পার্ট: ০৮
লেখকঃ হৃদয় বাপ্পী
।।।
।।
।।
রাতে খেয়ে নিয়ে আবার রুমে আসলাম।রুমে এসে নিধিকে ফোন দিলাম।
.
--আসসালামু আলাইকুম।(আমি)
.
--ওয়ালাইকুম আসসলাম।(নিধি)
.
--চিনেছো আমাকে।(আমি)
.
--চিনবো না কেনো।আমি জানতাম ফোন দিবি তুই।(নিধি)
.
--তুই এইটা কি করলি বল।আমরা তো ভালো বন্ধু ছিলাম তাই না।তাহলে এখন বিয়ে করার কি প্রয়োজন।(আমি)
.
--দেখ আমরা ভালো বন্ধু ছিলাম।আমাদের বিয়ের মাধ্যমে তোর বাবার আর আমার বাবার শত্রুতা শেষ হতে পারে।তারা আবার বন্ধু হতে পারবে।আর আমি তোকে আগে থেকেই ভালোবাসতাম শুধু বলতে ভয় করতো।ভাবতাম হয়তো এটা বলে দিলে আমাদের বন্ধুত্ব তাও নষ্ট হয়ে যাবে।তাই তো স্কুলটা বদলে দিয়েছিলাম যাতে তোকে ভুলে থাকতে পারি।(নিধি)
.
--দেখ এখন তো বিয়ে করা পসিবল না।এখনো তো আমরা ছোট।(আমি)
.
--দেখ আমাদের ২ জনেরই ১৮ বছর। আমরা বিয়ে করতে পারবো।।এখন তো তোর কোনো কথায় আমি শুনবো না।তোর জন্য আমি আজ পর্যন্ত কোনো প্রেম করি নাই।তোকে বিয়ে করে তোর সাথে প্রেম করবো।(নিধি)
.
--আমি তো এখনই বিয়ে করতে চাই না।আরো ২ বছর পর করি না বিয়েটা।(আমি)
.
--ওকে তোর এতো যখন ইচ্ছা তাহলে বিয়েটা করে ফেলি।বাসর নাহয় ২ বছর পরই করিস।(নিধি)
.
--একই তো হলো বিয়েই তো করতে হবে।(আমি)
.
--আচ্ছা তোর সমস্যা কোথায় কাউকে ভালো তো বাসোস না।তাহলে আমাকে বিয়ে করতে কি সমস্যা তোর বল।আমি তো তোকে অনেক ভালোবাসি।
.
--না সেটা না বিয়ে করতে ভয় করে।(মেঘলার কথা বললাম না বললে তো আম্মুকে বলে দিবে)
.
--শুধু ভয়ই তো করে সেটা আমি বাসর রাতে কাটিয়ে দিবো।(নিধি)
.
--বিয়েই করবো না আবার বাসর রাত।(আমি)
.
--এই তুই যদি আর একবার বিয়ে করবি না বলোস তাহলে তোরে খুন কইরা ফেলবো।(নিধি)
.
--দেখ ভয় দেখাবি না।তোরে অনেক ভয় পাই আমি।(আমি)
.
--ভয় পাওয়াই ভালো।আর একবার বলতে কি করবি না তুই।(নিধি)
.
--না কই আমি তো বিয়ে করবো।তোকেই করবো।(আমি)
।।।
একদম গুন্ডি মেয়ে ও।একবার ক্লাস ফোরে ওর চকলেট খেয়ে ফেলছিলাম বলে আমার হাতে একটা কামড় মেরে দিয়েছিলো।এখনও মনে আছে।একদম রাগি ছোট থেকেই।
.
--হুমমম গুড বয়।এখন আর কথা বলতে হবে না।ঘুমাও এখন।(নিধি)
.
--আমার ঘুম আরো দেরি আছে এখন গেইম খেলবো।(আমি)
.
--এই তুই বাচ্চা নাকি যে গেইম খেলবি।আমি বাসায় যখন যাবো না একদম গেইম খেলা দেখলে অবস্হা খারাপ করে দিবো।এখন ঘুমা কালকে তোর সাথে কথা বলবো।(নিধি)
.
--ওকে।।।
।।।।
ফোনটা কেটে গেইম খেলা শুরু করলাম।কিছুক্ষন খেলে রেখে দিলাম মেঘলার কথা খুব মনে পরতেছে।না জানি মেয়েটা এখন কি করতেছে।নিশ্চয় অনেক কান্না করেছে।আর যদি শুনে আমি বিয়ে করে ফেলবো তাহলে তো কি করবে কে জানে।আমি আমার এই মুখটা আর ওকে কিভাবে দেখাবো।ওর সামনে যাওয়ার মতো আর সাহস আমার নাই।মেঘলার কথা ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পরলাম নিজেই জানি না।কিযে হবে আমার এতো চিন্তা ভালো লাগে না।সকালে আম্মুর ডাকে উঠলাম।সরি ডাক না পানির ডাকে উঠলাম।মানে আম্মু পানি ঠেলে দিছে।
.
--এইটা কি করলা তুমি।(আমি)
.
--ভালো করছি কখন থেকে ডাকতেছি উতেছি বলে আবারও ঘুমাস তাহলে কি করবো।(আম্মু)
.
--এতো কি দরকারী কাজ পরলো যে পানি দিয়ে উঠাতে হবে।(আমি)
.
--বউমা ফোন দিতেছে তোরে।তুই ধরোস না তাই আমাকে ফোন দিয়ে তোরে দিতে বলছে।তুই উঠোস না তাই পানি দিয়া উঠালাম।(আম্মু)
.
--ঔ পেত্নীর জন্য আমার ঘুমটা নষ্ট করলা।(আমি)
.
--হুমমমম এখন কথা বল।(আম্মু)
।।।।।।
দেখি আমার মোবাইলে ১৬ টা মিসড কল।আবার ও ফোন আসতেছে।,
.
--হ্যা কি বলার জন্য ফোন দিসোছ।(আমি)
.
--তুই আগে বল আমাকে পেত্নি বললি কেনো।(নিধি)
.
--আমি কখন তোকে পেত্নি বললাম।(আমি)
.
--দেখ মিথ্যা বলবি না তোর মাথা ফাটাই ফেলমু আমি।(নিধি)
.
--আম্মুকে বলছি।তার মানে আম্মু বলে দিছে তোরে।(আমি)
.
--আমি ফোন দিছিলাম লাইনে ছিলো তুই বলছোস আমি শুনছি।এখন বল কেনো বলছোস।(নিধি)
.
--তুই পেত্নী তাই তোকে পেত্নী বলছি।(আমি)
.
--কি আমি পেত্নী।দারা আর কয়টা দিন অপেক্ষা কর তারপর আমি দেখাবো মজা।(নিধি)
.
--কি করবি।(আমি)
.
--
এখন ভালো করে খেয়ে নে যা আমি পরে খাইতে দিবো না।(নিধি)
।।।।।
এভাবেই কথা চলতে থাকলো।আমি তো ওরে অনেক খারাপ কথা বলি।কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না।কত চেষ্টা করেছি কিন্তু ও আমার কাজে আরো বেশী ভালোবাসে আমাকে।এখন তো আমার মৃত্যু ছাড়া কোনো রাস্তা দেখি না।আসতে আসতে সময় কেটে গেলো।আজকে আমার বিয়ে।মানে আজকে নিধিদের বাড়িতে যাবো ওকে বিয়ে করে নিয়ে আসতে।একদমই মন চাচ্ছে না।আজকে শুধু মেঘলার কথা মনে পরছে।বাসায় সব আত্মীয়রা এসেছে শুধু মেঘলারা ছাড়াই।আমি তো এই বিয়ে করতে চাই না।সবাই জোর করে দিতেছে।মেঘলা কি বুঝবে আমাকে একটু।না কি ভুল বুঝে জাবে চিরদিন।সবাই আমাকে জোর করে রেডি করে নিয়ে গেলো নিধিদের বাসায়।সব ধরনের কার্যক্রম শেষে খাওয়া দাওয়া শেষে কাজি সাহেব বিয়ে পরাবেন এমন সময় মেঘলা কোথা থেকে চলে আসলো,
.
--কাজি সাহেব দাড়ান।বিয়ে পরানো বন্ধ করেন।(মেঘলা)
.
--এই তুমি কে যে বিয়ে পড়ানো বন্ধ করতে বলতেছো।(নিধির বাবা)
.
--ও আমার ছোট বোনের মেয়ে।(বাবা)
।।।।।
হায় আল্লাহ এই মেয়ে এখানে চলে এসেছে তার মানে এখম ইজ্জতের ফালুদা করে দিবে।।
.
--আমি হৃদয় এর ফুফাতো বোন।শুধু ফুফাতো বোন না আরো অনেক কিছু।(মেঘলা)
.
--মানে কি বলতে চাও তুমি।(আম্মু রেগে বললো)
.
--মানে কিছুদিন আগে হৃদয় বাসা থেকে নিখোজ ছিলো।খোজ নিয়েছেন কোথায় ছিলো।(মেঘলা)
.
--ও বন্ধুদের সাথে পিকনিকে গিয়েছিলো।(আম্মু)
.
--এই কথা আপনাকে কে বলেছে।(মেঘলা)
.
--ওর বাবা বলেছে আমাকে।(আম্মু)
.
--বড় মামা তুমি সত্যি করে বলো তো তুমি তোমার ছেলেকে কোথায় পাঠিয়ে ছিলে।(মেঘলা)
.
--আমি আমার ছেলেকে রংপুর আমার ছোট বোনের কাছে পাঠিয়েছিলাম।(বাবা)
.
--তাতে কি আমার ছেলে বেরাতে গিয়েছিলো এখন বিয়ে হবে তুমি বাধা দেওয়ার কে।(আম্মু)
.
--না বেরাতে গেছে সেটা তো বড় কথা না সেখানে গিয়ে সে কি করেছে সেটা বড় কথা।(মেঘলা)
.
--কি করেছে আমার ছেলে।(আম্মু)
.
--আপনার ছেলে সেখানে গিয়ে আমাকে মিথ্যা ভালোবাসার আশ্বাস দিয়ে আমাকে তার প্রেমের জালে ফেলে আমার সব কেরে নিয়েছে।(মেঘলা)
.
--মানে কি বলতে চাও তুমি।(আম্মু)
.
--এইটুকু বলবো ৩ দিনই আপনার ছেলে আমার সাথে এক ঘরে এক বিছানায় এক কাথায় ছিলো।সে আমাকে বিয়ে করার কথা বলে এখন পালিয়ে এসে এখানে বিয়ে করতে এসেছে।(মেঘলা)
.
--হৃদয় ও যা বলতেছে সব কি সত্যি নাকি।তুই ওর সাথে এক বিছানায় ছিঃছিঃ।--হৃদয় ও যা বলতেছে সব কি সত্যি নাকি।তুই ওর সাথে এক বিছানায় ছিঃছিঃ।--হৃদয় ও যা বলতেছে সব কি সত্যি নাকি।তুই ওর সাথে এক বিছানায় ছিঃছিঃ।--হৃদয় ও যা বলতেছে সব কি সত্যি নাকি।তুই ওর সাথে এক বিছানায় ছিঃছিঃ।(আম্মু)
.
--আম্মু হ্যা এটা ঠিক এক বিছানায় শুয়েছি কিন্তু আমাদের মাঝে কিছুই হয় নাই।(আমি)
.
--হ্যা চৌধুরী ভাই আমার ছেলের কথায় আমার অনেক বিশ্বাস আছে।ও যখন বলেছে যে কিছুই হয় নাই তাহলে বিয়েটা দিয়ে দেওয়া যাক।(আম্মু)
.
--কিছু হয় নাই তাতে কি।এটা যদি একা আমার কাছে বলতেন তাহলে নাহয় বিয়েটা হতো।এখন তো পুরো বিয়ের মানুষই জেনে গেছে বর অন্য মেয়ের সাথে ৩ রাত কাটিয়েছে।আমার সম্মান এমনিতেই শেষ হয়ে গেছে।আমি বিয়ে দিয়ে আর বাকিটুকু শেষ করতে চাই না।আমাকে মাফ করবেন।(নিধির আম্মু)
.
--আরে ফিরোজা তুই একটু বুঝা না ওনাকে।(নিধির আম্মুকে বললো আম্মু)
।
--দেখ আমি তো অনেক কষ্টে রাজি করিয়ে ছিলাম এখন আর কিছু হবে বলে মনে হয় না আমার।আমাকে মাফ করে দিস।(নিধির আম্মু)
।।।।।
কয়েক মিনিটে বিয়ে বাড়ি মরা বাড়ি হয়ে গেলো।আমি তো ভয়ে কোনো কথায় বলতে পারলাম না।কথা বলা দুরে থাক আমি তো কারো দিকে তাকানোর ও সাহস পেলাম না।কি করলো মেঘলা এটা।আমার তো একটু একটু হাসি ও পাচ্ছে।
,
--দেখুন আপনার ছেলেকে আমি পুলিশে দিই নি এটা আপনার ছেলের ভাগ্য।কারণ ও আমার জীবনটা নষ্ট করে এখন অন্য মেয়ের জীবন নষ্ট করতে গেছে।(মেঘলা)
.
--দেখো তুমি আমাদের অনেক বদনাম করেছো।কি লাভ হলো এতে।ও আমি তো ভুলে গেছি তোমরা সবাই মিলে প্রতিশোধ নিলা।(আম্মু)
.
--এইটা প্রতিশোধ না এইটা ভালোবাসার জন্য ছিলো। আর এখনই যদি আমার সাথে আপনার ছেলের বিয়ে না দেন তাহলে আমি পুলিশ দিয়ে আপনাদের ধরিয়ে দিবো।(মেঘলা)
.
--দেখি কি পারো তুমি করো।তাও তোমার সাথে আমার ছেলের বিয়ে আমি দিবো না।(আম্মু)
.
--দেখো পাগলামি করো না।ওর কথা মেনে না নেওয়া ছাড়া আমাদের তো আর কোনো রাস্তা নাই।(বাবা)
.
--আমি বাবাকে ফোন দিতেছি।(আম্মু)
.
--আরে বাবাকে ফোন দিয়ে কি হবে।এখন যদি তুমি ওর সাথে বিয়ে না দাও তাহলে তো আমাদের কোনো সম্মানই থাকবে না।(বাবা)
.
--হুমমমম তাও তো ঠিক।(বাবা)
.
--দেখো তোমার শত্রু তো আমার বোন তাই না।যদি ওর মেয়ে তোমার বউ হয় তাহলে তো আরো ভালো হবে।(বাবা)
.
--হ্যা তোমার কথা আমি বুঝে গেছি।কাজি সাহেব এই মেয়ে আর আমার ছেলের বিয়ে পরান এখনই।(আম্মু)
।।।।।
আমার বাবা তো সুযোগ বুঝে কোপ মেরে দিলো।আর আমার আর মেঘলার বিয়েটা ও হয়ে গেলো।আমি তো এখনো শকত।কি হইলো আমার সাথে এটা।কোথায় নিধিকে নিয়ে আসবে তা রেখে নিধির বাসা থেকে মেঘলাকে নিয়ে আসলাম।হায় হায় এই সুখ আমি রাখি কোথায়।কিন্তু ও আমার দিকে যেভাবে তাকলো মনে হয় আমাকে খেয়েই ফেলবে।আমার কপালে যে কি আছে সেটা আল্লাহ ই যানে।
।।।
।।
।
(চলবে)