পার্ট:7
লেখক:Hridoy Bappy।
।।।।।
।।।।।
.
:-আচ্ছা নিলয় তাহলে চল যাওয়া যাক।(আমি)
.
:-হুমমমম চল।
।।।।
দুজনে গাড়ি নিয়ে চলে এলাম হৃদয় খান এর বাড়িতে।বেল বাজানোর পর একটা মেয়ে দরজা খুলে দিলো।মেয়েটাকে দেখে আমার খুব চেনা চেনা মনে হচ্ছে।খুবই আপন মেয়েটা এমন মনে হচ্ছে।কোনো সম্পর্ক তো আছে মনে হয় মেয়েটার সাথে।কিন্তু মেয়েটা আমাকে চিনে না।তারমানে আমি ও চিনি না।
.
:-জ্বী আপনারা কারা।আপনাদের তো আমি চিনতে পারলাম না।(মেয়েটা)
.
:-আমরা ধানমন্ডী থানা থেকে এসেছি।(নিলয়)
.
:-ও আপনারা তাহলে পুলিশ(মেয়েটা)
.
:-হ্যা(নিলয়)
.
:-ভিতরে আসুন।(মেয়েটা)
.
:-আম্মু আম্মু দেখো পুলিশ এসেছে।(মেয়েটা)
।।।।।।
আমি শুধু মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছি।কেনো যানি খুব চিনা চিনা লাগতেছে ওকে।মনে হচ্ছে কত আপন আমার।কিন্তু ও তো আমাকে চিনে না।তাহলে আমি কিভাবে চিনবো ওকে।ভিতরে এসে আমি আর নিলয় বসলাম।একটুপর একটা বয়স্ক মহিলা আসলো।
.
:-আমার ছেলের কোনো খবর পেয়েছো বাবারা।(মহিলাটা)
.
:-না আন্টি আমরা দুইজন এই থানায় নতুন।কিন্তু আপনি কোনো চিন্তা করবেন না আপনার ছেলের খোজ আমি বের করে দিবো।(আমি)
.
:-কত পুলিশই তো বললো।কিন্তু কেউ কোনো কিছু করতে পারলো না।।।।আমার ছেলেটা যে এভাবে নাখোজ হয়ে যাবে সেটা কোনোদিনও ভাবি নাই।(মহিলা)
.
:-আপনি কি বলতে পারেন হৃদয় এর কারো সাথে কোনো দুষমনি বা শত্রুতা ছিলো নাকি।(আমি)
.
:-আমার ছেলেটার আবার কার সাথে শত্রুতা থাকবে।ও তো একদম ভালো ছেলে ছিলো।আমি যা বলতাম তাই করতো।(মহিলা)
.
--তাও একটু মনে করে বলেন তো যেদিন ও সিলেট গেলো তার আগে কোনো বিষয় নিয়ে চিন্তিত ছিলো ও।(আমি)
.
:-না তেমন কোনো বিষয় না।(মেয়েটা)
.
:-আচ্ছা আপনি হৃদয় এর কি হন।(আমি)
.
:-জ্বী ও আমার বউমা।(মহিলাটা)
.
:-তাহলে আপনিই মেঘলা।(আমি)
.
:-হুমমমম(মেঘলা)
.
:-আমাকে একটু খুলে বলবেন আসলে সেদিন কি হয়েছিলো।(আমি)
.
:-আমরা সিলেট যাওয়ার পরদিনই ঘুরতে বের হই।সেদিন হঠাৎ করে হৃদয় এর accident হয়।আর ওকে আমি হাসপাতালে ভর্তি করে দি।(মেঘলা)
.
:-ও তাহলে প্রথমে হৃদয় এর accident হয়।তারপর সে নিখোজ।(নিলয়)
.
:-আমার তো মনে হচ্ছে accident টা ইচ্ছা করেই করা হয়েছিলো।আচ্ছা আপনি বলেন তারপর কি হয়েছিলো।(আমি)
.
:-তারপর হাসপাতাল থেকে হোটেল এ চলে আসি দুজনে।আঘাত কম ছিলো।বাসার সবাই চিন্তা করবে এজন্য হৃদয় আমাকে বাসায় বলতে মানা করেছিলো।(মেঘলা)
.
:-আচ্ছা একটা accident হয়েছিলো তারপরও বাসায় বলতে মানা করলো কেনো (আমি)
.
:-সেটা আমি বলতে পারবো না আমিও ভেবেছিলাম বাসায় বললে সবাই শুধু শুধু চিন্তা করবে তাই আমি ও জানাই নি।(মেঘলা)
.
:-ও তাহলে পরে কি হয়েছিলো।(নিলয়)
.
:-তারপর দুইদিন কেটে যাই।আর দুইদিন পর আমি মানা করার পরও ও আমাকে জোর করে ঘুরতে নিয়ে গেলো।আমি কতো মানা করেছিলাম।তাও আমাকে জোর করে নিয়ে গেলো।আর সেদিনই ওর কোনো খবর পাই নাই।(কান্না করতে করতে বললো মেঘলা)
.
:-আচ্ছা কান্না করবেন না আমাদের বলেন সেদিন আসলে হয়েছিলো কি।(নিলয়)
.
:-সেদিন আমরা ঘুরতে ঘুরতে একটা উচু পাহাড়ে চলে আসলাম।ওখানেই দারিয়ে ছিলাম।তখনই হঠাৎ পিছে থেকে আমার মুখে কেউ একজন রুমাল রাখলো।আর আমি বেহুশ হয়ে গেলাম।আমার আর কিছুই মনে ছিলো না।হঠাৎ চোখ খুলে দেখি আমি হাসপাতালে শুয়ে আছি।আর হৃদয় আমার পাশে নাই।অনেক খুজলাম তারপরও পাই নাই ওকে।তখন বাসায় ফোন দিয়ে সব বল্লাম।(মেঘলা)
.
:-ও আপনাকে যে বেহুঁশ করেছে তার চেহারা কি আপনি দেখেছেন।(আমি)
.
:-না আমি দেখতে পাই নাই।(মেঘলা)
.
:-ও অনেক ধন্যবাদ।আমরা আমাদের সব দিয়ে চেষ্টা করবো আর আপনার স্বামীকে খুজে বের করবো।(আমি)
.
:-আমার তো মনে হয় ও আর বেচে নেই।নাহলে চার বছর হয়ে গেছে এখনো ওর কোনো খবর নাই।(মেঘলা)
.
:-আপনি ওর স্ত্রী হয়ে এটা কেনো ভাবছেন আপনার স্বামীকে বের করার দায়িত্ব আমাদের।(নিলয়)
.
:-ঠিক আছে ধন্যবাদ কিছু সাহায্য করার জন্য।কিন্তু আমি হৃদয় এর রুমটা একটু দেখতে চাই।(আমি)
.
:-ওকে আসেন আমার সাথে।(মেঘলা)
।।।।।
চলে গেলাম মেঘলার সাথে হৃদয় এর রুম দেখতে।
.
:-আচ্ছা আপনি একটু বাইরে যান।(আমি)
.
:-হুমমম ওকে।(মেঘলা)
.
:-নিলয় রুমের প্রত্যেকটা জিনিসের ছবি তুলে রাখ।আমার সব কিছুর ছবি লাগবে।(আমি)
.
:-ছবি দিয়ে কি করবি।(নিলয়)
.
:-আরে তুলতে বলছি তুলতো।(আমি)
.
:-ওকে তুলতেছি।(নিলয়)
।।।।।।
আমিও খোজা শুরু করলাম কিন্তু কিছুই তেমন পেলাম না যাতে বুঝবো যে কিসের সাথে সম্পর্ক এই হৃদয় এর গুম হয়ে যাওয়াটা।আচ্ছা এখন তো ৪ বছর হয়ে গেছে।টিভির CID এর মতো যতই বাসায় খুজি কিছুই তো মনে হয় পাবো না।
.
:-আচ্ছা নিলয় তোর সব ছবি তোলা কি শেষ।(আমি)
.
:-হুমমম আমার সব তোলা শেষ।কিন্তু তুই ৪ বছর পরের বাসার ছবি থেকে কি প্রমাণ বের করবি রে।(নিলয়)
.
:-আরে এইসব রাখা ভালো যদি কোনো সময় কাজে লাগে।।এখন চল তো।(আমি)
.
:-হুমমমম
।।।।।
দুজনের সাথে একটু কথা বলে আমরা দুজন থানায় চলে আসলাম।কেবিনে বসে বসে ভাবতেছিলাম।কেসটা কিভাবে সলভ করবো।ফাইল গুলো ভালো করে পরতে শুরু করলাম।বিকাল ৫:১২ তে একটা ফোন আসে হৃদয় এর নাম্বারে।তারপর থেকেই তার ফোন বন্ধ।আর সে নিখোজ।পুলিশ চার বছর ধরে এই কেসটা সলভ করতে পারলো না।কেসটা তো সত্যি খুব রহস্যময় এখনো তার কোনো ডেডবডি বা কিডন্যাপ হওয়ার কোনো খবর পাওয়া যাই নাই।কিডন্যাপ হলে তো মুক্তিপণ এর টাকা চাইতো কিডন্যাপাররা।কিন্তু এমন কিছুই হয় নাই।তাহলে কি এটা ফেমিলীর শত্রুতা নিয়ে হয়েছে।কিন্তু আসল কথা হলো হৃদয়টা এখন কোথায়।তাকে কোথায় রাখা হয়েছে।
.
:-নিলয় ও নিলয়(আমি)
.
:-কি হয়েছে কিছু পেলি নাকি।(নিলয়)
.
:-আরে শোন আগে বস।(আমি)
.
:-হুমমম বল কি হয়েছে।(নিলয়)
.
:-আমার ওই বাসার সবার A-Z খবর লাগবে।কার কার কেমন স্বভাব।কার সাথে ঝগড়া।আশে পাশের সবার কাছে খোজ খবর রাখো।ফেমিলীর Backgroud টা ভালো করে জানতে হবে আগে।(আমি)
.
:-ওকে আমি এখনি লোক ঠিক করতেছি খোজ নেওয়ার জন্য।(নিলয়)
.
:-আর আমার মেঘলার উপর সন্দেহ হচ্ছে।(আমি)
.
:-হুমমম আমার ও সন্দেহ মেঘলার উপরই।(নিলয়)
.
:-আমার ওর বাসার সবার ডিটেইলস,ওর ফোন history,কে কে ওর ফ্রেন্ড সব খবর চাই।(আমি)
.
:-হ্যা এটা ও জানার ব্যবস্হা করতেছি।(নিলয়)
.
:-আর ওর affairs এর ব্যাপারেও জানতে হবে।বিয়ের আগে কার কার সাথে রিলেশনে জরিয়েছে সব ৩ দিন এর মধ্যেই জেনো পেয়ে যাই।(আমি)
.
:-হুমমম সব পেয়ে যাবি।(নিলয়)
.
:-হুমমমম।
.
:-আমার তো মনে হচ্ছে কেসটা আমরাও সলভ করতে পারবো না।(নিলয়)
.
:-এমন বলতেছিস কেনো।(আমি)
.
:-তুই যে রুমের ছবি তুলেছিস ঔসব দিয়ে কেস সলভ করবো কিভাবে।(নিলয়)
.
:-ছবি কি আমি তুলেছি।সব তো তুই তুলেছিস।(আমি)
.
:-কিন্তু তুলতে বললো কে।(নিলয়)
.
:-আচ্ছা বাদ দে।।।ছবি গুলা আমাকে শেয়ার কর।(আমি)
।।।।।।।
এখন কেসটা তো সলভ করতেই হবে।যতো হোক প্রথম কেস বলে কথা।সব খবর গুলা শুধু একবার পেয়ে যাই।এইটা সলভ না করে অন্য কেসে আমি হাত বারাবো না।সত্যি খুব রহস্যময় কেসটা।যদি একবার বের করতে পারি হৃদয় এর সাথে কি হয়েছিলো তাহলেই বের করতে পারবো এর পিছনে কে কে আছে।
এখন আমার টারগেট একটাই এই কেসটা সলভ করা আর হৃদয় এর কি হয়েছিলো তা বের করা।এমন একটা রহস্যময় কেসই আমার দরকার ছিলো।ইনশাল্লাহ কেসটা আমি সলভ করেই ছারবো।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(চলবে)
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।
Wait for the next part
।।।
একটু ছোট হয়ে গেছে কালকের পার্টটা একটু বড় করে দিবো।