#ডাইভার্স#
#সিজন_2#
.
পর্ব:১০
.
.
লেখক:হৃদয় বাপ্পী
.
.
হিমারো তার দ্বিতীয় ফর্মে ট্রান্সফর্ম হয়েছে। এবং আমি দাড়িয়ে আছি তার সামনে। হৃদয় কোনো কথা বলছে না। আমি একটু আগেই হিমারোকে বাচানোর কথা ভাবছিলাম। কিন্তু এখন আমার ফর্মের সাথে পারশোলিটিও চেন্জ হয়েছে। আমি এখন সম্পূর্ন অন্য রকম চিন্তা ভাবনা করছি। এখন আমার মন চাচ্ছে হিমারোর সাথে লড়তে। আমি আমার দুই ফর্ম বদলানোর সূত্রও পেয়েছি, সাধারন থেকে নিয়াকের গোল্ডেন ফর্মে আসতে এখন আর আমার রাগের প্রয়োজন হবে না। বরং আমার হাতের যে আংটিটা রয়েছে সেটা আমার ট্রান্সফর্ম চেন্জ করে। হাতের আংটিটা যখন লাল হবে তখন আমি সাধারন ফর্মে থাকবো। এবং হলুদ হলে আমি নিয়াকের ফর্মে থাকবো। আংটির রং আমার এনার্জির মাধ্যমে আমি চেন্জ করতে পারবো। তাই এখন আর আমাকে নিয়াকের ফর্মের জন্য কষ্ট করতে হবে না। আমি হিমারোর সামনে দাড়িয়ে রইলাম। হিমারোর পিঠ থেকে একটা ডানা বের হয়েছে ডান সাইড দিয়ে। এবং ডান চোখটা কালো হয়ে গিয়েছে। আমি সাথে সাথে আমার সুপার স্পিড ব্যবহার করলাম। বেশী দ্রুত ব্যবহার করি নি। সাধারন দৌড়ের মাঝে আমি একদম আস্তে আস্তে হাটছি এরকম মনে হচ্ছে। আমি হিমারোর কাছে গেলাম এবং আমার ডান হাতকে আগুনের করে ফেললাম। এবং সাথে সাথে একটা ঘুষি দিলাম অনেক আস্তে। যেটা হিমারো ওর বাম হাত দিয়ে ধরে ফেললো। আমি সেসরকম শক্তি দিয়ে মারি নি, তারপরও হিমারোর পুরো শরীর নরে উঠলো একবার। আমি নরলাম না। ডার্ককিউমের দ্বিতীয় ফর্ম কিরকম শক্তিশালী সেটা দেখতে হবে। হিমারো আমার ডান হাত ধরায় ওর পিছনে আবার এক হাজারের মতো বিশাল তলোয়ার হয়ে গেলো কালো। এবার সেগুলো আগের তুলনায় অনেকটা শক্তিশালী। কিন্তু সেগুলো আবারো আমার শরীরের সাথে স্পর্শ করার সাথে সাথে অদৃশ্য হয়ে যায়। আমি বুঝলাম কোনো ম্যাজিক কিংবা এনার্জির আঘাত আমার কাজে দিবে না। এবার হিমারো আমার মুখে ওর ডান হাত দিয়ে একটা ঘুষি দিলো। যেটা সেরকম শক্তিশালী না। আমি আবারো ওর কপালে হাত দিলাম আমার ডান হাত দিয়ে, যেটার ফলে হিমারোর পিঠ দিয়ে আরেকটা ডানা বের হতে শুরু করলো। এবং এখন তার দুটো চোখই কালো হয়ে গেছে। তার শরীরের চারিদিক দিয়ে এখন আরো ডার্ক এনার্জি ঘুরতে লাগলো, তবে সে এখনো শক্তিশালী না। কারব তার কোনো আঘাতই আমাকে কিছু করতে পারছে না। এরকম দেখতে দেখতে আমি ডার্ককিউমের সপ্তম ফর্মে নিয়ে আসলাম। এখন আর হিমারোর শরীর দেখা যাচ্ছে না। বরং মনে হচ্ছে চামড়া ছাড়া কোনো ডেভিল আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ডার্ককিউমের অতীত দেখলে সে প্রথমে একজন ডেভিল ছিলো বলে ধারনা করা হয়। কিন্তু তার মারা যাওয়ার পর তার শরীর গুলো ডার্ক এনার্জিতে কনভার্ট হয়ে যায়। আর সেই ডার্ক এনার্জি নিয়েই তৈরী হয় ডার্ককিউম এর। বিশাল ডার্ক এনার্জির মধ্যে ডার্ককিউমের Soul ছিলো। এখন সে হিমারোর শরীরে আবার জন্ম নেওয়ার চেষ্টা করছে। আমি জানি না একটা ডেভিল কতটা শক্তিশালী। কিন্তু আমি কোনো ডেভিলের সাথে লড়তে চাই না। এন্জেল এবং ডেভিল এর তুলনা মানুষের সাথে কখনো হয় না। একটা মানুষ যতই শক্তিশালী হোক এন্জেল এবং ডেভিল ক্ষমতার জোরে কয়েক ধাপ উপরেই থাকে সব সময়। এজন্য এটাকে বেশী সময় দিলে আর হবে না। এজন্য আমাকে এখনি শেষ করতে হবে। আমি আমার ফুল সুপার স্পিড ব্যবহার করলাম। এবং মুহুর্তে আমি হিমারোরে শরীরের কাছে চলে গেলাম। এবার আমার হাত আগুনের করে নিয়ে, হাইপার স্পিডে হিমারোর পেটের মধ্যে একটা ঘুষি দিলাম। যেটার ফলে ডার্ককিউমের সকল এনার্জি হিমারোর শরীর থেকে বেরিয়ে গেলো। হিমারোর শরীরের পিছনের দিকে আবারো ডার্ককিউমের সকল এনার্জি জরো হয়ে বিশাল গোল একটা আকার নিলো। আমার মনে হচ্ছে আমার হাইপার স্পিড পান্সের ফলে হিমারোর ভিতর থেকে ডার্ককিউম এর Soul বের হয়ে গেছে। কিন্তু হিমারোর অবস্থা ভালো হওয়ার কথা না এখন। কারন প্রথম ফর্মেই হিমারোর Soul হারিয়ে যাওয়ার কথা ছিলো। আমি হিমারোকে ধরলাম দুহাত দিয়ে। তার শ্বাস বন্ধ হয়ে গেছে। কোনো কথা বলতে পারছে না সে। হার্ট চলছে না। সব মিলিয়ে বুঝতে পারলাম হিমারো আমাদের মাঝে আর বেচে নেই। হৃদয় এবার তার তলোয়ার টা নিয়ে এগিয়ে যেতে চাইলো ডার্ককিউমের দিকে। কিন্ত আমি ওর তলোয়ারের দিকে লক্ষ করে হাত পাতলাম। তলোয়ারটা ওর হাত থেকে আমার হাতে চলে আসলো। এবার সাথে সাথে আমি তলোয়ারটার শেপ চেন্জ করে ফেললাম। তলোয়ারটাকে তলোয়ার থেকে ধনুক বানিয়ে দিলাম। এবং সেটা থেকে একটা বিশাল ম্যাজিকাল তীর ছুরলাম ডার্ককিউমের দিকে। যেটা কয়েক হাজার খন্ড হলো এবং প্রতিটা এক সাথে যুক্ত হয়ে একটা জালের মতো তৈরী করলো। পুরো জালটা ডার্ককিউমের পুরো এনার্জিকে আটকে দিলো। এবং সেটাকে সূর্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমি হিমারোকে রেনোর একটা রোবটের মাধ্যমে জেটের মধ্যে পাঠানোর ব্যবস্থা করলাম। এবং ডার্ককিউম কে আরেকটা তীরের আঘাতে সোজা সূর্যের ভিতরে ফেলে দিলাম। সূর্যের আলোতে ডার্ককিউমের পুরো এনার্জি পুরে সূর্যের সাথে মিশে গেলো। আর সেই সাথে আমাদের লড়াই ও শেষ হলো।
.
--আমি জানতাম না তলোয়ারটা চেন্জ হতে পারে।(হৃদয়)
.
--তলোয়ারটা তোমাকে তার মালিক মানলেও তার আসল মালিক আমি, আমার জন্য তৈরী হয়েছিলো এটা। আর এটার পুরো ক্ষমতা আমিই ব্যবহার করতে পারবো একমাত্র।(আমি)
.
--ওওওও। যেহেতু তোমার জিনিস, তাই তুমিই রেখে দাও।(হৃদয়)
.
--না সেটার দরকার হবে না। অস্ত্রের লড়াই আমার ছোট থেকেই ভালো লাগে না। এজন্য কোনো অস্ত্র চালাতে আমি শিখি নি এখনো। এটা তোমার সাথে এতো দিন ছিলো, তাই এটার মালিক এখন তুমিই।(আমি)
।।।
।।।
আমি ধনুকটা হৃদয় এর হাতে তুলে দিলাম। সাথে সাথে সেটা ধনুক থেকে আবার তলোয়ারে চলে গেলো। আমার সামনে হিমারো মৃত শরীর পরেছিলো কিন্তু তারপরও আমার একটুও কষ্ট লাগছিলো না। এই ফর্মে আমি অনেক স্বাভাবিক আছি। জানি নরমাল ফর্মে গেলে আমি কাদতে শুরু করবো। তাই আর ফর্ম চেন্জ করি নি। আমরা সবাই জেটের মধ্যে চলে গেলাম। সবাই কান্না করছে শুধু আমি আর হৃদয়ই কান্না করছি না। হৃদয় কেনো করছে জানি না। তবে আমার তেমন ইমোশন নেই। আমার শরীর ক্ষমতার আকারে ভাগ হয়ে যাওয়ার পর থেকে আমার ইমোশন গুলো হারিয়ে গেছে। তাই নিয়াকের ফর্মে আমি ইমোশন বোধ করতে পারি না। এই ফর্মে আমার হাসি, কান্না, রাগ কোনোটায় নেই। আমি নিউটল এই ফর্মে। ডুইন এবং মিচেল বেশী কান্না করছে।
।।
।।
দেখতে দেখতে আমাদের এক মাস সময় কেটে গেলো। ডার্ককিউমকে হারানোর পর থেকে আর আমাদের টেলিপোর্টেশন টাইম ট্রাভেল এর মতো কাজ করে না। বরং এখন সব কিছু স্বাভাবিক ভাবে কাজ করে। এদিকে হায়ান, মিচেল এবং রেনো টাইম মেশিনও তৈরী করে ফেলেছে। যেটা দিয়ে তারা তাদের সময়ে ফেরত যেতে পারবে। এমনিতেই আমাদের জন্য তাদের ছয়টা বছর নষ্ট হয়েছে এবং হিমারো মারা গিয়েছে। তাদেরকে অনু তাদের সময়ে চলে যেতে বলেছিলো, কিন্তু তারা রাজি হয় নি। তারা ব্লাক নাইটকে হারিয়েই যাবে। আর আমরা আজ সেটার কারনেই ব্লাক নাইটের গ্রহ ব্লাক জাইজ্যাক এ এসেছি। এখানে ব্লাক নাইটের রাজা রয়েছে। যাকে বর্তমানে ডাই এস্টার ইউনিভার্সের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তি ধারনা করা হয়। আমি আমার সাধারন ফর্মে আছি, এজন্য আমরা কেউ এখনো ধরা খাই নি। ব্লাক জাইজ্যাকের নিয়ম অনেক কড়া। অনেক শক্তিশালী কেউ প্রবেশ করলে তাকে সাথে সাথে বন্ধি করে প্রিজন নামক গ্রহে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এজন্য আমাদের এখানে স্বাভাবিক থাকতে হবে। আপাতোতো আমার আংটিটা আমাকে সাহায্য করে আমার নিজের ক্ষমতাকে কমিয়ে রাখতে। যদি সেটা লাল হয় তাহলে আমি একটা সাধারন মানুষ। আর সেটা হলুদ হলে আমি নিয়াকের ফর্মে সুপারহিউম্যান হয়ে যায়। আমাদের পুরো দশজনের টিম কালকেই টেলিপোর্ট হয়েছে জাইজ্যাকে। এখানে পৃথিবীর মতো কোনো দৃশ্য নেই। বেশীর ভাগ জায়গা শুধু বন। আর যেখানে সবাই বসবাস করে সেখানে শুধু উচু উচু দালান। সবচেয়ে উচু একটা পাহাড়ের উপরে বানানো ব্লাক নাইটের রাজার প্যালেস। যেখানে রাজা সবচেয়ে নিরাপত্তার মধ্যে বাস করে। আমরা এখানে আসার পূর্বে প্রথমে আমি টেলিপোর্ট হয়েছিলাম একটা টেলিপোর্টেশন সিগন্যাল আটকানোর মেশিন নিয়ে। যেটার ফলে আমার সিগন্যাল কেউ পাই নি এই গ্রহের। আর এরপর আমি যে জায়গায় টেলিপোর্ট হয়েছি সেখানেই আমি সিগন্যাল আটকানোর মেশিন রাখি আর সেখানেই জেট নিয়ে বাকি সবাই টেলিপোর্ট হয়ে চলে আসে। গ্রহটার সম্পর্কে জানার জন্য আমি এবং গুয়েন দুজনে শহরের মধ্যে চলে আসি। আপাতোতো আমার আংটি লাল থাকায় আমার ক্ষমতা আমি একটাও ব্যবহার করতে পারবো না। আমার ক্ষমতা আংটিটা সিল করে রেখেছে। যদি এটাকে আমি খুলে ফেলি তাহলে আমি আমার নরমাল ফর্মে সব ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবো। যাইহোক আমি গুয়েন এর সাথে হেটে হেটে বিভিন্ন তথ্য বের করতে লাগলাম এই গ্রহ এবং রাজার সম্পকে। তাই ফেসে যেতে বেশী সময় লাগলো না। কয়েকজন ব্লাক নাইট এসে আমাদের ধরে ফেললো অন্য গ্রহের গুপ্তচর মনে করে। আর সে জন্য আমাদের দুজনকে তাদের প্যালেসের নিচের জেলখানায় বন্ধী করে দিলো। রাজা নিজে আমাদের বিচার করবেন। এজন্য আমাদের তিনদিন বন্ধী করে রাখলো। আমাদের তিনদিন আটক করে জেলখানার মধ্যে রাখার পরে পরের দিন নিয়ে যাওয়া হলো প্যালেসের রাজ সিংহাসনে। সেখানে রাজার সামনে আমাদের হাটু গেঢ়ে বসিয়ে দেওয়া হলো। আমাদের দুজনকেই চেইন দিয়ে বন্ধী করে রাখা হয়েছে। এবং পিছন দিয়ে ব্লাক নাইটরা অস্ত্র ধরে বসে আছে। কারো হাতে ম্যাজিকাল অস্ত্র, কারো হাতে বন্ধুক। এজন্য চালাকি করা যাবে না।
.
--শুনেছি তোমরা দুজন আমাদের গ্রহ এবং প্যালেসকে নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করছিলো, কিন্তু বাইরে কোনো গ্রহ থেকে এসেছো কিনা সেই তথ্য আমাদের সেনার কাছে নেই। তো আমি প্রথমেই বলবো কিভাবে প্রবেশ করেছো তোমরা দুজন এই গ্রহে?(রাজা)
.
--...(আমরা কিছু বলছি না)
.
--আমি এই পুরো ইউনিভার্সের রাজা। আর আমার সামনে চুপ থাকা মানে ইউনিভার্সের রাজাকে অপমান করা। আমি শেষ বার বলবো কিভাবে এখানে প্রবেশ করেছো?(রাজা)
.
--....(চুপ রইলাম)
.
--ঠিক আছে। নাইটস মেয়েটাকে মেরে ফেলো।(রাজা)
.
--এরকম ভুল সিদ্ধান্ত নিবেন না মহারাজ।(আমি)
.
--একটা সাধারন মানুষ আমাকে ইউনিভার্সের রাজাকে শিখাবে কি করতে হবে? নাইটস দুজনের গলা কেটে ফেলো।(রাজা)
.
--আমি বলেছিলাম রাজা এরকম সিদ্ধান্ত নিবেন না। এমনিতেই আমি রাগে আছ তিনদিন শুধু দুইবেলা একটা রুটি খেতে হয়েছে, পানিও ছিলো সামান্য। আর এখন বলতেছেন মেরে ফেলতে। আমি না হয় বুঝলাম কিন্তু আমার ভিতরের টা কিভাবে বুঝবে?(আমি)
.
--রাজার সাথে এরকম কথা। সাহস হয় কি করে? আমি ইউনিভার্সের রাজা।(রাজা)
.
--হ্যা হ্যা ইউনিভার্সের রাজা। আমি বুঝতে পারছি না। এরকম একটা হাস্যকর ঝোকার আমার বাবাকে হারিয়ে পুরো ইউনিভার্স কিভাবে জয় করলো। যায়হোক দেখা যাবে রাজার জায়গাটা কাকে মানায়, একটা ঝোকার কে নাকি একটা জন্মগত প্রিন্সকে(আমি নিয়াকের ফর্মে এসে বললাম)
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
শেষ হবে মনে হয় কালকে।