পার্ট:12
লেখক:Hridoy Bappy।
।।।।।।
।।।।।।
থানায় চলে আসলাম আমি আর নিলয়।আশা করি যা বলেছি এতে এনগেজমেন্টটা আর হবে না।কিন্তু যেটা জানার জন্য গিয়েছিলাম সেটাই তো জানা হলো না।
.
:-আচ্ছা নিলয় মোবাইল এর সাথে সিম মেমোরি কার্ড তো ছিলো তাই না।(আমি)
.
:-হুমমমম।আমার কাছেই সিম আছে।আর আমি ওই নাম্বার এর কল রেকোর্ডসও আনিয়েছি।(নিলয়)
.
:-তাহলে নিয়ে আয়।(আমি)
.
:-রহমত কাকা।ঔ কাগজটা নিয়ে আসুন তো।(নিলয়)
।।।।
রহমত কাকা একটা কাগজ দিয়ে গেলো।
.
:-এইযে এখানে তোর সব ফোন রেকর্ডস আছে।(নিলয়)
.
:-লাষ্ট কল এই নাম্বার থেকে এসেছে।আমার জানতে হবে কি কথা হয়েছিলো।(আমি)
.
:-তোর তো কোনো কিছুই মনে নায়।আর সিম কেয়ার এ ও বলেছিলাম।কিন্তু তাদের কাছে নাকি এতো পুরাতন ডাটা নাই।(নিলয়)
.
:-তাহলে কি করবো।কেসটা তো উল্টা দিকেই যাচ্ছে।শুধু তো সন্দেহের জন্য বলতে পারি না কে আসল আসামী।আমাদের তো প্রমাণ ও লাগবে।(আমি)
.
:-হুমমমম।(নিলয়)
.
:-আচ্ছা আমার যে পেনড্রাইভে হোটেল এর ফুটেজ এনেছিলাম।সেগুলো চেক করে দেখি।(আমি)
.
:-ওকে।
।।।।।
ফুটেজ দেখা শুরু করলাম।
.
:-না আমি হোটেলে যাওয়ার পরে বা আগে সন্দেহজনক কেউ তো হোটেল এ আসে নাই।তাহলে আসামীটাকে কিভাবে বের করবো।(আমি)
.
:-কেসটা এখন হাত থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে কিছু একটা তো আছে যেটা আমরা মিশ করতেছি।(নিলয়)
.
:-হ্যা এখন তো আমার মাথাটা ও কাজ করছে না।কি যে করি এখন।(আমি)
.
:-নিলয় কালকেই কিছু একটা জানা যেতে পারে।মোবাইলটা পেয়ে নি আগে।(আমি)
.
:-হুমমমম।
।।।।।
সারাটাদিন থানায় থেকে রাতে নিধিদের বাসায় চলে আসলাম।বাসায় এসে খেয়ে ঘুমিয়ে পরলাম।নিধিকে ইগনোর করা শুরু করলাম।খারাপ লাগছে তাও কিছু করার নাই।আমার জন্য হয়তো মেয়েটা ২য় বারের মতো কষ্ট পাবে।কিন্তু আমি তো এটা করতে পারবো না।যাইহোক ঘুমিয়ে পরলাম।সকালে চলে আসলাম থানায়।
.
:-নিলয় কি খবর মোবাইল টা এনেছিস।(আমি)
.
:-হুমমমম।
.
:-ফ্লাস মারে নাই তো আবার।(আমি)
.
:-আরে না মারলে এমন হাল করতাম না।(নিলয়)
.
:-ওকে দে তো মোবাইল টা কিছু পাই কিনা দেখি।(আমি)
.
:-হুমমম তোর যা লাগবে সেটাই আছে।(নিলয়)
.
:-কি।(আমি)
.
:-কল রেকোর্ডার এপ।(নিলয়)
.
:-তাই নাকি।তাহলে তো ফোনেই রেকর্ড করা আছে শেষের কলটা।।(আমি)
.
:-হুমমমম।
।।।।।।।।।
প্রথম থেকে সব রেকর্ডস গুলো শুনতে শুরু করলাম।যদি কোনো একটাই ঘটকা পেয়ে যাই তাহলেই কেসটা সলভ করতে সাহায্য হবে আমাদের।কোনো গুলোই পেলাম না।কিন্তু শেষের টা ঘটকা লাগলো।মেঘলাকে কিডন্যাপ করা হয়েছিলো।আর এটা করেছে আমাকে মারার জন্য।কি কারণ সেটাও বলে নাই।তারমানে কিছু তো হয়েছিলো।আ আ কন্ঠ তাও চিনতে পারছি না।আমার মাথা একদম কাজ করা বন্ধ করে দিছে।মাথা ঘোরা শুরু করে দিলো।তারপর কি হলো কিছুই মনে নাই।চোখ খুলে দেখি হাসপাতালে শুয়ে আছি।পাশে নিধি মেয়েটা বসে আছে।ডানপাশে নিলয় বসে আছে।
.
:-কি হয়েছিলো রে আমার।(আমি)
.
:-তুই মাথা ঘুরিয়ে পরে গিয়েছিলি।(নিলয়)
.
:-ও মনে পরেছে সব।(আমি)
.
:-এখন কেমন লাগছে তোমার।কত বলেছি,এত চিন্তা করতে হবে না কিন্তু একটু ও শুনো আমার কথা।(নিধি)
.
:-আরে কিছুই হয় নাই আমার।(আমি)
.
:-আরে বাবা ঠিক আছো তো।তোমার কথা শুনেই চলে আসলাম।(নিধির বাবা)
.
:-হ্যা আমি ঠিক আছি।আপনাদের চিন্তা করতে হবে না।(আমি)
.
:-হুমমম সাহেব ভালো আছে দেখো না বাবা খাওয়া দাওয়া যেমন করে তাতে তো এমনি করে পরেই যাবে অজ্ঞান হয়ে।(নিধি)
.
:-আমি তো ঠিকই আছি।(আমি)
.
:-চুপ বাবা চলো তো ওর জন্য খাবার নিয়ে আসি।খাওয়া দাওয়া কম করে।এখন থেকে আমিই খাইয়ে দিবো ভালো করে।(নিধি)
.
:-আরে সেটার দরকার হবে না।(আমি)
.
:-চুপ একদম চুপ আমি যা বলছি সেটাই করবো।শুয়ে থাকো আমি বাবার সাথে ভালো কিছু কিনে নিয়ে আসছি।(নিধি)
।।।।।।
নিধি আর ওর বাবা চলে গেলো।
.
:-নিলয় কিছুটা সুখবর আছে।(আমি)
.
:-কি।(নিলয়)
.
:-আমার মেমোরি ফিরে আসছে।(আমি)
.
:-কি এইটা তো একদম সুখবর।(নিলয়)
.
:-না সাথে দুঃখের খবর ও আছে।(আমি)
.
:-সেটা কি।(নিলয়)
.
:-আমার জানামতে আমার কোনো শত্রু ছিলো না যে আমাকে মারবে।(আমি)
.
:-তাহলে এই কেসটা সলভ হবে কিভাবে।(নিলয়)
.
:-হুমমমম আমার আত্মীয় আর নিধিদের সবার ফোনে কথা বলা রেকর্ড কর।আমাকে যে ফোন দিয়েছিলো তার সাথে যদি মিলে যাই তাহলেই তো কেসটা সলভ হয়ে যাবে।(আমি)
.
:-হুমমমম সেটাই করবো।(নিলয়)
.
:-আর আমার মেমোরি চলে আসছে কেউ যেনো না জানতে পারে।(আমি)
.
:-কেউ জানবে না।(নিলয়)
।।।।
আরো কিছু দরকারি কথা বলতে লাগলাম নিলয়ের সাথে।
.
:-কথা বলা বাদ দিয়ে খেয়ে নাও।সুপ নিয়ে আসছি তোমার জন্য।(নিধি)
.
:-আমি এইগুলা খাবো না।(আমি)
.
:-এই আমি বলছি না খেতে।সো খাবা।আমি খাইয়ে দিচ্ছি।(নিধি)
।।।।।
নিধি খাইয়ে দিতে লাগলো।ডাক্তার দুইদিন আমাকে রেস্ট নিতে বললো।তাই ছুটি পেলাম দুইদিন।অবশ্য নিধির মামা আরো বেশী ছুটি দিতে চাইছিলো।কিন্তু আমাকে এই কেসটা সলভ করতে হবে।এই দুইদিনে মেয়েটার যত্ন দেখে নতুন করে ভালো লাগলো মেয়েটাকে।জেদি হলে কি হবে মেঘলার থেকেও বেশী সেবা করে।আমি ভাবতেছি আবার ও মেয়েটাকে কষ্ট দিবো।এটা কি করে হয়।কিন্তু আমার যে কিছুই করার নাই।
মেঘলাকে দেখতে খুব মন চাচ্ছে।কিন্তু বাসায় যেতে এতো ভালো লাগে না।কালকেই থানায় আসতে বলতে হবে সবাইকে।কিন্তু এখনই পরিচয় দেওয়া যাবে না।আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
সকালে থানায় চলে আসলাম।
.
:-নিলয় কি খবর কিছু পেয়েছিস।(আমি)
.
:-নারে কারো গলার সাথেই মিল হয় না।(নিলয়)
.
:-তাহলে কি এটা বাইরের কারো কাজ।হতে পারে কিন্তু কে এটা।এখন তো আমার সব মনে পরেছে কিন্তু তাও তো তেমন কিছু হবে বলে আমার মনে হয় না।এই কন্ঠটা তো চিনিও না।কি করে বের করবো এই কন্ঠের মূল টা কে।আরো টেনশনে পরে গেলাম।এতো ভাবনায় আবার আমার মেমোরি চলে না যাই।আরো ১০ দিন কেটে গেলো কিন্তু ঔ লোকটাকে এখনো ধরতেই পারলাম না সে কে।খুব চিন্তায় আছি।যদি এতো কিছু না জানতাম তাহলে কেসটা এতো দিন বনৃধ করে দিতাম।কিন্তু আমিই তো হৃদয়।সব তো আমার সাথেই হয়েছে।কি করে আসামিটা কে সেটা না জেনেই হার মেনে নিবো।
.
:-বাপ্পী কেসের তো কোনো উন্নতি হচ্ছে না।(নিলয়)
.
:-আমি নিশ্চুপ।
.
:-কিরে কোনো কথা বলোস না কেনো।(নিলয়)
।।।।।।
আমি কোনো কথা না বলে নিলয় এর তোলা আমার ঘরের ছবি গুলা দেখতে ছিলাম।
.
:-কিছু কি বলবি।(নিলয়)
.
:-আচ্ছা নিলয় তুই মেঘলার সব ফোন রেকর্ডস চেক করেছিস তাই না।আমি নিধির সবই চেক করেছি।এমন কি ফেসবুক ও।কিন্তু মেঘলার ফেসবুকটা চেক করা হয় নাই আমাদের।(আমি)
.
:-ভালো কথাই তো বলেছিস।এটা তোর হঠাৎ মনে পরলো কেনো রে।(নিলয়)
.
:-এই যে তোর তোলা ছবি দেখে।দেখ মেঘলার ফোনে ফেসবুক অন করা দেখা যাচ্ছে।(আমি নিলয় কে ওর তোলা ছবি জুম করে দেখালাম।)
.
:-তাই তো এটা আমার একটু ও মনে ছিলো না।আচ্ছা ওর ফেসবুক আইডি তাহলে তো হ্যাক করে দেখতে হবে।(নিলয়)
.
:-আমিই খুলে দিয়েছিলাম।I hope ও আর পাসওয়ার্ড টা বদলাবে না।দেখি ঢুকে দেখি।।।
।।।।।।।
যা ঢুকেই গেলাম।সত্যিই আজকালকের মেয়েদের বিশ্বাস করতে নাই।তারা এতোটা চালাক হবে আমি ভাবতে ও পারি নাই।ঠিক আছে আমি ও এর শেষ দেখে ছারবো।
.
:-নিলয় তুই আমার বাবা মা আর মেঘলাকে এখনই থানায় আসতে বল।(আমি)
.
:-ওকে বলতেছি।(নিলয়)
।।।।।।
আধা ঘন্টা পর তিনজন থানায় চলে আসলো।বাবা আর আম্মুকে দেখে আজকে খুব ভালো লাগতেছে।কান্না আসতে চাইছে।কিন্তু কান্না সামলে রাখলাম।
.
:-কি হয়েছে বাবা আমার ছেলের কি কোনো খোজ পেয়েছো।(আম্মু)
.
:-না মানে আন্টি খোজ চলছে।সেটার জন্য আপনাদেরকে এখানে ডাকা হয় নাই।আপনাদের এখানে ডাকা হয়েছে অন্য কারণে।(নিলয়)
.
:-কি জন্য থাকছো তাহলে।(বাবা)
.
:-না কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করবো তাই।(আমি)
.
:-হুমমম করো।
.
:-মিস মেঘলা।না সরি মিসেস মেঘলা।আপনাকে কিছু বলার ছিলো।সঠিক উত্তর দিবেন কিন্তু সব কিছুর।(আমি)
.
:-হুমমমম বলেন।(মেঘলা)
.
:-ভালোবাসতেন তো অনেক হৃদয়কে তাই না।(আমি)
.
:-হ্যা অনেক ভালোবাসতাম।(মেঘলা)
.
:-হ্যা ভালোবাসতেন কিন্তু এখন বাসেন নাতো।(আমি)
.
:-মানে কি বলতে চাইছেন আপনি।(মেঘলা)
.
:-না স্বামীর লাশ না পেয়ে বিয়েতে রাজি হয়ে গেলেন তো তাই।(আমি)
.
:-দেখেন আমি কোনো কিছুতেই রাজি না বাবা আর আম্মু জোর করেছে তাই।(মেঘলা)
.
:-ওওি তাই নাকি।(আমি)
.
:-হ্যা বাবা আমরা তো মেনে নিয়েছিলাম ছেলেটা আমার মারা গিয়েছে শুধু শুধু মেয়েটাকে কষ্ট দিয়ে কি লাভ।(বাবা)
.
:-ও তাহলে আপনার বউমার বিয়ে হয়েছে আগে এটা জেনে ও কি বিয়ে করতে রাজি ছেলেটা যার সাথে বিয়ে দিতে চাইছিলেন।(আমি)
.
:-হ্যা ছেলেটাই তো আমাদের বললো তার নাকি মেঘলাকে অনেক পছন্দ হয়েছে এভাবে আর কত কষ্ট করবে।তার থেকে বিয়ে করে নাহয় আমাদের বাড়িতেই থাকবে ঘরজামাই হয়ে আর মেঘলার কষ্টাও দুর হয়ে যাবো।(বাবা)
.
:-আচ্ছা কখন ও কি এটা ভাবছিলেন যে আপনার ছেলে এসে বলবে বাবা আমি এসে গেছি।তোমরা আমাকে মরা প্রমাণিত করে দিলে।যাও তোমাদের কাছে আমি থাকবোই না।(আমি)
.
:-না তখন তো শুধু মেয়েটার কষ্ট ভেবেই আমরা এই কাজটা করতে গিয়েছিলাম।(বাবা)
.
:-না কেমন মেয়ে ও স্বামীর জন্য একটু কষ্ট তো করবেই।আর সেটা সহ্য হলো না আপনাদের কারো।(আমি)
.
:-না আমাদের ভুল হয়ে গেছে।
.
:-মিসেস মেঘলা এখন আপনার কাছে আসি।মেঘলা আকাশ টাকে তো ভালো করেই চিনেন মনে হয়।তাই না।(আমি)
.
:-মা.......মানে...... কি কি কি বলতে চাইছেন আপনি।মেঘলা আকাশটা কে আবার।(মেঘলা)
.
:-আচ্ছা যে ছেলেটার সাথে বিয়ে দিতে চাইছিলেন তার নাম টা কি বলবেন।(আমি)
.
:- ওর নাম আকাশ।(আম্মু)
.
:-হুমমমম মেঘলার আকাশ তাই। না মিসেস মেঘলা।(আমি)
.
:-কি যা তা বলতেছেন।(মেঘলা)
.
:-আচ্ছা আমি নাহয় যা তা বলতেছি।আগে পরিচয় টা দি আমার।এই যে হৃদয় এর মা আপনার ছেলের চেহারা যদি নষ্ট হয়ে যাই তাহলে ছেলেকে কিভাবে খুজে বের করবেন।(আমি)
.
:-ওর হাতে একটা জন্মদাগ পেটে একটা জন্ম দাগ ছিলো।আমি সেটা দেখেই ওকে চিনবো।ওর কন্ঠটা ও চেনা চেনা লাগবে।(আম্মু)
.
:-আচ্ছা আমার কথা কি চেনা চেনা লাগে না।(এখন একটু ভালো করে কথা বল্লাম)
।।।।।।
সাথে সাথে আম্মু আমার জামার হাতা উপরে উঠিয়ে আমার জন্ম দাগ টা দেখলো।পেটের জন্ম দাগ টাও বের করে দেখলো।এখন শুধু কান্না করতেছে আম্মু
.
:-ওগো শুনছো দেখে এটা আমাদের ছেলে।আমরা ওর বাবা-মা হয়েও আমাদের কাছেই আছে তাও আমরা চিনতে পারলাম না।।।বাবা আমাদের তুই মাফ করে দে।(আম্মু)
।।।।।।।
বাবা আর আম্মু দুজনেই আমাকে ধরে কান্না শুরু করলো।কোনো বাবা মার তাদের ছেলেকে চিনতে বেশী প্রমাণ লাগে না।শুধু কিছু নিশানি থাকলেই হয়।যাক রাগের বসে তো পরিচয়টা দিয়েই ফেল্লাম কিন্তু এখন যে অন্য একটা কাজ করতে হবে আসামীকে ধরতে।
।।।।
।।।
।।
।
(চলবে)
।
।।
।।।
।।।।
wait for the next