#সিজন_৪#
পার্টঃ১২
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
।।।।
।।।।
।।।।
আমার মুখে সেই শক্তুতে ঘুসি মেরেছিলো জামাবেল পান্ডু। মনে হচ্ছে চোয়াল ভেঙে গেছে। আমার ক্ষমতা গুলো থাকলে হয়তো এসব আমাকে দেখতে হতো না। কিংবা এখন আমার হিল হতে সময় লাগতো না। আমি খেয়াল করছি জারা আমাকে হিল করার চেষ্টা করছে। আমি যাতে কিছু না বুঝতে পারি সেটার পুরো খেয়াল রাখছে। হয়তো ওর ব্লাক ম্যাজিক দিয়ে আমাকে ভুলানোর চেষ্টা করবে এগুলো এখন। আর আমার মুখের সব ক্ষত ঠিক করে দিবে। হ্যা ঠিক তাই হলো। আমাকেও এখন এগুলো ভুলে থাকতে হবে। জারার স্পেল এবার আমার উপরে কোনো কাজই করলো না। বরং আমি চুপ চাপ হয়ে ছিলাম। জারা এবার মনে করছে আমি পান্ডুর কথা ভুলে গেছি। কিন্তু আসলে না। আমাকে এখন অভিনয় করতে হবে।
.
--আমি বাসায় চলে যাবো আজকে।(জারা)
.
--উহু। যেতে দিবোই না।(আমি জারাকে আমার বুকে আবার টেনে বল্লাম)
.
--কিন্তু সবাই তো বলতেছে আমাদের পরীক্ষার আগে আমরা নিজেদের বাসাতেই থাকবো।(জারা)
.
--শুধু তুমি চলে আসবা এখানে। আমি এই রুমেই থাকবো। তুমি আর হৃদি আমাদের রুমে থাকবা। তাছাড়া আমরা তিনজনই কিন্তু এক সাথে পড়ালেখা করতে পারবো তাতে আমাদের পরীক্ষাও ভালো হবে। আর এমনিতেও আমি সব সময় তোমাকে আমার কাছেই দেখতে চাই।(আমি জারার কপালে চুমু দিয়ে বল্লাম)
।।।।
।।।।
এবার ভুল করলাম না। চুমুটা কপালে দিলাম। তখনকার মতো ভুল করে আবার আরেকটা পান্ডুর হাতে ঘুসি খেতে চাই না। এখনো ওর পান্ডু বসে আছে ফ্লোরে। জারা পান্ডুটা নিয়ে চলে গেলো। যাওয়ার সময় একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে গেলো। যে হাসিতে আমার বুক চুরমার হয়েগেলো। ইস সাধারন লাইফের রোমান্স গুলো কত মজার। কিন্তু এর থেকে বেশী রোমান্টিক জায়গায় গিয়ে আমার রোমান্স করার রেকর্ড আছে। আমি হিমালয়ের সবচেয়ে উপরে গিয়ে হৃদিতার সাথে রোমান্স করেছি। নিলার সাথে পুরো আকাশ উড়ে রোমান্স করেছি। কিন্তু নিজের বাসায় সাধারন জীবনে এমন অভিজ্ঞতা হয় নি। ভাবতেছি যদি আমি সাধারন হতাম তাহলে হয়তো এমনি হতো আমার সাথে। একটা বিয়ে হতো আমার। একটাই ভালোবাসা হতো। কিন্তু আমি তো রাজা ছিলাম। আমার রাজ্যও অনেক গুলো। সব গুলো রাজ্যের জন্য তো এক একটা রাজা দরকার। সেটার জন্য বিয়ে করারও দরকার পরে বেশী। বড় বড় রাজ্যের রাজারাও এটাই করেছে। আমিও তাদের পথ অবলম্বন করেছি।
।।।
।।।
হৃদি আর জারা রেডি হলো কলেজে যাবে বলে। সেই সাথে আমিও রেডি হলাম। এরপর নাস্তা করে তিনজনেই একটা রিক্সায় করে কলেজের দিকে যাচ্ছিলাম। আমাকে বসতে হলো রিক্সার উপরে। একটু ঝাকি লাগলেই পাছার বারোটা বেজে যায়। আমি নিন্জা টেকনিকে বসে আছি। একটু পরই কলেজে চলে আসলাম। কলেজে আসার পর আমার মাথায় নতুন একটা প্লান হলো। এর আগে আমি খেয়াল করেছি কলেজের গুন্ডা টাইপের ছেলে শুভ জারার পিছনে পরে আছে। আমার সাথে জারা থাকলে আমি খেয়াল করেছি সে রাগি চোখে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। মনে হয় আমাকে ধরে পিটাবে। আজকে একটা কিছু করতেই হবে। আমার সামনে জারার ক্ষমতাগুলো প্রকাশ করাতে হবে। তাতেই আমার কাজ হয়ে যাবে। আজকে কলেজের পরিস্থিতি দেখে আবহাওয়া আমার পক্ষেই মনে হলো। কারন আজকে শুভ এর সব ফ্রেন্ড দাড়িয়ে আছে ক্লাস রুমের বাইরে। আমি জারার সাথে হেসে হেসে কথা বলতে বলতে ক্লাস রুমের দিকে যাচ্ছিলো। জারা আর হৃদি দুজনে ক্লাস রুমে ঢুকে গেলো। কিন্তু শুভ আমাকে নিয়ে আসলো অন্য একটা ক্লাস রুমে কিছু কথা বলবে বলে। অন্য ক্লাস রুমে এনেই সজোরে আমার মুখে একটা ঘুসি মেরে আমাকে দেওয়ালের উপর ফেলে দিলো। তারপর আমার কাধ ধরে আমাকে উল্টিয়ে আরেকটা ঘুসি দিলো সোজা আমার নাকে। এবার নাক দিয়ে রক্ত পরতে লাগলো। আর আমিও পরে গেলাম একটা বেঞ্চের উপরে। আমার রক্তে বেঞ্চ পুরো ভিজে গেলো। নাকে এতো ব্যথা এর আগে আমি হিগমার সাথে লড়তে গিয়ে পেয়েছিলাম। তারপর এখন পেলাম। এখন আমার কাছে শুধু রিয়েলিটি প্রিজম এর ক্ষমতা আছে। তাই আমি শুধু সাধারন মানুষই শরীরের দিক দিয়ে।
।
শুভ একটা হকি স্টিক নিয়ে আমার পায়ে আঘাত করলো। আমি ব্যথায় হাটু গেড়ে বসে পরলাম। এবার শুভ বলতে শুরু করলো,
.
--তোকে এর আগের দিনও বলে দিয়েছিলাম জারার থেকে দূরে থাকবি। কিন্তু তুই আমার কথা শুনিস নি।(শুভ)
.
--নিজের বউ এর থেকে দূরে থাকবো কি করে?(আমি)
.
--কি????(শুভ)
.
--হ্যা জারা আর আমার বিয়ে হয়ে গেছে কিছুদিন আগেই।(আমি)
.
--তাহলে আজকে তোকে মেরেই ফেলবো। জারা শুধু আমার। ওকে আর কাউকেই পেতে দিবো না।(শুভ)
।।।।
।।।।
শুভ স্টিকটা তুললো আমার মাথায় মারার জন্য। আমি এটার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। আমি রিয়েলিটি চেন্জ করে দিয়েছিলাম। শুভ যাকে মারছে সে শুভ এর একজন বন্ধু। আমি শুভ এর বন্ধুর জায়গায় ছিলাম। কিন্তু সেই সময়ে জারা এই রুমে চলে আসলো। জারার আসাটা আমি আগে থেকেই বুঝে গিয়েছিলাম। তাই আমার স্পেলটা আমি আর ব্যবহার করলাম না। যা ছিলো সব তেমনি করে দিলাম। শুভ এর সামনে আমি চলে গেলাম। এমন সময় জারা এই রুমে এসেই আমার এই অবস্থা দেখে রেগে গেলো। আমি স্পষ্ট দেখতে পেলাম ওর লাল হয়ে যাওয়া মুখ। কিছুই করলো না ও। শুধু রুমে ঢুকলো। আর ঢোকার পর পরই দরজা এমনি এমনি বন্ধ হয়ে গেলো। এর পর হাত দিয়ে ইশারা করলো জারা। সাথে সাথে শুভ আর ওর বন্ধুরা হাওয়ায় উড়তে লাগলো। ডান হাত দিয়ে কিছু একটা আমার দিকে ছুরলো জারা। সেখানে কালো ছায়ার মতো কিছু ছিলো। সাথে সাথে আমার সব ব্যথা এবং আমার ক্ষত গুলো ঠিক হয়ে গেলো। জারা আস্তে আস্তে সবার হাত পা ভাঙতে লাগলো। একা একাই হাওয়ায় উড়ছে আর ওদের হাত পা ভেঙে যাচ্ছে। জারার চোখ এখন কালো হয়ে গেছে। আমি ওর মাঝে থাকা ভয়ানক জিনিসটা অনুভব করতে পারলাম। আমি জারাকে গিয়ে জোরে একটা ঝাকি দিলাম। সাথে সাথে ও স্বাভাবিক হয়ে গেলো। আর শুভ আর ওদের বন্ধুরা হাত পা ভাঙা অবস্থায় কেউ ফ্লোরে কেউ বেঞ্চের উপরে পরে গেলো। জিনিসটা উপভোগের থাকলেও অনেক ভয়ানক ছিলো। কারন আর একটু হলেই জারা ওদের মেরে দিলো। আমি অবাক হওয়ার অভিনয় করে জারার দিকে তাকালাম।
.
--কি করলে এইটা? কিভাবে করলে?(আমি)
.
--কিছুই করি নাই আমি। সব তোমার ভুল ধারনা।(জারা আমার কাছে আসতে লাগলো। বুঝতে পারলাম ও আমাকে ভোলানোর চেষ্টা করবে)
.
--ওয়েট ওয়েট। আমার বউ এর কাছে সুপার পাওয়ার আছে। আর সে এভাবে আমাকে বাচালো। এটার থেকে আনন্দের আর কি থাকতে পারে। তুমি আর কি কি করতে পারো বলো তো?(আমি)
.
--তোমার ভয় লাগছে না?(জারা অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে)
.
--দূর এটা তো কুল। সেদিন তোমার সাথেই তো ওয়ান্ডার ওম্যান মুভিটা দেখলাম। দেখলা না মেয়েটার কাছে কত ক্ষমতা ছিলো? তুমি তো ওর মতোই এই পৃথিবীর একজন সুপারহিরো হতে পারবে।(আমি)
.
--তোমার ভালো লাগছে তাহলে।(কিছুটা লজ্জা পেয়ে জারা)
.
--হ্যা।(আমি জারাকে জরিয়ে ধরে বল্লাম)
।।।।
।।।।
জারা আর আমি রুমটা থেকে বেরিয়ে আসলাম। জারা এবার কিছুই করলো না। মানে আমার প্লানটা কাজে দিয়েছে। অনেক কষ্ট হয়েছে তারপরও শেষমেষ এই পর্যন্ত আসতে পেরেছি। এখন জারার থেকে আমার কিছু ক্ষমতা নিতে হবে। নাহলে আমি কখনোই কেরেলাকে হারাতে পারবো না। কেরেলা যে কি কি করছে আমার ক্ষমতা গুলো নিজের করে। তারপর আবার আমার তলোয়ার তার কাছেই। আর এসব করতে তাকে সাহায্য করেছে মিয়ারা। আমাকে প্রথমে মিয়ারাকে বোঝাতে হবে। ওর মাঝে আমি ভালোর লক্ষন পাচ্ছি। আসলেই অনেকটা অবুঝ টাইপের মেয়ে ও। ওর অবুঝতার সুযোগ আমার নিতে হবে। ওকে ভালোর দিকে নিয়ে আসতে পারবো মনে হচ্ছে। ব্লাক ম্যাজিক মানে যে খারাপ কোনো কিছু তা নয়। শুধু যার কাছে সেটা থাকে তার মন ঠিক থাকলেই সব ঠিক। আমি মিয়ারাকে এখন মারতে চাই না। চাইলে ওকে মারার প্লান ও আমি করতে পারি। ওকে মারলে ওর সমস্ত ক্ষমতা আমার হবে। আর তখন আমি কেরেলার সাথে টক্কর দিতে পারবো। কেরেলার সাথে শারিরীক কোনো যুদ্ধে আমি পেরে উঠতে পারবো না সেটা আমি জানি। কারন আগুন আর পানি এখন আর আমার কথা শুনে না। কোনো পানির প্রানীর সাথেও আমি কথা বলতে পারি না। সব ক্ষমতা আমার থেকে চলে গেছে। আমি কোনো পানিকে কন্ট্রোল করতে পারি না। আমি পারি না আগুনকে নিজের ইচ্ছা মতো নরাতে। কিন্তু একটা নতুন জিনিস আমি ঠিকই পারতেছি সেটা হলো আমি রিয়েলিটি কন্ট্রোল করতে পারতেছি। সেটার বিশাল একটা নমুনা আমার সামনে খুব তারাতারি আসবে।।।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।
অপেক্ষা করুন পরের পার্টের জন্য। আর আজকের পার্ট ছোট হয়েছে কারন বড় করে লেখার সময় পাই নি।🙄🙄🙄🙄