#ভালোবেসেছি_তোরই_মতো
#পর্বঃ১৫
লেখিকাঃ #শাদিয়া_চৌধুরী_নোন
নোরিন চিৎকার না করলেও চোখ বেয়ে পানি পড়ছে। নিবিড় নোরিনের সহনশীলতা দেখে অবাক। এতো ব্যাথাও কেউ সহজে মেনে নিতে পারে? দেখে মনে হবে যেন শুধু মাথায় বারি খেয়েছে।
সবার মাঝে নোরিনের গাছ থেকে পড়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই, আতঙ্ক ছড়িয়ে পরলো। নোরিনের বাবার কানে এই খবর পৌঁছলে তিনি তুলকালাম কান্ড বাঁধাবেন। একমাত্র মেয়ে তার৷ গায়ে সামান্য আঁচড়ও লাগতে দেন না। একবার তো দিলারা নোরিনকে মেরেছিলো বলে, তিনদিন পর্যন্ত রাগ করে ছিলেন। নানুমণি উত্তোজিত হয়ে পরলো ভীষণ,
---- আমার সুন্দরী বানু গাছ থেইকা পড়লো কেমনে? আমার বাছাটা! ঘরে মানুষ ছিলো না? মা ছাড়া মাইটারে তোমরা দেইখা রাখলা না? কত আর বয়স! আমার নোর রে.....!! আজমল শুনলে আর এখানে থাকতে হবে না।
নানুমণি কথা বলতে বলতে একেবারে কেঁদে দিলেন।
এপার্টমেন্টের নিচে নিবিড়ের মা হলুদের বাটি নিয়ে গেলো। নোরিন ঠোঁট কামড়ে হালকা গোঙাচ্ছে। নাক লাল হয়ে গেছে। নিবিড় এখনো শার্ট উপরে তুলে আছে। নোরিনের অবস্থা খারাপ। নিবিড়ের মা তেমন কিছুই করলেন না৷ স্বাভাবিক ভাবে এসে হলুদ গুঁড়ো লাগিয়ে দিলেন। নোরিনকে নড়তে দেখেই বললেন,
---- মামণি লজ্জা পেতে হবে না। বাচ্চা মেয়ে। এতো লজ্জার কিছু নেই৷
নোরিন ভেতরে গুড়গুড় হয়ে যাচ্ছে। কিছু বলতে পারছে না। নিবিড় এভাবে থাকলে, ও তো আর নিজেকে ধরে রাখতে পারবে না। ক্রমশই ভেঙে পড়বে।
নিবিড় তার মা'কে উদ্দেশ্য করে বললো,
---- ও'কে হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে। এভাবে হবে না৷ একটা এক্স-রে করিয়ে আনলে ভালো হবে।
নোরিন মনে মনে নিবিড়কে গালি দিলো, ব্যাটা আমি তোকে এক্স-রে মেশিনে ঢুকাবো। আস্ত একটা কলুরবলদ। তখন পেছন থেকে ডাকলি কেন? আমিতো তোর ডাক শুনে ভয়ে পড়ে গেছি। তুই যদি কোনোদিন গাছে উঠিস, আমি তোকে ধাক্কা মেরে একেবারে ভূত বানিয়ে দেবো।
নিবিড় পাঁজকোলে করে নোরিনকে গাড়ি অব্দি নিয়ে গেলো। জেরুও গেলো। নোরিন আকুল স্বরে নিবিড়ের মায়ের অর্থাৎ মিসেস আয়েশার হাত ধরে বললেন,
---- প্লিজ আপনি আমার চলুন। আমি বাবাকে ছাড়া কোনোদিন হসপিটাল যাইনি। আমার ভয় করছে।
মিসেস আয়েশার চোখে জল চলে এলো। মা হারা মেয়েটাকে পরম মমতায় বুকে জড়িয়ে ধরলেন।
--- মামনি ভয় পেয়ো না। বিয়েবাড়ি না হলে আমি অবশ্যই যেতাম৷ এতো ঝামেলা, বাড়ি ভর্তি আত্মীয় আমাকে একা সামলাতে হচ্ছে। তোমার নিবিড় ভাইয়া একটু দুষ্টু হলেও সামলাতে পারবে। তুমি যাও মা,ভয় পেয়ো না।
মিসেস আয়েশা কেঁদে কেঁদে বিদায় দিলেন। নোরিনের জন্য কষ্টে বুকটা ফেটে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। আহা এতো মিষ্টি একটা মেয়ের নাকি মা নেই। চোখের দিকে তাকালেই মায়া হয়। কেমন করে হাত ধরে ছিলো! ভয় পেয়েছে খুব।
গাড়িতেও নোরিন কাঁদল। ব্যাথায় নয়, মায়ের জন্য। মা'কে ভীষণ মনে পড়ছে। মা'কে শেষবিদায় হাসপাতালেই দিয়েছিলো। মা হাসপাতালের বেডে শুয়ে তার হাত ধরে ওয়াদা করিয়েছিল। নোরিনের সেই মুহূর্তটা এখনো চোখে ভাসে। দিলারা নোরিনের হাত ধরে বলছিলো,
---- মা'রে আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। আমি বোধহয় আর বাঁচব না। আমার জানটাকে আমি পৃথিবীতে রেখে যাচ্ছি। আমার মেয়েটা যে তার মা'কে ভীষণ ভালোবাসে। শুধু মায়ের কথায় শোনে।
নোরিন কান্না জন্য কথা বলতে পারছিলো না৷ মায়ের প্রত্যেকটা কথা তার কলিজা এফোঁড়ওফোঁড় করে দিচ্ছিলো। দিলারা বলেই যাচ্ছিল,
--- নোরিন, মা যদি না থাকি, কথা দাও ভালোমতো পড়ালেখা করবে? বড় হয়ে অনেক বড় কিছু করবে। নিজের নামে বড় হবে। কখনো অন্যের দয়ায় চলবে না৷ বাবার সাথে থেকো। আমিও না থাকলে, তোমার বাবা ভীষণ একা হয়ে পড়বে। ভালোমতো চলবে। মায়ের দোয়া সবসময় তোমার সাথে আছে৷ আমাকে গালি শুনিও না কোনোদিন, তোমার নামের সাথে যেন আমাদের নামও উজ্জ্বল হয় একদিন। পরকালে আমি তোমার কাছে হিসেব চাইবো। মা'রে আমার প্রাণটাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। আমাকে শক্ত করে ধর।
দিলারার সারা শরীর থরথর করে কাঁপতে লাগলো। নোরিন কি করবে বুঝতে পারছিলো না। আজমল সাহেব দিলারার অন্য হাত শক্ত করে ধরেছিলেন৷ কিছু সময় পর দিলারা নোরিনকে মা হারা করে চলে গেলো৷ নিজের মায়ের মৃত্যু চোখের সামনে সহ্য করতে পারেনি নোরিন৷ জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। সেই থেকে হাসপাতালে আসতে নোরিন ভয় পায়। আসলেও শক্ত করে বাবার হাত ধরে আসে যেন এই বুঝি বাবাকে অথবা ওকে কেউ নিয়ে গেলো। মায়ের বেলাতেই নোরিনের যত পাগলামি!
এতোদিন পর এতোসব কথা মনে পড়ায় নোরিন কান্নার গতি বেড়ে গেলো। মান-অভিমান, স্মৃতিকাতরতা, ভয়, রাগ, দৃঢ় প্রত্যয় সব যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে গেলো৷ জেরু কিছু বলেও শান্ত করতে পারলো না। নিবিড় ড্রাইভিংয়ে মনোযোগ দিতে পারছে না৷
--- বুড়ি কাঁদিস না। তুই ভালো হয়ে যাবি। কেনো এতো পাকনামো করে গাছে উঠতে গেলি বলতো? এখন কি হলো। প্লিজ কাঁদিস না৷
নোরিনের হুঁশ হলো। চোখ মুছে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে রইলো। এই নিষ্ঠুর লোকের সামনে কিছুতেই দুর্বল প্রমাণ করা যাবে না৷ জেরু পেছন থেকে মৃদু চিৎকার করলো,
--- একি নিবিড় ভাইয়া কাঁদছো কেনো?
---- কই কাঁদছি? সূর্যের আলো চোখ বরাবর পরছে। চশমা আনিনি তাই পানি পরছে।
এক্স-রে রিপোর্টে দেখা গেলো,পা ভাঙেনি তবে চোট পায়েছে নোরিন। শুধু একটু মচকে গেছে তবে ভাঙেনি। ডক্টর সেখানে একটা পেঁচানো ব্যান্ডেজ করে দিলেন। মেরুদণ্ডে ব্যাথার জায়গায় স্প্রে করে ওষুধ দিলেন কিছু। নোরিন জেরুর গায়ে ভর দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চললো বাকিটা সময়৷ নিবিড়কে ধারে কাছেও ঘেঁষতে দেয়নি৷
রাতে নোরিনের গা কাঁপিয়ে জ্বর এলো। জ্বর এলে সে হুঁশে থাকে না৷ স্বপ্ন নাকি বাস্তব সব গুলিয়ে ফেলে। রাত ক'টা বাজে জানা নেই তার। নোরিন চোখ আদোআদো চোখ মেলে দেখলো, নিবিড় তার শিয়রের পাশে বসে আছে। নোরিনের প্রচন্ড অভিমান হলো। মাঝেমধ্যেই তো সে দেখে নিবিড় তার পাশে বসে আছে। আজ এতো দেরি কেন হলো?
-- নিবিড় আমার গায়ে একটু হাত দিয়ে দেখো তো, জ্বর এসেছে বোধহয়।
নিবিড় কপালে হাত রাখলো।
নোরিন আবার অভিযোগের সুরে বললো,
--- একি এতো দূরে বসেছো কেনো? আমার পাশে এসে বসো। আমি কি তোমার পর নাকি?
নিবিড় নড়লো না৷ নোরিন এবার নিবিড়ের হাত ধরে টানতে লাগলো। নিবিড়ের ঘড়ি খুলে ফেললো৷ শার্টের কাছে হাত রাখতেই নিবিড় কথা বললো,
--- নোরিন এমন করিস না প্লিজ। সর্বনাশ হয়ে যাবে। সর্বনাশ হয়ে যাবে বলছি।
--- আমি কিছু জানি না নিবিড়! আমার তোমাকে চাই। এক্ষুনি!
--- নোরিন পাগলামি করিস না। শেষ হয়ে যাবো।
--- শেষ হয়ে যেতে চাই নিবিড়৷ একেবারেই শেষ হয়ে যেতে চাই৷
.
.
সকাল হলো। নোরিনের ঘুম ভাঙলো খুব সকালে। মাথা চেপে শোয়া ছেড়ে উঠে বসলো। সারা শরীর ঘামে চিটচিটে হয়ে আছে। জ্বর আর নেই। তবুও মাথাটা ভারভার লাগছে। নোরিনের হঠাৎ কাল রাতের সব কথা মনে পড়ে গেলো। মাথা চেপে ভাবতে লাগলো, নিবিড় কি সত্যি এসেছিলো কিনা বাস্তবে? নোরিন লজ্জায় কুঁকড়ে গেলো৷ প্লিজ গড! এটা যাতে স্বপ্ন হয়। নোরিন হাসফাস করতে করতে দেখলো, বিছানার এককোণে একটা ঘড়ি। এটা তো নিবিড়ের কালো রোলেক্স ঘড়িটা। নোরিনের মাথায় যেন বাজ পড়লো। গায়ের রক্ত হিম হয়ে গেলো মুহূর্তেই। নোরিন আর এক মুহূর্ত দেরি করলো না। রাতের গায়ে দেওয়া স্লিপিং স্যুট নিয়েই ট্রলি ব্যাগ গুছিয়ে আধ মচকানো ব্যান্ডেজ বাঁধা পা দিয়ে খোঁড়াতে খোঁড়াতেই নিবিড়দের বাড়ি ত্যাগ করলো। পোশাক পাল্টানোর সময় নেই। রাস্তায় লোকে যা বলবে বলুক, নোরিনের কিছু যায় আসে না তাতে। আগে এই বাড়ি থেকে চলে যেতে হবে। আর জীবনে আসবে না এখানে। বাড়ির সবাই গভীর ঘুমে মত্ত। নোরিন এক কাজের লোককে বলে এলো,নিচে তার বাবা এসেছে। নানুমনি জাগলে বলতে।
নোরিনকে খোঁড়ানো পা নিয়ে ট্রলি ব্যাগ বইতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হলো। রাস্তায় এসে রিকশা নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছালো। লোকাল বাসে উঠেই, ড্রাইভারকে ফোন করলো। বাবাকে পায়ের কথা জানতে দেওয়া যাবে না৷ গুগল মেপ ঘেটে নোরিন নির্দিষ্ট জায়গায় গাড়ি নিয়ে আসতে বললো ড্রাইভারকে। বাবা একটু পরেই অফিসে চলে যাবে৷ সরকারী গাড়ির সরকারী ড্রাইভার বাবাকে অফিসে নিয়ে যাবে, সুতরাং বাড়ির ব্যক্তিগত ড্রাইভারের চিন্তা আপাতত বাবার মাথায় থাকবে না। নোরিন সব কিছু ঠিক করে বাসের সিটে মাথা এলিয়ে দিলো। এই শহরে আর আসা যাবে না৷ বাসের কিছু লোক তার দিকে তাকিয়ে আছে বুঝতে পারলো সে। তবুও চোখ বন্ধ করে রাখলো। স্লিপিং ড্রেস পরে, পায়ে ক্যাটস নিয়ে, আবার একপায়ের গোড়ালিতে ব্যান্ডেজও দেখা যাচ্ছে; এমন এমার্জেন্সি পেসেন্জার তারা আজতক দেখেছে কিনা সন্দেহ!
----------
তারপর কেটে গেলো অনেকগুলো দিন। নোরিনের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ৷ রেসাল্টও দিয়ে দিয়েছে৷ মাঝখানের সময়টাতে বাবার সাথে বিদেশ ভ্রমণে গেলো। তারপর নিজেকে প্রস্তুত করতে শুরু করলো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্য৷ কয়েকদিন পরই আর্মির সার্কোলার বেরুবে। প্রেম-ভালোবাসাকে ঝাঁটা মেরে বিদেয় করে দিয়েছে জীবন থেকে৷ নিবিড় নামক কোনো প্রাণী এই পৃথিবীতে কেনো আশেপাশের কোনো গ্রহেও নেই৷ সেদিন রাতের পর থেকে নোরিনের ঘৃণা জন্ম নিলো সবকিছুর প্রতি৷ নিজের প্রতিও রাগ লাগলো৷ কীভাবে এতো নির্লজ্জ হতে পারলো সে? এবার আর কোনো ভুল নয়। তার একমাত্র লক্ষ্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তার স্বপ্ন।
নোরিনের খুব ভালো লাগে আজকাল। তার স্বপ্ন সত্যি হতে চলেছে। আর মাত্র কয়েকটা সিঁড়ি পেরুলেই স্বপ্নটাকে সত্যি করতে পারবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ শুনছিলো একদিন। নোরিন যেন নতুন করে অনুপ্রেরণা পায়। জাতির পিতার সব কথা আজ সত্যি হয়েছে। তিনি যদি দেখে যেতে পারতেন! নোরিন সিডি প্লেয়ারে ক্যাসেট রেখে অন করলো। স্ক্রিনে জ্বলজ্বল করে উঠলো বাঙালি জাতির পিতার ছবি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যে দেওয়া তার যুগান্তকারী ভাষণ,
-----আমি তোমাদের প্রধানমন্ত্রী আসতে পারে অনেক, যেতে পারে অনেক, প্রধানমন্ত্রী যেতে পারে অনেক। আমি তোমাদের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বলছি না। আমি তোমাদের জাতির পিতা হিসেবে আদেশ দিচ্ছি। কারণ জাতির পিতা একবারই হয়, দু'বার হয়না।প্রধানমন্ত্রী অনেক হবে, অনেক আসবে। প্রেসিডেন্ট অনেক হবে, অনেক আসবে, কিন্তু সেই হিসেবে আমি তোমাদের ভালোবাসি তোমরা জান। তোমরা সৎ পথে থেকো, মাতৃভূমিকে ভালোবেসো৷ "
নোরিন উজ্জ্বল মুখে তাকিয়ে আছে। শরীরের সমস্ত লোম কাটা দিয়ে উঠছে বারেবারে। কি তেজী, কি জীবন্ত প্রত্যেকটা শব্দ! নোরিনের চোখ জ্বলজ্বল করছে। কীভাবে পারলো বাঙালী, এমন একজন মানুষকে হত্যা করতে!
স্ক্রীনে জাতির পিতা আবার বললেন। নোরিন সমস্ত মন-প্রাণ এক করে তাকিয়ে আছে মুগ্ধকর দৃষ্টিতে,
------ " তোমাদের একটা জিনিস মনে রাখা দরকার,দেশ যখন আমার আছে, মাটি যখন আমার আছে, বাংলার সোনার মানুষ যখন আছে,যদি আমরা সোনার ছেলে পয়দা করতে পারি ইনশাআল্লাহ আমার যে স্বপ্ন সোনার বাংলা,তা একদিন পূরণ হবে।আমি দেখে না যাওয়ার পারি, কিন্তু ; ইনশাআল্লাহ হবে। আজ ইনশাআল্লাহ বাংলার সম্পদ আর কেউ লুট করে নিবার পারবে না। বাংলার মাটিতে বাংলার সম্পদ থাকবে৷ বাংলার মানুষ ভোগ করবে। যে জাতির ত্রিশ লক্ষ লোক রক্ত দিতে পারে স্বাধীনতার জন্য, সেই জাতি দরকার হলে কোটি লোকের জীবন দেবে বাংলার স্বাধীনতাকে রক্ষা করার জন্য। "
নোরিন বারবার ক্যাসেট'টা বাজিয়ে শুনলো। যতবারই শুনলো মনে হলো যেন নতুন করে শুনছে। ইশশ কত সুন্দর হবে সেই দিন গুলো যখন সে ভাটিয়ারী'তে যাবে মিলিটারি ট্রেনিংয়ে। একজন ক্যাডেট অফিসার হবে। জাতির পিতার একটা কথা বারবার তার কানে ভাসছে, " তোমরা আমার মুখ কালা করো না, দেশের মুখ কালা করো না, সাড়ে চার কোটি ( তৎকালীন সময়ে এদেশের জনসংখ্যা) মানুষের মুখ কালা করো না৷ তোমরা আদর্শবান হও, সৎ পথে থেকো।মনে রেখ, ' মুখে হাসি, বুকে বল, তেজে ভরা মন, মানুষ হইতে হবে মানুষ যখন৷ ' মাঝে মাঝে আমরা অমানুষ হয়ে যাই। "
নোরিন চোখ বুজে বিছানায় হাত-পা ছড়িয়ে গা এলিয়ে দিলো। সে কি পারবে আদর্শ সৈনিক হতে?
#চলবে....