#জলপরীর_প্রেমে#
#সিজন_২#
পার্টঃ০৩
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
।।।।
।।।।
।।।।
.
--আমি বিশ্বাস করতে পারছি না বাস্তবে কোনো স্পেসশীপ দেখতে পারবো।(আমি)
.
--মহারাজ এই এলিয়েন শীপ এখানে আসা মানে মনে হচ্ছে আমাদের সামনে সত্যি কোনো বিপদ আসতে চলেছে।(বিজ্ঞানী)
.
-- যদি এলিয়েনই হয় তাহলে তো আমাদের ভয়ের তো কারন দেখছি না মহারাজ।(পাতালপুরীর সেনাপতি অদ্রিজ হেম)
.
--আপনি সেটা কিভাবে বলছেন?(নিলা)
.
--মহারানী দেখেন তারা হলো এলিয়েন। নিশ্চয় আমাদের এইসব দুনিয়ার ব্যাপারে তাদের ধারনা নেই। তারা আক্রমন করলে মানুষের উপরেই করবে।(সেনাপতি)
.
--সেনাপতি অদ্রিজ হেম কথাবার্তা সাবধানে বলুন। নিষ্পাপ মানুষের উপরে হামলা হবে আর আমরা কি চেয়ে দেখবো। আপনি সকল গেটের নিরাপত্তা বারিয়ে দিন। সেই সাথে আক্রমনের জন্য সৈন্য ঠিক করে রাখুন।(আমি)
.
--জ্বী মহারাজ।(সেনাপতি)
।।।।
।।।।
আমরা বের হয়ে রাজ সিংহাসনে আসতে ছিলাম। বসলাম নিলার সাথে রথে। রথ চলতে লাগলো রাজ প্রাসাদের দিকে।
.
--আমার মনে হচ্ছে এই এলিয়েনই আক্রমন করবে আমাদের উপরে। আর বিপদটা আমাদের খুব কাছে।(আমি)
.
--তুমি কোনো চিন্তা কইরো নাতো।(নিলা)
.
--তুমি এতো চিন্তামুক্ত কিভাবে থাকো আমি যে পারছি না।(আমি)
.
--কে বলছে আমি চিন্তা করি না। এই যতদিন তুমি আমার থেকে আলাদা ছিলে ততদিনই চিন্তা করেছি আমি। সব সময় মাথায় ঘুরে বেরাতো আদৌও কি তুমি ফিরবে আমার কাছে। সব দুশ্চিনা আসতো মাথায়।(নিলা আমার কাধে মাথা দিয়ে)
.
--কি বা করার আছে বলো। কষ্ট তো একটু করেই হবে।(আমি)
.
--তুমি আমার মনের কথা বুঝবে না।(নিলা)
.
--কে বললো বুঝবো না। আজকে আমাকে নিয়ে পুরো পাতালপুরী উড়ে বেরাবা?(আমি)
.
--হঠাৎ উড়তে মন চাইলো কেনো?(নিলা)
.
--একটু উড়ন্ত রোমান্স করবো তাই।(আমি)
.
--তুমি আসলেই দুষ্টু।(নিলা)
.
--হুমমম।(আমি)
।।।
।।।
সিংহাসনে এসে আমার রাজ্য পরিচালনার বোরিং কাজে নিয়োজিত হয়ে গেলাম। কিন্তু রাতটা স্পেশাল ছিলো। পুরো পাতালপুরী নিলাকে জরিয়ে ধরে উড়ে বেরিয়েছি। সে কি অনুভূতি সেটা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। পরের দিন সকালে রাজ সভায় বসলাম।
.
--সেনাপতি অদ্রিজ।(আমি)
.
--জ্বী মহারাজ।(সেনাপতি)
.
--আজকেই সকল গেইট লক করে দিবেন। ভেতরের কেউ জেনো বের হতে না পারে। আর টেলিপোর্টেশন ডিভাইস আমার অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করবেন না?(আমি)
.
--জ্বী মহারাজ।(সেনাপতি)
.
--আর সৈন্য তৈরী রাখুন আপনি। খুব শীঘ্রই হয়তো পৃথিবীর উপরে আক্রমন হতে পারে।(আমি)
.
--জ্বী মহারাজ আমি মারাত্মক কিছু তথ্য সংগ্রহ করতে পেরেছি।(বিজ্ঞানী)
.
--কি সেটা বলুন।(আমি)
.
--মহারাজ আমি স্পেসশীপটা ভালো করে পর্যবেক্ষন করেছি। এটা এতো শক্তিশালী যে এটা আমাদের জ্বীন ও পরীদের ও মেরে ফেলতে পারবে।(বিজ্ঞানী)
.
--কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব?(আমি)
.
--আমি ও সেটাই ভাবছিলাম। কিন্তু অনুসন্ধানের পরে জানতে পারলাম। এলিয়েন গুলো আমাদের মতই ক্ষমতা শালী। বলতে গেলে আমাদের ক্লোন ওরা।(বিজ্ঞানী)
.
--তাহলে তো আসলেই বিপদ।(আমি)
.
--মহারাজ শুধু বিপদ নয়। মহাবিপদ বলুন। কারন এই স্পেসশীপের একটা ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করতে পারি।(বিজ্ঞানী)
.
--দেখান তো ভিডিওটা।(আমি)
।।।
।।।
বিজ্ঞানী আমাদের সামনে বড় পর্দায় দেখাতে লাগলো ভিডিওটা। যেখানে রাজা লু চিন বলতেছে, ""প্রিনসেস তুমি এখনো ঔখানের গোপন সব তথ্য খুজতে থাকো। আর আমাদের ইনফর্ম করো। তোমার সিগনালের অপেক্ষা করবো। তারপরই আমরা ১২ হাজার স্পেসশীপ নিয়ে আক্রমন করবো।""
।।।
।।।
ভিডিওটা দেখে আমাদের সবার গলা শুকিয়ে গেলো।
.
--মহারাজ ভাবতে পারছেন ১২ হাজার স্পেসশীপ নিয়ে তারা আক্রমন করতে বসে আছে আমাদের উপরে।(বিজ্ঞানী)
.
--তারা এলিয়েন হলেও অনেকটা মিল রয়েছে আমাদের সাথে তাদের।(আমি)
.
--হ্যা সেটা তো ভিডিও টা দেখেই বোঝা যাচ্ছে।(বিজ্ঞানী)
.
--আচ্ছা তাহলে আমি আজ বিকালেই মিটিং এর ব্যবস্থা করতে হবে।(আমি)
.
--মিটিং কেনো?(নিলা)
.
--তুমি বুঝবে না। সেনাপতি আমি দুপুরের আগেই জলপুরী আর আকাশপুরীর রানী,সেনাপতি আর মন্ত্রীকে দেখতে চাই এখানে।(আমি)
.
--জ্বী মহারাজ।(সেনাপতি)
।।।
।।।
আমি দানব রাজ্যের সেনাপতি রনইক দে কে ফোন দিলাম। আধুনিক টেকনোলজির এই সুবিধা। যখন যার নাম বলবো ফোন চলে যায়। ফোন দিয়ে আমি পোর্টাল ব্যবহার করে আসতে বল্লাম তাকে। দুপুরেই সব এক সাথে হলাম। জারা এসেছে সাথে মোহনাও এসেছে। মোহনা আমার দিকে এক নজরে তাকিয়ে ছিলো৷ অনেক মায়া মেয়েটার চোখে। এক সময় তো এই মেয়েটাই মায়া করেছিলো আমার উপরে। কিন্তু এখন তো মায়ার প্রয়োজন হয় না। এমনিতেই মায়া লাগে তার উপরে। সবাই বসলাম। আমার চারপাশে আমার তিন রানী বসলো। শুধু একটার অভাব। হয়তো সেটাও পূরন করে ফেলবো।
.
--হঠাৎ জরুরী মিটিং কেনো ডাকলে?(মোহনা)
.
--মহারাজ কি হয়েছে হঠাৎ জরুরী তলব করলেন।(সেনাপতি রনইক দে)
.
--আমাদের উপরে যে বিপদটা আসার কথা ছিলো সেটা খুব নিকটেই।(আমি)
.
--সেটা তো কবে থেকেই বলে যাচ্ছো।(জারা)
.
--হ্যা তবে সিওর হতে পেরেছি কারা আমাদের উপরে আক্রমন করবে।(আমি)
.
--কারা মহারাজ একবার বলুন তাকে নিমিষেই পিষে ফেলবো।(রনইক দে)
.
--সেটা আমাদের পৃথিবীর কেউ না। দূরে কোথাও একটার গ্রহের। আর সেই গ্রহটার রাজার কন্যা মানে রাজকন্যা আমাদের পৃথিবীতে এসেছে আর রাজা তার সৈন্য নিয়ে তৈরী আমাদের উপরে হামলা করার জন্য।(আমি)
.
--দূরে গ্রহের এটা বুঝলাম। কিন্তু তারা হামলা করবে কোথা থেকে হুজুর?(রুদ্রিস)
.
--তারা আকাশ থেকে আসবে। আকাশপুরীর পাশ দিয়ে আসবে তারা।(আমি)
.
--তাহলে তো তাদের আমরাই আক্রমন করতে পারবো মহারাজ।(আকাশপুরীর সেনাপতি হিতান)
.
--এতো সহজ হবে না। তারা কিন্তু তোমাদের মতোই শক্তিশালী।(আমি)
.
--হুজুর আপনি ভয় পাচ্ছেন কেনো। আপনি আমাদের রাজা। আপনার কাছে মহান ট্রিশুল।(রুদ্রিস)
.
--হ্যা সেটা ঠিক। তবে ভয় একটাই তারা যে আকাশ থেকে আক্রমন করবে। আর আমাদের বেশীভাগ সৈন্য মাটি আর পানির। শুধু আকাশপুরীর সৈন্যরাই উড়ে আক্রমন করতে পারবে।(আমি)
.
--আমি কি বলছি আমাদের রাজ্য গুলো গোপন রাখলেই হয়। তারা আসুক পৃথিবী থেকে ঘুরে যাক।(মোহনা)
.
--ঘুরে যাবে না। তার আক্রমন করতে আসবে ১২ হাজার স্পেসশীপ নিয়ে। আর আমরা গোপন থাকলেও তার পৃথিবীর সব মানুষ মেরে ফেলবে।(নিলা)
.
--সেটা তো খুবই ভয়নক হবে।(জারা)
.
--আমরা পৃথিবীতে আছি। ব্যাপারটা এখন আমাদের গ্রহের মধ্যে চলে এসেছে। শুধু রাজ্যের মধ্যে নেই এখন আর। যে করেই হোক পৃথিবীকে বাচানো আমাদের দায়িত্ব।(আমি)
.
--হ্যা মহারাজ আপনি ঠিকই বলেছেন।(রনইক দে)
.
--তাহলে আমি বুদ্ধিটা প্রয়োগ করছি। ঔ এলিয়েন রাজার মেয়েকে পাঠিয়েছে আমাদের পৃথিবীতে। আমি ভুল না বললে এখন মানুষের মাঝেই আছে সেই রাজকন্যা।(আমি)
.
--তো আমরা কি তাকে গ্রেফটার করবো নাকি হত্যা করবো?(রুদ্রিস)
.
--সেটা বোকামী হবে। তাকে আমাদের ব্যবহার করতে হবে। প্রথমে সনাক্ত করতে হবে সে কে? তারপর তাকে ব্যবহার করতে হবে।(আমি)
.
--মহারাজ আমার ধারনা মতে এখন সে আমেরিকার কোনো এক জায়গায় আছে।(বিজ্ঞানী)
.
--স্পেসশীপটা কোথায় পাওয়া গেছে?(আমি)
.
--মহারাজ আমাদের স্যাটেলাইটটা এটাকে সনাক্ত করেছিলো। বার্মুডা ট্রাইঙ্গেলে পরেছিলো এটা। আর আমাদের স্যাটালাইট সেই রাজকন্যার একটা স্পষ্ট ভিউ এসেছে।(বিজ্ঞানী)
.
--এটা আগে বলবেন তো।(আমি)
.
--বলারই অপেক্ষায় ছিলাম। মেয়েটা এখন হয়তে কিউবা নাহলে মেক্সিকোতে রয়েছে।(বিজ্ঞানী)
.
--মহারাজ আমাদের মাঝেই কাউকে পাঠান সেখানে।(হিতান)
.
--না আমি নিজেই যাবো। আপনারা এক একজন জ্বীন। আপনাদের কাউকেই পাঠানো যাবে না। তবে আমি মানুষ। তার কাছে মানুষের মতোই থাকবো।(আমি)
.
--হুমমম আপনি যেটা বলেন।(অদ্রিজ)
....
।।।
মিটিং শেষ করলাম। মিটিং বলে না এটাকে। রাজসভা এটা। ভাবছিলাম অন্য কাউকে পাঠাবো। কিন্তু মেক্সিকোর নাম শুনে আর কাউকে পাঠালাম না। এখন নিজেই যাবো। নিজেই ঘুরে আসি দেশটা থেকে। বিকালে আমাকে যেতে হলো আকাশপুরীতে। যেহেতু নিখোজ থাকতে হবে অনেকদিন তাই সব রানীর কাছেই তো যেতে হবে। না গেলে তো হবে না।
।।।।
।।।।
।।।।
আর অন্যদিকে লু সাইনা পৌছে গেছে মেক্সিকোতে। প্রথম দুই দিন কাটলো এখানের মানুষের স্বভাব কাজ কর্ম দেখতে দেখতেই। এমন কিছু তো আর করতে পারবে না যাতে এর সন্দেহ করবে। কিন্তু সে অনেকটা অবাক হলো কারন এখানের মানুষগুলো ঠিক তার মতো দেখতে। লু সাইনা জানে কিভাবে এখানের মানুষ সম্পর্কে ধারনা নিবে। তাই সে লাইব্রেরীতে পৃথিবী ও মানুষদের নিয়ে লেখা বই পড়ে। সাথে পৃথিবীর ডিফেন্স নিয়েও পড়ে। ও দেখলো অনেকটাই দুর্বল এখানের মানুষ। এদের নিমিষের হারিয়ে গোলাম বানিয়ে ফেলা যাবে। কিন্তু তাও ওর মন মানছে না কারন আশে পাশের কোনো গ্রহ এখানে এখনো হামলা করে নি,হয়তো শক্তিশালী কিছু রয়েছে তার জন্যই তো এখনো কিছু হয়নি এই গ্রহের। সে আরো জানতে লাগলো আস্তে আস্তে।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।
অপেক্ষা করুন ৪র্থ পার্টের জন্য।