ওয়েবসাইট কাস্টমাইজেশন এর জন্য। Contact Us Welcome!

ডাইভার্স পর্বঃ ১৬

Bangla Dub Novels
 #ডাইভার্স#
পার্টঃ১৬
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
।।।।।
।।।।।
।।।।।
দেখতে দেখতে এক মাস সময় কেটে গেছে। সময়ের সাথে আমরা ৬ জনই তাল মিলিয়ে নিয়েছি। পাঁচ টা বছর আমাদের কাছ থেকে এভাবে চলে যাবে সেটা আমি ভাবতেই পারি নাই। এটা কিভাবে হলো আমি নিজেও বুঝতে পারছি না। আমি একটা চুপচাপ পরিবেশে বসে ছিলাম। নদীর পাড় ছাড়া কি আর নির্জন পরিবেশ হতে পারে। একটু আগেই লাইফের কষ্টময় একটা সময় কেটেছিলো আমার সামনে। কারন আমি নিলাকে দেখেছিলাম। নিলার বয়স এখন আমার থেকেও মনে হয় দু বছর বেশী হয়ে গেছে হয়তো। খুব খুশিতেই ছিলো সে। বিয়ে হয়ে গেছে শুভ নামের সেই ছেলেটার সাথে। একজন মানুষের কাছে এর থেকে কষ্টের বিষয় আর কি হতে পারে। হয়তো কষ্টটা আরো বেশী লাগার বাকি ছিলো। কারন আমি এখন নদীর পাড়ে বসে বসে নিলার মনের ভাবনাগুলোকে শুনতে লাগলাম। টেলিপ্যাথি ক্ষমতার এই একটা লাভ। নিজের শত্রু কি ভাবছে সেটা সম্পর্কে জানা যায়। আমিও বসে বসে দেখতে লাগলাম নিলার ভাবনাগুলো। ওর ভাবনাগুলো যখন দেখছিলাম+শুনছিলাম কখন যে নিজের চোখ দিয়ে পানি ঝড়ে গেলো নিজেও বুঝতে পারছি না। নিলার মনে মনে ভাবছিলো
.
--আমি তো শুভকে ভালোবেসেই বিয়ে করেছি। কিন্তু কিছু স্বপ্ন যে রোজ আমাকে দেখতে হয় সেগুলো তো কিছুই বুঝতে পারছি না আমি। আর তাছাড়া আমার মেয়ের চেকআপ করার সময়ও তো ডাক্তারের কথাটা শুনে আমাকে অবাক করে দিয়েছে। তখন তো শুভ বলেছিলো এটা হয়তো ডাক্তারদের ভুল। কিন্তু কিভাবে সেটা ডাক্তারের ভুল হতে পারে। আমি তো আজও শুভার ডিএনএ পরীক্ষা করেছি শুভকে না জানিয়ে। আমার সাথে তো শুভার ডিএনএ মিলে কিন্তু শুভোর সাথে তো কোনোদিক দিয়েই ডি এন এ মিলে না। আমি নিজেও এমবিবিএস ডিগ্রীর খুব কাছাকাছি এই জিনিসটা তো আমার কাছেও ক্লিয়ার হচ্ছে। না। তাহলে শুভা আমার মেয়ে কিন্তু শুভ ওর বাবা না। কিন্তু এটা বিজ্ঞানের দিক দিয়ে কিভাবে সম্ভব। কারন আমার তো আর কারো সাথে কোনো শারিরীক সম্পর্কই হয় নি কখনো? তাছাড়া শুভার আর সবার থেকে অন্যরকম। ওর ডিএন এ কোনো ডাক্তারই এনালাইসিস করতে পারতেছে না। প্রিয়া তো বললো হয়তো শুভার ভিতরে অন্য রকম কিছু একটা আছে। কিন্তু এই বিষয়ে আরো রিচার্জ করেই সে বলতে পারবে কি সেটা।(এগুলো সব নিলা ভাবছিলো ওর মনে)
।।।
।।।
আমার চোখ দিয়ে তখন কেনো জানি পানি ঝড়ছিলো। তার মানে কি আমি একজন বাবা হয়ে গেছি। কিন্তু সেটা কিভাবে সম্ভব। এখানে অনেক রহস্য লুকিয়ে আছে যেগুলোকে বের করতে হবে আমাকে। তার পূর্বে আমাকে দেখতে যেতে হবে যাকে আমি বাচিয়েছিলাম সেদিন। হ্যা সেই মেয়েটাই নিলার মেয়ে। হয়তো আমিই তার বাবা। কোনো এক দিক দিয়ে হলেই হলো। 
আমি আর দেরী করলাম না। পুরো পৃথিবীর সময়কে আমি থামিয়ে দিতে লাগলাম। সময়কে থামানো আমার ক্ষমতা না। বরং আমি এটাকে আস্তে চলতে দিতে পারি। কারন আমার কাছে আছে স্পিড। এতো জোরে দৌড়াতে লাগলাম যে সবাইকে দেখে মনে হচ্ছিলো সব কিছু জড়বস্তু। আমি পৌছে গেলাম শিশু পার্কে। এখানেই এসেছে নিলা আর শুভা। দুজনে খুবই মজা করছিলো। অনেক ভালো লাগছিলো তাদের দুজনকে এভাবে দেখতে। সেদিন মেয়েটাকে ভালো করে দেখতে পারি নাই। কিন্তু আজকে মন ভরে দেখে নিচ্ছি। আমি এখনো সিওর না যে ও আমার মেয়ে। তবে আমার কাছে একটু সম্ভবনা আছে। আজ থেকে পাচ বছর পূর্বেই আমার বিয়ে হয়েছিলো আর এই মেয়েটার বয়স এখন চারের মতোই। হতেই পারে কিংবা নাও হতে পারে। যায় হোক শুধু এইটুকু হয়েছে যে আমার অস্তিত্ব সবার কাছ থেকেই মিটে গেছে। আমি কোরবানি দিয়ে দিয়েছি যা আমি ভালোবাসতাম। যা আমি চাইতে শুরু করেছিলাম সে সবই আমি হারিয়ে ফেলেছি। 
দুজন কে হাসতে খেলতে দেখে আমার কাছে খুব ভালোই লাগছিলো। এখন তো আর ওদের সামনেও যেতে পারবো না। কারন আমাকে চিনবে না ওরা। আমি দেখতে পেলাম হঠাৎ করেই কয়েকটা ছেলে কোথা থেকে চলে আসলো। আর নিলাকে উত্ত্যক্ত করতে লাগলো। এটা দেখে আমার খুব রাগ হতে লাগলো। কিন্তু আমি কিছুই করলাম না। নিলা শুভাকে কোলে নিয়ে হেটে যাচ্ছিলো তারাতারি। কিন্তু ছেলে কয়টাও পিছু কিছু যাচ্ছিলো। হঠাৎ করেই একটা নির্জন জায়গা দেখে ছেলে গুলো টান দিয়ে নিলাকে সহ শুভাকে একটা নির্জন জায়গায় চলে গেলো। আমি শুধু আমার ভুতুরে রূপে দেখছিলাম সব। আমি সামনে যাচ্ছি না এখনো। কেনো জানি আমার মনে হচ্ছিলো সামনে কিছু ভালো হবে।
.
--কি ভাবছিস এতো জায়গা থাকতে আমি নির্জন জায়গা দিয়েই কেনো যাচ্ছিলাম? তোদের জন্য বলে রাখি ভুল মেয়ের মায়ের পিছু নিয়েছিলি তোরা।(নিলা)
.
--হিহিহি সবাই এমনি বলে। আজকে তো অনেক মজা হবে।(একটা ছেলে)
।।।।
।।।।
তখনি আমি আমার লাইফে মনে হয় আরো একবার অবাক হলাম। কারন এতোক্ষন শুভা নিলার কোলে ছিলো। কিন্তু হঠাৎ করেই তার চোখ গুলো জ্বলতে শুরু করলো। মেয়েটা বলতে লাগলো।
.
--আপনারা কে কি ভাবছেন সেসব আমি শুনতে পারতেছি। আমাকে আর আম্মুকে নিয়ে খারাপ কথা ভাবার সাহস হলো কিভাবে?(শুভা)
।।।।
।।।।
রাগে শুভা একটা চিল্লানি দিলো। যেটার জন্য সামনে একটা চিল্লানির কম্পন তৈরী হয়েছিলো। আর সেটার মধ্যে যারা ছিলো সবার কানের পর্দা ফেটে তারা বেহুস হয়ে গেলো। কিন্তু তখনি পিছন থেকে কালো স্যুট পরা কিছু লোক এসে নিলাকে ধরে ফেললো। শুধু তা নয় তারা নিলার সাথে শুভার মুখেও একটা ইলেকট্রিক ডিভাইস লাগিয়ে দিলো। এতে হয়তো শুভার আর চিল্লানিতে কাজ হবে না।।।। আমি তো এবার পুরো সিওর নিলা এখন আমার বউ না থাকলেও শুভা এখনো আমার মেয়ে। আর সারা জীবন আমার মেয়ে হয়েই থাকবে। আমি আমার পকেট থেকে রুমালটা বের করে সেটাকে বেধে নিলাম আমার মুখে। এরপরে আমার স্পিড পাওয়ার ব্যবহার করলাম। কালো স্যুট পরা মোট ৮ জন ছিলো। আমি ৭ টার পুরো মেমোরী ভু্লিয়ে দিয়ে ওদের নিয়ে পার্কের বাইরে ছেড়ে দিলাম। বাকি একটার যেটার হাতে শুভা ছিলো ওর হাত থেকে আমি শুভাকে নিয়ে শুভাকে দিয়ে দিলাম নিলার কোলে। আর শেষের টাকে বেধে রেখে দিলাম পাশেই। তারপর আমার আমি আমার নরমাল স্পিডে চলে আসলাম। এখানে আমি বাদে তিনজন ছিলো। তিনজনই অবাক হলো কি হয়েছে বুঝতে পারলো না ওরা।
.
--এটা কিভাবে হলো? আমি তো মাত্রই দাড়িয়ে ছিলাম। আর আমার হাতে বাচ্চাটা ছিলো।(লোকটা)
.
--এক মিনিটের জন্য চুপ থাক তুই। তোকে নিয়ে পরে ভাববো।(আমি)
.
--আপনাকে কি বলে যে ধন্যবাদ দিবো।(নিলা)
.
--থাক সেটার প্রয়োজন নেই।(আমি)
.
--কিন্তু এটা কিভাবে করলেন?(নিলা)
.
--এখানে একমাত্র এই ছোট প্রিন্সেসই নেই যার কাছে সুপার ক্ষমতা আছে। এমন আরো আছে।(আমি)
.
--আমি তো আপনাকে চিনি। সেদিন বিল্ডিং থেকে পরে যাওয়ার সময় তো আপনিই আমাকে বাচিয়েছিলেন।(শুভা আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে)
.
--তাহলে প্রিন্সেস তোমার উপরে ইলুশনের কোনো কাজ হয় নি তাই না?(আমি)
.
--মানে?(শুভা)
.
--নাম কি আপনার?(নিলা)
.
--নিয়াক।(আমি)
.
--আজকে হয়তো আপনি না আসলে ওরা শুভাকে ধরেই নিয়ে যেতো।(নিলা)
.
--কারো মধ্যে যদি কোনো সুপার ক্ষমতা থাকে তাহলে সব সময় উচিত তাকে লুকিয়ে রাখা। আপনি এভাবে যদি সবাইকে দেখিয়ে বেরান তাহলে তো সমস্যাই পরবে এই প্রিন্সেস টা।(আমি)
.
--কিন্তু।(নিলা)
.
--আমি ওদের সবার মাইন্ডের সব কিছু ভুলিয়ে দিবো আপনি চিন্তা করবেন না। আপনার মেয়ের এই ক্ষমতা সম্পর্কে যারাই জানে আমি তাদের সবার সেই জানাকে মুছে দিবো। শুধু সামনে সময় থেকে একটু সাবধান থাকবেন।(আমি)
।।।।।।
।।।।।।
আমি শুভার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম। কারন অনেক মন চাচ্ছিলো। কোলে নেওয়ার ইচ্ছা ছিলো। কিন্তু মেয়েটার সাথে মনে মনে কথা বলছিলাম। মেয়েটাও আমার মতেই টেলিপ্যাথিক। সব ক্ষমতা হয়তো ওর কাছে আমার মতোই আছে। তখনি কিছন থেকে কেউ আমার মাথায় আঘাত করলো। আঘাতের জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না। তাই প্রথমে নিচে পরে গেলাম। পিছন থেকে যে লোকটাকে আমি বেধেছিলাম সে হাতের ধরি কেটে একটা লোহার লাঠি দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করেছে। তারপর ফোনে বলতে লাগলো
.
--আমরা ভেবেছিলাম শুধু একটা মেয়েই এখানে সুপার ক্ষমতা নিয়ে আছে। কিন্তু আমাদের ধারনা ভুল ছিলো। এরকম আরো আছে বস। তারা সবার মন পারতে পারে এমনকি সেগুলোকে কন্ট্রোলও করতে পারে।(লোকটা)
।।।।
।।।।
এবার আমার রাগ একটু বেরে গেলো। রাগ বারলে যা হয়। চোখ দুটো লাল হয়ে গেলো। এবং আমি উঠে হাত দুটো একটু ঝাকি দিলাম। সাথে সাথে দুটো হাতই আগুন হয়ে গেলো। তারপর দিলাম লোকটার মাথায় একটা ঘুষি। এক ঘুষিতে মাথার নাম আর চিহ্নও দেখা গেলো না। এটা পুরোটাই আমার স্পিড মুডে করলাম। তারপর ওকে নিয়ে পাশের নদীতেই ফেলে দিলাম। 
.
--আপনি ঠিক আছেন তো। আপনার মাথা দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে।(নিলা জর রুমাল দিয়ে আমার মাথা মুছে দিয়ে বললো)
.
--এটার দরকার নাই। একটু রিলাক্স করলে এই ক্ষত খুব তারাতারি সেরে উঠবে।(আমি)
.
--ওও।(নিলা)
.
--আমি আজকে আসি।(আমি)
।।।
।।।
এটা বলেই আমি সেখান থেকে তারাতারি চলে আসলাম। আমার স্পিড এতো ছিলো যে কেউ হয়তো দেখতেই পাবে না আমাকে। আমি চেয়েছিলাম নিলার মন থেকে এসব কিছু মুছে দিবো আবার কি ভেবে করলাম না। থাক না এতে করে মনে হয় আমার মেয়েটার সাথে আমার মাঝে মাঝে দেখা হয়ে যাবে। আমি আর সময় নষ্ট করলাম না। যে লোকটাকে মারলাম ফোন এখন আমার কাছে। আমাকে শুধু শেষ নাম্বারটাকে ট্রাক করতে হবে। তবে লোকটার কথা শুনে বুঝতে পারলাম এমনো কিছু লোক আছে যারা আমাদের হান্ট করতে ইচ্ছুক। কিন্তু তারা তো জানে না আমাদের কাছে কি ক্ষমতা আছে।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
(((চলবে)))
।।
।।।
।।।।
।।।।।

Post a Comment

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.