#সিজন_3#
পার্টঃ০১
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
।।।।
।।।।
।।।।
সব মানুষই একটা সাধারন জীবন চাই। আমি ও তো সাধারন একটা জীবন চেয়েছিলাম। কিন্তু ভাগ্য আমাকে যে এখানে নিয়ে আসবে সেটা কে জানতো। আমি আবারো সেই পাতালপুরীতে চলে আসলাম। কালকে খেয়াল করি নি। কিন্তু আজকে বুঝতে পারলাম গত কালকে কি করেছিলাম এখানে। পুরো পাতালপুরীতে যত পাথরের দেওয়াল ছিলো সব ভেঙে চুরমার করে দিয়েছি। পুরো পাতালপুরী এখন শুধু অন্ধকার একটা জায়গা। গত কালকে যখন যুদ্ধ করেছিলাম এখানে তখন হিগমা ওর জাদু দিয়ে সব জায়গায় অনেক টর্চ গেড়ে দিয়েছিলো। যেটাই পুরো এলাকা আলোকিত হয়েছিলো। ভাবলাম সেটা তো হয়তো আমিও করতে পারবো। যেই ভাবা সেই কাজ।।। হাত বারালাম দুটো। চোখ দুটো বন্ধ করলাম। ভাবতে লাগলাম টর্চের কথা। দেখতে পেলাম হাতেই গোল একটা বল হয়েছে যেটার আলোতে অনেকটা দূর দেখা যাচ্ছে। আমি সেটা দূরে নিক্ষেপ করলাম। একটা জায়গায় সেটা গিয়ে দাড়িয়ে গেলো চুপচাপ। আর সেটার আলোই অনেকটা পথ আলোকিত হয়ে গেলো। পুরো পাতালপুরী আলোকিত করতে চাইলাম। একবারে ১০০ টার মতো এমন টর্চ বানালাম। সেগুলোকে বিভিন্ন দূরত্বে নিক্ষেপ করলাম। সেগুলো সেখানে গিয়ে দাড়িয়ে রইলো আর পুরো পাতালপুরী আলোকিত হয়ে গেলো। আমি পাতালপুরীতে কোনো পানির চিহ্ন দেখতে পাচ্ছি না। আগে এখানে পানিই আর পানি ছিলো। কিন্তু সেই পানির লেভেল কমে গিয়ে শুধু সমতল ভূমি হয়ে গেছে। রাজ্য বানানোর জন্য এটাই পারফেক্ট জায়গা কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো এখানের দুটো গাছেই আমাকে অক্সিজেন দিচ্ছে নাহলে পানির ভিতর থেকে আমাকে অক্সিজেন নিতে হতো। পাতালপুরীতে এই গাছ দুটো আমি বর্তমানে দেখেছি কিনা সেটা জানি না। আমি হিগমার দু টুকরো করা শরীরের দিকে তাকালাম। মাটির উপরে যদি এভাবে পরে থাকতো তাহলে হয়তো এতোক্ষনে পোকা মাকড়ের খাবার হয়ে যেতো। কিন্তু পানির এতো নিচে তার শরীরে এখনো কিছুই হয় নি। ভাবলাম এভাবে লাশ রাখা ঠিক হবে না। মাটি খুরতে হবে।
।
কিন্তু কিছু তো আনলাম না সেটার জন্য। ও আমি তো ভুলেই গেছি। হাত দিয়ে একটা এনার্জি বল বানালাম সেটাকে দূরে মাটিতে মারলাম। সেখানে অনেকটা গর্ত হয়ে গেলো। যাক গর্ত তো হলো। এবার আমি আমার জাদুর ব্যবহার করতে লাগলাম। চোখ দুটো বন্ধ করে হাত দুটো আমি হিগমার লাশের দিকে রাখলাম। তারপরই কন্ট্রোল করার চেষ্টা করলাম হিগমাকে। আস্তে আস্তে হিগমা উড়তে লাগলো। আমি হাত দিয়ে তাকে নিয়ে ফেললাম আমার সদ্য বানানো গর্ততে। তাকে সেখানে ফেলে দেওয়া পর। আমি তার দু পাশে আরো দুটো এনার্জি বল মারলাম। তাতে তার আশে পাশে গর্ত হয়ে গেলো এবং মাটি সরে তার গর্তে এসে পরলো। এসে করে তার গর্ত ভরে গেলো। মানে এক হিসাবে তাকে কবর দেওয়া হয়ে গেলো। আমি একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম। যাক একটা তো ভালো কাজ করেছি।😊
।
আমি পিছনের দিকে তাকালাম। মনে হলো কোনো একটা আওয়াজ শুনেছি। পিছনে তাকিয়ে কিছুই দেখতে পেলাম না। তবে দেখলাম দুটো আপেল গাছের দুটো ডাল মিলে এক হয়ে রয়েছে। আর সেখানে একটা দোলনা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। দোলনাটা দুলছে হাওয়ায় মনে হয়। কিন্তু এখানে হাওয়া আসা তো কোনো ভাবেই সম্ভব না। যদি না গাছের পাতা নরে নাহলে কোনো বাতাস পাওয়া এখানে সম্ভব নয়। কিন্তু বুঝলাম না এখানে দোলনা আসলো কিভাবে। আমি দোলনার কাছে আসলাম একদম। কাছে যাওয়ার পরেই দোলনাটা থেমে গেলো। এতোক্ষন আপন মনে দোল খেতে ছিলো দোলনাটা। আমি অবাক হলাম অনেক ব্যাপারটা দেখে। এখানে কি ভূত আছে নাকি? না না ভূত বলে কোনো জিনিস নাই। তবে কি কোনো পরী এসেছে এখানে? পরীরা তো অদৃশ্য হওয়ার শক্তি রাখে। কিন্তু আমার সামনে তো কোনো পরী অদৃশ্য থাকতে পারে না এখন। আমার কাছে তো তাদেরকে অদৃশ্য হলেও দেখার ক্ষমতা রয়েছে। তাহলে এখানে কে আছে। হয়তো আমার মনে ভুল হবে।
।
আমি আমার ট্রিশুল আর তলোয়ারের দিকে গেলাম। গত কাল যখন হিগমাকে মেরে ফেললাম তখন তো ওর মাঝ থেকে শুধু কালো ছায়া আমার শরীরের মাঝে আর তলোয়ারের মাঝে আসলো। কিন্তু আমি তো এটার ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারছি না। হয়তো আগের গুলো যেভাবে করেছি এটা ও সেভাবেই ব্যবহার করতে হবে। আমি ট্রিশুলটাকে ধরে সেটাকে নিক্ষেপ করলাম সাথে সাথে সেটা গিয়ে একটা আপেল গাছের গায়ে গেথে গেলো। আমি তলোয়ার টা হাতে নিলাম। তলোয়ার আমার হাতে আসার পরেই কাপতে লাগলো। বুঝতে পারলাম না কাপতেছে কেনো সেটা। হয়তো নতুন ক্ষমাতার জোরে এটা কাপতে লাগলো। আমি এটার গায়ে আমার দুটো হাত রাখলাম। বুঝতে পারলাম কিছু একটা আমার মাথায় বলতেছে
.
--আমার ক্ষমতা তো তোমার মাঝে করে নিলে কিন্তু এতেই কিন্তু শেষ হয়নি কিছু। তোমার শেষ দিন একদিন আসবেই। আর সেটার জন্য অপেক্ষা করে থাকো।(কেরেলা)
।।।।
।।।।
আমি দেখতে পেলাম কেরেলা আমার সামনে দাড়িয়ে সেই কথা গুলো বলে একদম আমার মাঝে চলে আসলো। বুঝতে পারলাম না তার কথার কিছুই। আমি চোখ খুললাম। হঠাৎ করেই হালকা বাতাস লাগলো শরীরে। বুঝতে পারতেছি না কি হচ্ছে। জায়গাটা ঠিক ভালো মনে হচ্ছে না আমার। কিন্তু এখান থেকে আমার যেতেও মন চাচ্ছে না। কেনো জানি অনেক টান অনুভব করতেছি আমি।
।
তবে একটা প্রশ্নের উত্তর আমি পেয়ে গেছি। এতো শক্তুশালী ট্রিশুলটা কিভাবে সেই এলিয়েনের আঘাতে ভেঙে যায়। আচ্ছা ভাঙা ট্রিশুলটা তো আমি সাথে করেই এনেছিলাম। আমি আমার পকেটে হাত দিলাম। কিন্তু পেলাম না ভাঙা ট্রিশুলটা। হয়তো বা কোথাও পরে গেছে সেটা। আচ্ছা সেটার প্রয়োজন এখন আমার হবে না। আমি তলোয়ার টা হাতে ধরলাম শক্ত করে। নতুন অধিক শক্তির অনুভব করলাম আমি। এই শক্তিটা আমার কাছে অধিক মনে হচ্ছিলো৷ নিজেকে সবচেয়ে শক্তিশালী মনে করে এখন গর্ব করতে মন চাচ্ছিলো। কিন্তু সেটার সময় না এখন। আমাকে তো এখন বের হতে হবে। আকাশপুরীতে হামলা করতে হবে। তবে সেখানে যদি আমি আমার তলোয়ার দিয়ে আক্রমন করি তাহলে অবশ্যই সব কিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। আমাকে আমার ট্রিশুল নিয়ে যেতে হবে। ট্রিশুলে তো আগের মতো এতো ক্ষমতা নেই। ঠিক তেমনি আছে যেমনটা আমি প্রথমে ব্যবহার করেছি। পুরো রাজ্য ধ্বংস না হলেও অর্ধেকের মতো তো ধ্বংস হবেই। তাতেই তারা ভয় পেয়ে যাবে। আমি আসলাম ট্রিশুলের কাছে। এই দুটো আমার রাখার সমস্যা হয়ে গেছে। ট্রিশুলটাকে তো তাউ ছোট করে রাখতে পারি। কিন্তু তলোয়ারটাকে। আচ্ছা তলোয়ারটাকে আমি কি করতে পারবো?
।
দেখা যাক তলোয়ারটা কি করতে পারি। আমি তলোয়ারটাকে হাতে রাখলাম। অনেক কিছু করার চেষ্টা করলাম। কিন্তু কিছুই হচ্ছিলো না তলোয়ার। ব্যর্থ হয়ে আমি তলোয়ারে হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে ছিলাম। হঠাৎ আমার সামনে এই তলোয়ারের মালিক আসলো।
.
--কি হলো নিরাশ হয়ে বসে আছো যে। তুমি হয়তো জানো না এই তলোয়ারটা কি করতে পারে। এটার ক্ষমতা সম্পর্কে আরো পরে জানতে পারবে। আচ্ছা তলোয়ার না বলি এটাকে। এটার সুন্দর একটা নাম আছে সেটা হলো ট্রিট্রেন। যখনি এর নাম মনে করে এটাকে ফেলে দিবে হাত থেকে এটা অদৃশ্য হয়ে যাবে। আর এটার নাম মনে করে যদি হাত শক্ত করে মুথো করে ধরো তাহলে এটা তোমার হাতে চলে আসবে।(হিরান)
.....
।।।
কথাটা বলে সে নিজে অদৃশ্য হয়ে গেলো। আমি চোখটা খুললাম। এরা সবাই কি আমাকে পথ দেখানোর জন্য রয়েছে। হয়তো সেটার জন্যই। আচ্ছা চেষ্টা করে দেখি। আমি হাত থেকে ফেলে দিলাম এটার নাম ট্রিট্রেন ভেবে। সত্যি সত্যি এটা অদৃশ্য হয়ে গেলো সাথে সাথে। এটার নাম ভেবে হাত মুথো করলাম সাথে সাথে এটা আমার হাতে চলে আসলো। অনেক জাদুকীয় বিষয় এটা। থাক অবশ্য তো এটা রাখার জায়গা আমি পেয়ে গেছি। ট্রিশুলটা তো ছোট করে যেখানে সেখানে নিয়ে যাওয়া যায় আর এটাকে পুরো অদৃশ্য করে রাখা যায়। আমি আপেল গাছের দিকে তাকিয়ে হাত বাড়িয়ে দিলাম।
।
ট্রিশুলটা আমার হাতে চলে আসলো সেখান থেকে উঠে। আমি হাতের তলোয়ারটাকে অদৃশ্য করে ফেললাম। এই ট্রিশুলের প্রয়োজন শুধু এখানে যতদিন আছি ততদিনই লাগবে এখন। তাছাড়া আমার এই ট্রিশুলের প্রয়োজন পরবে না। ঠিক যেভাবেই আমি এসব পেয়েছি আমাকে সেভাবেই আমাকে এসব রেখে যেতে হবে। আমি এখন বাইরে আসার জন্য হাটতে শুরু করলাম। কিন্তু হঠাৎ কারো মিষ্টি হাসির আওয়াজ পেলাম। তাকিয়ে দেখলাম দোলনা আবার দোলতে লাগলো। এবার বুঝতে পারলাম কেউ একজন এখানেই আছে। কিন্তু সেটা পরী না হয়ে অন্য কিছু যার কারনে আমি তাকে দেখতে পারতেছি না।
.
--কে এখানে?(আমি জিজ্ঞেস করলাম)
.
--......(কেউ কিছু বলছে না)
।।।।
।।।।
আমি হাটতে হাটতে চলে আসলাম সেই দোলনার কাছে আবার।
.
--কিছু বলতে চাইলে আমার সামনে এসে বলুন। এভাবে লুকিয়ে থেকে কি প্রমান করতে চান?(আমি)
.
--কেনো লড়াই করবেন আমার সাথেও?(একটা মেয়ে কন্ঠ। কিন্তু অনেক পরিচিত)
.
--আপনি।(আমি)
.
--কেনো অবাক হলেন মনে হয়।(হৃদিতা)
।।।।
।।।।
আমি তাকিয়ে দেখলাম এটা তো হৃদিতা। সেই মিষ্টি হাসি দিয়ে আমার দিকে তাকালো। আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না কি হলো। আদোও কি আমি স্বপ্ন দেখছি নাকি সেটা বলা কষ্ট। কিন্তু কি দেখছি সেটা বলা ও আমার পক্ষে কষ্ট।
.
--তুমি বেচে আছো?(আমি আবেগে তুমি করে বলে ফেললাম)
.
--হঠাৎ করেই তুমি করে বলতেছেন যে?(হৃদিতা)
.
--এমনি?(আমার চোখ দিয়ে পানি ঝরতে লাগলো)
.
--প্রথমে আমিও কিছু বুঝতে পারি নি কিভাবে কি হলো?(হৃদিতা)
.
--আমার সামনেই তো তুমি।(আমি আর বলতে পারলাম না)
.
--হ্যা।(হৃদিতা)
.
--তাহলে কিভাবে বেচে গেলে?(আমি)
.
--আমি তো বাচি নি?(হৃদিতা)
.
--মজা করছো আমার সাথে?(আমি)
.
--উহু।।। কোনো মজা করছি না।(হৃদিতা)
।।।
।।।
আমি হৃদিতাকে ধরতে চাইলাম। কিন্তু ভয় পেয়ে গেলাম এখন। ওর হাত ধরতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ও পুরো ছায়ার মতো হয়ে গেছে। আমি শুধু অবাক হওয়া চেহারা নিয়ে ওর দিকে তাকালাম। পুরো অবাক হয়ে গেলাম। আগে কখনো ভূতে বিশ্বাস হতো না। কিন্তু সামনে যা হলো এতে সেটা ভেঙে গেলো। আসলেই ভূত হয় সেটা আমি হৃদিতাকে দেখে বুঝতে পারলাম।
।
ভাবলাম হয়তো ওর জাদু হবে। কিন্তু ওকে জরিয়ে ধরতে গিয়ে ও আমি পারলাম না। বুঝতেই পারতেছি না কি করবো। এখনো কি আমি এখান থেকে দৌড় দিবো নাকি ওর সাথে কথা বলবো। দৌড় দিলে দেখা গেলো আমার ঘাড় মটকে দিলো আমার ভূত হওয়া বউ। আচ্ছা দেখি কথা বলে দেখি।
.
--অবাক হলেন তাই না?(হৃদিতা)
.
--হুমমম। কি হয়েছে তোমার সাথে?(আমি)
.
--কিছুই হয় নি?(হৃদিতা হেসে বললো)
.
--মজা নিচ্ছো আমার সাথে?(আমি)
।।।।
।।।।
হৃদিতা মনটা খারাপ করে বসে পড়লো দোলনাতে। আমি ওর দিকে তাকালাম। চোখ দিয়ে পানি পরছে ওর। চাইলাম ওর চোখের পানি মুছে দিতে কিন্তু পারলাম না।
.
--ভূত হয়ে গেছো তো কি? আমি সব সময় তোমার সাথেই আছি।(আমি)
.
--ভূত হলেও হয়তো ভালো ছিলো? কিন্তু আমি যে ভূত ও হতে পারলাম না পুরোপুরো।(হৃদিতা)
.
--তাহলে?(আমি)
.
--আমি এখন একজন অশরীরি আত্মা।(হৃদিতা)
.
--কি?(আমি)
।
।
এবার কিছুটা ভয় পেলাম আমি। অবশ্য এটা আমার অনেক আগে কার ভয়। আমি আত্মার কথা শুনে ছোট বেলা থেকেই ভয় পেতাম। কিন্তু এই ভয়টা তার চেয়ে বেশী ছিলো।
.
--আমাকে আপনি ছাড়া আর কেউ দেখতে পারবে না। আমাকে আপনি ছাড়া আর কেউ শুনতে পারবে না।(হৃদিতা)
.
--কিন্তু কতদিন এভাবে?(আমি)
.
--যতদিন না আপনার মৃত্যু হবে।(হৃদিতা)
.
--তাহলে কি তুমি আমার মৃত্যু কামনা করতেছো?(আমি)
.
--সেটা কখনোই না। আমি আপনার জন্য আমার এই পুরো অশরীরি জীবন অপেক্ষা করতে পারবো।(হৃদিতা)
.
--তাহলে কষ্ট পাচ্ছো কেনো?(আমি)
.
--এটা তো একটা অভিশাপ। এর থেকে সোজা মৃত্যু ও ভালো ছিলো। এখন যে আপনাকে আমি স্পর্শও করতে পারবো না। আপনি ও পারবেন না। এমন নতুন জীবনের থেকে তো না পাওয়ায় ভালো ছিলো।(হৃদিতা)
.
--কোনো চিন্তা কইরো না। আমাদের এমন সম্পর্ক আরো মধুর হবে।(আমি)
.
--হুমমম।।। তবে জানেন আমার একটা কথা ভাবলে সবচেয়ে কষ্ট লাগতেছে।(হৃদিতা)
.
--কি?(আমি)
.
--আপনি তো কিছুদিন পরই এখান থেকে চলে যাবেন আপনার সময়ে। মানে আরো ২ হাজার বছর পরে আপনি চলে যাবেন। আমি কিভাবে সেই ২ হাজার বছর একা আপনাকে না দেখে থাকবো সেটাই বুঝতে পারতেছি না।(হৃদিতা)
.
--সময় গুলো এমনিতেই কেটে যাবে।(আমি)
.
--আশা করি কেটে যাবে সময় গুলো।।(হৃদিতা)
।।।।।
।।।।।
আমি চাইলাম হৃদিতাকে একটু জড়িয়ে ধরতে কিন্তু পারলাম না। কিন্তু কালকে রাতে। কালকে রাতে তো হৃদিতাই তাহলে আমার কাছে এসেছিলো আমি আমার মাথায় কারো হাতের ছোয়া পেয়েছিলাম রাতে। অনেক রাতে হবে সেটা। এখানে কিছু একটা রহস্য তো আছেই। আচ্ছা সেটা পরে দেখা যাবে।
.
--এখন কোথায় যাবেন?(হৃদিতা)
.
--আকাশপুরী।(আমি)
.
--আমিও সেখানে যাবো।(হৃদিতা)
.
--সেখানে অনেক ভয়াবহতা হবে এখন। তোমার যাওয়ার দরকার নাই।(আমি)
.
--ভুলে গেলেন আমি এখন একজন অশরীরি।(হৃদিতা)
.
--তোমাকে দেখলে মনেই থাকবে না কখনো।(আমি)
।।।।
।।।।
এই দিন ও আমাকে দেখতে হবে সেটা কে ভেবে রেখেছে। আমার বউটা অশরীরি হয়ে আমার কাছে আসবে। আর বলবে তোমার মৃত্যু পর্যন্ত আমি এভাবেই থাকবো। বিষয়টা কতটা মৃত্যুদায়ক হতে পারে সেটা কি কেউ কখনো ভাবছেন। ওকে এখনি মুক্তি দিতে হলে আমাকে মরতে হবে এমন কোনো কথা আছে। ভালোবাসি ওকে ঠিক আছে। কিন্তু আমাকে তো প্রথমে আমার রাজ্যের সুরক্ষা করতে হবে। আমাকে পৃথিবীতে আবার আগের মতো শত্রুমুক্ত করতে হবে। যখন সব ঝামেলা মুক্ত হয়ে যাবে পৃথিবী সেদিনই আমি আমার নিশ্বাস ত্যাগ করবো। কারন যত পৃথিবীতে থাকবো ততই আমার জীবিকা আরো কঠিন হবে। আমাকে এসব থেকে মুক্ত হতে হলে হৃদিতাকে নিয়ে ওপাড়ে পাড়ি দিতে হবে। দেখা যাক কি হয়। আমি আর আমার অশরীরি বউ দুজনে বের হয়ে আসলাম পাতালপুরী থেকে। অনেক সুন্দর একটা জায়গা দুজনের প্রেম করার জন্য। তাই শুনেছিলাম প্রায় সময় হারকিউমাস এখানেই থাকতো। মানে আমি এখানেই থাকবো। দুজনেই পানি থেকে বের হলাম। আমাকে তো আর কারো সাহায্যে এখন উড়তে হয় না। আমি নিজেই এখন উড়তে পারি। কিছুক্ষন দুজনে বরফ পানি খেললাম। এটা অনেক পুরোনো খেলা। মানের আমাদের সময়ের পুরানো খেলা। কিন্তু হৃদিতাদের এখানে আমিই জন্ম দিয়ে এটার জনক হয়ে গেলাম। তারপর দুজনে আকাশপুরীর দিকে রওনা দিলাম। মোহনার সাথে কয়েকবার এসেছি আমি আকাশপুরীতে। একটা মেঘের উপরে বিশাল রাজ্য। আমরা সেটার দিকেই যাচ্ছিলাম।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।