পার্টঃ০৮
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
।।।।।
।।।।।
।।।।।
আমরা বাড়িতে পৌছে গেলাম। বাবা আম্মু আর আঙ্কেল সব গেস্টদেী বিদায় দিয়ে আসবেন। রাত এখন ১০ টা বেজে গেছে। বিয়ের অনুষ্ঠানের পরে ছোট একটা ফাংশন ও হয়েছিলো। তার জন্য একটু দেরী হয়ে গেছে। বাসায় আসার পরই ভাইয়া আমাকে জোর করে আমার রুমে ঢুকিয়ে দিলো। আমার রুমে ঢুকিয়ে দিয়ে বাইরে থেকে দরজা লক করে দিলো। আমি আর কি করবো। নিলাকে হৃদি ওর সাথে নিয়ে গেছে। ভাবলাম ওর কাছেই মনে হয় থাকবে। তাই ঘুমিয়ে পরলাম আমি। কিন্তু ঘুম আর হলো কোথায়। একটু পরেই মনে হলো আমি বৃষ্টিতে ভিজতে ছিলাম। মুখে শুধু পানি পরছিলো আমার। কিন্তু আমার চোখ খুলতে মন চাচ্ছিলো না। একটু পরে বুঝলাম এটা স্বপ্ন না এটা বাস্তব। আমি চোখ খোলার সাথে সাথেই দেখতে পেলাম নিলা আমার সামনে লাইট অন করে ওর মুখে ধরে রেখেছে। ওর বাকা দাত বের করে রাখছে এবং চোখ দুটো উল্টিয়ে রাখছে। আমি ওর এই রূপ দেখে ভয়ে জোরে চিৎকার করে উঠলাম। আর নিলা আমার মুখে ওর হাত দিয়ে আটকে বলতে শুরু করলো।
.
--একদম চিৎকার করবেন না। নাহলে সবাই খারাপ খাববে।(নিলা)
.
--এমন পেত্নী দেখলে তো ভূতও চিৎকার করে উঠবে।(আমি)
.
--কি আমি পেত্নী তাই না?(নিলা আমাকে মারতে লাগলো)
.
--এমন মাইরে আমার কিছুই হবে না। উল্টো ব্যায়াম হয়ে যাবে।(আমি)
.
--তাহলে দেখাচ্ছি।(নিলা)
।।।
।।।
ডিম লাইটের আলো জ্বলছিলো। সেই আলোতে দেখলাম নিলা আমার গিটারটা উঠিয়ে নিয়ে আসলো এবং সেটা আমার মাথায় মারতে যাচ্ছিলো।
.
--ওয়েট ওয়েট। ঔটা আমার সবচেয়ে ফেবারিট গিটার। এইটা বাদে যে কোনো জিনিস প্লিজ।(আমি)
.
--যান বেচে গেলেন।(গিটারটা ওর হাতে নিয়ে বসে বললো)
.
--রাগ করে আছো?(আমি)
.
--কিছুটা। আপনার উপরে না তবে বাবার উপরে।(নিলা)
.
--আঙ্কেলের উপরে কেনো?(আমি)
.
--এইযে না বলে এসব করলো। আর আপনার উপরেও আমি রেগে আছি।(নিলা)
.
--কেনো?(আমি)
.
--আপনি সেনাবাহিনীর কেউ সেটা আমাকে আগে বলেন নি কেনো। মিথ্যা পরিচয় দিয়েছেন।(নিলা)
.
--আমরা এমনি।(আমি)
.
--আচ্ছা এসব কথা আজকের রাতের জন্য বাদ দিলাম। আজকে তো অনেক রোমান্টিক একটা রাত কিন্তু এই ঘর মোটেও এটাকে রোমান্টিক বানাচ্ছে না।(নিলা)
.
--কেনো?(আমি)
.
--সবার বাসর রাতে তাদের বাসর ঘর কত সুন্দর করে সাজানো হয় আর আমাদেরটা।(এবার লজ্জা পেলো নিলা)
.
--আমাদের কি?(আমি)
.
--কিছু না। চলেন না বেলকনিতে গিয়ে বসি।(নিলা)
.
--হঠাৎ বেলকনিতে যেতে মন চাইলো কেনো?(আমি)
.
--না এমনি ভাবলাম কিছুক্ষন গান শুনবো আপনার।(নিলা)
.
--আমি গান গাইতে পারি না।(আমি)
.
--গাইবেন আজকে।(নিলা)
.
--আচ্ছা চেষ্টা করে দেখি।
।।।
।।।
নিলার হাত থেকে গিটারটা নিলাম। নিলা শাড়ি চেন্জ করে একটা লং লাল থ্রি পিজ পরে আছে। সাথে মেচিং চুরি,টিপ। দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে ডিম লাইটের আলোতেই। বেলকনিতে গিয়ে আমি একটা চেয়ারে বসলাম। আর নিলা আরেকটাই। আমি অনেক আগেই গান গাওয়া ছেড়ে দিয়েছি। কারন আমার গলা থেকে লাউড আওয়াজ বের হয় যেটা যে কারো কানের পর্দা ফাটিয়ে দিবে। কিন্তু মাঝে মাজে একা একা গান গেয়েছি। এর মাঝে তেমন কিছুই হয় নাই। তাই ভাবলাম একটা গান গাওয়ায় যায়। শুরু করলাম মিনারের সাদা রং এর গান টা দিয়ে। সেই সাথে গিটারেও তাল মিলাচ্ছি। হঠাৎ নিলা দেখলাম উঠে গেলো। মনে হলো ঘুম পাচ্ছে ওর। কিন্তু না উঠে আমার গিটারটা ওর হাতে নিয়ে আমার কোলে বসে পরলো। অনেক লজ্জা লাগলো। কারন প্রথম কোনো মেয়ে আমার কোলে এভাবে বসলো। নিলা আমার কোলে বসে আমার হাতে গিটার ধরিয়ে দিয়ে বললো।
.
--নিন আমাকে গিটার বাজানো শিখাবেন এখন।(নিলা)
.
--এখন? এভাবে?(আমি)
.
--হুমমম।(নিলা)
।।।।
।।।।
আমিও কিছুই বললাম না। জিসানের ভুলিনি তোমায় গানটা শুরু করলাম। এবং নিলার হাত দিয়েই হালকা গিটারের শলাকা নারাতে লাগলাম। নিলাও চুপচাপ বসে ছিলো আমার কোলে। আসলেই পরিবেশটা অনেক রোমান্টিক। জোৎসনা রাত সেই সাথে আশে পাশের নিরবতা। আর আমাদের দুজনেরই আগ্রহ পরিবেশটাকে অনেক রোমান্টিক করে দিয়েছে। হয়তো এটাই সত্যিকারের ভালোবাসার প্রথম অনুভব। নিলা আমার কাছে আশায় মনে হলো আমার না পাওয়া সব কিছুই আমি পেয়ে গেছি। অবশ্য আজকে যে আমরা নতুন বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি। আর এই বন্ধনই সত্যিকারের ভালোবাসার প্রতিক। সকাল বেলা ঘুম ভাঙলো আমার। বিছানায় শুয়ে ছিলাম। আমার কোলবালিশ ছাড়া কখনো ঘুম হয় না। কিন্তু আমি ফ্লোরে আমার কোলবালিশটাকে এতিম ভাবে পরে দেখতে খুব কষ্ট পেলাম। মানুষ বলে বিয়ে করলে ছেলেদের আর কোলবালিশের প্রয়োজন পরে না। কিন্তু এই মেয়ে তো আমাকেই কোলবালিশ বানিয়ে দিয়েছে। নিজের বালিশের কোনো খবর নাই। আমার বুকের উপরে শুয়ে আমাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে শুয়ে আছে। সেই সাথে পুরো মাথার চুল মনে হয় আমার মুখে দিয়ে রাখছে। পাখার বাতাসে সেগুলো আমার চোখে ঢোকার চেষ্টা করছিলো। আমি ওকে ডাকলাম না। বেচারি একটু ঘুমাক। কালকে তো অনেকরাত জেগেছে। সেই সাথে অনেক কাজও করেছে। ক্লান্ত হয়ে ঘুমাচ্ছে এখন। ঘুমাক একটু। আমি ওকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে গোসল করে নিলাম। তারপরে আমি নাস্তার টেবিলে বসলাম। পাশের রুমে বাবা আর আঙ্কেল বসে বসে চা খাচ্ছেন আর গল্প করছেন। আর ভাইয়া টিভি দেখতেছে। আমি নাস্তা করে বের হয়ে গেলাম। আমাকে তো আবার আজকে হোল্ডার কম্পানির মিটিংয়ে থাকতে হবে। আমি চলে আসলাম ২য় ভবনে। এখানে আসার পর আমি সব স্টাফ দেখতে পেলাম। ম্যানেজারের সাথেও আমার দেখা হয়ে গেলো।
.
--তুমি পাচ মিনিট লেট মি. হৃদয়।(ম্যানেজার)
.
--সরি স্যার।(আমি)
.
--এর জন্য শাস্তি তো তুমি পাবেই।(ম্যানেজার)
।।।।
।।।।
ম্যানেজার তার পকেটে থাকা একটা বন্ধুক দিয়ে আমার দিকে গুলি করতে গেলো কিন্তু আমি সেটা বুঝে পাশে সরে গেলাম। বুঝতে পারলাম হয়তো তারা বুঝে গেছে। আর বুঝবেই না কেনো কালকে তো জেনারেল মিয়া লোকজনের সামনে ভাষনে বলে দিয়েছেন আমি কর্নেল। তাহলে এরা আমার উপরে আক্রমন করবে নাতো কার উপরে করবে বুঝতে পারছি না। কি আর করার আমার অপারেশন শুরু করতে হবে এখানেই। সাথে সাথে বিশজনের মতো বন্ধুক সহ হেবি গার্ড আসলো জেনো কোথায় থেকে। আর মুহুর্তের মধ্যেই সকল কর্মীরাও উদাও হয়ে গেলো। আমি আর কি করবো পাশের একটা কর্মীর কেবিনের গ্লাস ভেঙে সেখানের কাচের টুকরো দিয়েই প্রথমে শুরু করলাম। আমার দিকে পুরো বিশজনেই গুলি করতে শুরু করলো। দুটো গুলি লাগলো আমার শরীরে। একটা হাটুতে। আর একটা কাধে। আমি দৌড়ে গিয়ে দুটোকে নিয়ে স্পেয়ার দিলাম। এবং দুটোর গলায় দুটো কাচ ঢুকিয়ে দিলাম। এবার দুজনের হাত থেকে একটা ak47 এবং একটা Ump তুলে নিয়ে শুরু করলাম গুলি। আমার পাল্টা গুলিতে সব গুলো কাভার নেওয়াতে ব্যস্ত হয়ে গেলো। এতোক্ষনে ম্যানেজারও কেটে পরেছে হয়তো। আমি গুলি করতে করতে সব গুলো গার্ডকে মেরে ফেললাম। এটা তো একদমই সহজ ছিলো শুধু হাতে একটা Ak থাকলেই হয়। যখন ওরা বুঝেই ফেলছে তাহলে তো শেষ করতেই হবে। আমি আস্তে আস্তে উপরে উঠতে লাগলাম। প্রথমে কাধে আর হাটুতে শক্ত করে দুটো বাধন দিয়ে নিলাম। এতে করে রক্তক্ষরন একটু কম হবে। ৩য় ফ্লোর ক্লিয়ার করে চলে আসলাম চতুর্থ ফ্লোরে। সেখানে এসে বুঝলাম আমার জন্য ট্রাপ পেতে রাখা হয়েছিলো এখানে। কারন এমন কেউ এখানে আছে যাকে আমি দেখতে পাচ্ছি না কিন্তু সে খুব তারাতারি নিজের অবস্থান বদলিয়ে আমার মাথা ঘুরাচ্ছিলো। রাগে আমি আমার লাউড স্পিকার ব্যবহার করলাম। সাথে সাথেই আমার বয়সী একটা ছেলেকে দেখলাম কান ধরে বসে গেছে। কান দিয়ে রক্ত ঝরছিলো। এতোক্ষন আমাকে অনেকগুলো কিল গুষি দিয়েছিলো এটা। শেষ মেষ আমি শেষ ফ্লোরে চলে আসলাম। ম্যানেজারের নাম ও গন্ধও পেলাম না। আমার তো মনে হয় এটা আরো বড় ট্রাপ। কিন্তু আমার মিশন শুধু এই মেয়েটাকে সেনাবাহিনীর কাছে তুলে দেওয়া। সেটাই করতে হবে। আমি পৌছে গেলাম অনামিকার কেবিনে। যেখানে সে খুব আরাম করেই বসে আছে।
.
--আমি ভেবেছিলাম তুমি আমাদের জন্য স্পেশাল কিছু হবে। কিন্তু এটা জানতাম না যে তুমি আমাদের জন্য অনেক বেশী স্পেশাল কিছু একটা হবে।(অনু)
.
--আমি এখানে কোনো কথা বলতে আসি নি। প্রথম দিনেই কাজটা করে দিলে ভালো হতো। শুধু শুধু বসে ছিলাম এতোদিন।(আমি)
.
--তোমার ধারনাও নেই তোমার সাথে কি হতে চলেছে।(অনু)
.
--হয়ছে অনেক কথা হয়ে গেছে।(আমি)....
।।।।
।।।।
আমি ওর হাত ধরে ওকে টান দিলাম হালকা। কিন্তু ওর হাত আমার হাত থেকে ছুটে গেলো এমনি এমনি।
.
--জিনিসটা কি এতো সহজ ভেবেছো?(অনু)
.
--এই ক্ষমতা তাহলে তোমার?(আমি)
.
--হ্যা। আরো কি আছে দেখবে না?(অনু)।।।
।।।।
।।।।
তখনি আমার মাথায় ব্যথা শুরু হতে লাগলো। একদম খুব বেশী ব্যথা করতে লাগলো মনে হলো ফেটে যাবে আমার মাথা। আমি মাথায় হাত দিয়ে শুয়ে গরাতে লাগলাম।
.
--এটা টেলিকাইনেসিস ক্ষমতা। আমি যে কারো মাইন্ড পড়তে পারি সেই সাথে সেটা নিয়ে খেলতেও পারি।(অনু)
.
--o my god....
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।