পার্টঃ০১
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
।।।।।
।।।।।
।।।।।
গল্পটার শুরুটা ঠিক আমাদের বর্তমান সময়ের ঠিক ১৯ বছর পূর্বে থেকে। আমাদের ইউনিভার্সের মতোই ঠিক আরেকটা ইউনিভার্স রয়েছে। আমাদের ইউনিভার্সটাকে বলা হয় এ্যাস্টার। আর আমাদের ইউনিভার্সের সাথে সবচেয়ে বেশী বার যে ইউনিভার্স লিংক বা একত্রিত হয়েছে সেটাকে বলো হয় ডাই এস্টার। নামের দিক দিয়ে দুটো অনেকটা এক রকম। কিন্তু দুটোর মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। তো গল্পটা শুরু হয় ডাই এস্টার ইউনিভার্স থেকে। আপনারা যারা ইউনিভার্স সম্পর্কে জানেন না তাদেরকে আমি বলতে চাই যদি দুটো ইউনিভার্স সম্পর্কে কথা আসে তাহলে সহজ ব্যাখ্যা হিসাবে আমাদের এই একটা মহাবিশ্বে যা কিছু আছে সেটা নিয়ে একটা ইউনিভার্স। আর আমাদের মতোই আরেকটা মহাবিশ্ব নিয়ে আরেকটা ইউনিভার্স হবে। এক কথায় বলতে গেলে ডাইমেনশন যেটাকে বলা হয় আমি সেটার কথা বুঝাচ্ছি ইউনিভার্স দিয়ে। তো গল্পে ফেরা যাক।
।
ডাই এস্টার ইউনিভার্সে বা ডাইমেনশনে কিছুই ঠিক চলছে না। সেখানের প্রত্যেকটা প্লানেটের অবস্থায় অনেকটা বাজেহাল। সব প্লানেট কে দখল করার ইচ্ছা ব্লাক নাইট দের রাজার ইচ্ছা ছোট থেকেই। সে হিসাবে সে সব প্লানেটকেই নিজের করে নিচ্ছিলো। প্রায় কয়েকটা গ্যালাক্সি দখল করার পর তার নজর চলে আসে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে। আমি আগে থেকেই বলে রাখি ব্লাক নাইট হচ্ছে ডাই এস্টার ইউনিভার্সের সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী Evil টিম দের মধ্যে একটা। এদের কাছে এতো ক্ষমতা এবং এতো শক্তি আছে যে এরা চাইলে নিমিষেই একটা প্লানেটকে ধ্বংস করে দিতে পারে। কিন্তু তাদের একটাই স্বপ্ন তারা কোনো প্লানেট ধ্বংস করবে না বরং সে প্লানেটটাকে নিজের করে নিবে। আস্তে আস্তে তারা মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির সব গুলো প্লানেট দখল করে নিচ্ছিলো। সব গুলো প্লানেট এক হয়েও তাদের কিছুই করতে পারলো না। কারন ব্লাক নাইটের রাজা অনেক শক্তিশালী এবং বুদ্ধিমান ছিলো। সে যেকোনো ভাবেই যেকোনো যুদ্ধে জিতে যেতো। ব্লাক নাইটের চোখ অবশেষে দ্যা ব্লু Earth এর উপরে পরলো। আমাদের এ্যাস্টার ইউনিভার্সে আমরা শুধু earth বলি। কিন্তু ওরা সাথে দ্যা ব্লু লাগিয়ে দিয়েছে।
।
অবশেষে একদিন ব্লাক নাইটের রাজা তার সেনা নিয়ে ডাই এস্টার ইউনিভার্সের পৃথিবীতেও হামলা করে দেই। এতে করে সেখানে খুব করুন দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। চারিদিকে শুধু মৃত লাশই দেখা যায়। সেই পৃথিবীর যে রাজা থাকে তাকে হত্যা না করে তাকে ব্লাক নাইটের রাজার জেলখানায় বন্ধী রাখা হয়। কিন্তু পৃথিবীর রাজকুমার এবং রাজকুমারীকে সেখানের সেনাপতি এই ভয়াবহ দৃশ্য দেখে সেখান থেকে দূরে পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত করে। কারন সে ভালো করেই জানে রাজকুমার এবং রাজকুমারীকে মেরে ফেলবে ব্লাক নাইটের সেনা। আর এই রাজকুমার আর রাজকুমারীই সেই ইউনিভার্সের সবচেয়ে শক্তিশালী সত্ত্বাদের মধ্যে দুজন। তো সেনাপতি সেখানের পৃথিবীর রাজার সিল করা ডাইভার্স মেশিনটা অন করলো। রাজা টিট্রোনিয়াম এই মেশিনটা অনেক আগেই সিল করে রেখেছিলো। কিন্তু সেনাপতিকে রাজকুমার আর তার বোনের জীবন বাচাতে হলে এটার ব্যবহার করতেই হবে। সে এটার ব্যবহার করে এ্যাস্টার ইউনিভার্সের পৃথিবীতে চলে আসলো। এখানে আসার পর সে রাজকুমার আর রাজকুমারীকে নিয়ে একটা হাসপাতালে চলে আসলো। এবং সেখানেই নিজের জীবনের ইতি ঘটিয়ে এমন একটা কিছু করলো যাতে তার রাজকুমার এবং রাজকুমারী বেশ কিছু সময়ের জন্য সুরক্ষিত থাকে।
।।।।
।।।।
গল্পের শুরুটা ছিলো মাত্র। এটাতো হলো ১৯ বছর আগের কাহিনী চলুন এখন আমরা ফিরে আসি বর্তমান সময়ে। যেখানে আমাদের গল্পের প্রধান চরিত্র এই মুহুর্তে বসে আছে নদীর ধারে। অনেক চিন্তিত সে। কারন ১৯ বছরের জীবনেই সে অনেক কিছু দেখে ফেলেছে। বাস্তবতা কি সেটা অনেক কাছ থেকে ফিল করেছে। তো গল্পের প্রধান চরিত্র হয়েই গল্পটা শুরু করা যাক।
।।।।
।।।।
আমার নাম হৃদয় বাপ্পী। বাবা মার তিন সন্তানের মেঝো আমি। আমার বড় একটা ভাই আছে আর ছোট একটা বোন আছে। আমাদের পাচজনের পরিবার নিয়ে আমরা অনেক সুখেই ছিলাম। তবে মাঝে মাঝে আমার জন্যই অনেক সমস্যা হয়ে যেতো। ছোট বেলা থেকেই আমার রাগ বরাবর একটু বেশীই। আর আমি ছোট থেকেই বড়দের মতো আচার আচরন করতাম। জানি না কেনো তবে আমি আমার নিজের মাঝে অন্য রকম কিছু ফিল করতাম। মনে হয় আমি সবার মতো নেচারাল না। আমি সবার থেকে অনেক আলাদা। সবাই দূরে থেকে আস্তে আস্তে কথা বললেও আমি সে জিনিসটা শুনতে পাই। যখন আমি রেগে চিল্লানি দি তখন নাকি সেটা কানের পর্দা ফাঠিয়ে দেওয়ার মতো জোরে হয়। জানি না আমার মাঝে এসব কিভাবে আসছে। তবে আমি এখন এগুলোর জন্যই হয়তো এই জায়গায় বসে আছি। নিজের মাঝে সুপার ন্যাচারাল পাওয়ার আছে এটা শুধু বাংলাদেশ আর্মি ছাড়া কেউই জানে না। আর এটার অনেক বড় সুযোগ নিয়ে তারা আমাকে একটা অস্ত্রের মতো ব্যবহার করতেছে। অবশ্য এতে আমার কোনো দ্বিধা নেই কারন আমি আমার দেশের সেবা করতে পারতেছি তাতেই আমি অনেক সুখী। ছোট থেকেই আমার দেশের জন্য ভালোবাসা অনেক বেশী। দাদা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন কর্নেল ছিলেন। আর তার চাকরির সুবাধেই আমি চাকরিটা পেয়ে গেছি। অবশ্য আমার মেডিকেল করার সময় আমার মাঝে অন্যরকম কিছু একটা দেখে সাথে সাথেই আমাকে সেনাবাহিনীতে নিয়ে যায়। এক সময় এই সেনাবাহিনী আসার আমার কোনো ইচ্ছাই ছিলো না। এখানে আসার খুব ইচ্ছা ছিলো আমার বড় ভাই রাহাত চৌধুরীর। কিন্তু বলে না ভাগ্য না থাকলে কিছুই করার নাই। তার পায়ের গোড়ালির একটা হাড় সামান্য বড় ছিলো তাই সে মেডিকেলে বাতিল হয়ে যায়। আমার বড় ভাইয়ের মাঝেও দেশসেবার অনেক প্রবল ইচ্ছা। দুজনেই দাদা ইব্রাহিম চৌধুরীর থেকে অনুপ্রেনিত ছিলাম। কিন্তু আমার সেনাবাহিনীর নাম শুনলেই ভয় লাগতো। কারন আমার দাদা একটা কমবেটে নিজের ডান পা হারায় চিরদিনের জন্য। সে এখন আগের মতো হাটতে পারে না। এজন্য আমার খুব ভয় হতো সেনাবাহিনীর নাম শুনলেই। আর আমার পরিবার থেকেও কখনো কেউ চাই নি যে আমি সেনাবাহিনী তে যায়। কারন ছোট বেলায় নাকি আমি মরতে মরতে বেচেছিলাম। তাই সোজা মৃত্যুর হাতে তারা আমাকে তুলে দিতে পারে না। কিন্তু ভাগ্যের কি চরম পরিহাস। শেষ পর্যন্ত আমাকে আসতেই হলো সেই সেনাবাহিনীতে। ছোট থেকেই অনেক ভিতু টাইপের ছেলে ছিলাম আমি। কিন্তু সব সময়ই আমার পাশে থেকেছে আমার বড় ভাইয়া। আমার থেকে তিন বছরের বড় সে। ছোট থেকেই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড সে। আজ অনেকদিন হলো আমি কোনো যোগাযোগ রাখি না তাদের সাথে। এর কারন হলো দুটো। একটা হলো বাংলাদেশ সেনাবাহিনী চাইনা আমি কারো সাথে যোগাযোগ করি। কারন আমাকে সবার থেকেই আলাদা রাখতে চাই তারা। আর দ্বিতীয় কারনটা আপনারা গল্প পড়লেই বুঝতে পারবেন।
।
আমি নদীর ধারে বসে ছিলাম এমন সময় চিফ জেনারেল স্যারের ফোন আসলো আমার কাছে।
.
--হৃদয় তোমার ১ ঘন্টার সময় শেষ। তারাতারি ক্যাম্পে চলে আসো। কিছু কথা আছে তোমার সাথে।(জেনারেল)
.
--ওকে স্যার।(আমি)
।।।।
।।।।
আমি চলে যাচ্ছিলাম আমাদের সেনাবাহিনীর নতুন ক্যাম্পের দিকে। আমরা বর্তমানে আছি সিলেটের পাহাড়ি একটা জায়গায়। এখানে পাহাড়ের আড়ালে নাকি কিছু সন্ত্রাসী অস্ত্র চালানের ব্যবসায় নিয়জিত আছে। তাদেরকে মেরে অস্ত্র গুলো সিল করে দেওয়ার অর্ডার পেয়েছি আমরা সরকার থেকে। সেই অনুযায়ী আমরা সিলেটের সেই পাহাড়ি একটা জায়গায় ক্যাম্প করেছি। আর আসার সময় পাশে একটা নদী দেখেছিলাম তাই আমার কমান্ডারকে বলে আমি এখানে ১ ঘন্টার জন্য এসেছিলাম এখন আমি ফিরে যাচ্ছি ক্যাম্পে। আমি জানতাম না যে চিফ জেনারেল ও এখানে আসবে। যেহেতু এসেছেন তাই বলতে পারতেছি বড় সড় একটা কিছু নিয়ে এসেছেন আমার জন্য। কারন এটা তিনি প্রতিবারই করেন। আমি জেনারেলকে দেখেই স্যালুট দিলাম।
.
--আসো হৃদয় তোমার অপেক্ষায় ছিলাম এতোক্ষন।(জেনারেল আর আমার কমান্ডার বসে আছেন দুজনে)
.
--স্যার জরুরী কিছু হয়েছে? হঠাৎ আপনি এখানে চলে আসলেন?(আমি)
.
--কেনো আমার কি এখানে আসা বারন?(জেনারেল)
.
--মোটেও না স্যার। কিন্তু এখানে যে বিপদ যেকোনো সময়ে তো আমাদের উপরে হামলা করতে পারে অবজেক্ট গুলো।(আমি)
.
--সেটার চিন্তা করেই এসেছি। আর তোমার জন্য নতুন একটা মিশন নিয়ে এসেছি।(জেনারেল)
.
--নতুন মিশন। কিন্তু এটা তো এখনো আমরা শেষ করতে পারি নাই।(আমি)
.
--হৃদয় এই মিশন টা আমি Shadow টিমের হাতে দিয়ে দিয়েছি।(জেনারেল)
.
--স্যার আপনি এটা কিন্তু ঠিক করেন নি।(আমি)
.
--তোমার ভাইয়ের শ্বশুর হিসাবে কিন্তু এটুকু আমি করতেই পারি।(জেনারেল)
.
--আবারো ইমোশনাল ব্লাকমেইল।(আমি)
.
--দেখো দেড় বছর হয়ে যায় তুমি সেনাবাহিনীতে আসছো। এতো কম বয়সে তুমি বাসা থেকে এতো দূরে আছো। তোমার বাসার সবাই তোমাকে অনেক মিস করে।(জেনারেল)
.
--আপনি এখন এটা বলতেছেন। আপনি জানেন আপনিও আমাকে পাঠাতে চান না। আর আমি নিজেও যেতে চাই না।(আমি)
.
--সেজন্য এবার তোমার জন্য একটা মিশন নিয়ে এসেছি। আর এটাই তুমি মানা করতে পারবে না আমি জানি।(জেনারেল)
.
--কি মিশন?(আমি)
.
--হোল্ডার এক্স।(জেনারেল)
.
--সেটা তো চার মাস আগেই শেষ করেছিলাম।(আমি)
.
--সেটা ছিলো হোল্ডার। কিন্তু এবারের মিশনের নাম হোল্ডার এক্স।(জেনারেল)
.
--হোল্ডার টিমের সদস্য সহ তাদের লিডারকে তো নিজ হাতেই গুলি করেছিলাম। তাহলে এখন এই মিশন কেনো? কেউ কি বেচে ছিলো?(আমি)
.
--হুমমম। হোল্ডার গ্রুপের লিডার রাইয়ান এর একটা মেয়ে ছিলো যেটা লন্ডনে পড়াশোনা করতে ছিলো। আমাদের খবরী গুলো খবর দিয়েছে যে হোল্ডার গ্রুপ সেই চালাচ্ছে আবার। সন্ত্রাসী অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে সে। আর আশ্চর্যকর বিষয় হলো মেয়েটার কাছে কিছু সুপার ন্যাচারাল ক্ষমতা রয়েছে। যেগুলোর জন্য আমাদের কোনো টিমই এই মেয়েটা ধরতে পারতেছে না।(জেনারেল)
.
--তাহলে কি আমাকে এই মেয়েটাকে মারতে হবে?(আমি)
.
--না। আমাদের এই মেয়েটাকে অনেক প্রয়োজন পরবে। কারন এই মেয়েটার উপরে আমাদের বিজ্ঞানীরা অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা করবে।(জেনারেল)
.
--ওকে ঠিক আছে। মিশনের জন্য আমি প্রস্তুত।(আমি)
.
--এই এটা হলো বাঘের মতো কথা। তাহলে প্যাকিং করো। বাসায় যাচ্ছো আমার সাথে এখনি।(জেনারেল)
.
--বাসায় যাবো কেনো?(আমি)
.
--তোমার উপরে এখন আরেকটা মিশন আছে আর সেটার কাগজও এই ফাইলে আছে।(জেনারেল)
.
--আরো একটা। আচ্ছা কি সেটা।(আমি)
.
--আমার ছোট মেয়ের জন্মদিন সামনে শুক্রবারে। আর একটা Gang হুমকি দিয়েছে এদিন তাকে নাকি কিডন্যাপ করবে।(জেনারেল)
.
--ভাইয়া আছে সেখানেই। সে একজন পুলিসের এসপি আর তাকে রেখে আমার কাছে আসছেন এই মিশন নিয়ে।(আমি)
.
--এটা আমার অর্ডার। আর আমার অর্ডারের উপরে কথা বলতে সাহস পেলে কোথায়?(জেনারেল একটু রেগে বললো এখন)
.
--জ্বী স্যার। আমি রেডি স্যার।(শালার জেনারেল ও জানে কিভাবে আমাকে রাজি করাতে হয়)
।।।।
।।।।
জেনারেল ভালো করেই জানে আমি কোনো অর্ডার অমান্য করি না। আর সেটার সুযোগ নিয়ে আমাকে এবার বাসায় নিয়ে যাবে। শালার বাবার বন্ধ বলে কিছু বলতেও পারি না। আবার চিফ জেনারেল অফিসার। তাকে কিছু বললেও আমাকে ডিমোশন করে দিয়ে সাধারন সৈনিক করে দিবে। তখন বর্ডারে মাছি মারতে হবে। অনেক কষ্টে এবং সংগ্রামের পরে আমি আজ এই অবস্থানে। অবশ্য প্রমোশন আমার আর লাগবে না। কারন আমি মিশন গুলো পছন্দ করি। শুধু ইচ্ছা সহকারী কমান্ডার থেকে কমান্ডার এর পদে উঠতে। আমিও বাধ্য ছেলের মতো আমার নিজের ব্যাগটা নিয়ে চলে আসলাম। আজকে সকালেই এসেছি এখানে ব্যাগ যেমন ছিলো তেমনই আছে। শুধু ঘাড়ে উঠিয়ে নিয়ে আসলাম সেটা। কালকে আমার এই ক্যাম্পের সবাইকেও ব্যারেটে ফিরে যেতে হবে। আচ্ছা অনেকদিনই তো হলো আমার যাওয়া হয় না বাড়িতে। এবার রাগটা একটু কমিয়ে যায় বাড়িতে। বাসার সবার উপরে আমার রাগ হয়েছিলো কারন আমি একটা মিশনে ছিলাম ১ বছর আগে। খুব ভয়ানক একটা মিশনে পরেছিলাম। পুরো ১৭ টা বাচ্চাকে হোস্টেজ বানিয়ে সন্ত্রাসীরা বসুন্ধরা কমপ্লেক্সকে নিজেদের আয়ত্বে নিয়ে নিয়েছিলো। সেখানে পুরো ১ মাসের জন্য তাদেরকে হোস্টেজ বানিয়ে ভিতরে রেখেছিলো। উপর থেকে আমাদের ভিতরে যাওয়ার অর্ডার ও দিচ্ছিলো না। আর ভিতরে ১৭ টা বাচ্চা ছিলো তাই আমি জায়গা ছাড়তে পারি নাই আর অপেক্ষা করেছিলাম কখন আমাদের ভিতরে যাওয়ার আদেশ দিবে কমান্ডার। কিন্তু অপেক্ষা করতে করতে যখন ১ মাস সময় হয়ে গেলো তখন বুঝলাম এটা তো তাদের প্লান ছিলো মাত্র। কারন হোল্ডার গ্রুপ তো অন্য বেশ কয়েকটা জায়গায় বোম ব্লাস্ট করে। পরে বাধ্য হয়ে সরকার আমাদের আদেশ দেই ভিতরে অপারেশন চালাতে। এই মিশনের সময়ই আমার বড় ভাইয়ের বিয়ে হয়ে যায়। আমার সেনাবাহিনী ঢোকার বড় কারন ছিলো আরেকটা। কিন্তু আমাকে না জানিয়ে যে আমার ভাইয়ের বিয়ে দিয়ে দিবে এটা আমি মানতে পারি নাই। আগেই বলেছি আমার রাগ অনেকটা বেশী। তাই এই এক বছরের মাঝে কোনো যোগাযোগ করার চেষ্টা আমি করি নাই। অনেকবার তারা আমার সাথে দেখা করার চেষ্টা করেছে কিন্তু আমিই এড়িয়ে গেছি। কিন্তু জেনারেল তো ভাইয়ার শ্বশুর আবার বাবার বন্ধু। তাই হয়তো আমাকে নিয়ে যাওয়ার প্লান এটা তাদের। সে যাইহোক সেবার হোল্ডার গ্রুপ অনেক বড় সন্ত্রাসী চালিয়ে ছিলো। আর তাতে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছিলো। কিন্তু এবার নাকি সেই লিডারের মেয়ে ও চলে আসছে। আচ্ছা দেখা যাবে সে মেয়েটাকে। অনেক দিন ধরেই আমি এই মিশনের সুযোগে ছিলাম। এই সুযোগে আবার রাগটাও কিছুটা কমেছে তাই জেনারেল এর কথা মতো আমি বাসায় যাচ্ছি। গাড়িতে বসে ছিলাম আমি আর চিফ জেনারেল স্যার। বসে বসে ভাবতে লাগলাম এতো কম বয়সে হয়তো আমার মতো কেউ এমন হয় না। নিজের কাছে যেসব সুপার পাওয়ার আছে সেগুলো নিয়ে কখনো পর্যবেক্ষন করি নাই। করলে হয়তো আমি এখন সুপার হিরো হয়ে যেতাম। কিন্তু কোনো আদেশ ছাড়া আমার পাওয়ার ব্যবহার করলে আমার শাস্তি হবে এটা আগে থেকেই জেনারেল আমাকে বলে দিয়েছে। তাই কখনো সেই ভাবে ব্যবহার করার সুযোগ পাই নি আমি।
।।।
।।।
দেখতে দেখতে আমরা চলে আসছি ফরিদপুরে। গাড়িতে করে আমরা পাশেই মাঠে রাখা একটা হেলিকপ্টারে করে ফরিদপুরের দিকে চলে আসলাম। হেলিকপ্টার লেন্ড করলো ফরিদপুর স্টেডিয়ামে। সেখান থেকে আমরা আবার একটা গাড়িতে করে চলে আসলাম আমার বাড়িতে। বাড়ির সামনেই দাড়িয়ে ছিলাম আমি। আমি আমার ব্যাগ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। সাথে আমার জেনারেল ও আসছে।
.
--কি হলো থামলে যে চলো।(জেনারেল)
.
--যাচ্ছি স্যার।(আমি)
.
--এখন আমি তোমার আঙ্কেল। সো আঙ্কেলই বলবা আমাকে।(জেনারেল)
।।।।
।।।।
আমি বাসার কলিংবেল চাপ দিলাম। চাপ দিতেই দরজা খুলে দিলো একটা মেয়ে। প্রথমে খেয়াল করি নাই। কারন মেয়েটা চিফ জেনারেল রহমান খানকে দেখেই জড়িয়ে ধরলো বাবা বলে। পরে যখন তাকালো আমার দিকে তখন খেয়াল করলাম। ও তো অথয়। ও এখানে কি করছে। আমার মাথা কাজ করছে না। কিন্তু আঙ্কেলের কথা শুনে আমার মাথা আরো নষ্ট হয়ে গেলো।
.
--হৃদয় দেখো এটা হচ্ছে আমার বড় মেয়ে অথয়। তোমার বড় ভাবী।(আঙ্কেল)
.
--কি?(আমি অবাক হয়ে)
.
--হ্যা।(জেনারেল)
।।।।
।।।।
দুজনেই দুজনের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি। এই ধোকাবাজটা কিভাবে আমার বড় ভাইয়ের বউ হতে পারে সেটা আমার মাথায় আসছে না। ও যে কতবড় ধোকাবাজ সেটা আমি ছাড়া আর কে জানে। থাক এক হিসাবে আমি খুশিই হয়েছি আমাকে না জানিয়ে বিয়ে করেছিস না রাহাত। যখন জানতে পারবি তোর বউ এক সময়ে আমার এক্স ছিলো তখন কি করবি সেটা ভেবে এক দিক দিয়ে আমার মুখে হাসি ফুটলো। কিন্তু আবারো অথয়ের চেহারাটা দেখে সেটা বন্ধ নিশ্বাস হয়ে গেলো। মেয়েটাকে খুব ভালোবেসেছিলাম। কিন্তু সেটার খুব ভালো প্রতিদান সে দিয়েছিলো। আমাকে রেখে সে অন্য ছেলেদের সাথে ঘুরে নাকি বেশী মজা পেতো তাই ব্রেকআপ করে চলে গিয়েছিলো। কারন আমার মতো বলদ,ভিতু টাইপের ছেলেরা নাকি কোনো মেয়েরই যোগ্য না। তাই তো সেনাবাহিনী যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমি। মনটা ভালোই হাসি খুশি ছিলো ওকে দেখার আগে। কিন্তু আবারো ঘোমরা করে ভিতরে ঢুকলাম আমি। বাবা মা ভাই আর বোন আমাকে নিয়ে পাগল হয়ে গেলো। অথয় যেভাবে আমাকে দেখে অবাক হয়েছে মনে হয় এর আগে আমাকে দেখে নি। না দেখারই কথা কারন সেনাবাহিনীতে ঢোকার পর বাসায় আমার সব ছবি ফেলে দেই আমার বাবা। তিনি অনেক রেগে গিয়েছিলেন আমার এই সিদ্ধান্তে। অনেক ভালোবাসতেন তো তাই। তাছাড়া আমাকে দেখার সব রাস্তাই বন্ধ রেখেছিলেন জেনারেল। প্রথমে আমার উপরে পরীক্ষা চালাতে চেয়েছিলেন তাই। কিন্তু পরে আমাকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করাটাই ঠিক মনে করেন। তাই অথয় ও মনে হয় আমার তার দেবর হিসাবে আশা করে নি। সে যাইহোক মেয়েটার অনেক চেন্জ হয়ছে সেটা ওকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে। কারন শুকিয়ে গেছে আগের তুলনায় অনেক। খাওয়া দাওয়া মনে হয় ঠিক মতো করে না তেমন।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।