পার্ট: ০১
লেখকঃ হৃদয় বাপ্পী
।।।
।।
।
আগেই পরিচয়টা দিয়ে দি আমি হৃদয় সেটা তো আপনারা জানেনই।ও না সবই তো জানেন।তাহলে আর বলে কি হবে।গল্পটা খুব সুন্দর করেই এগুচ্ছিলো।আমার আম্মু ও মেঘলাকে মেনে নিয়েছে।মেনে নিবেই বা না কেনো,ওর যে পাগলামি তাতে সবারই ওর প্রতি মায়া হবেই।কিন্তু সমস্যা না থাকলে তো আর গল্প আগাবে না।তাই গল্পে একটা সমস্যাও আছে।আর আমার নানা don. মানুষ সেটা তো আপনারা জানেনই।এখন সমস্যা তো এখানেই,আমার নানা আমাদের উপরে রাগ করেছে।যাইহোক এতো কিছু বললে গল্প এখনই শেষ হয়ে যাবে।এত তারাতারি গল্প শেষ করলে আমার ও ভালো লাগবে না আপনাদেরও ভালো লাগবে না।তো গল্পতে চলে আসি,
এক ছিলো এক রাজা।।।।।।ও সরি ভুল গল্পে চলে আসছি।
।।।।
।।।
.
--বাবু উঠো,এই বাবু উঠো না প্লিজ।
.
--আর একটু ঘুমায় বাবু।আমার লক্ষি সোনা।প্লিজ আজকে পরে ডাক দিয়ো।
.
--৯ টা বেজে গেছে তো বাবু এখনো ঘুমাবা তুমি।আমি নাস্তা বানিয়ে রেখে এসেছি নিচে।তুমি তারাতারি উঠো তো।
.
--কি এতো বেজে গেছে আর তুমি আমাকে এখন ডাকতেছো।
.
--আমি তো কখন থেকেই ডাকতেছি তুমিই তো উঠতেছো না।
.
--থাক হয়ছে।এখন বলো আমার জামা কাপড় ঢুইছো।
.
--সব সব ঢুয়ে ছাদে দিয়ে এসেছি।
.
--এই তো আমার লক্ষি বাবু।আমি ফ্রেস হয়ে আসতেছি ওকে বাবু।
।।।।।
কি ভাবতেছিলেন আমার বউ সব কাজ করে আমাকে ডাকতে আসছিলো।এটা ভেবে আমাকে দুঃখ দিয়েন না প্লিজ।কারণ সে আমাকে ডাকে নাই উল্টা আমাকেই তাকে ডাকতে হয়।সকালের নাস্তা বানাতে হয়,আর মহারানীর জামাকাপড় ও ঢুয়ে দিতে হয়।এই দুঃখ যে আমি কোথায় রাখি।নিজের বাসায় ও ঘর জামায় এর মতো থাকতে হয়।আম্মু তো বিয়ে দিবে না তার সাথে।কিন্তু বিয়ে হওয়ার পর দুইজন জোৎ বেধে শুধু আমার উপর এট্যাক করে।বউ এর এতো কাজ করা কি ভালো লাগে বলেন।বাসায় কাজের লোক আছে তাও আমাকে নাস্তা বানাতে হয় আর মেঘলার জামা কাপড় ধুয়ে দিতো হয়।।
এখন তো বাসায় আর থাকতে ও মন চায় না।কিন্তু কি করার সব শাসন আর জেদ এর মাঝে আমি শুধু মেঘলার ভালোবাসায় দেখতে পায়।যার জন্য কাজ গুলো করতে হয়।
.
--এই তুমি বসে বসে কি ভাবতেছো কাজ নাই নাকি।(মেঘলা)
.
--না কাজ নায় তো।তাই বসে আছি।(আমি)
.
--ওকে আমি তাহলে কাজ দিয়ে দিচ্ছি।(মেঘলা)
.
--না না প্লিজ বাবু আজকে খুব ক্লান্ত আমি আর পারবো না আজ।(আমি)
.
--চুপ একদম চুপ।আজকে এই ঘর পরিস্কার করবা তুমি।(মেঘলা)
.
--তুমি এমন করো কেনো।আমি কি এইসব পারি বলো।(আমি)
.
--মেয়ে পটায়তে তো ভালোই পারো।তাহলে এইসব পারবা না কেনো।(মেঘলা)
.
--আমি মেয়ে পটাইলাম কখন।সব তো আগে থেকেই পটে থাকে।(আমি)
.
--চুপ কোনো কথা ছাড়াই কাজ শুরু করে দাও।(মেঘলা)
.
--এখনো তো খাওয়াই হয় নাই।(আমি)
.
--তাহলে চলো দুজনে খেয়ে আসি।তুমি কাজ করবা খাওয়ার পর আর আমি আর আম্মু লুডু খেলবো।(মেঘলা)
।।।।।।
বলে কি আমার আম্মু বউমাকে শিক্ষা না দিয়ে তার নিরীহ ছেলেকে এভাবে কষ্ট দিতেছে।অবশ্য আম্মু আমাকে কিছুই করছে না।কারণ তার ও শিক্ষা দেওয়ার মানুষ আছে।আমার অবস্হা তো ভালোই।আমার বউটা আমাকে কম কাজ করাই।কিন্তু আমার বাবাকে তো আম্মু সেই অবস্হা করে দিছে।
.
--আমার মেয়েটার ঘুম ভাঙছে তাহলে।(আম্মু মেঘলাকে নিজের মেয়ের মতো দেখে এখন)
.
--হুমমম আম্মু ভাঙছে।তোমার ছেলে তুলে দিছে।(মেঘলা)
.
--এই বান্দর কি বানাইছিস এই গুলা।(আম্মু)
.
--কেনো কি হয়েছে।(আমি)
.
--এই গুলারে রুটি বলে নাকি।সব তো ঈদের। চাদ বানাইছোস।আর সব তো পুরাই ফেলছোস।এই গুলা খাবো কেমনে।(আম্মু)
.
--আমাকে বলতেছো কেনো রুটি বানিয়েছে তোমার জামাই।আমি তো শুধু ভাজি আর ডিম বাজি করেছি।(আমি)
.
--এই তোমাকে কি বলেছি আমি রান্না করতে কোন সাহসে তুমি সকালে রান্না করতে গেছো।তুমার রান্না করার সময় তো রাতে।তুমি সকালে কেনো গেলা।(আম্মু)
.
--আসলে ভাবলাম যে ছেলেটা কত কষ্ট করতেছে একটু সাহায্য করে দিলে ভালো হতো।(বাবা)
.
--ওকে তোমার সাহায্য করতে হবে তাই না।তোমার জন্যই সব হয়েছে।তুমিই সব কিছুর জন্য দায়ী।এজন্য আজ থেকে তুমি সকালে আর রাতে রান্না করবা।(আম্মু)
.
--এটা কি হলো।(বাবা)
.
--যাক বাবা আমি বেচে গেছি।(আমি)
.
--তুমি বাচো নাই।বাসার সব বাজার তুমি কিনে নিয়ে আসবা।(মেঘলা)
.
--হুমমম আমার মেয়েটা একদম ঠিক বলছে।(আম্মু)
.
--আমি ৩ বেলা রান্না করে দিবো তাও বাজার করতে পারবো না।বাবা আছে তো বাবা বাজার করবে।(আমি)
.
--চুপ আর কোনো কথা শুনতে চায় না এখন তোমরা দুজন ভালো করে খেয়ে কাজে লেগে পড়ো।(আম্মু)
।।।।।।দুজন খেয়ে চলে গেলে।এখন আমি আর বাবা বসলাম খেতে।
.
--বাবা এভাবে কতদিন থাকবো বলো।(আমি)
.
--আমিও তো পারতেছি নারে বাবা।কিন্তু এখন একটু সাহস হয়ছে তোর মার বাপ তো তোর মার উপরে রাগ করছে তাই এখন তোর মা তোর নানার ভয় দেখাবে না।(বাবা)
.
--ওরা দুইজন কি কম নাকি।(আমি)
.
--হ রে বাবা আমাদের কপাল খারাপ।(বাবা)
.
--সব তোমার দোষ।কেনো যে আমাকে ফুপি বাড়ি পাঠাইলা।খুব শখ ছিলো না ওরে বউ বানানোর।এখন মজা বুঝো।(আমি)
.
--Idea।
.
--কি বাবা তারাতারি বলো।
.
--হিহিহি।(বাবা)
.
--এমন শয়তানি হাসি না দিয়ে বলো।(আমি)
.
--আমরা দুইজন অন্য দুইটা মেয়ের সাথে একটু খোলা মেলা মিশবো ওদের ২ জনকে দেখিয়ে।আর ওরা বুঝতে পারবে যে আমাদের সাথে এমন করলে আমরা অন্য কারো হয়ে যাবো।তখন দেখবি আর এমন করবে না।(বাবা)
.
--বাবা এতো ভালো বুদ্ধি তোমার মাথায় আসে কোথা থেকে।(আমি)
.
--কি জানি।(বাবা)
.
--আচ্ছা আগে বলো।মেয়ে পাবো কোথায়।(আমি)
.
--আরে আজকে তোর আম্মুর এক বান্ধুবী আসবে তোকে দেখতে।(বাবা)
.
--তাহলে তো তোমার তা হয়ে গেলো।(আমি)
.
--আরে তার একটা মেয়ে ও আছে।(বাবা)
.
--কি বলো বাবা।তাহলে তো কাজ হয়েই গেছে।(আমি)
.
--আরে আসতে বল কেউ শুনে ফেলবে।(বাবা)
.
--ওকে।(আমি)
.
--নে চল খাওয়া শেষ এখন আমরা কাজে লেগে পরি।আজকেই আমাদের শেষ কাজ হবে আমি এমন ব্যবস্হা করবো যে কালকে থেকে কোনো কাজই করতে হবে না আমাদের।(বাবা)
.
--হুমমম বাবা চলো।(আমি)
।।।।।
।
দুই বাবা ছেলে কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরলাম।আর আমার বাবুটা তার আম্মুর সাথে লুডু খেলছে আর সিরিয়াল দেখছে।যাক মনে মনে একটু খুশি হয়লাম কালকে থেকে তাহলে কাজ করবো না।আর যদি বাবা প্লান কাজ না করে তখন কি হবে আমার।আমাকে তো আস্তো খেয়ে ফেলবে।
যাই হোক দুপুরের রান্না হয়ে গেছে।বাসার বুয়া টা দুপুরে রান্না করে।আমাদের ও কাজ শেষ।গোসল করে নিলাম।আজকে আমি আর বাবা পুরা বাড়িটা পরিষ্কার করে ফেলছি।অবশ্য এখনও ময়লা আছে সব জায়গায়।কি আর করার আম্মুর বান্ধুবী আর তার মেয়ে আসলো।wow দুইজন এরই চেহারা সুন্দর।বাবা তো তাকিয়েই আছে।ভাবলাম বাবাকেই ফলো করা ভালো হবে তাই আমি ও আন্টির দিকে তাকিয়ে রইলাম,
.
--এই তুই বড়টার দিকে তাকিয়ে আছোস কেনো।(বাবা)
.
--তোমাকে ফলো করতেছি।(আমি)
.
--আরে তোর বড়টা দিয়ে হবে না।ছোট টার সাথে শুরু কর তাহলেই কাজ হবে।
.
--আসসালামু আলাইকুম দুলাভাই ভালো আছেন।(আম্মুর সাথে কথা বলার পর আন্টি বাবাকে বললো)
.
--অলাইকুম আসসালাম।ভালো আছি তুমি।--অলাইকুম আসসালাম।ভালো আছি তুমি।--অলাইকুম আসসালাম।ভালো আছি তুমি।--অলাইকুম আসসালাম।ভালো আছি তুমি।(বাবা)
.
--আমি ও ভালো আছি দুলাভাই।(আন্টি)
.
--তুমি তো আগের থেকে অনেক সুন্দর হয়ে গেছো।(বাবা)
।।।।।বাবা তো আন্টির প্রশংসা শুরু করে দিলো।হ্যা কাজ তো হচ্ছে আম্মু রেগে যাচ্ছে।তাহলে আমার ও কাজ শুরু করতে হবে।
.
--হাই।(আমি আন্টির মেয়েকে বললাম)
.
--হাই।(মেয়েটা)
.
--নাম কি তোমার।(আমি)
.
--আমার নাম রিশা।
.
--ও তোমার মতোই তোমার নাম টাও অনেক সুন্দর।(আমি)
.
--ও তাই।(রিশা)
.
--হ্যা সত্যি।কোন ক্লাসে পড়ো তুমি।(আমি)
.
--এবার ক্লাস ৮ এ।(রিশা)
।।।।।
আমি আর বাবা দুজনেই অনেক হেসে হেসে কথা বলতে লাগলাম মানে একটু অতিরিক্ত করে ফেললাম।সবাই একসাথে খাওয়া দাওয়া করে বিকালে গল্প করা শেষ হলে আন্টি আর রিশা চলে যাবে,
.
--হৃদয় এর আম্মু আমি বলি কি আমি ওদেরকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে আসি।(বাবা)
।।।।।।
আম্মু রেগে গিয়েছিলো তারপরও যেতে হ্যা বললো,
.
--হৃদয় তুই ও আয় আমার সাথে।(বাবা)
.
--ওকে বাবা।(আমি)
।।।।।
মেঘলা তো এখন রেগে লাল হয়ে গেছে।আমি আর বাবা হেসে কথা বলতে বলতে ওদের সাথে বের হলাম।গাড়িতে বেশী কথায় ই হয় নাই।দুজনকে নামিয়ে দিয়ে আসলাম,
.
--দেখিস তোর মা আর বউ এখন বুঝতে পারবে আমাদের আর কাজ করাবে না।(বাবা)
.
--না করালেই ভালো।তোমার বুদ্ধির জন্য তো প্রত্যক বার শুধু ধরা খাইছি।(আমি)
.
--এবার আর কোনো ধরা খাবো না।(বাবা)
।।।।।
।।।।
বাসায়আসলাম দেখি রাগে দুজনই লাল হয়ে আছে।কোনো কথায় বললো না।রাতে রান্না করলো বাবা আমি ও সাহায্য করলাম বাবাকে।খেলাম তাও ২ জন কোনো কথা বললো না।সোজা রুমে চলে গেলো মেঘলা।আল্লাহ ই জানে কি হবে আমার।ওর চেহারা দেখে তো ভালো মনে হচ্ছে না।মনে হয় আজকে আমি শেষ।।তাই সোজা রুমে চলে আসলাম আমিও।খুব ভয় করতেছে ভিতরে ঢুকতে।ভিতরে গেলাম রুমটা আটকে দিলাম।
.
--ঔ তুই এখানে এসেছিস কেনো।তোর রিশার কাছে যা।(মেঘলা)
.
--বাবু কি বলতেছো আমি রিশার কাছে যাবো কেনো।আমার বউ তো তুমি তোমার কাছেই আসবো আমি।(আমি)
.
--আজকে থেকে তুই আমার কাছে আসবি না তোর কোনো অধিকার নাই আমার কাছে আসার।(মেঘলা)
.
--তুমি রাগ করতেছো কেনো।(আমি)
.
--রাগ করতেছি কেনো জানোস না।তোকে বলেছি না অন্য কোনো মেয়ের সাথে একদম কথা বলবি না।কিন্তু তুই তো রিশার সাথে প্রেম আলাপ শুরু করে দিয়েছিলি।(মেঘলা)
.
--আচ্ছা বাবা রাগ কইরো না জানো তো আমি রাগ ভাঙ্গাইতে পারি না।(আমি)
.
--সেজন্যইতো বেশী রাগ করতে পারি না তোর উপর।(মেঘলা)
.
--আচ্ছা এমন ভুল আর কোনো দিনও হবে না।(আমি)
.
--না সেটা বললে আর হবে না।৩ দিন আমার কাছে ঘুমাতে পারবি না।আর বাসার ২ দিনের সব কাজ তোকেই করতে হবে।(মেঘলা)
.
--আচ্ছা সব করবো কিন্তু তুমি আমাকে তুই করে বইলো না।(আমি)
.
--এই একদম কাছে আসবা না।৩ দিন কোনো টাচ করতে পারবা না।(মেঘলা)
.
--এই বালিশ আর কাথা নিয়ে সোফায় ঘুমায়।
।।।।।।
কি আর করার বালিশ আর কাথা নিয়ে সোফায় চলে আসলাম।দিনে যতই কাজ করাক।বউ আমার রাতে ভালোবাসার আদর দিয়ে সব কষ্ট দুর করে দেই।বাবার জন্য তো ওকে জরিয়ে ধরে ও ঘুমায়তে পারবো না।ওকে জরিয়ে ধরে না শুইলে তো ঘুমই আসে না।।বাবা গো তোমার কথা আমি আর শুনবো না।আরে বাবা মশা কামড়াই কেনো এতো।
।।।
।।
।
(চলবে)
।
।।
।।।
ভালো লাগলে বলবেন