলো। তারপরে নিজের মুখটা কোনো রকম বের করে আমার বুকের মাঝে একটা জোড়ালো কামড় দিলো। আমি জোড়ে চিল্লিয়ে উঠলাম। কিছু বোঝার আগেই আরো অনেক কিছু মেয়েটা করে ফেললো। একদম আমার মাথায় মনে হলো বিশাল এক বাজ পরলো চোখ যখন খুল্লাম দেখলাম আমি আমার বিছানায় শুয়ে আছি। আশে পাশে কেউ নাই। যাক বাবা একটা স্বপ্ন দেখলাম। কিন্তু স্বপ্নটা মোটেও স্বাভাবিক ছিলো না। যা কিছু হয়েছে স্বপ্নে একদম সত্য মনে হচ্ছিলো। কারন সব আমি অনুভব করতে পেরেছিলাম। বিষয়টা বেশ রহস্য জনক। এমন তো আগে আমার সাথে কখনো হয়নি। তাহলে এখন কেনো হচ্ছে। আচ্ছা হয়তো স্পেল ব্যবহারের কিছু সাইড ইফেক্ট এটা। আচ্ছা পরে দেখা যাবে কি আগে আমি বাইরের খোজ খবর রাখি।😊।।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।
অপেক্ষা করুন ১১ তম পার্টের জন্য।