পার্টঃ০৮
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী(পিচ্চি)
।।।।
।।।।
।।।।
.
--একি ভিজে গেছো কেনো?(জারা)
.
--তোমার ফুল আমাকে ভিজিয়ে দিলো।(আমি)
.
--ফুল আনতে কি ভিজতে হয় বুঝি?(জারা)
.
--ফুল যদি পুকুরের মাঝে থাকে তাহলে ভিজতেই হয়।(আমি)
.
--আমাকে এটা আগে বলবে তো।(জারা)
.
--তুমি যে কান্না শুরু করেছিলে।(আমি)
.
--করবো না আর।(জারা)
.
--হুমমম।(আমি)
।।।।
।।।।
ভিজে ছিলাম তাই একটু ঠান্ডা লাগতেছিলো। আমি শার্টটা খুলে সেটা থেকে পানি চিপরিয়ে বের করতে লাগলাম। আর জারা আমার দিকে হা করে তাকিয়ে ছিলো। আমি ওর দিকে তাকাতেই লজ্জায় চোখ লুকিয়ে ফেললো।
.
--কি হলো কি দেখো?(আমি)
.
--কোথায় কিছু না তো।(জারা অন্যদিকে তাকিয়ে)
.
--আমি দেখছিলাম তুমি তাকিয়ে ছিলে আমার দিকে।(আমি)
.
--ওওও। আসলে তোমাকে এভাবে দেখতেই ভালো লাগছে।(জারা)
.
--থাক পাম দেওয়ার দরকার নাই।(আমি)
.
--পাম দিবো আমি কি পাম্পার?(জারা)
.
--তো কি তুমি?(আমি)
.
--তবে রে।।।(জারা আমাকে মারতে লাগলো)
।।।
।।।
আমিও শার্ট টা আমাতোতো রোদে দিয়ে দিলাম। অবশ্য প্রথম প্রথম এভাবে সেন্টু গেঞ্জি পরে একটু লজ্জা লাগছিলো। কিন্তু পরে স্বাভাবিক হয়ে গেলাম। প্যান্টটা তো আর খুলে বসে থাকতে পারবো না। নাহলে বসে থাকতাম। জুতো জোড়া ভিজাই পরে রইলাম।
.
--কি হলো চুপ যে।(আমি)
.
--কি বলবো?(জারা)
.
--এতো রোমান্টিক একটা জায়গা এতো সুন্দর আবহাওয়া আর তুমি বলছো কি বলবো?(আমি)
.
--হ্যা তবে তোমার অবস্থায় ই তো ভালো না।(জারা)
.
--হ্যা সেটা অবশ্য ঠিক। তবে এভাবে বার বার তাকাচ্ছো কেনো?(আমি)
.
--জানি না।(জারা মুচকি হেসে)
.
--কেনো আমাকে কি খারাপ লাগছে?(আমি)
.
--সেটা না। আসলে তোমাকে এই অবস্থায় দেখে....(জারা)
.
--কি হলো বলো?(আমি)
.
--আমার একটু বেশীই রোমান্টিক হতে মন করছে।(জারা)
.
--তবে আমি কি মানা করেছি। হও তুমি রোমান্টিক।(আমি)
.
--রাগ করবে না তো তুমি?(জারা)
.
--না।(আমি)
।।।।
।।।।
দেখলাম জারার চোখে দুষ্ট হাসি। কিছু একটা বলতে চাচ্ছে ওর চোখ দুটো আমাকে। আমি বাইকে বসা ছিলাম পাদুটো এক পাশে দিয়ে। ও আমার পাশেই দাড়িয়ে ছিলো। আমার সামনে মানে খুবই কাছে চলে আসলো। গাড়িতে বসেছি বলে আজকে আর আমার ঠোট পেতে ওর সমস্যা হলো না। সেদিনের চুমুটা দিতে ওকে উচু হতে হয়েছিলো কিন্তু আজকে বিনা বাধায় ওর ঠোট আর আমার ঠোট এক করে দিলো। আমি তো এটার আশা করি নি। সেদিনের টা নাহয় ঝালের জন্য দিয়েছিলো। এরপরেও যে এতো তারাতারি ওর ঠোটের ছোয়া পাবো এটা কখনো ভাবি নি। আমাকে জরিয়ে ধরলো শক্ত করে। এমন সময় একটা বাইকের লোক বললো,"ভাই এটা এখানে সেখানে এসব না করে নির্জন জায়গায় চলে যান।" জারা লজ্জা পেলো কথাটায়।।।
.
--সরি।(জারা)
.
--এখন লজ্জা পাচ্ছো কেনো?(আমি)
.
--লোকটা দেখে ফেলবে সেটা তো জানতাম না।(জারা)
.
--হুমমম।(আমি)
.
--তাহলে চলো নির্জন কোনো জায়গায় চলে যায়।(জারা)
.
--কেনো?(আমি)
.
--ঔ লোক বললো এসব নির্জন জায়গায় করতে।(জারা)
.
--ঔ পাগল হয়ছো। মাইর দিলে ঠিক হবা। বিয়ের আগে আর কিছুই হবে না।(আমি)
.
--সত্যি তুমি চাও না কিছু?(জারা)
.
--চাই তবে এখন না বিয়ের পর।(আমি)
.
--তোমাকে পরীক্ষা করে দেখলাম।(জারা)
.
--তবে কি আমি পাশ করেছি।(আমি)
.
--হুমমম।(জারা)
.
--আচ্ছা যদি ফেইল করতাম তাহলে?(আমি)
.
--তাহলে আর কি ব্রেকআপ করে দিতাম।(জারা)
.
--ব্রেক আপ করতে।(আমি)
.
--হ্যা।(জারা)
।।।।
।।।।
দেখতে দেখতে আমাদের ভালোবাসার দিন গুলো কেটে গেলো। নিজেকে ধন্য মনে হচ্ছিলো জারার মতো একটা প্রেমিকা পেয়ে। কিন্তু যে জেদি মেয়ে একবার কোনো কথা বললেই সেটা না করিয়ে ছাড়ে না। তবে ওর এই পাগলামীগুলো ভালোই লাগে। খারাপ না। দেখতে দেখতে আমাদের সম্পর্কের দুই বছর এভাবেই কেটে গেলো। জারা এখন এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। আর আমি এখন অনার্স তৃতীয় বর্ষে আছি। এর মাঝে বাসায় থেকে আম্মু আবারো বিয়ের জন্য বলতেছে। বুঝলাম না এর মাঝে তো ভালোই ছিলো আম্মু। আবার এই ভূত চাপলো কেনো ঘাড়ে।
.
--এবারের মেয়েটা আর আগের মতো না রে বাবা। দেখ তুই পছন্দ কর তারপর কথা বলার পরই বিয়ে হবে।(আম্মু)
.
--দেখো আগের বার ও তোমার কথায় বিয়ে করেছি কি হলো শুধু শুধু দুর্নাম হলো। তাই আমি আমার নিজের পছন্দের মেয়েকেই বিয়ে করবো।(আমি)
.
--দেখ বাবা মেয়েটা অনেক ভালো। এবার আর তেমন কিছু হবে না।(আম্মু)
.
--আমি বলছি না আম্মু।(আমি)
।।।
।।।
বাসা থেকে বের হয়ে আসলাম। দুর রাগ লাগে আবারো এই বিয়ের কথা তুলতেছে। কয়বার করবো এমন বিয়ে। যে বিয়ের মজাই নিতে পারি না।বাইরে আসার পর জারা আমাকে ফোন দিলো?
.
--কোথায় তুমি?(জারা)
.
--কেনো কি হয়েছে?(আমি)
.
--দেখা করো তারাতারি?(জারা)
.
--কোথায় আছো তুমি?(আমি)
.
--আমি তো স্কুলের সামনে আসছি তোমার জন্য দাড়িয়ে আছি।(জারা)
.
--ওকে তুমি একটু অপেক্ষা করো আমি আসছি।(আমি)
।।।
।।।
স্কুলের সামনে গিয়ে অনেকটা থতমত হয়ে গেলাম। দেখি জারা হাতে একটা লাগেজ আর কাধে ওর স্কুল ব্যাগ।
.
--কি হলো কোনো জায়গায় বেরাতে যাবে নাকি?(আমি)
.
--উহু।(জারা)
.
--তাহলে ব্যাগ নিয়ে এসেছো। নাকি কিনলে নতুন।(আমি)
.
--এই নাও ধরো।(জারা আমার হাতে ওর লাগেজ ব্যাগটা দিয়ে)
.
--এতো ভারি কেনো?(আমি)
.
--পালাতে হলে তো প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়েই পালাতে হয় তাই না?(জারা)
.
--কি তুমি পালাচ্ছো?(আমি)
.
--হ্যা একা না তুমি ও যাচ্ছো।(জারা)
.
--কেনো পালাতে যাবো কেনো?(আমি)
.
--বাসায় থেকে মনে হয় আমাদের রিলেশনের ব্যাপারটা জেনে গেছে। তাই আমার বিয়ের কথা চলছে বাসায়।(জারা)
.
--কি এতো তারাতারি বিয়ে?(আমি)
.
--হ্যা এনগেজমেন্টটা করে নিবে এখন। পরে বিয়ে। কালকে দেখতে আসার কথা। তাই আজকেই আমরা পালাবো।(জারা)
.
--এতো তারাতারি বিয়ে করার তো কোনো প্লান ছিলো না। আর তোমার পরিবার কি মেনে নিবে?(আমি)
.
--বিয়ের পর নাতি নাতনী হলে একাই মেনে নিবে আমাদের চলো তো এখন। বাসার কেউ দেখে ফেললে সমস্যা হবে আমাদের।(জারা)
.
--কিন্তু।(আমি)
.
--কোনো কিন্তু নাই চলো তো। আমি সব ব্যবস্থা করেছি। আমি আমাদের জন্য এসি বাসের দুটো টিকেট কেটেছি।(জারা)
.
--কোথায় যাবো আমরা?(আমি)
.
--কক্সবাজার।(জারা)
.
--এতো দূর কেনো?(আমি)
.
--একবারে বিয়ে করে আমাদের হানিমুন হয়ে যাবে তাই।(জারা)
.
--কোনো প্রস্তুতিই তো আমার নেই? এভাবেই কি পালানো যায়। আগে তো বলবে একবার।(আমি)
.
--এখন এতো সময় নেই তারাতারি তোমার ভাবনা বাদ দাও তো।(জারা)
.
--হুমমম দিলাম।(আমি)
.
--তাহলে চলো।(জারা)
.
--বাইক কি করবো?(আমি)
.
--তোমার কোনো ফ্রেন্ড কে ফোন করে নিয়ে যেতে বলো?(জারা)
.
--হুমমম দারাও আবিদকে ফোন দিতেছি।(আমি)
.
--হুমমম দাও।
।।।
।।।
আমি আবিদকে ফোন দিলাম আমার বাইক নিয়ে যেতে। ও অবশ্য জানে আমার আর ওর বোনের ডিভোর্স হয়েছে কেনো হয়েছে সেটাও জানে। এই ব্যাপারে আমাকে কিছুই বলে নি ও আর। আর আমার রিলেশনের ব্যাপারে ও জানে। তাই আসলো।
.
--কিরে পালিয়ে যাবি মনে হয়।(আবিদ)
.
--ও তো এটাই বলতেছে।(আমি)
.
--সেটার কি দরকার আন্টিরে বল ওকে ভালোবাসোস।(আবিদ)
.
--হয়ছে তোর বোনের সাথে বিয়ে দিয়ে কি বাশ দিলো দেখোস নাই। আম্মুকে বললে আবার বিয়ে দিয়ে দিবে তার পছন্দ করা মেয়ের সাথে।(আমি)
.
--তাহলে আর কি চাবিটা দে আমাকে। আর ভালো থাকিস। আর ওর খেয়াল রাখিস।(আবিদ)
.
--তোকে বলে দিতে হবে না। খেয়াল ঠিকই রাখবো।(আমি)
।।।।
।।।।
আবিদ একটা রহস্যময় হাসি দিয়ে বাইকটা নিয়ে চলে গেলো। বুঝলামই না হাসিটার কারন কি।।। সেটা বাদ দিলাম আগে তো আমাকে জারার সাথে পালাতে হবে। একবার যেটা বলবে সেটাই করতে হবে। ওর কথায় রাজি না হলে আমার বারোটা বাজিয়ে দিবে ও হয়তো।।।। থাক দ্বিতীয় বিয়েটা তো হবে। আর এবার বিয়ের মজাটা আমি ভোগ করবোই। সাথে আবার রোমান্টিক হানিমুন ও হবে। আমার খুশি দেখে কে????
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
((((চলবে)))))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।
অপেক্ষা করুন ৯ম পার্টের জন্য।