ওয়েবসাইট কাস্টমাইজেশন এর জন্য। Contact Us Welcome!

ভ্যাম্পায়ার কুইন পর্বঃ ৩৪

Bangla Dub Novels
#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
পর্বঃ৩৪
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
জম্বি গুলো লড়াইয়ের মধ্যে অনেক বাধা তৈরী করছে। সেগুলোকে মেরে ফেললেও আবার জীবিত হচ্ছে। এমনিতেই ঔগুলো মৃত লাশ। যে আঘাতই ওদের করো না কেনো সবই ওরা আবার উঠে দাড়াচ্ছে। পুরিয়ে ফেললেও ছাই থেকে আবার শরীর ঠিক যাচ্ছে৷ এনা তো পাগলের মতো শুধু তলোয়ারটা দিয়ে এক এক করে কাটতেই আছে। এতোক্ষন ওর কোনো ম্যাজিকাল ক্ষমতা ও ব্যবহার করে নি। কিন্তু যেহেতু জম্বিগুলো মরার নাম নিচ্ছে না, তাই ও অনেকটা রেগে গেছে। ওর রাগ মাখা মুখ দেখেই আমার ভয় করছে। বুঝতে পারছি না হঠাৎ ও এতো বদলে গেলো কিভাবে? 
।।।
।।।
এনার তলেয়ারটা দিয়ে কালো আগুন বের হতে লাগলো। আমি এরকম জিনিস কখনো দেখি নি। আমার মাথার জ্ঞানের মধ্যেও আমি এরকম আগুনের কোনো চিহ্ন খুজে পাচ্ছি না। তাই বলতে পারছি না এটা কি রকম ম্যাজিক। হয়তো তলোয়ারের ক্ষমতাই হবে এটা। এনা এবার তলোয়ার দিয়ে একটা কোপ দিলো সামনের দিকে। কালো আগুনে সামনের অনেকটা জায়গা নিয়ে জ্বালিয়ে দিলো। শুধু তাই না মাটি প্রায় ষাট-সত্তর মিটারের ও বেশী উধাও হয়ে গেছে। তলোয়ারের আঘাতে শুধু কালো আগুনই বের হয় না, বরং একদম শক্তিশালী বায়ুর হাওয়া বের হয়, যেটা সামনের যে কোনো জিনিস কে উধাও করে দিতে পারে। এরকম তলোয়ার মনস্টার দুনিয়ার মধ্যে আছে বলে আমার জানা নেই। কারন আমার স্মৃতিতে এটা আসছে না। আর আমার জেনারেল চারজনও এটার সম্পর্কে কিছু বলতে পারছে না। তলোয়ারটা থেকে আমি অনেক বিষাক্ত শক্তি অনুভব করতে পারছি। আমার ডেভিল সাইডের থেকেও অনেক অন্ধকার, কালো কিছু আছে তলোয়ার তাই।
।।।
।।।
এনার লড়াই দেখে আমি অনেকটা অবাক। আমি কি করবো সেটাই বুঝতে পারছিলাম না। এমনিতেও আমাদের কোনো আঘাতে জম্বিদের কিছুই হচ্ছে না। কিন্তু এনার তলোয়ারের কালো আগুনে জম্বি গুলো পুড়ে আর জীবিত হচ্ছে না। এনার মুখে একটা শয়তানি হাসি দেখতে পেলাম। ওকে দেখে মনে হচ্ছে ও এভাবে একের পর এক হত্যা করে অনেক তৃপ্তি পাচ্ছে। ওর ভিতরটা অনেকটা ডার্ক হয়ে গেছে। হঠাৎ আকাশ থেকে আমাদের সবার উপরে সাদা তীর পরতে লাগলো, শত্রুরা ম্যাজিকাল তীর মারছে আমাদের দিকে। এই তীর গুলো হাতে বানানো নয়। এটা ম্যাজিকের মাধ্যমে বানানো। এই তীর সাধারন হাতে বানানোর তীরের থেকে পনেরো গুন শক্তিশালী। তীর দেখেই আমি বুঝতে পেলাম এটা এন্জেলদের। এই তীরের রং একদম সাদা হয়। এটা দিয়ে সাদা উজ্জল আলোও বের হয়। আর এটা শত্রুর শরীরে একটা লাগলে যতক্ষন শরীরে থাকবে ততক্ষন শরীর থেকে শত্রুর স্ট্যমেনা যে তীরটা ছুরবে তার শরীরে চলে যাবে। এটা এন্জেলরা ছাড়া কেউই ব্যবহার করতে পারে না। এন্জেলদের জন্য যুদ্ধে এই একটা সুবিধা থাকে। মূলত ডেভিলদের সাথে লড়তেই এন্জেলরা এই স্পেল তৈরী করেছিলো অনেক হাজার বছর পূর্বে। আমি চিন্তা করি নি এই স্পেল এখানে দেখবো। মূলত এন্জেলরা এখানে আসবে এটাই আমি কল্পনা করি নি। কিন্তু আকাশের দিকে তাকানোর পর আমি অবাক না হয়ে পারলাম না। প্রায় এক লক্ষের বেশী এন্জেল ডানা ছড়িয়ে হাতে ম্যাজিকাল ধনুক নিয়ে উড়ছে। আর তাদের সামনে একটা মেয়ে এন্জেল রয়েছে। দূর থেকে দেখতে অনেকটা আফরিয়েল এর মতো দেখতে হলেও যখন আমি আমার চোখের ক্ষমতা বারিয়ে দেখলাম, তখন বুঝতে পারলাম হয়তো আফরিয়েল এর বড় দুই বোনের এক জন হবে।
।।।
একটা জিনিস বুঝতে পারছি না। এন্জেলরা এখানে আসবে কেনো? তবে কি এন্জেলরা আমাদের সাহায্য করতে এসেছে? না সেটা কখনো হবে না। ওদের আক্রমন দেখে বোঝায় যাচ্ছে ওরা জম্বিদের উপরে আক্রমন করে নি। বরং আক্রমনটা আমাদের উপরে করেছিলো। ঠিক সময়ে আমি একটা ঢাল বানিয়ে নিয়েছিলাম বরফ দিয়ে। আমার মধ্যে পানির এট্রিবিউট থাকায় আমি বরফ ও বানাতে পারি। বরফ কখনো ট্রাই করে নি। কিন্তু মাথার উপর দিয়ে হাজার হাজার তীর আসতে দেখে তখন মাথায় বরফের চিন্তাই আসলো। এক হাত উচু করায় মাথার উপরে বিশাল একটা বরফের ঢাল হয়ে গিয়েছিলো। ঢালের কারনে আমার চারপাশে অনেকটা জায়গার সাধারন মনস্টারের শরীরে তীর লাগে নি। উপর থেকে আক্রমনের ফলে তীর গুলো অনেকের মাথায় লেগেছে। যার কারনে অনেক মনস্টার এবং ডেভিল মারা গিয়েছে। আমাদের যত সৈন্য ছিলো তার মধ্যে ত্রিশ ভাগই মারা গেছে এই আঘাতে। এন্জেলরা যে লোকির সাথে হাত মিলাবে এটা আমি কল্পনা করি নি কখনো। কিন্তু যা হয়েছে সেটা আমাকে মেনে নিতেই হবে। হ্যাভেন আমাদের উপরে যুদ্ধ ঘোষনা করেছে আমরাও ছেড়ে দিবো না। আমি আমার একটা ডার্ক ম্যাজিক ব্যবহার করলাম। মূলত এটা একটা ট্যালিপ্যাথি স্পেল। এটার মাধ্যমে আমি আমার সকল ডেভিল সেনাকে আদেশ করতে পারবো। আমার কথা তারা সকলেই শুনবে।
.
--সকল ডেভিল সেনা। আমি ডেভিল কিং জ্যাকসন ব্রিট। হ্যাভেন যে যুদ্ধে লোকির সাথে হাত মিলাবে এটা আমার কল্পনা ছিলো না। তাই আমি সবাইকে আদেশ করছি। এক একটা এন্জেলকে প্রথমে আহত করবে। তারপর তাদের ডানা গুলো টেনে ছিড়ে ফেলবে। তারপর তাদের শরীর তোমাদের অস্ত্র দিয়ে আস্তে আস্তে কাটবে। একটা এন্জেল কে ও মারবে না বরং তাদেরকে মৃত্যুর জন্য আগ্রহী করবে। এতো কষ্ট দিবা যাতে করে তারা মরতে চাই। দুই হাত, দুই পা ভেঙে এই যুদ্ধের ময়দানে ফেলে দিবে। আমাদের সকল মৃত সেনাদের প্রতিশোধ নিবে।(আমি)
।।।
।।।
এন্জেলদের হঠাৎ এই আক্রমনে আমার মাথায় রাগ চলে আসলো। আর যেহেতু বেশী রেগে গেছি তাই আমার মনে শুধু ডেভিল চিন্তা আসতেছে এখন। কারো নিজের সেনার এরকম অবস্থা দেখলে সে এমনিতেই রেগে যাবে। 
৷।।।
।।।।
একটা ডেভিলের সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। দুদিন আগে আমি তাদের চিন্তামই না। কিন্তু এখন তাদের মৃত শরীর দেখে আমার রাগ হচ্ছে। প্রতিশোধ নিতে মন চাচ্ছে। হয়তো রাজা হলে এরকমই হয় সবার। কিন্তু এরকম কেনো আমি? ছোট থেকেই সব কিছুতেই আমার মায়া বেশী। মানুষের দুনিয়ায় যতদিন থেকেছি প্রায় সবাই আমাকে ঘৃণা করেছে, ছোট চোখে দেখেছে, কিন্তু তারপরও তাদের জন্য সবসময় আমার মায়া হতো। আর এখনো যাদের আমি কখনো দেখি নি, তাদের মৃত শরীর দেখে আমার মায়া হচ্ছে, রাগ হচ্ছে। আমি কিছু করতে যাবো তার আগেই এনা ওর ডানা দুটো বের করে উড়াল দিলো। ওর ডানা একবার মনে হয় দেখেছিলাম। ভ্যাম্পায়ারদের ডানা সাধারন হলেও ওর ডানা অন্যরকম। অন্য ভ্যাম্পয়ারদের মতো দেখতে হলেও ডানা দিয়ে কালো ধোয়া বের হচ্ছে। মনে হচ্ছে কালো আগুন ধরে আছে ওর ডানায়। ওর চোখ দুটো রাগের কারনে লাল হয়ে গেছে। আর চুল গুলো উড়ছে আকাশে। এই রূপ যে দেখবে সে ভয়েই মারা যাবে হয়তো। এক সেকেন্ডের মধ্যে উড়াল দিয়ে ও এন্জেলদের সেনার একদম সামনে চলে গেলো। পুরো এক লক্ষের বেশী সেনা আর ও সামনে দাড়িয়ে আছে একা। আমি প্রথমে ভাবলাম হয়তো পাগল হয়ে গেছে ও। নিচেও ডানা বের করলাম ওর কাছে যাওয়ার জন্য। কিন্তু ওর আক্রমন দেখে আমি নিজেই অবাক হলাম। ওর ডান হাত দিয়ে তলোয়ারটা উচু করলো। তলোয়ারের উপরে বিশাল একটা কালো বল তৈরী হলো। বল টা এতো বিশাল যেটা দেখতে দশতলা বিল্ডিং এর মতো। হ্যাভেনের এন্জেলরা তীর ছুরতে লাগলো। সব গুলো তীর আস্তে আস্তে বলটার মধ্যে যেতে লাগলো আর বলটা আরো বড় হচ্ছে। দেখতে দেখতে বলটা আরো বিশাল হয়ে যাচ্ছে। এটা যদি এনা এন্জেলদের উপরে ছুড়ে, তাহলে শুধু এক লক্ষ এন্জেল নয় বরং এখানে আমাদের সকল সেনা নিজের জীবন হারাবে। এনার কাছে এতো শক্তিশালী স্পেল আসলো কিভাবে আমি বুঝছে পারলাম না। সকল দুনিয়ার মধ্যে মানুষের দুনিয়ার পৃথিবী সবচেয়ে ছোট। পৃথিবীতে এই স্পেলটা যদি পুরো ক্ষমতা ব্যবহার করে ছোড়া যায় তাহলে পৃথিবীর পাঁচ ভাগের এক ভাগ হয়তো ধ্বংস হয়ে যাবে। এমন কোনো স্পেলই এগারো দুনিয়ার মধ্যে কোথাও নেই। এনা কিভাবে এটা জানলো সেটা আমি বুঝতে পারছি না। আমি স্পেলটার পাওয়ার লেভেল দেখেই বুঝতে পারলাম কতটা ক্ষতিকর এটা। আর এনা এটা প্রথম বার ব্যবহার করছে, তাই তেমন শক্তিশালী হচ্ছে না। কিন্তু তারপরও এই যুদ্ধের ময়দানের সবাইকে মেরে ফেলতে পারবে যদি এই বিশাল বলটা এনা এখানে ছুড়ে। এনার সাথে আমি ম্যাজিকের মাধ্যমে কথা বলতে চাইলাম কিন্তু কোনো লাভ হলো না। এনা কোনো কথায় বলছে না। মনে হচ্ছে রাগের ফলে ও ভুলেই গেছে ও কি করছে। পরিস্থিতি ভালো মনে হচ্ছে না। সকল এন্জেল পরিস্থিতি খারাপ দেখে টেলিপোর্ট হয়ে চলে যেতে লাগলো। আর আমি সাথে সাথে আল্ট্রা স্পিডে এনার কাছে চলে গেলাম। এনা ওর বিশাল বলটা মারতে যাবে সামনের দিকে, আর আমি তার আগেই ওর কাছে গিয়ে ওর বানানো বলটার মধ্যে হাত দিয়ে সেটাকে টেলিপোর্ট করে পাঠিয়ে দিলাম লিম্বো ডাইমেনশনে। লিম্বো ডাইমেনশন এমন একটা জায়গা যার মধ্যে সময়ের কোনো মূল্য নেই। সেখানে যে সময়ে একজন ঢুকবে, একবছর পর বের হলেও যে সময়ে সে ঢুকেছে একদম সেই সময়েই বের হবে সেখান থেকে। আমি বিশাল বলটাকে টেলিপোর্ট করলাম লিম্বো ডাইমেনশনে। বলটাই হাত দেওয়ার ফলে আমার ডান হাতটা জ্বলে গেলো। পুরো ডান হাতের কব্জি পর্যন্ত আমার একদম জ্বলে গেলো। আমার শরীরের যে কোনো ক্ষত ঠিক হতে বেশীক্ষন সময় প্রয়োজন হয় না। কিন্তু এই ক্ষতটা ঠিক হওয়ার নাম নিচ্ছে না। শরীর হিল করতে পারছে না। এটা ঠিক করতে হিলিং ম্যাজিক এর প্রয়োজন। আপাতোতো আমি কোনো হিলিং ম্যাজিক জানি না। লিম্বো ডাইমেনশনে এনার বানানো বিশাল বলটা ব্লাস্ট হয়েছে। আর সেটার আমরা এখানে থেকেই বুঝতে পেরেছি। বিশাল একটা ভৃমিকম্প হয়ে গেলো মাত্র। এনা ওর ঔ স্পেলের মাধ্যমে ওর ম্যাজিক পাওয়ার ফুরিয়ে ফেলেছে। ওর এখন বিশ্রামের প্রয়োজন। ম্যাজিক পাওয়ার বেশী ব্যবহার করলে শারিরীক ক্লান্তি দেখা দেই। আর একদম বেশী ব্যবহার করলে শরীর প্যারালাইসিস হয়ে যায় কিছু ক্ষনের জন্য। আর অত্যন্ত বেশী ব্যবহার করলে একজন মারাও যেতে পারে। এনা ওর এই স্পেলে একদম বেশী ম্যাজিক পাওয়ার ব্যবহার করেছে যার ফলে ওর পুরো শরীর ক্লান্ত হয়ে প্যারালাইসিস হয়ে গেছে৷ আমার শরীরে উপরে ওর শরীরটা পরে গেলো। ওর হাতে থাকা তলোয়ারটা উধাও হয়ে গেলো। আমি তাকিয়ে রইলাম আকাশের দিকে। সমস্ত এন্জেলরা ভয়ে হ্যাভেনে টেলিপোর্ট হয়ে চলে গেছে। হয়তো লোকির সেনারাও আপাতোতো চলে গেছে। আমি এনাকে নিয়ে আস্তে আস্তে নামতে লাগলাম। কিন্তু পিছন থেকে কে যেনো তলোয়ার নিয়ে আমার পিঠে আঘাত করলো। তলোয়ারের আঘাতটা আমার জন্য এতো গুরুতর না হলেও। আমার বাম হাত দিয়ে আমার বুকে এনাকে জরিয়ে রেখেছিলাম। আর তলোয়ারটা আমার পিঠ বরাবর ঢুকে পেট দিয়ে বের হয়ে এনার বুকের মধ্য দিয়ে ঢুকে গেছে। পিছনে ফিরে দেখতে পেলাম লোকি শয়তানি একটা হাসি দিচ্ছে।
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
।।।
।।।।

Post a Comment

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.