পার্ট:11
লেখক:Hridoy Bappy।
।।।।।।
।।।।।।
।।।।।।
রাতে ঢাকায় ফিরলাম।আমি তো এখনও সিওর হতে পারছি না যে আমিই হৃদয়।আমার মাথাটা একটুও কাজ করছে না।তারমানে আমিই ঔ পরিবারের ছেলে যে নাকি তাদের ছেলে হারিয়েছে।এটা হলো কেনো আমার সাথে।রহস্য রহস্য করতে করতে নিজেই একটা রহস্য হয়ে গেলাম।কিন্তু আমাকে হার মানলে চলবে না।এখন তো কেসটা আমার নিজের পারশোনাল হয়ে গেছে।আমাকে আসল মাস্টারমাইন্ডকে খুজে বের করতে হবেই।কে সে।আমার তো পুরানো কোনো কথায় মনে নেই।কোনো ক্লু ও তো পাবো না নিজের থেকে।এখন হৃদয় এর পরিচয় দেওয়াটা হয়তো ভুল সিধান্ত হবে।কালকেই আমার পরিবারের কাছে যেতে হবে।এজন্যই তো বলি সবাইকে আমার চেনা চেনা লাগে কেনো।সবাই আমার আপন তাই তো সবাই কে একদম আপন মনে হয় আমার।কালকেই আমার বাবা-মার সাথে দেখা করে আসতে হবে।
.
:-একি তুমি তো বললা ৭ দিন এর জন্য জাবা।আর এখন তো ২ দিন হলো না আর চলে আসলা।(নিধি দরজা খুলে দিয়ে বললো।)
.
:-আসলে কাজ শেষ তো তাই ভাবলাম ওখানে থেকে আর কি লাভ।(আমি)
.
:-তাই কি কাজ করলা যে এত তারাতারি শেষ হয়ে গেলো।(নিধি)
.
:-কিছু না সাধারণ ছোট একটা কাজ ছিলো।(আমি)
.
:-ও ভিতরে আসো।(নিধি)
।।।।।।
ফ্রেস হয়ে নিয়ে কিছু খেয়ে ঘুমিয়ে পরলাম।সকালে থানায় চলে আসলাম।দেখি নিলয় বসে আছে,
.
:-নিলয় আমার কেবিনে আয় কিছু কথা আছে।(আমি)
।।।।।
আমার সাথে নিলয় ও চলে আসলো।
.
:-হুমমম বল।(নিলয়)
.
:-কালকে যে মোবাইলটা দিয়েছিলাম সেটার কি করেছিস।(আমি)
.
:-ওইটা সকালেই রিকোভারির জন্য পাঠিয়ে দিয়েছি।কালকের মধ্যে পেয়ে যাবো।(নিলয়)
.
:-আর মানিব্যাগে কিছু পেয়েছিস।(আমি)
.
:-না তেমন কিছু না হৃদয় মানে তোর বাবার কার্ড আর একটা এটিএম কার্ডই আছে তাতে।(নিলয়)
.
:-আচ্ছা আমাকে একটা কথা বলতো।পুলিশ এতো investigation করলো।কিন্তু সেখানে আমার মোবাইলের নাম্বারটা ট্রেস করলো না কেনো।(আমি)
.
:-হুমমমম সেটাও তো কথা।।।এটা আমার মাথায় ও আসে নাই।এই বিষয় নিয়ে কিছুই জানা হয় নাই আমাদের।(নিলয়)
.
:-তাহলে চল এই বিষয় নিয়ে ও জানা হয়ে যাবে আর আমার বাবা মা ও কে দেখা হয়ে যাবে।(আমি)
.
:-শুধু কি বাবা মা দেখতে যাবি নাকি।তোর তো বউও আছে।(নিলয়)
.
:-আরে বাদ দে তো মেঘলার উপর আমার সন্দেহ আছে।আমি আমার পরিচয় দিবো না কিন্তু আজকে একটা শকিং নিউজ দিবো দেখিস।(আমি)
.
:-হুমমম চল তো আগে।(নিলয়)
।।।।।।
থানা থেকে চলে আসলাম আমার বাসা।মানে আমার নিজের বাসা।জানি না কত আপন আমার কাছে এই বাসা।যদি আগের কিছু মনে থাকতো তাহলে কতই না সুখী হতাম।কিন্তু এখন মনে কোনো সুখ দুঃখ নাই।শুধু একটাই কথা মাথায় ঘুরছে।কে এই মায়াজালের প্রধান নায়ক।
যাইহোক চলে আসলাম নিজের বাসায়।ও সরি এখন বলা যাবে না নাহলে কেউ শুনে ফেলবে।চলে আসলাম হৃদয় এর বাসায়।আবার ও দরজা খুলে দিলো মেঘলা।আজকে ওকে অন্য রকম লাগছে।ভালো ভাবে খেয়াল করলাম মেঘলাকে আজ।কত সুন্দর মেয়েটা।কোনো মেয়ে এতটা সুন্দর হতে পারে আজ জানতে পারলাম।অনেক সুন্দর করে সেজেছে মেঘলা।হাসি মুখে দরজা খুলে দিয়েছিলো।কিন্তু মনে হয় দরজায় আমাদের না অন্য কাউকে আশা করেছিলো।যাইহোক কোনো রকমে বললো।
.
:-আপনারা এখানে আবার।(মেঘলা)
.
:-হ্যা কেস যখন হাতে নিয়েছি তখনতো আসতেই হবে এখানে।(আমি)
.
:-বা বাসা তো অনেক সুন্দর করে সাজানো হচ্ছে কোনো অনুষ্ঠান হবে নাকি।(নিলয়)
।।।।
এখন খেয়াল করলাম বাসা অনেক সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।আমার জানা মতে।।। ও সরি আমি তো কিছুই জানি না।
আর কিছু বলার আগেই মা চলে আসলো।
.
:-হ্যা বাবা বাসায় অনুষ্ঠান হবে তোমরা ও আসো।ভিতরে আসো।(মা)
.
:-ওওওও।
।।।।।।
আমরা ভিতরে আসলাম।ভালোই অনেক বড় অনুষ্ঠান।আমাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য এটা সঠিক সময় না এটা বুঝে গেলাম।বাবা কে ও চিনে রাখলাম।এখানে সবাইকেই চিনা চিনা লাগে।কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো কাউকে চিনি না।দেখি বাবার সাথে একটু কথা বলি।তাই আমি আর নিলয় এগিয়ে গেলাম।
.
:-ও তাহলে তোমরা ধানমন্ডি থানার নতুন অফিসার।বয়সে তো অনেক ছোট।(বাবা)
.
:-ছোট না বড় সেটা কাজ দিয়ে দেখা হয় মি:লিটন খান।(নিলয়)
.
:-আচ্ছা আপনার বাসায় এই অনুষ্ঠান টা কিসের।(আমি)
.
:-তোমাদের পুলিশ দের দ্বারা কোনো কাজই হয় না।আমার ছেলেটার কোনো একটা খবরই বের করে দিতে পারলো না কেউ।(বাবা)
.
:-আমরা চেষ্টা করতেছি তো।(নিলয়)
.
:-কি চেষ্টা করতেছো।চার বছর হয়ে গেছে।এখন ও একটা খবরই আসলো না ওর।আমরা তো মেনে নিয়েছি ও মারাই গেছে।ঔ যে আমাদের বউমা এতো কম বয়সেই বিয়ে করে তার স্বামিকে হারিয়ে ফেলছে।মেয়ের মতো রাখি আমরা ওকে।কিন্তু ওর এই কষ্ট তো আমরা বুঝি।আমাদের ছেলে আর ফিরে আসবে না।শুধু শুধু মেয়েটাকে কেনো কষ্ট দিবো।তাই আজকে ওর এনগেজমেন্ট এর অনুষ্ঠান হচ্ছে।(এই বলে চলে গেলো বাবা)
।।।।।।।
নিজের চোখের সামনে তার ছেলে দারিয়ে ছিলো।কিন্তু সে তার ছেলেকেই চিনতে পারলো না।যে মা তার ছেলেকে জন্ম দিলো।সেই মাও চিনতে পারছে না।আর আমাকে মরার আগেই মরা বানিয়ে দিলো।আর আমার এতো সুন্দর একটা বউ থাকার পর ও।।না এখন তো আমাকে কেউ চিনবে না।না রাগে পরিচয় দেওয়া যাবে না।
.
:-মানুষ মরার ২ দিন পর ভুলে যাই।আর এখানে তো চার বছর হয়ে গেছে ভুলে তো যাবেই।তাই তো এইসব।কত দিন আর একা একা থাকবে।(নিলয়)
.
:-মাইর খাবি সালা।আমি মারা গেছি নাকি যে ভুলে যাবে আমাকে।আমার লাশ এখনও পাই নাই তাও মেনে নিলো যে আমি মরা।আর প্রথম দিন যখন আসলাম তখন আমাদের কেউ এসব বললো না কেনো।আমার তো মনে হচ্ছে আমার পরিবার এর মধ্যেই একজন এইসবে জরিত আছে।(আমি)
.
:-হুমমমম।(নিলয়)
.
:-চল এনগেজমেন্ট টা কেনছেল করতে হবে।(আমি)
.
:-কেনো হোক না।হলে সমস্যা কোথায়।(নিলয়)
.
:-আরে আমি তো মরি নাই।আর আমাদের দিভোর্সও হয় নাই।তাহলে এনগেজমেন্ট পসিবল কিভাবে।(আমি)
.
:-কেনো তোর যদি হয় তাহলে ওর হতে দোস কোথায়।(নিলয়)
.
:-না মানে।(আমি)
.
:-বুঝছি নিজেরটা অন্য কারো হতে দিতে চাস না।(নিলয়)
.
:-হুমমমম।।।
.
:-মি. লিটন খান।আপনার সাথে কিছু কথা ছিলো।(নিলয়)
.
:-হুমমম বলো।(বাবা)
.
:-আমরা পুলিশ চাইলে সবই করতে পারি।আচ্ছা আগে আমার কথার উত্তর দিন তো যদি স্বামি জীবিত থাকে আর তালাক না হয় তাহলে কি স্ত্রী অন্য কারো সাথে বিয়ে করতে পারে।(নিলয়)
.
:-না একদমই না।(বাবা)
.
:-হুমমম তাহলে এই এনগেজমেন্ট টা বন্ধ করে দিন।(নিলয়)
.
:-মানে।(বাবা)
.
:-মানে আপনার ছেলে জীবিত আছে।(নিলয়)
।।।।।
আরে নিলয় কি বলে দিলি ভাই।আমাকে মারবি মনে হচ্ছে তুই।
.
:-তুমি কি সত্যি বলতেছো আমার ছেলে জীবিত আছে।(বাবা)
.
:-হ্যা সত্যি বলতেছি।এই যে দেখুন আপনার ছেলের মানিব্যাগ যেটা বাসা থেকে নিয়ে বের হয়েছিলো।(নিলয়)
।।।।।
নিলয় এর কথা শুনে পুরো পরিবারের সবাই কান্না শুরু করে দিলো।এটা দুঃখের কান্না না এটা সুখের কান্না।
.
:-আমার ছেলে বেচে আছে বাবা তুমি সত্যি বলতেছো।(মা)
.
:-হ্যা আন্টি সত্যি বলতেছি।(নিলয়)
.
:-তাহলে কোথায় হৃদয় ওকে নিয়ে এসেছো নাকি।(সবাই আমাদের দুইজনকে বললো।)
.
:-এইরে এখন কি করবো।বলে দিবো নাকি যে তুই।(নিলয় আমাকে আসতে করে বললো)
.
:-আসলে আমরা তদন্দ করে জানতে পেরেছি আপনার ছেলে বেচে আছে।তাকে যে হাসপাতালে ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়েছিলো।সেখান থেকে আমরা জানতে পারি যে তার মেমোরি লস হয়েছে।আর যারা আপনার ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলো তাদের ঠিকানা দেওয়া ছিলো হাসপাতালে আমাদের পুলিশ ফোর্স তাদের বাসায় গিয়ে খোজ নিচ্ছে।কোনো খবর পেলেই আমরা জানিয়ে দিবো।শুধু এইটুকু জানানোর জন্যই আমরা এখানে এসেছিলাম।আর আপনারা তো নিজের ছেলেকেই মরা ভেবে ছেলের বউ এর বিয়ে অন্য জায়গায় দেওয়ার জন্য পাগল হয়ে যাচ্ছেন।(আমি কিছু মিথ্যা বললান)
.
:-হায় হায় আমার ছেলে হাসপাতালে ছিলো।ওর মেমোরি হারিয়ে গেছে।মানে আমাদের কাউকেই মনে নাই।হায় আল্লাহ তুমি আমাদের সাথে এমন করলা কেনো।বাবারা তুমি আমার ছেলেটাকে তারাতারি বের করে আমার কাছে নিয়ে আসো।(মা)
।।।।।।
সবার অবস্হায় খারাপ এখন।বাসার সবাই কান্না করতেছে।দুর মেমোরি লসের কথা বলে তো আরো জামেলা করে ফেল্লাম।কিন্তু মা আর বাবার কান্নাটা দেখে আমার ও খুব খারাপ লাগতে ছিলো।মনে চায় ছিলো যে জরিয়ে ধরে বলে দি মা আমিই তোমার ছেলে হৃদয় মা।
নিলয়কে নিয়ে চলে আসলাম আর একটু থাকলে মনে হয় আমিই কেদে দিতাম।আচ্ছা মেঘলার চেহারাই শুধু চিন্তা দেখতে পেয়েছিলাম।হৃদয় বেচে আছে বলে কি ও চিন্তায় পরে গেলো।ওর বিয়ে হচ্ছিলো তাতে তো ও ভালোই খুশি খুশি লাগতেছিলো।কিন্তু হৃদয় বেচে আছে শুনে সবাই কান্না করলো।কিন্তু মেঘলার চোখে মুখে আমি কিসের টেনশম দেখলাম ওইটা।তবে কি সেই এই খেলার মূল আসামী যাকে আমার শাস্তি দিতে হবে।আমি আশা করি ও হবে না।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(চলবে)
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।