#ড্রাগন কিং#
পার্টঃ৪
লেখকঃজাহিদ আহমেদ
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
ভোর বেলা হঠাৎ করে ঠক ঠক শব্দে ঘুম থেকে জেগে ওঠলাম।
কিরে আর কতো ঘুমাবি,১০টা বাজতে চলল,বলি কি আজকে কি কলেজে যাবি না নাকি(আম্মু)?
একটু অন্য মনস্ক হয়ে বললাম, হুম যাব তো(আমি)।
ফ্রেশ হয়ে তাড়াতাড়ি নিচে আয়,তোর জন্য তোর আব্বু সেই কখন থেকে খাবার না খেয়ে বসে আছে,,বলল যে আজকে নাকি সবাই একসাথে খাবার খাবে(আম্মু)!
আচ্ছা ঠিক আছে,আপনি যান আমি ২০ মিনিটের মধ্যে রেডি হয়ে আসছি(আমি)।
আচ্ছা,ঠিক আছে তাহলে তুই নিচে আয়(আম্মু)!
হুম,আজকে তো কলেজে আমাকে যেতেই হবে,শুভর ব্যাপারে সব কিছু জানতে হবে,আর কালকে মেয়েটার পরে কি কি হয়েছিল সব কিছুই জানতে হবে আমাকে(আমি)
এই সব ব্যাপারে চিন্তা করতে করতে বিছানা থেকে যখনই নামতে যাবো,তখনতো আমি পুরো অবাক,আরে আমার শরীরের সব আঘাতের চিহ্ন নেই কেন,কোথায় গেল সব,মনে হয় কালকে রাএে সুপার পাওয়ার এর কারনে আমার সব কাটা দাগ সহ সব সমস্যা সল্ভ হয়ে গেছে। এতে আমি অনেকটাই খুশি হলাম। তারপর আমি খুশি মনে ওয়াশরুমে গিয়ে একদম ফ্রেশ হয়ে বের হলাম।।
,
,
আমি মনে মনে চিন্তা করলাম যে,আজকে কলেজের সবাইকে পুরো চমকে দেব,সবাই আমাকে নিয়ে অনেক মজা করেছে, আজকে থেকে আমি সবাইকে নিয়ে মজা করব।
যেই ভাবা সেই কাজ,আমি ব্লাক কালারের একটা টি-শাট্ পরলাম এবং সাথে ব্লাক কালারের প্যান্ট,সেই সাথে ব্লাক কালারের সুজ। চুল গুলো একটু ওপরের দিকে ওঠিয়ে নিলাম। ব্যাস হয়ে গেছে,আমি আমার রুম থেকে বের হতেই দেখলাম যে,আব্বু আম্মু তারা দুজনেই খাবারের টেবিলে বসে,খাবার সামনে নিয়ে বসে বসে কথা বলছে।
হঠাৎ করেই আম্মু আমার দিকে তাকিয়ে বলল যে,
,
,
খাবার ঠান্ডা হবার আগেই খেয়ে নে,এই বলে সে তার মুখটা ঘুরিয়ে নিল,এবং সাথে সাথেই আমার মুখের দিকে তাকাল,তাকিয়ে পরো অবাক এ সে কাকে দেখছে,এতো আমার জাহিদ না,জাহিদ তো এইসব ড্রেস কখনো পছন্দ করে না। সবসময় সে সাধারণ ভাবে চলাফেরা করতে পছন্দ করে,একরাতের মধ্যে একজন মানুষ কি করে এতো চেঞ্জ হতে পারে(আম্মু)!
আম্মুর কথা শোনে আব্বু তার মুখটা আমার দিকে ঘুরালো,ঘুরিয়েই আম্মুর মতো সে নিজেও পুরো অবাক হয়ে গেল। সে আজ তার জাহিদ কে দেখছে নাকি।
একদিনের মধ্যে এমন কি হলো যে,যার জন্য তুই এতোটা পাল্টে গেলি,নাকি আবার কোনো মেয়ের প্রেমে পড়লি (একসাথে বলে ওঠল,আব্বু-আম্মু)।
আরে না,কি যে বলেন না এইসব(আমি বাস্তবে তাদের সাথে যেমন ব্যবহার করি,ঠিক তেমনি এখানে উপস্থাপন করি),প্রেম সেইটা আবার আমার দ্বারা যেটা পুরো অসম্ভব।
ওহ্ আচ্ছা তাই বুঝি(আম্মু ডেবিল মাকা হাসি দিয়ে)!
হুম,যাই হোক খুব খুদা পেয়েছে,খেতে দেন তাড়াতাড়ি(আমি)!
তারপর খাওয়া দাওয়া শেষ করে,আমাদের সবচেয়ে দামি গাড়ি টা নিয়ে কলেজের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। কলেজের গেটটা পার হতেই সবাই আমার গাড়ির দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। তার কারন হলো,এতো দামি গাড়ি নিয়ে আজ পযন্ত কেও কলেজে আসেনি,আমি গাড়ি থেকে নামলাম,সাথে সাথে সবাই যেন ভ্যাব্যাচ্যাকা খেয়ে গেল। সবাই অবাক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে,সবাই এটা ভাবছে যে,এতো সেই ছেলেটা যে কালকে শুভর দলের লোকেদের হাতে মার খেল। আর ওরতো অবস্থা অনেক খারাপ ছিল,তাহলে এক রাতের মধ্যে কি করে একদম ভালো হয়ে গেল। আর ওকেতো কালকে ছোটলোক বলে মনে হলো কালকে,তার কারন কলেজে একমাত্র গরিব লোকেরাই সাইকেল নিয়ে আসে। কিন্তু এতো দেখি কলেজের সবার থেকে টপে আছে। আর সবচাইতে অদ্ভুত ব্যাপার হলো এই যে,এখানে কার মাথাই কি চলছে,আমি সবি বুঝতে পারছি,যেটাকে বলা হয় মাইন্ড রিডিং। সেই সাথে যারা একটু আস্তে আস্তে কথা বলছে,তারা সবাই কি বলছে সেটা আমি দুর থেকেও একদম স্পষ্টভাবে বুঝতে পারছি। কিছু ছেলে এবং মেয়েরা আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগল। আমি আড়চোখে সবাইকে দেখে নিলাম,যে এখানের শুভ আছে কিনা।
,
,
সবাই যখন আমার কাছাকাছি চলে আসে,তখন আমি সবাইকে ইগনোর করে আমার ক্লাস রুমের দিকে চলে গেলাম। ক্লাস রুমে ঢুকার সাথে সাথে সবাই আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। যেটা আমার কাছে অনেক বিরক্তিকর লাগল,আমি সবার সামনের ব্রেঞ্চে বসে পরলাম। এবং তার তার কয়েক সেকেন্ড পরেই দুটো ছেলে আমার ব্রেঞ্চে এসে বসে পড়ল। আমি তাদের দিকে একবারও তাকালাম না,আমি অনুভব করলাম যে আমার ব্রেঞ্চে দু'জন ছেলে আছে।
,
,
হাই,(১ছেলেটা)!
তাদের দিকে তাকিয়ে বললাম,হ্যালো(আমি)
আমার নাম জিসান আর এ হলো আমার বন্ধু হাসান,আর আপনি(জিসান)!
হাই(হাসান)!
হ্যালো,আমি জাহিদ,জাহিদুল ইসলাম(আমি)।
নাইস টু মিট ইউ(জিসান,হাসান দু'জনে একসাথে বলেল)।
সেম টু(আমি)।
তো আমরা কি বন্ধু হতে পারি(জিসান)!
হ্যা অবশ্যই(আমি)।
ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে ওদের সাথে হাল্কা একটু কথা বললাম। আর মনে মনে চিন্তা করলাম যে যে আমার তাহলে বন্ধু হ'য়েই গেল শেষ মুহুর্তে। তখনি জিসান বলল যে,
জাহিদ কালকে তো তুমার সাথে অনেক খারাপ হয়েছে,আর তুমি একরাতের মধ্যে একদম পুরোপুরি সুস্থ কি করে হলে বুঝলাম না বিষয়টা,আর সেই মেয়েটার কথা নয় বাদই দিলাম(জিসান)!
তার কথা শুনে আমি থ হয়ে গেলাম,বললাম যে,
তার মানে তোমরা দুজনও কালকে ওইখানে ছিলে,আর মেয়েটার কথা বাদ দিলে মানে কি,মেয়েটার কি হয়েছিল তার পরে(আমি)!
হুম আমরা সেখানেই আছিলাম,বাট আমরা তুমাদের জন্য কিচ্ছু করতে পারলাম না,তার কারন হলো শুভ মন্ত্রীর ছেলে তাদের অনেক পাওয়ার,আর কলেজের প্রথম দিনেই মারামারি করাটা আমার কাছে ঠিক মনে হলো না,আর তুমি যখন সেন্সলেন্স হয়ে গেছিলে,তখন তোমাকে ওরা মারা বাদ দিয়ে শুভর কথা মতো সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকে,আর সেই মেয়েটাকে শুভ ওর নোংরা হাত দিয়ে স্পর্শ করতে থাকে,তারপর মেয়েটা একটা কান্ড করে বসে,সে ওখান থেকে ওঠে এক দৌড়ে বিল্ডিংয়ের সাদে ওঠে যায়,কেও বুঝে ওঠার আগেই সে কাজটা করে ফেলে,যখন শুভ এটা বুঝতে পারল তখনই শুভ তার চ্যামচ্যাদেরকে তাকে আটকানোর জন্য বলে। আর তারা তখন মেয়েটাকে আটকানোর জন্য দৌড়ে যায় মেয়েটির কাছে। কিন্তু তাতে অনেক দেরী হয়ে গেছে,মেয়েটা সেখান থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করে নেয়। আর তখনই শুভ তার বাবাকে সব কিছু জানিয়ে পুলিশদের কেও হাত করিয়ে নেয়। এবং সেই কেসটা কালকেই বন্ধ করে দেয়। আর মেয়েটা ছিল অনাথ,সে টিউশনি পড়িয়ে টাকা আয় করত,তার আপন কেউই ছিল না,যার কারনে কেও আর কেসটা ওপেন করার চেষ্টা করেনি। আর তোমাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়,কেও যাতে এই বিষয়ে মুখ না খুলে তার জন্য শুভ সবাইকে ভয় দেখিয়েছে। এই বলে জিসান একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ছাড়ল(জিসান)।
এটা শুনে আমার চোখ দিয়ে নিজের অজান্তেই দু-ফুটা নোনাপানি গড়িয়ে পড়ল। এটা শুনার পর আমার অনেক রাগ হতে লাগল,যার কারনে আমার শরীর থরথর করে কাঁপছে,এবং আমার শরীর দিয়ে ধোঁয়া বেরুচ্ছিল। এটা দেখে ওরা দু'জনেই অনেক ভয় পেয়ে গেল,আমি ওদেরকে উদ্দেশ্য করে বললাম যে,
শুভ কোথায়,ওকে কোথায় গেলে পাওয়া যাবে এখন(আমি)!
একটু জোরে বলার কারণে ক্লাসের সবাই একটু ভয় পেয়ে গেল,সেই সাথে একটু অবাকও হলো।
ক্লাসে আসার সময় তাঁকে তো মাঠের কিনারে বসে আড্ডা দিচ্ছে(জিসান,হাসান)।
ওদের ওদের কথা শেষ শেষ হওয়ার আগেই আমি দৌড়ে ক্লাস রুমের বাহিরের দিকে যেতে লাগলাম। আর সবাই অবাক হয়ে আমার পিছনে পিছনে আসতে লাগল।
,
,
বাইরে বের হতেই দেখলাম যে,শুভ ও তার চ্যালা প্যালারা সবাই আমার গাড়ির ওপরে বসে বসে মেয়েদের কে ডিস্টার্ব করছে। এটা দেখে আমার মাথা একেবারে নষ্ট হয়ে গেল। এক-তো আমাকে কালকে সবার সামনে মেরেছে,তারপর আবার ওর জন্য আমি আমার ভালোবাসার মানুষকে হারিয়েছি। সব মিলিয়ে আমার এ-তো এ-তো রাগ হলো যে,আমি আমার নিজের কন্ট্রোলের বাহিরে চলে গেলাম। যার কারনে আমি কান্না কান্না করছি আর ওঁদের দিকে দৌড়ে গেলাম। আমাকে এভাবে আসতে দেখে শুভ গাড়ি থেকে নেমে গাড়ির একটু সামনে এসে দাড়াল। আমি একদম শুভর কাছাকাছি গিয়ে দাঁড়িয়ে তার চোখের দিকে আমার রক্তচোখ নিয়ে তাকালাম। সে আমার চোখ দেখে প্রচুর পরিমানে ভয় পেয়ে যায়। আর কলেজের সবাই তখম আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল। আর সে কিছু বুঝতে পারার আগেই আমি তাঁর বুকের মধ্যে অনেক জোরে একটা লাথি মারি,যার কারনে সে আমার গাড়ির গ্লাস ভেঙে গাড়ির ভেতরে পড়ে যায়। এমনিতেই আমার শক্তি অনেক আর রাগের কারনে সেটা দিগুণ হয়ে যায়। আমি গিয়ে তাঁকে গাড়ির ভেতর থেকে টেনে বের করলাম। মনে হয়না বুকের হাড্ডি সব এখনও ভালো আছে,সবগুলো হাড্ডি ভেঙে যাওয়ার কথা,আমি আমার স্পিড মোড ব্যবহার করে একসাথে কয়েকশো ঘুসি দিলাম শুভর মুখের মধ্যে,এবং ও যে-ই হাত দিয়ে সেই মেয়েটাকে স্পর্শ করেছিল,সেই হাতটার সাথে আরেকটা হাত ও ভেঙে দিলাম। ব্যথার চোটে সে অনবরত চিৎকার করে যাচ্ছে। কিন্তু আমি সেটা পরগ্গ করে,তাকে দুইহাত দিয়ে ওপরে উঠিয়ে একটা আছাড় দিলাম,সে একটা চিৎকার দিয়ে পুরো স্তব্ধ হয়ে গেল সাথে পুরো কলেজও। সবাই আমার দিকে অবাক নয়নে তাকিয়ে আছে,আর আমি মাটির ওপরে ধপাস করে বসে পড়লাম। আজ আমার চিৎকার করে বলতে মন চাচ্ছে যে,কেন কেন আমাকে একলা রেখে চলে গেলে,তুমার সঙ্গী হিসেবে কি আমাকে নিয়া যেত না। নাকি শুধু আমিই তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম প্রথম দেখায়। আর এটাই কি আমার সব চাইতে বড় ভুল ছিল নাকি,তোমাকে প্রথম দেখার পরেই তোমাকে নিয়ে কতো কতো স্বপ্ন দেখে ছিলাম। কিন্তু আজ কোথায় সেই তুমি। আচ্ছা তুমিও কি আমাকে ভালোবেসে ছিলে প্রথম দেখায় নাকি,শুধু মাএ আমি একাই কি তোমাকে নিয়ে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখেছিলাম নাকি আমার মতো তুমি নিজেও আমাকে নিয়ে ঘড় বাঁধার স্বপ্ন দেখেছিলে।
এসব কথা ভাবছিলাম ঠিক তখনি মনে হলো যে,আমার মাথার পেছনে প্রচন্ড রকমের ব্যথা করছে,মাথায় পেছনে হাত দিয়ে সামনে এনে দেখলাম যে হাতে রক্ত লেগে আছে। এটা দেখে পেছনে ঘুরে তাকালাম,আর সাথে সাথে আমার মুখের ওপরে একটা আঘাত পেলাম প্রচুর পরিমানে। অনেক কষ্টে সামনে তাকালাম,তাকিয়ে দেখলাম যে শুভর কিছু চ্যালারা হাতে লোহার বড় বড় রড নিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তখনই দেখলাম যে,জিসান আর হাসান কোথা থেকে এসে যেন তাঁদের ওপরে হামলা করল,কিন্তু শেষ মুহুর্তে তাঁদেরকেও মেরে সেন্স লেন্স করা হল। আমি কিছু করার আগেই তারা সবাই মিলে আমাকে মারতে লাগল,আর আমি তখনই সেখানে সেন্স লেন্স হয়ে পড়ে রইল।
,,,হঠাৎ করে যখন চোখ খোললাম,ঠিক তখনই,,,
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।
পার্টটা একটু ছোট করে দিলাম। পার্টটা কেমন হলো জানাবেন। আশা করি ভাল লাগবে। ভালো না লাগলে বলবেন। গল্পের মধ্যে কোনো জিনিস না বুঝলে কমেন্টে জিজ্ঞেস করতে পারেন। আর ভালো লেগে থাকলে শেয়ার করে বা পাঠক পাঠিকাদের মেনশন করে পড়ার সুযোগ করে দিতে পারেন। (শব্দ সংখ্যা ১৫৮৭)
★হ্যাপি রিডিং★