#সিজন_3#
পার্টঃ০৯
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
।।।।
।।।।
।।।।
আমি গভীর ঘুমের মধ্যে ছিলাম। নিজেও জানি না কতক্ষন ঘুমিয়েছিলাম। যখন উঠলাম তখন নিজেকে একটা বিছানার উপরে শুয়ে থাকতে দেখি। ভালো করে তাকিয়ে দেখলাম এটা হৃদিতারই ঘর যেখানে আমি আগে শুয়েছিলাম। আমি একটু পর্যবেক্ষন করবো স্পেলটা কি কাজে দিয়েছে নাকি। তাই বের হলাম হৃদিতাকে খুজতে। কিন্তু পুরো প্রাসাদই খালি। আমি কোথাও কাউকে দেখতে পাচ্ছি না প্রাসাদে। মাথায় কিছুই আসছে না। সব গেলো কোথায় প্রাসাদ থেকে। আমার মোটোও ব্যাপারটা ভালো লাগছে না। মনে হচ্ছে আমি বেশী সময় কাটিয়ে ফেলেছি৷ এলিয়েনটা মনে হয় এখানেও চলে এসেছে। এবং সবাইকে বন্ধী করে নিয়েছে। হয়তো এমনি কিছু একটা হবে। আমি রাজ দরবারে চলে আসলাম। এখানেও কাউকে দেখতে পারলাম না। হঠাৎ সিংহাসনের দিকে আমার চোখ গেলো। সেখানে একটা জিনিস জ্বলতে ছিলো আর সেখানে লেখা ছিলো আমাকে চাপ দিন।
।
আমি চাপ দিলাম সেখানে। সাথে সাথেই সিংহাসনের কিছুটা জায়গা নিয়ে সেটা নিচের দিকে যেতে লাগলো। আমি চুপচাপ বসে পরলাম। কারন গোপন একটা জায়গায় যাচ্ছি আমি। নিচে এসে একটা দরজা খুলে ভিতরে ঢুকলাম। ঢুকেই আমি অবাক হয়ে গেলাম। এটা তো একটা গবেষনাগার। মনে হয় রাজ্যের সবচেয়ে মেধাবী বিজ্ঞানীরা এখানে আছে। আমি অনেক মানুষকে দেখতে পেলাম এখানে। তার মধ্যে হৃদিতা বসে আছে একটা আসনে। আমাকে দেখেই সে উঠে আমার কাছে আসলো।
.
--তাহলে মহারাজের ঘুম ভেঙেছে?(হৃদিতা)
.
--হুমমম। কতদিন হলো আজকে?(আমি)
.
--সাতদিন চলে আজকে।(হৃদিতা)
.
--সবাই এখানে কেনো?(আমি)
.
--এখানেই সব কিছুর প্রতি মনিটেরিং করা হয়। আমরা এখানে বসেই পুরো পৃথিবী দেখতে পাই।(হৃদিতা)
.
--তাহলে কিছু মানুষ থাকলেই তো হয়। রাজ প্রাসাদ তো পুরো ফাকা?(আমি)
.
--আপনার সেনারা সবাই সবার জায়গা মতোই আছে। যদি কখনো লু চিনের সেনা হামলা করে আমাদের উপরে তাহলে তাদের হামলাকে রোকবার জন্য সবাই নিজের পজিশন মতোই আছে?(হৃদিতা)
.
--আমার মনে হয় না ওরা আসবে এখানে?(আমি)
.
--আপনি টেকনোলজির সময় থেকে অনেক আগে চলে গিয়েছিলেন তাই আপনার মাথা এখন পুরানো মানুষের মতো কাজ করতেছে। লু চিনের প্রত্যেক সেনার কাছেই এনার্জি রেডার আছে। তারা এখানের এনার্জি গুলো ধ্বংস করে দিচ্ছে আজ সকাল থেকেই। আর আমাদের কাছে তো পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী প্লাজমা এনার্জি সোর্স আছে। তারা অবশ্যই এখানে আসবে।(হৃদিতা)
.
--সেটার চিন্তা তুমি করো। আমি এখন সামনা সামনি আমার যুদ্ধ দেখতে যাবো।(আমি)
.
--কিন্তু।(হৃদিতা)
।।।।
।।।।
হৃদিতাকে আমি আর কিছুই বলতে দিলাম না। কি আর বলবে এখন। আমি তো উড়াল দিয়ে চলে আসলাম সিংহাসনের লিফটের কাছে। তারপর পুনরায় উপরে চলে আসলাম। মুক্ত আকাশে বেশ কিছুদিন উড়া হয় না। তার সাথে পানিতে ও সাতার কাটা হয় না। আজ পুরো মজাও নিবো। আমি উড়াল দিয়ে এই দ্বীপ রাজ্য থেকে বের হয়ে গেলাম। আসলেই একটা জাদুর কবজ দিয়ে পুরো দ্বীপকে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। এটার বাইরে আসলে দ্বীপটাকে একটা ছোট সাধারন দ্বীপই মনে হয়। কিন্তু ভিতরে যে কতটা সুন্দর আর বড় তা ভিতরে গেলেই বোঝা যায়। আমি উপর থেকেই পানিতে ঝাপ দিলাম। অনেক দিন হলো কোনো ডলফিনের উপরে চরা হয় না। আজকে একটু ডলফিন রাইড দেওয়া যাক।
।
আমি পানিতে নেমে একটা ডলফিনকে ডাকলাম আমার কাছে। ডলফিনটা আমার কাছে আসার পরই আমি রাইড নিলাম। সেরকম মজা হলো। শুধু যদি এখানে আরেকজন থাকতো তাহলে আরো মজা হতো। ভুল করলাম আসার সময় কাউকে সাথে করে নিয়ে আসলে ভালো হতো। আচ্ছা ব্যাপার না আমি একাই মজা নিতে পারবো। এরপর পানি থেকে উড়তে উড়তে আমি চলে আসলাম যেখানে লু চিন হামলা শুরু করেছিলো সেখানে। একদম ঠিক সময়ে চলে আসছি। কারন এই সময়েই তো আমি আমার সব সেনা নিয়ে লু চিনের সেনাকে মারতে এসেছিলাম। সেরকম উত্তেজনাময় মুহুর্ত। নিজের লড়া দেখেই আমি অবাক হমাল। কারন লু চিনের মতো একটা বিরাট দেহী পালোয়ানের সাথে আমি পিচ্চি ছেলে লড়তে ছিলাম। এতো হাসি কোথা রাখবো। অবশ্য আমি লু চিনের সাপোর্ট করতে ছিলাম। লু চিন যখন আমায় মারছিলো আমি ওকে চিয়ার আপ দিচ্ছিলাম। সবচেয়ে ভালো লাগলো যখন লু চিনের শক্তিশালী আঘাতে আমার ট্রিশুলটা ভেঙে গেলো। আমার চেহারাটা তখন দেখার মতো ছিলো। কিভাবে চুপশে গেলো আমার মুখটা সেটা দেখে খুব মজা পেলাম। নিজের হতাশায় হয়তো কেউ এভাবে মজা পাই না। কিন্তু আপনিও পাবেন যদি নিজের চোখে আপনার অতীতকে দেখতে পান। আমি তো দেখতেছি তাই বলতেছি। ট্রিশুল ভাঙার পরের পালানোটা অস্থির ছিলো। প্রথমে একবার ভাবলাম আমি এগিয়ে যায় তাদের সামনে এখন। কিন্তু পরে চিন্তা বদলে দিলাম। দেখি এলিয়েনটা কি করে। এই সুযোগে পৃথিবীর অনেক ক্ষমতাবান মানুষ নিজেদের জীবন হারাবে সেটা আমি বুঝতে পারলাম। কারন ট্রাম্প তো আর বসে থাকবে না। সে বলবে "এখনি নিউক্লিয়ার হামলা করো ওদের উপরে।" আর এটা হয়তো তাদের বিশাল বড়ো ভুল হবে। কারন আমি এলিয়েনদের স্পেশশীপ গুলো দেখলাম। ওদের কাছে যেসব অস্ত্র আছে তার কিছুই ব্যবহার করছে না ওরা। এসব যদি তারা ব্যবহার করে তাহলে মুহুর্তের মধ্যেই তারা এই পৃথিবীর নাম মুছে দিতে পারবে সৌরজগৎ থেকে। কিন্তু তারা করছে না দেখে মনে হচ্ছে এখানে তারা হয়তো নিজেদের থাকার ব্যবস্থা করবে। জানি না কি করবে কিন্তু যেটা করবে সেটা মানুষদের জন্য বেদনাদায়ক হতে পারে। আমি আর কি বলমু শো তো এখন শুরু হলো কেবল মাত্র। যেটা ভাবছিলাম সেটাই হলো একটা মিশাইল এসে লাগলো লু চিনের একটা শীপে। তেমন কোনো ক্ষতি করতে পারলো না এতে। আর এমন কয়টা মিশাইল ছারবে। কারন আমি উপরে হাজার হাজার শীপ দেখতে পারতেছি। মনে হচ্ছে এরা একদম তৈরী হয়েই এসেছে। বিষয়টা আমার কাছে এখন ভালোই লাগছে। তাদের মাধ্যমেই হয়তো এখানে আধুনিকতার ছোয়া পাবে। পাক একটু। সামনে থেকে পৃথিবীর অগ্রগতি দেখি একটু।
।
দেখলাম কতগুলো জেট বিমান আসলো। এগুলোই কি হয় লু চিন দেখলাম একাই একশো। সে নিজের হাতের বিশাল তলোয়ারটা ছুড়ে মারলো সাথে সাথে একটা বিমান ধ্বংস হয়ে নিচে পরে গেলো। আর দেখলাম লু চিনের ছেলে হাতের দুটো বন্ধুক দিয়ে গুলো করলো কয়েকটা। পুরো রকেট লাঞ্চারের মতো মনে হলো। বিমান গুলোকে সে গুলি গুলো দাবরিয়ে ধরলো এবং ধ্বংস করে দিলো। মনে হয় না পৃথিবীর কোনো শক্তি এমন সেনাকে কিছু করতে পারবে। আমার রাজ্যের সেনাগুলো একটু শক্তিশালী ছিলো এদের সাথে লড়বার জন্য। তারপরও তারা এখন সাহস হারিয়ে ফেলেছে। কারন আমার ট্রিশুল ভেঙে গেছে। আর ট্রিশুল ছাড়া আমি কিছুই না তারা সেটা জানে। তাই এখন তারা আমার জীবনের পিছনে লাগবে। একবার শুধু আমি পিছনের সময়ে যায় তারপর যখন আমি বের হবো তাদের সামনে। সবগুলোকে তলোয়ার দিয়ে দ্বিখন্ডিত করে দিবো।
।
আচ্ছা আজকের মধ্যেই তো আমি চলে যাবো সেই জায়গায়। একটা জিনিস করতে তো ভুলেই গেছি। আমাকে তো সেই মন্দিরে আবার যেতে হবে। কারন হিগমাকে মারার পরে সেই রকেটটা আমার কাছেই আছে। সেটার জন্যই তো খুব সহজে আমি সেই পুরানো রাজ্যের রাজা হতে পেরেছিলাম। এটাকে আমার সেই টাইমমেশিনের রুমে রেখে আসতে হবে তাই দেরী করলাম না। এখানের মজাটা ফেলে উড়াল দিলাম। অনেক স্পিডেই উড়তে পারি এখন। এক বছরের ট্রেনিং এর ফল এটা। কোনো আকাশপরীও এমন ভাবে উড়তে পারে না মনে হয়। আমি চলে আসলাম উড়তে উড়তে সেই মন্দিরেই।
.
--কি রহস্যগুলো কেমন লাগছে?(দরজা)
.
--মাথা ঘোরাচ্ছে। তবে আর কিছু জানতে চাই না। বেশী জানলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলবো।(আমি)
.
--বেশী জানতে হবে না। তবে একটা জিনিস আপনাকে বলার দরকার ছিলো।(দরজা)
.
--হ্যা বলেন।(আমি)
.
--গত রাতে কুওর এর ক্ষমতা কেউ ব্যবহার করেছে।(দরজা)
.
--কুওর টা কে আবার?(আমি)
.
--বাতাসের রাজা।(দরজা)
.
--এমন আরো কতো আছে?(আমি)
.
--কত আছে সেটা আপনিও ভাবতে পারবেন না। এরা সবাই জাদুকর নামেই পরিচিত।(দরজা)
.
--আচ্ছা আপনি তো সব জানেন। তাহলে কে ব্যবহার করলো এই কুওর এর ক্ষমতা?(আমি)
.
--সেটা জানার শক্তি আমি পাই নি আপনার থেকে। তবে আমি এই ক্ষমতা গুলো অনুভব করতে পারি। যে ব্যবহার করেছে সে অনেকটা অজ্ঞ সেটা বলতে পারি।(দরজা)
.
--তাহলে আমাকে তাকে খুজে তার ক্ষমতা নিয়ে আসতে হবে।(আমি)
.
--হ্যা মহারাজ। তা নাহলে যেভাবে জিম্বার ক্ষমতা কেউ চুরী করে নিজের করে নিয়েছে সেভাবে এটাকেও করে নিবে।(দরজা)
।।।
।।।
দরজার কাছ থেকে বিদায় নিলাম। বাতাসের ক্ষমতার কথা শুনে আমার Last Airbender ছবিটার কথা মনে পরে গেলো। ইস কতো স্বপ্ন দেখতাম তেমন কোনো ক্ষমতা আমার যদি থাকতো তাহলে বাতাসের সাথে কত মজাই না করতাম।
।
একটা জিনিস আমাকে ভাবাচ্ছে সেটা কেউ খেয়াল করেছে কিনা জানি না? তবে আমার বয়স এখনো একুশ ও হয় নি। এর মাঝেই আমার রাজ্যের অভাব নাই। তার সাথে বউও আমার চারটা এতো কম বয়সে কি এমন কারো সাথে হয়েছে? অবশ্য একবার রাজা হয়ে গেলে এগুলো কোনো ব্যাপারই না। ভাবতেছি আরো কয়েকটা বিয়ে সাদি করে ফেলি। সব তো পরীই বিয়ে করলাম। এখন প্রত্যেক দেশের একটা করে মেয়ে বিয়ে করবো। এলিয়েনটাকে হারালে এদের স্পেশশীপ নিয়ে বাইরের গ্রহতে গিয়ে প্রত্যেক গ্রহের একটা করে মেয়েকে বিয়ে করবো।
।
আচ্ছা বিয়ের চিন্তা ভাবনা পরে করা যাবে। আমার কাছে থাকা রকেটটা আমি রাখলাম যেখান থেকে আমি নিয়েছিলাম। হয়তো প্রথমে হৃদিতাই এখানে রেখেছিলো। পরে অতীত সামান্য বদলিয়ে আমার কাছেই চলে আসছে। এখন এখান থেকে বিদায় নি। কারন আমি এখানে থাকলে আমার পুরানো আমি দেখলে বিপদ হবে। তাই আমি চলে আসলাম সেখান থেকে। উড়ে সেই দ্বীপে চলো আসলাম আবার। এখন মন চাচ্ছে আবার একটা ঘুম দিতে। এক মাস সময় পার করে দিতে মন চাচ্ছে। তাছাড়া আর কি। লু চিন কি করবে সেটা দেখার অনেক ইচ্ছা তাই ঘুমানোর কোনো ইচ্ছায় নাই। আর আমার চলে যাওয়ার পরে আমার তিন রাজ্যে কি হয় সলটা তো দেখতে হবে। আমার তিন রানী কি করে সেটাও আমাকে দেখতে হবে। এখন ছোট একটা কাজ হলো যেভাবেই হোক আমার মৃত্যুর মিথ্যা একটা খবর ছড়াতে হবে। এতেই আমি দেখতে পারবো আমার তিন রাজ্যে কি হবে। সেটা করার জন্য তো হৃদিতাটা আছে। কারন ও যে কারো শরীরের মাঝেই ঢুকতে পারে। আর এটা ওর কাছে বেশী কঠিন কিছু না। এমন কতো খবর ও ছড়িয়ে আসছে তার ঠিক নাই। তাই এখন শুধু অপেক্ষা করার আছে সঠিক সময়ের😊
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।
সময় পাইনি বড় করার। যেটুকু পেরেছি লেখেছি। অপেক্ষা করুন ১০ পার্টের জন্য।😊