#ডাইভার্স#
#সিজন_2#
.
পর্ব:০৯
.
.
লেখক:হৃদয় বাপ্পী
.
.
আপাতোতো ডার্ককিউমের বিশাল শরীর হারিয়ে গিয়েছে সেটার জন্য আমরা অনেক খুশি হলাম। তবে সমস্যা বাধলো হিমারো কে নিয়ে। হিমারোর শরীরকে দখল করে নিয়েছে ডার্ককিউম। যেটার ফলে আমরা অনেকটা ঝামেলায় পরে গেলাম। প্রথমে সিওর ছিলান না বলে আমরা কোনো আঘাত করি নি হিমারোকে। কিন্তু হিমারোই হঠাৎ করে দূর থেকে আমাদের সবাইকে আঘাত করতে লাগলো। হিমারোর ক্ষমতা ছিলো সে যে কাউকে স্পর্শ করে তার একটা ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবে। কিন্তু বর্তমানে হিমারো কাউকে স্পর্শ করছে না, বরং আমাদের ক্ষমতা গুলোই আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে।
.
--আমরা কি করবো এটা আমাদের হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে, শীঘ্রই কিছু না করলে আমাদের মধ্যে বেশীর ভাগ মারা যাবে।(হৃদয়)
.
--আমি কি করে ওকে আঘাত করবো। আমার নিজের ইউনিভার্সে আমার বন্ধু নেই। কিন্তু তোমাদের সাথে এই ইউনিভার্সে আসার পর আমি তোমাদের সবাইকে পেয়েছি, আমি কি করে হিমারোকে আঘাত করতে পারি।(ডুইন)
.
--দেখো আমাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আপাতোতো যাকে তোমরা দেখছো সে মোটেও হিমারো নয়। বরং তার শরীরকে ডার্ককিউম দখল করে নিয়েছে। এখন কিছু না করলে তার পুরো Soul কনজিউম করে নিবে ডার্ককিউম।(হৃদয়)
.
--হৃদয় ঠিক বলেছে, আমরা আপাতোতো হিমারোকে বাধার চেষ্টা করি। তারপর দেখি কি করা যায়।(অনু)
.
--আমি কখনো পারবো না। বরং আমি তোমাদেরকে আঘাত করতেও দিবো না। নিয়াক তুমি কিছু বলো না কেনো?(ডুইন)
.
--ভাইয়া তোর কি হয়েছে নরাচরা করছিস না কেনো?(অনু)
.
--নিয়াক কি হয়েছে তোমার?(হৃদয়)
।।।।
।।।।
আমার আঙ্গুলে আংটিটা আসার পর থেকেই আমার শরীর আস্তে আস্তে জমাট বাধতে শুরু করে। দেখতে দেখতে আমার পুরো শরীর প্যারালাইস হয়ে যায়। আমি শুধু দাড়িয়ে আছি মহাকাশে, যেখানে সব দেখতে পাচ্ছি এবং সব শুনতে পারছি। তবে আমার কিছু করার মতো ক্ষমতা নেই আপাতোতো। আমার সামনে হিমারোকে কনজিউম করে নিয়েছে, আমি কিছুই করতে পারি নাই। এখন দাড়িয়ে দেখছি হিমারো কিভাবে আমাদের ক্ষমতা দিয়ে আমাদেরকেই আক্রমন করছে। হিমারো একটু পর পর চিল্লিয়ে উঠছে এবং আমাদের উপরে আক্রমন করছে। আমি বুঝতে পারছি ও নিজেও ওর শরীরকে হারাতে চাচ্ছে না। আপ্রান চেষ্টা করছে নিজের শরীরকে ফিরে পেতে। কিন্তু করতে পারছে না ও। ওকে কষ্টে দেখার পর নিজের কাছেও খারাপ লাগছে অনেক। বলতে গেলে আমাদের এগারো জনের মধ্যে শুধু ডুইন এবং হিমারোর সাথে আমার বেশ ভালো বন্ধুত্ব। তাছাড়া বাকিদের সাথে তেমন আমার জমে না। বিশেষ করে আমি হৃদয়কে দেখতে পারি না। সব কিছুতে ওর উত্তর সামনা সামনি হয়। সিদ্ধান্ত নিতে ওর সময় লাগে না। হয়তো এসবের মতো পরিস্থিতিতে ও অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে তাই সব মুহূর্তেই সে কোনো কিছু না ভেবেই একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
।।
।।
আমি দাড়িয়েই আছি নরতে পারছি না। আর এদিকে হিমারোর ফর্মও চেন্জ হতে শুরু করলো। আমি নরাচরা না করতে পারায় রেনো আমাকে আর্মারের মাধ্যমে পিছনের দিকে নিয়ে আসে। আমি মুখ দিয়েও কথা বলতে পারছি না। মনে হচ্ছে আংটি আমার পুরো শরীরের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। শুধু আমার মাথা বাদে শরীরের সব অংশ বন্ধ হয়ে গেছে। যার কারনে আমি এখনো অজ্ঞান হয় নি। এবং আমি চিন্তাও করতে পারছি। হিমারোর ফর্ম তারাতারি চেন্জ হচ্ছিলো। তার মাথায় একটা কালো মুকুটের মতো জিনিস চলে আসলো, যেটা ক্রাউনের মতো লাগছে দেখতে। এবং তার শরীরের চারপাশ দিয়ে কালো রঙের একটা জামা তৈরী হলো। তার শরীরের চারপাশ দিয়ে কালো ডার্ক এনার্জি ঘুরে বেরাচ্ছে। হঠাৎ সেগুলো থেকে বিশাল বড় বড় কয়েক হাজার তলোয়ার তৈরী হলো। যেটা আমাদের দিকেই নিশানা করা হয়েছে।
.
--দেখো আমি তোমাদের কথা ভাবছি। হিমারো পুরো ট্রান্সফর্ম হয়ে গিয়েছে এখানে। এখন যদি কিছু না করি তাহলে আমরা সবাই মারা যাবো এখানে।(হৃদয়)
।।।
।।।
হৃদয় চিল্লিয়ে বলে এগিয়ে গেলো। ওর রিয়েলিটি প্রিজমের সময় এখনো আছে বেশ কিছুক্ষনের মতো। হয়তো দশ মিনিট সময় হবে আরো। হৃদয় ওর হাতে লাল তলোয়ার টা নিলো। সূর্যের থেকে আগুন উড়ে এসে হৃদয় এর তলোয়ারে মিশে গেলো, যেটা ওর তলোয়ারের আগুনকে আরো বিশাল করে দিলো।
.
--হৃদয় কি করছো তুমি। ওকে মেরে ফেলবে তো।(ডুইন)
.
--এটা ছাড়া কোনো উপায় নেই, তুমি দেখতে পারছো ওর চিল্লানি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মানে ওর মাইন্ড ওর শরীরের কাছে হেরে গিয়েছে। তাই এটাই উপায় আমাদের এখানে বেঁচে যাওয়ার।(হৃদয়)
।।।।
।।।।
হৃদয় ওর ডার্ক পাওয়ার ব্যবহার করলো। যেটার মাধ্যমে আমাদের সকলের উপরে একটা ডার্ক এনার্জির ঢাল তৈরী হলো, যেটা পুরো গাড় কালো রঙের হওয়ায় কিছুই দেখতে পারছিলাম না আর আমি। আমি হৃদয়কে এরকম কখনো দেখি নি। ও যে এতোটা শক্তিশালী হবে আমার ধারনা ছিলো না। ডার্ককিউম হিমারোর শরীরকে পাওয়ার পর পুরোটা কম্প্লিট হতে পারে নি। কারন তার ফর্ম এখনো পূর্ন হয় নি। আমি জানি না তবে আংটিটা পরার পর থেকে আমার মাথার মাঝে কিছু আশ্চর্য বিষয় চলে আসলো ডার্ককিউমকে নিয়ে। ডার্ককিউম মূলত ভয়ের রাজা। তার যে ব্লাক এনার্জি রয়েছে সেটা ভয়ের জন্য তৈরী হয়। যত প্রানী তাকে ভয় পায় ততো তার ডার্ক এনার্জি বৃদ্ধি পায়। আর এই ডার্ক এনার্জি নিজেই ডার্ককিউমের ভয় বারানোর কাজ করে। তার চারপাশে কেউ থাকলে এই ডার্ক এনার্জি সংস্পর্শে কেউ আসলে সে ডার্ককিউমকে ভয় পাওয়া শুরু করবে। আর যে ডার্ককিউমকে ভয় পাবে, সে যতই শক্তিশালী হোক না কেনো সে ডার্ককিউমকে হারাতে পারবে না। কিন্তু হৃদয়ের চোখ একটু আগে খেয়াল করলাম। ওর চোখে একটুও ভয় ছিলো না। বরং ও চিন্তা করছিলো আমাদের বাকি সবার। হয়তো ওর চিন্তা ধারনা আলাদা। দশজনকে বাঁচাতে একজনের ত্যাগ কোনো ব্যাপার না ওর কাছে। কিন্তু আমার কাছে এগারো জনের জীবনই গুরুত্বপূর্ন। আমি চাই না কেউ এখানে নিজেদের জীবন হারাক। যদি হৃদয়ের জীবন হারায় তাহলে অনুর সামনে আমি যেতে পারবো না। অনু এমনিতেই হাসানকে হারানোর পর থেকে অনেকটা নিশ্চুপ ছিলো। কিন্তু হৃদয়ের আসার পর সে পুরো চেন্জ হয়ে গেছে। আবার হিমারোর কিছু হলে আমি মিচেল এর সামনে দাড়াতে পারবো না। ওদের ভালোবাসায় সাহায্য করা আমিই ছিলাম। আমি থাকতে যদি হিমারোর কিছু হয় তাহলে হয়তো মিচেল কখনো মাফ করবে না আমাকে। সব দিক দিয়েই আমি কাউকে হারাতে চাই না এখন।
।।।।।
।।।।।
সাথে সাথে আমার হাতের আঙ্গুলের আংটি পুরো ভেঙে গেলো। সেটা লাল রঙের ছিলো কিন্তু ভাঙার পর সেটা গোল্ডেন কালারের হয়ে তৈরী হলো। এবং আবার আমার হাতের আঙ্গুলে এসে বসে পরলো। আর সাথে সাথে আমার শরীর ট্রান্সফর্ম হয়ে গেলো নিয়াকের ফর্মে। পুরো শরীর দিয়ে গোল্ডেন কালারের উজ্জল আরো বের হতে শুরু করলো। আমার পিছনে একটা গোল্ডেন কালারের চাদর রয়েছে, যেটার পিছনে সুন্দর করে একটা গোল্ডেন কালারের ড্রাগনের ছবি আকানো। আমি নিয়াকের ফর্মে আসার সাথে সাথেই হৃদয়েই ডার্ক এনার্জি ঢাল ভেঙে গেলো। যেটার পর আমি লক্ষ করলাম হৃদয় এবং হিমারো দুজনেই আক্রমন করতে যাবে দুজনকে। আমি সাথে সাথে সুপার স্পিড ব্যবহার করলাম। আমার শরীরে আপাতোতো রেনোর আর্মার ও নেই কিন্তু মহাকাশে থাকার পরও মনে হচ্ছে আমি মাটিতে দাড়িয়ে আছি। কারন যেখানে পা দিচ্ছি সেটায় আমার কাছে শক্ত লাগছে। আমি এক দৌড়ে হিমারো এবং হৃদয়ের মাঝে এসে দাড়ালাম। দুজনের আক্রমন স্পর্শ করতে যাবে তখনি আমি সেটার মাঝে এসেছি। আমি জানতাম না আমি এটা আটকাতে পারবো কিনা। তারপরও আমি চেস্টা করেছি যাতে কেউ আহত না হয় গুরুতর।
।।
।।
আমি দুজনের আঘাতের মাঝে এসে দাড়ালাম। আমি সিওর ছিলাম না যে আমি দুজনের আঘাত নিতে পারবো। কিন্তু হিমারোর তলোয়ার গুলো এবং হৃদয়ের তলোয়ারের আগুন আমার শরীরে স্পর্শ করার সাথে সাথে অদৃশ্য হয়ে গেলো। আমি এতেই বুঝতে পারলাম আমার কাছে ক্ষমতা নিউটল করার একটা ক্ষমতা আছে এই ফর্মে। তাই দাড়িয়ে থাকলাম না। বরং হিমারোর দিকে লক্ষ করলাম। যদি আমি ম্যাজিক সহ বাকি ক্ষমতা নিউটল করতে পারি তাহলে অবশ্যউ আমি হিমারোর মাঝে যে স্পেল ব্যবহার করেছে ডার্ককিউম সেটাকেও রিভার্স করতে পারবো। আমি সিওর না। তবে চেষ্টা করে দেখা যাক। আমি হিমারোর মাথায় হাত দিলাম সাথে সাথে তার ফর্ম চেন্জ হয়ে গেলো। বরং সে প্রথম ফর্ম থেকে দ্বিতীয় ফর্মে ট্রান্সফর্ম হয়ে গেলো। এবার তার পিছনে ডান পাশে একটা কালো ডানা তৈরী হলো। এবং ডান চোখ পুরো কালো হয়ে গেলো। যেটা অনেকটা ভয়ঙ্কর।
.
--নিয়াক আমার মনে হচ্ছে তোমার কাছে এনার্জি দানের ক্ষমতা রয়েছে, যেটার ফলে তোমার পেয়ে হিমারোর মাঝে ডার্ককিউম তার পরের ফর্মে চলে এসেছে।(হৃদয়)
.
--এটা খারাপ বিষয়। ডার্ককিউম এতোদিন পর্যন্ত কোনো প্রানীর শরীর এবজোর্ব করে নি। কিন্তু আজকে প্রথম হচ্ছে এটা। আর আমরা সিওর জানি না কতটা শক্তিশালী হবে ডার্ককিউম ফর্ম পাওয়ার পরে। আমি জানি না তেমন কিছু যে আমার আরেক অংশ কি ভাবছিলো। কিন্তু আপাতোতো হিমারোকে আটকানোই আমাদের সবচেয়ে বড় কাজ হবে।(আমি)
.
--তুমি হঠাৎ চেন্জ হলে। আমি তো ভেবেছিলাম তুমিও ডুইনের মতো আক্রমন করতে মানা করবে।(হৃদয়)
.
--সেটা আমার আরেক অংশ ভেবেছে, আমি নয়। আর আমার সাথে ফ্রেন্ডলি হওয়ার কিছু দেখছি না। যতই হোক তুমি আমার ছোট বোন হায়াকা কে পটানোর চেষ্টা করছো।(আমি)
.
--আপাতোতো আমাদের এটা দেখার বিষয় না। আমাদেরকে হিমারোকে আটকাতে হবে। ওর এনার্জি আস্তে আস্তে বেড়েই চলেছে। এরকম হলে আরেকটা ফর্ম চেন্জ করলো হয়তো আমাদের থেকেও শক্তিশালী হয়ে যাবে ও।(হৃদয়)
.
--আমার শরীর আমি বেশীক্ষনের জন্য কখনো পাই নি। আমার আরেক অংশ তো শরীরের যত্ন নিতে জানে না। আমার ভাবতেও খারাপ লাগছে যে সে আমাকে এতো দুর্বল করেছে। যাইহোক আমার সাথে লড়ার মতো একজনকে তো পেয়েছি। মনে হচ্ছে আমার শরীর পাওয়ার পুরো মজা এখন আমি ভোগ করতে পারবো।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
অপেক্ষা করুন পরবর্তী পার্টের জন্য।