#জলপরীর_প্রেমে#
#সিজন_২#
পার্টঃ০৬
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
।।।।।
।।।।।
পানি তো বন্ধ করে দিলাম। এবার দেখা যাক কি হয়। একটু পরই সাইনার কথা শুনতে পেলাম।
.
--হৃদয় হৃদয়। শুনতে পাচ্ছো না।(সাইনা)
.
--হুমমম কি হয়েছে বলো।(আমি)
.
--পানি বন্ধ হয়ে গেছে। একটু দেখো তো।(সাইনা)
.
--দেখবো কি করে তুমি তো দরজা আটকে দিছো।(আমি)
.
--আরে গাধা এখানে দেখবে কেনো। বাইরে গিয়ে দেখো পানি শেষ কিনা?(সাইনা)
.
--ওকে।(আমি বাইরে থেকে একটু ঘুরে এসে আবার বলতে লাগলাম)
.
--বাইরে কোনো সমস্যা নাই মনে হয় ভিতরেই সমস্যা। খোলো আমি দেখতেছি কি সমস্যা।(আমি)
.
--উল্টা পাল্টা কিছু করবে না তো।(সাইনা)
.
--আরে না কিছুই করবে না।(আমি)
।।।।
।।।।
সাইনা দরজা খুললো। আমি শুধু ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম। টাউয়েল পরে দাড়িয়ে আছে। সারা শরীর ভিজে রয়েছে পানিতে। মাথায় শ্যাম্পু নিয়েছে। কিন্তু এমন সময় আমি পানি বন্ধ করে দিছি। আমি পানির ঝর্নায় একটু বারি দিলাম হাত দিয়ে। সাথে সাথে পানি পরতে লাগলো। পানিতে আমি ও ভিজে গেলাম। এটাই তো আরেকটা সু্যোগ।
.
--নাও এবার বের হও।(সাইনা)
.
--ভিজে গেছি তো। এখন বের হলে কেমন দেখাবে?(আমি)
.
--কিছুই দেখাবে না বের হও তো তুমি।(সাইনা)
.
--এখন আর হচ্ছি না।(আমি টান দিয়ে সাইনাকে বুকের মাঝে নিয়ে আসলাম। তাকিয়ে আছে চোখ বড় বড় করে। আমার পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে থাকলো)
.
--তোমার পিঠের এই দাগ গুলো কিসের?(সাইনা)
.
--কোন দাগ?(আমি)
.
--এই যে বড় বড় দাগ গুলো?(সাইনা)
.
--ও এগুলো তো ছোট বেলায় বাবা বেদ দিয়ে মেরেছিলো সেই দাগ।(আমি)
.
--ওওও। আমাকেই কেনো ভালোবাসলে তুমি?(সাইনা)
.
--কারন তোমার মাঝে আমি অন্যরকম কিছু দেখি। তুমি আর সব মেয়ের মতো না। অনেক ভালো আর শান্ত স্বভাবের মেয়ে তুমি তাই তোমাকে ভালোবাসি।(আমি)
.
--যদি কোনোদিন দেখো আমিই অনেক খারাপ। আমার জন্য মানুষ মারা যাচ্ছে তাহলে কি করবে তুমি?(সাইনা)
.
এমন দিন তো আসবেই না।(আমি)
.
--যদি কোনোদিন এই পৃথিবীর উপরে যুদ্ধ শুরু হয় তাহলে আমি যেখানে নিয়ে যাবো, যাবে আমার সাথে?(সাইনা)
.
--আগে তো হোক তারপর দেখা যাবে।(আমি)
.
--হুমমম। এখন চলো এতো গোসল করলে ঠান্ডা লেগে যাবে।(সাইনা)
.
--হুমমম চলো।(আমি)
....
।।।
ব্রেকফাস্ট করে নিলাম। এখন যাওয়ার ইচ্ছা আছে ব্লকমলে। এই মেক্সিকো সিটির অনেক বড় একটা মল এইটা। কমবয়সী ছেলেমেয়েদের কেনাকাটা করার জন্য এটাই সবচেয়ে ভালো জায়গা। আমি সাইনাকে নিয়ে ভেতরে গেলাম। আমি বুঝতে পারছি ওর মনের মধ্যে জায়গা আমার হয়ে গেছে। জানি এই মেয়ে পটানোর শক্তি আমার কোথায় থেকে আসলো। সব রাজার মেয়েরাই পটে যাচ্ছে। ভাবতেছি এখন মানুষের মাঝে একজনকে বিয়ে করতে হবে। আমি সাইনার সাথে সারাদিন ঘুরাঘুরি করলাম। তারপর রাতে আবার সেই হোটেলেই ফিরলাম। বাইরে থেকেই ডিনার করে এসেছি। তাই দুজনে গল্প করছিলাম
.
--তুমি কিন্তু কিছু বলতে চেয়েছিলে?(সাইনা)
.
--ও হ্যা তোমাকে তো কিছু তথ্য দিতে হবে।(অনেক গোপন তথ্য এগুলো সবাইকে বলা যাবে না। আপনাদের বললে আমার জেল হয়ে যাবে তাই বল্লাম না)
.
--নাও এবার খুশি তুমি?(আমি)
.
--হ্যা অনেক।(সাইনা)
.
--তাহলে আমার বুকে এসে শুয়ে থাকো।(আমি)
।।।।।।
।।।।।।
সাইনাকে বুকে নিয়ে শুয়ে রইলাম। আমি রাতে ঘুমিয়েই পরেছিলাম। ঘুম ভাঙলো দেখলাম সাইনা পাশে নেই। বুঝলামই না কোথায় গেলো। উঠলাম ঘর অন্ধকার ছিলো আজ। ডিম লাইট তো চালু ছিলো। তাহলে বন্ধ করেছে কে? আমি টিপ টিপ পায়ে বেলকনির দিকে যাচ্ছিলাম। কিন্তু আর যাওয়া মনে হয় ঠিক হবে না। তাই দরজার পাশে এসে দাড়ালাম। আমি শুনতে পেলাম সাইনা কারো সাথে কথা বলতেছে।
.
--ভাইয়া আপনি এখানে কেনো এসেছেন?(সাইনা)
.
--দেখতে এলাম আমার বোনটা কি করছে। কিন্তু এসে তো ভালোই দেখলাম। একটা earth creature এর সাথে আদর সোহাগে মেতে উঠেছে লর্ড লু চিন এর আদরের রাজকন্যা।(লু চেইন)
.
--ভাইয়া।।(সাইনা)
.
--কিছু কি বলার আছে নাকি আমি এখনি আমার তলোয়ার দিয়ে ওর মাথা দ্বিখণ্ডিত করবো।(লু চেইন)
.
--খবরদার যদি ওকে কিছু করতে চাও। ওর আগে আমাকে শেষ করতে হবে।(সাইনা)
.
--ওকে আমার বোনের জন্য তো একটা মানুষকে মাফ করতেই পারি।(লু চেইন)
.
--ধন্যবাদ ভাইয়া।(সাইনা)
.
--তবে আসল কথায় আসি। খবর কি এখানের?(লু চেইন)
.
--আমরা হামলা করতে পারি। বেশী বেগ পেতে হবে না এখানের মানুষের সাথে জিততে।(সাইনা)
.
--তাহলে তো বলা যায় ইটস শো টাইম।(লু চেইন)
.
--তবে আমি বলে দিচ্ছি যদি হৃদয় এর কিছু হয় তাহলে কিন্তু তোমাদের সবার খবর আছে।(সাইনা)
.
--কিছুই হবে ওর। তুই ওকে নিয়ে আমাদের একটা একটা শীপে চলে যাবি।(লু চেইন)
.
--ওকে।(সাইনা)
.
--তাহলে কালকেই হামলা করে ফেলবো আমরা।(লু চেইন)
.
--ওকে।(সাইনা)
।।।।
।।।।
অন্ধকার থাকায় আমি সাইনার ভাইকে দেখতে পেলাম না। তবে যা বুঝলাম এখন আর আমার এখানে থাকা ঠিক হবে না। আমাকে এখন যেতে হবে। আমি ছোট করে পাতালপুরীর সেনাপতি অদ্রিজের কাছে একটা মেসেজ দিলাম। এক মিনিটের মধ্যেই আমাকে টেলিপোর্ট করে নিয়ে আসলো পাতালপুরীতে। আমি আমার সব সব সেনাপতির সাথে লাইফ কনভারসেশন করলাম। কালকে আমরা হামলা করবো না। আমি পৃথিবীর সেন্ট্রাল ডিফেন্স অরগানাইজেশানকে খবর দিলাম। তাদের জানালাম খুব সকালের মধ্যেই স্পেসশীপ নিয়ে এলিয়েনরা হামলা করবে। তারা প্রথমে বিশ্বাস করে নি। যখন আমি বললাম আপনারা কোনো স্যাটালাইট দিয়ে ১৪ কিলোমিটার দূরের এলাকায় দেখার চেষ্টা করেন। তারা দেখে তখন বিশ্বাস করলো। আমরা তো আগেই লড়বো না। যখন আমাদের প্রয়োজন হবে তখনই আমরা লড়বো।
।
দেখতে দেখতে সকাল হয়ে গেলো। যুদ্ধ লেগেই যাচ্ছে। আকাশ থেকে সব স্পেসশীপ গুলো যখন নামছিলো তখন সূর্যের আলো গুলো ওরাই পর্দার মতো ঢেকে রাখছিলো। আমি স্পষ্ট ভিউ নিলাম। দেখলাম সাইনা আর ওর ভাই একটা শীপের উপরে দাড়িয়ে ছিলো। আস্তে আস্তে সব নামতে ছিলো। আমি যেটা ভেবেছিলাম সেটাই হলো। প্রথমেই আমেরিকা থেকে মিসাইল ছুরতে লাগলো। এরপর কোরিয়া,রাশিয়া,চীন,জাপান আস্তে আস্তে সবাই শুরু করলো। আর অন্যদিকে এলিয়েন গুলো ও কম নয় কিছুতে। সব দিকে থেকেই ওরা আক্রমন করতেছে। ওদের সংখ্যা বেশী হওয়ায় ওদের কোনো সমস্যা হচ্ছিলো না। আর এদিকে সাইনা আর লু চেইনের নেতৃত্বে বিশাল এক দল মাটিয়ে নেমে আসলো। ওরা মাটিতেই যুদ্ধ করতে লাগলো। ওদের নির্মম হত্যা দেখে আমারই কষ্ট লাগছিলো। আমি নিলা,জারা আর মোহনাকে পাঠিয়ে দিলাম দানব রাজ্যে। ভাবলাম এখন অপেক্ষা করা ঠিক হবে না। কারন নিষ্পাপ মানুষগুলো মারা যাচ্ছে। আমরা কি বসে থাকতে পারি। আমরাও নেমে গেলাম মানব রাজ্যে। চার রাজ্যের ঢোকার পথ লক করে দিলাম। আমার সৈন্যদের মধ্যে শুদু দানবরাই নাই। তাদেরকে রেখেছি পুরো গোপন করে। সঠিক সময়ে আমাদের কাজে লাগবে। আমরা চলে আসলাম লু চেইন আর সাইনার সামনে। আমি ছিলাম যুদ্ধের পোষাকে। হাতে আমার ট্রিশুল। সাইনা আমাকে দেখে অবাকই হলো। কারন রাতে আমাকে অনেক খুজে ও পাই নাই। আজ আমাকে এভাবে দেখবে সেটা কল্পনা করে নি ও। লু চেইন হেসে দিলো। দুই পক্ষ সামনা সামনি দাড়িয়ে রইলাম। এতো সুন্দর একটা মুহুর্তের জন্য কতদিন অপেক্ষা করে আছি। এতো এলিয়েন তো কি হয়েছে যতক্ষন আমার হাতে ট্রিশুল আছে এরা আমার কাছে কিছুই না।।
.
--কোথায় গিয়েছিলা তুমি?(সাইনা)
.
--কেনো খুজেছিলা তুমি?(আমি)
.
--হ্যা অনেক খুজেছি। তুমি এখান থেকে চলো অনেক ভয়ঙ্কর কিছু একটা হবে।(সাইনা)
.
--এইটা ভেবো না আমি ডিফেন্সে চাকরি করে বলে এখানে আসছি। আর আমার পিছনে এর সবাই ডিফেন্সের চাকরি করে। সেটা ভাবলে ভুল হবে।(আমি)
.
--তো এখানে কেনো আসছো।(সাইনা)
.
--এখানে আসছি তো মনের মতো ধ্বংস করতে।(উপর দিয়ে একটা শীপ যাচ্ছিলো। আমি সেটাই ট্রিশুল দিয়ে একটা এনার্জি বল মারলাম। সাথে সাথে সেটা ব্লাস্ট হয়ে গেলো সেটা। সাইনা আর ওর ভাই অবাক হয়ে গেলো)
.
--কে তুমি?(সাইনা)
.
--সেটা নাহয় বুঝতে পারবে।(আমি)
।।।।
।।।।
আমি পাতালপুরী আর জলপুরীর সেনাপতিকে নিয়োগ দিলাম ভূমিতে থাকা এলিয়েনদের এক এক করে যমের বাড়িতে পাঠাতে। আর আকাশপুরীর সেনাপতি হিতানকে আদেশ দিলাম আকাশপথে হামলা করতে। এলিয়েন গুলো হয়তো প্রস্তুত ছিলো না এমন যে এমন হামলা গ্রহন করবে। কারন কখনো তারা ভাবে নি কারো পিঠে পাখা থাকতে পারে। আর তারা উড়তে পারবে।
।
এলিয়েনদের কাছে আধুনিক অস্ত্র থাকলেও সেগুলো কাজে দিচ্ছে না। আমি সেনাপতি হিতানের পিছনে চরে এক এক করে স্পেসশীপ গুলো ধ্বংস করতে লাগলাম। এমন আর ভালো লাগতে ছিলো না। রাগে লু চিন ও নিচে নেমে গেছে। সে তো একটু বিরাটদেহী। দেখতে পুরো Shadow Fight 2 গেম এর টিটানের মতো। হাতে টিটানের মতোই একটা বিশাল তলোয়ার। হয়তো অনেক শক্তিশালী হবে তলোয়ারটা। কিন্তু আমার কি আমার সাথে তো এক মুহুর্ত ও টিকতে পারবে না বেচারা। আমি লক্ষ করলাম ট্রিশুলটার ক্ষমতা আগের থেকে কমে গেছে। কেনো সেটা বলতে পারবো না তবে যাইহোক এই বৃহৎ এলিয়েনটাকে তো মেরে নি আগে। আমার থেকে ডাবল আর দেখতে ও অনেকটা ভয়ানক। আমাকে হিতান নিচে নামিয়ে দিলো।
.
--আপনার যুদ্ধের রিতী আর ক্ষমতা দেখে আমি খুবই প্রশংসিত হয়েছি। শুনেছি আমার মেয়ে নাকি আপনাকে ভালোবাসে। আপনি ও নাকি ভালোবাসেন। শুধু শুধু এভাবে আমাদের হাতে নির্মম মৃত্যু না মরে আমার জামাতা হয়ে যান। এক সাথে পুরো গ্যালাক্সি রাজ করবো।(লু চিন)
.
--আপনি হয়তো আমাকে চিনেন না। আমি হলাম এই পৃথিবীর মহাজাগতিক রাজা হৃদয় টিটান। এইযে সকল সেনা দেখতেছেন এই সব আমার।(আমি)
.
--আমি প্রথমে আপনাকে মারবো। তারপর গুনে গুনে আপনার সব গুলো সেনাকে হত্যা করবো।(লু চিন)
.
--প্রথমে চেষ্টাই করে দেখান।(আমি)
।।।।
।।।।
আমি একটা এনার্জি বল ছুড়লাম। সেটা লাগলো লু চিনের। কিন্তু আশ্চর্য হলাম কারন কিছুই হলো না ওনার। কিছু হলো না বললে ভুল হবে। নিচে পরে গেলো শুধু। আমি আমার লড়াইয়ের কৌশল আর ট্রিশুলের ব্যবহার করতে লাগলাম। কিন্তু কিছুতেই পেরে উঠছিলাম না ওনার সাথে। আমি ট্রিশুল দিয়ে এবার মাটিতে আঘাত করলাম জোরে। আশে পাশের সব মাটি সরে গেলো কিন্তু লু চিন যেখানে দাড়িয়ে ছিলো সেখানে কিছুই হলো না। এখন নিজের কাছেই অসহায় লাগছিলো তবে আমি আশা ছারলাম না। পাশের বিশাল পুকুর থেকে পুরো পানি উড়িয়ে নিয়ে লু চিনের উপরে ফেললাম। পানি লাগার পরে সে একটু দুর্বল হলো। আমি আঘাত করতে লাগলাম। সেগুলো সজোরে লাগছিলো ওনার। কিন্তু রেগে সে জোরে আঘাত করলো তার বিরাট তলোয়ার দিয়ে। সেটা থেকে বাচতে আমি ট্রিশুল ধরলাম সামনে। যেটা কখনো কল্পনা করি নি সেটাই হয়ে গেলো। হাতের ট্রিশুলটা ভেঙে গেলো। দুই টুকরা হয়ে আমার দুই হাতে রয়ে গেলো। বিদুৎ এর চমকা বের হয়ে হলো ট্রিশুল থেকে ভাঙার পর। আমি হতভম্ব হয়ে দাড়িয়ে রইলাম।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।।
।।।।।।
অপেক্ষা করুন ৭ম পার্টের জন্য।