পার্টঃ০৩
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
।।।।।
।।।।।
।।।।।
আমি ভাবতেছি আমার গোয়েন্দার চাকরি করা উচিত ছিলো। সুন্দর সুন্দর রহস্য আমি বের করতে পারতাম তখন। কিন্তু এখন আমি যে চাকরি করে তাতে তো আর রহস্য বের করার কিছুই নাই। সোজা একসনে যেতে হয়। এবার একটু গোয়েন্দাগিরি করার ও সুযোগ পেয়ে গেলাম। সেটার জন্য নিলার অনেক ক্লোজ হতে হবে বুঝতে পারতেছি। ভাই বোনের সম্পর্ক বানালে কেমন হয় ওর সাথে। হ্যা সেটাই ভালো হবে। তাহলে অনেক কিছু জানতে পারবো ওর ব্যাপারে। এখান থেকে ওদের সবাইকে নিয়ে আমরা শপিং এ চলে গেলাম। সবাই শপিং করতে ছিলাম।
.
--আপু দেখতো আমি কনফিউজড কোন কালারের জামাটা নিবো?(নিলা)
.
--লালটা নে ভালো লাগবে।(অথয়)
.
--তোর আর তোর এই ক্ষত রং। লাল কেউ কি এখন ব্যবহার করে। এর থেকে গোলাপি রং ভালো।(নিলা)
.
--তাহলে হলুদ জামা টা নাও সেটা ভালো বানাবে তোমায়।(ভাইয়া)
.
--ভাইয়া আমার বাসা ভর্তি হলুদ ড্রেস। আরো একটা নিবো।(নিলা)
.
--তুমি এক কাজ করো এই পিংক কালারের টাই নাও এটায় তোমায় দারুন মানাবে।(হৃদিতা)
.
--আমি কনফিউজড।(নিলা)
.
--আমার মতে আপনার এই নীল জামাটায় খুব ভালো মানাবে। এমনিতেও আপনার নামের সাথে রংটার মিল আছে। তাই নীল রংটা আপনার জন্য মানানসই হবে।(আমি)
.
--......(নিলা কিছু না বলে আমার দেখিয়ে দেওয়া নীল জামাটা দেখতে লাগলো। তারপর সেটাই প্যাক করে দিতে বললো দোকানদারকে। তারপর আমার দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিলো)
।।।
।।।
আমার জন্য কয়েকটা শার্ট আর প্যান্ট কিনলো হৃদিতা আর ভাইয়া পছন্দ করে। সব কিনাকেটা শেষ করে আমরা আমাদের বাসায় যেতে লাগলাম। নিলা দেখি আমাদের সাথেই আমাদের বাসায় যাচ্ছে। বুঝলাম না আমাদের বাসায় কেনো যাচ্ছে তবে এতে আমারই ভালো। ওর নিরাপত্তার জন্য সেটা একটু ভালো হবে। আর আমার মিশনই তো ওকে নিরাপত্তা রাখা। ভাইয়া ওদেরকে ড্রপ করে দিলো বাসায়। তারপরে গাড়ি নিয়ে কোতয়ালী থানার দিকে যেতে লাগলো ভাইয়া।
.
--তোকে কিছু দেখানোর ছিলো আমার।(ভাইয়া)
.
--হুমমম কি দেখাবি।(আমি)
.
--প্রথমে থানায় চল।(ভাইয়া)
।।।
।।।
ভাইয়া থানার সামনে গাড়ি পার্ক করলো। সবাই ভাইয়াকে দেখেই স্যালুট দিতে লাগলো। ভিতর থেকে ওসি বের হয়ে আসলো এবং সে ও ভাইয়াকে স্যালুট দিলো।
.
--স্যার উনি আপনার ছোট ভাই না?(ওসি)
.
--হ্যা।(ভাইয়া)
.
--দুই বছর পর দেখা হলো।(ওসি)
.
--আচ্ছা এসব কথা পরেও বলা যাবে। আমি যে মিটিং এর ব্যবস্থা করতে বলেছিলাম সেটা করেছেন?(ভাইয়া)
.
--হ্যা স্যার ভিতরে সবাই অপেক্ষা করছে আপনার।(ওসি)
।।।।
।।।।
আমাকে সাথে নিয়ে ভাইয়া ভিতরে ঢুকলো। ভিতরে ঢোকার সাথে সাথেই ভাইয়ার আন্ডারে থাকা সব অফিসার ভাইয়া দেখে স্যালুট দিলো। ভাইয়া সবার সামনে এখন বলতে শুরু করলো।
.
--জেন্টেলম্যানস আমাদের শহরে প্রতিনিয়তই কেউ না কেউ কিডন্যাপের হুমকি পাচ্ছে। এবং টাইট সিকিউরিটি থাকার পরেও সে কিডন্যাপ হয়ে যাচ্ছে। আর আমাদের পুলিশ ডিপার্টমেন্ট এটার কিছুই করতে পারছে না? আমি এটার ডিটেইলস চাই। সবাই এক এক করে বলতে শুরু করেন।(ভাইয়া)
।।।
।।।
ভাইয়ার কথা শুনে এক একজন অফিসার বলতে শুরু করলো। আমি একটা চেয়ার নিয়ে সেটাই বসলাম। আমাকে কেউ চিনে না এখানে। সবাই হয়তো আমাকে কিছু বলছে না কারন আমি ভাইয়ার সাথে এসেছি। নাহলে তো এ রুমে আমাকে ঢুকতেই দিতো না। আমি চুপ চাপ শুনতে লাগলাম
.
--স্যার এই কিডন্যাপের পিছনে অনেক বড় একটা গ্রুপের হাত রয়েছে। প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম হয়তো এটা কিছুসংখ্যক মানুষই করতেছে। কিন্তু পরে আমরা দেখতে পেলাম না এটার পিছনে পুরো একটা গ্যাং এর হাত রয়েছে। কারন তারা এক সময়েই কতগুলো কিডন্যাপ করছে।(এক অফিসার)
.
--তো আপনারা কি কিছু করতে পারছেন না এটার বিরুদ্ধে। আসামী গুলোকে ধরুন।(ভাইয়া)
.
--স্যার আমাদের ডিপার্টমেন্ট অনেক চেষ্টা করেছিলো এই আসামী গুলোকে ধরতে। এমন কি আমাদের টিমের কিছু মেম্বার গত মাসে কিডন্যাপ হয়ে যাওয়া রহিম মিয়ার গার্ডেও ছিলো। কিন্তু রহিম মিয়া টয়লেটে ঢুকলো সেখান থেকে আর বের হলো না। পুরো বাড়িই টাইট সিকিউরিটিতে ভরা ছিলো। এমন কি আমাদের অফিসার তার টয়লেটে ঢোকার পর বাইরেই দাড়িয়ে ছিলো কিন্তু তাকে আর পাওয়া গেলে না। ভিতরে শুধু একটা লেটার পাওয়া গেলো।(আরেক অফিসার)
।।।।
।।।।
লোকটার কথা শুনে সবাই একে অপরের সাথে কথা বলতে লাগলো। আমার মাথাটাও উল্টে গেলো। একটু খারাপ লাগলো এটা ভেবে হয়তো কিডন্যাপার রহিম মিয়াকে ফ্লাশ করে টয়লেটের ভিতর দিয়ে নিয়ে গেছে। ইস এমন হলে লোকটা কতটা খেয়েছে তা কে জানে? আচ্ছা যাক এসব বাদ দেওয়া যাক। সবাই এক এক করে তাদের রিপোর্ট ভাইয়াকে বলতে লাগলো। আমি সব শুনে বুঝতে পারলাম। যারাই এই কিডন্যাপ করে থাকুক হয়তো সে দুর্বল কেউ না। সবার কথা শুনে আমার মাথায় দুটো কথা ভাসছে। এক হলো যাদের কিডন্যাপ করা হয়েছে তাদের টাইট সিকিউরিটির মধ্যে থেকে কিডন্যাপ করা হয়েছে। তারা সবাই বড়লোক এবং নামিদামী মানুষ ছিলো। আর আরেকটা ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হলো তাদের এখনো কোনো খোজ পাওয়া যায় নি। আমি কোথায় যেনো শুনেছিলাম যাদের কিডন্যাপ করা হয়েছে তাদের মেরে ফেলেছি কিডন্যাপার রা। কিন্তু এমন কিছুই হয় নি। কারন এখনো তাদের লাশ পাওয়া যায় নি।
।
আমার মতে দুটো জিনিসই এমন করতে পারে। এক হলো যারা এই কিডন্যাপ গুলো করছে তারা হয়তো অনেক টাকার মালিক। আর তারা সকল সিকিউরিটি কে নিজেদের করে নিয়ে ভিকটিম গুলোকে কিডন্যাপ করে নিয়েছে। আর ২য় জিনিসটি একটু বেশী ইন্টারেস্টিং। আমার মাঝে যেমন নেচারাল কিছু শক্তি আছে। পৃথিবীতে তো হয়তো আমি এমন একা না। আমার মতো আরো অনেকেই আছে। হয়তো যারা কিডন্যাপ করছে তাদের কাছেও কিছু ক্ষমতা আছে যা দিয়ে তারা আইন ভাঙলেও কখনো আইনের চোখে পরে না।
।
আমি চোখ বুঝে ভাবতে লাগলাম। আর দ্বিতীয় জিনিসটা হওয়ার পুরো চান্স আছে বলে আমার মনে হচ্ছিলো। ভাইয়া মিটিং শেষ করে গাড়িতে উঠে বসলো। ড্রাইভ আমি করতে লাগলাম।
.
--তো কিছু কি তোর মাথায় ঢুকলো?(ভাইয়া)
.
--ঢুকবে না কেনো? অনেক কিছুই ঢুকলো।(আমি)
.
--কি ঢুকলো?(ভাইয়া)
.
--ঢুকলো ব্যাপারটা রহস্যের। আর সেটা আমাদের বের করতে হবে।(আমি)
.
--হুমমম তো কি করা যায় এখন বলতো।(ভাইয়া)
.
--এটা আমি কি করে বলবো। এটার কাজ তোর। আমাকে যে কাজ দিয়েছে আমি সেটা করতেই তো এসেছি।(আমি)
.
--তোকে আবার কি কাজ দিয়েছে?(ভাইয়া)
.
--তোর শ্বশুর আমাকে তোর শালীকার নিরাপত্তা আর হোল্ডার গ্রুপের কিছু করতে পাঠিয়েছে এখানে।(আমি)
.
--হোল্ডার গ্রুপ?(ভাইয়া চমকে উঠলো)
.
--হ্যা হোল্ডার গ্রুপ।(আমি)
.
--এই কম্পানি তো কয়েকমাস হলো ফরিদপুরে এসেছে।(ভাইয়া)
.
--হ্যা।(আমি)
.
--সেটার সাথে কি করবি তুই?(ভাইয়া)
.
--কিছুই না। শুধু নতুন টেকনোলজি ইউজ করবো।(আমি)
.
--বুঝলাম না।(ভাইয়া)
.
--এতো বোঝার দরকার নাই। এখমন তোর শালিকার ব্যাপারে বল। ওকে কবে হুমকি দেওয়া হয়েছে?(আমি)
.
--ওকে গত মাসের শেষের দিকে একটা লেটারে হুমকি আসে। এই শুক্রবারে ওর জন্মদিন। আর সেদিনই নাকি ওকে কিডন্যাপ করা হবে।(ভাইয়া)
.
--ওকে কিডন্যাপ করে কি হবে।(আমি)
.
--হয়তো ওর বাবার সাথে শত্রুতা করে কেউ করবে। কিংবা তই নতুন গ্যাং কাজটা করবে।(ভাইয়া)
.
--তাহলে তো তোর বউকে নিয়েও ঝামেলা। দেখা গেলো তোর বউ কিডন্যাপ হয়ে গেলো।(আমি)
.
--দূর ওয়ার্নিং তো নিলাকে দিয়েছে।(ভাইয়া)
.
--আচ্ছা দেখা যাবে কে কাকে কিডন্যাপ করে আগে বাসায় যাওয়া যাক।(আমি)
।।।।
।।।।
আমি ড্রাইভ করছিলাম। বাসায় পৌছানোর পরই হঠাৎ ভাইয়ার ফোনে একটা ফোন আসলো। কথা বলার পর ও আমাকে বললো।
.
--কালকের মধ্যেই বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলী মির্জাকে কিডন্যাপ করার হুমকি এসেছে।(ভাইয়া)
.
--তোর পুরো ফোর্স লাগিয়ে দে এবার মির্জার বাসায়।(আমি)
.
--তাতেও মনে হয় না কিছু করতে পারবো।(ভাইয়া)
.
--এক কাজ কর মির্জার বাসার সব জায়গায় ক্যামেরা লাগিয়ে দিবি। এমনকি টয়লেটেও।(আমি)
.
--পাগল হয়ছোস।(ভাইয়া)
.
--তাছাড়া কিছুই করার নাই। একটু এঙ্গেল করে লাগাবি যাতে আসল জিনিস না দেখা গেলেই হবে।(আমি)
.
--ঠিক আছে।(ভাইয়া)
.
--ক্যামেরা গুলো খুব গোপন ভাবে লাগাবি। যাতে এটা সম্পর্কে কেউই জানতে না পারে।(আমি)
.
--ঠিক আছে। তুই যাবি এখন আমার সাথে সেখানে?(ভাইয়া)
.
--আমি পাগল না। আমি রেস্ট নিবো এখন। সারাদিন মেয়েদের সাথে ঘুরিয়ে আমার মাথা ব্যথা করে দিছোস তুই এখন আমি ঘুমাবো।(আমি)
।।।।।।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।
।।।।।।
অপেক্ষা করুন পরের পার্টের জন্য।