পার্টঃ১৪
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
।।।।।
।।।।।
।।।।।
গল্প শুরুর প্রথমে কিছু কথা বলে রাখি। অনেকেই ভাবছেন এখানে হারকিউমাস আসলো কিভাবে? তাদের জন্যই বলছি যে এখানে মাল্টিভার্সের কথা এসেছিলো এটা আগেও পড়েছেন। মাল্টিভার্স হলো অনেক গুলো ইউনিভার্স অথবা ডাইমেনশন এর সমষ্টি। এখানে আমি যে চরিত্র নিয়ে গল্পটা শুরু করেছিলাম সে এক ইউনিভার্সের পৃথিবীতে থাকে। তাই সেটাকে আমি আমাদের বলে তুলে ধরেছি। মোট কথা এখানে আমি একটা চরিত্রের উপরে বসে গল্পটা চালনা করছি তাই সেই হিসাবে মনে করবেন আমি নিজে অন্য একটা ইউনিভার্সের পৃথিবীর হৃদয় বাপ্পী। আর রাজা হারকিউমাস যে সে আরেকটা ইউনিভার্সের পৃথিবীর হৃদয় বাপ্পী। তো হয়তো বুঝেছেন কিভাবে হারকিউমাসকে নিয়ে এসেছি। এখানে হারকিউমাসের চরিত্রে আমি গল্প চালনা করবো না। কারন এই গল্পে একজনই প্রধান চরিত্র। তবে টিমের বাকি সবার গুরুত্ব ও অনেক থাকবে। তাই গল্পের প্রধান চরিত্র প্রিন্স নিয়াকই থাকবে। প্রিন্স নিয়াক তো তার পৃথিবীতে অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলছে তাই নিয়াক নামেই তার পরবর্তী যাত্রা চলবে। তবে সামনে শুধু ধামাকাই পাবেন আপনারা। কারন হারকিউমাসের একশন গুলো সামনেই আসবে। তাহলে চলুন গল্প শুরু করা যাক।
।।।।
।।।।
।।।।
আমরা টেলিপোর্ট হয়ে চলে আসলাম ঠিক অদ্ভুদ একটা জায়গায়। ঠিক সেটাই যেটা আমি ভিশনে দেখেছিলাম।
.
--স্বাগতম তোমাদের আমার এই জল রাজ্যে।(হৃদয়)
.
--জল রাজ্য?(আমি)
.
--হুমমম। অবাক হচ্ছো কেনো তোমাদের গ্রহতে কি জল নেই?(হৃদয়)
.
--জল আছে তবে এমন জল রাজ্য নেই।(অনু)
.
--এমন সবারই মনে হয়। আমিও মনে করতাম। আমি কেনো পানির উপরে যত মানুষ আছে সবাই এটাই মনে করে। কিন্তু আসলে এসবই আছে।(হৃদয়)
.
--এক মিনিট। আমরা কি এখন পানির নিচে?(হিমারো)
.
--হুমমম।(হৃদয়)
।।।।
।।।।
তখনি রুমে তিনজন মেয়ে চলে আসলো। আমি হা করে তাকিয়ে ছিলাম। কারন তিনজনই দেখতে পরীর মতো দেখতে। হা করিয়ে না তাকিয়ে আর কি করবো আমি। শুধু আমি না বরং আমার সাথে সাথে ডুইন আর হিমারোও হা করে তাকিয়ে আছে। আমার মনে হয় এ তিনজন এই হৃদয়ের বোন হবে। সেটা হলে তো লাইন মারাই যায়।
.
--এরা কারা?(হৃদিতা)
.
--ওওওও এরা অন্য গ্রহ থেকে এসেছে।(হৃদয়)
.
--আবারো এলিয়েন।(নিলা)
.
--কেনো এলিয়েনের কথা শুনে ভয় পেয়ে গেলে মনে হয় নিলা।(সাইনা)
.
--ভয়ের কি আছে। আমি তো এমনিই বলছিলাম।(নিলা)
.
--আঃ তোমরা ঝগড়া করা একটু বাদ দাও তো। পরিচিত হও তোমরা। এ তিনজন হলো নিলা,হৃদিতা,আর ও সাইনা। আমার রানী তিনজন।(হৃদয়)
.
--কি রানী(আমার মনটা ভেঙে গেলো)
।।।।
।।।।
আমি কিছু না বলে দেখলাম অনুর দিকে। ও মনে হয় হৃদয়ের মন পরার চেষ্টা করছে। আমারও ঘটকা লাগছে। যদি এখানে আমাদের আটক করে রাখে ও তাহলে কি হবে। তখন তো দেখতেই পেলাম কিভাবে সব কিছু আটকে রেখে দিয়েছিলো।
.
--একটা কথা বলে দি তোমার ঔ জাদু আমার উপরে চলবে না। কারন আমি নিজেও একজন জাদুকর।(হৃদয়)
.
--আমি তো শুধু চেক করছিলাম যে আমরা এখানে নিরাপদ আছি কিনা?(অনু)
.
--ভয়ের কোনো কারনই নাই তোমাদের। তোমরা পুরোপুরি নিরাপদ এখানে। নিলা তুমি ওনাদের থাকার ব্যবস্থা করে দাও আজকের জন্য।(হৃদয়)
.
--ঠিক আছে।(নিলা)
.
--উহু সেটার প্রয়োজন নেই আমরা এখানে তোমার সাথে জরুরী কিছু কথা বলতে আসছিলাম।(আমি)
.
--হুমমম জরুরী কথা? ঠিক আছে বলো।(হৃদয়)
.
--শুধু তোমার কাছেই।(অনু তিন রানীর দিকে তাকিয়ে)
.
--ঠিক আছে যাচ্ছি আমরা।(বলেই তিনজন চলে গেলো)
.
--তাহলে হালকা হাওয়া বাতাসেরও তো দরকার।(হৃদয় কি যেনো মুখ দিয়ে বললো আর আশে পাশের সব দেওয়াল পুরো স্বচ্ছ কাচের হয়ে গেলো। ঔপাশের পানির সব কিছু দেখা যাচ্ছে তাতে)
।।।
।।।
আমরা দেখতে পাচ্ছিলাম লেজওয়ালা মানুষ মাছেদের সাথে খেলা করছিলো। সেই মজা লাগছিলো দেখতে।
.
--তুমি কি এই পুরো রাজ্যের রাজা?(আমি)
.
--হ্যা। তোমাকে দেখে আমি অনেক অবাকই হয়েছি জানো। আমার কাছে কেমন যেনো লাগছে এক রকম দেখতে। আচ্ছা আমি যদি অন্য কোনো চেহারা নিয়ে নি তাহলে তোমাদের সমস্যা আছে?(হৃদয়)
.
--না মোটেও না।(অনু)
.
--ঠিক আছে। এটা আমার খুব কাছের একজন মানুষের চেহারা। আমি রূপ বদলালে সিগমার রূপেই থাকি।(হৃদয়)
.
--আসল কথায় কি আসতে পারি?(অনু)
.
--ওওও সরি। আসলে আমি একটু বক বক করি বেশী। তাহলে কি হেল্প করতে পারি তোমাদের?(হৃদয়)
।।।
।।।
অনু হৃদয়কে সব বলে বুঝাচ্ছিলো। আমি ডুইন আর হিমারো বাইরের সব কিছু দেখতে ছিলাম। ডুইন একটু মজা করে একটা ডলফিনকে আটকে দিলো। যার কারনে ডলফিনটা একটা পাথরের সাথে হালকা ধাক্কা খেলো। সেটা দেখে আমি আর হিমারো হাসতে লাগলাম। কারন ডলফিনের উপরে একটা মেয়ে বসা ছিলো সে নিচে পরে যায়। সাথে সাথে কি যেনো হচ্ছিলো আমাদের। আমরা বাইরে টেলিপোর্ট হয়ে গেছি। একদম পানির মধ্যে।
.
--কি করছো কি ওদের বাইরে ফেললে কেনো?(অনু)
.
--ওদের প্রাপ্যই এইটা।(হৃদয়)
.
--ওরা মরে যাবে তো।(অনু)
.
--উহু পানিতে তো মরবে না। ওদের চারপাশে আমার ঢাল রয়েছে। এতে করে পানি ওদের শরীরের ভিতরে যাবে না। শ্বাস নিতে পারবে পানিতেই।(হৃদয়)
.
--ওরা কি করলো? আমি প্রথমেই ভেবেছিলাম এখানে আমাদের বিপদ আছে।(অনু)
.
--তোমাদের কোনো ক্ষতি করছি না আমি। বরং এই তিনজনের প্রাপ্য শাস্তি আমি দিচ্ছি। আমার প্রিয় ডলফিন ওদের জন্যই পাথরে আঘাত পেয়ে কেদে দিয়েছে।(হৃদয়))
.
--ডলফিনের শব্দও শুনতে পারো।(অনু)
.
--আমি রাজা হৃদয় টিটান। শুধু এই রাজ্যের রাজা নই বরং এই জলের সব কিছুর রাজা আমি। আমি জলে থাকা সবকিছুকেই অনুভব করতে পারি।(হৃদয়)
.
--ওদের ভুলের জন্য আনি ক্ষমা চাচ্ছি।(অনু)
.
--উহু।।। ওদের শাস্তি তো পেতেই হবে। কিন্তু মজাদার ভাবে দিতে হবে। ওরা এতোক্ষন মজা নিচ্ছো এখন আমরা নিবো।(হাহাহা করে হেসে বললো হৃদয়)
।।।।
।।।।
অনু তো ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলো হৃদয়ের সিরিয়াস মুড দেখে। কিন্তু এখন দেখে বুঝলো অনেক মজাদার টাইপের ছেলে হৃদয়।
।
আমরা খেয়াল করলাম আমরা পানির মধ্যে শ্বাস নিতে পারছিলাম তাই নাচতে ছিলাম আমরা তিনজন। বাকি সবার মতো আমরাও ডলফিন নিয়ে সেটা নিয়ে খেলা করছিলাম। কিন্তু তখনি হলো বিপদ। বিশাল কয়েকটা হাঙর মাছ আমাদের দিকে ছুটতে লাগলো। ওদের আকার অনেকটা বিশাল। এতোটা বিশাল যে এমন মাছ মনে হয় The Meg মুভিতেই দেখেছিলাম। আমরা ভয়ে সাতার কাটতে লাগলাম।
.
--এই তিনটা কিরে ভাই?(আমি)
.
--এবার আমাদের কাম শেষ মনে হয়। ঔ ডুইন ভাই তুমি আটকাও ওদের।(হিমারো)
.
--ওরা অনেক বড় আমি ওদের কিছুই করতে পারবো না। নিয়াক তুমি কিছু করো।(ডুইন)
.
--আমি সিরিয়াস সময়ে ভেবে পাই না আমার ক্ষমতাগুলো কিভাবে ব্যবহার করবো। এখন একটাই কাজ করতে পারো দৌড় দাও।(আমি)
.
--আমরা সাতার কাটছি ভাই।(ডুইন)
.
--আরো জোরে কাটো।(আমি)
।।।।
।।।।
আমরা সাতার কাটতে কাটতে একটা পাথরের দেওয়ালে আটকে গেলাম। তখনি পিছন থেকে হাঙরের মধ্যে একজন বলতে শুরু করলো। আমি কখনো ভাবি নি এমন দিনও দেখতে হবে। এ কোনো পৃথিবীতে চলে আসলাম যেখানে হাঙরে কথা বলে।
.
--তোদের মধ্যে আমার মেয়ে টাকে কষ্ট দিয়েছে কে?(একটা হাঙর বলে উঠলো)
.
--আমি কিছুই করি নাই এই দুইটা করেছে সব। আমি তো ওদের মানা করেছিলাম।(ডুইন সব দোষ আমাদের গাড়ে দিয়ে দিলো)
.
--চুপ একদম। জানু তুমি কোথায় ওদের ধরে খেয়ে ফেলো তো। ও আমাদের মেয়েটাকে কষ্ট দিয়েছে।(হাঙর কাকে যেনো বললো)
।।।।
।।।।
তখনি বিশাল একটা অক্টোপাস আমাদেরকে তার তিনটা হাত দিয়ে উঠিয়ে নিলো। তারপর বলতে লাগলো।
.
--এখন দুটোকে আমি গিলে খাবো। আর বাকি একটার নুডুলস বানিয়ে আমার মেয়েটাকে খাওয়াবো।(অক্টোপাস বলেই হাসা শুরু করলো)
.
--ওরে মা গো। কোথায় ফেসে গেলাম। এর থেকে আমি গাছের নিচেই ভালো ছিলাম। তোকে ঔ পুলিশ মেরে ফেললো না কেনো মেরে ফেললেই তো আমি খুসি হতাম।(হিমারো)
।।।।
।।।।
আমাদের তিনজনের অবস্থায় অনেক টাইট ভয়ে। আমি এতো ভয় জীবনেও কোনোদিন পাই নি। মানুষ হতো যুদ্ধ করতাম। কিন্তু এটা যে একটা বিশাল সাইজের অক্টোপাস। আমাকে এক নিমিষেই খেয়ে ফেলবে। ভয়ে কাপছিলাম আমরা তিনজনই। তখনি আমরা আবারো টেলিপোর্ট হয়ে চলে আসলাম অনুর কাছে। আমাদের অবস্থা দেখে দুজনেই খুব হাসছিলো।
.
--আমি আর জীবনেও পানির মধ্যে যাবো না।(আমি)
.
--পানির মধ্যেকার কোনো প্রানীকে কষ্ট দিলে এমনি হয়। ডলফিনটাকে কষ্ট দিয়েছো বলে আমি তোমাদের বাইরে পাঠিয়ে দিলাম। কিন্তু যে মেয়েটাকে কষ্ট দিয়েছো তাদের বাবা মা তো তোমাকে শাস্তি দিবেই হাহাহাহা।।।।(হৃদয়)
.
--ওগুলো কি ছিলো?(অনু)
.
--মানুষ।(হৃদয়)
.
--কিন্তু কিভাবে?(ডুইন)
.
--বাদ দাও এগুলো তুমি কি রাজি আছো আমাদের সাথে যাওয়ার জন্য।(অনু)
.
--যাওয়ার তো ইচ্ছা আমারও। অন্য ইউনিভার্সে যাবো এটা তো স্বপ্নের মতোই। আমি এর আগে অন্য কোনো গ্রহতেই যায় নি। যাওয়ার ইচ্ছা তো থাকবেই।(হৃদয়)
.
--তাহলে চলো।(আমি)
.
--তবে আমার এখন যাওয়া সম্ভব নয়। তোমরা তো বললেই খুব শীঘ্রই তোমাদের উপরে বিপদ আসবে। আর সেটার জন্য তোমাদের কাছে ৯ জনের টিমও রয়েছে। আমাকে দিয়ে ১০ জন। তো এক কাজ কইরো তোমাদের যখন আমার একান্তই দরকার পরবে তখন আমাকে নিয়ে যেয়ো।(হৃদয়)
.
--কেনো এখনি চলো। এখন কি করবে এখানে?(অনু)
.
--সমস্যা তো অনেক বড়ই। আমার ডার্ক পাওয়ার গুলো আস্তে আস্তে আনলক হওয়া শুরু করেছে আর এগুলো শুধু আমার না। বরং সবার জন্যই খুব ক্ষতিকর। আর যাদের সাথে লড়তে আমাকে নিয়ে যাবে তারাও কালো ক্ষমতার অধিকারী। তো এই ব্যাটেলে তোমাদের এখন কোনো সাহায্য আমি করতে পারবো না। তাছাড়া আমার পৃথিবীর উপরেও একটা অদৃশ্য রহস্য রয়েছে যেটা আমি বের করার চেষ্টা করতেছি।(হৃদয়)
.
--আচ্ছা তাহলে একান্তই দরকার পরলে আমরা আসবো।(অনু)
.
--হুমমম সেটার জন্য অপেক্ষা করবো আমি। তাছাড়া তুমি আমার রাজ্যগুলো এখন ঘুরে দেখতে পারো।(হৃদয়)
.
--না সেটার সময় এখন নেই৷ আমাদের টিমের বাকি সদস্যদের সাথে দেখা করার সময় হয়ে গেছে। আমাদের এখন যেতে হবে।(অনু)
।।।।।
।।।।।
আমি আর কিছু বললাম না। এতোক্ষন খুব ভয়ানক সময় কেটেছিলো। এই সময়টা আমার সব সময় মনে থাকবে। আমি ভুলেও কোনোদিন এই পৃথিবীতে তো আর আসবো না। এখানে মানুষ মনস্টার হয়ে যায়। আমাদের তিনজনের ভয়ের অবস্থা দেখে অনু আবার আমাদেরকে সেখানে নিয়ে আসলো যেখানে আমরা শুরু করেছিলাম। সেই হোল্ডার কম্পানির একদম আন্ডারগ্রাউন্ডের ফ্লোরে আমরা চলে আসলাম।
.
--এখানে আসলাম কেনো। বাকি সদস্যদের আনতে হবে তো।(আমি)
.
--উহু।। তারা এখানে কিছুক্ষনের মধ্যেই চলে আসবে। ইউনিভার্সাল টেলিপোর্টাল মেশিন আমাদের টিমের কাছে দুটো আছে। একটা আমাদের কাছে। আর একটা অন্য একজনের কাছে। সে বাকিদের নিয়ে এখানে চলে আসবে।(অনু)
.
--তাহলে এখন আমরা কি করবো?(আমি)
.
--রেস্ট নাও। অনেক ক্লান্ত আর ভয়ানক দিন কেটেছে আজকে তোমাদের।(হেসে দিয়ে বললো অনু)
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
অপেক্ষা করুন ১৫ তম পার্টের জন্য। কেমন হলো জানাবেন।😊😊😊😊