#জলপরীর_প্রেমে#
#সিজন_২#
পার্টঃ০৪
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
।।।
।।।
।।।
বিকালে আমি মোহনাকে জরিয়ে ধরে পোছে গেলাম আকাশপুরীতে। আকাশপুরী ঘোরার বেশী সময় আমি পাই নি। তবে এখন ঘোরাঘুরির সময় ও না। আমাকে তো এই মহা বিপদের থেকে বাচার রাস্তা বের করতে হবে। যতই হোক আমিই তো রাজা। মোহনার সাথে পৌছে গেলাম আকাপুরীতে। মেঘরাজ্য এটা। মেঘের উপরে এই রাজ্য। সব সময় এটা একটা প্রতিরক্ষা তাবিজ দিয়ে আটকানো থাকে তাই এটা ভেদ করে চলে গেলেও টের পাবে না এটা আকাশপুরী। অনেক আশ্চর্যের বিষয় প্রথম প্রথম লেগেছিলো। কিন্তু এখন বুঝে গেছি। প্রতিরক্ষা তাবিজটা খুলে দেওয়া হলো৷ আমরা রাজ্যে পৌছে গেলাম। সবাই আমাকে দেখে কুর্নিশ করলো। ভালো তো লাগারই কথা। যখন একজন মানুষ সম্মান দেখাই তখন আমাদের ভাব বেরে যায় আর এখানে তো পুরো রাজ্য আমাকে সম্মান জানাই। ভাব তো সপ্তম আকাশে উঠে যাবেই।
মোহনার সাথে আমি রাজ শয়নকক্ষে গেলাম। কারন আজকে আমি অনেক ক্লান্ত। তাই এই ক্লান্তির মাঝে আমি রাজ সিংহাসনে যেতে চাই না। তাই সোজা বিশ্রাম নিতে চলে গেলাম। রাতের খাওয়া দাওয়া করলাম। মোহনা আমার বুকে মাথা দিয়ে শুয়ে রইলো।
.
--তুমি আমাকে নিলা আর জারার থেকে খুব কম ভালোবাসো।(মোহনা)
.
--কে বলছে আমি তোমাদের তিনজনকেই সমান ভালোবাসি।(আমি)
.
--সেটা তো দেখতেই পাই। প্রথমে জারার কাছে যাও তারপর নিলার কাছে আর সব শেষে আমার কাছে আসো।(মোহনা)
.
--আরে রাগ করতেছো কেনো। তিনজনকেই তো সময় দিতে হবে তাই না।(আমি)
.
--হ্যা দেখেছো আজ আসলে আবার কাল চলে যাবে।(মোহনা)
.
--এই টেনশনটা দূর হোক তখন আমরা সবাই একসাথে থাকবো।(আমি)
.
--সবাই একসাথে?(মোহনা)
.
--হ্যা এমন একটা জায়গায় আমার রাজত্ব নিয়ে যাবো যেখানে জলপুরীরাও থাকতে পারবে আকাশপুরীরাও থাকতে পারবে আবার দানব রাজ্যের দানবরাও থাকতে পারবে।(আমি)
.
--এমন কোনো জায়গা কি আছে?(মোহনা)
.
--হ্যা থাকবে না কেনো। শুধু খুজে বের করতে হবে।(আমি)
.
--হয়ছে এখন এসব কথা বাদ দাও। আমাকে আদর করো একটু।(মোহনা)
.
--হুমমম করবোই তো সেটা কি বলে দিতে হবে।(আমি)
।।।
।।।
আর কি। বউয়ের ভালোবাসা পেতে লাগলাম। উল্লেখ করলে চাকরি থাকবেনা। সকালে উঠে রাজ সভায় বসতে হলো।। আমি বসলাম রাজ সিংহাসনে। আমার পাশে বসলো মোহনা।
.
--সেনাপতি হিতান।(আমি)
.
--জ্বী মহারাজ।(সেনাপতি)
.
--আকাশপুরীর প্রতিরক্ষা তাবিজটা আরো আপগ্রেড করতে হবে।(আমি)
.
--জ্বী মহারাজ আমাদের বিজ্ঞানী সেই কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।(সেনাপতি)
.
--আর আপনি অধিক সংখ্যক সৈন্যের ব্যবস্থা করুন। তাদের প্রস্তুত রাখুন। যে কোনো সময় আক্রমন করতে পারি আমরা।(আমি)
.
--জ্বী মহারাজ।(সেনাপতি)
.
--আমার আদেশই বহাল রাখবেন। কোনো পরিবর্তন করতে হলে আমিই বলবো। আর আমি আজকেই মেক্সিকোর জন্য রওনা হয়ে যাবো।(আমি)
.
--জ্বী মহারাজ।(সেনাপতি)
....
।।।
আর কথা বারালাম না। সেনাপতিকে বল্লাম কোনো সাগরের কাছে নিয়ে ফেলে দিতে। আমাকে উড়াল দিয়ে নিয়ে ফেলে দিলো আটলান্টিক মহাসাগরের ঠান্ডা পানিতে। কোনো মানুষ যদি পরতো তাহলে সাথে সাথেই হার্ট এট্যাক করে মারা যাবে। আমি ঠান্ডা পানির একটা হাঙরের পিঠে বসে পরলাম। তারপর চললাম মেক্সিকোর দিকে। মেয়েটাকে আমার বের করার কোনো প্রয়োজন নাই। তাকে যে ট্রেস করতেছে পাতালপুরীর বিজ্ঞানী সেটা হয়তো সে জানে না। আসলেই আমি পুরো অবাক হয়েছি কারন এলিয়েন হওয়া সত্ত্বেও একদম মানুষের মতোই দেখতে মেয়েটার। চুল গুলো লাল। স্লিম বডি সাথে টাইট ফিটিংস জামা পরা এতে আরো আকর্ষনীয় করে দিয়েছে তাকে। সেই সাথে ঠোটের নিচে একটা গাড় ছোট তিল আছে যেটা তাকে মায়াবী করে দিয়েছে।
।
আমি হা করে তাকে সামনা সামনি দেখতে ছিলাম। অবশ্য অনেক আগেই পৌছে গিয়েছিলাম। আর বিজ্ঞানীর স্যাটেলাইট এর মাধ্যমে আমার আর তাকে খুজতে হলো না। প্রতিটা মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে তার। আমি দুইদিন যাবৎ তাকে ফলো করতে ছিলাম। অবশ্য ব্যাপারটা সে বুঝেছে হয়তো। মনে হয় আমার দ্বারা কিছু কার্য হাসিল করার বুদ্ধি করছে তাই দেখলাম ভালোই রেসপন্স দিচ্ছে।
।
একদিন মেক্সিকো সিটির সবচেয়ে বড় লাইব্রেরিতে ঢুকলো মেয়েটা। আমি তো এখনো নামই জানতে পারললাম না। আজকে আমিও পিছন পিছন লাইব্রেরিতে আসছি৷ দেখলাম বসে বসে অস্ত্র বিষয়ক কোনো একটা বই পরতেছে। আমি বুঝলাম এখন চান্জ না মারলে পরে পাবো না তাই ওর সামনে গিয়ে বল্লাম।
.
--Can I sit here?(আমি)
.
--ইয়েস।(এলিয়েন)
.
--কি করছেন?(আমি)
.
--সেটা বাদ দিন। আগে বলুন আমার পিছনে এভাবে কেনো ঘুরতেছেন?(এলিয়েন)
.
--তুমি সুন্দর ফুল। আর ফুলের কাছ দিয়ে তো ভোমরা ঘিরবেই।(আমি)
.
--হাহাহা।(এলিয়েন)
.
--নাম কি আপনার?(আমি)
.
--কিছু ফুল আছে যাদের নাম না জেনে সুন্দর্য দেখায় বেটার হয়ে।(এলিয়েন)
.
--কিছু ফুল আছে যারা কোটিতে একটা হয়। আর সেটা হচ্ছেন আপনি। নাম না জেনে আমি ছারছি না আপনাকে?(আমি)
.
--শুধু শুধু ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আমি এসব কথায় ভয় পাচ্ছি না।(এলিয়েন)
.
--আমি ভয় দেখাচ্ছি না।(আমি)
.
--তাহলে?(এলিয়েন)
.
--আমি তো ভালোবাসা দেখাচ্ছি।(আমি)
.
--সেটা আবার কি?(এলিয়েন)
.
--ভালোবাসা বুঝো না।(আমি)
.
--না।(এলিয়েন)
.
--কোন জগৎ থেকে এসেছো ভালোবাসা বুঝে না এমন প্রথম একজন দেখলাম।(আমি)
.
--বুঝি তো।(কিছুটা ভয় পেয়ে)
.
--বুঝো তাহলে ভালোবাসবে আমাকে?(আমি)
.
--কেনো। আমি কেনো?(এলিয়েন)
.
--কারন আমি তোমাকে ভালোবাসি।(আমি)
.
--ওওও।(ও বুঝতেছে না আসলেই ভালোবাসাটা কি)
.
--তাহলে কি তুমি বাসবে?(আমি)
.
--হুমমম।(না বুঝেই রাজি হয়ে গেছে)
।।।
।।।
আমি ওর গা ঘেষে বসলাম। ও কি বিষয়ে রাজি হয়েছে সেটাই ও জানে না। হয়তো ভাবছে ভালোবাসা মানে বন্ধুত্ব। তাই আমি ও সুযোগ নিতে লাগলাম। তোমার মনে তো জায়গা আমার হবেই। ভাবতেছি ৪র্থ রানীর অভাবটাও পূরন হয়ে যাবে। বলতে গেলে নিলা,জারা,মোহনার থেকে অনেক গুনে সুন্দর এলিয়েনটা। দুর কখন থেকে এলিয়েন বলে যাচ্ছি নামটা জিজ্ঞাসা করছি।
.
--আচ্ছা এখন যখন তুমি ভালেবাসবে আমায় তাহলে নামটা বলো।(আমি)
.
--লু সাইনা।(এলিয়েন)
.
--এতো দেখি চাইনা নাম। চীন থেকে এসেছো তুমি?(আমি)
.
--হুমমম।
.
--আমি তোমাকে সাইনা বলে ডাকবো কেমন।(আমি)
.
--ওকে।(সাইনা)
.
--এতো মনেযোগ নিয়ে কি পড়ছো?(আমি)
.
--বই।(সাইনা)
.
--এতো ডিফেন্সের বই।(আমি)
.
--হ্যা আমার সেখানে চাকরি করার অনেক ইচ্ছা তাই এ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতেছি।(সাইনা)
.
--এই সম্পর্কে পড়তে হবে কেনো আমি তো সব কিছুই জানি।(আমি)
.
--সব জানো কিভাবে?(সাইনা)
.
--কারন আমি ডিফেন্সে চাকরি করি।(আমি মিথ্যা বললাম)
.
--তাহলে তো তোমার থেকেই অনেক কিছু জানতে পারবো।(সাইনা)
.
--হ্যা জানতে পারবে।(আমি)
.
--তাহলে বলো।(সাইনা)
.
--হুমমম বলবো তার আগে এই পুরো মেক্সিকো সিটি ঘুরতে হবে আমার সাথে।(আমি)
.
--হুমমম আমি রাজি।(সাইনা)
.
--তাহলে বই রাখো। চলো বের হয়। তোমার যা জানার আমি বলবো।(আমি)
.
--হুমমম।(সাইনা)
।।।
।।।
ময়না ফাদে পরে গেছে। এটাই তো চাইছিলাম। একা একা কত বের করবে। সে আমার থেকে এখন হয়তো বের করবে আমাদের মানুষদের গোপনীয় অস্ত্র সম্পর্কে। সেটা নাহয় বলে দিলাম। কিন্তু আমাদের ব্যাপারে তো কিছুই জানে না সাইনা। না জানায় ভালো। আমি তো এখন ঘোরাবো ওকে। ভালোবাসা কি সেটা বুঝে না ও। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই ওর মনে এই অজানা অনুভূতি নিয়ে আসবো আমি। ভাবতেই অবাক লাগছে একটা এলিয়েনকে বলদ বানাচ্ছি। অবশ্য এমন মেয়ে পটানোর জন্য সবই করা যায়।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।
অপেক্ষা করুন ৫ম পার্টের জন্য।