#সিজন_3#
পার্টঃ১১
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
।।।।
।।।।
।।।।
এমন আশ্চর্যের জিনিস আগে কখনো আমার সাথে হয় নি। এই প্রথমই হলো। বুঝলাম না মেয়েটা কে ছিলো। কিন্তু কেমন জানি একটা নেশা ধরিয়ে দিয়ে গেছে আমার উপরে। মাথা সেই আকারে ঘুরতেছে। কোনো একটা স্বপ্ন ভেবে ব্যাপারটা বালিচাপা দিলাম। তা ছাড়া আর কি করবো। বাইরের খোজ খবর তো রাখতে হবে। আমি বাইরে আসলাম রুম থেকে। সবাই কি এখনো সেই জায়গাতেই আছে? জানি না সবাই পারেও হয়তো। নিজের কাছেই অদ্ভুদ লাগতেছে এদের অপেক্ষা করার শক্তি দেখে। আমি আবারো সেই জায়গাতেই চলে আসলাম।
.
--মহারাজ আমরা আপনারই অপেক্ষা করতে ছিলাম।(জিনিয়া)
.
--তো কি কি খবর বের করতে পেরেছেন?(আমি)
.
--অনেক কিছুই।(জিনিয়া)
.
--আপনার মুখ ঔভাবে চুপশে গেছে কেনো?(হৃদিতা)
.
--না এমনি।(আমি)
.
--না আপনার গলার কাছে কিছুটা জায়গা কালো হয়ে আছে কেনো?(হৃদিতা)
.
--আরে এসব নিয়ে পরে কথা বলা যাবে। প্রথমে বাইরের খবর নি। এখন আর আমাদের বসে থাকা চলবে না।(আমি)
.
--মহারাজ এলিয়েনদের সব স্পেশশীপ মিলে উপরেই একটা স্পেশ স্টেশন বানিয়েছে। তাদের সকল স্পেশশীপ সেখানেই। সেখানে হামলা করলেই তাদের ৫ ভাগের ৪ ভাগ শক্তিই শেষ হয়ে যাবে।(জিনিয়া)
.
--ঠিক আছে সেটা আমি নিজেই করতে পারবো।(আমি)
.
--আমরা তাদের বাকি সেনাদের হারিয়ে দিবো।(জিনিয়া)
.
--হুমমম আর সর্বশেষ লু চিন আর তার ছেলে আমার হাতেই মারা যাবে।(আমি)
.
--কিন্তু মহারাজ।(হৃদিতা)
.
--আবার কি?(আমি)
.
--যদি আপনার তিন রাজ্য আমাদের রাস্তায় আসে?(হৃদিতা)
.
--ওরা আসবে কেনো?(আমি)
.
--আপনি ভুলে গেলেন। আপনার অতীত এখন আরো অতীতে চলে গেছে। আর আপনার রাজ্য গুলোতে আপনার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে দিয়েছি। এজন্য আপনার তিনটা রাজ্যই সেনাপতি তিনজন রাজ করতেছে।(হৃদিতা)
.
--লু চিন কি তাদের খোজার ব্যবস্থা করতেছে না?(আমি)
.
--হ্যা সে অনেক চেষ্টা করতেছে এসব শক্তিবান সেনাগুলোকে খোজার।(হৃদিতা)
.
--তাহলে তিন রাজ্যই ভয়ে আছে। আর তাদের সেনা যদি পাঠায় ও তাহলে তো তিন রাজ্যের কিছুই রাখবো না আমি।(আমি)
.
--আপনার তিন রানীর মধ্যে দুই রানীই।(হৃদিতা বলতে গিয়ে আর বললো না)
.
--থামলে কেনো? বলো।(আমি)
.
--কি বলবো আপনি নিজ চোখেই দেখে নিন।(হৃদিতা)
।।।।
।।।।
দেখলাম বড় টিভির সামনে ভিডিও ফুটে আসলো। জলপুরী আর আকাশপুরীর ছবি। চোখ পরলো দুটোতেই। আসলেই বুঝলাম পরীদের তেমন মায়া দয়া থাকে না বেশী দিন। আমি মারা গিয়েছি তো কি হয়ছে তারা কি সিঙ্গেল থাকতে পারতো না। এখন বুঝেছি দুজনে এতো সহজে আমাকে কেনো ভালোবেসেছে। তাদের সেটা যে ভালোবাসা ছিলো না সেটা খুব ভালো করেই বুঝতে পারলাম। জারা আর মোহনা এখন নতুন দুই রাজ্যের রাজার স্ত্রী। তারা রানী হওয়ার লোভেই থাকে হয়তো। বলে না লোভে পাপ পাপে মৃত্যু। তারা সেটা হারে হারে বুঝতে পারবে।
.
--আর নিলা?(আমি)
.
--ওনাকে জোর করে পাতালপুরীর নতুন রাজা বিয়ে করতে চেয়েছিলো। কিন্তু উনি রাজ্য থেকে পালিয়ে যায়। আমি দেখেছি ওনার আপনার প্রতি খুব ভালোবাসা আছে তাই আমি তাকে নিয়ে দানবরাজ্যে আপনার বাবা মার কাছে রেখে আসছি।(হৃদিতা)
.
--এমন করবে জারা আর মোহনা আমি ভাবতেও পারি নাই। আসল বিষয়টা জানো কোথায়? জ্বীন পরীদের কখনো বিশ্বাস করতে নাই। এরা কখন কি করে তার ঠিক ঠিকানা নাই।(আমি)
.
--হুমমম।(হৃদিতা)
.
--মহারাজ আরো কিছুর দেখা দিয়েছে দুদিন থেকে।(জিনিয়া)
.
--কী সেটা?(আমি)
.
--একটা কস্টিউম পরা লোক। যে কিনা লুকিয়ে লুকিয়ে লু চিনের সেনার উপরে হামলা করছে।(জিনিয়া)
.
--সেটা তো অনেক মানুষেরই করার কথা।(আমি)
.
--উহু।।। তবে এটা বাতাসের সাহায্য নিচ্ছে। হাওয়ায় উড়তে পারতেছে। বাতাসকে যখন তখন আনতে পারছে আবার নিতে পারছে। জিনিসগুলো বাতাসের সাহায্যে উড়াতে পারতেছে।(জিনিয়া)
.
--বুঝেছি এটাই তাহলে বাতাসের ক্ষমতা পেয়েছে। তাহলে আগে এটার সাথে একটু কথা বলে আসি।(আমি)
.
--আপনি এই অবস্থায় বাইরে বের হবেন?(হৃদিতা)
.
--আমার কিছুই হয়নি।(আমি)
।।।।।
।।।।।
আমি বাইরে বের হলাম। নিজেই অবাক হয়েছি কারন আমার বুকে একটা কামড়ের দাগ দেখা যাচ্ছে। সেটা মনে হয় হৃদিতা দেখতে পেয়েছে। কিছু চিন্তা করছিলো ও। কিন্তু আমার ভাববার বিষয় হলো স্বপ্ন দেখেছিলাম সে জিনিসটা সেটা বাস্তব হয়ে গেলো কিভাবে। তাহলে ঔ মেয়েটা স্বপ্নের মাঝে আমার সাথে যা করেছিলো সেটা কি তাহলে সব বাস্তব হয়ে গেছে। সেটা হলে তো বেশ ভয়ানকই হবে। কিন্তু মেয়েটার লাভ হবে কি আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে সেটা আমি বুঝতে পারছিলাম না। যখন করলোই তাহলে আমাকে এভাবে কামড় দিলো কেনো আমি বুঝতে পারতেছি না। আর সেটা বাদ দিলেও এখন যে কামড়ের দাগে আমার বুকে রয়েছে সেটা থেকে চারিদিকেই কালো ছায়ার মতো কিছু একটা ছড়িয়ে পরছে। আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না কি হচ্ছে আমার সাথে। তবে এই জিনিসটা নিয়ে এতোটাও চিন্তিত না আমি যতটা না এই নতুন সুপারম্যানের খোজে এসে হয়েছি। ঠিকানা সঠিক জানি না। তবে আমাকে খুজতে হচ্ছে। নিজের চেহারা গোপন রাখার কিছুই নাই। এই কয়েকদিনে দাড়ি আর গোফ আবার বড় হয়ে গেছে। ঘুমালে নাকি এসব তাড়াতাড়ি বড় হয় শুনেছি। তাই আমাকে প্রথম দেখেই কেউ ভাববে না যে আমি হৃদয় টিটান। ভাবতে কিছুটা সময় লাগবে। আমি হাটতে লাগলাম সব জায়গা দিয়ে। সব বাড়িঘর ঠিক ঠাক মতোই আছে। কিছুরই ক্ষতি হয় নাই। সব মানুষ গুলোর কোনো ক্ষতিই করে নাই এলিয়েন গুলো। শুধু এরা নাকি এখানে রাজ করবে। এই পৃথিবীকে আরো সুন্দর করে গড়ে তুলবে তারা। এখানের সৌন্দর্য দেখার জন্য নাকি বাইরের গ্যালাক্সি থেকে প্রানীরা চলে আসবে। মানে পৃথিবীর ক্ষমতা আগে কয়েক দেশের মানুষের কাছে ছিলো। কিন্তু এখন একটা এলিয়েনের কাছে। আর এতে ৮০% মানুষই ভয়ে আছে। আর বাকি ২০% মানুষ হয়তো ভাবছে কিভাবে এদেরকে এখান থেকে বিদায় করানো যায়। আমি উপরে তাকিয়ে দেখলাম অনেক উপরেই একটা বিশাল স্পেশস্টেশন বানিয়েছে তারা। সেটার আকার অনেক বড়। তাদের হাজার হাজার স্পেশশীপ সেখানেই আছে। আর একটা বিশাল পাইপের মতো কিছু একটা ফেলে দেওয়া হয়েছে পানির মধ্যে। এটা দিয়ে মনে হয় পানি নিয়ে যায় তারা এখানে।
।
আমি এই মুহুর্তে দাড়িয়ে ছিলাম ফ্লোরিডার উপরে। এখানেই নাকি সেই বাতাসের ক্ষমতাবান সুপারহিরোকে পাওয়া যাবে। এখানেই শেষ দেখা গিয়েছিলো তাকে। আমি হাটতে হাটতে আশ পাশ দেখছিলাম। এমন মনে হচ্ছিলো কেউ আমার আশে পাশে আছে। কেউ আমাকে ফলো করছে। কিন্তু আমি তেমন কাউকে দেখতে পারছিলাম না। বুঝতে পারতেছি না আমার সাথে এমন জিনিস কেনো হচ্ছে। আগে কখনো হয়নি। এই জিনিসটা আমাকে অনেকটা দুর্বল করে দিচ্ছে। আমার কাছে এমন মনে হচ্ছে কালো শক্তিটা বার বার বের হয়ে আসতে চাইছে। চোখ বন্ধ করলেই মনে হয় কিলোরা আমাকে পেচিয়ে ধরার চেষ্টা করতেছে। বিষয়টা অনেক বেদনা দায়ক। আমি হাটতে ছিলাম। এমন সময় মনে হলো হঠাৎ বাতাস বইতে শুরু করলো। এতোক্ষন তো ঠিকই ছিলো। হঠাৎ বাতাস বইতে শুরু করলো মানে বুঝতে পারলাম ছেলেটা আশে পাশেই আছে। যে রোদ উঠেছে তাতে সবার অবস্থা টাইট গরমে। সবার শরীরেই ঘাম। যেহেতু তার কাছে বাতাসের ক্ষমতা আছে তাই সে ঘামবে না এটা আমি সিওর। কারন বাতাস তার কাছে সব সময়ই লাগবে। আমি আশে পাশে সবার দিকেই ভালো করে তাকালাম।হঠাৎ দূরে একটা নিগ্রো ছেলে দেখলাম আমি। এমনিতেই কালো মানুষ ঘামলে দূর থেকেই বোঝা যায়। এই গরমে সে ঠিকই আছে। তার চুলগুলোও বাতাসে উড়তে ছিলো। সে হাসতে হাসতে গান গাইতে গাইতে আসছিলো। আমি বুঝে গেলাম এটাকেই খুজতে ছিলাম আমি। এমনিতেও হৃদিতার কাছ থেকে কারো ক্ষতি ছাড়াই ক্ষমতাগুলো নিয়ে যাওয়ার স্পেল শিখেছি। ঠিক যেটা ব্যবহার করে হিগমা সিগমার কাছ থেকে ক্ষমতাগুলো নিয়ে গিয়েছিলো। আমি দাড়ালাম তার সামনে। প্রথমে কিছুটা কথা বলা যাক।
.
--কি হলো আপনি এভাবে আমার সামনে দাড়িয়ে আছেন কেনো?(লোকটা)
.
--কিছু কথা ছিলো।(আমি)
.
--কি বলবেন?(লোকটা)
.
--আড়ালে গেলে ভালো হয় না?(আমি)
.
--আপনি কে যে আপনার সাথে আমার আড়ালে যেতে হবে।(লোকটা)
।।।।
।।।।
আমি আমার হাত টা আগুনের করে ফেললাম। কেউ মনে হয় দেখলো না। লোকটা দেখে কিছুটা ভয় পেয়ে গেলো। তাই আমার সাথে চলে আসলো। আমি একটা নির্জন জায়গায় চলে আসলাম।
.
--আপনি আমাকে এখানে নিয়ে এসে কি বলবেন বলুন আমার কাছ আছে।(লোকটা)
.
--কাজ তো আমার ও অনেক আছে। তার আগে আপনার কিছু ক্ষমতা তো দেখে নেওয়া যাক।(আমি)
.
--কে আপনি বলুন তো।(লোকটা)
.
--আমি কে সেটা নাহয় পরেই বলবো।(আমি)
।।।
।।।
আমার স্টাইলটা দেখে লোকটা একটু ভয় পেয়ে গেছে। যখন দেখেছে আমার হাত দিয়ে আগুন জ্বলতে তখন আর কিছুই বললো না তেমন। ও ওর পাওয়ার গুলো আমাকে দেখাতে লাগলাম। বাতাস যে এতোটা শক্তিশালী হবে সেটা আমি আগে কখনো কল্পনাও করি নি। কিন্তু এটা আমার ক্ষমতার কাছে তেমন কিছুই না। জিনিসগুলো বাতাসে উড়ানো এটা আমার কাছে একটুও ভালো লাগলো না। তাই এর ক্ষমতা নিজের করার কোনো ইচ্ছায় নাই। তবে এটাকে আমার হারকিউমাস সেনায় নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা আছে।
.
--আপনি কি করতে পারেন।(লোকটা)
.
--আমি?(আমি)
.
--হ্যা।(লোকটা)
।।।।
।।।।
পাশে একটা ছোট পানির বোতল পরে ছিলো। আমি সেখানের পানি উঠিয়ে নিয়ে আসলাম এক হাত দিয়ে আরেক হাতের বুড়ো আঙ্গুল আর শাহাদাত আঙ্গুল দিয়ে তুলি মারলাম একটা সাথে সাথেই একটা আগুনের বল হয়ে গেলো। লোকটা দেখে অবাক হয়ে গেলো। কারন এভাবে হয়তো ভাবে নি কেউ পানি আর আগুনের ক্ষমতা একসাথে ব্যবহার করতে পারবে। কিন্তু এটা শুনলে বেহুস হয়ে যাবে যে আমার কাছে ৫ ধরনের ক্ষমতা আছে।
.
--আচ্ছা আপনি তো একা এভাবে যুদ্ধ করতেছেন এলিয়েনদের বিরুদ্ধে। আমার কাছে আপনার মতো ক্ষমতাধারী একটা সেনা আছে। আপনি চাইলে আমাদের সেনায় চলে আসতে পারেন।(আমি)
.
--অবশ্যই।(লোকটা রাজি হয়ে গেলো)
।।।।
।।।।
আমার সাথে হ্যান্ডসেক করলো লোকটা। সাথে সাথেই দেখলাম কোথা থেকে উড়ে একটা কালো ছায়া চলে আসলো। আর সেটা থেকে মুখে স্কার্ফ পরা সেই মেয়ে হয়ে গেলো। আমি সামনে থেকে দেখে পুরো অবাক হয়ে গেলাম। কারন আমার স্বপ্নের মেয়ে বাস্তবে চলে আসছে। মেয়েটা পাওয়ার নেওয়ার সেই স্পেলটা বললো আর কালো লোকটার বুকে হাত দিলো সাথে সাথে কালো লোকটা বেহুস হয়ে গেলো। আর মেয়েটাও একটা মুচকি হাসি দিয়ে উদাও হয়ে গেলো আমার সামনে থেকে।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।।
অপেক্ষা করুন ১২ তম পার্টের জন্য।