ওয়েবসাইট কাস্টমাইজেশন এর জন্য। Contact Us Welcome!

ভ্যাম্পায়ার কুইন পর্বঃ ৩৬(শেষ)

Bangla Dub Novels
 [প্রথমেই বলি গল্পটা সম্পর্ন কাল্পনিক কেউ বাস্তবের কোনো বিষয়ের সাথে তুলনা করবেন না]
#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
পর্বঃ৩৬(শেষ)
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমি এই প্রথম বার্সারকার মুড দেখলাম। এটি এমন একটা অবস্থা যেখানে একজন পুরোপুরি নিজের শরীরের নিয়ন্ত্রন হারিয়ে হিংস্র পশুর মতো আচরন শুরু করে। আমিও বর্তমানে একজন হিংস্র পশুর মতোই হয়ে গেছি। নিজের শরীরের উপরে কোনো নিয়ন্ত্রন নেই আমার। আর এদিকে আমি আমার অতীতও আস্তে আস্তে ভুলতে শুরু করেছি। অনেক কিছু এখন আমার মনে পরছে না। আমার পালিত বাবা-মার কথা মনে থাকলেও তাদের চেহারা আমি কল্পনা করতে পারছি না। সাথে আরো অনেক কিছু ভুলতে শুরু করেছি। আমার মনে হচ্ছে এমন হলে আমি সম্পূর্ন অন্য একজন হয়ে যাবো। তখন মিথ্যা একটা পরিচয় নিয়ে আমাকে বেঁচে থাকতে হবে। এখন করারও কিছুই নেই। যা হওয়ার সেটা হবে। আমি যতই আমার শরীরের নিয়ন্ত্রন নিতে চাচ্ছি ততই ব্যথা অনুভব করছি। শরীরের নিয়ন্ত্রন হারালেও সমস্ত ব্যথা আমারই লাগছে। কেনো জানি মনে হচ্ছে আমার শরীরকে কেউ একজন চেইন দিয়ে বেধে রেখেছে। আমার বল বারোটা রেডি হয়ে গেছে৷ আমি প্রথমে বুঝেছিলাম সেগুলো আমার শরীর বাকি পাচঁ রাজ্যের দিকে হয়তো ফেলবে, কিন্তু সেটা না করে আমার শরীর উপরের একটা নির্দিষ্ট জায়গায় একসাথে বারোটা বল ছুড়ে মারলো। প্রথমে আমি দেখতে পাই নি। কিছু একটা অদৃশ্য ছিলো ঔখানে। আমার বারোটা বলের আঘাতে হয়তো অদৃশ্য হওয়ার স্পেলটা ভেঙে যায়, আর আমার সামনে জেসিকে দেখতে পেলাম। জেসিকে দেখে আমি অনেক অবাক হলাম। আর আমার শরীর কেনো জেসিকে আক্রমন করলো এটা আমি বুঝতে পারছি না। কিন্তু একটা জিনিস ঠিকই বুঝতে পারছি জেসির শরীর থেকে কালো শক্তি অনুভব করছি আমি। জেসির কাছে মূলত ডিমোনিক আর এন্জেল পাওয়ার আছে। আর ও একটা স্পেশাল পায়ার হলো ও সময়কে আটকিয়ে রাখতে পারে। ওর ক্ষমতাটা অনেকটা লিম্বো ডাইমেনশনের মধ্যে৷ কিন্তু আজ প্রথম আমি ওর থেকে কালো ক্ষমতা অনুভব করছি। একদম আমার ডেভিল পাওয়ার থেকেও অনেক শক্তিশালী এইটা। আমি জানি না জেসি কিভাবে এসব ক্ষমতা পেলো কোথায়। যায়হোক পরবর্তী অবস্থা আমার ভালো লাগছে না। আমি আমার নিজের শরীরকে আটকাতে পারছি না। জেসির মধ্যে যেরকম ক্ষমতাই থাকুক ও আমার ছোট বোন। আমি চাই না, ওর কোনো ক্ষতি হোক। আর এখন তো আমিই ওকে আক্রমন করেছি। যতই হোক আমি আমার শরীরকে আঘাতে পারছি না ওকে সাহায্য করার জন্য।
.।।।
।।।।
কিন্তু আমি দেখে অবাক হলাম। আমার শক্তিশালী বারোটা বল জেসির কিছুই করতে পারলো না। বরং এক হাতের আঙ্গুল দিয়ে ও সেগুলোকে এবজোর্ব করে নিলো। আমার ছোড়া সমস্ত ডেভিল এনার্জি জেসি এক সেকেন্ডেই ওর মধ্যে নিয়ে নিলো,
.
--ভাইয়া নিজের ছোট বোনকে কি কেউ এভাবে আক্রমন করে? আর আক্রমন করলেও এরকম করে কেউ আক্রমন করে নাকি? আমি যে এতো দুর্বল ডেভিল কিং এর যমজ বোন এটা ভাবতেই আমার খারাপ লাগছে।(জেসি)
.
--জেসি কি বলতেছিস এগুলো? আর তুই এখানে কেনো? তোর তো এনার কাছে থাকার দরকার।(আমি)
.
--এনা খুব ভালোই আছে। আর এখন অন্যের চিন্তা করে কোনো লাভ নাই। কারর একটু সময় পর সবাই তোর হাতে মারা যাবে।(জেসি)
.
--কি?(আমি)
.
--লোকির আসল চিন্তা ছিলো তোকে রাগিয়ে দেওয়া। রাগিয়ে এরকম একটা অংশে এনে দেওয়া, যাতে তুই সমস্ত কিছু ধ্বংস করে দিস। অবশ্য লোকি জানতো না বিষয়টা শুধু সে একা চাই নি, বরং সেটা আমিও চেয়েছিলাম।(জেসি)
.
--কি বলছিস কিছুই বুঝতে পারছি না আমি।(আমি)
.
--মৃত্যুর আগে সব কিছু জেনে রাখাই ভালো। অবশ্য নিজের বোনকে তাতে বেশী কিছু বলতে পারবি না।(জেসি)
.
--কিছুই বুঝতে পারছি না তোর কথা আমি। আর কিছু একটা কর, আমি আমার শরীরকে নিয়ন্ত্রন করতে পারছি না। আমার উপর ঘুমের একটা স্পেল ব্যবহার কর।(আমি)
.
--আমার ডেভিল কিং ভাই। মনে হয় আমার কথা ক্লিয়ার ভাবে বুঝতে পারো নাই তুমি। তাই আমি সব ক্লিয়ার করে বলতেছি,। আমি তোমাকে দিয়ে এই সব দুনিয়ার রিয়েলিটি চেন্জ করাবো।(জেসি)
.
--রিয়েলিটি এটা কিভাবে সম্ভব?(আমি)
.
--সবই সম্ভব। যে দুনিয়ায় ম্যাজিক রয়েছে সেখানে সব কিছুই সম্ভব।(জেসি)
.
--কিন্তু আমি যে রিয়েলিটি স্পেল জানি সেটা একটা সিমীত সময়ের জন্য।(আমি)
.
--হ্যা সেটাও জানি। ছোট থেকেই আমি পুরাতন ম্যাজিক সম্পর্কে অনেক আগ্রহী ছিলাম। আর আমি যখন দাদার আদেশে পৃথিবী প্রথমবার প্রবেশ করি তখন সাথে করে দাদার বেশ কিছু গোপন বই ও নিয়ে নি। আমি শুনেছি বইগুলো কেউই পড়তে পারে নি। কিন্তু আমিই একমাত্র একজন ছিলাম যে কিনা সেই বইগুলো পড়তে পেরেছিলাম। বইগুলোতে এই সৃষ্টির সমস্ত রহস্য ছিলো। কিভাবে আমাদের সমস্ত দুনিয়া একে অপরের থেকে আলাদা, আর আমাদের সৃষ্টির সকল রহস্য ছিলো বইটাতে। অবশ্য সেগুলো তোর সাথে আলোচনা করার মতো সময় আমার নেই। কারন আমাকে আমার কাজ করতে হবে এখন।(জেসি)
।।।।
।।।।
জেসি ওর ডান হাত আগিয়ে দিলো। ওর হাত থেকে মোটা মোটা পাঁচটা চেইন বের হয়ে আসলো। এগুলো আমি আগে কখনো দেখি নি। আমার জ্ঞানের বাইরে এই চেইনগুলো।
.
--এই চেইনগুলো দিয়ে এই পুরো দুনিয়াকে বেধে রাখা হয়েছে, যাতে মহাবিশ্বের ভিতরে সব কিছুর ভারসাম্য বজায় থাকে। আজ এই সময়ে সব গুলো দুনিয়াতেই শুধু মারামারি, রক্তারক্তি। আমাদের এই দুনিয়া সৃষ্টির পর থেকেই এরকম। প্রথম থেকেই, হয়তো এগারো দুনিয়া একে অপরের সাথে লড়েছে, নাহয় নিজেদের মধ্যে নিজেরাই লড়েছে। বেশ অবাক করার বিষয় হলো আমরা ভাবছি একজন মারা গেলেই সব শেষ। কিন্তু সেটা সম্পূর্ন ভুল। সকল জীবিত ব্যক্তিই মারা যাবার পর সে যে রূপে মারা গেছে সেটা বাদে অন্য যেকোনো একটা ফর্মে আবার জীবিত হয়। ছোট থেকে আবার বড় হয়। শুধু পূর্বের জীবনের কথা সে পুরো ভুলে যায়। উদাহরন স্বরূপ, আমি এখন মনস্টার। যদি মারা যায় তাহলে মনস্টার বাদে আমি যেকোনো ব্যাক্তিতে আমি জীবিত হবো, হতে পারে সেটা মানুষ, হতে পারে সেটা এন্জেল আবার ডার্ক এল্ফসও হতে পারে। এভাবেই আমাদের এই এগারো দুনিয়া চলে আসছে। অবশ্য সৃষ্টিকর্তা আমাদের কি পরিস্থিতি হবে সেটা আগেই জেনে রেখেছিলেন। তার সৃষ্টির মধ্যে আমাদের এগারো দুনিয়ার মতো আরো অনেক সৃষ্টি আছে। সবগুলোই এরকম এগারো দুনিয়া ভিত্তিক। তার যে সৃষ্টির মধ্য থেকে আগ্রহ উঠে যায় তাদেরকে তাদের মতোই রেখে দেন। আজ থেকে প্রায় কয়েক কোটি বছর আগে সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে আমাদের মতো রেখে দিয়েছেন কারন আমাদের একে অপরের সাথে লড়াই এর জন্য। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত তিনি আমাদের জন্য কোনো কিছু করেন নি। সব কিছু তিনি যেভাবে সেট করে রেখেছিলেন সেভাবেই সেই থেকে আজ পর্যন্ত চলে এসেছে৷ তিনি এখনো অপেক্ষায় আছেন এই এগারো দুনিয়ার পাল্টানোর সময়ের অপেক্ষায়। এই দুনিয়ায় ম্যাজিক দিয়েছেন নতুন কিছু দেখার জন্য। তিনি সব গুলো সৃষ্টির মধ্যে খারাপ সেই দুনিয়ার খারাপ সময়ে একজন নির্দিষ্ঠ শক্তিশালী ব্যাক্তিকে পাঠান যিনি পুরো সৃষ্টিকে পাল্টে দিতে পারে। সৃষ্টি থেকে সমস্ত খারাপ কিছু দূর করে নতুনভাবে সাজাবে আবার।।(জেসি এ পর্যন্ত বলে থামলো)
।।।। 
।।।।
আমি কিছু বলতে পারছি না। জেসি কথা বলার সাথে সাথে পাঁচটা চেইন দিয়ে আমার শরীর থেকে আমার পাঁচটা সত্ত্বা বের করে ফেলেছে। আমি শুধু দেখতে আর শুনতে পাচ্ছি আমার শরীর থেকে৷ শরীরের ভিতর দেখেই দেখতে পাচ্ছি আমার পাঁচটা সত্ত্বা জেসির চেইনে বাধা। ডেভিল সত্ত্বা বাদে বাকি চারজন ঘুমিয়ে আছে। চারজনের মধ্যে সাধারন মানুষ সত্ত্বাও আছে৷ আমি এখানে আসার পর থেকে নিজেকে মানুষ ভাবা ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু আমি ভুলে গিয়েছিলাম আমার বাবার বংশ হলো হাফ ডিম্যান। প্রথম এই বংশ শুরু হয়েছিলো একজন মানুষ আর একজন ডিম্যান এর থেকে। তাই আমার ডিম্যান পাওয়ার সিল করে রাখলে আমি শুধু সাধারন মানুষ হয়ে যাবো। আর ছোট বেলায় এটাই আমার উপরে করা হয়েছিলো। যদি এন্জেল পাওয়ার সিল করা হয়েছিলো না, তবে আমার শরীর মানুষের মতোই ছিলো, আর আমার মাইন্ডের কন্ট্রোল এন্জেল সত্ত্বার কাছে ছিলো। তাই আমি বাকি সব মানুষদের থেকে আলাদা ছিলাম। তারা আমাকে পছন্দ করতো না এটা জন্যই
।।।
।।।
আমার চোখের সামনে আমার পাচঁ সত্ত্বাকে দেখতে পেলাম। এই পাঁচটার মধ্যে একটা আমার শরীরে না থাকলে আমি কোমায় চলে যাবো। এমনকি তখন আমার শরীরে অন্যকেউ ও প্রবেশ করতে পারবে। অন্য কেউ প্রবেশ করলে একদিনের মধ্যে আমার একটা সত্ত্বা আমার শরীরে না ফিরলে আমি সম্পূর্ন মারা যাবো। আর এতোক্ষন জেসির কথা শুনে আমি চিন্তায় পরে গেলাম। সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি নিয়ে অনেক কিছু বললো। এটাও বলেছে সৃষ্টিকর্তা একজনকে পাঠাবে যে সব চেন্জ করবে। জেসির কথা যতদূর বুঝলাম, তাতে মনে হচ্ছে সৃষ্টিকর্তা ওকেই পাঠিয়েছে সমস্ত কিছু পাল্টানোর জন্য। এবং ও কেনো হঠাৎ এতো শক্তিশালী হলো সেটাও বুঝতে পারলাম। কিন্তু বুঝতে পারছি না জেসি এটা কেনো করছে। আমার তো মনে হয়েছিলো ও হ্যারির সাথে খুব ভালোই আছে, কিন্তু না, এতো সিরিয়াস কিছু প্রথম থেকে প্লান না করলে কখনো শেষ করা সম্ভব নয়। ছোট থেকেই জেসি এই দুনিয়া চেন্জ করার আশয় আছে।
.
--আমার এই দুনিয়ার নিয়মকানুন কোনো কিছুই ভালো লাগে না। এখানে আমাদের জন্য এগারো দুনিয়া বানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন ধরনের জীবিত বস্তু থাকে। একটা দুনিয়ার থেকে অন্যটা পুরো আলাদা। ছোট থেকে বাবা-আম্মার কোনো বিষয় আমাকে ভাবায় নি, যতটা ভাবিয়েছে এই সকল দুনিয়া নিয়ে। মানুষেরা আমাদের মত মনস্টার সম্পর্কে কিছুই জানে না এখন। কিন্তু অতীতে একটা সময় ছিলো যখন সমস্ত মানুষ, মনস্টার এক সাথেই থেকেছে৷ আমি সেটা আবার করতে চাই, শুধু মানুষ আর মনস্টার নয়, বরং পুরো এগারো দুনিয়া এক করতে চাই। সমস্ত এগারো দুনিয়ার লোকেরা এক সাথে একটা দুনিয়ায় থাকবে। জানি এটা সাধারন কোনো দিক দিয়ে সম্ভব নয়। একটা রাস্তা হলো সমস্ত দুনিয়ার জনসংখ্যা নব্বই শতাংশ করে কমিয়ে দেওয়া, কিন্তু সেটা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আর আমি জানি সেটা কেউ এখন করতে পারবে না। আর কাজটা অনেক সময়েরই। কিন্তু সবচেয়ে সহজ উপায় হলো যদি কাজটা সৃষ্টিকর্তা নিজেই করে দেই। যেহেতু সৃষ্টিকর্তা আমাদের সৃষ্টির উপর মোটেও সুখী নন, তাই তিনি নিজে থেকে কিছু করবেন না। তবে তিনি একটা পদ্ধতি ঠিকই আমাদের মাঝে রেখে গেছেন যেটা সমস্ত এগারো দুনিয়ার মধ্য থেকে একজনই ব্যবহার করতে পারবে। আমি সেই বইগুলো যখন পড়ছিলাম তখন ভেবেছিলাম হয়তো সেটা আমিই হবো। কিন্তু না সেই পদ্ধতি আমি না, বরং এমন একজন মনস্টার হবে যার মধ্যে চারের অধিক সত্ত্বা থাকবে। আমি অনেক খুজেছি, কিন্তু তেমন কাউকে পাই নি। কিন্তু যখন আমি তোর দুই রকমের ডানা দেখলাম, আর সাথে এনার রক্ত খাওয়ার পর তোর ভ্যম্পায়ার হয়ে যাওয়া দেখলাম, তখনি বুঝতে পারলাম আমি যাকে খুজছি সে আমার যমজ ভাই। এখন তোকে যদি আমি সরাসরি বলি এই দুনিয়ার সমস্ত লোককে মেরে ফেলতে তাতে কখনো তুই রাজি হবি না আমি জানি। আম্মার ভবিষ্যত বানী হিসাবে তুই বাকি ডেভিল কিং দের থেকে উল্টা হবি, একদম দয়ালু একজন ডেভিল কিং হবি, কারন আম্মা তোর ভবিষ্যত চেন্জ করেছে। আম্মার মধ্যে ভবিষ্যত দেখার ক্ষমতা থাকলেও সময়ের ক্ষমতা আমার মধ্যে আছে। সময়কে আমি নিজের ইচ্ছামতো ব্যবহার করতে পারি। তাই পাল্টানো ভবিষ্যতকে আবার আগের মতো করে দেওয়া কোনো ব্যাপারই না।(জেসি)
।।।
।।।
জেসি কিছুক্ষন থামলো। তারপর আবার বলতে শুরু করলো,
.
--আমি জানি তুই রাজি হবি না যেটা আমি তোকে বলতে যাচ্ছি। তাই কাজটা আমাকেই করতে হবে, কাজটা বেশী কষ্টের না। কিছুক্ষনের মধ্যে তুই কোমায় চলে যাবি। আর আমি তোর শরীরের মধ্যে প্রবেশ করে আল্ট্রা রিয়েলিটি স্পেল ব্যবহার করবো। এতে করে শুধু এই এগারো দুনিয়ার সমস্ত সৃষ্টি ধ্বংস হয়ে যাবে। নতুন করে শুধু একটা বিশাল দুনিয়া তৈরী হবে। আর সেখানে আস্তে করে সমস্ত দুনিয়ার লোক একত্রে বসবাস করবে।(জেসি)
।।।
।।।
আমার চোখ দুটো বন্ধ হয়ে আসছিলো। আমি আর শুনতে পাচ্ছিলাম না কিছু। মনে হচ্ছে আমি ঘুমিের মধ্যে তলিয়ে পরছি। কিন্তু হঠাৎ আমার সামনে এনার রক্তার্ত মুখের চেহারা ভেসে উঠলো। যখন লোকি আমাকে সহ এনাকে এক সাথে তলোয়ার দিয়ে আঘাত করেছিলো, তখন আমার রক্তে ভরা হাত দিয়ে আমি এনার মু্খের উপরে থাকা চুল সরিয়ে দিয়েছিলাম। তখন ওর সেই মুখটা আমার সামনে ভেসে উঠলো। বুঝলাম না কিছুই, কিন্তু আমার মানুষ সত্ত্বা জেসির চেইন ছিড়ে আবার আমার শরীরে চলে আসলো। আমি এতোক্ষন হাওয়ায় ভাসছিলাম। জেসি আশেপাশের সময় আটকে দিয়েছিলো। তাই আমি নিচে পরছিলাম না। আমার পাশে জেসির একটা চেইন ছিলো, সেটা ধরে আমি টান দিয়ে জেসিকে আমার কাছে টান দিলাম,
.
--আমার বিশ্বাস হচ্ছে না, একজন সাধারন মানুষ সত্ত্বা কিভাবে এতো শক্তিশালী একটা চেইন ভেঙে ফেললো।(জেসি)
.
--তোর সমস্ত চিন্তা ভাবনাকে আমি সম্মান করি। কিন্তু তারপরও, সৃষ্টিকর্তা নিজে কিছু করছেন না এই দুনিয়ার। সমস্ত জায়গা এমন নয় যে যেখানে লড়াই হচ্ছে। অনেক জায়গা আছে যেখানে মানুষ শান্তিতে বসবাস করছে। তারা কোনো রকম লড়াই চায় না বিশেষ করে কিছু পরিচালকদের জন্য লড়াই হয়ে থাকে, তারপরও সৃষ্টিকর্তা কিছু করছেন না এর মানে তিনি আমাদেরকে ঠিক করার সুযোগ দিচ্ছেন। আমরা নিজেরাই চাইলে ঠিক হতে পারি। এছাড়াও অনেক দুনিয়ার লোকেরা চাই না তাদের দুনিয়া থেকে তারা নতুন কোনো দুনিয়ায় থাকতে। তারা তাদের পরিবার, ভালোবাসার মানুষদের নিয়ে সুখেই আছে। আর তুই চাচ্ছিস সেগুলো তাদের থেকে কেড়ে নিতে? মানলাম তুই সবাইকে সুন্দর একটা জীবন দিতে চাচ্ছিস। সৃষ্টিকর্তার আদেশই এটা হয়তো, কিন্তু যদি তোর তথ্য ভুল হয়। যদি অনেক খারাপ কিছু হয় তুই যেটা করতে চাচ্ছিস সেটা করলে।(আমি)
.
--আমি যেটা করছি সেটা পুরো এগারো দুনিয়ার ভালোর জন্য। আমি চাই না আমাদের সৃষ্টিকর্তা আমাদের একেবারে ধ্বংস করে দিতে। নতুন দুনিয়া শুরু করতে যা কিছু দরকার আমি করতে রাজি, যদি সেটার জন্য এই পুরো দুনিয়ার জীবন নিতে হয় তাহলেও আমি রাজি।(জেসি)
।।।।।
।।।।।
আমার মধ্যে শুধু এখন মানষের সত্ত্বাই আছে। মানুষ হিসাবে এখন আমার অনেক দুর্বল হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু জেসির কোনো ম্যাজিকই আমার উপরে কাজ করছে না। হয়তো মানুষ সত্ত্বার স্পেশাল পাওয়ার এটা। অনেক মানুষ আছে যারা স্পেশাল ক্ষমতা বহন করে থাকে, কিন্তু সেটার সঠিক কাজ সম্পর্কে তাদের ধারনা না থাকায় তারা সেটা ব্যবহার করতে পারে না। আমি জেসিকে এখন পুরো এগারো দুনিয়ার জন্য ক্ষতিকর দেখছি। আমার ডেভিল পাওয়ার না থাকায় আমি আমার ডেভিল সেনাদের এখানে ডাকতে পারবো না। আর আমার ডেভিল সত্ত্বাও আমার শরীরে নেওয়া যাবে না, কারন সেটা আমার শরীরে আসলে আমি আমার নিজের শরীর নিয়ন্ত্রন করতে পারবো না। এখন একটাই রাস্তা আমাকে যেভাবেই হোক জেসিকে অজ্ঞান করতে হবে। পরে ওর মাথা থেকে এসব পাগলামি দূর করতে হবে।
.
--একদম রেগে গেছিস আমি তো শুধু মজা করতে ছিলাম। তোর ডেভিল সাইড একদম পাগল হয়ে গেছে। যদি আমি তোর সত্ত্বাগুলো আলাদা না করতাম তাহলে কি হতো তার কোনো ঠিক আছে?(আমি)
.
--এতো ভয়ঙ্কর মজা কেউ করে।(আমি)
।।।
।।।
কিছুটা শান্ত হলাম কারন ও মজা করেছে এতোক্ষন সেটা ভেবে। তারপরও আমার মোটেও বিশ্বাস হচ্ছে না জেসি এতোক্ষন আমার সাথে মজা করছিলো। ও এতো সিরিয়াস ছিলো যে সেটা মজা সেটা মানতে পারছি না। হঠাৎ কোথা থেকে যে এনা চলে আসলো আমি বুঝলামই না।
.
--এনা তুমি এখানে?(আমি)
.
--জ্যাক চলো দুজনে মিলে নতুন দুনিয়া বানায় আমরা, যেখানে আমাদের মাঝে রাজা রানীর কোনো বাধায় আসবে না। এমন একটা দুনিয়া যেখানে সবাই একসাথে থাকতে পারবো।(এনা এই বলে আমাকে জড়িয়ে ধরলো)
।।।
।।।
শুধু জড়িয়েই না আমাকে জড়িয়ে ধরে কিস করতে লাগলো। আর এই মুহুর্তে জেসির শিকলটা আবার আমার শরীরে এসে লাগলো, আর সেটা আবার আমার মানুষ সত্ত্বাকে আটকিয়ে রাখলো। আমি ভাবতেও পারি নি এনাও এই কাজে জেসির সাহায্য করবে। ও হয়তো জেসির মতো ভাবছে। আর আমি নিশ্তিত জেসির কাছে যে ক্ষমতা আছে সেটা এনার কাছেও আছে। তাইতো লড়াইতে আমি একদম অন্যরকম এনাকে দেখেছি। আগের দয়ালু, মায়াবী এনা হয়তো শুধু নাটকই ছিলো। আমি জানি না কি হবে এর পরে। কিন্তু জেসি আমার শরীরের মধ্যে ঢুকে গেলো। এরপর শুধু চারিদিকে আমি সাদা আর সাদায় দেখতে পাচ্ছি। চারপাশে কি হচ্ছে সেটা আমার ধারনা নেই আর। 
।।।।
।।।।
।।।।
।।।।
।।।।
আমার চোখ খুললো। আমি ময়লা আবর্জনার উপরে পরে আছি। জায়গাটা ময়লা ফেলার জন্য একটা নির্দিষ্ট জায়গা। আর এখানে আমি শুয়ে ছিলাম এতোক্ষন। জানি না কি হয়েছে আমার সাথে। কিছুই মনে করতে পারছি না। অনেক কিছু স্বপ্নের মতো লাগছে। উঠে পরলাম, নিজের ছোট ছোট হাত দিয়ে আমি মুছতে লাগলাম আমার গায়ের সকল আবর্জনা। জানি এভাবে ময়লা যাবে না। একটু গোসল করতে হবে। আপাতোতো আমি কোথায় আছি সেটা আমি জানি না। কিন্তু এতো ছোট ব্রেইনে এতোকিছু ঢুকবে না সেটা আমি বুঝতে পারলাম। হ্যা আমার বয়স অনেকটা পাঁচ বছরের মতো। ছোট একটা বাচ্চা আমি, আমার আগের কোনো মেমোরী আমি মনে করতে পারছি না। হয়তো খাবারের ক্ষুদায় এই অবস্থা হয়েছে আমার। কিছু খাবার খেলে আমি কে সেটা মনে পরে যাবে।
।।।।
।।।
।।
(((সমাপ্ত)))
।।
।।।
।।।।

Post a Comment

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.