কিং অফ দ্যা ইউনিভার্স
#আবির হাসান আকাশ
আজ থেকে ১৫ বছর আগে,,,,,,
পৃথিবীর কোন এক জায়গায় একটা শিশুর জন্ম হয়।বাচ্চাটা ছিলো পুরো পৃথিবীর ভিতর একটা রেয়ার বাচ্চা। কারন অন্য সকল বাচ্চা থেকে ঐ বাচ্চাটা সত্যি আলাদা ছিলো।
সব বাচ্চা ১০ মাসে জন্ম নিলেও ঐ বাচ্চাটা জন্ম নিতে প্রায় ১৫ মাসের মতো সময় লেগেছিলো।বাচ্চাটির মায়ের নাম ছিলো এলিসা,এলিসা যখন গর্ভাঅবস্থায় ছিলেন তখন তার অন্যরকম ফিল হতো।তিনি অনুভব করতেন তার গর্ভে মনে হয় কোন বাচ্চাই নেই।অন্য সকল মায়েরা গর্ভাঅবস্থায় যেই রকম ফিল করতেন তার কখনো ঐ রকম ফিল হতো না।
বাচ্চাটি গর্ভে থাকা অবস্থায় প্রায় প্রতি রাতে তিনি আজব সব স্বপ্ন দেখতেন।স্বপ্নের রহস্য না বুজতে পেরে তিনি প্রায় অনেক রাত স্বপ্ন নিয়ে ভাবতে ভাবতে না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিতেন।তার স্বপ্নটা ছিলো এইরকম,,,,
গভীর ঘুমের সময় তার বাবার বয়সী কেউ তাকে বলতো, এলিসা আমাকে দেখে তোমার ভয় পাওয়ার দরকার নেই।আমি তোমার কোনো ক্ষতি করবো না।তুমি অনেক সুভাগ্যভান মহিলা।তোমার গর্ভে এখন যার অবস্থান সে আসছে সবকিছু বদলে দেওয়ার জন্য।তার প্রতি খেয়াল রেখো।
প্রায় প্রতি রাতেই এলিসা এই স্বপ্ন টা দেখতো। কিন্তু সেই বৃদ্ধ লোকটাকে কিছু বলার আগেই সে একটা হাসি দিয়ে অদৃশ্য হয়ে যেত।
অবশেষে এলিসা বাচ্চা জন্ম দিতে সফল হয়।কিন্তু বাচ্চাটা দেখে সবাই অবাক না হয়ে পারে না।বাচ্চার শরীর ছিলো অন্য সকলের চেয়ে একবারেই আলাদা।তার আকৃতি সবার থেকে একটু বড়ো ছিলো।অভস্য সবাই এই বিষয়টাতে তেমন মাথা গামায় নি কারন ১৫ মাসের বাচ্চা যেহুতু একটু বড়ো হতেই পারে।কিন্তু বাচ্চা টার শরীরে আরেকটা আজব নিশানা দেখে সবাই অবাক হয়েছিলো সেইদিন।তার বাম হাতের কব্জির নিচে একটা ইংরেজি অক্ষর X বা ক্রসের মতো একটা চিহ্ন ছিলো।সবাই বিষয়টা নিয়ে এতো ভাবেনি।সবাই মনে করেছিলো হয়ত এমন জন্মদাগ নিয়েই বাচ্চাটির জন্ম হয়েছে।
যেহুতু বাচ্চাটা ছেলে ছিলো তাই বাচ্চাটার নাম রাখা হয় ডেবিড।
এলিসা মাঝে মাঝে ডেবিডকে দেখে চমকে যেতো।তিনি রাতে দেখতেন ঘুমন্ত ডেবিডের X চিহ্ন টা জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। কোন কোন সময় এমনও হতো ঐ চিহ্নটার লাইটিং এর ফলে পুরো ঘর আলকিত হয়ে যেত।কিন্তু ডেবিড এই সকল বিষয়ে কিছু জানত না।ডেবিড বড়ো হওয়ার সাথে সাথে তার X চিহ্নটার আকার আরো বাড়তে থাকে শুরুর দিকে এইটা ১ ইঞ্চির মতো হলেও এখন অনেকটা বড়ো হয়ে গিয়েছে।ডিবিডের বয়স যখন ছয় বছর,সে সময় সে তার মায়ের সাথে কোন এক বনে যায় পিকনিক করতে।সেখানে গিয়ে সে হারিয়ে যায়।সে তার মা কে বনের ভিতর অনেক খোঁজাখোজি করে কিন্তু কোথাও না পেয়ে খুজতে খুজতে সে আরো বনের ভিতরে চলে যায়।হঠাৎ তার সামনে একটা বেয়ার চলে আসে।বেয়ারটা দেখে সে খুব ভয় পায়।ছোট একটা ছেলে যার বয়স মাত্র ৬ বছর তার বেয়ার দেখে ভয় পাওয়ারই কথা ডেবিড বেয়ার দেখে ভয় পেয়ে জোরে দৌড় দেয়।কিন্তু একটু দূর আঘাতেই কিছুর সাথে ধক্কা খেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।মাটিতে পড়ার পর বেয়ারটা তার দিকে আরো দ্রুত এগোতে থাকে।ডেবিড মনে মনে ভাবে আজ মনে হয় তার জীবনের শেষ দিন।বেয়ারটা তার কাছাকাছি আসার সাথে সাথেই ডেবিড চোখ বন্ধ করে ফেলে।সে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত ছিলো।কিন্তু সে কিছুক্ষণ পর একটা বিকট আওয়াজ শুনতে পায়।সে তৎক্ষনাৎ চোখ খুলে সামনে তাকাতেই দেখতে পায় তার সামনে বেয়ারটি ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পড়ে আছে।এবং দূরে একটা গছে আগুন ধরে প্রায় পুরোটা জ্বলে গিয়েছে। কিভাবে এইসব ঘটনা ঘটলো এইসব ভেবে ডেবিড তার হাতের দিকে তাকতেই দেখতে পারে তার X চিহ্নটা জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। সে দেখতে পায় ঐ চিহ্নটা থেকে লেজার এর মতো কিছু একটা বের হচ্ছে। এবং ঐ টা যেখানেই স্পর্শ করছে সেই জায়গাতেই আগুন ধরে যাচ্ছে। ডেবিড এক ধ্যানে তার হাতের দিকে তাকিয়ে থাকে।এমনটা সে আগে কখনো দেখে নি।এতোদিন অনেক তার এই চিহ্নটাকে নিয়ে অনেক হাসিঠাট্টা করেছে।
সবাই বলতো বাজে চিহ্ন নিয়ে নাকি ডেবিড জন্ম নিয়েছি।কিন্তু এই বাজে লেজেন্ডারি চিহ্নটাই যে আজ ডেবিডের জীবন বাঁচিয়েছে এইটা ভেবে ডেবিড খুব খুশি হয়ে যায়।এমন সময় হঠাৎ ডেভিড খেয়াল করে দেখে তার হাতের চিহ্নটা কেমন আগের মতো হয়ে গেলো।তখন ডেবিড আকাশে একটা আলোর জ্বলকানি দেখতে পেলো।সেইদিকে তাকাতেই ডেবিড দেখে একটা মানুষ,ঐ মানুষটার পিছনে পাখিদের মতো পাখনা লাগানো,সে দেখতে পেলো ঐ পাখনা ওয়ালা মানুষটা তার দিকে তাকিয়ে আছে। এমন সময় সে শুনতে পেলো দূর থেকে কে যেন তাকে ডাকছে।সেখান থেকে একটু এগোতেই ডেবিড দেখে তার মা।সে মা,মা বলে চিল্লিয়ে গিয়ে তার মা কে জড়িয়ে ধরে।এলিসা ডেবিডকে পেয়ে খুশিতে কান্না করে দেয়।
আর কখনো আমাকে ছেড়ে কোথাও যেতে পারবি না তুই জানিস তোকে কত জায়গায় খুঁজেছি। আর তোকে নিয়ে কতটাই টেনশনে ছিলাম।(এলিসা)
ঠিক আছে মা,তোমাকে ছেড়ে আর কোথাও কখনে যাব না,তুমি ছাড়া এই দুমিয়ায় আমার কে আছে,(ডেবিড)
ছেলের মুখে এই কথা শুনে খুশিতে কেদে দেয় এলিসা।
এভাবে কেটে যায় আরো ৫ টি বছর।এখন ডেবিডের বয়স ১১ বছর।পাঁচ বছর আগের সেইদিনে ঘটা ঘটনার মতো আর কোনদিন তার হাতের X চিহ্নটা কখনো জ্বলতে দেখে নি।কিন্তু এর মাঝে তার সাথে অনেক ঘটনায় ঘটে গিয়েছে যার কোনো ব্যাখ্যা ডেবিডের কাছে জানা নেই।একদিন সে নদীতে নামে গোসল করতে, হঠাৎ সে পানির এতো গভিরে চলে যায় সে সে আর নিশ্বাস নিতে পারছিলো না।ডেবিড অনেক চেষ্টা করে উপরে উঠতে কিন্তু সে সফল হয়ে উঠতে পারে না।ডেবিডের মৃত্যু প্রায় এসে গিয়েছে।এমন সময় সে খেয়াল করে পিছন থেকে মনে হয় কোন মেয়ের শরীর তাকে জড়িয়ে ধরছে।ঐ মূহুর্তের পর থেকে ডেবিডের আর কিছু মনে নেই।সে চোখ খুলে দেখতে পারে নদীর পাড়ে সে সুয়ে আছে।আকাশের দিকে চোখ পড়তেই সে ঐ ডানাওয়ালা লোকটাকে আবারও দেখতে পায়।এরই মাঝে প্রায় অনেক দিন আকাশে ঐ উড়ন্ত মানুষটাকে তার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখেছে।ডেবিড ঐ মানুষ টাকে অনেক ডাকাডাকি করেছে কিন্তু সেই ডানা ওয়ালা মানুষটা ডেবিডের ডাকে কখনো সারা দেয় নি।
ডেবিড বাড়িতে গিয়ে তার সাথে ৫ বছর আগে এবং বর্তমানে ঘটা সব ঘটনা এলিসা কে খুলে বলে।এবং ঐ ডানওয়ালা লোকটার ব্যাপারেও বলে।তার মা তার কথা শুনে কোন উত্তর দেয় না।সে ডেবিডকে বলে তুমি হয়তো ভূল দেখেছো।এবং নানারকমের কথা বলে এলিসা কথার মোড় অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেন।কিন্তু ডেবিডের ঠিকই সন্দেহ হয় তার মা তার কাছ থেকে কিছু লোকাচ্ছে
চলবে,,,,,,,