পার্টঃ০৬
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
।।।।।
।।।।।
।।।।।
ভাইয়ার কাছে ব্যাপারটা লুকাতে হলো। কারন আমি নিজেই বুঝতে পেরেছি কিভাবে এই কিডন্যাপিং করা হয়েছে। যে এই কিডন্যাপ গুলো করছে তার ক্ষমতা শুধু অদৃশ্য হওয়ার না। সে অদৃশ্য হওয়ার সাথে সাথে দেওয়ালের আড় পাড়ে ও যেতে পারে। হয়তো লোকটা এই দেওয়াল দিয়েই এসেছিলো আর কিডন্যাপ করে নিয়ে চলে গেছে৷ আর তখনি তার পকেট থেকে এই কার্ডটা পরে গিয়ে এটা দেওয়ালে আটকে গেছে। কিন্তু আমার মাথায় এটুকু যাচ্ছে না যে আমি কিভাবে কার্ডটা বের করতে পারলাম। হাত দেওয়ার সাথে সাথে আমার হাতটা দেওয়ালের মধ্যেই চলে গেলো। এটা তো আজব কিছু না। নিশ্চয় এই ক্ষমতা আমার মধ্যেও আছে। একই রকম ক্ষমতা দুজনের কাছে থাকা মানে নিশ্চয় আমাদের দুজনের মধ্যে কোনো লিংক রয়েছে। এই ভিকটিম টাকে এখন খুজে বের করতে হবে আমার। ভাইয়াকে কথাগুলো জানানো হয় নি কারন আবার আমাকে নিয়ে চিন্তা করবে। কারন সবাই এখন ভুলেই গেছে আমার কাছে নেচারাল কোনো ক্ষমতা আছে। সবাই জানে শুধু আমার মধ্যে ছোট বেলায় একবার জ্বীনে ভর করেছিলো তাই আমি একটু অন্যরকম ছিলাম। আর সেই আছড়টা কাটিয়ে উঠতে না পারায় আমি অন্য সবার মতো বড় হয় নি।
.
প্রথমত আমি এসব ক্ষমতা নিয়ে অনেক ভয় পেতাম। কারন আমার দ্বারা যদি কারো ক্ষতি হয়ে যেতো সেটা ভেবে। তাই ছোট থেকেই সবার থেকে আলাদা থাকতাম। চুপচাপ থাকতাম একটু। ফ্রেন্ড বলতে ভাইয়া আর হৃদিই ছিলো। পরে অথয় আসলো আবার চলেও গেলো। কিন্তু এখন এই ক্ষমতা একটু একটু কন্ট্রোল করা শিখে যাচ্ছি। আমি এখনো জানি না আমার মধ্যে আরো কি কি ক্ষমতা রয়েছে। কারন আমি কিছুদিন পর পরই নতুন নতুন কিছু দেখতে পাই। তবে সব কিছু আমি আমার মধ্যেই রাখার চেষ্টা করি। অনেকে আছে যারা এগুলো পেলে হয়তো সুপারহিরো হয়ে যেতো। কিন্তু আমার সেসবের কোনো ইচ্ছা নাই। কারন এই পৃথিবীকে রক্ষা করতে সুপারহিরোর না। কিছু সুপার মানুষের দরকার যারা এই পৃথিবীকে সব খারাপ কিছু থেকে আগলে রাখে।
।
।
সারা রাত চেষ্টা করে গেলাম আবারো দেওয়ালের মধ্যে হাত ঢোকাতে কিন্তু কোনো ভাবেই পারলাম না। সব ট্রিকস ব্যবহার করে ফেললাম কিন্তু কোনো দিক দিয়েই পারলাম না কিছু করতে। বুঝতে পারলাম না কিভাবে তখন করলাম। সব শেষে ব্যর্থ হয়ে আমি ঘুমিয়ে পরলাম। পরের দিন সকাল সকালই রেডি হয়ে বেরিয়ে পরলাম হোল্ডার গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রির দিকে। দুদিন আগে খবরের কাগজে দেখেছিলাম এই কম্পানিতে নাকি একজন জুনিয়র ম্যানেজার নেওয়া হবে। আর আজকেই সিলেকশন করা হবে।
।।।
।।।
তাই সুযোগ হাতছাড়া করি নাই। নিলার আব্বুকে বলে আগে থেকেই কিছু নকল পেপার বানিয়ে নিয়েছি। সেই সাথে সেসব স্কুল এবং কলেজের ওয়েবসাইটটা ও হ্যাক করে আমার ফেইক ইনফরমেশন সেখানে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। সব কিছু নাকি জেনারেল স্যার অফিসিয়াল ভাবেই করেছেন। এখন দেখার বিষয় আমি এখানে কি চাকরি পাই কিনা। চাকরি পেলে তো আমার পক্ষে সহজ হয়ে যাবে অনেকটা। কারন সরাসরি মিশন ক্লোজড করার অর্ডার আমি পাই নি। আমাকে প্রথমে প্রমান বের করতে হবে এবং এই গ্রুপটাকে শেষ করতে হবে। কিন্তু এই গ্রুপের লিডারটাকে তো আমাকে জীবন্ত ধরতে হবে। আর সেটা তো খুব শীঘ্রই করতে হবে।
।
।
আমি পৌছে গেলাম হোল্ডার কম্পানির বিল্ডিং এ। ৫ তলা একটা বিশাল বিল্ডিং। এটা প্রথমে ঢাকায় ছিলো। কিন্তু নতুন মালিক এটাকে এখানে ট্রান্সফার করেছে। আমি পৌছে গেলাম তৃতীয় ফ্লোরে। এখানেই অপেক্ষা করছে সব প্রার্থী। আমি বসে আছি ঠিক এমন সময় পাশে বসে থাকা দুজন কথা বলতেছে।
.
--তুই কি জানোস আমাদের কি বিষয়ে পরীক্ষা নিবে?
.
--হুমমম। আমাদের কাছে বেশ কিছু টাইপের অস্ত্রের ছবি দেওয়া হবে। সেটার পুরো ডিটেইলস আমাদের লেখতে হবে।
.
--কি করে জানলি?
.
--আগের বারও আমি চেষ্টা করেছিলাম ঢাকায়। কিন্তু পারি নাই। কিন্তু এবার পুরো প্রস্তুতি নিয়ে আসছি।
.
--এখান থেকে কি একজনকেই সিলেক্ট করবে তারা?
.
--না বেশ কয়েকজন সিলেক্ট করা হবে। কিন্তু পরে আরেকটা রাউন্ড হবে সেটা আমি বলতে পারবো না।
.
--দেখি কি হয়। ভাগ্যে থাকলে চাকরি হবে।
।।।
।।।
দুটোর কথা শুনে কিছুটা ধারনা পেয়ে গেলাম। লোকটার কথা মতোই মৌখিক হলো। মৌখিকে ধরা হলো পাচঁটি বন্ধুকের আকার,আকৃতি,গুলির ডেমেজ এবং আরো কিছু তথ্য। একজন সৈনিক হওয়ায় সব তথ্যই আমার জানা ছিলো তাই এটা বলা অসুবিধা হলো না। সবশেষে আমরা পাচঁজন সিলেক্ট হলাম এই মৌখিকে। যার মধ্যে আমি বাদে দুজন ছিলো গেমার। তাদের গেমের দক্ষতায় তারা টিকেছে। আর বাকি দুজনকে দেখলেই বোঝা যায় তারা সন্ত্রাসী টাইপের কেউ। হয়তো অস্ত্রের ডিল করে তারা। আমরা পাচজন সিলেক্ট হলাম বলে আমাদের মাঝে ফাইনাল রাউন্ড হবে। আর সেটা আমাদেরকে বলা হলো না। পাচঁজনকে নিয়ে যাওয়া হলো চতুর্থ ফ্লোরে। যেখানে একটা Boxing রিং আছে এমন একটা রুমে আমাদের নিয়ে আসা হলো।
.
--আপনাদের পাচজনকে তো এই চাকরি দিতে পারি না তাই এই রিং এর আপনাদের পাচজনের মধ্যে যে জয়ী হবে চাকরীটা তার।(ম্যানেজার)
.
--আমাদের পাচজনের মধ্যেই কি লড়াই হবে?(এক লোক বললো)
.
--পাচজনই লড়বেন কিন্তু একে অপরের সাথে না। আমাদের এই বডিগার্ডের সাথে লড়বেন। যে বিজয়ী হবে চাকরী তার।(ম্যানেজার বললো। আর সাথে সাথে বিশাল দেহী একটা লোক উঠে আসলো রিং এর মধ্যে। যে কেউ দেখলেই ভয়ে পিসাব করবে লোকটার রাগী চেহারা দেখলে। আর কেউ লড়বে তার সাথে এটা কি হতে পারে।)
.
--আমরা লড়তে আসি নি এখানে।(বলেই তিনজন চলে গেলো)
.
--তাহলে আপনারা দুজন লড়তে রাজি আছেন?(ম্যানেজার)
.
--না আমি তো ভেবেছিলাম সবাই চলে যাবে ভয়ে আর আমিই জয়ী হবে সবার মধ্যে।(লোকটা)
.
--সেটাও না। চাকরীটা পেতে হলে ওকে হারাতে হবে।(ম্যানেজার)
.
--তাহলে আমি এর মাঝে নাই।(লোকটা বলেই দৌড় দিলো)
.
--তাহলে জনাব হৃদয় আপনি লড়তে রাজি আছেন।(ম্যানেজার)
.
--হ্যা অনেকদিন ধরে কারো সাথে হ্যান্ডফাইট হয় না। অনেক বোর লাগতেছিলো।(আমি)
.
--ভেবে চিন্তে বলতেছেন তো? কারন এতে আপনার কিছু হয়ে গেলে কিন্তু আমরা দায়ী না?(ম্যানেজার)
.
--আগে বলেন এই বনো ষাড়টার কিছু হয়ে গেলে তো আমি দায়ী হবো না?(আমি)
.
--না মোটেও না।(ম্যানেজার)
।।।
।।।
বিশালদেহী মানুষটা রিঙের মধ্যেই ছিলো। বাইরে থেকে রবার্ট নামে ওকে ডাক দিলো তাই বুঝলাম ওর নাম রবার্ট। এভাবে যদি ফাইট করিয়ে এই কম্পানিতে চাকরী দেওয়া হয় সেটা আগে জানলে তো এখানেই চাকরী করতাম। আমি রিং এ উঠার সাথে সাথে রবার্ট আমাকে একটা স্পেয়ার দিলো। সাথে সাথে আমি দড়িতে আটকে গেলাম। বাবা লোকটা দেহে তো সেই জোড়। আমি নিশ্চিত বলতে পারি আগে এটা wwe খেলতো। আমি দড়ি থেকে উঠলাম আবারো একটা স্পেয়ার মারতে আসছিলো আমার দিকে কিন্তু আমি এবার লাফ দিয়ে ডান পাশে সরে আমার বাম হাতের গোড়ালি দিয়ে গায়ের জোড়ে একটা আঘাত করলাম ঠিক ওর গলায়। সাথে সাথে হাড় ভাঙার আওয়াজ পাওয়া গেলো। এক আঘাতেই জায়গায় মৃত্যু হয়ে গেলো রবার্টের। আমার তো মোটেও মজা লাগলো না।
.
--কি লোক আপনাদের আমার এক আঘাতের ব্লোক ও করতে পারলো না। এর মৃত্যুর জন্য কিন্তু আমি দায়ী না আগেই বলে রাখছিলাম।(আমি)
.
--আপনাকে এটা নিয়ে ভাবতে হবে না। আপনি সিলেক্ট হয়ে গেছেন জুনিয়র ম্যানেজার হিসাবে।(ম্যানেজার)
.
--এতো তারাতারি। আমি তো ভাবলাম আরো কিছু মানুষের সাথে লড়তে পারবো।(আমি)
.
--না ম্যাডাম আপনাকে ডেকেছেন।(ম্যানেজার)
.
--হুমমম চলুন।(আমি)
।।।
।।।
ম্যানেজার মিয়া আমাকে নিয়ে চললো ৫ম ফ্লোরের দিকে। যেখানে পুরো টাই একটা আলিশান বাড়ির মতো। মনে হয় এখানেই এই মেয়েটা থাকে। পাশেই অফিস রুম দেখতে পেলাম। থাকার জায়গাটুকু কাচের গ্লাস দিয়ে আটকানো। আমি ম্যাডামের সামনে চলে আসলাম।
.
--তাহলে তুমিই রবার্টকে এক আঘাতে মেরে ফেলছো। বলতে হবে you have guts।(ম্যাডাম)
.
--ধন্যবাদ ম্যাম।(আমি)
.
--তুমি তোমার কাজ পেয়ে গেছে। পরশু থেকেই জয়েন করবে। ম্যানেজার সাহেব সব বুঝিয়ে দিবে।(ম্যাডাম)
.
--ওকে ম্যাম।(আমি)
.
--ইউ ক্যান কল বুঝি অনু ম্যাম।(অনু)
.
--ওকে অনু ম্যাম।(আমি)
.
--এই নাও তোমার এপয়েন্টমেন্ট লেটার এবং প্রথম মাসের বেতন।(অনু)
.
--থ্যাংকস ম্যাম।।।
।।।।
।।।।
আমি বলেই বের হয়ে গেলাম সেখান থেকে। একটা আশ্চর্যকর বিষয় হলো মেয়েটার সামনে যতক্ষন ছিলাম আমার বুক শুধু কাপছিলো। আমার হৃদপিন্ড মনে হয় কিছু বলতে চাচ্ছিলো। কিন্তু সেটার কথা আমি কি করে শুনবো এটাই তো বুঝতে পারছিলাম না। যাইহোক হোল্ডার এক্স মিশন আমি শুরু করে দিয়েছি এখন শুধু শেষ করার কাজে। এক হিসাবে তো আমি শিওর যে এসব কিডন্যাপিং গুলো হোল্ডার কম্পানিই করছে। এই প্রমানের জোরে তো আমি এখনি তাদের উপরে হামলা করতে পারি কিন্তু আমাকে তো জানতে হবে কেনো এই কিডন্যাপিং করছে।তারা কি বড় কোনো জিনিস প্লানিং করছে কিনা এটাও আমাকে বের করতে হবে। কারন আগের বার এই হোল্ডার গ্রুপের জন্যই আগের বার অনেক মানুষের প্রান গিয়েছিলো। আর আমি এমনটা আবার হতে দিতে পারবো না। আমাকে আগে বের করতে হবে কি করার প্লান করছে এখন এই হোল্ডার গ্রুপ। আর তারপর সে অনুযায়ী হোল্ডার এক্স মিশন ও শেষ করতে হবে। কিন্তু এর মাঝে একটা জিনিস তো আছেই। আর সেটা হলো কালকে নিলার জন্মদিন। আর কালকের দিনেই নিলাকে কিডন্যাপ করে নিয়ে যাওয়ার হুমকি এসেছে। এসব কিডন্যাপের জন্য তো হোল্ডার গ্রুপের হাত আছে সেটা বোঝা গেলো। তাহলে কালকেও নিলাকে কিডন্যাপ করতে এরাই আসবে। আর আমাকে সেটা যেভাবেই হোক আটকাতে হবে। জেনারেল স্যারকে ফোন দিয়ে আমার সব রেকর্ডস মুছে দিতে বললাম সেনাবাহিনীর সাইট থেকে। কারন যে কোনো জিনিসই হয়ে যেতে পারে। মেয়েটাকে দেখে আমার অনেক চালাক মনে হচ্ছিলো। ওর তাকানোর ভাব ভঙ্গি দেখে আমি ঠিকই বুঝতে পেরেছি কি একটা নিয়ে মেয়েটা আমাকে সন্দেহ করেছে। তাই আমি কোনো ভুল করতে চাই না। ধরা পরলে আমার কিছু হবে না। উল্টো আসল কাজ শুরু হবে তখন। তাই তো আর এসব ভাবলাম না। বাসায় এসে পরের সময় গুলো নিলা আর হৃদির সাথে কাটালাম এই কয়েকদিনেই নিলার সাথে অনেক ক্লোজ হয়ে গেছি। কিন্তু আমি বুঝতে পারছিলাম ব্যাপারটা একটু বেশীই ক্লোজ হয়ে যাচ্ছিলো। কালকের দিনটা গেলেই আমি আমার মতো আর নিলা নিলার মতো। ওর প্রতিরক্ষার জন্যই আমাকে এই মিশনটা ওর বাবা দিয়েছে।
।
রাতে ঘুমিয়ে গেলাম। কিন্তু আজকেও একটা স্বপ্ন দেখলাম। সেই আজব স্বপ্ন। যেখানে একজন বয়স্ক লোক আমাকে বলতেছে
.
--ধ্বংস কিন্তু খুব তারাতারিই শুরু হবে। নিরাম্বাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সেটা খুব শীঘ্রই পৃথিবীর দিকে চলে আসবে। তোমাকে তারাতারি প্রস্তুত হতে হবে। তারাতারি তোমার অপূর্ন অংশকে খুজে বের করো। নাহলে এ বিশ্বের ইতি খুব শীঘ্রই দেখতে পারবে।(বয়স্ক লোকটা)
.
--কি বলছেন আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।(আমি)
।।।।
।।।।
লোকটা আর কিছু না বলেই উধাও হয়ে গেলো। আমি তারাতারি ঘুম থেকে উঠে গেলাম। তারাতারি করে বেলকনিতে এসে দাড়ালাম। রাত মনে হয় এখন সাড়ে এগারোটার মতো বাজে। আমি দাড়িয়ে রইলাম বেলকনিতে চুপচাপ। একটু আগের স্বপ্নের কথা ভাবতে লাগলাম। লোকটা বললো নিরাম্বাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কে এই নিরাম্বা। আর আমার অপূর্ন অংশকে খুজতে বললো। তাহলে কি আমি পূর্ন না। আমারো কি অপূর্ণ আরেকটা অংশ অন্য কোথাও ঘুরে বেরাচ্ছে নাকি কোথাও আটক হয়ে আছে সেটা। স্বপ্নে শুধু আমাকে অল্প অল্প হিন্ট দিচ্ছে। এই কম ক্লুতে তো আমার মাথা কিছুতেই কাজ করছে না। আর এসব স্বপ্ন আমার কাছেই শুধু আসছে কেনো। আর কি মানুষ নাই এসবের জন্য। শুধু আমাকেই স্বপ্নে এসব দেখাচ্ছে কে? আর এই বয়স্ক লোকটা কে? আমার সামনে আস্তে পারছে না কেনো এই লোকটা।
।
আমি দাড়িয়ে দাড়িয়ে এসব জিনিস ভাবছিলাম। তখনি নিচে আমি দুজন মানুষের শব্দ পেলাম। প্রথমে ভাবলাম ভাইয়ার সিকিউরিটির কেউ হবে। হয়তো ঘোরাঘুরি করছে। কিন্তু পরে তাদের কথা শুনে বুঝতে পারলাম তারা আসলে কে?
.
--শোন শুভ তুই কি শিওর। এটা এসপি রাহাত চৌধুরীর বাড়ি। আর তুই আসছোস তার শালিকাকে কিডন্যাপ করতে তার বাসায়।(একটা ছেলে)
.
--ভয় পাচ্ছিস কেনো রাজ। আমার বাবা এই জেলার এমপি সেটা তো জানোসই। আমার কেউ কিছুই করতে পারবে না।(শুভ)
.
--কিন্তু এভাবে কিডন্যাপ করা কি ভালো কোনো বুদ্ধি।(রাজ)
.
--আমি তো নিলাকে সারপ্রাইজ দিতে চাই।(শুভ)
.
--এভাবে তো তোদের বন্ধুত্বও ভেঙে যেতে পারে।(রাজ)
.
--বন্ধুত্ব ভাঙলে ভাঙুক। এখন তো আমার জন্য ওর সময় হয় না। আগের মতো সময় দেই না আমাকে।(শুভ)
.
--তুই যেটা করবি বলে ভেবে রাখছিস এটা কিন্তু ঠিক না। আর ওর হয়তো বয়ফ্রেন্ড হয়ে গেছে তাই বেশী সময় দিতে পারে না তোকে।(রাজ)
.
--আমি কিছুই শুনতে চাই না। ওর বয়ফ্রেন্ড হবে কেনো। ও কি জানে না আমি ওকে পাগলের মতো ভালোবাসি। যদি এবার আমার প্রপোজালে ও রাজি না হয় তাহলে আমি যা ভেবে রেখেছি সেটাই করবো।(শুভ)
.
--তোর যা মন চাই কর। আমি চললাম এখান থেকে।(রাজ)
.
--দেখ আমি জানি তুই ও নিলাকে পছন্দ করোস। আর এটাই ওকে কাছে পাবার সুযোগ আমাদের দুজনের।(শুভ)
.
--কিন্তু ধরা পরলে?(রাজ)
.
--ধরা পরবো না। যেভাবে কিডন্যাপিং হচ্ছে এখন পুলিশ একটাকেও আটকাতে এবং আসামীকে ধরতে পারে নি। আমাদের ও পারবে না।(শুভ)
.
--আচ্ছা চল তাহলে।
।।।।
।।।।
দুজনে দেখি পাইপ বেয়ে উপরে উঠার চেষ্টা করতেছে। খুব মায়া লাগতেছে এদের কষ্ট দেখে। আমি আগেই বুঝে গিয়েছিলাম নিলাকে কিডন্যাপ করতে হোল্ডার গ্রুপের কেউ আসবে না। কারন যাদেরকে কিডন্যাপ করা হয়েছে তাদের কাছে একটা লেটার এসেছিলো প্রথমে। সেসব গুলো লেটার একই রকম ছিলো৷ কিন্তু নিলার কাছে যেটা এসেছিলো সেটা আরেকরকম। প্রথমে সিওর ছিলাম না। কিন্তু এবার সিওর হলাম। দুজনে কষ্ট করে হৃদির বেলকনি পর্যন্ত উঠে পরলো। তারপর চুপি চুপি হৃদির রুমের দরজা খোলার চেষ্টা করছিলো। আমিও আমার মুখে এতোক্ষনে একটা তোয়ালে বেধে ওদের বেলকনিতে চলে আসলাম।
.
--ভাইয়া খুলছে নাতো। আমি কি সাহায্য করবো কিছুটা?(আমি)
.
--কেরে?(দুজনেই ভয় পেয়ে আমার দিকে তাকালো)
।।।।
।।।।
আমার মুখ ঢাকা থাকায় আমাকে দেখতে পারছিলো না। কিন্তু হাতে থাকা চাকু দিয়ে আমাকে আঘাত করার চেষ্টা ঠিকই করলো একজন। আমি ওর হাত থেকে চাকুটা নিয়ে সোজা ডান হাতের তালুকে পরাপর দুটো কাট দিয়ে দিলাম।
.
--এর থেকে বেশী কিছু করতে চাই না। কারন চিল্লানি দিবি তোরা। তাই সোজা সোজা যেভাবে আসছোস সেভাবেই চলে যা এখান থেকে।(আমি)
.
--ঠিক আছে সার।(দুজনে বলেই আবার পাইপ দিয়ে নেমে গেলো। আমি তোয়ালে দিয়ে নিচে পরা এবং পাইপে লাগা রক্ত গুলো মুছতে লাগলাম। ঠিক তখনি শব্দ পেলাম কেউ বেলকনিতে আসছে)
।।।।
।।।।
আমি তোয়ালে আমার বেলকনিতে ফেলে দিলাম। রক্তের দাগ এখন দেখা যাচ্ছে না। দুজনের একজনের কাছ থেকে মনে হয় একটা গোলাপ পরে গেছে। সেটা আমি অনেকক্ষন আগেই হাতে নিয়ে রেখেছি। এটাও আমার বেলকনিতে ফেলতে যাবো তখনি নিলা দরজা খুলে আমার সামনে আসলো।
.
--আপনি এতো রাতে এখানে কি করছেন?(নিলা)
.
--না মানে?(কি বানিয়ে বলবো সেটা বুঝতে পারছিলাম না)
.
--ও গোলাপ। আপনি কি রে জানেন যে আমার গোলাপ অনেক পছন্দ?(আমার হাত থেকে গোলাপটা নিয়ে)
.
--......(গোলাপ তো সব মেয়েরই পছন্দ এটা সবাই জানে)
.
--ও বুঝেছি লজ্জা পাচ্ছেন। আমার বার্ডডে wish করতে আসছেন তো। নিন ১২ টা ১ বেজে গেছে। করে ফেলুন।(নিলা)
.
--ওওওও হ্যা। Happy birthday to you।(আমি)
.
--থ্যাংকস।(নিলা)
।।।।
।।।।
যাক মেয়েটা বেশী বুঝে বলে বেচে গেলাম। আমি ঘুম পাচ্ছে অভিনয় করে সেখান থেকে আমার রুমে চলে আসলাম। একটা মিশন তো কম্প্লিট হলো৷ এই চিপকু টাইপের মেয়েদের সাথে মিশতে আমার একদমই পছন্দ না৷ তবে আমাকে কালকের দিনটা ওর সাথেই থাকতে হবে। কারন ঔ ছেলে দুটো ওর জন্য আবার আসবে বলে আমার মনে হচ্ছে।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলব)))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।