ওয়েবসাইট কাস্টমাইজেশন এর জন্য। Contact Us Welcome!

জলপরীর প্রেমে ৪ পর্বঃ ০৮

Bangla Dub Novels
 #জলপরীর_প্রেমে#
#সিজন_৪#
পার্টঃ০৮
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
।।।।
।।।।
।।।।
সুচিরানের মৃত্যুতে আমি এতোটা ব্যথিত হই নি। আমি আমার মতো ইনজয় করতে ছি। সে মারা গেছে সেটা তার ভাগ্যে ছিলো। আমি হাটতে হাটতে টোকিও শহর দেখতে লাগলাম। হোটেল থেকে বের হওয়ার পরেই আমি দেখতে পেলাম ডান সাইডে একটা স্টেশন রয়েছে৷ আমি সেখানে চলে গেলাম।এটা একটা ইলেকট্রিক ট্রেনের স্টেশন। ভিতরে খুব সুন্দর জায়গা। ভীড় নেই একদমই। স্টেশন যে এতোটা নীরব হবে আমি কখনো কল্পনাও করতে পারি নাই। একটু পর পরই ট্রেন আসছে অনেক স্পিডে আবার চলে যাচ্ছে। মন চাচ্ছে আমিও একটু ঘুরে আসি। আমি ট্রেনের জন্য দাড়িয়ে আছি। এই ট্রেনের জন্য কোনো টিকিট দরকার পরে না। যে কেউ ট্রেনে বিনামূল্যে উঠতে পারে। একটা ট্রেন এসে দাড়ালো আমার সামনে। ট্রেনের ভিতরে আমি ঢুকে গেলাম। একদম পুরা ফাকাই ছিলো ট্রেন টা। জানি না কোথায় যাবে। কিন্তু দেখার ইচ্ছা ট্রেন যেখানে যায়।
।।।
।।।
ট্রেনের মধ্যে বসে ছিলাম। আশে পাশের কোনো কিছু আমার ঠিক লাগছে না। একটা ট্রেন পুরো ফাকা হতে পারে না কখনো। একটু আগের ট্রেন থেকে তো অনেক মানুষই বের হলো। আবার অনেকে ঢুকলো। কিন্তু এবারের ট্রেনের জন্যও তো অনেক মানুষ দাড়িয়ে ছিলো। কিন্তু শুধু আমিই ঢুকলাম। এমনকি কেউ বের ও হয় নি। আমার ফোনটা বের করলাম সময় দেখার জন্য। কিন্তু ফোনের ও বারোটা বেজে গেছে। সময় খুব তারাতারি বারতে শুরু করলো। সেকেন্ড মতো মিনিট বারতে লাগলো সেখানে। এরপর আস্তে আস্তে ঘন্টার কাটাও সেভাবে বারতে লাগলো। আমি ট্রেনের একটা দেওয়ালের সাথে জোড়ে বারি খেলাম। ট্রেনটা এখন অনেক স্পিডে চলতে শুরু করেছে। মনে হচ্ছে ট্রেনটা মহাশূন্যে উড়ার মতো স্পিড নিয়ে নিয়েছে। আমি ট্রেনের স্পিডে বেহুস হয়ে গেলাম। আমার চোখ খোলার পর নিজেকে সেই ট্রেনের একটা কক্ষে পেলাম। ট্রেন মনে হয় অনেক আগেই থেমেছে। নিজের ফোনের দিকে তাকালাম। ট্রেনের স্পিড বারার সময় আমার সাথে আমার ফোনটাও ট্রেনের একটা দেওয়ালের সাথে জোরে ধাক্কা লাগে তাই সেটা বন্ধ হয়ে গেছে। আমি এখন কোথায় আছি সেটা নিজেও জানি না। ভুলেও কখনো আর ইলেকট্রিক ট্রেনে চরবো না। এইটা তো বুলেট ট্রেনের থেকেও খারাপ। আমার মাথা এখন ঘোরা শুরু করেছে। আমি তারাহুরা করে সেই ট্রেন থেকে বের হলাম। বের হয়ে তো পুরো অবাক হয়ে গেলাম। পুরো জনশূন্য হয়ে গেছে স্টেশনটা। দেখতে অনেকটা অদ্ভুদ লাগছে আমার এখন। আমি আস্তে আস্তে বের হলাম। সন্ধার সময় হয়ে গেছে। আমার হোটেলে ফিরতে হবে। জিসান ভাই তো একা আছে হোটেলে। হুস ফিরার পর আবার ভয় না পাই। কিন্তু স্টেশনের বাইরে আসার পর আমি পুরো অবাক হয়ে গেছি। কারন একই জায়গায় আমি আছি। কিন্তু কিছুক্ষনের মধ্যেই টোকিও শহরের চেহারা বদলে গেছে। যেখানে সেখানের বিল্ডিং ধ্বংস হয়ে গেছে।একটু আগেই আমি সব ভালো দেখলাম। তাহলে কি ঘূর্নিঝড় হলো। নাকি ভূমিকম্প হলো। জাপানে তো আবার ভূমিকম্প বেশী হয়। আমি বাম সাইটে তাকালাম। হোটেল দ্যা শিয়ানের অবস্থা দেখে আমার চোখ দিয়ে পূনি বের হয়ে গেলো। ১৫ তলার ভবন ধ্বংস হয়ে নিচে পরে আছে। জিসান ভাইয়ের কথা বলেই আমি দৌড় দিলাম সেটার দিকে। আশে পাশে আমি কাউকেই দেখতে পাচ্ছি না। আমার জিসান ভাইকে তখন সেভাবে রাখা উচিত হয় নাই। জিসান ভাই কি আদৌও বেচে আছে কিনা আমি সেটা এখন বুঝতে পারতেছি না। মোট কথা আমি এটাই বুঝতে পারতেছি না এখানে কি হয়েছে। আমি হোটেলের দিকে এগিয়ে গেলাম। সেখানে যেতেই দেখতে পেলাম প্রথম তলাটা শুধু আছে কিন্তু বাকি ১৪ তলা পিছনের দিকে ভেঙে নিচে পরে আছো। আমাদের রুম তো ছিলো ১৪ তলায়। তাহলে নিশ্চয় জিসান ভাই সেখানে। না এটা হতে পারে না। এইটু্কু সময়ের মধ্যে এসব তো হতে পারে না। আর আমি আশে পাশে কাউকেই দেখতে পারছি না। আমি নিশ্চয় কোনো স্বপ্ন দেখছি। স্বপ্ন ভেঙে গেলে আবার সব ঠিক হয়ে যাবে। 
কিন্তু বলে না যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই রাত হয়। ভাবছিলাম স্বপ্ন কিন্তু পিছন থেকে একটা তীর যখন আমার পায়ে গেথে গেলো। তখন আমি আর হোটেলের ভিতরে যেতে পারলাম না। হঠাৎ করেই আমি বেহুস হয়ে গেলাম। তীরের মধ্যে মনে হয় বিষাক্ত কোনো পদার্থ ছিলো। হয়তোবা বিষই ছিলো। এই নিয়ে আমার দুবার জ্ঞান হারালো। আর কতবার আমি বেহুস হবো বুঝতে পারতেছি না। এখন তো বিষয়টা আমার কাছে খুব খারাপ লাগতেছে। মনে হচ্ছে অনেক বড় কোনো চক্রান্ত আছে। কিংবা হয়তো ডোনাল্ড ট্রাম্প বোমা মেরেছে এখানে। জ্ঞান ফেরার পর আমি পুরো অবাক হয়ে গেলাম। কারন আমার সামনে বসে আছে ডক্টর সুচিরান। সুচিরানকে চিনতে আমার সমস্যা হলো না। কারন হোটেলে যখন তার মৃত্যুর খবর শুনেছিলাম তখন কাউন্টারে তার ছবি ছিলো সেখান থেকে দেখেছিলাম। কিন্তু সুচিরান এভাবে বেচে আছে কিভাবে? তাহলে কি আমাকে এখানে আনা সুচিরানের কোনো প্লান ছিলো? আচ্ছা সুচিরান আমাকে এখানে আনলো বুঝলাম কিন্তু এই শহরের কি হয়েছে সেটা তো আমি বুঝতে পারতেছি না।
.
--তো তুমিই সেই মহান রাজা হারকিউমাস।(সুচি)
.
--হারকিউমাস? কে সেইটা? আমি তো হৃদয় বাপ্পী। আমাকে ভুলে গেলেন? আমার থেকে পেইন্টিং কিনলেন আপনি।(আমি)
.
--তোমার বক বক শোনানোর জন্য তুমি  আসো নি এখানে।(সুচি)
.
--আমি এসেছি মানে? আর আপনি কি বলছেন আমার মাথায় কিছুই ঢুকছে না। আর আমাকে এভাবে উল্টো বেধে রাখা হয়েছে কেনো। আর এই নিন্জা গুলো চাকু নিয়ে কি আমাকে মারবে?(অনেকগুলো নিন্জা দাড়িয়ে আছে আশপাশ দিয়ে। সেগুলোর চোখে ক্রোধ আমি দেখতে পেয়েছি। হয়তো আমাকে মারবে তারা)
.
--আমি মারা গেছি?(সুচি)
.
--হ্যা আজ বিকালেই তো আপনার গাড়ির মধ্যে থেকে আপনার লাশ বের করা হয়েছে।(আমি)
.
--যেটার ভয়ে ছিলাম সেটাই হয়েছে।(সুচি)
.
--মানে?(আমি)
.
--তোমরা জেরোন কে ডাক দাও তো।(সুচি)
।।।।
।।।।
একটা নিন্জা চলে গেলো। একটু পরই একটা মেয়ে আসলো রুমে। অনেক সুন্দর বটে। কিন্তু মুখটা মোটেও সুবিধার নয়। আমাকে দেখার পরই আমাকে মারতে এগিয়ে আসে কিন্তু সুচি তাকে আটকে দেই। কিছু একটা আস্তে আস্তে বলে তারা। আমি শুনতে পেলাম না সেগুলো। তখন জেরোন আমার কপালে হাত দিলো। আমাকে শক্ত করে শিকল দিয়ে উল্টো করে বেধে রাখা হয়েছে। আমার মতো সাধারন একটা মানুষের উপরে এমন অত্যাচার তারা কেনো করছে বুঝতে পারছি না। কিছু বলতে চেয়েও কেনো জানি আমি কিছুই বলতে পারলাম না। মুখ থেকে কিছু বেরই হলো না।
.
--আমি সব এনার্জি ফিল করতে পারছি ওর মাঝে। কিন্তু ও আর তার মধ্যে পার্থক্য আছে।(জেরোন)
.
--মানে বুঝতে পারছি না।(সুচি)
.
--তুমি তোমার ক্ষমতাটা ব্যবহার করো ওর উপরে। আমি এইটুকু বুঝতে পারতেছি ওর অতীতে এমন কিছু একটা হয়েছে যেটা এই সব তৈরী করেছে।(জেরোন)
.
--আচ্ছা আমি দেখতেছি।(সুচি)
।।।।
।।।।
সুচি হঠাৎ করেই ইয়োগা করতে বসে গেলো। সাথে সাথে সে হাওয়ায় ভাসতেও লাগলো। চোখ দুটো খুললো সেটা দিয়ে সাদা আলো বের হতে লাগলো। আমার দিকে খুব মনোযোগ দিয়েই তাকালো সে। হঠাৎ করে আমিও আস্তে আস্তে সব কিছু দেখতে শুরু করলাম। আমার অতীত যেটাকে আমি মনে করতাম সেটা একদম ভুল ছিলো। আমার তো আরেকটা অতীত ছিলো যেখানে আমি নিজে একজন সুপারহিরো ছিলাম। নিজে বিশাল এবং আজব রাজ্যের রাজা ছিলাম। সব কিছুই আমি দেখতে লাগলাম। কিন্তু কোনো কিছুকেই আমি সত্য হিসাবে মেনে নিতে পারছি না। সেসব আমার কাছে মিথ্যা মনে হচ্ছিলো। আমার মাথা আর কাজ করছে না। হঠাৎই সুচিরান বলতে শুরু করলো।
.
--এর মাঝে ঘোর রহস্য রয়েছে। একে মারা যাবে না। ওকে মারলে বিপদ আমাদের উপরে আরো বেশী বেরে যাবে। আর ওকে এই সময়ে ও রাখা যাবে না। তাতে আমাদের জীবনের ভয় আছে।(সুচিরান)
.
--তাহলে কি ওকে আমরা ওর সময়ে পাঠিয়ে দিবো?(জেরোন)
.
--ও এই সময়েরই। আমরা তো ভেবেছিলাম এই শয়তানটার অতীতের ফর্মকে এখানে নিয়ে এসে তাকে মেরে ফেলবো যাতে সব কিছু ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু ব্যাপারটা অনেক প্যাচালো হয়ে গেছে। ও মূলত এই সময়েরই আর ওকে মারলে কোনো কিছু ঠিক হবে না। বরং সব আরো উল্টো হয়ে যাবে। আর ওকে এই সময়ে রাখলে আমাদের উপরে বড় একটা হামলা আসবে।(সুচি)
.
--সময় নিয়ে এমন ঝামেলা হবে আমরা মোটেও বুঝতে পারি নাই।(জেরোন)
.
--সময়ের স্পেল গুলো আমাদের কাছে সুরক্ষিতই ছিলো। কিন্তু ব্লাক ম্যাজিকের রাজকন্যা সেটা চুরী করে এখন দুটো সময়কে পুরো আলাদা করে দিয়েছে।(সুচি)
.
--তার মানে তো অনেক খারাপ কিছু হবে।(জেরোন)
.
--হ্যা। অতীতের সময়ে আমি মারা গিয়েছি। কিন্তু বর্তমানের সময় অতীতের সময়ের মতো চলছে না। অতীতকে উল্টো ভাবে চালাচ্ছে সে।(সুচি)
.
--তাহলে এখন কি করবো?(জেরোন)
.
--অতীতে আমি মারা গিয়েছি। তাই ওর সময়েই আমাদের যেতে হবে।(সুচি)
.
--ঠিক আছে।(জেরোন)
.
--অতীতের সময়ে গেলো আমরা ভাবার কিছু সময় পাবো। এখানে থাকলে কেরেলা আমাদের মেরে আমাদের ক্ষমতাগুলোও নিয়ে নিবে। আর তারপর ও পুরো মাল্টিভার্সের সবচেয়ে শক্তিশালীদের মধ্যে একজন হয়ে যাবে। তখন চাইলে একটা প্লানেটকে ও এমনিতেই ধ্বংস করে দিতে পারবে।(সুচি)
.
--বাকি সবাই তো ওর নাগালের বাইরে আছে। ওদের কাছে কেরেলা পৌছাতে পারবে না।(জেরোন)
.
--আমার মনে হয় না। কেরেলা আমাদের পূর্বপুরুষের মধ্যে সবচেয়ে চালাক এবং ভয়ানক জাদুকরের মধ্যে একজন। ওর ব্লাক ম্যাজিক সবার থেকে শক্তিশালী। সবাই একসাথে যা ভাববে আর ও একা ভাববে সেটা। তাই আমাদের এই বিষয় নিয়ে একটু ভয় করা উচিত।(সুচি)
.
--তাহলে কি করবো আমরা এখন?(জেরোন)
.
--আমরা অতীতের সময়ে যাবো। এবং সেই সময়ে আমরা ব্লাক ম্যাজিকের রাজকন্যা মিয়ারাকে পাবো। কেরেলাকে হারাতে তার মেয়ের ব্যবহারই আমাদের করতে হবে।(সুচি)
.
--তাহলে চলো যাওয়া যাক।(জেরোন)
।।।।।
।।।।
।।।
।।
(((চলবে)))
।।
।।।
।।।।
।।।।।

Post a Comment

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.