ওয়েবসাইট কাস্টমাইজেশন এর জন্য। Contact Us Welcome!

গল্প: ভালোবেসেছি তোরই মতো পর্বঃ ১৪

Bangla Dub Novels

 #ভালোবেসেছি_তোরই_মতো

#পর্বঃ১৪

#লেখিকাঃশাদিয়া_চৌধুরী_নোন


লাইলাকে দিয়ে খবর পাঠাতেই, নোরিন যথারীতি আগের অজুহাত দিয়ে নিশ্চিন্তে পড়তে শুরু করলো৷ হয়তো চলে গেছে এতোক্ষণে। কিন্তু ওর ধারণাকে ভুল করে মিনিট কয়েকের মাঝে নিবিড় স্বয়ং ওর রুমে এসে হাজির। নোরিন ভয়ে চেয়ার ছেড়ে দূরে সিটকে পরলো। 

নিবিড়কে দেখে ভূত দেখার মতো চমকে গেছে নোরিন। ঘোড়ার মতো লাফাতে থাকা হার্ট'কে শান্ত করতে চোখ বন্ধ করে কয়েকবার জোরে জোরে শ্বাস ফেললো। ভয়ে কয়েকবার আজমল সাহেবকে ডাকলো,

---- বা-বা-বাবাহ্! বাবা? উম্উম্.. 


---- খবরদার বাবাকে ডাকবি না। 

নিবিড় নোরিনের মুখ চেপে ধরে বলল। 


নোরিন  নিজেকে শান্ত করলো।  এক লহমায় নিবিড়ের হাত সরিয়ে ধাক্কা মারলো দূরে। নিবিড় পিছিয়ে গেলো কয়েক কদম। এইবার আর ভুল করলো না নোরিন। আবেগকে প্রশ্রয় না দিয়ে কঠিন স্বরে বললো,

---- আপনি আমার রুমে আসার সাহস কোথায় পেলেন? চলে যান এখান থেকে। এক্ষুনি! 


নোরিনের অগ্নিদৃষ্টিকে উপেক্ষা করে নিবিড় আরো শান্ত চাহনিতে তাকিয়ে রইলো। নোরিন আরো ঝাঁঝ নিয়ে বললো, 

--- চলে যেতে বলেছি না?  


--- তুই আমার কারণে বিয়েতে আসতে চাইছিস না আমি জানি৷ তুই এক্ষুনি আমার সাথে যাবি৷ রেডি হ। 


নোরিন চোখে আগুন নিয়ে বললো,

--- আমি কোথাও যাচ্ছি না। প্লিজ গেট লস্ট!  আপনাকে আমি সহ্য করতে পারছি না। 


নিবিড় একপাও নড়লো না। তার চেহারা দেখে মনে হচ্ছে,  সে এই জীবনে নড়বে না জায়গাটা থেকে। সে একমনে তাকিয়ে নোরিনের মতিগতি বোঝার চেষ্টা করছে। 


নোরিন এবার আগের চেয়ে স্বাভাবিক হয়ে গেলো। রুমে যেনো কেউই নেই, এমনভাবে ফ্লোরে পড়ে থাকা গ্রামার বইটা উঠিয়ে চেয়ারে বসে পড়তে শুরু করলো। গুণগুন করে পড়তে লাগলো, ভুলেও নিবিড়ের দিকে তাকালো না। হঠাৎ সামনে থাকা বইটা উধাও হয়ে গেলো। বইটাকে নিবিড় ফেলে দিয়েছে।  

নোরিন মুচকি হাসি বজায় রেখে টেবিলের সেল্ফ থেকে ফিজিক্স বইটা টেনে নিলো। যেন এটাই হওয়ার কথা ছিলো৷ নোরিন বইটা খোলার আগেই নিবির সেটাকেও দূরে ফেলে দিলো। নোরিন নাকে ফোঁসফোঁস নিশ্বাস ছেড়ে ব্যাগে রাখা খাতাটা বের করলো। নিবিড় ব্যাগটা টেনে ধরলো, নোরিনও ব্যাগের একটা অংশ ধরে টানছে। নিবিড়ের চোখ নোরিনের উপর কিন্তু নোরিন সেই কখন থেকে মাথা নিচু করে আছে৷ 

--- পড়া শিখাচ্ছিস তুই আমাকে? পড়ে কোন বিদ্যা মহাসাগরানী হবি রে তুই? পড়ালেখা কি তুই একাই করিস? আমরা কার চুল ছিঁড়েছি!

নোরিন আর বাচ্চামো করলো না। ব্যাগটাকে ছেড়ে দিয়ে রুমের বাইরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে এগিয়ে গেলো৷ নিবিড় এবার নোরিনের ছোট ছোট চুলগুলোকে টেনে ধরলো। 


---- বুড়ি জেদ করিস না। আমার সাথে চল। সবাই তোর জন্য অপেক্ষা করছে। নিজেকে রোবটে পরিণত করিস না। 


নোরিন এবার সরাসরি তাকালো।  নিবিড় থতমত খেয়ে হাত সরিয়ে নিলো। চোখ টকটকে লাল। 

---- বুড়ি তুই জানিস, আমি ত্যাড়ামো পছন্দ করিনা। আমি এক কথার মানুষ৷ আর একবার জেদ করলে চড় পরবে তোর গালে। 


 নোরিন ভ্রু উঁচিয়ে নিজস্ব ঢঙে বললো,

---- যা-বো না.... 


----আমি সত্যিই মারবো তোকে....


নিবিড়  সত্যি সত্যিই চড় মেরে দিলো নোরিনের গালে। নোরিন গালে হাত দিয়ে হালকা হেসে সোজা হয়ে দাঁড়ালো।  

তারপরের ঘটনাটা খুব তাড়াতাড়ি ঘটে গেলো। নিবিড় গালে হাত দিয়ে অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে আছে। নিবিড়কে পাল্টা চড় ফিরিয়ে দিয়েছে নোরিন। এখন বেশ শান্তি লাগছে তার। একটু হলেও প্রতিশোধ নিতে পারা গেলো। আহ শান্তি!  আরেকটা মারতে পারলে বেশ হতো। কিন্তু নোরিনের শান্তি বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না। নিবিড় নোরিনের হাত মুচড়ে ধরেছে। মুচড়ে ধরে একেবারে পিঠের সাথে ঠেকিয়ে চেপে ধরে আছে। চোখ দিয়ে যেন আগুন ঝরছে। নোরিন হিংস্র বাঘীনির ন্যায় ছাড়ার চেষ্টা করলো কিন্তু সফল হলো না। আচমকা নিবিড় নোরিনের কানে কানে বললো,

----- তুই যদি না যাস এখন আমার সাথে, আমি সবাইকে ঐ চিঠির কথা বলে দেবো। নানুমণি, চাচু, ফুপ্পি, জেরুদের আর মোস্ট ইম্পোর্টেন্ট তোর বাবাকে। আমার কাছে প্রমাণও আছে। আমাকে জ্বালিয়ে কি শান্তি পাস তুই বলতো? এতো তেজ! এক্ষুনি রেডি হয়ে নিচে নাম। 


নোরিনের বিস্ফোরিত নয়নকে উপেক্ষা করে নিবিড় নিচে নেমে এলো। তাকে দেখে মনে হচ্ছে,  এই মাত্র পানিপথের যুদ্ধে জয়ী হয়ে এসেছে। অন্যদিকে নোরিন কিংকর্তব্যবিমূঢ হয়ে তাকিয়ে রইলো। নিবিড়ের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া উচিত ছিলো। থ্রেট দিয়েছে তাকে? এতোবড় স্পর্ধা! আচমকা নোরিন ফ্যাচফ্যাচ করে কাঁদতে বসলো। কোথাও হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে। কেউ যদি ঐ চিঠির কথা জানতে পারে তাহলে তো নোরিন শেষ। বিষ খেতে হবে তখন। নিজের প্রেস্টিজ, সবার সামনে মান-ইজ্জত সব শেষ। নোরিনের নিজের একটা ইমেজ আছে তো না-কি! 


দশমিনিটের মাথায় নোরিন রেডি হয়ে লাগেজ গুছিয়ে নিচে নেমে এলো। আজমল আলী সেরনিয়াবাতের চোখ ছানাবড়া। যে মেয়ে কারো কথা শুনে না, একবার যা বলে তাই করে; সে কি না যাবে না বলার পরও রেডি হয়ে নেমে এলো। তারমানে নোরিন যাবে। আজমল আলী খুশি হলেন খুব৷ নোরিনের একটা স্পেসের দরকার। সবার সাথে কয়েকদিন আনন্দে কাটাক। পড়ার জন্য সময় তো আর পালিয়ে যাচ্ছে না। 


নিবিড় যখন নোরিনকে নিয়ে তার বাড়িতে পৌঁছালো এক এলাহী কান্ড। নানুমণি, সমস্ত মামা-মামী, খালামণি-খালু আর কাজিন- বাচ্চাদেরপার্টি নিয়ে ভরপুর।  নোরিনকে দেখেই ঘিরে ধরলো সবাই। নানুমণি তো কেঁদেই ফেললো। কাঁদতে কাঁদতে বললেন,

---- মা নেই বইলা কি আমরা তোর পর হইয়া গেছি? দেখিতো আমার সুন্দরী বানুরে! কত সুন্দর হইয়া গেছো। আমি মইরা গেলে যা ইচ্ছা কইরো, যতদিন বাঁইচা আছি একটু দেখা দিয়ে যাইয়ো বুড়িটারে। আজ আমার দিলারা বাঁইচা থাকলে..... 

আবার হুহু করে কান্না শুরু করে দিলো নানুমণি। মামীরা বলতে লাগলো, নানুমণি সেই সকাল থেকে কাঁদছে নোরিনের জন্য।  বুড়ো বয়সে মানুষ বাচ্চার মতো হয়ে যায়। নানা আবদার করে বসে।


নোরিন প্রতিত্তোরে কিছু বললো না। সকলে এভাবে ঘিরে ধরায় তার অস্বস্তি লাগছে। জায়িন ভাইয়ার বউ তো বলেই ফেললো,

--- নোরিন, তুমি তো অমাবস্যার চাঁদ।  সবাই তোমাকে কত পছন্দ করে আর তুমি আমাদের সাথে একটু দেখা করতেও আসো না। 


নিবিড়ের মা এসে নোরিনকে জড়িয়ে ধরলো একটু। নোরিন সালাম করে সোজা হয়ে দাঁড়ালো।  এতো ফর্মালিটি তার ভালো লাগছে না। যত্তসব আদিখ্যেতা!  এমনভাবে সবাই বলছে যেন, মরা মানুষ বেঁচে ফিরে এসেছে। নোরিন মিনমিনে গলায় নিবিড়ের মাকে বললো,

----- আমার একটু স্পেস দরকার। ভীষণ টায়ার্ড লাগছে। মাথাব্যথা করছে। প্লিজ রুমটা একটু দেখিয়ে দিন। 


নিবিড়ের মা বুদ্ধিমতী মহিলা। ভীড় এড়িয়ে নোরিনকে উপরের একটা ঘরে পাঠিয়ে দিলেন। 


নোরিন জেরুর সাথে রুমে এলো। জেরু বললো,

---- বোন তুই একটা চিজ আসলেই। আত্মীয় স্বজনের বিয়ে হলে কত মজা হয়! আমরা তো একমাস আগেই সব প্ল্যান করে রেখেছিলাম। কাল গায়ে হলুদেও আসলি না। তোর বাড়িতে গেলাম বললো, তুই নেই। 


নোরিন লাগেজ খুলে একটা জামা নিয়ে পর্দার আড়ালে চলে গেলো। জেরুর তো মুখে হাত। 

---- নোরিন আমি বাইরে দাঁড়াই?  তোর কি লজ্জা লাগছে না? 


নোরিন জামার পেছনের চেইন টানতে টানতে জবাব দিলো,

---- না! তোর লজ্জা লাগলে চলে যা। ডিজগাস্টিং..

 

জেরু অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে আবার বলতে লাগলো,

---- বিল্ডিং টা কত সুন্দর তাইনা রে ? পুরো অ্যাপার্টমেন্টহাউস টাই নিবিড়  ভাইয়াদের। নিচের সবগুলো ভাড়াটিয়া বড়লোক। কি যে ভাব নিয়ে চলে!  এমন ঘর তো আমি টিভিতে দেখি। দোতলা-দোতলা। হাত ধুয়ে বেসিনের পাশে কি একটা যন্ত্রের নিচে হাত রাখলাম। দেখি হাত শুকিয়ে গেছে৷  সবকিছু হোয়াইট।  নিচের আমগাছে অনেক আম ধরেছে। কাল আমরা খাবো কেমন? 


নোরিন বেডে হেলান দিয়ে মাথা রাখলো। 


---- নোরিন একটা কথা বলি? 


--- না। 


--- বলি না! 


-- পরে। 


জেরু একটা হতাশার দীর্ঘশ্বাস ফেলে চলে গেলো। নোরিন বিছানায় হাসফাস করতে করতে একসময় গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলো। নিবিড়ের ছায়ার সামনেও পরতে চাইনা সে। 


নোরিনের ঘুম ভাঙলো বেশ রাতে। জেরু তাকে ডিনারের জন্য ডাকতে এসেছে। নোরিন যখন নিচে এসে ডাইনিং টেবিলে বসলো জেরু, মিমহা,রাইদা, সাইমা, সুফিয়া এসে পাশের টেবিলগুলোতে বসে পরলো। নোরিনের জন্য না খেয়ে বসে ছিলো এতোক্ষণ৷ নোরিন ব্যস্ত ভঙ্গিতে তরকারী নিয়ে খাওয়া শুরু করলো। খিদেয় পেট চোঁ-চাঁ করছে। মিমহা-জেরুদের কথায় তাল না দিয়ে শুধু খেয়েই চলেছে। 


--- আম্মু আমার খাবার কোথায়? ভাত দাও! 

নিবিড় মোবাইলটা ট্রাউজারের পকেটে ঢুকিয়ে মা কে ডাকলো। হলরুম থেকে তার মা চিৎকার করলো,

--- এই কয়েকদিন একটু কষ্ট করে খেয়েনে না-রে বাবা! শীতলের বিয়েতে একটু নাচ-গান করি! 


নিবিড় বিরক্তির ভঙ্গিতে চেয়ারে বসলো। নোরিন একবার চোখ তুলেও তাকালো না। শুধু ছোট একটা গালি দিলো, " ব্যাটা ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চার মতো ভ্যাঁ ভ্যাঁ কেনো করছিস? শান্তিতে খেতেও দিবি না? দিবো নাকি এক চড়!" 

নিবিড় নোরিনকে খেয়াল করলো অনেকক্ষণ পর। জেরুর দিকে তাকিয়ে বললো,

--- জুরু! খানা কোথাও পালিয়ে যাচ্ছে না। একটু সাবধানে খা। ভাত বেচারা ভয় পাচ্ছে।  


নোরিন পাতে পানি ঢেলে চলে গেলো হনহন করে। নিবিড়ও 'পেট ভরে গেছে ' বলে চলে গেলো। যাওয়ার সময় নিজের চেয়ারটাকে লাথি মেরে ফেলেও দিলো।  জেরুরা শুধু দর্শক হয়েই দৃশ্যটা উপভোগ করলো। 


নোরিন খাওয়ার পর বাবার সাথে কয়েকটা কথা বলে আবারো ঘুমিয়ে গেলো। ঘুমাতে গিয়ে মনে হলো, এই বাড়িতে সে শুধু ঘুমানোর জন্যই এসেছে। নাহ্ একটু বিয়ে বাড়ির ফিলিংস আনতে হবে। এই ভাবনা নিয়ে হলরুমে গিয়ে বলিউডের গান ছেড়ে ইচ্ছে মতো নাচলো। জেরু অবাক হয়ে বললো,

-- তোকে জীবনের এই প্রথম নাচতে দেখলাম। আচ্ছা তুই কি পাগল হয়ে গেছিস? 


নোরিন চুল ঠিক করে বললো,

---- নোরিন আলী সেরনিয়াবাত, সব করতে পারে। এনিথিং! 


পরদিন, 

পার্কিং লটে এক প্রকান্ড বয়স্ক আমগাছ। পাকা লাল টসটসে আম নিয়ে গাছটা স্বগর্বে বুক ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সমস্ত বাচ্চাপার্টিকে নিয়ে নোরিন, জেরুরা আম গাছটার নিচে দাঁড়িয়ে আছে। শীতল আর নিবিড় দারোয়ানের সাথে কোথায় যেনো গেছে। দারোয়ান ছাড়া আমও পাড়া যাচ্ছে না। অলি, মিষ্টি, হাফসারা কান্না শুরু করে দিয়েছে।  ওদের দেখাদেখি বাকিরাও কাঁদো কাঁদো মুখ করলো। বাচ্চারা অনুকরণপ্রিয়। একজন যা করবে, বাকিরাও তাই করবে। অলি প্রথমে জেরুর কাছে গেলো,

---- জেলি আমাকে আম এনে দে। 

হাফসা বললো,

--- জুলু আমাকেও পেড়ে দে। আমি আম খাবো। 


জেরু অসহায় চোখে তাকিয়ে বললো,

--- নতুন জামায় যদি একটু দাগ লাগে, আম্মা আছাড় মারবে। গাছে উঠলে আমার জামা ছিঁড়ে যায়। 


অলি এবার পাশে নোরিনের কাছে আসলো,

---- নোলিন আপু! নোলিন আপু! আম পেড়ে দাও 

প্লিইইইজ! 


অলি স্পষ্ট করে প্লিজ বললো। নোরিন গাছটার দিকে তাকালো। অনেকগুলো খাড়া ডাল নিয়ে সোজা উপরে উঠে গেছে গাছটা। উঠা সহজ হবে। নোরিন লম্বা লম্বা পা ফেলে তরতর করে গাছে উঠে গেলো। মায়ের কাছ থেকেই গাছে উঠা শিখেছে সে। নানুবাড়ির পুকুরপাড়ে পেয়ারা গাছ থেকে সোজা পুকুরে ঝাপ দিতো দিলারা আর সে। 

নোরিন একটা ঢাল বেয়ে বেশ কয়েকটা আম নিচে  ফেললো। সামনের ডালের আমগুলো আরো বেশি পাকা।  একহাতে গাছটাকে ধরে একপা এগিয়ে আমগুলো ছোঁয়ার চেষ্টা করলো এমন সময়,  দূর দিয়ে একটা চিৎকার ভেসে এলো, "বুড়ি গাছে কি করছিস?" নোরিন পেছন ফিরলো অন্যমনস্ক হয়ে। হাত আলগা হয়ে এলো। ব্যস! অঘটনটা তখনই ঘটলো। নিচে পড়ে গেলো নোরিন। খাড়া ঢালের পা লেগে মচকে গেলো পা।  নোরিন 'আহ' করে শব্দ করে শুধু।  


নিচে পড়ে নোরিন আর উঠতে পারলো না। জেরু চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে আছে৷ ও হলে এতোক্ষণে চিৎকার দিয়ে পুরো জায়গাটা মাথায় তুলে ফেলতো। নোরিন দাঁতে দাঁত চেপে ব্যাথাটা সহ্য করছে৷ পুরো মুখ নীল হয়ে গেছে। চিৎ হয়ে পড়ায় পিঠের মেরুদণ্ডে চিনচিন ব্যাথা শুরু করেছে। 


নিবিড় নোরিনের পাশে বসতেই নোরিন শিউরে উঠলো। জেরু, মিমহা গেছে নিবিড়ের মাকে ডাকতে। নিবিড় নোরিনের শার্ট খানিকটা উপরে তুলে ব্যাথার স্থানটা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগলো। নোরিনের ব্যাথার চেয়ে লজ্জা লাগছে বেশি। উঠতেও পারছে না৷ 

--- নিবিড় ভাইয়া ছাড়ুন আমাকে। 


নিবিড় পাত্তা দিলো না। ফোন করে মাকে একটু হলুদ গুঁড়ো আনতে বললো ভিজিয়ে। নোরিনের ফর্সা মেরুদণ্ড গাঢ় লাল হয়ে খানিকটা ফোলে আছে। পায়ের গোড়ালিও ফোলে গেছে। নোরিন চিৎকার না করলেও চোখ বেয়ে পানি পড়ছে। নিবিড় নোরিনের সহনশীলতা দেখে অবাক। এতো ব্যাথাও কেউ সহজে মেনে নিতে পারে? দেখে মনে হবে যেন শুধু মাথায় বারি খেয়েছে। 


#চলবে

Post a Comment

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.