#সিজন_৪#
পার্টঃ১৫
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
।।।।
।।।।
।।।।
আমি টাইম ট্রাভেল স্পেলটা ব্যবহার করলাম। সময়ের সবগুলো স্পেল আমার কাছে আসার পর আমি বুঝতে পেরেছি কি হয়েছিলো। সেই ভয়ঙ্কর চেহারার লোকটা যার চেহারা এসিড লাগলে যেভাবে ঝলসে যায় তেমন মনে হচ্ছিলো। আমার তখনকার যে স্পেলটা ব্যবহার করেছিলাম। যেটার ফলে সময় কিছুক্ষনের জন্য থেমে গিয়েছিলো সেই স্পেলটা মূলত টাইম ট্রাভেলের ছিলো। আর আমার সেই স্পেলের ফলে নিরাম্বা নামের সেই লোকটা চলে আসছে ভবিষ্যতের কোনো এক সময় থেকে। ব্যাপারটা প্যাচালো হয়তো ভবিষ্যতে আমি তার বড় একটা শত্রু। কিংবা আমার বড় শত্রু হবে সে। কিন্তু এখন আমাকে বর্তমান সময়ে যেতে হবে। তাই আমি আমার টাইম ট্রাভেল স্পেলটা ব্যবহার করলাম। এখানের অবস্থা যতটুকু ভেবেছিলাম তার থেকেও খারাপ। আমার কপি যার মধ্যে কেরেলা রয়েছে সে পুরো জাপান আর চীনের রাজত্ব দখল করে নিয়েছে। সেখানের মানুষদের নিজের গোলাম করে নিয়েছে। গনতান্ত্রিক এই পৃথিবীতে সে রাজ্য বানিয়ে নিয়েছে। জানি না তার চীন আর জাপানের উপরেই লোভ হলো কেনো? তবে একটা জিনিস ভাববার ডোনাল ট্রাম্প বোমা মারলো না কেনো? নাকি ডোনাল্ড ট্রাম্পও কেরেলার দলে? এসব বাদ দেওয়া যাক। আমার কাজ আমি করি। আমার কাজ হলো আমার বাসায় যাওয়া। আর আমি এখানে কোনো রিয়েলিটি চেন্জ করতে চাই না। এখানে রিয়েলিটি চেন্জ করলে সেটা ভবিষ্যতে প্রভাব ফেলবে। তাই আসল রিয়েলিটি যেটা আমি সেটাই রাখতে চাই। আমার কাছে টেলিপোর্ট হওয়ার নিজস্ব কোনো ক্ষমতা নাই। ব্লাক ম্যাজিক যখন আমার কাছে ছিলো তখনো আমি নিজেকে টেলিপোর্ট করতে পারতাম না। আমার তিন রাজ্যের যে তিনতা টেলিপোর্টেশন ডিভাইস ছিলো সেইটা দিয়েই আমার টেলিপোর্টের কাজ চলতো। কিন্তু এখন আমি কারো সাথেই যোগাযোগ করতে পারতেছি না।।
আমার সব যোগাযোগের মাধ্যম এখন বন্ধ। আমি হৃদিতা,সুচিরান এবং জেরোনকে রেখে এসেছি সেই অতীতের আলাদা রিয়েলিটিতে। আমাকে প্রথমে আমার কোলে থাকা বাচ্চাটা মানে আমার নিজের মেয়েটাকে ভালো একটা জায়গায় রাখতে হবে। ওর জন্য ভালো জায়গা আমার বোনের কাছে ছাড়া আর হবে না। কারন আমার বোনের কাছে কোনো ক্ষমতাই কাজ করে না। জানি না শুধু আমরা দুই বোনই এমন ক্ষমতা কেনো পেলাম আমাদের বাবা মা তো পেলো না। আমি বর্তমানে টাইম ট্রাভেল করে ঢাকার একটা জায়গায় এসেছি। আমার এখন ভয় নাই কারন এখানে তো আর আমার ক্লোন নাই। সে জাপান আর চীনে হামলা করেছে। আমি আমার বাতাসের ক্ষমতা ব্যবহার করে বাতাসের বেগে উড়তে লাগলাম। বাতাস আমাকে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আর আমার কোলে আমার মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে। ওর হাসিতে এতোটাই মায়া যে ওকে ছাড়া থাকতেই মন চাইবে না। কিন্তু ওর আমার কাছে থাকার চেয়ে হৃদির কাছে থাকা বেশী নিরাপদ হবে। আমি আমার বাসায় পৌছে গেলাম। বেশীক্ষন লাগলো না বাসায় পৌছাইতে। দরজায় বেল দিতেই ভিতর থেকে বাবা আর আম্মু বেরিয়ে আসলো আমাকে দেখে ভিতরে নিয়ে আসলেন এবং বলতে শুরু করলো
.
--কি হচ্ছে হৃদয় জাপানে আর চীনে নাকি হামলা হয়ে গেছে। কোনো ক্ষমতাবান মানুষ নাকি এসব করছে। মানুষের মুখে যা শুনতেছি তাতে তো আমার মনে হচ্ছে।(বাবা)
.
--তোর তো এতো বড় বড় রাজ্য আছে তাহলে তুই কেনো এই দেশের উপরে হামলা করতে গেলি?(আম্মু)
.
--আরে তোমরা ভুল বুঝতেছো। যে হামলা করেছে সে আমি নয়। বরং আমার ক্লোন। দারাও তোমাদের সব না বললে বুঝবে না। হৃদি কোথায় ওকে দেখছি না।(আমি)
.
--ওওও উপরে।(আম্মু)
।।।
।।।
হৃদিকে ডাক দিলাম। তিনজনই আমার হাতে বাচ্চা দেখে অবাক। হৃদি প্রথমে মেয়েটাকে কোলে করে নিলো। হৃদির কোলে যেতেই মেয়েটা হৃদির কোলে ঘুমিয়ে গেলো আস্তে আস্তে।
.
--নে সব খুলে বল এখন।(হৃদি)
।।।
।।।
আমি ওদেরকে সব খুলে বললাম। আমার সাথে কি হয়েছে কিভাবে এসব হচ্ছে সব।
.
--তাহলে এটা তোর মেয়ে? আর ওর মা মারা গেছে?(হৃদি)
.
--হুমমম।(আমি)
.
--আমি ভাবতেও পারতেছি না আমি ফুফি হয়ে যাবো😊😊😊। কিন্তু তুই ওকে এখানে আনলি কেনো? ওর তো আরো অনেক মা আছে।(হৃদি)
.
--দেখ ক্ষমতা শুধু আমার কাছেই নাই। তের কাছেও একটা ক্ষমতা আছে। তোর কাছে কোনো জাদু কিংবা কোনো শক্তিই কাজে দিবে না। আর এই মেয়ের ভিতরে অনেক ভয়ানক ক্ষমতা আছে আর সেটা ও আমার কাছে থাকলে কখনোই কন্ট্রোল করতে পারবে না৷ এজন্য আমি ওকে তোর কাছে রাখতে চাই। এতে ও ব্যাপারটা অনেক সাধারন ভাবে নিবে আর নিরাপদ থাকবে।(আমি)
.
--কিন্তু।(বাবা)
.
--কিন্তু কি বাবা?(আমি)
.
--তোর বোনেরও তো একটা জীবন আছে। ওকে বিয়ে করতে হবে। সংসার করতে হবে।(আম্মু)
.
--হুমমম করবে ও ওর মতো সংসার। তাই বলে কি আমার মেয়ের জন্য তোমাদের কাছে জায়গা হবে না?(আমি)
.
--সেটা না।(বাবা)
.
--আমি বিয়ে করবো না। আর হ্যা এটা তোর মেয়ে না এখন থেকে। ও আমার মেয়ে।(হৃদি এক নজরে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে)
।।।
।।।
বাবা আর আম্মু কিছুই বললো না। আমি সেদিনের দিনটা কাটালাম বাসায় সবার সাথে। নিজের রিয়েলিটির পরিবারটা আমার অনেক বদলে গেছে। বাবা আর আম্মু আমার সাথে সেভাবে কথা বলে না কারন তারা আমাকে নিজের মতোই ছেড়ে দিয়েছে। সব মায়া ত্যাগ করেছে। অবশ্য এটা আমার একটা স্পেলের জন্য। আমি চাই না আমার কিছুতে তারা দুঃখ প্রকাশ করুক। কিন্তু হৃদির উপরে আমার কোনো স্পেলই কাজ করে না। যত যায় হোক আমার বোন সব সময় আমার পাশে আছে এবং থাকবে। আমি রাতে ছাদে বসে ছিলাম। এমন হৃদি আসলো আমার কাছে।
.
--কি করিস এখানে একা একা?(হৃদি)
.
--কিছু কথা মনে পরে গেলো।(আমি)
.
--কি কথা রে?(হৃদি)
.
--আমি যে সময়ে গিয়েছিলাম সেখানে পুরো স্বাভাবিক ছিলো। এই আমার রাজা টাজা এগুলো কিছুই হয় নি। আমরা একসাথে ছিলাম সবাই।(আমি)
.
--এটা তো আগেও বলেছিস।(হৃদি)
.
--হুমমম। সেটা নিয়েই ভাবছি। জীবনটা এমন হলে কত ভালো হতো।(আমি)
.
--হুমমম। কিন্তু স্পাইডার ম্যান ছবি তো ঠিকই দেখেছিস। সেখানে নায়কের আঙ্কেল তাকে কি বলে মনে আছে? মহান ক্ষমতা মহান কর্তব্য নিয়ে আসে।(হৃদি)
.
--????(আমি)
.
--তোর এই ক্ষমতা গুলো শুধু তোর রাজ্য বাচানোর জন্য পাস নি তুই৷ এই পৃথিবীর সব জায়গায় কোনো না কোনো বড় অন্যায় হচ্ছে। তোকে সেগুলোর জন্য কাজ করতে হবে।(হৃদি)
.
--হুমমম। ও কি ঘুমিয়েছে?(আমি)
.
--হ্যা আমাকে মনে হয় নিজের মা মনে করে।(হৃদি)
.
--ওর খেয়াল রাখিস সব সময়।(আমি)
.
--হুমমম রাখবো সারাজীবন আমার মেয়ের মতোই।(হৃদি)
।।।।
।।।।
পরের দিন খুব সকালেই আমি টাইম ট্রাভেল স্পেল ব্যবহার করে আবার অতীতে চলে গেলাম। এতোক্ষনে হয়তোবা হৃদিতা আর সুচিরান বুঝে ফেলছিলো যে মিয়ারা মারা গেছে। হৃদিতাকে আমি অন্য মিশন দিয়েছিলাম। ওকে বলেছিলাম এই সময়ের যে হৃদয় ছিলো ওকে খুজে বের করতে। তাই আমি প্রথমেই জাপানের সেই সুচিরানের হোটেলে চলে আসলাম। সেখানেই হোটেলের কাউন্টারে আমার লরার সাথে দেখা। কোনো কথা না বলেই সে আমাকে তার সাথে করে আবার নিচের সেই রুমে নিয়ে আসলো। সেখানে আসার পর দেখলাম সবাই এখানেই। হৃদিতা আমাকে দেখেই বলতে শুরু করলো।
.
-- কালকে একটা বড় ধরনের এনার্জি ফিল করেছিলাম আমি। কিন্তু কিছুক্ষনের মধ্যে তোমার এনার্জি হারিয়ে ফেলি। আমি তোমাকে খুজতে বের হই কিন্তু কোথাও পাই নি।(হৃদিতা)
.
--কালকে একটা ভয়ঙ্কর জিনিস হামলা করেছিলো আমাদের উপরে। আর শেষ সময়ে জারা অনেক দুর্বল হয়ে যায়। সুযোগ বুঝে আমি ওর ক্ষমতা নিয়ে ওকে মেরে ফেলি।(আমি)
.
--সত্যি?(সুচিরান)
.
--হ্যা।(আমি)
.
--আমি সেই জিনিসটাকে এই সময়ের হৃদয়কে মারতে দেখেছি। জারা এই সময়ের হৃদয়কে লন্ডনের একটা জায়গায় রেখেছিলো আলাদা পরিচয়ে। সেই ভয়ানক লোকটা এই সময়ের হৃদয়কে মেরে হঠাৎ টেলিপোর্ট হয়ে চলে যায়। আমি ওটার ক্ষমতা দেখে অনেক অবাক হয়ে গেছি। এতো শক্তিশালী জিনিস আগে কখনো দেখি নাই।(হৃদি)
.
--হুমমম ওর নাম নিরাম্বা। মনে হচ্ছে সামনে আমাদের দুটো শত্রু আছে৷(আমি)
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।
অপেক্ষা করুন ১৬ তম পার্টের জন্য😊