ওয়েবসাইট কাস্টমাইজেশন এর জন্য। Contact Us Welcome!

জলপরীর প্রেমে ২ পর্বঃ ১২

Bangla Dub Novels


 #জলপরীর_প্রেমে#

#সিজন_2#

পার্টঃ১২

লেখকঃহৃদয় বাপ্পী

।।।।।

।।।।।

।।।।।

মাঝে মাঝে তো ভয়ই করে মেয়েটাকে দেখলে। গম্ভীর হয়ে বসে থাকে। কারো সাথে মনে হয় বেশী কথা বলে না মেয়েটা। এরকম মানুষেরাই বেশী ভয়ানক হয়। কখন কি করে বসে তার কোনো ঠিক ঠিকানা পাওয়া যায় না। আমার মনে হচ্ছে আজকের দিন ভালো যাবে না। কারন রাতই যা কেটেছে। আমি চলে আসলাম আমার শাহী গোসল খানায়। গোসলটা শেষ করেই আমার কক্ষে ঢুকতে যাবো তখন রুমের বাইরে দেখলাম দাড়িয়ে আছে রাজার ছোট মেয়ে আর সাথে মনে হয় ওদের দাসী হবে দুজন। আমাকে দেখেই ওরা সবাই মাথা নিচু করলো।

বউ তো এমন হওয়া দরকার। স্বামী দেখলেই মাথা নিচু করে সব কথা শুনবে। ওমন ডাইনী বউ কয়জন পাই যে কিনা বাসর রাতেই স্বামীর ফালুদা বানিয়ে দেই। আমি ভিতরে ঢুকতে যাচ্ছিলাম তখন রাজার ছোট মেয়ে বলে উঠলো?

.

--ভিতরে যাবেন না মহারাজ হারকিউমাস।(মেয়েটা)

.

--আমার রুম আমি ভিতরে যাবো না তো কে যাবে?(আমি)

.

--ভিতরে আপু সাজতেছে। এখন আপনি ভিতরে গেলে আপু রেগে যাবে। আপনি অন্য একটা কক্ষে গেলে ভালো হবে।(মেয়েটা)

.

--দুর।(আমি)

।।।

।।।

আমি মেয়েটার কথা না শুনেই ভিতরে ঢুকলাম। ভিতরে ঢোকার পরই আশ্চর্য হলাম। কারন হৃদিতার বসে ছিলো বিছানার উপরে। এতো আগে আয়না না থাকাটাই কথা। কিন্তু ও জাদু দিয়ে সামনে আয়না বানিয়ে নিয়েছে। চিরনীর মতো কিছু একটা একা একাই ওর মাথার চুল গুলো ঠিক করে দিচ্ছে। আর ও বসে বসে কি যেনো একটা পড়তেছিলো। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলাম ওর দিকে। বেশ আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে ছিলাম কি করছে ও। হঠাৎ মেয়েটা চোখ খুলে আমার দিকে তাকালো। পুরো সাদা হয়ে গেছে ওর চোখ দুটো। মনে হয় আমাকে এভাবে রুমের মধ্যে আশা করে নি ও। অদ্ভুদ করার বিষয় ঘঠলো আরো। কারন ওর চুল গুলো আস্তে আস্তে সাদা হয়ে গেলো। মনে হয় কিছু একটা করেছে ও। সেগুলো হাওয়ায় উড়তে লাগলো। আমি এখন অনেকটা ভয় পেয়ে গেলাম। আমি আর সাহস করে দাড়ালাম না। কারন দাড়ালে আমার বারোটা বাজিয়ে দিতো। 

আমি দৌড়ে বাইরে আসলাম। 

.

--কি হয়েছে মহারাজ। আপু কি কিছু করেছে?(রাজার ছোট মেয়ে)

.

--না কি করবে। কিছু করার আগেই আমি চলে আসলাম।(আমি)

.

--ও।(মেয়েটা)

.

--আচ্ছা আপনার নাম কি?(আমি)

.

--হৃনিতা।(মেয়েটা)

.

--ওওও৷ আচ্ছা হৃনিতা বলতে পারবেন। আপনার বোনের চোখ আর চুল গুলো সাদা হয়ে গেলো কেনো?(আমি)

.

--আপু ছোট থেকেই একা থাকতে পছন্দ করেন। কখনো কারো সঙ্গ পছন্দ করতো না। এমনকি আমি পাশে থাকলেও আমাকে তাড়িয়ে দিতো। আর আপু যখন জাদুকরের অভিশাপে অভিশপ্ত হলো তার পর থেকেই বেশী রেগে গেলে আপুর চোখ আর চুল সাদা হয়ে যায়।(হৃনিতা)

.

--যাক বাবা তাহলে অনেক বার বেচে গেছি।(আমি)

.

--কিছু বললেন?(হৃনিতা)

.

--না কিছু বলি নি।(আমি)

.

--আমাদের এখানে থাকা হয়তো ঠিক হবে না আপু রেগে গেছেন অনেক।(হৃনিতা)

.

--হাইরে কপাল। আপনার বাবার কথা মতো আপনাকেই বিয়ে করলে ভালো হতো। আপনার মতো কি মেয়ে হয় বলুন। তবে আমার জাদুকারিনী অনেক পছন্দ। ভাবতেছি আপনাকে বিয়ে করে আপনাকে আপনার বোনের থেকেও বড় একজন জাদুকারিনী বানাবো।(আমি অনেকটা জোরে বললাম)

.

--কি???????(হৃনিতা)

.

--অবাক হলেন মনে হয়। একজন বউ থাকতে পারে রাজার এমন তো কোনো কথা না। রাজা চাইলে আরো অনেক বিয়ে করতে পারবে। আর তাছাড়া আপাতোতো তো আমি আপনাদের অর্ধেক সম্পত্তির মালিক হলাম। আপনাকেও বিয়ে করলে আপনার বাবার পুরো সম্রাজ্য আমার হবে। সেটার রাজা হবো আমি। আর রানী হবেন আপনি। আর আপনার বোন তো একাই থাকতে ভালোবাসে। তার জন্য একটা ভয়ানক প্রাসাদ বানিয়ে দিবো।(আমি)

।।।।।

।।।।।

মেয়েটা কোনো কথা না বলেই। ওর সাথে থাকা দাসী দুটোকে নিয়ে ও চলে গেলো। দেখেই বোঝা যায় কত নিস্পাপ একটা মেয়ে। শালার কেনো যে বইয়ের কথা শুনলাম। মনে হয় আমি মদ খেয়ে লেখেছিলাম বইটা। কি দেখে নিজের বোনের চেহারার মেয়েটাকে আমি বিয়ে করলাম বুঝলাম না। আমার তো মনে মনে খুব অসহায় লাগছে এখন। কিন্তু কি করার বোনের চেহারার হলেও তো বোন নয় এটাা আমাকে মেনে নিতে হবে। আমি হৃনিতার সাথে কথা গুলো একটু জোরে জোরেই বলেছিলাম যেটা হয়তো আমার বউটার কানে ঠিকই গেছে। হিংসা তো একটু হবেই। না হলেও আমাকে অন্য রাস্তা দেখতে হবে।

কিছুক্ষন পরে আমি রুমে ঢুকলাম। মনে হয় এখন ঝড় শান্ত হয়ে গেছে। কোনো কথা বলছে না একটা বই পরছে আর আপেলের একটা ঝুড়ি নিয়ে বসে আছে। একটা করে আপেল খাচ্ছে আর বই এর পাতা উল্টাচ্ছে। এখানেও জাদুর ব্যবহার করছে। কারন হাত দিয়ে বই উল্টাচ্ছে না। বরং একা একাই পৃষ্ঠাগুলো উল্টাচ্ছে। এবার আমি ভয় পেলাম না। বরং আমি ওর পাশে গিয়ে বসলাম। কিছুই বললো না ও। আমার আবার খুব ক্ষিদে পেয়েছে। আপেলটা দেখে লোভ সামলাতে পারলাম না। একটা আপেল আমি ঝুড়ি থেকে উঠালাম সেইটা খেতে যাবো এমন সময় আমার হাতে ঠাপ্পর মেরে ফেলে দিলো আপেলটা।

.

--কি হলো আপনার আপেলেও কি হাত দেওয়া যাবে না।(আমি)

.

--শুধু জাদুর ক্ষমতা আছে যাদের তারাই এই আপেল খেতে পারবে। তাছাড়া সাধারন মানুষ খেলে মারা যাবে।(হৃদিতা)

.

--আপনার তো দেখি আমার জন্য মায়া আছে। একদিনেই কি ভালেবেসে ফেললেন আমায়?(আমি লুচ্চা মারকা হাসি দিয়ে বললাম)

.

--......(মেয়েটা এবার রেগে গেলো। আপেল একটা ধরে আমার মুখে পুরে দিচ্ছে। দেখলাম ওর চোখ আবারো সাদা হয়ে যাচ্ছে।)

।।।।

।।।। 

মারে কেউ আমাকে বাচা। এই মেয়ে আমাকে আপেল খাইয়ে মেরে ফেলবে। আমি মরতে চাই না।।।। মেয়েটা আমার দিকে এগিয়ে আসছিলো আপেল নিয়ে। আমি এবার দৌড় দিতে গেলাম। কিন্তু পারলাম না। জাদু দিয়ে আমাকে আটকে রাখছে মেয়েটা। আমি উঠতেই পারলাম না। আমার মুখের দিকে ধরলো আপেলটা। আমি খেতে চাইলাম না। কারন আমিও তো সাধারন মানুষ। খেলেই আমার কাজ শেষ। 

আপেলটা আমাকে খাইয়ে দিলো। কিন্তু অবাক করার বিষয় কিছু হলো না আমার। আপেলে আমি অন্য রকম একটা স্বাধ পেলাম। কেমন একটা টক টক স্বাধ।

.

--আহহহ। আপেল এতো টক কেনো?(আমি)

.

--এটা সম্ভব কি করে?(হৃদিতা জোরে বললো)

।।।।।

।।।।।

হঠাৎই মেয়েটার চোখ আবার আগের মতো ফিরে আসলো। আর মেয়েটা মনে হলো বেহুস হয়ে গেলো। আমার এমন মনে হচ্ছিলো এতক্ষন কিছু একটা জিনিস ওকে কন্ট্রোল করছিলো। কিংবা হয়তো ওর প্রতিরক্ষা করে জিনিসটা। কিন্তু যেটাই হবে হয়তো ভয়ানক কিছু একটা হবে। আমি পানি নিয়ে আসলাম। পানি মারলাম ওর মুখে।

ওর জ্ঞান ফিরে আসলো।

.

--আপনি ঔটা কিভাবে করলেন?(হৃদিতা)

.

--কোনটা?(আমি)

.

--এইযে আপেলটা খেলেন কিভাবে?(হৃদিতা)

.

--শুধু শুধি ভয় দেখালেন। সাধারন আপেলই ছিলো। কিন্তু মনে হয় পচে গিয়েছিলো। একটু টক লাগলো।(আমি)

.

--এই আপেল জাদুকর না হলে খেতে পারবেন না। এটা খেতে হলে সাধারন একটা জাদু ও আপনাকে জানতে হবে। যদি আপনার মাথায় কোনো জাদুই না থাকে তাহলে এইটা বিষের কাজ করবে। আমার অনেক দাসী এটা খেয়ে সাথে সাথেই মারা গিয়েছে।(হৃদিতা)

.

--আপনি কেনো খান এই আপেল?(আমি)

.

--এটা খেলে জাদুর ক্ষমতা বৃদ্ধি পাই।(হৃদিতা)

.

--ওওও। সব সময় একা থাকতে পছন্দ করেন কেনো আপনি?(আমি)

.

--এটা নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। প্লিজ আমাকে জিজ্ঞাসা করবেন না। আর দয়া করে আমার কাছে আসবেন না আপনি।(হৃদিতা)

.

--কেনো?(আমি)

.

--সেটাও বলতে চাই না আমি। আপনার নিজের ভালো চাইলে আমার কাছে আসবেন না আপনি।(হৃদিতা)

.

--আচ্ছা।(আমি)

.

--সবচেয়ে বড় ভুল করেছেন আপনি আমার ছোট বোনকে বিয়ে না করে আমাকে বিয়ে করে।(হৃদিতা)

.

--এটাই আমার নিয়তে লেখা ছিলো।(আমি)

.

--এর ফল থেকে বাচতে চাইলে আপনাকে আর আমাকে আলাদা ঘরে থাকতে হবে।(হৃদিতা)

.

--কিন্তু কেনো সেটা তো বলেন।(আমি)

।।।।

।।।।

আর কিছু বলতে দিলো না মেয়েটা আমাকে। কি একটা মন্ত্র পড়ে ফু দিলো। সাথে সাথে আমি উড়ে রুমের বাইরে চলে আসলাম। দরজা একা একাই বন্ধ হয়ে গেলো। সব হয়ে গেলো কিছু মুহুর্তে। আমার উত্তেজনা বেশী বেড়ে যাচ্ছে। আমি এভাবে চলতে পারবো না বেশীক্ষন। আমাকে জানতেই হবে কি রহস্য এর মাঝে। কিছু একটা রহস্য তো আছেই এর মধ্যে। এই রহস্য বের না করলে আমি শান্ত হবো না। দেখলাম মন্ত্রী আমাকে নিতে এলেন। মহারাজ হিরোনাস নাকি আমার জন্য খাবারের দেবিলে অপেক্ষা করছেন। আমিও চলে গেলাম। আজকে খাবারের অভাব নেই। পুরো টেবিল ভরাই খাবার। আমি আর রাজা খাওয়া শুরু করলাম। 

.

-- মহারাজ। একটা কথা বলুন তো।(আমি)

.

--বলো রাজা হারকিউমাস।(রাজা)

.

--আপনার মেয়ের চোখ আর চুল সাদা হয়ে যায় কেনো?(আমি)

.

--বিষয়টা কি না জানলে হয় না?(রাজা)

.

--না মহারাজ বলুম আমাকে।(আমি)

.

--তোমাকে তো বলেছিলামই ওর উপরে জাদুকর হিগমার অভিশাপ পরেছে। ওর ২০ বছর পূর্ন হলেই ও একজন শক্তিশালী জাদুকারিনী হয়ে যাবে। আর তখন ঔ জাদুকর হিগমা এসে ওকে বিয়ে করবে। জাদুকর হিগমার ভয়েই আজ পর্যন্ত কোনো যুবক আমার বড় মেয়েকে বিয়ে করতে সাহস পাই নি। আমি তো ওকে বিয়ে দিয়ে দিতেই চাই। কিন্তু কেউ রাজিই হয় না। হিগমা ওর জাদুর শক্তি শালী একটা মন্ত্রী দিয়ে হৃদিতার শরীরে প্রয়োগ করেছে। যেটাই একটা অদৃশ্য ছায়া মানব সব সময় ওর প্রতিরক্ষায় থাকে। কোনো পুরুষ মানুষকে স্পর্শ করতে দেই না ওর শরীরে। আর যদি কেউ ভুলেও স্পর্শ করে ফেলে তাহলে হিগমা এসে তাকে মূর্তি কিংবা আগুনে পুরিয়ে ছায় বানিয়ে দেই।(রাজা)

.

--কি?(আমি)

.

--হ্যা।(রাজা)

।।।।

।।।।

রাজার কথা শুনে আমার নিজেরই গলা শুখিয়ে যাচ্ছে। শালার জাদুকর যদি এতো শক্তি শালী হয় তাহলে এসবের বংসধর গুলোকে কেনো দেখলাম আমাদের আমলে। হয়তো তারা জাদু ভুলে গেছে। এটাও হতে পারে আপেল তো সব জায়গায় জন্মাই না তাই তারা তাদের জাদু বৃদ্ধি করতে পারে নাই😁। আমি এখনি তালাক দিমু এই মাইয়ারে। আমার বউ লাগবো না। আমি বিশাল একটা এলিয়েন এর হাতে পরাজিত হয়ে এখানে আসছি। আমার কাছে ট্রিশুলটাও এখন আর নাই। আমি কিভাবে একটা জাদুকরের সাথে লড়াই করবো যে কিনা মানুষকে মূর্তি বানিয়ে দেই। 

।।।।।

।।।।

।।।

।।

(((চলবে)))

।।

।।।

।।।।

।।।।।

অপেক্ষা করুন পরবর্তী পার্টের জন্য।

Post a Comment

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.