#ভালোবেসেছি_তোরই_মতো
#পর্বঃ২০
#লেখিকাঃশাদিয়া_চৌধুরী_নোন
নিবিড়ের চলে যাওয়ার অনেকদিন হয়ে গেছে।কয়েকটা হেমন্ত পেরিয়ে গেছে, শীত ছাড়িয়ে বসন্তও পালা করে চলে গেছে। সময়ের সাথে সবকিছুকেই তাল মিলিয়ে চলতে হয়। কারো জন্য, কারো জীবন থেমে থাকে না। থেমে থাকেনি কখনো।
নোরিনের জীবনকে সে থেমে থাকতে দেয়নি। তার অসাধারণ কৃতিত্বের জোরে অনেকআগেই সে, সর্বোচ্চ রেঙ্ক নিয়ে তার দীর্ঘমেয়াদী কোর্স সম্পন্ন করেছে। কমিশনপ্রাপ্ত অফিসার হিসেবে কর্মক্ষেত্রে যোগদানের পরও তার সফলতা থেমে থাকেনি। বিভিন্ন মিশনে নেতৃত্বদান, দেশের অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদ দমনে অভিযান, নিজ দেশের প্রতিনিধি হয়ে নারী অফিসার হিসেবে বেশ কয়েকটি দেশেও ইতিমধ্যে নিজের সাফল্যের ছাপ রেখেছে সে। বেশ কয়েকবার পদোন্নতি হয়েছে হয়েছে তার। জীবনের অনেকগুলো বছর সে এভাবেই কাটিয়ে দিলো। পরিস্থিতিকে সে মানিয়ে নিয়েছে।
নোরিন এখন এক পরিপূর্ণ যুবতী। অপরুপ সৌন্দর্যের এক উৎকৃষ্ট উদাহারণ। এতো কসরত, খাটনিতে তার সৌন্দর্যে এতটুকুও ভাটা পড়েনি। সবার কাছে সে নির্মল, স্বচ্ছ, সাহসী এবং সকলের কাঙ্ক্ষিত। তার অকুতোভয় সাহসে অনেকেই তাকে প্রশ্ন করে, "ম্যাম, আপনার কি একটুও ভয় নেই? প্রায় সব মিশনে আপনাকে দেখা যায় সবার আগে আওয়াজ তুলতে, এগিয়ে আসতে বিশেষ করে আপনার শুটার স্কিল; যা সত্যি অসাধারণ। আপনার সমসাময়িক অনেক অফিসারেরই আপনার জায়গায় আসতে পুরো জীবন লেগে গেছে। কিন্তু আপনি? "
নোরিন তখন মুখ উঁচু করে বলে, "তারাই পিছিয়ে পড়ে, যাদের পিছুটান আছে। যা আমার নেই। অনেক ত্যাগের পর এই জায়গায় আসতে পেরেছি।"
সারতাজ আর নোরিনের বন্ধুত্ব এখনো আগের মতোই আছে। তবে দুজনের দেখা খুব কম হয়। কোনো এক অজানা কারণে সারতাজের জীবনে এখনো পর্যন্ত কোনো নারীর আগমন ঘটেনি। নোরিনও এই ব্যাপারে কোনো কথা বলেনা। এড়িয়ে যায় সবসময়। একদিন সারতাজ নোরিনের পাশে বসে প্রায় কেঁদে ফেললো। নোরিন তখন পানির গ্লাসটা এগিয়ে দিয়ে শুধু বললো,
----- সারতাজ তোমার বিয়ে করা প্রয়োজন। বিয়ে করে ফেলো। কারো অপেক্ষায় বসে থেকোনা, যার জন্য অপেক্ষা করছো, হয়তো সেও এভাবেই কারো জন্য অপেক্ষা করে।
সারতাজ অবাক না হয়ে পারেনা। সেই শুরু থেকে এই মেয়েটা শুধু তাকে অবাক করেই গেছে। অদ্ভুত তার সঙ্গ। তার যেটা মনে হবে, হুট করে সেটাই বলে বসবে। সবই বুঝে তবু, বুঝতে চাইবে না৷
ইদানীং বাবা ভীষণ চাপ দেয়। সেদিন নোরিন বাড়িতে গেলো। তিনি মেয়ের সামনে প্রায় একঘণ্টা যাবত হাত ধরে বসে রইলেন। বিয়ে করলে কি কি ফায়দা হয়, ব্যাখ্যা করে শোনালেন,
---- মা, তুই বিয়েটা করে নে। অনেক হয়েছে।
নোরিন আরো মনোযোগের ভঙ্গিতে বলে,
--- বাবা আমার এখনো বিয়ের বয়স হয়নি। এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে করে, আমি আমার ক্যারিয়ার নষ্ট করতে পারবো না। আমার আরো অনেকদূর যেতে হবে৷
আজমল সাহেব দীর্ঘশ্বাস ফেলেন।
---- সব তোর বাহানা।
নোরিন কিছু বলেনা। মুচকি হাসে৷ বাবাকে তো বলায় হবে না, সে কোনোদিন বিয়ে করবে না। সুখ তার কপালে নেই। নিবিড়ের সাথে তার কোনোপ্রকার যোগাযোগ নেই। ইউএসএ'তে যাওয়ার পর নিবিড় তার সাথে কখনো যোগাযোগ করেনি। না করেছে নোরিন। তবে, নোরিনের মোবাইলে এক অদ্ভুত নাম্বার থেকে কল আসে, অদ্ভুত অদ্ভুত সময়ে৷ অদ্ভুত নাম্বারটা যতবার কল দেয়, ততবারই নোরিন রিসিভ করে। যেমন, একদিন রাতের তিনটা বাজে কল দিলো, আরেকদিন ভোরে, সময়ে অসময়ে কল দেয়। সবচেয়ে অবাক করার ব্যাপার হলো, অদ্ভুত কলকারী সবসময় চুপ থাকেন। কোনো কথা বলেন না। নীরবতা পালন করায় যেন তার ধর্ম। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় অতিবাহিত হয়, কিন্তু সে কল কাটে না, কোনো টু শব্দও করেনা। নোরিন কেন এই অদ্ভুত কলটা রিসিভ করে তাও অজানা৷ তারচেয়েও অবাক করার মতো ব্যাপার হলো, কলটা আসলেই নোরিনের চোখ ছলছল করে। কিছু শোনার অপেক্ষা করে। কিন্তু কেউই কোনো কথা বলেনা।
________________
একটি শান্তিরক্ষা মিশনে নোরিনকে আফ্রিকা যেতে হবে। কবে দেশে ফিরবে তার ঠিক নেই। সৌভাগ্যক্রমে সাতরাজও আছে সাথে। এই প্রথমবার সাতরাজ আর নোরিন একসাথে কোনো মিশনের কাজে বাইরে যাচ্ছে। দেশের বাইরে অনেকবার যাওয়া হলেও এর আগে একসঙ্গে যাওয়া হয়নি। সাতরাজকে বেশ উদ্দীপিত দেখা গেলো। কিন্তু নোরিন নির্বিকার ভঙ্গিতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করলো। কোনো এক অজানা কারণে তার মনে কু ডাকছে। কেমন যেন অস্থির লাগছে। ওখানে যেতে মন সায় দিচ্ছে না। মোবাইল ফোন নিয়ে যাওয়া যাবে না নিরাপত্তার স্বার্থে। বাবার সাথে কথা বলা দরকার।
আজমল সাহেব কল রিসিভ করতেই নোরিন কেঁদে দিলো। এই প্রথমবার মিশনে যাওয়ার আগে নোরিনকে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখে আজমল সাহেব অস্থির হয়ে গেলেন৷ ভিডিও কলে নোরিন কাঁদতে কাঁদতে বাবাকে বললো,
---- বাবা আমি মরে যাবো। আমার মৃত্যুকে ভয় হচ্ছে বাবা। আমার ভয় করছে। আমার যে অনেককিছু দেখা বাকি বাবা!
নোরিনের এমন অদ্ভুত কথায় আজমলের সাহেব অবাক হলেন। কারণ নোরিনকে কখনো এমন পরিস্থিতিতে মনোবল হারাতে দেখেন নি৷ ওদিকে নোরিন বলেই চলেছে,
---- বাবা, জীবনে আমি অনেককিছুই পায়নি। যা হারিয়েছি তা পাওয়ারও চেষ্টা করিনি। কারণ আমি বিশ্বাস করতাম, জীবন থেকে একবার যা হারিয়ে যায় তার অভাব মেটানো সম্ভব নয়। বাবা তুমি আমাকে অনেক ভালোবাসো, আমি জানি। আরো অনেক বেশি ভালোবাসো কারণ আমার মা নেই। জীবনের অনেকগুলো বছর আমি মা ছাড়া কাটিয়েছি। বাবা! আমি যদি তোমার আগে মরে যাই, তুমি আমাকে মায়ের পাশে কবর দিও। বাবা তোমাকে কখনো বলা হয়নি, আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি। "
আজমল সাহেবের চোখ ভিজে এলো,
---- মা তুই এক্ষুনি বাড়ি চলে আয়। তোকে চাকরি করতে হবে না রে মা। তুই চলে আয়।
--- না, আমার যেতে হবে। এ যে আমার ভালোবাসার জায়গা৷ একজন সৈন্য কখনোই নিজের জীবনের ভয়ে পিছু হটতে পারে না৷ আমি কাপুরষ নই বাবা৷ রাখি।
নোরিন কল কাটতে না কাটতেই সেই অদ্ভুত নাম্বার থেকে কল এলো। কোনো কিছু না ভেবেই হাজারো অভিমান নিয়ে বললো,
----- নিবিড় ভাইয়া! আপনার সাথে আমার অনেক বোঝাপড়া বাকি। আপনাকে আমি কখনো দেশে ফিরে আসতে বলবো না। আমি মরে গেলেও আপনি আমাকে দেখতে আসবেন না।
অপরপ্রান্তের কোনো কথার অপেক্ষা না করে নোরিন দ্রুত কল কেটে দিলো। মোবাইলটা জমা দিয়ে এসে ব্যাগ নিয়ে দ্রুত বেরিয়ে পরলো সে। ফ্লাইটের আর বেশি দেরি নেই।
---------------------------
যুদ্ধের দামামা শুরু হয়ে গেছে। ধাওয়া পাল্টাধাওয়ায় মুখরিত রণক্ষেত্র। নোরিন একটা গাছের পেছনে ছোট গর্ত করে বসে আছে। তার রণকৌশল অসাধারণ। প্রতি দুই সেকেন্ডে চারটা করে গুলি অনায়াসে ছুঁড়তে পারে সে। অনেক দেশের এজেন্ট আছে এখানে। শুত্রুপক্ষ দুর্ধর্ষ, তাদের অস্ত্রের পরিমাণও বিপুল। এতো উন্নতমানের অস্ত্র সংগ্রহ যেনতেন কথা না। নিশ্চয়ই এদের পেছনে বড় কারো হাত আছে। নোরিনদের বেগ পেতে হচ্ছে। পাহাড় জঙ্গলে ভরা এই জায়গায় নেটওয়ার্ক সমস্যা দেখা দিয়েছে। নোরিন সময়জ্ঞান নেই। মনোযোগ দিয়ে গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে তার খেয়ালই ছিলো যে, তার আশেপাশে যারা ছিলো, তাদের মধ্যে কেউই নেই এখন৷ ওয়াকিটকির খোঁজ করতে নোরিন অন্ধকারে হাতড়ালো। ওহ শিট! ওয়াকিটকি'টা হারিয়ে গেছে৷ সন্ধ্যা হয়ে আসছে। অস্ত্রের পরিমাণও শেষের দিকে। নোরিনকে ভীষণ চিন্তিত দেখালো। এই সময়ে মনোবল হারালে চলবে না। নোরিন সতর্কতার সাথে আশেপাশে তাকিয়ে গর্ত থেকে বেরিয়ে এলো। নিশ্চয়ই তার দলের ধারণা হয়ে গেছে যে, সে আর জীবিত নেই। নাহলে ওকে ফেলে যেতো না।
নোরিন থমতমে মুখে সামনে এগুতে থাকলো। পাহাড়ের বুকে অন্ধকার নেমেছে। শত্রুপক্ষের অবস্থান নিয়ে চিন্তিত নোরিন। পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নামতে নামতে তার মনে হলো কেউ তাকে দূর থেকে ডাকছে। সারতাজের ডাক। নোরিন হাফ ছেড়ে বাচলো। একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে সাতরাজের আসার অপেক্ষা করতে লাগলো সে। সারতাজ এসেই হাপাতে হাপাতে বলতে লাগলো,
--- থ্যাংকস গড তুমি বেঁচে আছো৷ সবার ধারণা তুমি মারা গেছো। ওদের আক্রমণ যখন আরো জোরালোভাবে আসছিলো, তখন আমরা পিছু চলে আসি। তুমি গ্রুপ থেকে ছিটকে পরো। আর ওয়াকিটকিতে তোমার সাথে কানেক্ট করার অনেকবার চেষ্টা করা হয়েছে৷ কিন্তু আমার তোমার উপর পুরো বিশ্বাস ছিলো৷ রুলস ব্রেক করে চলে এসেছি আমি৷ বিশ্বাস করো, ভয়ে বুক কাঁপছিল আমার। এখন চলো।
নোরিন স্মিত হেসে সাতরাজের পিছু পিছু হাঁটতে লাগলো। ঘুটঘুটে অন্ধকার চারদিকে। সাতরাজের হাতে ছোট্ট একটা লাইট। নোরিন মনে মনে হাজারবার দোয়া করলো। আজ সাতরাজ না থাকলে হয়তো মরণ নিশ্চিত ছিলো।
বিপদটা ঘটলো তখনই। একটা বুলেট নোরিন গলার পাশ দিয়ে এফোঁড়ওফোঁড় করে চলে গেলো। নোরিন যেন চৈতন্যে নেই। চোখ বেয়ে একফোঁটা জল গড়িয়ে পড়লো। গুলির শব্দে সাতরাজ সাথে সাথে পেছনে ফেরলো। ছয় সাত জনের একটা দল গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে তাদের দিকে এগিয়ে আসছে৷ সাতরাজ তৎক্ষনাৎ আলো নিভিয়ে নোরিনের দিকে তাকাতেই আঁতকে উঠলো৷ নোরিনের গলার পাশটা চকচক করে করছে রাতের আলোয়। ঢলে পড়ে যাচ্ছে নোরিন৷ সাতরাজের মুখ ফ্যাকাশে হয়ে আসছে। সেও উদ্দেশ্যহীন কয়েকটা গুলি ছুঁড়ে নোরিনকে আলগা করে ধরলো। কয়েকমিনিট এগুতেই সাতরাজের হাতে একটা গুলি এসে লাগলো। এই মুহূর্তে তার নিজেকে ভীষণ অসহায় মনে হলো। নোরিন পুরোপুরি জ্ঞান হারায়নি। সে গলা পাশ চেপে ধরে নিজেকে সামলে নেওয়ার চেষ্টা করলো।
খানিকক্ষণ পর সাতরাজ আর নোরিন নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করে পাহাড়ের পাশ বেয়ে ছুটে চলা ঝর্ণা বেয়ে নিচে নামতে লাগলো। ঝরনাটা খাঁড়া নিচে নেমে গেছে৷ নোরিন খেয়াল করলো দূর থেকে কিছু ছোট ছোট ক্ষীণ আলো। নিশ্চিত ওটা একটা গ্রাম। সাতরাজকে বলে গ্রামের উদ্দেশ্য ধরে হাঁটা শুরু করলো দুজন। সাতরাজের হাত পা কাপছে নোরিনের অবস্থা দেখে। যদিও সে নিজেই আহত।
গ্রামের কাছাকাছি আসতেই দ্বিতীয় বিপত্তি ঘটলো। অনেক দূর থেকে আবার অনর্গল গুলি ছুঁড়ছে কেউ। নোরিন আর সাতরাজ ভেবেছিলো ওরা নিরাপদ। আবার এমন আকস্মিক হামলার জন্য প্রস্তুত ছিলো না কেউই। গুরুতর আহত নোরিনকে সামলাতে, সাতরাজ তাড়াতাড়ি নোরিনের পেছনে দাঁড়িয়ে রক্ষা করার চেষ্টা করলো। কিন্তু যা হওয়ার তা অনেক আগেই হয়ে গেছে৷ নোরিনের পিঠে সোজা পাঁজর বরাবর একটা বুলেট তার শরীরে ইতিমধ্যে প্রবেশ করেছে৷ নোরিন আর নিজেকে সামলাতে পারলো না, ক্ষীণ আর্তনাদ করে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। টকটকে লাল রক্তে মাটি ভিজতে লাগলো। সাতরাজ নোরিনের পেট চেপে রক্ত বন্ধের চেষ্টা করছে, কিন্তু কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না। তার হাতের ফাঁক বেয়ে রক্তের স্রোত বেয়েই চলেছে। ততক্ষণে গ্রামবাসীরা এগিয়ে আসলো।
সামরিক পোশাকে সজ্জিত দুজন মানব-মানবীকে দেখে তারা দ্রুত এগিয়ে এলো। সাতরাজ হাঁটু ভেঙে একনাগাড়ে নোরিনকে ডেকেই চলেছে। হাতের ব্যথা তার কিচ্ছু নয়৷ নোরিনের অস্থিরতায় তার বুক কেঁপে কেঁপে উঠছে।
নোরিন হালকা গোঙাচ্ছে। যতবারই কিছু বলার চেষ্টা করছে ততবারই গলার পাশ বেয়ে গলগল করে রক্ত বেরিয়ে পড়ছে৷ তার শরীর আস্তে আস্তে হালকা হয়ে আসছে৷ পাখির পালকের ন্যায়। সে বাবাকে মনে করার চেষ্টা করলো। বাবা এখন কি করছে? সেই কতকাল আগে ভিডিও কলে শেষবার কথা হয়েছে। বাবার মুখে একবার 'মা' ডাক শোনার ইচ্ছা জাগলো নোরিনের। মাকে নিয়েও একবার ভাবলো। নানুমণির মুখে "সুন্দরী বানু" কতদিন শোনা হয়নি! নোরিনের একজনের কথা মনে আসতেই পৃথিবী উজাড় করে কাঁদতে ইচ্ছে হলো। নিবিড়! সে এখন কোথায়? নিবিড় আমি তোমাকে সত্যি অনেক ভালোবাসি। আজ কতবছর আমাদের দেখা হয়নি৷ তুমি আমাকে বুঝতে চাওনি নিবিড়। আমি সত্যি তোমাকে চাইতাম।
ধীরে ধীরে চোখ বুজে এলো নোরিনের। চোখ বন্ধ হলো। নোরিন আঁখি বুজার আগে নিবিড়কে উদ্দেশ্য করে একটা কথা বললো। কারণ তার ধারণা নিবিড় তার কথা শুনতে পাচ্ছে।
--- "একসময় থেমে যাবে সমস্ত কোলাহল, ঘুমিয়ে পড়বে ধরণী। জানি একদিন ছাড়াছাড়ি হবে , ভুলে যেও না আমায়। জেগে থেকো নিবিড়, দেখা দিও অঘ্রাণ প্রান্তরে।"
#চলবে