#ডাইভার্স#
#সিজন_2#
.
পর্ব:০২
.
.
লেখক:হৃদয় বাপ্পী
.
.
একটানা দুইমাস সময় কাটিয়ে দিলাম আমি ট্রেনিং এ। ট্রেনিং রুমে থাকার এবং খাওয়ার ব্যবস্থা থাকায় আমাকে চিন্তা করতে হয় নি কিছুর। এই পুরো দুই মাস সময়ের মধ্যে আমি ট্রেনিং রুম থেকে বের হয় নি। আমার প্রধান ট্রেনিং ছিলো নিজের ক্ষমতা কন্ট্রোলে রাখা। আমার মাঝে অনেকগুলো ক্ষমতা আছে, তবে আমি সবগুলোই বেশীক্ষন ব্যবহার করতে পারি না। যেটা আমাকে অনেকটা খারাপ পরিস্থিতিতে ফেলে দিবে লড়াই এর সময়। আমি কোনো স্পেল ব্যবহারও করতে পারি না, কারন আমি কোনো স্পেল সম্পর্কে জানি না। তবে অনু অনেক স্পেলের সম্পর্কে জানে। আমার ডার্ক ক্ষমতা আমি এখনো কন্ট্রোলে রাখতে পারি নাই। এটা অনেকটা কষ্টকর কন্ট্রোলের জন্য। তারপরও দুইমাসের মধ্যে অনেকটা নিয়ন্ত্রনে এনেছে আমি এটাকে। আমি দুই মাস পর বের হলাম ট্রেনিং রুম থেকে। এই দুইমাসে সব কিছু বদলে গেছে আমি জানি। আমার বের হওয়ার সাথে সাথে গুয়েন আমাকে বলতে লাগলো,
.
--প্রিন্স নিয়াক স্বাগতম আপনাকে আপনার ট্রেনিং শেষ করার জন্য।(গুয়েন)
.
--আমাকে প্রিন্স বলতে হবে না গুয়েন আগেও বলেছি।(আমি)
.
--সেটা দ্বারা অসম্মান করা হবে আপনাকে। আর আমি সেনাপতি জিদান এর মেয়ে, তাই আমি রাজ পরিবারের কাউকে অসম্মান করতে পারি না।(গুয়েন)
.
--আচ্ছা ঠিক আছে। সবার কি অবস্থা।(আমি)
.
--সবাই চিন্তিত ছিলো যে আপনি বের হচ্ছিলেন না ট্রেনিং রুম থেকে এজন্য।(গুয়েন)
.
--ওওও। আসলে আমার শক্তিশালী হতে হবে, যেহেতু আমার কাছে আমার Pen of Eye নেই তাই আমার আমার ক্ষমতার জোরে শক্তিশালী হতে হবে।(আমি)
.
--ওওও আচ্ছা ঠিক আছে। চলুন ডুইন এবং হিমারো আপনার জন্য অনেক আগে থেকেই অপেক্ষা করছে।(গুয়েন)
.
--ঠিক আছে আছে আমি যাচ্ছি।(আমি)
।।।
।।।
ডুইন এবং হিমারোর সাথে আমার অনেকটা ভালো বন্ধুত্ব হয়েছে। বলতে গেলে আমার অনেক কাছের বন্ধু ওরা দুজনই বাকি দের মধ্যে। বাকি লোকদের সাথে কথা হলেও তাদের সাথে আমার তেমন যায় না। আমাদের ডাইভার্স টিমে মেয়ে গুলো হলো, অনু, মিচেল, সুজেন, প্রেয়া এবং গুয়েন। গুয়েনকে দিয়ে আমাদের টিমে এগারো জন হয়ে গেলো। টিমে এগারো জন থাকলেও আমার সাথে সবসময় কথা হয় অনু, ডুইন, হিমারো এবং গুয়েনের সাথে। বাকিদের সাথে আমার তেমন কথা হয় না। টিমের প্রধান অনু, যে সবাইকে নিয়ন্ত্রন করে। এখানে থাকা কারোরই আমাদের লড়াই এ নিজেদের কোনো লাভ কিংবা লস হবে না। নিরাম্বা কিংবা ডার্ককিউম শুধু আমাদের এই দুই এস্টার এবং ডাই এস্টার ইউনিভার্সের থাকতে পারে। তারা এখানে নিজেদের ইউনিভার্স বাঁচাতে নয় বরং ইন্টারেস্টিং কিছু করতে পারবে তাদের লাইফে এজন্য এসেছে। সবাই নতুন নতুন এডভেঞ্চার এর জন্য এসেছে আমাদের সাথে। অনু সবাইকে নিয়ন্ত্রন করার ক্ষমতা খুব ভালো করেই রাখে, যদি কখনো আমাদের আসল ইউনিভার্সের পৃথিবী মুক্ত করতে পারি ব্লাক নাইটের থেকে, তাহলে অনুই সেখানে রানীর হয়ে যেতে পারবে। আমার মাঝে তো দুজনকে আদেশ করিয়ে কাজ করার মতোও ক্ষমতা নেই। কিন্তু এটা অনু ভালো করে নিয়ন্ত্রন করতে পারে।
।।।
।।।
আমি গুয়েন এর সাথে হেটে হেটে চলে আসলাম মিটিং রুমে, যেখানে হিমারো এবং ডুইন বসে আছে। বাকি কাউকে দেখতে পারছি না আমি।
.
--নিয়াক তাহলে দুইমাস পরে বের হলে তুমি। তোমার জন্য চিন্তিত ছিলাম।(হিমারো)
.
--বাকি সবাইকে দেখতে পাচ্ছি না যে?(আমি)
.
--দুপুরের সময়, সবাই নিজের নিজের ভালোবাসার সাথে লান্স করতে গিয়েছে।(ডুইন)
.
--কি?(আমি)
.
--হ্যা। অনু হৃদয়কে নিয়ে গেছে। প্রেয়া রেনোকে নিয়ে গেছে। সুজেন গেছে হায়ানকে নিয়ে। বাকি আছি আমি, তুমি, ডুইন, গুয়েন এবং মিচেল।(হিমারো)
.
--মিচেল আর হিমারোও চলে যেতো যদি দুজন দুজনকে মনের কথা বলতে সাহস পেতো।(ডুইন)
.
--কি? এতো কিছু হয়ে গেছে ভিতরে ভিতরে।(আমি)
.
--হ্যা। কতকিছু হয়ে গেলো এদের মধ্যে। বাদ দাও। চলো কফি খেয়ে আসি কোথাও থেকে।(আমি)
.
--সেটার দরকার হবে না। আমি সবার জন্য কফি বানিয়ে নিয়ে এসেছি।(মিচেল সবার জন্য কফি নিয়ে আসলো)
.
--ওয়াও ধন্যবাদ তোমাকে মিচেল।(হিমারো)
.
--......(মিচেল কিছু না বলে লজ্জা পেয়ে হাসলো। আমি এরকম দেখি নি লজ্জা পেতে তাকে)
.
--তো ডুইন সবার হলো তোমার খবর কি?(আমি)
.
--আরে আমার তো গার্লফ্রেন্ড আছে আমার ইউনিভার্সে।(ডুইন)
.
--তার সাথে যোগাযোগ হয়েছে? এতো বছর তুমি বাইরে ছিলে? টাইম নিয়ে ঝামেলা হওয়ার ফলে আমরা প্রায় ছয় বছর ভবিষ্যতে চলে আসছি।(আমি)
.
--এটা নিয়ে তোমার ভাবতে হবে না। মিচেল এবং হায়ান দুজনে মিলে টাইম মেশিন নিয়ে কাজ করছে। শীঘ্রই মনে হচ্ছে সেটা শেষ হয়ে যাবে। আর একবার আমাদের কাজ এখান থেকে শেষ হলে আমরা চলে যেতে পারবো যে সময়ে আমরা এখানে এসেছিলাম সে সময়ে।(ডুইন)
.
--ওওও।(আমি)
.
--হ্যা। শুধু আমি না। আমরা সবাই সেটা করবো। কারন অনেকটা সময় আমাদের নষ্ট হয়েছে টাইম ট্রাভেল এর জন্য।(হিমারো)
.
--আমরা অনেক চেষ্টার পরে ডাইমেনশন টেলিপোর্টেশন ডিভাইসকে আরো কিছুটা আপগ্রেড করেছি, যার কারনে এখন আমরা বেশী দূর গেলে তেমন সময়ের পরিবর্তন হবে না।(মিচেল)
.
--এটা তো অনেক ভালো কথা।(আমি)
।।।।।
।।।।।
এতোদিন টেলিপোর্টেশন ডিভাইসটা টাইম মেশিনের কাজ করেছে। আমরা যত দূরে টেলিপোর্ট হয়েছি ততই সময় সামনে চলে গিয়েছি। তবে সেটাকে অনেকটা কম করার চেষ্টায় ছিলে মিচেল এবং হায়ান। দুজনেই টেকনোলজিতে অনেক এগিয়ে আছে আমাদের বাকিদের তুলনায়।
.
--আচ্ছা নিয়াক তোমার ট্রেনিং এর খবর কি?(ডুইন)
.
--আমার আর কিছু করার মতো নেই ট্রেনিং গ্রাউন্ডে। এখন যা করার সব লড়াইতে করতে হবে।(আমি)
.
--তাহলে ট্রেনিং কম্প্লিট করে ফেলেছো?(হিমারো)
.
--না ট্রেনিং তো শেষ হয় নি, তবে ট্রেনিং করার মতো আর কিছু নেই। সব কিছুই শেখা হয়েছে এখন শুধু এসব ঠিকমতো ব্যবহার করতে হবে।(আমি)
.
--তোমার ক্ষমতা গুলো হৃদয় এর কাছে থাকলে ও তো মনে হয় এই পুরো ইউনিভার্সের সবচেয়ে শক্তিশালী লোক হয়ে যেতো।(মিচেল)
.
--আবার ঔ হৃদয় এর কথা।(আমি)
.
--না আসলেই ও সাধারন ওর পানির ক্ষমতাকেই এতো সুন্দর ভাবে নিয়ন্ত্রন করতে পারে যে আমরা কেউ ওর পানির ক্ষমতার সাথে ওকে হারাতে পারবো না।(হিমারো)
.
--নিয়াক আমি জানি তুমি আরো শক্তিশালী হবে, কারন আমাদের সবার মধ্যে তুমিই একজন যার কাছে অনেক ধরনের ক্ষমতা আছে। তোমাকে শুধু এগুলোর ব্যবহার সম্পর্কে জানতে হবে ঠিকমতো।(ডুইন)
.
--হ্যা এটা ঠিক। চলো সবাই তো বাইরে কাপল হয়ে ঘুরতে গিয়েছে, আমরা নাহয় গ্রুপ নিয়ে ঘুরে আসি।(আমি)
.
--হ্যা এটা ভালো বুদ্ধি।(মিচেল)
।।।
।।।
আমি, মিচেল, ডুইন, হিমারো এবং গুয়েন একত্রে বের হলাম হোল্ডার গ্রুপের মধ্য থেকে। একটা সময় এই গোল্ডার গ্রুপ অনেক বড় একটা ক্রিমিনাল অর্গানাইজেশন ছিলো অবশ্য যার সবটায় মিথ্যা ছিলো। আসলে এটা অনেক বড় একটা টেকনোলজিক্যাল কম্পানি। পৃথিবীর সেরা দশ বড় এবং ধনী কম্পানির মধ্যে এটা একটা। এটার প্রধান অফিস রয়েছে ফ্রান্সে। যেখানে অনুর নিচে অনেকে কাজ করে। আমরা এখানে থেকে যত আনন্দ মজা করি, যত টেকনোলজি বানাচ্ছি, যত অস্ত্র বানাচ্ছি সব হোল্ডার গ্রুপের অর্থ থেকে আসছে। আর এটা অনেকটা একটা সাফ অফিস। এখানে অনু আমাদের থাকার জন্যই ব্যবস্থা করেছে। নিরাম্বা এবং ডার্ককিউমের সাথে লড়ার জন্য অনু অনেক পূর্বে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছে। যেটা আমি তার এই নেটওয়ার্ক তৈরী দেখেই বুঝতে পেরেছে। আমি আগে এদিকে বেশী নজর দেই নি। তবে নিরাম্বাকে হারানোর পর অনু নিচেই বলেছে সে এতোকিছু কিভাবে করেছে। যাইহোক তার নেটওয়ার্কে তাকিয়ে এখন লাভ নেই। আমি বেরিয়ে পরলাম বাকি চারজনের সাথে। পুরো দুইমাস পর বের হলাম ট্রেনিং রুম থেকে। এর আগেও একটানা তিনমাস সময় আমি ট্রেনিং করেই কাটিয়েছি। তাই জিনিসটা স্বাভাবিক এবার আমার কাছে। আর শুধু আমি না, বরং এই সবটা সময় বাকিরাও ট্রেনিং করেছে, তবে মনে হচ্ছে না আমরা চারজন ডুইন, আমি, হিমারো এবং গুয়েন বাদে অন্যরা কঠোর ট্রেনিং করেছে। অনু এবং হৃদয় তো প্রতিদিনই কফি পান করতে বের হয় তাদের পছন্দের জায়গায়। আর বাকি দুই কাপলদেরও একই অবস্থা হবে
অবশ্য অনুকে আগে নিজের বোনের মতো না দেখলেও আমার নিয়াকের পুরো স্মৃতি আসার পর থেকে ওকে আপন বোনের মতোই দেখা শুরু করেছি। আর এজন্য ওর সাথে হৃদয়ের চলাঘেরাটা আমার মোটেও ভালো লাগে না। বেটার তিনটা পরীর মতো বউ দেখতে পেলাম আমি তার পৃথিবীতে। কিন্তু তার পরও তার আমার বোনের উপরে প্রেমে পরতে হলো। শালা যে এক নম্বর লুচু সেটা আমার বোঝা শেষ। তবে আমি এই বিষয় নিয়ে অনুকেও কিছু বলতে পারবো না। কারন ও প্রথমেই ওর প্রথম ভালোবাসাকে হারিয়ে অনেক কষ্টে আছে। আমি একটা জিনিস বুঝতে পারছি না। যদি ওর ভালোবাসার ঔ ছেলেটা নিয়াকের সম্পর্ন ক্ষমতা পেতো তাহলে তো অনুর ভাই হয়ে যেতো ও। তখন ওকে ভালোবাসতো কিভাবে? বিষয় টা আমাকে এখন ভাবাচ্ছে।
.
--কি ভাচ্ছো এতো গভীর মনোযোগ দিয়ে?(হিমারো)
.
--তেমন কিছু না।(আমি)
.
--কিছু তো ভাবছোই।(ডুইন)
.
--আমি ভাবছিলাম হৃদয় তো মেয়েদের কাছে অনেক পরিচিত। মানে সবাই তাকে পছন্দ করে। আমরা এমন কিছু করতাম যাতে সব মেয়েরাই তাকে অপছন্দ করা শুরু করবে।(আমি)
.
--এটা হলে একদম ভালো হবে।(ডুইন)
.
--খারাপ হয় না কিন্তু প্লান কি?(হিমারো)
.
--তোমাদের প্লান কখনো কাজ করবে না। যদিও হৃদয়কে আমার ভালো লাগার মতো ভালো লাগে না। তবে তার কথা বার্তা শুনে যে কোনো মেয়ের মন গলে যাবে।(মিচেল)
.
--হ্যা সেটা দেখা যাবে। আমি এমন ফাদ দিবো যেটার ফলে আমার বোন নিজে থেকেই হৃদয়কে ছেড়ে দিবে।(আমি শয়তানী হেসে বললাম)
.
--তোমার হাসিটা হঠাৎ ভয়ঙ্কর হয়ে গেলো নিয়াক।(হিমারো)
.
--আরো ভয়ঙ্কর হবে জিনিসটা।(আমি)
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
অপেক্ষা করুন পরবর্তী পর্বের জন্য। কেমন হলো জানাবেন। ধন্যবাদ। ছোট হওয়ার জন্য দুঃখিত, ভালো লাগছে না আজকে লেখতে,