পার্টঃ২০
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
।।।।।
।।।।।
।।।।।
আমি দেওয়াল ভেঙে অন্য পাশে গিয়ে পরলাম। আমার কথামতো বাকি সবাই একসাথে এখানে টেলিপোর্ট হয়ে আসলো। আমি আস্তে আস্তে উঠার চেষ্টা করলাম। নিজেকে একটু হিল করার চেস্টা করতে লাগলাম কিন্তু কোনো কাজেই আসলো না। আমার হিলিং ক্ষমতা কাজ করছে না। কোমরে সেই রকমের ব্যথা অনুভব করলাম। একটা হাড় ভেঙে গেলে অনেক ব্যথায় করে। কিন্তু এমন ব্যথার অভ্যাস আমার অনেক আগে থেকেই ছিলো তাই আমি উঠলাম। আমার পাশে বাকি সবাই এসে দাড়ালো।
.
--আমাদের একটা সুযোগই আছে। মিচেল তুমি ফ্লেম থ্রোয়ারটা ব্যবহার করো। আর সব শেষে হিমারো তুমি তোমার কাজ করবে।(অনু)
.
--তোমরা একটু সাবধানে কাজ কইরো। কারন আমি যতটুকু ভেবেছিলাম নিরাম্বা তার থেকেও শক্তিশালী।(আমি)
।।।।
।।।।
মিচেল তার নেনো টেকনোলজি দিয়ে ফ্লেম থ্রোয়ার বানিয়ে ফেললো। এবং সেটা দিয়ে দূর থেকেই নিরাম্বার দিকে ফায়ার করতে করতে আগাচ্ছিলো। নিরাম্বাকে এবার কিছুটা দুর্বল মনে হচ্ছিলো। কারন আগুন জিনিসটা নিরাম্বাকে দুর্বল করে দেই। এই একটা জিনিসকেই ও সবচেয়ে বেশী ভয় পাই। মিচেল খুব সুন্দর করেই পুরাচ্ছিলো নিরাম্বাকে। আর হিমারোও পিছন পিছন যাচ্ছিলো নিরাম্বার ক্ষমতাকে এবজোর্ব করার জন্য। কিন্তু কোথা থেকে নিরাম্বার তিনজন সেনা চলে আসলো। তাদের দেখেই মিচেল বলে উঠলো।
.
--এরা তো রেনো, প্রেয়া, হায়ান। এদেরকে কেউ আটকাও।(মিচেল)
.
--আমি চেষ্টা করছি।(আমি)
।।।
।।।
হিমারো রেনোকে ধরে ওর মধ্যে থাকা কালো শক্তিকে এবজোর্ব করে নিলো। এতে করে রেনো মুক্ত হয়ে গেলো নিরাম্বার হাত থেকে। আমি আমার ফাস্ট মুডে দৌড় দিলাম। প্রেয়াকে ধরতে যাবো। এমন সময় আমি আটকে গেলাম যেখানে আছি সেখানেই। প্রথমে ভাবলাম হয়তো ডুইন করেছে এটা। কিন্তু পরেই দেখতে পেলাম প্রেয়ার কাজ এইটা। আমি শুনেছিলাম প্রেয়া একজন জাদুকর। অনেক ধরনের জাদুই সে জানে। আর অনেক ক্ষতিকরও সে। আমি নরতেই পারছিলাম না। তখনি গুয়েন একটা তীর মারলো প্রেয়ার পায়ে। প্রেয়ার স্পেল মনে হয় ভেঙে গেছে। এখনি সময় ওকে হিমারোর হাতে তুলে দেওয়ার। আমি দৌড়িয়ে ওকে ধাক্কা দিয়ে হিমারোর উপরে ফেলে দিলাম। হিমারো সাথে সাথে ওকেও মুক্ত করে দিলো। কিন্তু তখনি হায়ানো ওর কিছু ড্রোন নিয়ে আসলো সেই জায়গায়।
.
--টার্গেট লক করো। এবং সবাইকে উড়িয়ে দাও।(হায়ানো)
।।।
।।।
আমি ভাবলাম হয়তো ড্রোন দিয়ে গুলি করবে। কিন্তু পরক্ষনেই বুঝলাম গুলি করবে না। বরং ড্রোন আমাদের দিকে ছোট ছোট নিউক্লিয়ার মিচাইল লন্স করছে। ধামাকা হওয়ার আগেই হিমারো হায়ানোর কালো শক্তিকেও এবজোর্ব করে নিয়েছে। তবে ধামাকা তো আর এবজোর্ব করতে পারবে না। আমি আমার ফাস্ট মুডে সবাইকে নিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করলাম। কিন্তু কোথায় যাবো যাওয়ার আগেই বোম বিশাল একটা বিস্ফোরন হয়ে গেলো।
।
প্রথমে তো ভেবেছিলাম আমরা মরে গেছি। কিছুক্ষন পরেই বুঝতে পারলাম না আমাদের কিছুই হয় নাই। চোখ খুলে দেখতে পেলাম আমাদের চারপাশে একটা ঢালের মতো জিনিস হয়ে গেছে। যেটা আমাদের শুধু বিস্ফোরন থেকেই বাচাই নি। বরং আমাদেরকে বাচিয়েছে বিস্ফোরন হওয়ার পরে ভেঙে যাওয়া রাস্তা থেকে। এই ঢাল না থাকলে আমাদের উপরেই স্টেশনের উপরের রাস্তা এসে পরতো। নিরাম্বা অনেক আগেই এখান থেকে পালিয়েছে। হয়তো সন্ধার সময় হয়ে গিয়েছে। আর নিরাম্বা এখন বাইরেই থাকবে।
.
--কি হলো আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না। এই ক্ষমতা কে ব্যবহার করছে?(গুয়েন)
.
--আমাদের মাঝে তো কেউই না।(অনু)
.
--তাহলে আমরা এভাবে বেচে আছি কিভাবে?(আমি)
.
--সেটাও জানি না। সব কিছু নরছে আমাদের উপরে মনে হয় হামলা করা হচ্ছে।(হিমারো)
.
--সব আমার দোষ। আমার জন্যই এখানে আটকা পরতে হলো তোমাদের।(হায়ান)
.
--ব্রো তোমার ড্রোন হামলাটা কিন্তু অস্থির ছিলো। শুধু সেটা আবার না করলেই হবে।(আমি)
.
--হুমমম।।। এখন বের হবো কিভাবে?(হায়ান)
.
--ব্লাস্ট করতে হবে এই উপরের সব কিছু।(অনু)
।।।।
।।।।
তখনি আমাদের উপরে সব জিনিস ক্লিয়ার হয়ে গেলো। আর আমরা আস্তে আস্তে উপরে উঠতে লাগলাম। হাওয়ায় এই প্রথম উড়তেছি অনেক ভালো লাগছে আমার কাছে।
.
--মাত্র দুইদিনে এখানের অবস্থায় তো পরিবর্তন হয়ে গেছে।(ডুইন)
.
--এসব তুমি করেছো ডুইন?(আমি)
.
--কেনো ও করবে কেনো। আর কাউকে কি চোখে পরছে না।(হৃদয়)
.
--তাহলে রাজা হৃদয় টিটান এসেছেন।(অনু)
.
--হ্যা অনেক বোর হচ্ছিলাম। কত বছর হয়ে গেলো কিন্তু তোমরা কেউই নিতে আসলে না। পরে ডুইন আসার পর চলেই আসলাম।(হৃদয়)
.
--আমি আর ঔ প্লানেটে যাচ্ছি না। তার আগে বলো এখানে কি হচ্ছে।(ডুইন)
.
--কি আর হবে নিরাম্বাকে প্রায় হারিয়ে দিচ্ছিলাম আগুন দিয়ে। কিন্তু সেই সময়ে হায়ান দিলো বারোটা বাজিয়ে।(মিচেল)
.
--আমার কোনো দোষ নাই আমি তখন নিরাম্বার কন্ট্রোলে ছিলাম।(হায়ান)
.
--আচ্ছা যার কথা বলতেছো। মানে নিরাম্বা। তার দুর্বলতা কি আগুন?(হৃদয়
.
--হ্যা।(গুয়েন)
.
--তাহলে তোমরা সঠিক মানুষকে নিয়ে আসছো। আমি তো আগুনের রাজা।😎😎😎(হৃদয়)
.
--আর কত কিছুর রাজা তুমি?(আমি)
.
--বাচ্চারা তোমাদের ধারনাই নাই তোমাদের সাথে কে আছে বুঝছো।😎😁। আর হ্যা আমি একটা সাহায্যও নিয়ে আসছি।(হৃদয়)
.
--তোমার দানব কোথায় গেলো?(ডুইন)
.
--রনইক দে কোথায় তুমি?(হৃদয়)
।।।।
।।।।
হঠাৎ এক লাফে বিশাল পুরো বিশাল দেহী একটা দানব চলে আসলো আমাদের কাছে। সাইজে তো পুরো আমাদের থেকেও ২৫ গুন বড় হবে। মানে সে আসলেই বিশাল। শুধু দানবদের কথা শুনেই এসেছি আজকে সামনা সামনি দেখলাম।
.
--পরিচয় করিয়ে দি। আমার দানব রাজ্যের সেনাপতি। আর আমার একান্ত কাজের বন্ধু রনইক দে।(হৃদয়)
।।।
।।।
আমরা সবাই হা করে তাকিয়ে ছিলাম দানবের দিকে।
.
--মহারাজ এটা তো ঠিক আমাদের পৃথিবীর মতোই।(রনইক)
.
--হ্যা রনইক দে। আমি তো সেটার জন্যই তোমাকে এখানে নিয়ে এসেছি।(হৃদয়)
.
--এখানেও তাহলে দানব রাজ্য আছে।(রনইক)
.
--হ্যা।(হৃদয়)
.
--তাহলে তো একবার সেখানে যাওয়ার দরকার।(রনইক)
.
--এই বাচ্চাদের লড়াইটা শেষ করে আমি যাবো তোমার সাথে সেখানে।(হৃদয়)
।।।।
।।।।
তখনি কোথা থেকে নিরাম্বা চলে আসলো। অনেক অবাক করে চলে আসলো নিরাম্বার। নিরাম্বার হাতে কালো একটা তলোয়ার। বিশাল একটা তলোয়ার। এখন হয়তো বিশাল একটা লড়াই হবে ভাবছিলাম।
.
--রনইক এতো ভালো লাগে বলো। এটা তো দেখতে পুরো লুচিনের মতো। নিজের হাতে কি আমি আমার শ্বশুর কে মারতে পারি বলো। চলো একটু কথা বলে আসি।(হৃদয়)
.
--জ্বী মহারাজ।(রনইক)
।।।।
।।।।
হৃদয় আর রনইক গেলো নিরাম্বার সাথে কথা বলতে।
.
--হাই শ্বশুর আব্বা ভালো আছেন?(হৃদয়)
.
--.....(নিরাম্বা কোনো কথা বলছে না)
.
--আরে আপনার খোজেই ছিলাম জানেন। আপনার মেয়ে তো ঔদিকে মা হতে চলেছে আর আপনাকে আমি এখানে পেলাম। আর আপনার শরীর এভাবে কালো হয়ে আছে কেনো? পুরো কালিয়া হয়ে গেছেন।(হৃদয়)
.
--মহারাজ উনিও মনে লুচিনের কপি।(রনইক)
.
--হ্যা ঠিক বলেছো।(হৃদয়)
।।।।
।।।।
তখনি নিরাম্বা একটা ঘুসি মারলো হৃদয় এর মুখে৷ হৃদয় সেটা দেখতে পারে নাই। কারন সে রনইকের সাথে কথা বলছিলো। এক ঘুসিতে সে উড়ে অনেকদূরে গিয়ে পরলো। আমি শুধু তাকিয়ে রইলাম। কতই না বরাই করছিলো। কিন্তু নিরাম্বার কাছে সে কিছুই না। মুখের অবস্থাটা যে কি হয়েছে ওর সেটা কে জানে?
.
--অনেক হয়েছ তোমাদের। তোমাদের সবাইকে এখন আমি আমার গোলাম করে নিবো।(নিরাম্বা)
.
--সেটা কখনোই হবে না।(আমি)
।।।
।।।
আমরা লড়তে শুরু করলাম নিরাম্বার সাথে। নিরাম্বার সাথে বেশ ভালোই টক্কর হচ্ছিলো আমাদের সাথে। হঠাৎ আমি আমার হাত দুটো আগুনের করে নিলাম। এবং তারপর নিরাম্বাকে ঘুসাতে শুরু করলাম। অনেক দুর্বল হয়ে গেলো ও। কিন্তু পরক্ষনেই আমাকে ধাক্কা দিয়ে অনেক দূরে ফেলে দিলো। আমি ধাক্কা খেলাম একটা ট্রাকের সাথে। পিঠের হাড়টা মনে হয় ভেঙে গেলো ধাক্কায়। এবার নিরাম্বার শরীর থেকে কালো একটা ছায়া বের হতে শুরু করলো। যেটা সবার পা কিংবা হাত জরিয়ে ধরলো। তারপর সেটা আছাড় মারতে শুরু করলো সবাইকে। এতো জোরে আছাড় দিচ্ছে যে মনে হচ্ছে তাদের মধ্যে কেউ হয়তো এক আছাড়েই মারা গেছে। কিছুক্ষন পর নিরাম্বা ছেড়ে দিলো।
.
--তোমাদের মারলে তো আমার হবে না। আমার গোলাম হতে হবে তোমাদের সবাইকে।(নিরাম্বা)
।।।।
।।।।
তখনি কোথা থেকে জেনো হৃদয় চলে আসলো। দূরে হৃদয় এর দানব নিরাম্বার সব সেনাদের মারা নিয়ে ব্যস্ত। অনেক মজা পাচ্ছে সে তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। হৃদয় নিরাম্বার পিছন দিক দিয়ে উড়ে এসে নিরাম্বার একটা হাত কেটে দিলো। নিরাম্বা সাথে সাথে চিল্লানি দিয়ে উঠলো।
.
--এতোক্ষন বেশী হয়ে গেলো। শ্বশুরের মতো দেখতে বলে কিছুটা সময় দিয়েছিলাম গল্প করার জন্য। কিন্তু তুমি সেটাও দিলে না। উল্টো আমার চেহারাটা নষ্ট করে দিলে।(হৃদয়)
.
--আমি আমার হাতটাকে হিল করতে পারি নাই। কি দিয়ে আমার হাত কেটেছো?(নিরাম্বা)
.
--ওওও এটা। A gift from my old father।।।। চাইলে এক আঘাতে মারতে পারতাম কিন্তু কথা আছে না পিছন থেকে আঘাত করলে কাপুরুষের পরিচয় দেওয়া হয়। তাই শুধু হাত কাটলাম। আর এবার সামনে থেকে গলা কাটবো।(হৃদয়)
.
--এ্যাস্টার কিংবা ডাই এস্টার ইউনিভার্সে এমন কেউ নেই যে নিরাম্বাকে মারতে পারবে।(নিরাম্বা)
.
--তাহলে তো বাইরের ইউনিভার্স নিয়ে তোমার ধারনায় নাই। বাই দ্যা রাস্তা এই হাত দিয়ে কালো রক্ত বের হচ্ছে কেনো?(হৃদয় ওর জলন্ত তলোয়ার হাতে নিয়ে বললো)
.
--আমাকে কেউই মারতে পারবে না।(নিরাম্বা)
।।।।
।।।।
নিরাম্বা রাগে আরো কালো হতে শুরু করলো। মাটি থেকে আরো ক্ষমতা এবজোর্ব করতে শুরু করলো। মাটি কাপতে শুরু করলো। এমন সময় কোথা থেকে রনইক দে এসে নিরাম্বাকে পা দিয়ে পিষে ফেললো তারপর ওর উপর লাফাতে শুরু করলো।
.
--আরে সেনাপতি কি করলে তুমি এইটা। আমার কিল তুমি চুরি করে নিয়ে গেলা। এটা কি কোনো কথা হলো।😁😁😁😁(হৃদয়)
.
--আপনিই তো বলেছিলেন অনেক সেনাকে মারতে পারবা ঔখানে গেলে। কিন্তু এই পিপড়ার মতো সেনা মেরে আমার মন ভরে নাই। তাই আসল শয়তানকেই মেরে দিলাম।(রনইক)
.
--দূর মুডটাই তুমি নষ্ট করে দিলে। যাও তারপরেও নিজের হাতে তো শ্বশুর মারতে হলো না এজন্য আমি অনেক খুশি😉(হৃদয়)
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।