পার্টঃ২০
লেখকঃজাহিদ আহমেদ
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
।
হঠাৎ করে আমার হাতটা আপনা-আপনি পাখিটির ওপরে থেকে সরে এলো,আর সাথে সাথে আমি রুমের ফ্লোরের মধ্যে ধপাস করে পড়ে গেলাম।
,
,
জাহিদ ফ্লোরের মধ্যে ধপাস করে পড়ে যাওয়ার পর পরই সেই রুমের বাল্ব গুলো জ্বলতে এবং নিভতে থাকে। হঠাৎ করেই সেই রুমের সবগুলো বাল্ব আপনা-আপনি বন্ধ হয়ে যায়। রুমটি ভরে যায় নিকষ কালো অন্ধকারে,কিছুক্ষন পরে হঠাৎ করে সেই রুমটির সবগুলো বাল্ব আপনা-আপনি জ্বলে উঠে। আর সেই বাল্বের আলোতে সেখানে স্পষ্ট দেখা যায় একটি পাখিটিকে। যার পুরো শরীর সহ চোখ গুলো পর্যন্তও একদম কালো কুচকুচে। হ্যা এটাই হলো সেই ডার্ক বার্ড,যাঁর জন্য এতোসব কিছু। কিন্তু অবাক করার মতো একটা কথা হলো,পাখিটির পালকের উপর দিয়ে এখন সেই আগের মতো বিষাক্ত ছোট ছোট কাঁটাগুলো আর দেখা যাচ্ছে না। পাখিটির শরীর নিয়ে অনবরত কালো ধোঁয়া বেরুচ্ছে। পাখিটি টেবিলের ওপর থেকে লাফ দিয়ে একদম জাহিদের সামনে এসে দাঁড়িয়ে যায়।
,
ডার্ক বার্ডটি তাঁর নিজের ডাগর ডাগর কুচকুচে চোখ দিয়ে জাহিদ কে ভালোভাবে দেখছে একদম কাছ থেকে।
হঠাৎ করে ডার্ক বার্ডটি একটি অবাক কান্ড করে বসে।
ডার্ক বার্ড টি তাঁর ধারালো নখ দিয়ে জাহিদের হাতের উপর আঁচড় কাটে। এতে করে জাহিদের হাত থেকে প্রচন্ড পরিমানে ব্লাড বের হতে থাকে। ডার্ক বার্ড টি সেই ব্লাডের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকে,কিছু একটা ভেবে ডার্ক বার্ড টি জাহিদের ব্লাডের গন্ধ শুকতে থাকে। জাহিদের ব্লাডের গন্ধ শুকার সাথে সাথে তাঁর শরীর ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে।
,
,
আগের থেকে ডার্ক বার্ড টি এখন বিশালাকৃতির হয়ে গেছে। এককথায় তাঁকে দৈত্য/জায়ান্টের মতো দেখা যাচ্ছে। জায়ান্ট ডার্ক বার্ড,এই নামটা এখন তাঁর জন্য প্রযোজ্য।
,
,
ডার্ক বার্ড টি নিজের বিশাল বড় ঠোঁট দিয়ে জাহিদ কে ধাক্কা মারে। কিন্তু জাহিদ তখনও সেই আগের মতো করে শোয়ে আছে। এটা দেখে ডার্ক বার্ড টি অনেক জোরে জোরে ধাক্কা দিতে থাকে নিজের ঠোঁট দিয়ে। যখন দেখলো যে নাহ্ জাহিদ এখনও উঠছে না,তখন ডার্ক বার্ড টি জাহিদের কানের কাছে গিয়ে নিজের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে মুখ দিয়ে একটা আওয়াজ করে। ঘরের দরজা জানালা সব বন্ধ থাকায় এবং ঘরটি সাউন্ড প্রোপ থাকার কারনে আওয়াজ টি বাহিরে বের হতে পারে না। রুমের ভেতরেই আওয়াজ টি প্রতিধ্বনি হতে থাকে।
,,
ডার্ক বার্ড টি আওয়াজ করার পরপরই জাহিদের হাতের নখগুলো একটু নড়েচড়ে ওঠে।
এটি দেখে ডার্ক বার্ড টি একটু খুশি হয়।
ডার্ক বার্ড টির নখের আঁচড়ে জাহিদের হাতের যেটুকু অংশ কেঁটে ব্লাড বের হচ্ছিল সেটুকু অংশ এখন আপনা-আপনি ঠিক হয়ে যাচ্ছে। আর সবচাইতে অবাক করার বিষয় হচ্ছে,যতোটুকু ব্লাড ফ্লোরের মধ্যে পড়েছিল সেটুকু ব্লাড আপনা-আপনি অদৃশ্য হয়ে যায়।
জাহিদের হাতের কাঁটা অংশটুকু ভালো হওয়ার সাথে সাথে জাহিদ শোয়া থেকে লাফ দিয়ে দাঁড়িয়ে যায়।
,
সোজা হয়ে দাঁড়ানোর পরে নিজের শরীরের দিকে তাকালাম,না সবকিছু ঠিকই আছে,তারমানে আমি মারা যায়নি। হঠাৎ সামনে কারো উপস্থিতির টের পেলাম,সাথে সাথে সামনে তাকালাম। সামনে তাকানোর সাথে সাথে আমি অবাকের একদম চরম পর্যায়ে চলে গেলাম।
,
পাখি যে এতো বড় হতে পারে,সেটা না দেখলে হয়তো-বা কোনোদিনও বিশ্বাস করতাম না,তাও আবার সেটা বাংলাদেশে। সামনা-সামনি যখন দেখলাম এখন তো আর অবিশ্বাস করা যাবে না।
হঠাৎ সেই ডার্ক বার্ড টির কথা মনে পড়ে গেলো। যাঁর জন্য এতো সবকিছু সে গেলো কই,ডার্কপা বার্ড টির কথা মনে পড়তেই সামনের পাখিটির দিকে তাকিয়ে দেখলাম যে,পাখিটির শরীরথেকে কালো ধোঁয়া বেরুচ্ছে। একটু ভালোভাবে লক্ষ্য করতেই বুঝে গেলাম যে হ্যা এটাই সেই ডার্ক বার্ড। কিন্তু পিচ্চি পাখিটি এতো বড় কিভাবে হয়ে গেলো,আর এর সেই ছোট ছোট বিষাক্ত কাঁটা গুলো কোথায় গেলো।
,
,,,,,,কেম্নে সম্ভব এগুলো,কেম্নে,,,,,,
,
যাইহোক ধীরে ধীরে পাখিটির দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম। দেখলাম যে,না পাখিটি কিছু বলছে না তাতে করে একটু সাহস হলো। নিজের ডান হাত টা পাখিটির পালকের উপর আস্তে করে রাখলাম,এবং নিজের চোখ দু'টো বন্ধ করে নিলাম ভয়ে। পাখিটি যদি কিছু করে বসে। কিন্তু না পাখিটির গায়ের ওপর নিজের হাতটা বুলাতেই পাখিটি উপর হয়ে শোয়ে পড়লো এবং তাঁর মুখ দিয়ে অদ্ভুত ভাবে ছোট ছোট আওয়াজ করতে লাগলো।
,
,
এতোক্ষনে বুঝতে পারলাম যে,পাখিটি আমাকে কিচ্ছু বলবে না। আর সেই ধোঁয়ার কুন্ডলীটার কথা মতো মনে হয়,পাখিটি আমাকে তাঁর মালিক মনে করছে তাঁকে নতুন জীবন দেওয়ার জন্য।
,
পাখিটির দিকে আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি,যেনো আমার অনেক দিনের চেনাজানা কোনো এক পোষা প্রাণী। আমার আদর পাওয়ার সাথে সাথে অনেক খুশী হয়েছে,যার জন্য ওমন করছে।
,
আমি একটু খুশী হলাম,কেননা আমার নিজস্ব এখন একটা পোষা প্রাণী আছে,যাঁর শক্তি অসাধারন। কিন্তু একে সবার সামনে যেতে হলে একে এক নতুন রূপে রুপান্তরিত হতে হবে। নয়তো একটু সমস্যা হবে আমার।
,
আমি আমার হাতটা পাখিটির গায়ের ওপর থেকে সরিয়ে নিতেই পাখিটি শোয়া থেকে উঠে দাঁড়িয়ে গেলো আমার সামনে।
আমি পাখিটিকে উদ্দেশ্য করে বললাম যে,আমার তো প্রচুর পরিমানে ঘুম পাচ্ছে,তারওপর আবার কালকে প্রথম মিশনে যেতে হবে। জানিনা প্রথম মিশন টা শেষ মিশন হয়ে যায় নাকি। তাই ভালোভাবে আজকে ঘুম দিতে হবে,পারলে তুমিও ঘুমিয়ে নাও। ওহ্ তোমার তো আবার শরীর বিশালাকার কিভাবে ঘুমাবে এখানে,ঘুমাতে পারবে ঠিকই কিন্তু একটু কষ্ট হবে আরকি। তো কি করবে এখন।
,
আমি কি বলেছি সেটা মনে হয় ডার্ক বার্ড টি বুঝতে পেরেছে,যাঁর কারনে সে তাঁর মাথাটি উপর নিচে নাড়াচ্ছে। ঠিক তখনই ডার্ক বার্ড টি ধীরে ধীরে আগের ন্যায় একদম ছোট হয়ে গেলো।
,
আরিব্বাস তুই তো দেখি আমার কথাটা বুঝে নিলি খুবই তারাতাড়ি। ওহ্ সরি তুই বলে ফেললাম,যাই-হোক কিছু মনে করিস না আমি আবার সবাইকে তুমি বলিনা। এই তুমি কথাটা শুধু আমার প্রিয়তমার জন্য অনেক যত্ন করে আগলে রেখেছি(আমি)!
,
তো চল গিয়ে শোয়ে পড়ি,এই বলে আমি গিয়ে আমার বিছানায় শোয়ে পড়লাম। ডার্ক বার্ড টি আমার পাশেই উড়ে এসে বিছানার উপরে গুটিশুটি হয়ে বসে পড়লো। ওকে গুড নাইট বলে রুমের লাইটটি নিভিয়ে দিয়ে লেপ মুড়ি দিয়ে শোয়ে পড়লাম সাথে ডার্ক বার্ড টির শরীর টাও ডেকে দিলাম লেপ দিয়ে।
,
,
পরের দিন সকাল বেলা ঘুম থেকে ওঠে ফ্রেস হয়ে বারান্দায় বসে বসে কফি পান করছিলাম আর ভাবছিলাম যে কালকের দিনটা কেমন হতে চলেছে। সকাল পেরিয়ে দুপুর আসার পর গোসল সেরে নিজের ব্যাগটি কাঁধে ঝুলিয়ে নিয়ে নিচের রুমে এসে খাবার খেয়ে আব্বা-আম্মুর কাছে থেকে দোয়া নিয়ে বেরিয়ে এলাম ঘর থেকে।
আসার আগে আব্বুর চোখের কোনে হাল্কা একটু পানি চিকচিক করছে সেটা বুঝতে আর বাকি হলো না আর আম্মু তো কান্না করে দিয়ে বলছিলো যে,
দেখে শুনে ভালো করে যাস,আর আগের বারের মতো হঠাৎ করে হারিয়ে যাসনে(আম্মু)!
,
আম্মুর কথা শুনে আমি বলেছিলাম যে,
চেষ্টা করবো যথাসম্ভব(আমি)!
,
,
বিশাল বড় একটা জঙ্গলের মধ্যে একটা উঁচু ঢিবির মধ্যে অন্ধকার একটা গুহার সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে জাহিদ এবং তাঁর সাথে কেউ একজন। আর তাঁদের দু'জনের ওপর দিয়ে একটা বিশাল বড় পাখি উড়ে বেড়াচ্ছে,আর সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হচ্ছে। পাখিটির শরীর থেকে এতো পরিমানে কালো ধোঁয়াটা বেরুচ্ছে যে,সেটা এই অন্ধকারের মধ্যেও পুরো স্পষ্ট ভাবে দেখা যাচ্ছে।
,
হঠাৎ করেই আমি আমার পাশের লোকটাকে উদ্দেশ্য করে বললাম যে,
তাহলে মৃত্যুর পুরির যাএা শুরু করা যাক।
কি বলেন,সেনাপ্রধান(আমি)!
আমার কথার উওরে সে শুধু একটি মুচঁকি হাসি ফেরত দিলো।
,
,
আল্লাহর নাম নিয়ে অন্ধকার গুহায় প্রবেশ করলাম।
সেনাপ্রধান আগে আগে যাচ্ছে,কেননা এখানকার ব্যপারে সেনাপ্রধান বলেছে যে গোলক ধাঁধাঁর যদি কেউ পড়ে যায় তাহলে সে সারাজীবনের জন্য আটকা পড়ে যাবে। আমি যেহেতু রাস্তা চিনি না তাই সেনাপ্রধান আগে যাচ্ছে আর আমি তাঁর পেছনে আর আমার পেছনে ডার্ক বার্ড টি।
,
,
মিনিট দশেক হাঁটার পর পরই সামনের দিকে আলো দেখতে পেলাম। আলোর কাছাকাছি যেতেই চোখে প্রচুর পরিমানে আলোর ঝলকানিতে নিজের চোখ দু'টো বন্ধ করে নিলাম। একটু পর যখন দেখলাম যে না আমার চোখে আর আলো পড়ছেনা তখন নিজের চোখ দু'টো খুললাম।
,
,
অবাকের একদম চরম পর্যায়ে এসে গেলাম। আমরা তিনজন একটা গুহার সামনে দাঁড়িয়ে আছি,সামনে যেদিকে তাকাচ্ছি যতোদূর চোখ যায় ততোটুক শুধু সবুজ গাছপালা,অসম্ভব সুন্দর সুন্দর নাম না জানা হাজারো ফুলের গাছ,সেই সাথে নানান রঙের ছোট বড় হাজারো পাখি উড়ে বেড়াচ্ছে এগুলো দেখা যাচ্ছে। এগুলো দেখতেই মনের মধ্যে একটা প্রশান্তির বাতাস বয়ে গেলো।
,
সেনাপ্রধান আমাকে উদ্দেশ্য করে বললো যে,
মালিক আমরা এখন ড্রাগন রাজ্যে আছি,আর এই বিশাল বড় জঙ্গল শেষে একটা খোলা মাঠের শেষ প্রান্তে হলো আমাদের হোয়াইট ড্রাগন রাজ্য।
তো এখন কি করবেন আমার মালিক(সেনাপ্রধান)!
,
সেনাপ্রধানের কথা শুনে আমি আমার মাথার উপরে তাকালাম কিছু বললাম না,উপরে আমার প্রিয় ডার্ক বার্ড টি উড়ে বেড়াচ্ছে। কিছু একটা মনে করে আমি আমার রাজ্যের দিকে না গিয়ে জঙ্গলের ভেতরের দিকে যেতে লাগলাম।।
আর সেনাপ্রধান আমার দিকে হা করে তাকিয়ে রয়েছে,,কেননা আমি কোথায় যেতে পারি সেটা সেনাপ্রধান ভেবেও কূল কিনারা খুঁজে পাচ্ছে না।। যাঁর কারনে সে বাধ্য ছেলের মতো চুপচাপ আমার পিছু পিছু আসতে লাগলো।
,
,
আমি জঙ্গলের ভেতর দিকে যেতে লাগলাম,আমার পিছুপিছু সেনাপ্রধান আর ডার্ক বার্ড টি তাঁর ছোট্ট ফর্মে আমাদের মাথার উপর দিয়ে উড়ে বেড়াচ্ছে। যেতে যেতে জঙ্গলের একদম মাঝখানে এসে আমি দাঁড়িয়ে গেলাম,আমার সাথে সাথে সেনাপ্রধান সহ ডার্ক বার্ড টিও।।
,
আমি তাদের কে উপেক্ষা করে আশেপাশে কিছু একটা খুঁজতে লাগলাম। অনেকক্ষন খোঁজাখুজির পর সেই কাঙ্ক্ষিত জিনিস টি পেয়েও গেলাম।
,
বিশাল বড় একটা গাছের নিচে এসে দাঁড়িয়ে গেলাম,গাছের গোঁড়ায় সবগুলো শিকড়ের মধ্যে কতোক্ষন উপর নিচ করতে লাগলাম,ঠিক তখনই আমার সামনে থেকে একটা শব্দ শুনতে পেলাম।
সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে সামনের দিকে তাকাতেই দেখলাম যে সামনের গাছটির ভেতরে একটা দরজার সৃষ্টি হয়েছে। আমি আর দেরি না করে সেই দরজার ভেতরে নিজের পা বাড়ালাম,আর সাথে সাথে দরজার ভেতরে চলে গেলাম। এটা দেখে সেনাপ্রধান একটা মুচকি হাসি দিয়ে দরজার ভেতরে পা বাড়ায় এবং সেও দরজার ভেতরে চলে যায়। আর এদিকে ডার্ক বার্ড টি নিজের ডানা ঝাপটিয়ে আর অপেক্ষা না করে দরজার দিকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যেতে থাকে,ডার্ক বার্ডটি দরজার ভেতরে প্রবেশ করার সাথে সাথেই দরজাটি আপনা-আপনি বন্ধ হয়ে যায়।
,
,
জাহিদ এবং সেনাপ্রধান সহ ডার্ক বার্ড টিও একটা রুমের মধ্যে এসে দাঁড়িয়ে যায়।
তখনই জাহিদ রুমের প্রত্যেক কর্নারের কাছে গিয়ে কিছু একটা খুবই ভালোভাবে দেখছে। হঠাৎ করে জাহিদ একটা কর্নারে গিয়ে দাঁড়িয়ে যায় এবং সে তাঁর ডান হাতের একটি আঙুল দিয়ে সেই রুমের একদম কর্নারের নিচে দেয়ালের সাথে আঙুল টা কিছুক্ষন যাবৎ চেপে ধরতেই,ততক্ষনাৎ আশেপাশের সবকিছু অন্ধকারের মধ্যে ঢেকে যায়। আবার কিছুক্ষন পরেই সবকিছু আগের মতো হয়ে যায়,শুধু একটি জিনিস বাদে। সেই জিনিস টা হলো রুমটির মধ্যে একটা টেবিল ছিলো কিন্তু সেটা এখন নেই,টেবিল টির জায়গায় একটা সুন্দর সিন্দুক দেখা যাচ্ছে।
,
,
সিন্দুক টি দেখে আমি,সেনাপ্রধান এবং ডার্ক বার্ড ও ওটার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।
সিন্দুক টির ভেতর থেকে হাল্কা হাল্কা সোনালি রশ্মির মতো কিছু একটা বের হচ্ছে।
,
আমি ধীরে ধীরে সিন্দুক টির দিকে এগিয়ে গেলাম। সিন্দুক টির সামনে বসে আমি ওটার উপর আমার ডান হাতটা রাখলাম আর সাথে সাথে আমার পুরো শরীরে বিদ্যুৎ এর মতো কিছু একটা খেলে গেলো। আর সেই সাথে সিন্দুক টার ঢাকনা আস্তে আস্তে আপনা-আপনি খুলতে লাগলো।। আর আমি অবাক চোখে সিন্দুক টির দিকে তাকিয়ে আছি।
,
,
সিন্দুক টি পুরোটা খোলার সাথে সাথে সেটার ভেতর থেকে প্রচন্ড পরিমানে একটা আলো আসে। আর এতে আমার পুরো দু’চোখ একদম ধাঁধিয়ে যায়। যার কারনে নিজের চোখ দু'টো সাথে সাথে বন্ধ করে ফেলি। পুরো রুমটা জুড়ে এই আলোটা বিদ্যমান।
,
,
নিজের চোখ দু'টো যখন খুললাম তখন অবাক না হয়ে পারলাম না।
এটা কি করে সম্ভব,আমি এখানে কেনো,আর আমার সেই সিন্দুক টি কোথায়।
এসব ভাবতে ভাবতে যখন আমি পেছনের দিকে ঘুরে তাকালাম তখন দেখলাম যে সেনাপ্রধান অবাক চোখে সামনের দিকে তাকিয়ে আছে। আর ডার্ক বার্ড টি আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।
,
সেনাপ্রধান এ আমরা কোথায় এসে পড়লাম,আর আমার সেই সিন্দুক টি কোথায়,সেই সিন্দুকের বইটি এখন আমার সবচেয়ে বেশি দরকার। সেটা তো আপনি জানেনই(আমি)!
,
আমার কথা শুনে সেনাপ্রধান একটু ঘাবড়ে গিয়ে যেটা বললো,সেটা শুনে আমি অবাকের একদম চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেলাম।।
সেনাপ্রধান বললো যে,
,
মহারাজ আমরা এখন আমাদের হোয়াইট ড্রাগন রাজ্যে আছি,যেটা বর্তমানে ব্লাক ড্রাগন কিং দখলে আছে। আর কিছুদূর সামনে যাওয়ার পরেই আমাদের হোয়াইট ড্রাগন রাজ্য। কিন্তু আমি একটা জিনিস কিছুতেই বুঝতে পারছিনা। সেটা হলো এই যে,আমরা এখানে এলাম কিভাবে,আর এসেছি যখন তাহলে সেই সিন্দুক টাও তো আমাদের সাথে এখানে থাকার কথা কিন্তু সিন্দুক টি তো এখানে নয়। এটাতো কোনোভাবেই সম্ভব না(সেনাপ্রধান)!
,
সেনাপ্রধানের কথা শুনে আমি কিছু একটা মনে করার চেষ্টা করলাম। কিছু একটা বুঝতে পেরে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম।
ঠিক তখনই সেনাপ্রধান পেছন থেকে বলে উঠলো যে,
মালিক আমাদের কি এখনই ব্লাক ড্রাগনদের সামনে যাওয়া দরকার,যদি কোনো সমস্যা হয় তাহলে কি করবেন(সেনাপ্রধান)!
,
সেনাপ্রধানের কথা শুনার পর মুখে কিছু বললাম না,শুধু কিছু একটা ভাবতে ভাবতে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম।
কিছুদূর এগিয়ে যাওয়ার পর হোয়াইট ড্রাগনদের রাজ্যের বিশাল বড় একটা গেট দেখতে পেলাম। কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো,গেটের সামনে কোনো প্রহরী নেই। এটা দেখে আমার একটু সন্দেহ হলো। আর তারচেয়েও অবাক করার বিষয় হলো,গেটের ওপাশে কিছু একটা আছে। যেটা থেকে সোনালী আভা বের হচ্ছে,আর সেটা গেটের এতদূর থেকেও আমি ভালোভাবে দেখতে পাচ্ছি।
,
,
ওই আলোটা দেখার পরে আমি একদম সিউর হয়ে গেলাম যে,গেটের অপর পাশে আমার সেই কাঙ্ক্ষিত জিনিস রয়েছে। হ্যা ওখানেই আমার সেই সিন্দুকটা রয়েছে,আর সেই সিন্দুকের ভেতরেই রয়েছে মহা মূল্যবান বইটি।।
যেই বইটি ছাড়া বর্তমানে আমি একদম অচল।
,
,
গেটের একদম সামনে গিয়ে গেটের মধ্যে স্পর্শ করার আগেই গেটটা আপনা-আপনি ধীরে ধীরে খুলে যেতে লাগলো। এটা দেখে পেছন থেকে সেনাপ্রধান বললো যে,
হয়তো-বা নিজের মালিককে চিনে গেছে(সেনাপ্রধান)!
,
সেনাপ্রধানের কথার উওরে আমি কিছু বললাম না।। গেটটা খোলা মাত্রই দেখলাম যে,
ধবধবে সাদা রঙের বিশাল বড় একটা রাজপ্রাসাদ। আর রাজপ্রাসাদের সামনে মাটিতে সেই সিন্দুকটা পড়ে আছে,আর সেটার ভেতর থেকে সোনালী রঙের আলো ছড়াচ্ছে চারদিকে।
,
,
সিন্দুক টার দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে লাগলাম। সামনে গিয়ে হাঁটু গেঁড়ে সিন্দুকটির একদম সামনে বসে পড়লাম। সিন্দুক টির ভেতরে সোনালী রঙের একটি বই দেখতে পেলাম। ডান হাতটা বাড়িয়ে দিলাম বইটির দিকে।
,
বইটিকে স্পর্শ করার আগ মূহুর্তে মনে হলো আমার দিকে কিছু একটা খুবই দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসছে। তখনই আমি সামনের দিকে তাকালাম আর সাথে সাথে কেউ একজন আমার মুখের ওপরে একটা পাঞ্চ মারলো। আর আমি উল্টে গিয়ে সিন্দুক টার থেকে একটু দূরে গিয়ে পড়লাম। রাগে আমার চোখমুখ লাল হতে লাগলো। আমি মাটি থেকে উঠে দাঁড়িয়ে সামনের দিকে তাকালাম। আর সাথে সাথে আমার বুকের মধ্যে কেউ একজন লাথি মারলো,লাথিটার পাওয়ার এতোটাই ছিলো যে,আমি উড়তে উড়তে সেনাপ্রধান এবং ডার্ক বার্ড টির সামনে গিয়ে পড়লাম। বুকের দিকে তাকাতেই দেখলাম যে,আমার বুকের অর্ধেক টা অংশ ভেতরে চলে গেছে। রাগে আমার শরীর থরথর করে কাঁপতে লাগলো। ঠিক তখনই কাছ থেকে একটা ভয়ংকর আওয়াজ শুনতে পেলাম। সামনের দিকে তাকাতেই আমার চোখ ছানাবানা হয়ে গেলো। কেননা সামনের দিকে তাকিয়ে দেখলাম যে,আমার প্রিয় ডার্ক বার্ড টি আমার থেকে একটু সামনে দাঁড়িয়ে আছে,আর সে তাঁর মুখ দিয়ে ওই রকম ভয়ংকর আওয়াজ করছে। আর তাঁর শরীর ধীরে ধীরে বড় হতে লাগলো,একি ডার্ক বার্ড টি ডো আস্তে আস্তে একটা ব্লাক ডাগ্রনের রূপ নিচ্ছে। কিছু সময়ের মধ্যেই ডার্ক বার্ড টি বিশাল থেকে বিশালাকৃতির হয়ে গেলো।
জাহিদের সামনে বিশাল বড় আকারের একটি ব্লাক ড্রাগন দাঁড়িয়ে আছে। ড্রাগন টির শরীর একদম কালো কুচকুচে,এবং সেটার পুরো শরীর থেকে অদ্ভুত রকমের কালো ধোঁয়া বেরুচ্ছে। এমনকি ড্রাগন টির শরীরের মধ্যে আগুনের ফুলকি দেখা যাচ্ছে অনেক জায়গায়।
,
,
ডার্ক বার্ড ওরফে ফায়ার ব্লাক ড্রাগন,টি তাঁর টকটকে লাল রঙের চোখ নিয় সামনের দিকে তাকিয়ে আছে। তাঁর শিকার হলো সামনের জন,কেননা সে তাঁর মালিককে কষ্ট দিয়েছে। আর এর সাজা ওকে যে পেতেই হবে।
আর তাঁর থেকে কিছুদূর সামনে একজন বিশাল বড় দৈত্য দাঁড়িয়ে আছে। যেটার শরীর থেকেও কালো রঙের ধোঁয়া বেরুচ্ছে।
,
,
ডার্ক বার্ড ওরফে ফায়ার ব্লাক ড্রাগন টি তাঁর নিজের জায়গা থেকে লাফ দিয়ে সামনের সেই দৈতের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। এবং সেই দৈতটিকে কোনো সুযোগ না দিয়ে তাঁর মুখটা খুলে নিজের ধারালো দাঁত দিয়ে দৈতটার মাথা চেপে ধরে একটা আছাড় মারে এবং সেটাকে পুরো হিংস্রতার সাথে নিজের ধারালো নখ দিয়ে ছিন্নভিন্ন করে ফেলে। সবশেষে নিজের মুখটা হা করে,ঠিক তখনই তাঁর মুখ থেকে আগুন বেরিয়ে আসে। আগুনের তাপে দৈতটার পুরো শরীর সাথে সাথে গলে যায়। শুধু তাই-না সাথে দৈতটার শরীরের হাড্ডি গুলো পর্যন্ত পুড়ে ছায় হয়ে যায়।
ঠিক তখনই ডার্ক বার্ড ওরফে ফায়ার ব্লাক ড্রাগন টি আকাশের দিকে মুখ তুলে বিশাল বড় একটা আওয়াজ করে।
,
,
সেনাপ্রধান সহ জাহিদও হা করে ডার্ক বার্ড ওরফে ফায়ার ব্লাক ড্রাগন টির দিকে তাকিয়ে আছে।
,
,
,,,,,,,,,,,,,,শব্দ সংখ্যা(২৬০৬),,,,,,,,,,,,,,
,
,
নিচের লিখা টুকু পড়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ রইলো।
,
,
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।
আজকে আর কোনো প্রশ্ন করলাম না। তাঁর কারন হলো,আপনারা কেউ আমার প্রশ্নের উত্তরই দেন না। আগের পার্টের মানে হলো,১৯ তম পর্বের একটা প্রশ্নের উত্তরও আপনারা কেউ দেননি।
যাঁর কারনে মনটা খুবই খারাপ লাগছে।
যাই হোক উওর দিবেন কি দিবেননা সেটা আপনাদের পার্সনাল ব্যপার। এখানে আমার কোনো কিছু বলা মানায় না।।
কারো কোনো প্রশ্ন থাকলে করতে পারেন।
ওয়াও,সুন্দর,নাইস,ওসম দয়া করে এগুলো কেউ বলবেন না।
বললে অবশ্যই গল্পের বিষয়ে ঘটনা মূলক বক্তব্য পেশ করতে কেউ ভুলবেন না।
★হ্যাপি রিডিং★