#জলপরীর_প্রেমে#
#সিজন_২#
পার্টঃ১৮
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
।।।।।
।।।।।
।।।।।
.
--সিগমা আপনাকে একটা গুরুত্বপূর্ন কথা বলার ছিলো।(আমি)
.
--জ্বী মহারাজ বলুন।(সিগমা)
.
--আমার মনে হচ্ছে হিগমার কিছু একটা হয়েছে।(আমি)
.
--কেনো মহারাজ?(সিগমা)
.
--রানীর উপরে ও জাদু চালিয়েছিলো। রানীকে ধরলেই তার মাঝ থেকে একটা ছায়ার মতো কিছু একটা আমার উপরে আক্রমন করতো। কিন্তু হঠাৎ এখন তেমন হচ্ছে না।(আমি)
.
--হ্যা মহারাজ আসলেই তো এটা ভাববার বিষয়।(সিগমা)
.
--আমার মনে হয় হিগমার উপরে কোনো বিপদ আসছে। কিংবা ওর জাদুর ক্ষমতা মনে হয় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কিংবা হয়তো ওর মারা গেছে।(আমি)
.
--আমাদের একটু খবর নিতে হবে।(সিগমা)
.
--হ্যা।(আমি)
।।।।
।।।।
সিগমার সাথে আরো কিছুক্ষন আলাপ করলাম। তারপর আমি আমার নিজের রুমে গেলাম। দেখলাম হৃদিতা সেই আগের সাজেঔ বসে আছে। আমি ভিতরে ঢোকার পর দুজন লোক আমাদের খাবার নিয়ে আসলো। আমাদের রাতের খাবার আমরা দুজনে একসাথেই খেয়ে নিলাম।
।।।।
।।।।
আমি খাবার খাওয়া শেষ করলাম। জানালা খুলে দিয়ে বেলকনির মতো জায়গায় এসে দাড়ালাম। আকাশে বিশাল চাদ উঠেছে। আমি চাদের দিকে অপলক তাকিয়ে আছি। আর ভাবতেছি আগের যুগের মেয়েরাই কত সুন্দর ছিলো। তারা কোনো দামী দামী ক্রিম,লোশন, মেক আপ ব্যবহার করতো না তারপরও তাদের সুন্দর্য যেনো ফুটে চাদের থেকেও দ্বিগুন মনে হয়। আমি তাকিয়ে রইলাম চাদের দিকে হা করে।
.
--কি হলো চাদকে ঔভাবে দেখছেন যে। খাওয়ার ইচ্ছা আছে নাকি ঔটাকে।(হৃদিতা)
.
--আপনি জানেন ঔটা আমাদের থেকে কত বড়। হাজার হাজার কোটি কোটি মানুষ ঔখানে থাকতে পারবে।(আমি)
.
--এসব গুজব কথা আপনার কাছেই রাখেন। দেখছেন না গোল একটা রুটির মতো চাদটা।(হৃদিতা)
.
--তাহলে আপনিই গিয়ে খেয়ে আসুন।(আমি মজা নিয়ে)
.
--পারলে তো ঠিকই যেতাম।(হৃদিতা)
.
--আপনি পারবেন না। তবে আমি বলে দিচ্ছি আমাদের এই সময়ের আরো অনেক পরে মানুষ সেখানে যাবে।(আমি)
.
--আপনি সিওর বলছেন কিভাবে?(হৃদিতা)
.
--কারন আমি অনেক কিছুই জানি।(আমি)
.
--আর কি কি জানেন শুনি?(হৃদিতা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো আমাকে)
.
--কখনো ভেবেছেন আপনি এখন আপনার কালকের জীবনে ফিরে গিয়ে নিজেকেই দেখতে পারবেন কি করেছিলেন আপনি।(আমি)
.
--না এটা তো কোনো দিন ও সম্ভব না। জাদু দিয়েও সম্ভব নয়।(হৃদি)
.
--কে বলছে সম্ভব নয়। আমি তো আসছি।(আমি)
.
--মজা করবেন না তো।(হৃদি)
.
--আমি মজা করছি না। আমার চোখের দিকে তাকান। আমি সিরিয়াস ভাবেই বলছি।(আমি হৃদিতার হাত দুটি মুঠো করে ধরলাম। তারপর ওকে আমার সামনে টান দিয়ে নিয়ে আসলাম। ওর চোখের দিকে আমি তাকিয়ে রইলাম। ও আমার দিকে তাকিয়ে রইলো এক নজরে)
.
--আমার এসব মোটেও বিশ্বাস হচ্ছে না। কেউ এমন আজগুবি কথা শুনলে আপনাকে পাগল বলবে।(হৃদি)
.
--আমি তো অন্য কাউকে বিশ্বাস করাতে চাই না শুধু আপনি বিশ্বাস করলেই হবে।(আমি)
.
--প্রমাণ কি আপনি সামনের সময় থেকে আসছেন।(হৃদি)
.
--প্রমাণ চাইছো। নিজের স্বামীর কথায় কি বিশ্বাস হচ্ছে না।(আমি)
.
--আচ্ছা মানলাম আপনি পরের সময় থেকে এখানে আসছেন। কিন্তু কেনো আসছেন। বুঝতে পারছি রাজা হওয়ার সহজ সুযোগ পেয়েছেন তাই কাজে লাগিয়েছেন।(হৃদি)
.
--মোটেও না। আমি যে সময় থেকে এসেছি। সে সময়ের শুধু এই পুরো দুনিয়া দেখতেছো এই সবের রাজা ছিলাম।(আমি)
.
--তাহলে এখানে কেনো আসতে হলো এতো কিছু রেখে।(হৃদি)
।।।।
।।।।
আমি মেয়েটাকে বলতে লাগলাম আমার সব কাহিনী। কেনো আসছি এখানে। কিসের জন্য আসছি। আমার সব কথা ও মনোযোগ দিয়ে শুনছিলো। এখন ও সত্যিই বিশ্বাস করলো। বিশ্বাস করবেই না কেনো। আমি তো সবার থেকেই আলাদা। আমার চলচলন একটু অন্যরকম। তাই প্রথম থেকেই ওর মনে হচ্ছিলো আমি হয়তো মানুষ না। কিন্তু আমি তো আসলেই মানুষ।
.
--এই জলের মানব তারপরে আকাশের মানব এরা কি সত্যি আছে।(হৃদি)
.
--কেনো আপনি কি জানেন না?(আমি)
.
--না কখনো এই বিষয়ে শুনি নি।(হৃদি)
.
--আচ্ছা আপনি কি কখনো কালো জাদুর নাম শুনেছেন?(আমি)
.
--কালো জাদু! হ্যা শুনবো না কেনো। এই দুনিয়ার সবচেয়ে ক্ষতিকর আর মারাত্মক শক্তি হচ্ছে এই কালো জাদু।(হৃদি)
.
--আপনি এসব জানেন কোথা থেকে?(আমি)
.
--আমার এই জাদুর বই পড়ার অনেক ইচ্ছা ছোট বেলা থেকেই। একটা বইয়ে পড়েছিলাম।(হৃদি)
.
--আর কি জানেন কালো জাদুর সম্পর্কে।(আমি)
.
--কেনো আপনি এতো শুনে কি করবেন?(হৃদি)
.
--আমি তো আর আপনাদের জাদু ব্যবহার করতে পারছি না। আর আমার যে বই ছিলো যেটা আপনি পুরিয়ে দিয়েছিলেন ঔটাই লেখা ছিলো খুব তারাতারিই আমি কালো জাদু শিখে যাবো।(আমি)
.
--আপনার এই ব্যাপারে না জানাই ভালো। কালো জাদু অনেক শক্তিশালী। এটাকে কন্ট্রোল করা খুবই কষ্টের। কোনো মানুষের শরীরে এই শক্তি গেলে তার শরীর পছন্দ না হলে তাকে পাথর করে দেই। আর যার শরীর পছন্দ হয় তার পুরো শরীরকে বশে করে ফেলে এই শক্তি। তাই এটাকে জলের মধ্যে ভয়ঙ্কর একটা গুহার মধ্যে চিরদিনের মতো আটকে রাখা হয়েছে।(হৃদি)
.
--আপনি কি জানেন জায়গাটা কোথায়?(আমি)
.
--না। তবে জানার অনেক চেষ্টা করেছিলাম। কেনো জানি না এই বিষয়ের উপরে হঠাৎ আমার অনেক ঝোপ চলে আসছিলো।(হৃদি)
.
--ও।(আমি)
.
--আচ্ছা একটা কথা বলুন তো।(হৃদি)
.
--হুমমম?(আমি)
.
--আপনার কাজ হয়ে গেলে কি আপনি চলে যাবেন আমাদের ছেড়ে। এই রাজ্য ছেড়ে?(হৃদি)
.
--হ্যা তবে আপনাকে সাথে নিয়েই যাবো।(আমি)
.
--আমাকে সাথে নিয়ে যাবেন কেনো। আপনার তো রানী আছে তিনটা সেখানে।(হৃদি)
.
--আছে একজন অর্ধপরী, একজন জলপরী, আর একজন আকাশপরী। কিন্তু কোনো জাদুপরী তো নাই।(আমি নতুন নাম দিয়ে দিলাম)
.
--আপনি চলে গেলে রাজ্যের কি হবে?(হৃদি)
.
--সেটারও একটা ব্যবস্থা করে ফেলবো।(আমি)
.
--ওকে ঠিক আছে চলুন। অনেক রাত হয়েছে ভিতরে যায়।(হৃদি)
.
--আমি কি একটা কাজ করতে পারি?(আমি)
.
--কি কাজ?(হৃদি)
.
--কিছু না।।।।(বলেই মেয়েটাকে কোলে তুলে নিলাম)
।।।।।
।।।।।
মেয়েটা লজ্জা পেয়ে কিছুই বললো না। আজকে তো আর কেউ শক দেওয়ার মতো নেই। তাই পার্টি হবে রাতে😁😑😁😑।।।।।।
।।।।
।।।।
।।।।
যাক একটা জিনিস জানতে পারলাম যে কালো জাদু মানে ব্লাক ম্যাজিক পানির নিচে আছে। তার মানে আমাকে জলপুরীতে যেতে হবে এবং সেখান থেকে এই খবর বের করতে হবে কোথায় আছে এই জিনিসটা। হয়তো সিগমা জানে এই ব্যাপারে কোনো কিছু। তাহলে কালকে আগে পাশের রাজ্যের সেই রাজার অবস্থা টাইট করে নি। ঔটাকে টাইট করলে তো পানির পুরো সম্রাজ্যই আমার হয়ে যাবে। এমনিতেও ঔ রাজ্যের উপর রাগ হচ্ছে কারন ঔটা নাকি খালি খালিই এই রাজ্যের উপরে হামলা করতো। আর ঔ রাজ্যের জন্যই রানী আর তার বাচ্চা হয়তো মারা যায়। জানি না কি হয়েছিলো। তবে আমার রাগ উঠছে ঔ রাজার উপরে। এখন তো হাতে ট্রিশুলটাও আছে। রাতের ঘুম আজকে ভালো ভাবেই হলো। আসলেই বউ পাশে শুয়ে থাকলে ঘুম মনে হয় বেশীই হয়। সে জানি না আমি তাকিয়ে দেখলাম চুপটি করে গুটি হয়ে আমার বুকের মাঝে শুয়ে আছে। ওর মুখটা দেখেই নিজের কাছে কেমন লাগছে জেনো। নিজের আপন যমজ বোনের চেহারার অধিকারী কেউ যদি নিজের বউ হয় তাহলে কেমন লাগে সেটা আপনারাই ভাবুন।
।।।
।।।
আমার বোনের পুরানো সেই কথাটা মনে পরলো। ও বলেছিলো, "যদি কখনো আমাকে বিয়ে করতে হয় তোকে। তাহলে কি তুই করবি?"
।
এখন বুঝলাম কেনো বলেছিলো ও এসব। ও মনে হয় কিছু একটা জানতো। হয়তো কিছু একটা আছে ওর মাঝে যার জন্য হয়তো ভবিষ্যৎ দেখেছিলো যে ওর মতো চেহারার কেউ ওর বউ ভাইয়ের বউ হয়ে আছে। আর এই হৃদিতাকে ও ওকে ভেবেছিলো হয়তো। ব্যাপারটা অনেক প্যাচানো। আমি নিজেই বুঝতে পারতেছি না। তাই আর প্যাচালাম না বিষয়টা। আমি উঠে গেলাম রানী সাহেবাকে রেখেই। গোসল করে নিজের রুমে আসলাম। দেখি হৃদিতা উঠেছে ঘুম থেকে।
.
--আপনি কি আজকে পাশের রাজ্যে যুদ্ধ করতে যাবেন?(হৃদি)
.
--হ্যা।(আমি)
.
--আমার সত্যিই চিন্তা হচ্ছে আপনার জন্য। আপনি এতো কম সেনা নিয়ে যাবেন তাদের সাথে যুদ্ধ করতে। কিছু হয়ে যায় যদি।(হৃদি)
.
--কিছুই হবে না। আপনি চিন্তা কইরেন না।(আমি)
।।।।
।।।।
আমি হৃদির কপালে একটা চুমু দিলাম। ঠোটেই দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরক্ষনেই চিন্তা বদলে গেলো। ওকে দেখলে আমার বোনের কথা মনে পরে যায়।।।। আমি রুম থেকে বেরিয়ে পরলাম। সিংহাসনে এসে বসলাম। পাশেই সিগমা এসে দাড়ালো। ওকে কালকে বলেছিলাম আমার সাথে যাওয়ার কথা। আর ভালো একটা বুদ্ধিও বানিয়েছি আমরা।
.
--মহারাজ আমাদের এক হাজার সেনা কাঙ্কিত জায়গার জন্য রওনা দিয়েছে। পাশের দুলাই এর বিশাল মাঠে তারা উপস্থিত হয়েছে। তারা একটা সন্ধি করতে আগ্রহী। আপনার সাথে আলাপ করবেন রাজা কিলোরা।(মন্ত্রী)
.
--ঠিক আছে মন্ত্রী। একটা ঘোড়া নিয়ে আমি আর আমার মিত্র যাচ্ছি সেখানে।(আমি)
.
--কিন্তু মহারাজ আপনার একা এইভাবে সেখানে যাওয়া ঠিক হবে না। আমরা যাচ্ছি আপনার সুরক্ষা সহ।(সেনা প্রধানরা)
.
--জ্বী না আপনারা প্রাসাদে থাকুন। আমরা ফিরে আসবো।(আমি)
।।।।
।।।।
আমি আর সিগমা একটা ঘোড়ায় উঠলাম। উঠে বসার পর আমরা রাজ্য থেকে বের হয়ে গেলাম। কারন সিগমা পথটা চিনে। আর আমরা ঘোড়া থেকে নেমে ঘোড়াটাকে বিদায় দিয়ে দিলাম। সিগমা হয়ে গেলো বিশাল একটা শিয়াল। বিশাল সাদা ধবধবে একটা শিয়াল হয়ে গেলো সিগমা। যেটাকে দেখে যে কেউ ভয়ে কেদে দিবে। এবার দেখলাম সিগমার চোখ সাদা হয়ে আছে। আমি ওর পিঠের উপরে উঠলাম। বসার পর সিগমা দৌড়িয়ে যাচ্ছিলো আমাকে নিয়ে। গন্তব্যের দিকে যাচ্ছিলাম আমি আর সিগমা।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।