ওয়েবসাইট কাস্টমাইজেশন এর জন্য। Contact Us Welcome!

ভ্যাম্পায়ার কুইন পর্বঃ ১৭

Bangla Dub Novels
#ভ্যাম্পায়ার_কুইন# 
পর্বঃ১৭
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমি দাড়িয়ে আছি মুখে হাত দিয়ে। ভাবতে লাগলাম এই জায়গা থেকে কিভাবে বের হওয়া যায়। আমি মনস্টার দুনিয়ার এক অজানা জায়গায় আটকা পরেছি। ইগড্রাসিল থাকলে তো আমার সাহায্য করতো। কিন্তু কোথায় গেলো বুঝতে পারছি না। হয়তো সে তার দুনিয়াতে ফেরত গিয়েছে। আমি চুপচাপ বসে বসে ভাবার চেষ্টা করছি।
আমি এখন যেখানে আছি এই দুনিয়াটা মনস্টারের। এখানের সবাই বিভিন্ন রকম মনস্টার। শুধু তাই নয় এখানের সবাই ম্যাজিকও ব্যবহার করতে পারে। আমি যেখানে বড় হয়েছি মানে মানুষের দুনিয়া সেখানে ম্যাজিক পুরো কল্পনীয় একটা বিষয়। সেখানে ম্যাজিকের জায়গা দখল করে নিয়েছে বিজ্ঞান। আমি একাডেমীর লাইব্রেরীর একটা বই থেকে পরেছি, পৃথিবীর সকল বিজ্ঞান ম্যাজিক থেকেই শুরু হয়েছে। জানি না বিষয়টা কতটা সত্য। তারপর ও কিছু ম্যাজিক আছে যেগুলো মানুষের দুনিয়াতে ব্লাক ম্যাজিক নামে পরিচিত। কিন্তু এখন আমি এই জায়গা থেকে কিভাবে ফিরবো সেটা বুঝতে পারছি না। চারিদিকে যতদূর তাকাচ্ছি কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। রাত অনেক হয়ে গেছে। চাঁদের আলোতে আশেপাশের সব দেখা যাচ্ছে। তিনটা চাঁদ খুব সুন্দর সাদা মিষ্টি আলো দিচ্ছে। পরিবেশটা নিরব, তবে এতোটাও আমার কাছে এখন লাগছে না। আমার মাথার মধ্যে এখন রাগ হচ্ছে। শুধু একবার এনার ভাইটাকে হাতের কাছে পাই। ওর যা হাল করবো সেটা কোনোদিন ভুলবে না। ইগড্রাসিলের উপরে ও রাগ হচ্ছে। চলে যাবি যেতি, কিন্তু আমাকে তো অন্তত এই জায়গা থেকে ভালো কোথাও নিয়ে যেতি। আমার রাগ অনেক বেরে গেলো। কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। বেশী চিন্তার কারনে আমি ভুলেই গেছি আমার ডানা আছে। আমি আমার ডানা দুটো বের করলাম। উড়তে যাবো তখনি মনে পরলো আমি লড়াই ছাড়া আমার ডানা নিয়ন্ত্রন করতে পারি না। উড়তে গেলে ঠিক আছে নাকি কয়টা হাত পা ভাঙবে। তারপরও একটা চেষ্টা করা যায়।
।।
।।
আমি আমার ডানা দুটো দিয়ে উপরে উড়তে যাবো কিন্তু হঠাৎ আমার ডান পাশের সাদা ডানাটা বেশী জ্বলতে লাগলো। বুঝতে পারছি না কি হচ্ছে। তবে আমার পিঠে অনেক ব্যথা শুরু করছে। ব্যথাটা এতো মারাত্মক যে আমাকে সাথে সাথে মাটিতে ফেলে দিলো। আমার মাথাটাও যন্ত্রনায় ফেটে যাচ্ছে। একরকম কালো ধোয়া বের হচ্ছে আমার শরীর দিয়ে। শুধু ধোয়া নয় আমার চারদিক বরাবর ছয়টি লাইন দেখা দিতে লাগলো। আস্তে আস্তে ছয়টি লাইন আমার থেকে সামান্য দূরে গিয়ে জ্বলতে লাগলো। এবার আমার সারা শরীর ব্যথায় নেতিয়ে পরলো। আমি আমার কোনো অঙ্গকেই নারাতে পারছি না। উপর হয়ে পরে আছি আমি। শুধু দেখা ছাড়া আর কিছু করার নাই এখন। আমার শরীরের কোনো বোধ পাচ্ছি না এখন। জানি না কি হচ্ছে আমার সাথে, তারপরও তখনকার ব্যথা এখন আর অনুভব করছি না বলে একটু স্বস্তি হলো।
।।।
।।।
হঠাৎ ছয়টি লাইনের মধ্য থেকে একটি আস্তে আস্তে বাকি গুলোর দিকে যেতে লাগলো৷ সেটা আরেকটার সাথে স্পর্শ করার সাথে সাথেই দুটো এক হয়ে গেলো। দেখতে দেখতে ছয়টি লাইন এক হয়ে একটি হয়ে গেলো। এবার সেটি আমার দিকে আস্তে লাগলো। আমার নরাচরা করার কোনো ক্ষমতা নাই এখন। জানি না কি হচ্ছে তবে চোখ মুখ বুঝে সহ্য করতে হবে।
।।
।।
আমি শুধু লাইনটাকে আমার দিকে আসা দেখেছি। তারপর আর কিছু মনে নেই। আমি অজ্ঞান হয়ে পরেছিলাম। যখন জ্ঞান ফিরলো তখন দেখলাম আমি পরে আছি একটা গুহার মধ্যে। এই গুহা আসলো কোথা থেকে বুঝতে পারছি না। মনে হচ্ছে টেলিপোর্ট হয়ে আসছি এখানে। আশে পাশে তাকালাম, কিছু দেখতে পারলাম না। একটু স্বস্তি লাগলো যে বেঁচে আছি। আমি মাটিতে একটু বসলাম। পুরো শরীর আমার ধুলো মাটিতে মেখে গেছে। হঠাৎ গুহার মধ্যে কেউ ঢুকলো,
.
--কে?(আমি ভয় পেয়ে বল্লাম)
.
--আমি ইগড্রাসিল।(ইগড্রাসিল)
.
--ও। যাক আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।(আমি)
.
--আমি দুঃখিত যদি তোমাকে ভয় দেখিয়ে থাকি।(ইগড্রাসিল)
.
--না সমস্যা নাই। এটা কিছুই না কালকে রাতের থেকে।(আমি)
.
--কেনো কালকে রাতে কি হয়েছিলো?(ইগড্রাসিল)
.
--তুমি জানবে কিভাবে? তুমি তো হঠাৎ কোথায় উধাও হয়ে গেলা।(আমি)
.
--আমাদের ড্রাগনদের দুনিয়া ছাড়া বাইরের কোনো দুনিয়াতে থাকার জন্য অনেক ম্যাজিক পাওয়ারের প্রয়োজন হয়। যেটা আমি এতোদিন একবারও রিচার্জ করতে পারি নাই। তাই কালকে আমি আমার ম্যাজিক পাওয়ারটা রিচার্জ করে নিয়েছি।(ইগড্রাসিল)
.
--ম্যাজিক পাওয়ার রিচার্জ করে কিভাবে?(আমি)
.
--অনেক ভাবে করা যায়। কিন্তু কিছু আলাদা রকম ড্রাগনদের পার্টনার হলে সেসব ড্রাগনরা তাদের পার্টনারের ম্যাজিক পাওয়ার থেকে নিজেদের ম্যাজিক পাওয়ার বারাতে পারে। আমিও সেটাই করেছি।(ইগড্রাসিল)
.
--তাহলে কি সেটা করলে আমার কোনো ক্ষতি হওয়ার কথা?(আমি)
.
--সাধারন কোনো মনস্টার হলে আমার ম্যাজিক পাওয়ার ফুল করার জন্য সেই মনস্টারের জীবন চলে যাবে হয়তো। কিন্তু তুমি তো ডেভিল কিং তাই কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।(ইগড্রাসিল)
.
--হুমমম। কালকে যা হয়েছে। তার উপর আবার কোনো খারাপ জিনিস হয়। প্যারালাইসিস হয়ে আমার প্যান্ট ভিজে আছে এখনো।(আমি)
.
--সেটা আমি কিছু বলতে পারবো না। তবে আমাদের পার্টনারশীপ এখনো পূরন হয় নি। এখন আমাকে একটা ডাক নাম দিতে হবে।(ইগড্রাসিল)
.
--ডাক নাম?(আমি)
.
--হ্যা।(ইগড্রাসিল)
.
--আচ্ছা ঠিক আছে। আমি তোমাকে ডাকবো ভি রু দা। নামটা কেমন?(আমি)
.
--ভি রু দা? একদম সুন্দর। আজ থেকে আমি ভি রু দা ইগড্রাসিল দ্যা ফায়ার ড্রাগন কিং।(ইগড্রাসিল)
.
--হুমমম সংক্ষেপে আমি ভিরু বলবো সেটা সহজ হবে।(আমি হাসতে হাসতে বল্লাম)
.
--হুমমম আমি পছন্দ করেছি।(ভিরু)
।।।
।।।
।।।
মানুষের দুনিয়ার কাউকে এই নাম দিলে আমাকে জুতা পিটা করতো। কিন্তু এখানে এমনিতেও সবার নাম আজব। আরো আজব নাম দিলে কোনো সমস্যা হবে না।
.
--আচ্ছা ভিরু তাহলে এখন এখান থেকে আমাদের বের হতে হবে।(আমি)
.
--হ্যা।(ভিরু)
.
--হ্যা কিন্তু সমস্যা হলো আমি ঠিক মতো উড়তে পারি না।(আমি)
.
--তুমি হবে ডেভিল কিং আর তুমি বলতেছো তুমি উড়তে পারো না।(ভিরু)
.
--সেটা আমিও বুঝতে পারতেছি না। সবই ঠিক আছে। কারো সাথে লড়াই করতে গেলে ঠিকই নিজের ইচ্ছা মতো উড়তে পারি। কিন্তু সাধারন সময়ে আমি উড়ার চেষ্টা করলেও উড়তে পারি না।(আমি)
.
--দেখি ডানাটা বের করো তো।(ভিরু)
.
--ঠিক আছে।(আমি)
।।।
।।।
আমি ডানা দুটো বের করলাম। ইগড্রাসিল শুধু আমার দিকে তাকিয়ে আছে। বুঝতে না পেরে আমিও আমার পিছনে দেখলাম। দুটো ডানার জায়গায় আমার পিঠে চারটা ডানা হয়ে গেছে। ডান পাশের সাদা ডানার নিচে একটা কালো ডানা হয়েছে আবার বাম পাশের কালো ডানার নিচে একটা সাদা ডানা হয়েছে। আমি অবাক হলাম কিছুটা।
.
--এটা তো অনেক অবাক করার বিষয়। আমি আজ পর্যন্ত এমন কাউকে দেখি নি যে ডেভিল আর এন্জেল দুটোর ক্ষমতা বহন করতে পারে। দুটো ডানা কালকে বেরেছে কি?(ভিরু)
.
--আমি ঠিক জানি না। আজকেই প্রথম দেখতেছি ডানা দুটো।(আমি)
.
--এখন উড়তে কোনো সমস্যা হবে না তোমার (ভিরু)
.
--সেটা তুমি কিভাবে বলতেছো। ডানা নাহয় দুটোর জায়গায় চারটা হয়েছে তাই বলে কি আমার উড়ার কোনো পরিবর্তন হবে?(আমি)
.
--হ্যা। অবশ্যই। এন্জেলদের সাদা ডানা রাতের সময় বেশী শক্তিশালী হয়। বিশেষ করে চাঁদের আলো যত বেশী হয় তখন সাদা ডানার পাওয়ার বেশী হয়। আর দিনের সময় ডেভিলদের ডানার ক্ষমতা আশেপাশের সবার ভয়ের কারনে বেশী হয়। আশেপাশে যত ভয়ভীতি থাকবে ডেভিলদের ক্ষমতা তত বারে। সেই সাথে ডেভিলদের ডানার ক্ষমতাও বৃদ্ধি পাই।(ভিরু)
.
--এখন আমি বুঝতে পেরেছি কি হচ্ছে। আমার ডানার পার্থক্যের জন্য আমি ঠিক করে উড়তে পারছি না। কিন্তু এখন আমার দুই পাশের ডানার পাওয়ার লেভেল সমান হয়ে গেছে।(আমি)
.
--হ্যা এখন মনে হয় না তোমার উড়তে কোনো সমস্যা হবে।(ভিরু)
.
--ধন্যবাদ বিষয়টা শেয়ার করার জন্য।(আমি)
.
--তো এখন কোনো সমস্যা নাই তুমি উড়ে যেতে পারবে।(ভিরু)
.
--আচ্ছা ঠিক আছে। কিন্তু তোমার কিছু একটা করার দরকার। তোমার সাইজ এমনিতেই অনেক বড়। আবার তোমাকে যদি আমি সাথে করে নিয়ে যায় তাহলে কিছুটা সমস্যা হবে।(আমি)
.
--আমি বুঝতে পেরেছি। কোনো চিন্তা করো না। আমি আমার নিজের সাইজকে কনট্রোল করতে পারি।(বলেই ভিরু একদম ছোট বিড়ালের সাইজের মতো ড্রাগন হয়ে গেলো)
.
--ওয়াও।।। তোমাকে তো এই সাইজে অনেক কিউট লাগছে।(আমি ওকে কোলে নিয়ে বল্লাম)
.
--হুমমম দেখতে হবে না কে আমি।(ভিরু)
।।।
।।।
আমি আর কিছু বল্লাম না। ওকে কোলে রেখেই আমি উড়তে শুরু করলাম। এবার আর কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আমি যেভাবে চাচ্ছি উড়তে পারছি। ডানার বিষয়টা খারাপ লাগে না। শুধু সেটাকেও হাতের মতো মনে করতে হয়। অনুভব করতে পারলে ডানা নরানো কোনো সমস্যা নয়। প্রথমে একটু সমস্যা হচ্ছিলো কারন দুটোর জায়গায় এখন চারটা ডানা হয়েছে। আমি এতো দিন এই ছোট একটা বিষয় বুঝতে পারি নি। আমার সাদা আর কালো ডানার মধ্যে শক্তির পার্থক্য থাকায় ঠিক করে উড়তে পারে না। রাতের বেলাতে সাদা ডানার ক্ষমতা বেশী থাকায় এবং দিনের বেলা কালো ডানার ক্ষমতা বেশী থাকায় দুই সময়েই আমি উড়তে পারি না। কিন্তু লড়াই এর সময় হয়তো দুই ডানার ক্ষমতা কোনো কারনে এক রকম হয়ে যায়। আর সেটার কারনে আমার উড়তে সমস্যা হয় না।
।।।
।।।
আমি আর ভি রু দা পুরো অর্ধেক বেলা উড়ার পর একটা রাজ্যের বর্ডার দেখতে পেলাম। দূর থেকেই দেখতে পাচ্ছি বিরাট একটা গোল জায়গার চারদিকে বিশাল উচু দেওয়াল দিয়ে বেষ্টিত করা। আমি দূরের রাজ মহল দেখেই বুঝতে পারলাম এটা সিলভার লোটাস রাজ্য। যাক ঠিক জায়গাতেই আমি এসে পৌছালাম। আমি রাজ্যের বর্ডারের অনেকটা দূরে নামলাম।
.
--এটা তো সিলভার লোটাস। ভ্যাম্পায়ারের বংশরা এটা শাসন করে। আমি শুধু শুনেছিই আগে কখনো দেখি নি।(ভিরু)
.
--কেনো এই দুনিয়া ঘুরতে বের হও নি কখনো?(আমি)
.
--আমি এইখানে আছি এখানের সবাই জানতে পারলে ভয়ের মধ্যে থাকতো। তাই আমি কখনো ইন্টারেস্ট দেখায় নি। তাই হয়তো বেশীরভাগ মনস্টারই আমার এখানে থাকার বিষয়টাকে একটা গুজব মনে করে উড়িয়ে দিয়েছে।(ভিরু)
.
--তাহলে তো মনে হয় এই প্রথম এতো বছর পরে এই দুনিয়া ঘুরে দেখবে তুমি?(আমি)
.
--হ্যা। আর সেটার জন্য আমি অনেক উৎসাহিত।(ভিরু)
.
--আচ্ছা ঠিক আছে চলো এবার হাটা যাক।(আমি)
.
--হাটবে কেনো? তুমি তো বলেছিলে তুমি রাজার মেয়ের হবু জামাই। তাহলে হেটে যেতে হবে কেনো?(ভিরু)
.
--দেখো আমিই যে ডেভিল কিং হবো সেটা আমি আমার আর তোমার মধ্যেই রাখতে চাই। তুমি তো জানোই সবাই ডেভিল কিং এর ব্যাপারে জানতে পারলে অনেক ভয় পাবে। হয়তো পুরো পাঁচ রাজ্য আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করবে। আর আমি সেটার জন্য এখনো প্রস্তুত ও হয় নি।(আমি)
.
--আচ্ছা ঠিক আছে আমি বুঝতে পেরেছি। তাহলে আমাদের সাধারন হয়ে থাকতে হবে। তুমি তোমার নিজের পরিচয় গোপন রাখবে আর আমি আমার নিজের।(ভিরু)
.
--হ্যা।(আমি)
।।।
।।।
আমি হাটতে লাগলাম আস্তে। এখনো কোনো রাজ্যের বাইরে আমার যাওয়া হয় নি। এই দুনিয়াতে আসার পর আমার দিন শুধু লোচার্ট একাডেমিতেই কেটেছে। তারপর এনার সাথে ওদের রাজ্যে এসেছি ট্রেনে। তারপর রাজ্যের কড়া সিকিউরিটি দিয়ে আমাদের রাজ প্রাসাদে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমি এই রাজ্যের কিছুই দেখতে পারি নি এখনো। এতোক্ষন আমি আর ইগড্রাসিল এই দুনিয়ার সুন্দর্য দেখতে ছিলাম। আমি এ দুনিয়ার সুন্দর্যে অনেক মুগ্ধ হয়েছি। চারিদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ। যেদিকে দেখবো সেদিকেই বড় বড় পাহাড়, নদী, বন। ভিরু আমার ডান কাধের উপরে গিয়ে বসলো।
।।
।।
আমি আস্তে আস্তে রাজ্যে ঢোকার বড় দরজার দিকে আস্তে লাগলাম। দেখতে পেলাম একটা পাকা রাস্তা রাজ্যের ভিতরে চলে গেছে। বাইরের রাস্তা দিয়ে হয়তো অন্য কোনো রাজ্যে যাওয়া যায়। আমি বড় দরজার দিকে আগাতে লাগলাম। আমি দেওয়ালের যত কাছে যেতে লাগলাম ততই অবাক হলাম। প্রায় পঞ্চাশ মিটারের দেওয়াল হবে। কেউ উড়ে রাজ্যে যাতে প্রবেশ না করতে পারে সেজন্য দেওয়ালের উপরে অনেক সৈন্য দাড়িয়ে আছে। সবার হাতে ধনুক থাকলেও তীর নেই। হয়তো ম্যাজিক দিয়ে তীর বানিয়ে সেগুলো দিয়ে আঘাত করে যারা উড়ে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। আবার শত্রু পক্ষ আক্রমন করলেও নিরাপত্তা হয়তো এভাবে নেওয়া হয়। 
।।
।।
আমার সামনে সবাই লাইন ধরে দাড়িয়ে আছে। রাজ্যের ভিতরে যেতে হলে হয়তো সবাইকেই চেক করাতে হয়। বড় দরজার সামনে অনেক সৈন্য দাড়িয়ে আছে। তারা এক এক করে সবাইকে চেক করে ঢোকাচ্ছে। একটা জিনিস খেয়াল করলাম যারা হান্টার তাদের কোনো চেকের প্রয়োজন হয় না। বরং তারা তাদের কার্ডটা দেখিয়েই ঢুকে যেতে পারে। কিন্তু সাধারন লোকজনের অনেক সময় লাগে ঢুকতে। আমার সামনে প্রায় বিশ জনের মতো দাড়িয়ে আছে। তাদের মধ্যে বেশীরভাগই ব্যবসায়ী। সবার সাথে বড় বড় গাড়ি আছে। সেগুলো চেক করাতে অনেক সময় নিচ্ছে। ভিরু আপাতোতো কথা বলতেছে না। এমনিতেই সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে। হয়তো তারা কখনো ড্রাগনের বাচ্চাকে দেখে নি। আর ড্রাগন এমনিতেই অনেক রেয়ার হয়। আমি ভয়ে আছি ভিরু কথা বললে এরা কি বলবে সেটা নিয়ে।
।।।
।।।
কিছুক্ষনের মধ্যে দুইজন সৈন্য আসলো আমার সাথে কথা বলার জন্য। দুজনই ভিরুর দিকে তাকিয়ে আছে। আমার মনে হচ্ছে ও ইগড্রাসিল এটা মনে হয় বুঝে গেছে।
.
--আপনি কি হান্টার?(এক সৈনিক আমাকে জিজ্ঞাসা করলো)
.
--না।(আমি)
.
--আপনার পরিচয় কি? একজন হান্টার ছাড়া একটা ড্রাগন কিংবা ড্রাগনের বাচ্চা নিজের কাছে রাখা অনেক বড় অপরাধ।(সৈনিক)
.
--আমি তো সেটা জানি না।(আমি)
.
--কোন রাজ্য থেকে এসেছেন আপনি? কোনো গুপ্তচর নাতো আবার?(সৈনিক)
.
--আরে কি বলতেছেন।(আমি)
।।।
।।।
আমাকে আর কিছু বলতে দিলো না। আমার সারা শরীর চেক করতে লাগলো। হঠাৎ একটা কয়েনের মতো কিছু একটা বের করলো আমার পকেট থেকে। আমার মনে আছে সেটা এনার বাবা আমাকে দিয়েছিলো এনগেজমেন্টের রাতে। আমি নাকি এটা দিয়ে এই রাজ্যের যেখানে সেখানে আমার মন মতো ঘুরতে পারবো। কয়েনটা দেখে সেটা আবার জায়গা মতো রেখে দিয়ে এবার আমাকে কুর্নিশ করলো,
.
--আমি অনেক দুঃখিত জনাব। আপনি যে রাজার বংশের কেউ সেটা আমি জানতাম না। আমাকে মাফ করবেন। আপনি আমার সাথে আসুন। আমি আপনাকে ভিতরে ঢুকিয়ে দিচ্ছি।(সৈনিক)
.
--কোনো সমস্যা নেই। তাহলে কি রাজার বংশের কেউ হলে কি আমি এই ড্রাগনের বাচ্চাটা রাখতে পারবো?(আমি)
.
--জনাব, রাজা কোয়াডার্টের যদি কোনো সমস্যা না থাকে তাহলে আমাদের কোনো সমস্যা নেই।(সৈনিক)
.
--ঠিক আছে আমি রাজার সাথে কথা বলবো।(আমি)
.
--আপনাকে কি কোথাও পৌছে দিবো জনাব?(সৈনিক)
.
--না সেটার প্রয়োজন নেই। আমি নিজেই যেতে পারবো।(আমি)
.
--আচ্ছা সাবধানে যাবেন জনাব।(সৈনিক)
।।
।।
যাক রাজার দেওয়া কয়েনটা কাজে দিলো। কয়েনটা হয়তো রাজার বংশের সবার কাছেই থাকে। এটা কাছে থাকা মানে আমি সব কিছু করতে পারবো। আমার খুব ক্ষুদা লেগেছে। সেই রাজ প্রাসাদ থেকে বের হওয়ার পর থেকে আর কিছু খাওয়া হয় নি। এর ভিতরে কত কিছু হয়ে গেলো। আমার ক্ষিদে ও বেরে চলেছে। দেখা যাক আশে পাশে কোনো খাবার হোটেল আছে নাকি। এই কয়েন দেখালে নাকি সব কিছু খাওয়া যাবে ফ্রিতে। দেখা যাক কি পাওয়া যায়। 
।।।
।।।
খুজতে খুজতে আমি একটা খাবার হোটেল পেলাম। তেমন আহামরী না। কিন্তু খাবার গুলো বেশ জোশ। আমি হঠাৎ ভিরুর আওয়াজ শুনতে পেলাম। ও এমনি মুখ দিয়ে কিছু বলছে না। বরং মনে মনে বলছে কিন্তু সেটা আমি শুনতে পাচ্ছি।
.
--এখানে আশার আগে একটা সৈনিকের কথা শুনেছি কিছুটা। তুমি আশে পাশে খাবারের দোকান খুজতে বিজি ছিলে বলে হয়তো খেয়াল করো নি।(ভিরু)
.
--আমি তোমার কথা শুনতে পাচ্ছি কিভাবে? তুমি তো মুখ দিয়ে কিছু বলতেছো না?(আমিও মনে মনে বল্লাম)
.
--আমার সাথে পার্টনার হয়েছো এজন্য আমি যা ভাববো সেটা তুমি শুনতে পাবে যদি আমি সেটা তোমার সাথে শেয়ার করতে চাই তাহলে।(ভিরু)
.
--ওওও। কি শুনেছো তুমি?(আমি)
.
--কারো নিখোজের ব্যাপারে বলতে ছিলো। বিবরন শুনে মনে হলো তোমার কথা বলতে ছিলো।(ভিরু)
.
--হ্যা হয়তো আমার রাজ প্রাসাদে যাওয়া উচিত। কিন্তু যাওয়ার সময় সেই সৈনিককে একটু দেখিয়ো তো আমাকে।(আমি)
.
--ঠিক আছে।(ভিরু)
।।।
।।।
দুজনে পেট ভর খাবার খেলাম। এখানের প্রধান খাবার হলো বোর নামক একটা প্রানী মনস্টারের মাংসের কাবাব। অনেক টেস্ট সেটা খেতে। নতুন সব মসলার স্বাদ পেলাম আজকে। আমি আর ভিরু খেয়ে তো নরতে পারছি না। দুজনে বের হলাম দোকান থেকে। আসলেই রাজার দেওয়া কয়েনটা ভালো কাজে দিলো। কোনো বিল লাগলো না আমাদের।।।। 
।।।
।।।
এরপর ভিরু সেই সৈনিককে খুজে বের করলো। আমি ওর সাথে একটু কথা বলতে লাগলাম। প্রথমে কিছু বলতে রাজি হচ্ছিলো না। কিন্তু রাজার দেওয়া কয়েনটা দেখানোর পর আমাকে উচু বংশের ভেবে ভালো করে কথা বলতে লাগলো,
.
--আমি শুনলাম কেউ নিখোজ হয়েছে বলে কথা বলছিলেন আপনি? সেটা কে?(আমি)
.
--আমাদের প্রিন্সেস এলিনার সাথে দুইদিন আগে এনগেজমেন্ট হয়েছিলো লংস্টারের বড় প্রিন্সের সাথে। রাজা আজকে ঘোষনা দিলো সে নিখোজ হয়েছে।(সৈনিক)
.
--ওওওও। কিভাবে হয়েছে সেটা কি জানেন?(আমি)
.
--সেটা রাজা বলে নি। তবে আমাদের রাজ্যের বাইরে খুজতে যেতে বলেছে। হয়তো অন্য রাজ্যের কেউ তাকে অপহরন করে নিয়ে গেছে।(সৈনিক)
.
--ওওওও। আচ্ছা খুজে দেখেন পেয়ে যাবেন।
।।।।
।।।।
হয়তো প্রিন্স এলেক্স ফিরে এসেছে ওর মিশন কম্পিট করে। যাক থরকে আমি বাস্তবে হয়তো দেখতে পারবো এটা ভেবে আমার মনটা পুলকিত হয়ে উঠলো। আবার অন্যদিকে কিছু শয়তানি বুদ্ধিও মনে আসা শুরু করলো। আমি রাজ প্রাসাদের দিকে রওনা হলাম। ভি রু দা তো আমার সাথেই আছে। এবার আমি আল্ট্রা স্পিড ব্যবহার করলাম। সবার বাড়ির উপর দিয়ে আমি যেতে লাগলাম।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
(((চলবে)))
।।
।।।
।।।।
।।।।।
তিনটা ছোট প্রশ্ন সবার জন্য। 
১)জ্যাকসন ব্রিটের কাছে যে তলোয়ারটা সেটার নাম কি?
২)এই গল্পে মনস্টার দুনিয়ার কয়টি রাজ্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে?
৩)এই পার্টে কোনো সমস্যা আছে?

1 comment

  1. Exonia, 5, still exploring the prb
Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.