পার্টঃ১৯
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
।।।।।
।।।।।
।।।।।
গুয়েনকে আমার কাধে হাত রাখতে বললাম এরপর আমি আমার ঘড়িতে টাচঁ করতে যাবো এমন সময় বাবা বলে উঠলেন।
.
--পুরো ইউনিভার্স এখন তোমাদের উপরে নির্ভর করছে। কারন ব্লাক নাইট শুধু এখন এ্যাস্টার ইউনিভার্স ধ্বংস করবে না। তার চোখ এরপরে মাল্টিভার্সেও যাবে। আর সেটা হলে অনেক খারাপ হবে।(রাজা)
.
--আমি আমার পুরোটা দিয়ে চেষ্টা করবো।(আমি)
---
।।।
।।।
ঘড়িতে চাপ দিলাম। সাথে সাথে আমরা তিনজন টেলিপোর্ট হয়ে চলে আসলাম যেখান থেকে গিয়েছিলাম সেখানেই। আমাদের পাশেই বসে আছে অনু, মিচেল আর সুজেন। তিনজনের অবস্থায় বেশ ভয়াবহ। অনুর কাছে থাকা হিলিং ক্ষমতা দিয়ে আস্তে আস্তে তিনজনই হিল করার চেষ্টা করছে। আমাদের আসা দেখে ওরা রাগে আমাদের দিকে দিকে তাকালো।
.
--এই তোমাদের আসার সময় হলো? পুরো এক মাস যাবৎ আমরা নিরাম্বার সেনার মোকাবেলা করে যাচ্ছি একা একাই। আর তোমরা সময় কাটিয়ে আসলে?(অনু)
.
--সে অনেক ছোট কাহিনী। তবে এইটুকু বলতে পারি আমাদের টেলিপোর্টেশন ডিভাইস এখন টাইম মেশিনের কাজ করবে। আর সেটার কারন হচ্ছে ডার্ককিউম।(হিমারো)
.
--কি? তোমরা আসলে এক মাস পরে। তাহলে ডুইন কবে ফিরে আসবে তার ঠিক ঠিকানা নাই।(অনু)
.
--ডুইন এখনো আসে নি?(আমি)
.
--না।(অনু)
.
--মাথা ক্লিয়ার রাখো তোমার। আমি টেলিপ্যাথি ব্যবহার করতেছি।(আমি টেলিপ্যাথি ব্যবহার করে অনুকে সব কিছু দেখালাম। আমাদের বাবার সাথে কিভাবে দেখা হলো কি কথা হলো সব)
.
--বাবা এখনো বেঁচে আছেন?(অনু)
.
--হ্যা।(আমি)
.
--আর যে জিনিসটার জন্য তোমাকে পাঠিয়েছিলাম?(অনু)
.
--এনেছি। তবে একটু সমস্যাও আছে। একটাই পাওয়া গেছে। আর সেটা বাবার কাছেই ছিলো। এটা তোমাকে দিতে বলেছেন তিনি।(আমি হলুদ কলমের মতো জিনিসটা অনুর হাতে তুলে দিলাম)
.
--তোমারটা কোথায়?(অনু)
.
--সেটা হারিয়ে গেছে। আমাদের খুজতে হবে সেটা।(আমি)
.
--ঠিক আছে খুজতে পারবো তবে সেটার জন্য আমাদের বাকি সদস্যদের মুক্ত করতে হবে নিরাম্বার কালো জাদু থেকে। আর এই মেয়েটা কে?(অনু)
.
--আমি বুঝতে পারতেছি না কি বলবো আমি এখন। আপনারা দুজনই তাহলে প্রিন্স নিয়াক আর প্রিন্সেস হায়াকা?(গুয়েন)
.
--হুমমম।(অনু)
.
--প্রিন্সেস আমাকে চিনতে পারেন নি? আমি গুয়েন। সেনাপতি রেদ্রোস এর মেয়ে আমি।(গুয়েন)
.
--.....(অনু কিছু না বলেই গুয়েনকে জরিয়ে ধরলো)
।।।।
।।।।
এখন তো ছোট বেলার কথা আমারও মনে পরতেছে। তখন তো অনুর একমাত্র খেলার সাথী ছিলো গুয়েন। দুজনে একসাথেই বড় হচ্ছিলো, একসাথেই পড়া শিখছিলো, একসাথেই লড়াই শিখেছিলো। সে সময়টা কত না সুন্দর ছিলো এই পৃথিবীর সময়ের থেকে।
.
--এই কলমের মতো জিনিসটা দিয়ে কি করবে?(আমি)
.
--এটার নাম the pen of eyes। এটা দেখতে কলম। কিন্তু এটার ক্ষমতা সম্পর্কে তুমি কিন্তু জানো না?(অনু)
.
--এই দুটো কলম বানানো হয়েছিলো আপনাদের দুজনের জন্যই। সবারই কিছু না কিছু অস্ত্র থাকে। আর এই কলম নিজেই সব অস্ত্রের সমান। ব্যবহার করে দেখুন।(গুয়েন)
.
--ঠিক আছে।(অনু)
।।।।।
অনু কলমটাকে ধরার সাথে সাথে সেটা আরো হলুদ হয়ে গেলো। আস্তে আস্তে আলোটা বারতে লাগলো। এবং দেখতে দেখতে অনুর শরীরে চমৎকার একটা স্যুট চলে আসলো। একদম হলুদ রং এর একটা সুন্দর স্যুট হয়ে গেলো অনুর শরীরে। হাতে একটা তলোয়ার ও চলে আসলো কলমের বদলে। আমি হা করে তাকিয়ে আছি। কারন একটা কলমের মধ্যে এতো ক্ষমতা আছে। হাইরে আমার কপাল ফুটা। আমার কপালে এই কলম ছিলো না।
.
--প্রিন্সেস তুমি যেকোনো অস্ত্রের ব্যাপারে চিন্তা করে একটু চাপ দাও তোমার হাতের অস্ত্রে।(গুয়েন)
.
--হুমমম দিচ্ছি।(অনু)
।।।।
।।।।
এবার দেখতে পেলাম অনুর হাতের তলোয়ারটা একটা ধনুক হয়ে গেলো। আবার সাথে সাথে ট্রিশুল হয়ে গেলো একটা। আবার দেখতে পেলাম সেটা বিশাল মেশিনগান ও হয়ে গেলো।
.
--wow এটার মাঝে এসবও আছে।(অনু)
.
--ইউনিভার্সের সকল অস্ত্র পাবেন আপনি এটা ব্যবহার করে। শুধু চিন্তাশক্তি শক্ত রাখতে হবে। নাহলে সেগুলো সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে পারবেন না।(গুয়েন)
.
--তাহলে এবার লড়তে হবে আমাদের ভালো ভাবেই। হিমারো তোমাকে আমাদের তিন টিম মেটের ডার্ক এনার্জিগুলো এবজোর্ব করে নিতে হবে।(অনু)
.
--নিরাম্বা বাইরে অনেক মানুষকে নিজেদের সেনায় নিয়ে নিয়েছে।(মিচেল)
.
--আমি একজন মনস্টার হান্টার। কিন্তু এতো গুলো মনস্টার দেখবো জীবনেও চিন্তা করি নাই। এক সময়ে আমি পাগলের মতো সব ধরনের মনস্টার গুলোকে হান্ট করেছি। কিন্তু এবারের এডভেঞ্চারে আমি ভয় পাচ্ছি খুব। ওদের যত মারি ওরা আরো বারতে থাকে।(সুজেন)
.
--নিরাম্বার সেনারা সবার বিশুদ্ধ soul কে খেয়ে নেই। এবং যে শরীর পরে থাকে সেটা তখন নিরাম্বার জাদুর সাহায্যে চলে।(গুয়েন)
.
--এসব তুমি জানো কিভাবে?(অনু)
.
--তোমার বাবা আমাকে এসব কাহিনী বলেছিলো অনেক আগেই। আমরা তো ব্লাক নাইটের জেলখানায় সেই ১৮ বছরের বেশী সময় ধরে বন্ধী ছিলাম।(গুয়েন)
.
--কি????(অনু)
.
--হ্যা। আচ্ছা এসব কাহিনী পরে বলা যাবে। নিরাম্বার যেসব সেনা আছে সেগুলো যে soul গুলো কনজিউম করে সেগুলো সব নিরাম্বার শরীরে গিয়ে জমা হয়। এতে করে সে অনেক দীর্ঘ সময় ধরে বেচে থাকে।(গুয়েন)
.
--হ্যা। আর এখন দিনের সময়। তাই এখন আপাতোতো ওদের সেনাগুলো বের হবে না ছায়া থেকে। এখনি সঠিক সময় ওদের উপরে হামলা করার জন্য।(অনু)
.
--এখন ওরা কোথায় আছে?(আমি)
.
--প্যারিস।(অনু)
.
--সেখানে যেতে তো আমাদের অনেক সময় লেগে যাবে। ইউনিভার্সাল টেলিপোর্টেশন ডিভাইসও ব্যবহার করা যাবে না। নাহলে আবারো ভবিষ্যতে চলে যাবো আমরা।(আমি)
.
--তারপরও আমাদের চেষ্টা করতে হবে।(সুজেন)
।।।।
।।।।
আমরা ছয়জন টেলিপোর্ট হয়ে সোজা প্যারিসে চলে আসলাম। অনেক ইচ্ছা ছিলো প্যারিস ঘোরার। কিন্তু এভাবে ঘুরতে হবে আমি কল্পনাও করি নাই। অনেক ইচ্ছা ছিলো ফ্রান্সের আইফেল টাওয়ার দেখবো। কিন্তু এভাবে দেখবো সেটা কখনো চিন্তাও করি নাই।
.
--আইফেল টাওয়ারকে এভাবে ভেঙে ফেলছে কে?(আমি)
.
--নিরাম্বা এসেই প্রথমে এটাকে ধ্বংস করেছে।(সুজেন)
.
--আর কিছু পেলো না। পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর জায়গার মধ্যে এটা একটা ছিলো(আমি)
.
--আমাদের এইটা নিয়ে মাতামাতি করার সময় নেই এখন। দিনের সময় এটা এখন আমাদের কিছু সুযোগ রয়েছে। একবার নিরাম্বার কাছে যেতে পারলেই হলো।(অনু)
.
--নিরাম্বার কাছে গিয়ে কি করবো আমরা?(আমি)
.
--আমরা কিছুই করবো না। তখন হিমারো নিরাম্বার সব ক্ষমতা নিজের মধ্যে এবজোর্ব করে নিবে। আর তখন নিরাম্বা দুর্বল হয়ে পরবে। সেই সুযোগে তার গর্দান কেটে ফেলতে হবে।(অনু)
.
--আমাদেরকে শুধু নিরাম্বার কাছে পৌছাতে হবে।(আমি)
.
--হ্যা। তবে খেয়াল রাখতে হবে তোমাদের মাঝে কেউ জেনো নিরাম্বার সেনার কারো হাতে না পরে। এতে করে তোমাদের soul নিবে না নিরাম্বা। বরং তোমাদেরকে তার কন্ট্রোলে নিয়ে যাবে।(মিচেল)
।।।
।।।
আর কিছু কেউ বললো না। সবাই বেরিয়ে পরলাম। এতক্ষন ছিলাম একটা বিল্ডিং এর ৫ম তলায়। নিচে নামার পর অনু সাথে সাথে ওর হাতে থাকা ধনুক দিয়ে তীর ছুরতে লাগলো। মিচেল ওর কাছে থাকা বিভিন্ন ধরনের নেনো টেকনোলজির অস্ত্র ব্যবহার করা শুরু করে দিয়েছে। হিমারো ওর হাতের তলোয়ার নিয়ে এক প্রত্যেকটার কালো ক্ষমতা নিজের মধ্যে নিতে শুরু করলো। এতে হিমারোর কিছুই হয় না। বরং এটা ওর ক্ষমতা। ও যতো এবজোর্ব করবে ততো ওর এনার্জি বৃদ্ধি পাবে। সুজেন ওর কাছে থাকা তলোয়ার দিয়ে সবাইকে কাটতে শুরু করলো। গুয়েনের কাছেও বেশ কিছু নেনো টেকনোলজির অস্ত্র আছে। তার মধ্যে থেকে সে ধনুক বের করে অনুর সাথে সাথেই সেটা দিয়ে তীর ছুরতে লাগলো। আশে পাশের সবাইকে জম্বির মতো লাগছিলো। সব কালো জম্বি। এদের মধ্যে তো এখন জীবন নাই। তাই এদের জম্বি বললেই চলে। সবাই নিজের নিজের মতো লড়তে শুরু করলো। আমি কি করবো আমি মজা নিচ্ছিলাম। আমি আমার স্পিডমুডে দৌড়ানি শুরু করলাম। এক মিনিটেই পুরো প্যারিস শহর ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলাম। কোথাও কোনো প্রান আছে কিনা সেটা দেখার চেষ্টা করতে লাগলাম। কেউ বেচে থাকলে তো তাকেও এখান থেকে সরাতে হবে। কিন্তু কাউকেই পাইলাম না। দৌড়াতে দৌড়াডে হঠাৎ একটা মাটির নিচের ট্রেন স্টেশনে আমি কিছু একটা দেখতে পেলাম। আসার সময় অনু আমাদের সবাইকে ব্লুটুড ডিভাইস দিয়েছে। যেটা দিয়ে সবার সাথে যোগাযোগ করতে পারবো।
.
--আমার মনে হয় আমি নিরাম্বাকে পেয়েছি।(আমি)
.
--কোথায় আছো তুমি?(অনু)
.
--GPS ব্যবহার করো। সেটা জন্য সময় নেই। আমি নিরাম্বার খুব কাছেই আছি।(আমি)
।।।।
।।।।
আমি দেখতে পেলাম। কালো একটা দানবের মতো শরীর নিয়ে একটা কালো সিংহাসনে বসে আছে একজন। এটাকেই নিরাম্বা মনে হলো আমার। আমি ভাবলাম ওর মাথায় কিছুটা ঝেকে আসি। চেষ্টা করলাম। কিন্তু সাথে সাথে আমার মাথা ব্যথা শুরু হয়ে গেলো।
.
--তো রাজা টেট্রোনিয়ামের পুত্র প্রিন্স নিয়াককে আমি এই ডাইমেনশনে পেয়ে গেলাম। এর থেকে ভাগ্যে আর কি আশা করা যায়। টেট্রোনিয়াম কে তো আমি নিজের হাতে মারতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ব্লাক নাইট আমার হাত থেকে সে অধিকার নিয়ে গেছিলো। তবে যেদিন আমাকে বললো টেট্রোনিয়ামের পুত্র এবং কন্যা দুজনেই এই ইউনিভার্সে আছে তখনি তোমাদের দুজনকে দেখার অনেক ইচ্ছা জাগলো।(নিরাম্বা)
.
--এসব কেনো করতেছো তুমি? কত মানুষ মারা যাচ্ছে।(আমি)
.
--এরা মারা যাবেই। শুধু এরা না পৃথিবীর সবাই মারা যাবে। এটাই নিয়ম। এটা হয়ে এসেছে এবং হয়ে আসবে। আমি এই পৃথিবীর সবার soul কে কনজিউম করে নিবো। আর ডার্ককিউম এসে এই পুরো পৃথিবীটাকে কনজিউম করে নিয়ে যাবে।(নিরাম্বা)
.
--আমি বেচে থাকতে সেটা কখনোই হবে না।(আমি)
.
--তাহলে তো মরতে হবে তোমাকে। এটাই চিরন্তন সত্য হয়ে ছিলো। আর হয়ে থাকবে। এই পৃথিবী খারাপ কাছে লিপ্ত হয়ে গেছে। আর যেখানে খারাপ কাজ বেশী হয় সেখানেই আমার প্রবেশ হয়।(নিরাম্বা)
.
--তোমার কাজগুলো বন্ধ করে দাও। নাহলে আমি তোমাকে মেরে ফেলবো।(আমি)
.
--হাহা। হাসি পেলো। দেখি আসো কতদূর পারো।(নিরাম্বা)
।।।।
।।।।
আমি আগিয়ে যাচ্ছিলো নিরাম্বার দিকে আমার পুরো স্পিডেই। তবে একটা ঠাপ্পর দিলো শুধু দূর থেকেই নিরাম্বা। যেটার এনার্জি এতো ছিলো যে আমি পাশের দেওয়াল ভেঙে বের হয়ে গেলাম। এতো শক্তি নিরাম্বার সেটা আমি কল্পনাও করতে পারি নাই। আমাকে মারতে ওর বেশী সময় লাগবে না। কারন আমাকে না ধরেই মনে হয় আমার কোমরের একটা হাড় ভেঙে ফেলছে সে।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।
অপেক্ষা করুন ২০ তম পার্টের জন্য। গল্পটার সিজন ১ দুই কিংবা তিন পার্টের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।