#সিজন_৪#
পার্টঃ১০
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
।।।।
।।।।
।।।।
বুড়ো মহিলা চোখ বন্ধ করেই ছিলো এতোক্ষন। আমি রুমে প্রবেশ করার পর আমি হঠাৎ হাওয়ায় ভাসতে লাগলাম। মনে হচ্ছিলো কেউ এই রুমের গ্রাভিটি চেন্জ করে দিয়েছে। কিন্তু রুমে যারা আছে তারা কেউই ভাসছে না। হঠাৎ করেই আমার স্বপ্নে দেখা সুচিরান জেরোন এবং আমার বোনের মতো দেখতে মেয়ে যার নামও আমার বোনের নামে, তাকেও দেখলাম। হৃদিতা তার এক হাত দিয়ে আমাকে উচু করিয়ে রেখেছে হাওয়ার মধ্যেই। মনে হচ্ছে মেয়েটা জাদু জানে। কিন্তু এই বিজ্ঞানের সময়ে কি জাদু আদৌও সম্ভব। কালো জাদু সম্পর্কে শুধু কাহিনী শুনেছি তাছাড়া এসব এখন বিশ্বাসই করে না কেউ। কিন্তু হৃদিতা যে জাদু দিয়ে আমাকে হাওয়ায় তুলেছে এটা আমি ঠিকই বুঝতে পারতেছি। আমি ওদের কথা বার্তা শুনতে লাগলাম
.
--তুমি কি সিওর রিয়েলিটি স্পেলের সাহায্যে হারকিউমাসের সব কিছু ঠিক করে মনে পরবে।(জেরোন)
.
--ওর সব ঠিকই মনে পরেছে। কিন্তু রিয়েলিটি স্পেলের জন্য ও সেটাকে মেনে নিতে পারবে না। কিন্তু যদি রিয়েলিটি স্পেলটাকে উল্টো করে দেওয়া যায় তাহলে এসব রিয়েলিটি বদলে যাবে আর হৃদয় এর সব মনে পরবে।(হৃদিতা)
.
--এই পাগল বুড়ি কি সেটা করতে পারবে? কারন আমরা হারকিউমাসকে এখানে বেশীক্ষন রাখতে পারবো না। মিয়ারা একবার যদি বুঝে যায় তাহলে আমাদের সবাইকে মেরে ফেলবে। রিয়েলিটি স্পেলের জন্য আমি বেচে গিয়েছি। নাহলে এতোক্ষন আমার অস্তিত্বই থাকতো না। আমি এখন আসল ভাবে মরতে চাই না। কারন এখন মারা গেলে আমার ভবিষ্যতের কেউ বেচে থাকবে না। আর এই নতুন রিয়েলিটির আমিও মারা গেছে। তাই আমার অস্তিত্বের নিশানই থাকবে না কোথাও।(সুচি)
.
--বাবা তুমি চিন্তা কইরো না। এখানে আসার সময় আমি হারকিউমাসের মতো দেখতে একটা রোবট জিসান নামের ছেলের সাথে ছেড়ে দিয়েছি। মিয়ারা আপাতোতো আধা ঘন্টা কিছুই করতে পারবে না।(লরা)
.
--হৃদিতা তুমি তো ওনাকে নিয়ে আসলে এখন কিছু করতে বলো উনাকে।(জেরোন)
.
--পেনোর তুমি শুরু করো।(হৃদিতা)
.
--জ্বী মহারানী। আমি এই সময়ের জন্যই অপেক্ষা করে ছিলাম। আপনার দেওয়া জ্ঞানে আমি অনেক কিছু সম্পর্কে জানতে পেরেছি। সেই সাথে রিয়েলিটি প্রিজমকেও আমার মধ্যে কনজিউম করেছিলাম। কিন্তু আমার বয়স আর নেই। আমার ভাগ্য এই পর্যন্তই ছিলো। আমি আমার রাজার সেবা করতে পারবো এটা ভেবেই আমার মন খুশিতে নেচে উঠছে।(পেনোর)
.
--হুমমম তোমার কাজটা আমাদের রাজ্য সব সময়ই মনে রাখবে।(হৃদিতা)
।।।।
।।।।
বুড়ি মহিলা যার নাম পেনোর সে আমার দিকে উঠে আসতে লাগলো। তার হাতের ডালপালা ফেলে দিয়েছে। হঠাৎ একটা স্পেল পরলো সে সাথে সাথে সেই রুমে একটা বিশাল আলোর চমকা দেখা দিলো। আমার মাথা ঘুরতে লাগলো। সেই সাথে আমার মাথায় যত মিথ্যা রিয়েলিটি ছিলো সব মুছে যেতে লাগলো। আমি আমার আগের অতীতকে এখন সম্পূর্ন নিজের করে ভাবতে শুরু করলাম। কিন্তু বুড়ি মহিলাটা আরো কিছু করলো। ভেবেছিলাম হয়তো আমাকে একটু এনার্জি দিচ্ছে সে। কিন্তু না সে ক্ষমতা দেওয়ার স্পেল ব্যবহার করলো। যেটার কারনে আমার মাঝে তার সমস্ত ক্ষমতা চলে আসলো। শুধু তার ক্ষমতা নয়। তার জানা সকল জ্ঞান এমনকি সকল স্কিলও আমার মাঝে চলে আসলো। সাথে সাথে বুড়োর শরীর পরে গেলো ফ্লোরে। হৃদিতা ওকে ধরলো। এর ফলে হৃদিতার জাদুও শেষ হলো। আমি আস্তে করে মাটিতে নামলাম। মাথা অনেকটা ব্যথা করতেছে। এই রিয়েলিটি জিনিসটা আসলেই খারাপ। কিন্তু বর্তমানে আমার কাছে আছে রিয়েলিটি প্রিজমের ক্ষমতা। মানে সারা বিশ্বের রিয়েলিটি আমি চেন্জ করে দিতে পারবো।
.
--হৃদয় আছো?(আমাকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে বললো হৃদিতা)
.
--হুমমমম।(আমি ওকে জড়িয়ে ধরে বল্লাম)
.
--যাক তাহলে হারকিউমাসের মেমোরী তো ফেরত আসলো।(জেরোন)
.
--কিন্তু একটা জিনিস আমি বুঝতে পারতেছি না। আমার কাছে তো রিয়েলিটি প্রিজমের ক্ষমতা আছে। এটা তো মিয়ারার কাছে ছিলো।(আমি)
.
--তোমার উপরে সময়ের স্পেল ব্যবহার করা হয়েছে। আর তোমাকে নিয়ে আসা হয়েছে যেখানে তোমার জার্নি শুরু হয়েছিলো। সেই খানে এই প্রিজমের ক্ষমতা ছিলো পেনোরের কাছে। কিন্তু আরো কয়েক বছর পর সেটা পেনোরকে মেরে মিয়ারা নিয়ে যাবে।(হৃদিতা)
.
--তাহলে মিয়ারার কাছে যে রিয়েলিটির ক্ষমতা আছে আমার কাছেও?(আমি)
.
--না। তোমার কাছে তার থেকে বেশী আছে। তোমার কাছে পেনোরের ১৫০ বছরের অর্জন করা সব জ্ঞান আছে। যেটা আমাদের কারো কাছে নাই।(হৃদিতা)
.
--মিয়ারার কালো ক্ষমতা কার মধ্যে আছে জানো?(আমি)
.
--কার?(হৃদিতা)
.
--জারা।(আমি)
.
--কি????? ও কোথায় থেকে পেয়েছে?(হৃদিতা)
.
--সেটা জানি না।(আমি)
.
--মিয়ারা একটা রহস্যময়ী ক্যারেক্টার। যে কিনা রাজা কেরেলার মেয়ে ছিলো। কেরেলা ছিলো ব্লাক ম্যাজিকের সবচেয়ে বড় জাদুকর। মানে ব্লাক ম্যাজিকের স্রষ্টা যাকে বলা হয়। আর সেই কেরেলার মেয়েই ছিলো মিয়ারা। যে কিনা এক সময়ে কেরেলার থেকেও ভয়ঙ্কর ছিলো। কিন্তু অনেক অবুঝ মিয়ারা। তাই নিজের সব ক্ষমতা সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে পারে না। তাই কেরেলা তাকে সব সময় গোপন রেখেছে।(সুচিরান)
.
--তুমি এতো কিছু কিভাবে জানো?(আমি)
.
--কারন আমরা সেই কেরেলার বংশধর।(জেরোন)
.
--আমার পড়া কোনো বই বা কারো থেকেই আমি এর আগে মিয়ারার সম্পর্কে জানতে পারি নাই।(হৃদিতা)
.
--আমাদের প্রথমে জানতে হবে জারা কিভাবে এই ক্ষমতা গুলো পেলো।(আমি)
.
--কিন্তু সেটা কিভাবে জানবে?(হৃদিতা)
.
--সেটা আমার উপরে ছেড়ে দাও। এখন যখন আমি নিজেই রিয়েলিটি চেন্জ করতে পারি তাই এটা করতে কষ্ট হবে না।(আমি)
.
--হুমমম কিন্তু সাবধান তোমার কাছে ক্ষমতা আছে এটা জানলে আবারো তোমার উপরে রিয়েলিটি স্পেল ব্যবহার করবে।(হৃদিতা)
.
--সেটা নিয়ে তোমাদের ভাবতে হবে না। কারন বুড়িটা অনেক স্পেল সম্পর্কেই জানে। আর তার মধ্যে এমন কিছু স্পেল আছে যেটা সে ব্যবহার করতে পারে নাই। কিন্তু আমি পারবো।(আমি)
.
--কি স্পেল ব্যবহার করতে চাচ্ছো।(জেরোন)
.
--প্রথমত আমার কাছেই রিয়েলিটি প্রিজম আছে। সুতরাং আমি আমার উপরে রিয়েলিটি স্পেল ব্লোক করার স্পেল ব্যবহার করতে পারি। এবং দ্বিতীয়ত আমি আমার উপরে আরেকটা স্পেল ব্যবহার করতে পারবো যেটা কিনা আমার কাছে কোনো ক্ষমতা থাকলেও লোকজন কোনো জাদু কিংবা কোনো বিজ্ঞানের যন্ত্রের সাহায্যে বুঝতে পারবে না। আর এ দুটো স্পেলই মিয়ারার পরের পদক্ষেপ থেকে আমাকে বাচাবে। আমাকে শুধু নাটক করে যেতে হবে।(আমি)
.
--তোমার জন্য একটা জিনিস আছে আমার কাছে।(লরা)
.
--কি জিনিস?(আমি)
.
--বাবা মারা যাওয়ার সময় আমাকে এই জিনিসটা টেলিপোর্ট করে নিয়ে আসতে বলেছিলো তোমার কাছ থেকে। আর আমি আমার ক্ষমতা দিয়ে সেটা টেলিপোর্ট করে নিয়ে আসি। মূলত আমার ক্ষমতা হলো যেকোনো জিনিস (শুধু জীবন্ত প্রানী বাদে) কে টেলিপোর্ট করা(লরা একটা রকেট আমার হাতে দিলো)
।।।।
।।।।
আমার সাথে আগে ঘঠে যাওয়া জিনিস আমি ভুলি নি। এখনো মনে আছে সেসব। রকেটটা হঠাৎ করেই হারিয়ে যায়। আর এখন বুঝতে পারলাম সেই রকেটটা কোথায় ছিলো। আমি সঠিক জানি না এটার মধ্যে কি ছিলো। কিন্তু যা ছিলো সেটা আমাদের কাজের জিনিস ছিলো। তাই তো জারা এই রকেটটাকে খুজেছিলো।
.
--দেখি রকেটটা একবার।(জেরোন)
.
--হুমমম। দেখো।(আমি)
.....
.....
আমি জেরোনের হাতে দিলাম রকেটটা। ও হাতে ধরতেই কিছু একটা হয়তো পেলো।
.
--আমার ক্ষমতা মূলত যে জিনিসকে আমি স্পর্শ করি সেটার সম্পর্ক হালকা ধারনা পেয়ে যায় আমি। আর রকেটটা ধরে আমি বুঝতে পারলাম। এই রকেটের মধ্যেই ছিলো মিয়ারার বন্ধ ক্ষমতা।(জেরোন)
.
--তাহলে তো যেভাবেই হোক জারা এটাকে খুলেছিলো। আর জারার কাছে মিয়ারার ক্ষমতা চলে আসে।(আমি)
.
--হ্যা হতে পারে। কিন্তু রকেটটা তো এখানে থাকার কথা ছিলো না। এই রকেট আমার গলাতে ছিলো।(হৃদিতা)
.
--তাহলে তোমার গলা থেকে এটা জারার কাছে কিভাবে গেলো?(আমি)
.
--আমি বলতেছি। আমার ক্ষমতা মূলত আমি যে কোনো জিনিসের অতীত আমার ইয়োগার মাধ্যমে দেখতে পারি। কিংবা কোনো জিনিসকে ধরলে তার আংশিক অতীত আমি বলতে পারি।(সুচিরান জেরোনের হাত থেকে রকেটটা নিয়ে)
।।।।
।।।।
অতীতের সুচিরান তো একবার বের করেছিলো এই রহস্য। কিন্তু সে মারা গেছে। কিন্তু তাতে কি আমাদের কাছে বর্তমানের সুচিরান আছে। আসলেই জিনিসটা প্যাচালো অতীতের কেউ যদি মারা যায় সে কিভাবে বর্তমান কিংবা ভবিষ্যতে বাচবে? কিন্তু জিনিসটা সময় এবং রিয়েলিটি নিয়ে হচ্ছে। আমরা যদি এই সময়েই থেকে যায় তাহলে যে বর্তমান থেকে আমরা সময় আসতে আসতে গেলে সে সময়ে যাবো না। কারন এমন কিছু আমার আগের অতীতে হয় নাই। সব কিছু রিয়েলিটি নিয়ে হচ্ছে। কিন্তু এই সময়ে যে আমাকে নিয়ে আসা হয়েছে। এই সময়ে তো আমি ছিলাম। এমন না যে এই সময়ে আমি এখানে ছিলাম না। সেই আমাকে কোথায় রাখা হয়েছে আমি বুঝতে পারতেছি না। নাকি জারা আমার এই সময়ের আমাকে অন্য কোনো সময়ে পাঠিয়ে দিয়েছে? সেটা হলে তো আরেকটা রিয়েলিটির উৎপন্ন হবে। হয়তো এই সময়ের হৃদয় এখন জলপুরীতেই আছে। আমার ভাবনা গুলো শুধু আমিই ভাবছিলাম না। বরং এগুলো হৃদিতাও ভাবছিলো। তাহলে এটা অনেক বড় সুযোগ হতে পারে আমাদের কাছে। হ্যা অনেক বড় সুযোগ। আমাদের দুটো রিয়েলিটির সুযোগ নিতে হবে। কারন এখানের হৃদয় এর কিছু হলে আমার কিছুই হবে না। এই রিয়েলিটি পুরো আলাদা হয়ে গেছে। এখন যদি আমি হৃদয় এর সামনেও যায় তারপরও বর্তমানে সে কোনো চেন্জ হবে না। কারন আমার অতীতে আমার ভবিষ্যতের হৃদয় কখনো আমার সাথে সামনা সামনি দেখা করতে আসে নি। তাই রিয়েলিটি নিয়ে যা কনফিউশন আমার ছিলো সেগুলো শেষ হয়ে গেছে। আপনাদের থাকলে একটু বইলেন? আমাকে কিছু বুঝতে না দিয়েই মিয়ারা আমার উপরে আক্রমন করেছিলো। এমন আক্রমন করেছে যার জন্য আমার সব চলে গেছে। আমি সাধারন জীবন চাইলেও কখনো এমন সাধারন জীবন চাই নি। আমি সাধারন জীবন চেয়েছিলাম আমার পুরো পরিবারের সাথে। আর সেটা এখন কোথায় সেটাই আমি বুঝতে পারতেছি না। মিয়ারার সম্পর্কে আমি তখন সম্পূর্ন জানতাম না। কিন্তু এখন অনেকটাই জানি। আমার কাছে পেনোরের ক্ষমতা এবং অনেক জ্ঞান আছে। এটা দিয়ে মিয়ারাকে হারাতে না পারলেও আমি আমার সব ক্ষমতা ওর দ্বারাই নিয়ে আসতে পারবো। এবং তারপর খেলা হব্বে।☺☺☺☺☺তো এখন বেশী করে লুচু গিরী করতে হবে জারার সাথে।🙄🙄🙄🙄
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।