কিং অফ দ্যা ইউনিভার্স পর্বঃ ০৭

 কিং অফ দ্যা ইউনিভার্স

#আবির হাসান আকাশ 

পর্বঃ৭

ঠিক ঐ মুহূর্তে একটা বিকট বর্জ্যের মতো আওয়াজ হলো।আমি আবছা চোখে দেখলাম আমার চারপাশ পুরোটাই কালো হয়ে গিয়েছে।আমার জীবন প্রায় শেষ হওয়ার অবস্থা, এমন সময় অনুভব করলাম কে যেন আমার পায়ের দিকে খুব ঠান্ডা হাত  দ্বারা স্পর্শ করলো,কিন্তু পিছনে তাকানোর শক্তি টুকুও আমার নেই।

আমি সামনে কালো আধারের ভিতর আগের সেই  কালো ড্রেস ওয়ালা মেয়েটাকে দেখতে পেলাম,,আগের মতন এখনো তার হাতে একটা সোর্ড রয়েছে (বিদ্রঃআগেরবার কাটানা বলছিলাম,কেউ আমাকে কাটানাকে সোর্ড বলতে বলেছে)

সোর্ডটা থেকে কালো ধোয়ার সাথে সাথে ফায়ারও বের হচ্ছে। 

আমার পিছনে কেউ স্পর্শ করায় কেন জানি আমার মনে হচ্ছে আমার সকল আঘাতের যন্ত্রণা শেষ হয়ে যাচ্ছে,,,কিন্তু আমার সামনে যেই লড়াইটা হচ্ছে তার জন্য পিছনে তাকানোর কোনো গুরুত্বই মনে করছি না,, 

আমি কালো আধারের ভিতরে দেখলাম মেয়েটাকে হুয়াইট ড্রেস পরা চারজন একসাথে লেজার দ্বারা আঘাত করছে,কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো,,মেয়েটার এক মিটার সামনে এসে লেজার গুলো আর মেয়েটার দিকে এগোতে পারছে না।এটা কিভাবে সম্ভব যেখানে লেজার গুলো আমাকে প্রায় মেরে ফেলেছিলো সেইখানে মেয়েটার দিকে লেজারগুলো এগোতেই পারছে না।মেয়েটার সামনে লেজার আঁটকে যাওয়া দেখে এইটাই মনে হচ্ছে মেয়েটা হয়তো তার সামনে একটা অদৃশ্য দেয়াল তৈরি করেছে,,,

কিন্তু কে এই মেয়েটা,,,বার বার আমাকে বাচাতে কেন আসছে। আমি তার কি হই বা মেয়েটাই আমার কি হয়,,

আমি এইসব চিন্তা করছি ঐ সময় মেয়েটা হোয়াইট ড্রেস ওয়ালা লোকগুলোর দিকে ডার্ক ফায়ারের সোর্ডটা তাক করে একটা স্লাইস দিলো,সাথে সাথে চারটা লোক আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেলো। তার সোর্ড এর পাওয়ার দেখে আমি আবারো অবাক হয়ে গেলাম।হোয়াইট ড্রেস পড়া লোকগুলো শেষ হওয়ার পর ফাইটিং রিলের চারপাশ থেকে আওয়াজ আসতে লাগলো,,, 

ইউ কমপ্লিট অল লেভেল সাকসেসফুলি,,,, 

ফাইটিং রিলের চারপাশ থেকে এই আওয়াজ আসার সাথে সাথে রিলের চারপাশে জ্বলতে থাকা আগুন নিভে গেলো,আমি কিছু বলার আগেই আমার পায়ের দিকে ঠান্ডা হাতের স্পর্শ ও আমার সামনে থাকা মেয়ে দুটোই অদৃশ্য হয়ে গেলো।আমি কিছু বুজছি না,,এরা কেন আমাকে বারবার বাচাতে আসছে,,আর আমি যদি তাদের কাছে এতোটাই গুরুত্বপূর্ন হই তাহলে আমার সাথে এরা কথা বলে না কেন,,,সাদা লোকটা না হয় এন্জেল কিং কিন্তু ঐ কালো হুডি চাপানো মেয়েটা কে,যে আমাকে প্রতিটা বিপদে সাহায্য করছে,,,যত তারাতাড়ি সম্ভব আমাকে এই সবের রহস্য উদঘাটন করে বাড়িতে ফিরতে হবে,,মা আমার জন্য মনে হচ্ছে অনেক চিন্তাই আছে,এইসব কিছু ভাবতে ভাবতে আমার মনে হলো আমার কোন যন্ত্রণাই অনুভব হচ্ছে না।আমি বিষয়টা বোঝার জন্য আমার পা এর দিকে তাকাতেই দেখি ফাইটিং রিলে উঠার আগে আমার পা যেমন ছিলো এখনো ঠিক সেইরকমই আছে,কিন্তু এইটা কিভাবে সম্ভব, আমি আমার পা এবং পিঠে যেই আঘাতটা পেয়েছি তা থেকে তো আমার মৃত্যু হওয়ার কথা।আর মৃত্যু না হলেও তো কমপক্ষে ৩ মাস মেডিক্যালে থাকতে হতো।মাত্র কয়েকমিনিটে আমার শরীরের আঘাত গুলো শেষ হয়ে যাওয়া সত্যি খুব অবাক ব্যাপার

।তার মানে এই সব কিছু আমার পিছনে ঠান্ডা হাতের স্পর্শ অনুভব হওয়ার কারন। কে ছিলো ঐ ঠান্ডা হাতওয়ালা লোকটা,,,ফাইটিং এর জন্য তো পিছনে তাকাতেও পারি নি।

ঐ লোকটা কি তাহলে আমাকে হিল করার জন্যই এসেছিলো,,,,

আমি আপাতত এই সব বিষয় নিয়ে মাথা ঘামানো বাদ দিলাম।এইসব রহস্য জানতে হলে আমাকে আগে পোর্টালে প্রবেশ করতে হবে,,,

আমি ফাইটিং রিলটা থেকে নেমে পোর্টালের সামনে চলে গেলাম,পোর্টালের সামনে যাওয়ার সাথে সাথে যেই কাচ দিয়ে পোর্টালটা ঘেরা ছিলো তা মূহুর্তের মাঝেই দুইভাগ হয়ে যায়।এবং পোর্টাল থেকে একটা আওয়াজ আসতে থাকে,,

ওয়েলকাম স্কাইলর্ড,,

পোর্টালটার কথা বলা শুনে আমি চমকে গেলাম,কিন্তু যদি একটা ডোর কথা বলতে পারে তাহলো পোর্টালও কথা বলতে পারবে,এইটা ভেবেই মন শান্ত করলাম।

আমি তখন পোর্টলকে বললাম,,,,

কে স্কাইলর্ড আর তুমিই বা কথা বলছ কি করে।কিন্তু পোর্টালটা আমার কথার কোন উত্তর না দিয়ে সুধু এইটাই বলে যাচ্ছে ওয়েলকাম স্কাইলর্ড ওয়েলকাম স্কাইলর্ড।আমার আর বোজতে বাকী রইল না এই পোর্টালকে যে আনলক করবে তাকেই মূলত পোর্টালটা স্কাইলর্ড হিসাবে সম্মোধন করবে।যেহুতু আমি পোর্টালটাকে আনলক করেছি তাই আমাকে স্কাই লর্ড ভাবছে। আমি নিজের চোখে পোর্টালটা দেখে অবাক না হয়ে পারছি না,,,এতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি পৃথিবীতেও নেই,কিন্তু মাটির নিচে কিভাবে আসলো,,পোর্টালটা ছিলো ওয়ার্ম হোলের মতো।কিন্তু ওয়ার্ম হোল তো এখনো আবিষ্কৃত হয় নি,,পৃথিবীরর অনেক বিজ্ঞানী এখনো চেষ্টা করছে কৃত্রিম ওয়ার্ম হোল আবিষ্কারের জন্য।আমি আর সাত পাচ না ভেবে ওয়ার্ম হোলের মতো পোর্টালটাতে প্রবেশ করলাম।পোর্টালটাতে পা ফেলার সাথে সাথে খুব জোরে কোন এক শক্তি আমাকে ভিতরে টেনে নিলো,,আমার গতি এতো বেশি ছিলো মনে হচ্ছে আমি প্রায় আলোর গতির সমান গতিতে চলছি,এতো গতিতে আমি চলছি কিন্তু আমার শরীরে তেমন কোন প্রটেকশন নেই তাও আমার কিছুই হচ্ছে না।মানতেই হবে যারা এইখানে এই পোর্টালটা রেখেছে তারা কতটা উন্নত। পোর্টালের যতো গভীরে আমি প্রবেশ করছি আমার আকারও তত কমছে,,,এমন একটা সময় আসলো যখন আমি প্রতিটা অনু পরমানুকে খালি চোখে দেখতে পারছি এবং তাদের ভিতরেও প্রবেশ করতে পারছি।

এর মানে কি তাহলে আমিও একটা পরমাণুর সমান আকৃতির হয়ে গিয়েছি,,

হঠাৎ আমার গতি সম্পর্ন থেমে গেলো।এবং আমি কোন একটা জায়গায় এসে জোরে আঘাত খেলাম,চোখ খুলতেই দেখি জায়গাটা কেমন যেন অদ্ভুত। চারপাশে অনেক রকমের আলো।আমি জীবনে কখনো এইরকম জায়গা দেখি নি,,নিজের আকারের তুলনায় জায়গাটাকে খুবই তুচ্ছ মনে হচ্ছে। প্রতিটা অনুজীব কেউ আমার চেয়ে শত শত গুন বড়ো মনে হচ্ছে। 

এমন সময় পিছন থেকে কে যেন আমাকে আবার ডাক দিলো,,,,

ওয়েলকাম স্কাইলর্ড,,,,

আমি পিছনে ফিরতেই মাঝবয়সী একটা মানুষ কে দেখতে পেলাম,,,,

তিনি আমাকে দেখেই বলতে লাগলো,,

কেমন লাগছে আমার কোয়ান্টাম জগৎ, (লোক)

কোয়ান্টাম জগত মানে,,? 

তখন লোকটা বললো 

আপনি এখন আমার কোয়ান্টাম জগতে অবস্থান করছেন স্কাইলর্ড,,

কি আমি সত্যি কোয়ান্টাম জগতে এসে পড়েছি,,এইজন্যই তো বলি আমার আকার এতো ছোট হলো কীভাবে,,,কিন্তু আমাকে এইখানে আনা হলো কেন,,?(আমি)

হুম স্কাইলর্ড আপনি ঠিক ধরেছেন আপনি এখন কোয়ান্টাম জগতে আছেন।যেখানে সময় স্থির,সময়ের কোন দামই নেই এখানে,,,আপনাকে এখানে আনা হয়েছে আপনার ট্রেনিংয়ের জন্য।(লোক)

কিসের ট্রেনিং,ট্রেনিং এর জন্য আমাকেই কেন এখানে আসতে হলো,আর আপনি কে,এই কোয়ান্টাম জগৎ-টাই বা কে তৈরি করলো,,?

আপনি আমাকে স্কাইলর্ড বলেই ডাকছেন কেন,,?

আস্তে স্কাইলর্ড,,এতোগুলো প্রশ্নের উত্তর আমি কিভাবে দিব,,😏

আপনি আপনার ট্রেনিং চলার সময় আস্তে আস্তে সব কিছু জানতে পারবেন।আপনার মাঝে এমন সব এনার্জি আছে যা এই পুরো ইউনিভার্সকে পাল্টে দিবে।তবে সেইগুলো এনার্জি গুলো সম্পর্কে সঠিক ধারনা ও সঠিক ব্যাবহার জানতে  হলে আপনাকে অনেক ট্রেনিং করতে হবে,,যার কারনেই মূলত আপনাকে এখানে আনা হয়েছে।খুব শীঘ্রই আপনাকে ট্রেনিং শেষ করতে হবে,,,অনেকে আপনার জন্য অপেক্ষায় আছে।

to be continue,,,,,,,, 💕