#সিজন_3#
পার্টঃ১২
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
।।।।
।।।।
।।।।
কি হলো কিছুই বুঝলাম না। কে এই রহস্যময়ী মেয়েটা যে এভাবে বার বার আমার সামনে আসছে। আমি ঠিক তাল মিলাতে পারতেছি না। আর আমার কিছু করার আগে এটা এসে লোকটার সমস্ত শক্তি নিয়ে গেলো। এখন লোকটা বেচে আছে কিনা সেটা দেখতে হবে। লোকটা উপুর হয়ে পরে আছে। আমি তাকে উল্টালাম। উল্টিয়ে দেখতেই চোখে পরলো তার শরীর কালো হতে শুরু করেছে। সে এখনো মারা যায় নি তবে তার বুকের জায়গাটায় কালো হতে শুরু করেছে। এমনিতেই সে কালো তারপরও আরো কালো হতে শুরু করেছে। মেয়েটার মাঝে কিসের এমন শক্তি আমি বুঝতে পারতেছি না। কালো শক্তি তো সব আমার কাছেই আছে। তাহলে এটা কিসের শক্তি আমার মাথায় আসছে না। কালো ছায়া দিয়ে সে আচ্ছন্ন থাকে। তবে দেখতে অনেক সুন্দরী হবে এটা আমি হলফ করতে পারি। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না আমার সাথে সে শারিরীক সম্পর্ক রেখে কি করবে। সেটা কি আদৌও স্বপ্ন ছিলো নাকি বাস্তব এটা আমি এখনো নিশ্চিত না। তবে যেহেতু আমার বুকে তার দেওয়া কামরের দাগ এখনো আছে তাই সেটা বাস্তবই হবে। কিন্তু এতে তার কি লাভ? কিছু একটা তো হবেই। নাহলে কি সে এমন করতো আচ্ছা আপাতোতো আমি ফিরে যায় নাহলে আবার মেয়েটা এসে আমার শক্তিগুলো না নিয়ে যায়।
।
আমি উড়তে উড়তে চলে আসলাম। ভালো লাগে না এমন সময় নিয়ে চলা। এর থেকে পাতালপুরীতে গিয়ে টেলিপোর্টেশন ডিভাইস নিয়ে আসলে ভালো হতো। আচ্ছা হৃদিতা তো বলেছে ওর রাজ্য সবার থেকে উন্নত তাহলে এমন জিনিস তো দ্বীপ রাজ্যেও আছে। আচ্ছা এখন আর দ্বীপ রাজ্যে যাবো না। কারন অনেক ইচ্ছা হচ্ছে জলপুরীতে যাওয়ার। বেশকিছুদিন তো হয়েই গেলো। আর জারাকেও শেষ একবার দেখতে পারবো। তারপর দেখা হবে কিনা আমি নিজেও জানি না। আমার কাছে ট্রিশুল নাই তাই তারা হয়তো আমাকে দেখে কেউই ভয় পাবে না। আসলে জ্বীন পরীদের দিয়ে কোনো বিশ্বাস নেই। এদেরকে বিশ্বাস করাটাই বোকামি। এরা নিজেদের কাছে ঠিকই বিশ্বাস রাখে। কিন্তু অন্য জাতি এদের উপরে অধিকার ফলালে কি এরা মেনে নিবে। তবে আমি ঠিকই বুঝতে পেরেছি নিলার অবস্থা। ওর মাঝে অর্ধেক মানুষের ডি এন এ আছে। তাই ও এসব জ্বীন পরীদের মতো না। সত্য ভালোবাসা যেটা সেটা ওর কাছেই আছে। পানির উপর দিয়ে দ্বীপ রাজ্যে উড়ে যাচ্ছিলাম কিন্তু পথমধ্যে রাস্তা চেন্জ করে ফেললাম। পানিতেই ঝাপ দিলাম। গন্তব্য এখন জলপুরী। কিন্তু সেখানে যাওয়ার আগে তো আমাকে রূপ বদলাতে হবে। কিন্তু সেটা খুব সাবধানে করতে হবে। রাজ প্রাসাদে কয়েকজন বিশ্বস্ত লোক ছিলো আমার। তাদের কারো চেহারা নিলে ভালো হবে। কিন্তু দুজন মানুষ এক জায়গায় থাকলে তো বেশ খারাপ হয়ে যাবে। তারচেয়ে আমি জলপুরীতে হামলা করি অন্য কোনো রূপ নিয়ে। হ্যা সেটাই ভালো হবে। আমি লু চিনের পুত্র চেইন এর রূপ নিলাম। এই জলরাজ্যকে তো এবার ভয় দেখানোর সময় চলে আসছে। তবে প্রথমে আমাকে অন্য একটা জলমানবের চেহারা নিয়ে এই রাজ্যটা ঘুরে দেখতে হবে। আমি একটা সাধারন জলমানবের রূপ নিলাম। পা না হয়ে আমার লেজ হয়ে গেলো। বিষয়টা আশ্চর্যকর এমনি সময়ে আমার লেজ আসছিলো না তবে জাদু দিয়ে আমি বানিয়ে ফেললাম লেজ। জানি না এটা দিয়ে কিভাবে এরা চলাচল করে আমার তো মোটেও ভালো লাগছে না। তা ও কষ্ট করে আমি যেতে লাগলাম। জলপুরীতে চলে আসার আগেই দেখলাম পুরো রাজ্য নিরাপত্তা ঢাল দিয়ে আটকানো। তাতে আমার কি আমি তো জাদু দিয়ে এটা ভেদ করে চলে যেতে পারবো। কালো জাদুর ক্ষমতার মধ্যে এটাও একটা। যেকোনো জিনিস ভেদ করে চলে যাওয়ার ক্ষমতা আছে আমার। অবশ্য এটা অনেক গবেষনার পর হৃদিতাই আমাকে শিখেয়েছিলো। আমার এটা ব্যবহার করা হয় নাই। তবে চেষ্টা করে দেখি। আমি ক্ষমতাটা ব্যবহার করে ভিতরে চলে আসলাম জলপুরীর। তারপরে রাজ্যের দিকে রওনা দিলাম। ভিতরে কোনো জিনিসই বলদাই নি এখনো। বদলাবে কেনো মাত্র তো এক মাস সময় হলো আমার এখান থেকে যাওয়ার। সরি আমার না। ওদের কাছ থেকে আমি গিয়েছি মাত্র ১ মাস হয়েছে। কিন্তু আমি তো ওদের ছেড়ে এসেছি সেই দেড় বছরের ও বেশী সময় হলো। টাইম ট্রাভেল এঔ জিনিসটাকে অনেক জটিল বানিয়ে দিয়েছে। অবশ্য টাইমমেশিনটা এখন আমার কাছে থাকলে সামনে আরো জটিল কিছু হতো। তবে না হওয়াটাই ভালো। সাধারন যেভাবে আছি সেভাবেই থাকা ভালো। আমি ঘুরতে লাগলাম ভিতরে। পুরো রাজ্যের প্রজারা হয়তো এখন নতুন রাজা পেয়ে খুশি। তারা হয়তো কেউই চাইনাই একজন মানুষ তাদের রাজা হোক। কিন্তু আমার ট্রিশুলের ভয়ে হয়তো তখন কিংবা আমার অন্য রাজ্যের ভয়ে তারা কিছু বলে নি।।। এখন তো তিন রাজ্যই এক হয়ে গেছে। তিন রাজ্যের সেনারা হাত মিলিয়েছে। আমাকে পরপারে পাঠানোর ব্যবস্থাও করেছিলো কিন্তু আমি পালিয়ে যায় সেখান থেকে। সেদিন বিজ্ঞানী আমাকে টেলিপোর্ট না করলে হয়তো আমি মারা যেতাম। থাক আমি এখন প্রাসাদ থেকে ঘুরে আসি। এদের সাথে মজা তো পরে করা যাবে। এরা কোনো ভাবেই বুঝতে পারবে না আমিই এদের রাজা হৃদয় টিটান।
।
আমি প্রাসাদের দিকে যাচ্ছিলাম। দেহরক্ষীরা পাহাড়া দিচ্ছিলো। অনেক কড়া পাহাড়া দেওয়া হচ্ছিলো৷ তাই আমার ভিতরে যাওয়া সম্ভব ছিলো না। কিন্তু আমার কাছে তো ভূতের ক্ষমতা ছিলো। আমি তো যেকোনো জিনিসই পার হতে পারি। জিনিসটা একবার ব্যবহার করে আমার অনেক ভালো লেগেছে। কয়েকবার ব্যবহার করলে হয়তো আমার পছন্দের একটা ক্ষমতা হয়ে যাবে। আমি দাড়িয়ে রইলাম দেয়ালের পাশে এসে। তারপর চোখটা বন্ধ করে হাত দিলাম দেওয়ালে সাথে সাথে আমার হাত ভিতরে ঢুকে গেলো। আমি ভিতরে ঢুকে পরলাম। এখন যাবো রাজ দরবারে। দেখি নতুন রাজা কি করছে। ভিতরে গিয়েই দেখলাম সিংহাসনে আমার পুরাতন সেনাপতি বসে আছেন। মনে হচ্ছে রাজ্য পেয়ে তিনি অনেক খুশি। আমি দাড়িয়ে দাড়িয়ে তার কথা শুনছিলাম। সে মন্ত্রী আর সেনাপতির সাথে কথা বলতেছে।
.
--মহারাজ এসব এলিয়েনদের বিষয়ে কি আমরা কিছু করবো?(মন্ত্রী)
.
--তারা আমাদের ঠিকানা কখনো পাবে না। তারা মাটিতে রাজ করতে আসছে করুক আমরা আমাদের রাজ্যে আমাদের মতো থাকি।(রাজা)
.
--কিন্তু আমাদের উপরে যদি হামলা করে তারা। তখন?(সেনাপতি)
.
--তারা সেটা কখনো করবে না।(রাজা)
.
--আমরা দানব রাজ্যের সাথে কথা বলার অনেক চেষ্টা করেছি। আমাদের টেলিপোর্টেশন ও কাজ হচ্ছে না সেখানে যাওয়ার জন্য। কি করবো বুঝতে পারছি না মহারাজ।(বিজ্ঞানী এসে বললো)
.
--এখনো আমরা হৃদয় টিটান এর লাশ পাই নি। তার মৃত্যুর সংবাদ কিভাবে মেনে নিবো? যদি সে দানব রাজ্যে পরে থাকে?(রাজা)
.
--আমাদের তথ্য অনুযায়ী সেখানে যাবে না সে। হয়তো এলিয়েনদের হাতেই মারা গিয়েছে। কিংবা বন্ধী হয়েছে। তার যে ট্রিশুল ছিলো সেটাও ভেঙে গেছে এখন সে কিছুই না।(সেনাপতি)
.
--হয়তো।(রাজা)
।।।
।।।
।।।
আমি সেখান থেকে চলে আসলাম। এদের কথা ভালো লাগলো না। বিশ্বাসের দাম রাখে নাই এরা। আমাকে মারার জন্য প্রস্তুত ছিলো এরা। এদেরকে আসল ক্ষমতা তো দেখাতেই হবে। ভয়ে এরা থরথর করে কাপপে আমার নাম শুনলে। জলপুরী একবার ধ্বংস করেছিলাম আবার করতে আমার এক সেকেন্ডও লাগবে না। এরা হয়তো জানে না আমার কাছে এখন কি আছে। আমি সব রুমের মধ্য দিয়ে পেরিয়ে একদম জারার রুমের দিকে চলে আসলাম। অনেক দেখতে মন চাচ্ছিলো ওকে৷ আমার মন বলতেছিলো হয়তো ওকে জোর করেই বিয়ে করেছে রাজাটা। তাই ছুটে আসলাম আমি। হয়তো পালাতে পারে নি তখন। একা কি বা করবে মেয়েটা। বাবা নাই মা নাই ভাই নাই বোন ও নাই আবার স্বামীও নাই। জোর করে তো যে কেউ কিছু করে দিতে পারে।
।
আমার চিন্তা ভাবনা একদমই ভুল ছিলো সেটা আমি ওর রুমের মধ্যে ঢুকেই বসে ছিলাম। জারা ওর একটা বান্ধুবীর সাথে গল্প করছিলো। আমি আড়ালে লুকিয়ে গেলাম ওর রুমের মধ্যেই। আমি উড়তে ছিলাম। আর পানিতে উড়লে কোনো শব্দ হয় না। তাি হয়তো বুঝতে পারে নাই। আমি আমার মতো কান পেতে শুনতে লাগলাম।
.
--এতো তারাতারি আপনার ভালোবাসা শেষ হয়ে গেলো। বিয়েতে রাজি কিভাবে হয়ে গেলেন?(জারার বান্ধুবী ডাইলো)
.
--মানে?(জারা)
.
--এইযে আপনি আগের মহারাজকে বিয়ে করলেন। অনেক আগে থেকেই তাকে ভালোবাসতেন। তাহলে এতো দিনের ভালোবাসা আপনি ত্যাগ করে দিলেন তার মৃত্যুর খবর শুনেই। বিয়ে করে ফেললেন নতুন রাজাকে?(ডাইলো)
.
--আমার ছোট থেকেই ইচ্ছা ছিলো আমার বর পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তি হবে। আমার পিতা যেদিন শেষ এসে বললো একজন মানুষের সাথেই আমার বিয়ে হবে আর সে হবে সবচেয়ে শক্তিশালী এই পৃথিবীর মধ্যে তখন থেকেই আমার টান তৈরী হয় তার উপরে। আমার সব সময় একজন রানী হওয়ার ইচ্ছা ছিলো। কিন্তু সে আমাকে বিয়ে না করলে তো আমি রানী হবো না। তাই ছোট থেকেই তার আশে পাশে যাওয়ার চেষ্টা করতাম। কিন্তু কিছু একটা বাধা দিতো তার কাছে যেতে। কিন্তু একটা সময় আমি যেতে পারি। আর যখন আমাদের মাঝে ভালোবাসা তৈরী হয় সেটা সত্য ছিলো। কিন্তু সে যখন আমাকে ছাড়া অন্য আরো কাউকে রানী বানাতে পারে বিয়ে করতে পারে তাহলে তার মৃত্যুর পর আমি বিয়ে করতে পাবো না কেনো? আমি তো এই পুরে বিশ্বের রানী হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সে এক একটা রাজ্যে বিয়ে করে সেখানে তাদের রানী করে দিয়েছে।(জারা)
.
--এই ছোট্ট বিষয়ে আপনি বিয়ে করে ফেললেন নতুন রাজাকে। যদি আগের রাজা ফিরে আসে?(ডাইলো)
.
--সেটা কখনো হবে না। বিজ্ঞানী আমাকে ফেলেছে সে নিজের চোখে তাকে মরতে দেখেছে। প্রথম কয়েকদিন কান্না করেছি। পরে যখন এই রাজা আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলো তখন ভাবলাম দরকার কি এসব পুরানো কথা ভেবে আমার জীবনটা নষ্ট করার তাই রাজি হয়ে গেলাম।(জারা)
।।।।
।।।।
আর কিছু শোনার ছিলো না আমার। আমি বের হয়ে গেলাম সেখান থেকে। আমার একার পক্ষে সব গুলো রাজ্য দেখা সম্ভব ছিলো না এজন্যই মূলত আমার তিনটা রানী ছিলো। তারা প্রত্যেকে আমার তিনটা রাজ্য দেখতে। আর দানব রাজ্যের জন্য আমার সেনাপতিই যথেষ্ট ছিলো। কিন্তু এটা জারার কাছে ভুল মনে হয়েছে। আচ্ছা আমি তো সবার থেকে ওকেই বেশী ভালোবাসতাম। সবার থেকে ওকেই বেশী সময় দিতাম। তাহলে এমন করলো কেনো। হয়তো ওর মনেই খারাপ কিছু ছিলো। থাকবেই না কেনো যার মা বিয়ের পরেও অন্য কারো সাথে সম্পর্কে জরিয়ে যায় তার মেয়ে যে ভালো হবে সেটা ধারনা করা ভুল। আমি চলে আসলাম বাইরে। এবার আর কি। ভেবেছিলাম এলিয়েন রাজার ছেলে হয়ে এদেরকে ভয় দেখাবো। কিন্তু না এখন আর এলিয়েন রাজার ছেলে না। আমি সিগমার রূপ নিলাম। সিগমাকে কেউ চিনে না। সারা পৃথিবীর কারোরই চেনার কথা না। এমন ক্ষমতা হয়তো জলপুরীর কেউ আগে কখনো দেখে নি পা শোনে নি। আমি সিগমা হয়ে দাড়িয়ে আছি ঠিক জলপুরীর মাঝামাঝি। নিজের শরীর থেকে কালো ছায়া বের হচ্ছে। অন্য কোনো ক্ষমতা ব্যবহার করবো না। কালো ক্ষমতা দেখাবো এদের। আমি আস্তে আস্তে উড়তে উড়তে উপরে উঠে আসলাম। আমার চারদিক দিয়ে একটা বল হয়ে গেলো। যেটার মধ্যে পানি আসছে না। আমি এখন অপেক্ষা করছি নতুন রাজার সেনার। সবাইকে উড়িয়ে দিবো এখন। যে কয়টা সেনা আমার সাথে লড়তে আসবে সব কয়টার জীবন যাবে। যে চলে যাবে এখান থেকে শুধু তার জীবন বাচবে। খেলা হপ্পে এবার।🤣😂🤣😂
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।
অপেক্ষা করুন ১৩ তম পার্টের।