ওয়েবসাইট কাস্টমাইজেশন এর জন্য। Contact Us Welcome!

জলপরীর প্রেমে ৪ পর্বঃ ০৫

Bangla Dub Novels
 #জলপরীর_প্রেমে#
#সিজন_৪#
পার্টঃ০৫
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
।।।।
।।।।
।।।।
দুপুরের দিকে আমরা বাসায় পৌছালাম। এখন আমাদের সময় আফজাল আঙ্কেলের বাড়িতে যাওয়ার। উনার মেয়ের নাকি আজকে জন্মদিন। দেখে আসি আঙ্কেলের মেয়েটা। ছোট বেলায় মনে হয় শেষ দেখা হয়েছিলো। আর এতোদিন সে ছিলো তার মামা বাসায়। তাই তাকে আর দেখতে পারি নাই। আফজাল আঙ্কেলের ছেলে আবার ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে পড়ালেখা করে। বাবার অনেক ঘনিষ্ঠ বন্ধু হওয়ায় আফজাল আঙ্কেলের বাসায় আমাদের যাতায়াত অনেক আগে থেকেই। আঙ্কেলের ছেলের নাম জিসান। জিসান ভাইয়ের সাথে অনেক ভালো সম্পর্কই আমাদের। আমি বাইক চালাচ্ছিলাম। পিছনে বসে আছে হৃদি। বাবা আর আম্মু গাড়িতে করে আসছে।
.
--তোকে একটা কথা বলবো?(হৃদি)
.
--হ্যা বল।(আমি)
.
--আফজাল আঙ্কেলের ছেলে জিসান আছে না?(হৃদি)
.
--হ্যা জিসান ভাইয়া।(আমি)
.
--ঔ আমার বয়ফ্রেন্ড।(হৃদি)
.
--কি?(আমি)
.
--হ্যা।((হৃদি)
.
--তাহলে তোর বয়ফ্রেন্ড জিসান ভাই। যাক খারাপ না। ভালো একটা দুলাভাই পাবো।(আমি)
.
--হুমমম।(হৃদি)
.
--কিন্তু ঔ বলদ টারে তা তোর বয়ফ্রেন্ড হলো  কেমনে?(আমি)
.
--জানি না। কয়েকদিন কথা বলার পর এমনিই ভালো লেগে গেলো।(হৃদি)
.
--এমনি কারো ভালো লাগে?(আমি)
.
--আমার লাগে।(হৃদি)
.
--আচ্ছা বাদ দে। হাদারাম দুলাভাই কি আসছে?(আমি)
.
--আসবে না কেনো। ওর বোনের জন্মদিন। আর আমি তো যাচ্ছি তাই।(হৃদি)
.
--হুমমম।(আমি)
.
--জানিস ওর বোনটা কে?(হৃদি)
.
--কে?(আমি)
.
--জারা।(হৃদি)
.
--কি কলেজের জারা?(আমি)
.
--হ্যা।(হৃদি)
.
--তুই আগে বলবি না জারা আফজাল আঙ্কেলের মেয়ে।(আমি)
.
--বললে কি করতি।(হৃদি)
.
--কিছু না। সেভাবে কথা বলতাম ওর সাথে।(আমি)
.
--থাক থাক বুঝি বুঝি। তুমি যে প্রেমের সাগরে ঢুবে গেছো সেটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। বাই দ্যা ওয়ে একটা গিফট দিতে পারোস। অনেক খুশি হবে তাতে।(হৃদি)
.
--সত্যি।(আমি)
.
--হ্যা।(হৃদি)
।।।।
।।।।
হৃদিকে নিয়ে শপিং মলে চলে আসলাম। একটা গিফট স্টোরে ঢুকলাম। হাজার খুজেও পছন্দ মতো কোনো গিফট খুজে পাচ্ছি না। অবশেষে বাধ্য হয়ে একটা ব্রেসলেট কিনলাম। অবশ্য হৃদির পছন্দ অনুযায়ী কিনলাম। সেটা ভালো করে র‍্যপিং করে একটা সুন্দর ব্যাগে ভরে নিলাম।
.
--তুই কিছু কিনবি?(আমি)
.
--না আমি একটা ঘড়ি আগে থেকেই কিনে রেখেছি।(হৃদি)
.
--আমাকে না বলেই।(আমি)
.
--হুমমম।(হৃদি)
।।।।
।।।।
আমরা পৌছে গেলাম আফজাল আঙ্কেলের বাসায়। বাসাটা সুন্দর করে ঝলমল করছে। একটু টাকাওয়ালা এবং প্রভাবশালী লোক আফজাল আঙ্কেল। কিন্তু বাবার অনেক ভালো বন্ধু৷ সেই ছোট থেকে তাদের বন্ধুত্ব। বাইরে এখন জিসান ভাইকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে আমি অবাক হলাম না। কারন উনি হৃদির জন্য দাড়িয়ে আছে। তার পাশে আবার জারাও দাড়িয়ে আছে। আমি বাইক নিয়ে সোজা গিয়ে তাদের সামনে নামলাম। মেয়ের সামনে একটু ভাব তো নিতেই হবে। আমি দাড়ানোর সাথে সাথে হৃদি নেমে গেলো।
.
--এতো দেরী হলো কেনো আসতে?(জিসান)
.
--আমার ভাইটা যেভাবে বাইক চালাই তাতে যা ভয় লাগে। তাই ওকে বলেছি আস্তে আস্তে চালাতে।(হৃদি)
.
--হাহাহাহা। তোর ভয় লাগে?(জারা)
.
--হ্যা পিছনে বসলে ভয় লাগে স্পিডে। কিন্তু বাইক আমি চালালে তো কোনো কথায় নাই।(হৃদি)
।।।।।
।।।।।
তখনি বাবা আর আঙ্কেল চলে আসলো আমাদের কাছে। বাবা আর আম্মু অনেক আগেই চলে আসছে। আমাদের গিফট কিনতে গিয়ে দেরী হয়ে গেছে।
.
--তোমরা এখানে কি করছো। চলো সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দি তোমাদের।(আঙ্কেল)
.
--হ্যা এখানে সবাই আমাদের আত্মীয়+বন্ধু বান্ধবরা আসছেন। সবার সাথে তোমাদের পরিচয় করিয়ে দি।(বাবা)
।।।।
।।।।
আমি আশে পাশে তাকালাম। দেখে এবার অবাক হলাম। কারন আশে পাশে আমার আত্মীয় স্বজনে ভরা। নানী, দাদা-দাদী, মামা-মামী, কাকা-কাকী, ভাই-বোন সবাই আছে এখানে। দেখে কোনো বিয়ে মনে হচ্ছে। যাইহোক আফজাল আঙ্কেল আবার প্রভাবশালী লোক। তিনি সবাইকেই দাওয়াত করতে পারেন। আবার আমাদের পরিবারের সাথে তার সম্পর্কও ভালো। আমি আমার হাতে থাকা ব্যাগটা জারার হাতে দিলাম।
.
--এইটা কি?(জারা)
.
--তোমার বার্ড ডে গিফট।(আমি)
.
--ওওও। তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।।(আমার গালে একটা চুমু দিয়ে বললো জারা)
।।।।
।।।।
আশে পাশে কেউ ছিলো না। আমি পুরো হতবাক হয়ে দাড়িয়ে রইলাম। জারা আমাকে চুমু দিলো। এ তো মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি। 
.
--কি হলো হ্যাং হয়ে গেলা যে?(জারা)
.
--কিছু না এমনি।(আমি গালে হাত দিয়ে বললাম)
.
--কেউ গিফট দিলে তাকে রিটার্ন গিফট দিতে হয় সেটাই দিলাম তোমাকে।(জারা)
.
--হুমমম।(আমি)
।।।।
।।।।
আরো কিছু বলতে যাবো তখনি আমার বাবা আমাকে ডেকে নিয়ে গেলেন। সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে লাগলেন আমাকে আর হৃদিকে। আমাদের আত্মীয়দের মাঝে অনেকেই আছেন যাদের আমি চিনি না। তাদের সাথে পরিচিত হলাম। দুপুরে খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা হলো। আমরা খাওয়া দাওয়া শেষ করলাম। বিকালের দিকে জারার জন্মদিনের কেক কাটা হলো। সেটার সেলিব্রেশন শেষে হঠাৎ বাবা বলে উঠলো।
.
--আফজাল কাজী সাহেব কি আসছেন?(বাবা)
.
--হ্যা চলে আসছেন।(আঙ্কেল কাজী সাহেবকে দেখিয়ে)
.
--কাজী বিয়ের কাজকর্ম শুরু করে দিন তাহলে।(বাবা)
।।।
।।।
বাবা বিয়ের কাজকর্মের কথা বললো কাজী সাহেবকে। আমি কিছুই বুঝলাম না ব্যাপারটা। হৃদি আর জারাকেও দেখতে পাচ্ছি না। জিসান ভাই সেই কখন থেকে আমার সাথেই আছেন।
.
--জিসান ভাই কাজী সাহেব আসছে ব্যাপার কি? তোমার বিয়ে নাকি? আগে তো বললেন না।(আমি)
.
--আরে মিয়া তুমি তো কিছুই জানো না দেখছি। আচ্ছা জানো না যখন তাহলে wait করো। একটু পরই বুঝতে পারবে।(জিসান)
.
--হৃদির সাথে আজ তোমার বিয়ে হবে এই কথাটা আমাকে আগে বললো না কেউ। সব বিষয়ে এভাবে সারপ্রাইজ কি আমার ভালো লাগে।(আমি)
.
--সারপ্রাইজ তো তুমি দিয়ে দিলা। একটা পেইন্টিং নাকি ১০ কোটি বিক্রী করছো😱😱😱😱(জিসান)
.
--হৃদি এটাও বলে দিয়েছে।(আমি)
.
--হ্যা।(জিসান)
.
--হৃদির বাচ্চাটাকে কাছে পেয়ে নি। আমার থেকে সব কিছু লুকানো। ওর খবর করে দিবো।(আমি)
.
--হাহাহা। তোমাদের ভাই বোনের ঝগড়া কখনো শেষ হবে না।(জিসান)
।।।।
।।।।
কাজী সাহেব তার সূরা পড়া শুরু করলেন। এবং কাগজপত্র লেখতে লাগলেন। আমি ঔদিকে নজর দিচ্ছিলাম না। বাবার ধমকে চেয়ারে বসে ছিলাম। মোবাইলটার দিকে তাকালাম। অনেক পুরাতন হয়ে গেছে। অনলাইন থেকে দুটো ফোন অর্ডার করলাম। দুটোই One plus 7 pro। একটা হৃদির জন্য। আর একটা আমার জন্য। তো অনলাইনে আরো কিছু জিনিস খুজতেছিলাম ঠিক তখনি একটা জিনিসের উপরে আমার নজর চলে গেলো। একটা রকেট দেখে আমার খুব ভালো লাগলো। রকেটটা দেখতে অনেক আজব। দামটাও বেশী না। এমন আজব রকেট হয়তো কেউ কিনবে না। কিন্তু কেনো জানি আমার খুব ভালো লাগছে দেখতে রকেটটা। কেমন জানি একটা টান অনুভব করতে পারছি আমি ঔটা দেখে। সেটাকেও কিনে ফেললাম আমি। দুদিনের মধ্যে বাসায় এসে দিয়ে যাবে তারা। এমন সময় বাবার কথায় আমার হুস ফিরলো মোবাইল থেকে বাস্তবে।
.
--কি হলো কোথায় হারিয়ে গেছোস। ডাকছি শুনছোস না কেন?(বাবা)
.
--কি হয়ছে?(আমি)
.
--কবুল বল।(বাবা)
.
--কবুল।(আমি কিছু না বুঝে কবুল বলে দিলাম)
.
--আরো দুই বার বল।(বাবা)
.
--কবুল কবুল। আচ্ছা আমাকে দিয়ে কবুল বলাচ্ছো কেনো?(আমি কিছু না বুঝে জিজ্ঞেস করলাম)
.
--একটু আগেই তো বললাম তোর বিয়ে আজকে।(বাবা)
.
--কি?(আমি)
.
--হ্যা।(বাবা)
.
--আলহামদুলিল্লাহ। ছেলে কবুল বলে দিয়েছে। এবার মেয়েকে কবুল বলিয়ে নিয়ে আসুন মেয়ে পক্ষের কেউ।(কাজী সাহেব)
.
--জ্বী মেয়েও কবুল বলেছে।(একজন ভিতরে গিয়ে আবার এসে বললো)
.
--আলহামদুলিল্লাহ সবাই মুনাজাত ধরেন।(কাজী)
।।।।
।।।।
আমি যখন অনলাইনে রকেটটা দেখছিলাম তখন বাবা একটা কাগজে আমার সিগনেচার নিয়েছিলো। আমি খেয়াল করি নাই। কেমন জানি ঘোরের মধ্যে আছি এখনো। রকেটটাই কি এমন আছে বুঝতে পারছি না আমি। আমার ঘোর কাটার সাথে সাথেই আমি বুঝতে পারলাম আমি কবুল কেনো বলেছি। আমার তো বিয়ে হয়ে গেছে। শুধু আমার না আমার আগে হৃদি আর জিসান ভাইয়ের কাবিন শেষ করেছে কাজী। পরে আমারটা শেষ করেছে। কিছু না বুঝেই আমি বিয়ে করে ফেললাম। এমন কি কখনো কারো সাথে হয়েছে। যাইহোক এটা জেনে খুশি হলাম যে আমার বউটা জারা। এমন সুন্দরী মেয়ে যে বউ হবে সেটা তো ভাগ্যের ব্যাপার। আমি জারাকে অনেক খোজার চেষ্টা করলাম কিন্তু মেয়েটাকে পেলাম না কোথাও। ছাদে গিয়ে দেখি হৃদি আর জিসান ভাই দুজনেই গল্প করছে। হাজার খুজেও আমি জারাকে পেলাম না। রাতের সময় আমরা আমাদের বাসায় চলে আসলাম। তেমন কোনো কিছুই হলো না যা ভেবেছিলাম। আপাতোতো আমাদের ইন্টার শেষ না হওয়া পর্যন্ত হৃদি এখানেই থাকবে। আর জারাও ওর বাসায় থাকবে। বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর এই জিনিসটা অনেক বেদনার হয়। বউ থাকার পরও যদি সে পাশে না থেকে শ্বশুরবাড়িতেই থাকে তাহলে হুদাই বিয়ে করে লাভ কি? এর থেকে ইন্টারের পরে বিয়ে দিতো। এক হিসাবে ভালোই হলো কারন আমার বিয়ের পরে প্রেম করার ইচ্ছাটা পূরন হবে।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
(((চলবে)))
।।
।।।
।।।।
।।।।।

Post a Comment

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.