#সিজন_3#
পার্টঃ০৬
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
।।।।
।।।।
।।।।
আমি ওদেরকে নিয়ে আসলাম নষ্ট টাইমমেশিনটা যেখানে ছিলো সেখানে। পানির উপরে আমরা উড়ছিলাম। দুজনে আমার দিকে তাকালো
.
--পানির নিচেই মনে হয় আছে সেই শক্তিটা। আপনারা পানির নিচে চলুন। তবে লাইট জ্বালাবেন না। তাহলে হয়তো সেটা পালিয়ে যেতে পারে। রাস্তা আমার জানা আছে। আমার বলা মতো যেতে থাকুন।(আমি)
.
--ঠিক আছে(ইন)
।।।।
।।।।
ইন সাহেব তার স্পেশশীপটা পানির নিচে নিয়ে গেলো। আমার বলা মতো সে লাইট বন্ধই রেখেছে। এটাই তো আমার দরকার। লাইট জ্বলালে তো তারা পুরো খেলাটাই বুঝে যাবে। স্পেশশীপটা নষ্ট টাইমমেশিনের পাশেই আমি ল্যান্ড করালাম। তারপর আমি আমার টাইম লক বানালাম। আমার কাছে মাত্র এক মিনিট সময় আছে। আমি প্রথমেই দু হাত বারিয়ে পুরো এলাকার পানি সরিয়ে দিলাম। পানি সব সরে গেলো। আমি স্পেশশীপের দরজা খুললাম পাশে থাকা লাল বোতামে চাপ দিয়ে। খোলার পরই নষ্ট টাইমমেশিনের কাছে চলে আসলাম। সেটার উপরে আমার জাদুর ক্ষমতা দেখলাম। সাথে সাথে সেটা উড়তে শুরু করলো। উড়তে উড়তে সেটা চলে গেলো স্পেশশীপের ভিতরে। আর ভিতরের টা বের করলাম আমার জাদু দিয়ে। যেখানে নষ্টটা ছিলো সেখানেই রাখলাম ভালো টাইমমেশিনটা। সেটাকে সেখানে রেখে একটা অদৃশ্য জাল দিয়ে আটকে দিলাম আমি সেটাকে। এখন এটাকে আমি ছাড়া কেউই দেখতে পারবে না।
।
এই ক্ষমতাটা আমার অনেক ভালো লাগে। কারন আমি যে কোনো জিনিসকেই অদৃশ্য করে দিতে পারি। কোনো জিনিস যদি গোপন রাখতে চাই তাহলে এই ক্ষমতা অনেক কাজের জিনিস। সেই সাথে একটা ওয়াটার প্রুফ ঢালও আমি টাইমমেশিনের উপরে বানিয়ে রাখি। এতে করে পানি মেশিনটাকে নষ্ট করতে পারবে না। আরো কিছু ক্ষমতা আছে যেগুলো আমার জানা হয়েছে। সেগুলো তো পরে সময় মতো ব্যবহার করলেই জানতে পারবেন। সব জিনিস যেভাবে ছিলো আবার সেভাবেই করে দিলাম। পানি আবার আমাদের উপরে এনে ফেললাম। সময়ও শেষ। আমি এসে আবার যেখানে দাড়িয়ে ছিলাম সেখানে আসলাম। সেখানে আসার পরই আমার বানানো টাইম লক শেষ হয়ে গেলো। আবার সময় সময়ের মতো চলতে লাগলো।
.
--তো আমরা এখন কোথায় যাবো?(ইন)
.
--লাইট জ্বালিয়ে দেখেন এখান থেকেই হয়তো সেই শক্তি দেখা গিয়েছিলো।(আমি)
।।।।
।।।।
ইন সাহেব তার স্পেশশীপে থাকা বিশাল লাইট জ্বালালো। পুরো পানির এলাকা আলোকিত হয়ে গেলো। কিন্তু তারা তাদের টাইমমেশিন দেখতে পাচ্ছে না। না পারায় ভালো হয়েছে। নষ্টটা নিয়ে তারা মেরামত করিয়ে নিতে পারবে। এতে আমার ও লাভ হলো। আর তাদেরও ক্ষতি তেমন হলো না।
.
--এখানে তো কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। আমাদের এনার্জি মিটারেও তো তেমন কিছু আসছে না।(ইন)
.
--তাহলে মনে হয় আমার দেখার ভুল ছিলো। সেদিন মাছ মারতে এসে আমি এখানে আলো দেখেছিলাম।(আমি)
.
--হয়তো এখান থেকে চলে গেছে। আচ্ছা আপনার সাথে পরিচয় হয়ে ভালোই লাগলো। আমরা ধারনা পেলাম এখানের জনগন সবাই অনেক ভালো আপনার মতোই। আমরা আজকে চলে যাচ্ছি কিন্তু আবার আসবো আমাদের সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তিগুলো নিয়ে।(ইন)
।।।।।
।।।।।
আরো কিছু কথা বলে ইন সাহেব তার বউকে নিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন। আমি তাকিয়ে ছিলাম তাদের বিদায়ের দিকে। আমার তো এখন নেপচুনে যাওয়ার অনেক ইচ্ছা জাগতেছে। কিন্তু মনের মধ্যে একটা শান্তির হাসি হাসলাম আমি। কারন আমি আমার কাঙ্ক্ষিত জিনিসটা পেয়ে গেছি। এটার জন্যই আমি এতোদিন আটকে ছিলাম এখানে। তাহলে আমার শেষ দিন চলে এসেছে এখানে। কিন্তু আমি এখান থেকে তো এভাবেই কাউকে না জানিয়ে চলে যেতে পারি না। আমাকে সবাইকে বলে যেতে হবে।
।
আমি চলে আসলাম সিগমার রাজপ্রসাদে উড়ে। একবারে প্রাসাদের উপরে এসে নামলাম। কারন এখানেই সিগমা দাড়িয়ে ছিলো। সিগমার আমাকে দেখে বুকে জড়িয়ে নিলো।
.
--মহারাজ আমার পুত্রসন্তান হয়েছে।(সিগমা)
.
--তাহলে আপনি এখানে কেনো? এই সময়ে তো আপনার স্ত্রীর সাথে থাকা প্রয়োজন।(আমি)
.
--বড় রানী আর ছোট রানী দুজনেই আমাকে সেখানে ঢুকতে দিচ্ছে না। তারা দুজনেই আপনার অপেক্ষা করতে বলতেছে আমাকে।(সিগমা)
....
।।।
আমি তো বলতেই ভুলে গেছি। হৃদিতা ওর বাবা আর বোনের কাছে একজনের শরীরে গিয়ে নিজের পরিচয় দিয়েছে। নিজের কথাটা বলেছে। প্রথমে হিরোনাস বিশ্বাস করে নাই। কিন্তু হৃনিতা ঠিকই বিশ্বাস করেছে। পরে হিরোনাসও বিশ্বাস করেছে। সিগমাকে আমিও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। সিগমার সাথে কুশল বিনিময় করলাম কিছুক্ষন তারপর তার ছেলেটাকে দেখার জন্য দুজনেই আগালাম। এতোক্ষনে সিগমাকে আমি আমার সব কথা বল্লাম। আমি কোথা থেকে এসেছি কেনো এসেছি। আর এখান থেকে চিরদিনের জন্য চলেও যাবো সেটাও বল্লাম। সিগমা শোনার সাথে সাথেই কোনো প্রশ্ন ছাড়াই আমার কথাগুলো বিশ্বাস করে নিলো। আমার প্রতি ওর এতো বিশ্বাস আমার ভালোই লাগে। এমন বিশ্বস্ত বন্ধু যদি আমার রাজ্য গুলোতে থাকতো তাহলে আমার এমন দিন আসতো না। আমি আর সিগমা দুজনেই ভিতরে ঢুকলাম। আমার হাতেই প্রথমে হৃদিতা তুলে দিলো সিগমার সন্তান। আমি দেখতে লাগলাম ছেলেটাকে। দেখতে তো আমার মতোই হয়েছে। জানি না বড় হলে কয়টা বিয়ে করবে। আমি কিছুক্ষন কথা বল্লাম। তারপর সিগমার হাতে তুলে দিলাম।
.
--মহারাজ। আপনিই একটা নাম দিয়ে দিন আমার সন্তানের।(সিগমা)
.
--আমি নাম দিবো?(আমি)
.
--হ্যা মহারাজ। এই সব কিছু তো আপনার জন্যই আমরা পেয়েছি। সেই চরম পাওয়ার মাঝে আমাদের এই সন্তানও। তাই এর নাম আপনিই ঠিক করে দিন।(হৃনিতা)
.
--আচ্ছা দেখতে অনেকটা আমার মতোই হয়েছে। তাই এর নাম হবে হৃদয়।।।।।(আমি)
.
--অনেক সুন্দর নাম।(সিগমা)
।।।।
।।।।
সবাই কিছুক্ষন গল্প করলাম। গল্প করার পর আমি হৃদিতাকে নিয়ে সেখান থেকে চলে আসলাম। আসার কারন হলো আমার প্রস্থান করা।
.
--আমি টাইমমেশিন পেয়ে গেছি। এবার আমার ফিরে যাওয়ার সময় হয়ে আসছে।(আমি)
.
--ওওও। তাহলে তো ভালোই হলো।(হৃদিতা মন খারাপ করে বললো)
.
--কি হলো মন খারাপ হয়ে গেলো যে?(আমি)
.
--আরে না। এমনি একটু খারাপ লাগছে যে আপনি চলে যাবেন তাই। আমাকে তো অপেক্ষা করতে হবে আপনার জন্য দুই হাজার বছর।(হৃদিতা)
.
--দেখবে দেখতে দেখতে কেটে যাবে বছর গুলো।(আমি)
.
--আপনার কাছে এটা বলা সহজ কিন্তু আমার কাছে নয়। আপনি তো সেই সময়ে গিয়েই আমাকে কাছে পাবেন। কিন্তু আমাকে তো অপেক্ষা করতে হবে এতোগুলো বছর।(হৃদিতা)
.
--তুমি অশরীরি হয়ে গেছো। নাহলে তো তোমায় আমি সাথে করেই নিয়ে যেতাম। কিন্তু সেটা এখন হয়তো হবে না। তুমি কারো শরীরের মাঝে ঢুকে আসলেও শুধু সেই শরীর যাবে কিন্তু তুমি যেতে পারবে না।(আমি)
.
--সমস্যা নাই। আমি আপনার জন্য অপেক্ষা করবো আমার সারাজীবন।(হৃদিতা কেদে দিলো)
।।।
।।।
আমি ওকে কিছু কাজ দিলাম। সেগুলোর মধ্যে একটা হলো জলপুরী পুরানো রাজা হ্যারিকাসের কাছে যেভাবেই হোক আমার একটা বার্তা পাঠিয়ে দিতে। রাজ্য আমি তার কাছেই দিয়ে গেলাম। এটাকে সুষ্ঠ ভাবে যেনো সে পরিচালনা করেন। আরো কিছু কথা আমি হৃদিতাকে বল্লাম। সেগুলো পরে জানতে পারবেন। আমি হৃদিতার সাথে চলে আসলাম সেই টাইমমেশিনের জায়গাতে। আমি এতোই উত্তেজিত যে বাকি জিনিসের প্রতি আমার কোনো খেয়াল নাই। আমাকে যেতে হবে আমার সময়ে। বাকি জিনিস পরে দেখা যাবে। আমি আগে আমার সময়ে ফিরে যায়। আমি আর হৃদিতা উড়ে চলে আসলাম সেই টাইমমেশিন যেখানে আছে সেখানেই। পানি সরিয়ে দিলাম আমি। আমার অদৃশ্য করা জালটা সরিয়ে দিলাম।
।
এমনিতেও রাত হয়েছে অনেক। তাই হৃদিতা সে মেয়েটার শরীর থেকে বের হয়ে এসেছে আমার সাথে। এখন তো ওকে স্পর্শ করতে পারবো আমি। ওর জন্য বিশাল সময় হবে কিন্তু আমার ক্ষেত্রে তো মাত্র কিছু সময় লাগবে। আমি টাইমমেশিনের মধ্যে বসলাম। সময় ঠিক করলাম সেই এলিয়েনের হামলার এক সপ্তাহ আগের। আমি ওর হামলার এক সপ্তাহ আগে সেখানে যেতে চাই। কেনো জানি নিজের যুদ্ধই নিজের আবার দেখতে মন চাচ্ছে। কিভাবে হেরেছিলাম সেটাও আমার দেখতে খুব মন চাচ্ছে। যদি টাইমমেশিন আরেকটা থাকতো তাহলে ভালোই হতো। আমি ভবিষ্যৎ এ শান্তি মতো থাকতে পারতাম। হৃদিতা আমার হাতটা শক্ত করে ধরলো। কিছুক্ষন চোখ বন্ধ করে রাখলো ও। বুঝলাম কিছু একটা করেছে। হয়তো ওর শক্তির ব্যবহার করেছে ও। এরপর আমার কপালে একটা চুমু দিলো ও। ওর চোখের পানি পরতেছিলো। আমি সেগুলো মুছে দিলাম।
.
--আজ থেকে ২ হাজার বছর পর তাহলে এখানেই দেখা হচ্ছে তোমার সাথে।(আমি)
.
--হ্যা। আপনার জন্য আমি এখানেই অপেক্ষা করবো।(হৃদিতা)
।।।।
।।।।
আমি টাইমমেশিনের লাল বোতামে চাপ দিলাম। ঠিক তখনি আমার মনে পরলো যে আমি তো একটা কাজ করতেই ভুলে গেছি। সেটা হলো আমাকে তো আমার অতীতের জন্য সব কিছু সাজাতে হবে আবার। সেই মন্দিরের মতো জিনিসটা বানাতে হবে। সেখানে দরজা বানাতে হবে। সেখানে বই রাখতে হবে। আবার এই টাইমমেশিন রাখার জায়গাটাও তো বানাতে হবে। জানি না এখন সেই জায়গায় কি বানানো আছে। সেটা তো বালির নিচে ছিলো। তাহলে কি আমি বালির নিচে চলে আসবো এখন। আল্লাহই ভালো জানে কি হয় আমার সাথে। ১ মিনিটের মতো লাগলো টাইম ট্রাভেল করতে। আমি চলে আসলাম বর্তমান সময়ে। ভেবেছিলাম হয়তো আমার সেই সময়ে আবার যেতে হবে সব কাজ করতে আবার। কিন্তু না আমি যেখান থেকে গিয়েছিলাম আবার ঠিক সেই জায়গাতেই চলে আসছি। অনেক অবাক হলাম কারন সেই জায়গাতেই আমি চলে আসছি। কিন্তু এটা সম্ভব কিভাবে। আমি তো এটা তৈরী করি নাই। তাহলে এটা কিভাবে আসলো। আমার মাথায় কিছুই আসতে ছিলো না।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।
অপেক্ষা করুন ৭ম পার্টের জন্য।