#ডাইভার্স#
#সিজন_2#
.
পর্ব:০৮
.
.
লেখক:হৃদয় বাপ্পী
.
.
ডার্ককিউম এগিয়ে আসছে, আর তার সাথে লড়ার জন্য আমাদের প্রস্তুত হতে হচ্ছে। ডার্ককিউমকে কাছে থেকে প্রথমবার দেখলে যে কারো মনে ভয় তৈরী হবে। কারন তার আশে পাশের যে কালো ছায়া রয়েছে সেগুলো একরকমের এনার্জি, যেটা অন্য সবার মাঝে ভয়ের তৈরী করে। আর ডার্ককিউমের কালো এনার্জি আমাদের এই পুরো সোলার সিস্টেমে ছড়িয়ে পরেছে তার উপরে আক্রমন হওয়ার ফলে, যেটা জেটের মধ্যে থাকা আমাদের মাঝে ভয়ের তৈরী করছে। আমি লক্ষ করলাম সবাই ভয়ে কাপছে, আমার দুটো পা ও আমি ঠিক রাখতে পারছি না, কারন সেগুলো কাপছে অনেক ক্ষীন ভাবে। ডার্ককিউমকে ভয়ের রাজা বলা হয় কেনো সেটা আজকে বুঝতে পারলাম। ডার্ককিউমকে যদি আমরা নিজ হাতে হারাতে চাই তাহলে এই ভয় প্রথমে দূর করতে হবে আমাদের। সেটা করতে না পারলে কখনোই আমরা তাকে হারাতে পারবো না।
।।
।।
আমরা রেনোর বানানো আর্মার স্যুট পরে নিলাম। যেটা পরার পরে আমরা জেট থেকে বের হলাম বাইরে। আমাদের নরাচরা করতে তেমন সমস্যা হচ্ছে না। যদিও আমরা জিরো গ্রাভিটি তে আছি এখন তারপরও আর্মার এর জন্য ফিল হচ্ছে আমি মাটির উপরেই দাড়িয়ে আছি। এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার জন্য হাত এবং পায়ের তালু দিয়ে এনার্জি বুস্টার বের হয়, যেটা জেট বিমান যেভাবে পিছন দিয়ে এনার্জি বের করে উড়ে, ঠিক সেভাবেই এনার্জি বুস্টার কাজ করে। নিজেদের কাছে অনেকটা আয়রন ম্যান ফিলিংস আসছে। আমরা সকলেই বের হয়েছি বাইরে, মিচেল এবং হায়ান শুধু জেটে থেকে কন্ট্রোল করবে জেট, এবং জেট থেকে হামলা করবে। যদি আমাদের উদ্ধার করতে হয় তাহলেও তারা দুজনে সেটা করবে। আর বাকি সবাই আমরা এগিয়ে গিয়েছি.
.
--আমি এই পুরো জায়গাটাকে পুরো পৃথিবীর মতো করে দিতে পারবো আধা ঘন্টার মতো, যেখানে সবাই শ্বাস নিতে পারবে স্যুট ছাড়া। তাই প্রথমে আর্মার দিয়ে লড়বো আমরা এরপর সময় হলে আধা ঘন্টার মতো পৃথিবীর মতো জায়গা করে দিবো এখানেই।(হৃদয়)
.
--সেটা কিভাবে করবে?(অনু)
.
--আমার কাছে একটা ক্ষমতা আছে। যেটার নাম রিয়েলিটি প্রিজম। মূলত এটা আমার তলোয়ারের মাধ্যমে ব্যবহার করতে হয়। আর এই ক্ষমতা দিয়ে আমি রিয়েলিটি বানাতে পারে। সেটা পুরো একটা প্রিজমের আকার হয়। আমি এর আগে পুরো পৃথিবী জুড়ে ব্যবহার করেছি সেটা যেটা সারা জীবনের জন্য। তবে এতো বড়ো স্পেসের মধ্যে যেখানে কোনো গ্রাভিটি নেই সেখানে আধা ঘন্টার চেয়ে বেশী সময় আমি আমার রিয়েলিটি প্রিজম ব্যবহার করতে পারবো না।(হৃদয়)
.
--ওয়াও, এটা অনেক কাজের স্পেল।(ডুইন)
.
--হ্যা।(হিমারো)
।।।
।।।
বাকি সবাই আমরা নিজ নিজ জায়গা মতো দাড়িয়ে রইলাম। একটু পরেই ডার্ককিউম আমাদের সামনে চলে আসলো। তার কালো এনার্জি আমাদের যত কাছে আসছে ততই আমাদের ভয়ের পরিমান বারতে লাগলো। এই ভয় আমার কাছে অনেকটা স্পেলের মতো লাগছে, যেটা হয়তো ডার্ককিউম আমাদের উপরে কাস্ট করেছে। আমার কাছে এরকম কোনো ক্ষমতা নেই যেটা স্পেলকে নিউট্রোলাইজ করে। তাই ভয়ের সাথেই দাড়িয়ে আছি৷ রেনোর আর্মারের জন্য আমাদের ভয়ের সাইড ইফেক্ট কম দেখা যাচ্ছে। কারন আর্মারের মধ্যে আমাদের পা কাপছে না। আর আর্মার আমাদের পা কে শক্ত করে ধরে রেখেছে, যেটার কারনে পা কাপছে না। তাছাড়া আর্মারের কানেকশন আমাদের ব্রেইনের সাথে যুক্ত রয়েছে, যেটা আমাদের ব্রেইনকে স্থির রাখছে। তারপরও আমাদের ভয়ের বুক কাপছে। ডার্ককিউম যতো কাছে আসছে ততো তার এনার্জি চারিদিকে ছড়িয়ে যাচ্ছে। দেখতে দেখতে ডার্ককিউম আমাদের রেন্জের মধ্যে চলে আসলো। আর আমরাও আমাদের স্যুটের মধ্য থেকে একধরনের লাল লেজার ফায়ার করতে লাগলাম৷ রেনো বলেছে এটার তাপমাত্রা দশ হাজার সেলসিয়াস। যেটা বিষন ভয়ানক একটা জিনিস। যদিও সূর্যের আলোর মতো তাপ হবে না এটার মধ্য দিয়ে তারপরও আমরা সবাই সকলে একসাথে মারতে লাগলাম। নয়জনের লেজারে মোট নব্বই হাজার সেলসিয়াস এর তাপমাত্রার হবে, যেটা পৃথিবীতে মারাত্নক একটা তাপ। কিন্তু ডার্ককিউমের তাতে কিছু হচ্ছে না। যদিও কিছুটা ক্ষত তার হচ্ছে তারপরও এই তাপ তার জন্য কিছু না। এবার আর্মার থেকে লেজার এর সাথে সাথে ত্রিশ চল্লিশটার মতো ছোট ন্যানোটেকনোলজির মিশাইল বের হলো এবং সেগুলো ডার্ককিউমের উপরে আঘাত করলো, কিন্তু সেটাতেও মনে হলো না কিছু হয়েছে ওর। এবার হৃদয় একটু এগিয়ে গেলো। এবং ওর হাতে তলোয়ার নিলো। এবং সেটা দিয়ে কতগুলো স্লাইস দিলো। প্রতিটা স্লাইসের ফলে একটা করে আগুনের বিশাল বিশাল কম্পন তৈরী হলো যেগুলো ডার্ককিউমের দিকে যেতে লাগলো। আমি দাড়িয়ে রইলাম আর দেখতে লাগলাম। কম্পন গুলো ডার্ককিউমের শরীরে অনেকটা ক্ষত করেছে, কারন ডার্ককিউম এবার রেগে আমাদের উপরে আক্রমন করতে শুরু করলো। তার বিশাল শরীর থেকে কালো কালো অনেকগুলো সুচালো লম্বা লাঠির মতো জিনিস বের হতে লাগলো। আমরা সকলেই আর্মার এর বুস্টার এর ফলে তারাতারি সেগুলো এরিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু সবগুলো এরানো সম্ভব নয়, কারন হাজার হাজার সুচালো লাঠি আসছে আমাদের দিকে, আর সেগুলো অনেকটা আঠালো জিনিস, যাদের আঘাত করলে কিছুই হয় না। সেগুলো এক এক করে আমাদের আঘাত করে আমাদের আর্মার ভেঙে ফেলছে, রেনো সবার পিছনে, সে পিছন থেকে সাথে সাথে ছোট ছোট রোবট আমাদের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছে, যেগুলো এক একটা আলাদা আর্মার। সেগুলো আমাদের ভাঙা আর্মারের পরিবর্তে আসে যাচ্ছে। এভাবে করতে করতে আমার পনেরোটা আর্মার ভেঙে গেলো। এবং পরিবর্তন প্রতিনিয়ত করেই যাচ্ছে। রেনো এ কাজ করতে করতে নিজে বড় রোবট গুলো দিয়ে আঘাত করতে পারছে না। যেটা আমাদের অনেক বিরক্ত করছে। আর জিনিসটা আমার রাগকে বাড়িয়ে দিচ্ছে অনেক। ভয়ের মধ্যে বেশী রাগ না হলেও আমি রাগছি কিছুটা। পুরোপুরি না রাগলে আমি নিয়াকের ফর্মে যেতে পারবো না। আর আমার রাগ বারানোর জন্য আমাকে কিছু করতে হবে। হয়তো সরাসরি লড়তে হবে ডার্ককিউমের সাথে, নাহলে টাইম লক রুমের মতো অবস্থা আবার করতে হবে। ডার্ককিউমের সাথে মনে হচ্ছে না আমি একা পারবো লড়ে
।।
।।
এদিকে এনা ওর হলুদ কলম ইকুইব করে নিলো। যেটার ফলে তার শরীরে হলুদ কালারের একটা আর্মার চলে আসলো আলাদা রকমের, যেটার ফলে তার আর অন্য কোনো আলাদা আর্মার এর প্রয়োজন হলো না। অনুর এই আর্মারের ফলে ওর চারিদিক দিয়ে একটা ম্যাজিকাল ব্যারিয়ার তৈরী হয়। যেটা ওর শ্বাস চালাতে সমস্যা করে। আর অনুর কাজে একটা ক্ষমতা আগে থেকেই ছিলো যেটার নাম ফ্লাইট। এটা দিয়ে সে উড়তে পারে। অবশ্য আমি এরকম কোনো ক্ষমতা পাই নি, হয়তো আমার ক্ষমতা অনুর কাছেই চলে গেছে সেটা। যাইহোক অনু ওর হাতে ধনুক নিলো। এবং ধনুকের তার টান দিলো, যেটা তারে দশটা বিশাল আগুনের তীর তৈরী করলো। এবং সে দশটা তীর সে ডার্ককিউমের উপরে ছুড়ে মারলো। ডুইন তার দু হাত দিয়ে বিশাল এনার্জি বল তৈরী করলো, যেটা বিশালাকার এবং সেটা দিয়ে সে ডার্ককিউমকে আঘাত করলো, হিমারো আস্তে আস্তে ডার্ককিউমের কালো এনার্জি যেগুলো আসে পাশে ছড়িয়ে পরেছে সেগুলো এবজোর্ব করতে লাগলো।
।।।
।।।
ডার্ককিউম মূলত একটা প্রানী যার মাঝে অসংখ্য ডার্ক এনার্জি হওয়ার ফলে সে শক্তিশালী হয়েছে, আমার কাছেও ডার্ক এনার্জি রয়েছে, কিন্তু ওর কাছে সেটা সামান্য মাত্র। তাই ওকে হারানো এতোটা সহজ না। প্রতিটা আঘাত খাওয়ার পর ডার্ককিউমের কিছু এনার্জি তার শরীর থেকে ছড়িয়ে পরে, যেগুলো হিমারো এবজোর্ব করে, আর আমাদের কাজ ডার্ককিউমের যতটা সম্ভব এনার্জি তার শরীর থেকে টেনে নেওয়া। তাতে করে তার সাথে ডিল করাটা অনেকটা সহজ হয়ে যাবে। আপাতোতো ডুইনের এনার্জি বলে কোনো কাজ হচ্ছে না। শুধু হৃদয় এর তলোয়ারের স্লাইস এবং অনুর তীরই ডার্ককিউমের এনার্জি ছড়িয়ে ফেলছে তার শরীর থেকে। আর আমাদের কোনো আঘাত কাজে দিচ্ছে না। এজন্য আমরা বাকি সবাই তাকে লেজার দিয়ে আঘাত করছি। আমার কাছে লং লেন্জে ব্যবহারের মতো কোনো ক্ষমতা নেই, এনার্জি বল রয়েছে যেটা আমি ব্যবহার করলেও কাজে দিবে না। আর ওর কাছে গেলে সেটা আমাদের শেষ দিন হবে। আমাদের আঘাত করার ফলে ডার্ককিউমও স্থির হয়ে গেছে এবং তার ভিতরের শরীর থেকে সুচালো জিনিস দিয়ে আঘাত করছে। আমি বেশী কিছু করতে পারছি না এজন্য আমার রাগ হচ্ছে অনেক।
.
--দেখো আমার মনে হচ্ছে এভাবে আমরা আমাদের সকল এনার্জি হারিয়ে ফেলবো কিন্তু ডার্ককিউমকে হারাতে পারবো না। তাই আমি আমার রিয়েলিটি প্রিজম ব্যবহার করছি এবং আমার সবচেয়ে শক্তিশালী স্পেল ব্যবহার করছি ওর উপরে।(হৃদয়)
.
--কিন্তু।(অনু)
.
--এটায় আমাদের জিতার ভালো সুযোগ হবে।(হৃদয়)
।।।
।।।
হৃদয় ওর রিয়েলিটি প্রিজম ব্যবহার করলো। সাথে সাথে গ্রাভিটি পৃথিবীর মতো হয়ে গেলো। এবং সেই সাথে আমরাও নিচে পরতে যাচ্ছিলাম। কিন্তু রেনোর আর্মারের ফলে আমরা উড়তে লাগলাম। আর অন্যদিকে হৃদয় চোখ বন্ধ করে দাড়িয়ে আছে। ওর সাথে কোনো আর্মার নেই, মনে হচ্ছে ওর রিয়েলিটি বলে ও একাই উড়তে পারছে নিজ ইচ্ছায়। আবার হয়তোবা ওর উড়ার ক্ষমতা আছে। যাইহোক ও কিছুক্ষন চুপ করে চোখ বন্ধ করে ছিলো, আর ওর পিছন থেকে উড়ে হঠাৎ করে আগুন আসতে শুরু করলো। আগুনের তাপ এতোটা যে আমাদের আর্মার গলে যাচ্ছে। আমরা প্রথমে ওর থেকে সরে গেলাম সবাই। এবং পরে আমি খেয়াল করলাম ও সূর্যের আগুন ব্যবহার করছে। হৃদয়ের ক্ষমতা যেকোনো পানি কিংবা আগুনকে সে নিয়ন্ত্রন করতে পারে, এমন নয় যে সে আগুন এখনি তৈরী করতে পারে, বরং পাশের বাসায় যদি কেউ চুলায় আগুন জ্বালায় তাহলে সেই আগুন নিভে সেটা হৃদয়ের কাছে চলে আসবে। ঠিক সেরকমই হৃদয় সূর্যের আগুন নিয়ে এসেছি। সামান্য পরিমান আগুন নিয়ে এসেছে, যেটা বিশাল গোল একটা বল তৈরী করেছে, দেখে ছোট সূর্যই মনে হচ্ছে। এবার হৃদয় সেটা ছুড়ে মারলো ডার্ককিউমের দিকে। হৃদয়ের ডান হাত অনেকটা পুড়ে গিয়েছে সূর্যের আগুনে। যদিও সেটা আগুন ছিলো, কিন্তু ওর জন্য সেটার তাপমাত্রা একটু বেশী হয়ে গিয়েছে। আমি দাড়িয়ে শুধু দেখতে লাগলাম কতটা শক্তিশালী হৃদয়। এদিকে ওর এই আঘাতে ডার্ককিউমের অর্ধেক অংশ জ্বলে গেছে। এবং সেটা থেকে অসংখ্য পরিমান ডার্ক এনার্জি বের হতে লাগলো। যেটা হিমারো এবজোর্ব করতে চাচ্ছে না, কিন্তু জোর করেই হিমারোর শরীরে সেটা ঢুকে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় ডার্ককিউমের বাকি অর্ধেক অংশের এনার্জিও আস্তে আস্তে হিমারোর শরীর প্রবেশ করতে লাগলো,
.
--এটা কি হচ্ছে আমি তো এবজোর্ব করছি না কোনো এনার্জি। আমাকে কেউ বাচাও আমি আমার শরীর নিয়ন্ত্রন করতে পারছি না, আহঃ(হিমারো আর কিছু বললো না। বরং চুপ হয়ে গেলো)
।।।।
।।।।
ডার্ককিউমের পুরো শরীর যেটা বিশাল একটা উপগ্রহের সমান ছিলো সেটা আস্তে আস্তে ধুলোর মতো হারিয়ে যাচ্ছে। সবটা ডার্ক এনার্জি দিয়ে তৈরী ছিলো। যেটার সবটা হিমারোর শরীরে প্রবেশ করেছে। দেখতে দেখতে পুরো ডার্ককিউমের শরীর যেটা একটা উপগ্রহ ছিলো সেটা অদৃশ্য হয়ে গেলো। এবং সেটার মধ্যে থেকে একটা আংটি উড়তে উড়তে আমার দিকে আসলো। আমি জানি না আংটিটা কিসের কিন্তু কোনো কিছু না দেখেই আমি পরে নিলাম সেটাকে। অবশ্য আমি পরি নি ইচ্ছা করে, কারন আর্মারের উপর দিয়ে আমি পরতে পারবো না। আংটি টা আর্মার এর ভিতর দিয়েই আমার আঙ্গুলে নিজে এসে বসে গেলো। আমি বুঝি নি কি হলো, তাই সেদিকে লক্ষ করলাম না। আপাতোতো আমাদের নজর হিমারোর দিকে, ও ঠিক আছে কিনা সেটা লক্ষ করতে লাগলাম।
.
--হা হা হা। আজ এতোদিন পর একটা পারফেক্ট বডি পেয়েছি আমার জন্য। এখন মনে হচ্ছে না আমার আর কাউকে দেখে ভয় পেতে হবে।(হিমারো হঠাৎ অদ্ভুদ কন্ঠে বলতে লাগলো)
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
অপেক্ষা করুন পরবর্তী পার্টের জন্য।